মনে করেন বিকালবেলা চা আর মুড়ি নিয়া বসে আছেন। আরামে পড়ছেন সচলায়তন। এমন সময় কুথা থেকে এক জ্বীনের বাদশা এসে কইল ওরে সুনা। আছিস কেমন? কী কচ্ছিস? আপনি কইবেন এই তো বাদশা সায়েব। পপি গাইড পড়ছি। মোগল হওয়ার বাসনা। আপনি কেমন?
জ্বীনের বাদশা তখন খলখল করে হেসে ধরেন কইবে, দুত্তোর পপি গাইড। এই সব বাদ দে। মোগল হতে চাস? আকবর করে দিতে পারি, হতে চাস আকবর?
আপনি তো খুশিতে উত্তেজনায় লুঙ্গিতে পিশাব করে দিয়ে বলবেন, আকবর? ও আল্লা আকবর? অবশ্যই হতে চাই।
আবার খলখল করে বিশ্রী হেসে জ্বীনের বাদশা তখন কইবে, যা তবে হয়ে যা - মুহম্মদ আকবর। ফুঃ!!
মুহম্মদ আকবর?
সর্বনাশ! জালালউদ্দিন মুহম্মদ আকবরের বদলে বদমাইশ জ্বীন আপনাকে বানিয়ে দিয়েছে সুলতান মুহম্মদ আকবর, আওরঙ্গজেবের ছোট ছেলে। আপনি শেষ। তু তো গয়া। কোথায় ছড়ি ঘুরাবেন ভারতের উপর আকবর বাদশা হয়ে আর সুড়ুৎ সুড়ুৎ লালপানি গিলবেন নবরত্ন পরিবেষ্টিত হয়ে, তা না আপনি এখন কোথাকার ইরানতুরানের চিপায় পিতার মৃত্যু কামনা করে নমাজ পড়তে পড়তে বুড়া হচ্ছেন। কোন মানে হয়?
হাঁ পাঠক। পপি গাইডের শেষ পর্বে স্বাগতম। পয়লা পর্বে জন্মালেন খান্দান মোগল বংশে। পড়াশুনা শিখলেন। দ্বিতীয় পর্বে মনসব পেলেন। আট হাজার জাট ছয় হাজার সওয়ার। সাথে বিবাহ করলেন চাচাতো বোন নার্গিস বেগমকে। নাচো হেলিয়া, নাচো গো দুলিয়া। রাখো নয়নে নয়ন।
কিন্তু তারপর?
ভালোয় ভালোয় পপি গাইড শেষ করলে বিস্তারিত বুঝায় দিতাম কিভাবে পরবর্তী বৈতরণী গদির লড়াই শেষ করে গদি দখল করতে হয়। কিন্তু এদিকে আপনি জ্বীনের বাদশার আজাইরা প্রলোভনে আকবর নম্বর টু হয়ে গর্মশিরে পচতেছেন। জীবন আপনার সাফা কিরকিরা। বিদ্রোহের বিস্তারিত পয়েন্ট টুকলিফাই করার আগে আপাতত প্রশ্ন হলঃ হু ইজ মুহম্মদ আকবর।
আওরঙ্গজেব রাজপুতদের দুই চক্ষে দেখতে পারতেন না। পুলা মুহম্মদ আকবরকে তিনি ১৬৮০ সালে যোধপুরে পাঠান সেখানকার স্থানীয় রাজপুত রাঠোরদের শায়েস্তা করার জন্য। আকবর তখন কঠোরভাবে রাঠোরদের বলে দেন, ওরে রাজপুত, পিতার বশ্যতা স্বীকার কর। রাইট নাউ। আভি আউর ইসি ওয়াক্ত পে। নইলে পিটিয়ে রাজপুতের বদলে বান্দিরপুত টাইটেলের ব্যবস্থা করব এক্ষণি।
কিন্তু তারপর কি হইতে কি হইয়া গেল, রাঠোরেরা উল্টা মুহম্মদ আকবরকে বুঝ দিল তোমার পিতা দুষ্ট। আমরা সঙ্গেই আছি, আইস মুহম্মদ আকবর। বিদ্রোহ কর দুশমন পিতার বিরুদ্ধে। চল গড়ি সুখের রাজপুত-মোগল ভাবের জীবন, যেমনটা ছিল মহান বাদশা আকবরের আমলে। আকবর তুমি এগিয়ে চল। আমরা আছি তোমার সাথে। আকবর ভয় নাই। রাজপথ ছাড়ি নাই। এক আকবর লোকান্তরে, লক্ষ আকবর ঘরে ঘরে।
রাজপুতদের এই বিপুল উৎসাহ, উদ্দীপনা ও প্রেরণায় ১৬৮১ সালে মুহম্মদ আকবর নিজেকে বাদশা ঘোষণা করে বললেন এইও পিতা। খুউপ সাবধান। দিকে দিকে পড়ে গেছে সাড়া। জেগে উঠেছে শহর বন্দর পাড়া। বুনো পথ বুনো হাওয়া লাল নিশান উড়িয়ে। লিডার আসছে!
খবর শুনে পিতা আওরঙ্গজেব পিচিক করে থুতু ফেলে বললেন, বালের লিডার। ওর রাজপুত অ্যালায়েন্সের বারোটা বাজাচ্ছি খাড়াও। এক চতুর প্লটে যুদ্ধের ঠিক আগের রাতে তিনি পুত্রকে এক হাতচিটঠি পাঠান এবং এমন ব্যবস্থা করেন যেন সেই চিঠি রাজপুতদের হাতে গিয়ে পড়ে। চিঠিতে লেখা সাব্বাস পুত। ঠিক যেমনটি বলেছিলাম তেমনটিই তুই করে দেখালি বটে। রাজপুতদের কাল ময়দানে নিয়ে আয়, এরপর পিছনে থেকে সরে পড়বি। মোগল সিপাই রাজপুতদের তখন কচুকাটা করবে পরিকল্পনামাফিক।
চিঠি পেয়ে রাঠোরেরা কিঞ্চিৎ বিভ্রান্ত হয়ে গেল। ঘটনা কি সত্য? মনে হয় সত্য না, বুইড়া ভাম আওরঙ্গজেব তো পুরাতন পল্টিশিয়ান। এই চিঠি নিশ্চয়ই মিথ্যা। কিন্তু সত্যই কি মিথ্যা? নাকি সত্য মিথ্যা নয়? পাগড়ি উঠিয়ে একটু কান চুল্কে তারা মুহম্মদ আকবরের তাঁবুতে গেল তাকে প্রশ্ন করতে। ফায়ারসাইড চ্যাট। কিন্তু লিডার আকবর তখন ফায়ার নিভিয়ে গভীর ঘুমে মগ্ন। রাজপুতেরা দোনোমোনো করতে করতে শেষটায় তাকে রেখে দিল কাট্টি। মুহম্মদ আকবর সকালবেলা উঠে দেখলেন সব ফকফকা।
তারপরের ঘটনা করুণ ও বেদনাবিধুর। শেষজীবনে ইরানতুরানে সখাহীন সিপাইহীন কপর্দকশূণ্য ফেরারী মুহম্মদ আকবর কেবল নফল নমাজ পড়ে আল্লার কাছে পিতার মৃত্যুভিক্ষা করতেন, কেননা ইরানের শাহ তাকে আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে সিপাই দিতে অস্বীকার করলেও তার মৃত্যুর পরে ভাইদের সাথে লড়াইতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিলেন। পিতার মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করে করে তিনি নিজেও পটল তুললেন ১৭০৪ সালে, আওরঙ্গজেব মারা যাবার তিন বছর আগে।
অতএব পাঠক কী শিখলেন? মাথা গরম করে বিদ্রোহ করলে চলবে না। ইজি থাকা চাই। মোগল আমলে বিদ্রোহের বেশ কয়টি উদাহরণ আছে। আকবর হতে আওরঙ্গজেব পর্যন্ত, মোটাদাগে পাঁচটি বিদ্রোহ হয়েছিল পুত্র বনাম পিতার। আকবরের বিরুদ্ধে পুত্র সেলিম (১৫৯৯-১৬০৪), জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে পুত্র খসরু (১৬০৬) এবং খুররম (১৬২২-২৭), আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে মুহম্মদ সুলতান (১৬৫৯) এবং মুহম্মদ আকবর (১৬৮১)। প্রত্যেকটাতে বিদ্রোহেই পিতা চ্যাম্পিয়ন পুত্র লাড্ডাগুড্ডা। রুস্তম পাঁচ সোহরাব শুণ্য।
কিন্তু হতাশ হয়েননা। পড়ে চলুন পপি গাইড। বিদ্রোহে কামিয়াব না হলেও গদি পাওয়া অসম্ভব নয়। পুত্রের বিদ্রোহ কঠোরহাতে দমন করা হলেও এই ধরণের বিদ্রোহ যে বাদশারা একেবারে কল্পনাই করেন নাই তা মোটেই না। দুষ্ট ছেলে বাজে সঙ্গে পড়ে উচ্ছন্নে গেছে এইটা বলে এইসব ঘটনা ধামাচাপা দেবার নজির রয়েছে। মুন্তাখাব উল লুবাব বইতে মুহম্মদ আকবরকে যেমন নাম দেয়া হয়েছে সর্বোৎকৃষ্ট ফাউল ছেলে (“বেস্ট অফ দ্য য়োর্স্ট”, “আকবার-ই-আবতার”), তার সাঙ্গপাঙ্গরা মূল শয়তানির উৎস, বিশেষত মহা শয়তান (“ইবলিশ কারদার”) রাজপুত সঙ্গীরা। সরল মনের আকবর এইসব বাজে সঙ্গ পেয়ে নষ্ট হয়েছে কেবল।
মোগল রাজপুত্রের বিদ্রোহ ও বেচেয়নি এইরকম সাবান দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে দেবার আরও উদাহরণ আছে। হাজার হোক বাদশার সন্তান, যত বড় বিয়াদপই হোক ঘরের কথা পরে জানার প্রয়োজন নেই। জাহাঙ্গীর বাদশার পুলা খসরু যখন ১৬০৬ সালে বিদ্রোহ করে, জাহাঙ্গীরনামা (১৬২০) এবং মুন্তাখাব উল লুবাব (১৭৩০) এ খালি খসরুর সাঙ্গপাঙ্গের বদনাম। তারা নাকি “অনিষ্টকারী”, “গিয়াঞ্জাম-প্রস্তুতকারী” (ফিৎনা আঙ্গেয)। এদিকে খসরু কেবল “অদূরদর্শী’, “অনভিজ্ঞ”, “সহজে বিপথগামী’, এমনকি “সরল-মনা”। তার নাকি পাকেচক্রে পড়ে বিদ্রোহ না করে উপায়ই ছিলনা। মুহম্মদ আকবরের বড় ভাই মুহম্মদ সুলতানের বিদ্রোহের ব্যাপারেও একই রকম সার্ফ এক্সেল ব্যবহার করা হয়।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন হল, হে পীর। এমনকি হতে পারেনা, যে বাদশা এবং তাদের বই লেখকেরা চমৎকার মানুষ। তারা কেবল সকলের ভালো দিকটাই দেখে তাই বিদ্রোহীদের বেশি গালাগাল করা হয়নি। তারা মাফ করে দিয়েছে। আরিফারের ভাষায় আমরাও কি পারিনা তাদের মত হতে? আমরাও কি পারিনা সকলের ভালো দিকটা দেখতে? আমরাও কি চেষ্টা করতে পারি না...
না। পারি না। আসেন দেখি বাদশার পরিবারের বাইরের কারো বিদ্রোহ করার মতলব কিভাবে বর্ণনা করা আছে। ১৬২৬ সালে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে তার জেনারেল মহব্বত খাঁ যখন বিদ্রোহ করে হেরে যান, সেই ঘটনায় তাকে (তার সাঙ্গপাঙ্গকে নয়, মহব্বত খাঁ কেই) ডাকা হয়েছে “অবিশ্বস্ত”, “খারাপ চিন্তাকারী” (“বদ-খয়া”), “জঘন্য চরিত্র” (“যিশত কারদার”), “জন্তু” (“দাদ”), “জালিম”, “নৃশংস”, “অবিশ্বাসী” (“বে-দ্বীন”), “কালো হৃদয়ের অধিকারী” (“দিল-সিয়া”), দুষ্ট কুষ্ঠরোগী” (“বিস ই তাদবির”) এবং “কুত্তা”।
বুঝেন অবস্থা।
সুতরাং বাদশার পুত্র হিসাবে আপনার আশা আছে। দিল সিয়া কুত্তা হিসাবে আপনাকে উপস্থাপনা করার সম্ভাবনা কম। লড়ে যান। সাথে আছে পপি গাইড। বাজারের সেরা গাইড।
রাজপুত্র হিসাবে আপনার গদিতে উঠার একাধিক বন্ধুর পথ খোলা রয়েছে। নামে বন্ধুর পথ হলেও আসলে বন্ধু নাই কোন। একলা পথিক। একটা পথ হল বাদশা পটল তোলা পর্যন্ত ধৈর্য ধরা, অন্য পথ হল পটল তোলার আগেই চিক্কুর দিয়ে নিজেকে বাদশা ঘোষণা করে মসজিদে মসজিদে নিজ নামে খুৎবা চালু করে দেবার ভাউ করা। দুই পথই বিপদসঙ্কুল। হয় ভাইদের বিপক্ষে কিম্বা বাপের বিপক্ষে আপনার চাল। সাবধান। ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে শত্রু (...কিম্বা বিবি, নির্ভর করছে আপনি খাটে না যুদ্ধের ময়দানে)।
বিদ্রোহ যখন করবেন, হিসাবনিকাশ ছকে নামতে হবে। আঁৎকা একদিন ঘুম থেকে উঠে লুঙ্গির গিঁট দিতে দিতে “আজই করব বিদ্রোহ” চিক্কুর দিলে চলবে না। সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সহজ কথা নয়। ধরেন খুররম যখন ১৬২২ সালে পিতা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের গীত ধরেন, তার পনেরো বছর আগে এই একইরকম বিদ্রোহের অপরাধে বড় ভাই খসরুর চোখ উঠিয়ে আনার আদেশ দিয়েছিলেন স্নেহময় পিতা জাহাঙ্গীর। বিদ্রোহ করতে হবে বাদশার দুর্বল মুহুর্তে, শারীরিক বা রাজনৈতিক। ১৬২২ এ জাহাঙ্গীর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, এদিকে ১৬০৬ এ খসরু বা ১৬৫৯ এ মুহম্মদ সুলতান বেছে নিয়েছিলেন এমন সময় যখন তাদের পিতা মাত্র গদিতে বসেছেন। হাতের মুঠি তখনো তাদের পুরো শক্ত নয়।
বিদ্রোহ কেবল আপনার এবং আপনার পরাক্রমশালী পিতার জন্যই নয়, আস্ত দেশের মানুষের জন্যই এ এক ভয়াল গিয়াঞ্জাম। ১৬০৬ এ বিদ্রোহ করার পর হেডকোয়ার্টার আগ্রায় বেশি সুবিধা করতে না পেরে খসরু যখন জন্মভূমি লাহোরে পালান, তার বাহিনী ব্যস্ত দিল্লী-আগ্রা মহাসড়কে পাইকিরি হত্যা লুটতরাজ চালিয়ে অস্থির। তার লাহোর আসার খবরে শহরবাসী ভয়ে দরজাজানালা খিল দিয়ে বসে থাকে, জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে পড়ে আর মানুষ মূল্যবান ঘটিবাটি লুকিয়ে ফেলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। খসরু শহরে ঢোকার পরেও লুটতরাজ চলতে থাকে। এদিকে জাহাঙ্গীরের বাহিনী এসে খসরুকে হারিয়ে ফেলার পর তারাও এসে লাহোরে বাড়ি বাড়ি তল্লাশ চালাতে থাকে খসরুর সাঙ্গপাঙ্গদের ধরবার জন্য। শহরবাসী দুই দিকেই খেল মারা। অন্যান্য বিদ্রোহেও যেমন ১৬০৬ এ আটক, ১৬২৩ এ সুরাট, আহমেদাবাদ আর বুরহানপুর, ১৬২৪-২৫ এ এলাহাবাদ, পাটনা আর ঢাকায় বিদ্রোহের ছোঁয়ায় শহরবাসীর হালুয়া হয় টাইটং। বিদ্রোহ ইজ ন্যাষ্টি বিজিনেছ।
পরের পয়েন্টঃ কার্যকারণ। বিদ্রোহ হালাল করার জন্য আপনার পিতার ছিদ্রান্বেষণ করতে হবে। আপনার পিতা কি মাতাল ও বউয়ের বশ? (আপনার মায়ের বশ হইলে অবশ্য সেই কথা চেপে যাওয়াই ভালো)। তিনি কি আপনার বদমাইশ ও বেতমিজ বড় ভাইয়ের প্রতি অযথা দুর্বল? তিনি কি তৃতীয় শ্রেণীর মনসবদারের সাথে উঠাবসা করেন? তার রাজনৈতিক বা ধর্মীয় মাখামাখি কাদের সাথে? এগুলো খুঁজে বের করেন। খুররম যেরকম বিদ্রোহের সময় বলেছিলেন তার সৎ তথাপি অসৎ মাতা নূর জাহান পিতা জাহাঙ্গীরকে পেটিকোটে গুঁজে কার্যতঃ দেশ চালাচ্ছেন। মুহম্মদ আকবর পিতা আওরঙ্গজেবকে বলেছিলেন ব্যর্থ পিতা, বেকুব, গদিলোভী, বকধার্মিক ইত্যাদি। ভয়ানক সব বিশেষণ। আপাততঃ এই লিষ্টি থেকে বেছে নিন আপনার নিজের পছন্দের বিশেষণঃ বেকুব মাতাল লোভী অপদার্থ বউয়ের বশ বিশ্বাসঘাতক ভ্রাতৃহন্তারক দুর্নীতিবাজ বকধার্মিক নাস্তিক ব্লগার শাহবাগি রেপিস্ট ইতর খুনি প্রতারক দাদা ভাদা ইত্যাদি। বেছে নিন একাধিক, যেটা মনে চায়। যেইটা লন দুই টাকা বাইছা লন দুই টাকা। সবই সত্য ছিদ্র হতে হবে এমন কোন বাহানা নাই। কাছাকাছি হলেই চলবে। এরপর বেছে নেয়া বিশেষণগুলি একত্র করে একটা কড়া চিঠি ভেজুন পিতাকে, কপি পাঠিয়ে দিন পত্রপত্রিকায়, গেদুচাচার খোলা চিঠি স্টাইলে। ব্যস এই তো।
পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার নজির ভুরি ভুরি থাকলেও পিতার কল্লা নামিয়ে গদিতে বসার উদাহরণ মোগল ইতিহাসে নাই। তার মানে অবশ্য এই না যে আপনি সেই ইতিহাস রচনা করতে পারবেন না। নিশ্চয়ই পারবেন, তবে গাধা সামলে। মাইন্ড ইয়োর অ্যাস। জনগণ পিতাকে হত্যা করা মেনে নিবে কিনা বলা কঠিন। তার চেয়ে পিতার মৃত্যুর পরে ভাইদের খুন করাই উত্তম পন্থা। যাকে বলে হাইলি রেকমেন্ডেড।
১৬১৬ সালে বাদশা জাহাঙ্গীর মান্ডু শহরে একশো বছর আগে মরে ভূত হয়ে যাওয়া এক সুলতান নাসিরুদ্দিনের কবরে গিয়েছিলেন। গিয়ে তিনি আঁৎকা সেই কবরে লাথি দিয়ে যা তা গালাগাল শুরু করে দিলেন, আর সাথের সঙ্গীসাথীদেরও বলেন ওরে সাথের সঙ্গীসাথী। দে লাথি কবরে। সবাই শুনে মহাদর্পে কবরে লাথি দেয়া শুরু করল। এরপর জাহাঙ্গীর হুকুম দিয়ে কবর খুলিয়ে হাড্ডিগুড্ডি বের করান, আর আগুনে পুড়িয়ে তা পাশের নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
কিন্তু কেন? বাট হোয়াই? কেননা এই মৃত নাসিরুদ্দিন সুলতান পিতাকে হত্যা করে গদিতে এসেছিলেন। এই হল কাহিনী। পিতৃহন্তারকের মরেও শান্তি নাই, একশো বছর পরের মাতাল ও লুল বাদশা এসে খামোকা পদাঘাত করবে। তারচে হোন ভ্রাতৃহন্তারক, সেই ভালো। যাকে বলে হাইলি রেকমেন্ডেড।
গদির লড়াইয়ে জিততে হলে আপনাকে কিছু জিনিস খেয়াল রাখতে হবে। পয়লা হল টাকার ব্যবস্থা। মনসবদার হিসাবে জায়গির থেকে আপনার আয় তো হবেই, কিন্তু সেই টাকা তো বাজার সদাই লাল পানি আর বউ পুলাপানের পিছনেই চলে যাবে। আপনাকে আরও অনেক টাকার ব্যবস্থা করতে হবে, কেননা গদি ইজ নট চীপ। আপনাকে রিজার্ভ ফোর্স রাখতে হবে, যেকোন মুহুর্তে চিক্কুর পেড়ে “আমিই বাদশা” বলে লাফ দেয়া মানে সিপাইদের নিয়ে কেন্দ্র দখল করতে যেতে হবে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে, আওরঙ্গজেব মারা যাবার পূর্বে, তার ছেলে শা মুয়াজ্জেম ঘোড়ার ইম্পোর্ট বিজিনেছ থেকে তুমুল অর্থ বাগিয়ে নিজের বাহিনী পোক্ত করেন। আওরঙ্গজেব ঠিকই বুঝেছিলেন কেন ছেলে সিপাই জড়ো করছে, তিনি নাকি ব্যঙ্গ করে লিখেছিলেন ওরে মুয়াজ্জেম। এতো সিপাই নিয়ে কি করবি রে, সাফাভিদের সাথে জুদ্দে যাবি নাকি। আটকাইঅ না কেও। বনদুকখানা দেও।
এরপর ধরেন আপনাকে কেন্দ্রে নিজস্ব চর রাখতে হবে, যে বাদশার কুলুকুলু বমি হলে বা পুতুপুতু পাতলা হাগা হলে সে খবর আপনার কাছে তুরন্ত এনে দেবে। পিতার স্বাস্থ্যের খবর সর্বাগ্রে পাওয়া চাই, অসুস্থ বা মৃত বাদশা মানেই গদির পথে আপনার একট সফল ধাপ। সেই চর অল্প টাকায় মেলে না। ১৬০৫ এ আকবর বয়সজনিত কারণে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়লে কেন্দ্রের চর মারফত সেলিম খবর পান পিতা অসুস্থ এবং তার ছেলে খসরু গদি দখলের পাঁয়তারা করছে। সে নাকি গদি দখল করে সেলিমের চোখ কানা করে দিবে। ১৬৫৭ সালে আওরঙ্গজেবের চর ইসা বেগ বুড়া বাদশা শাজাহান আর দারার সকল খবর আওরঙ্গজেবের কাছে পৌঁছে দিতেন। দূর্গে আওরঙ্গজেবের কাছে আরও খবর পাঠাতেন তার মামা শায়েস্তা খাঁ আর পিঠোপিঠি বড়বোন রওশনআরা।
চরের কাছ থেকে এক শুভ সকালে যখন পাকা খবর যখন পাবেন যে পিতা গন কেস, এইবার অ্যাকশন অ্যাকশন। ডাইরেক্ট অ্যাকশন। বিরতিহীন গেটলক। ভারতের যে প্রান্তেই থাকুন না কেন নিজেকে বাদশা বলে ঘোষণা দিন, এবং ভাইয়ের সাথে যুদ্ধের আঞ্জাম করুন। সকল সিপাই (বা যথা সম্ভব সিপাই, যদি নিজের দূর্গে কিছু সিপাই রেখে যেতে হয় পরিবারের দেখভালের জন্য) নিয়ে দিল্লী পানে চলুন। আপনার ভাই কোথায় এখন? সে কি দিল্লী আগ্রা পৌঁছে গেছে (বা সেখানেই ছিল, যেমনটা দারার বেলায় ঘটেছিল)? তার পক্ষে কারা কারা আছে খবর নিন। তাদের ঘুষ দিয়ে নিজের দলে টেনে নেবার ব্যবস্থা করুন রাতের আঁধারে, মেনে না নিলে হুমকি দিন যুদ্ধে জেতার পরে তাকে এবং তার গুষ্টির পাছা শূলবিদ্ধ করা হবে। ভাইয়ের ঘাঁটির কাছাকাছি ময়দান কোথায় আছে, সেইখানে চর পাঠিয়ে ভালো অবস্থান নিতে চেষ্টা করুন। পাহাড় বা উঁচু জায়গাতে অবস্থা নিতে পারলে ভালো হয়। নদীর ধারে থাকবেন, সেইখান দিয়ে আপনার রসদ আসবে এবং খুদাতালা না করুন হেরে গেলে নৌকা নিয়ে চম্পট দিতে সুবিধে হতে পারে। তবে আর যা ই করুন, মাঝ ময়দানে হুট করে হাতির পিঠ থেকে ঘোড়ায় নামতে যাবেন না যেন সামুগড়ে দারা শুকোর মত।
কিরকম?
হাঁ ভাই। একটি সামাজিক অ্যাকশনধর্মী যুদ্ধ, সামুগড়ের যুদ্ধ। পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেখার মত যুদ্ধ, সামুগড়ের যুদ্ধ।
ছবিঃ সামুগড়ের যুদ্ধ, শিল্পী প্রয়াগ (১৬৫৮)। বাঁয়ে দারা শুকোর সারি সারি লাল তাম্বু। নিচে মধ্যে আওরঙ্গজেব/মুরাদ কোয়ালিশন ফোর্সের হলদে ঝাণ্ডা। মাঝে দারা নেমে আসছেন হাতি থেকে।
আগ্রা থেকে ষোল কিলোমিটার দূরে সামুগড়ে দুই পিয়ারা ভাই দারা আর আওরঙ্গজেব/মুরাদ কোয়ালিশন ফোর্সের দেখা হয়। মেলা কিচ্ছা। হলদে ঝাণ্ডা উড়িয়ে আওরঙ্গজেব এসে তুমুল গোলাবর্ষণ আরম্ভ করে দেন। ঠাস ঠাস দ্রুম দ্রাম শুনে লাগে খটকা। ফুল ফোটে? মোটেও না। আওরঙ্গজেবের পটকা। সেই পটকার ঠেলা অগ্রাহ্য করে দারা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকেন তার নিজস্ব গোলন্দাজ বাহিনীর মাধ্যমে। ভালই যুদ্ধ চলছিল, যাকে বলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। বোন টু বোন ফাইট। এমন সময়মাঝ ময়দানে দারার এক রাজপুত জেনারেল রাও ছত্রশাল হাদা পট করে মরে গেলে পরে, দারা মাঝ ময়দানে ঠিক করেন হাতি পাল্টে ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধ করবেন তিনি। যাকে বলে সাডেন অ্যানিমেল চেঞ্জ। কথা হল, দারা হাতি থেকে নামার পর সওয়ারহীন হাতি দেয় ভোঁ দৌড়, আর দারার সিপাইরা হায় হায় করে ওঠে খালি পিঠে দারাকে দেখতে না পেয়ে। উ তো মর গিয়া। দারা মর গিয়া। তু কাঁহা। ম্যায় ইঁয়াহা। তু কাঁহা। নানাবিধ যুদ্ধের কানফাটানো কাউকাউয়ের মধ্যে কেউ বুঝল না দারা জীবিত, কেবল হাতি থেকে ঘোড়ায় উঠেছেন তিনি। সকলে তখন দারার মৃত্যু হয়েছে ভেবে ভয়ে রণে ভঙ্গ দেয় আর দারা ধীরে ধীরে পরাজয়ের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন।
সুতরাং ইতিহাস হতে শিক্ষাগ্রহণ করুন। ভাইয়ের সাথে যুদ্ধে আর যাই করেন হাতির পিঠ থেকে নামতে যাবেন না যেন।
কিন্তু খাড়ান পাঠক, ভাই নাকি অবশেষে পরাজিত? ময়দান তো ধীরে ধীরে ফাঁকা হয়ে চলেছে ঐ, ভাইয়ের নামগন্ধও নেই। আপনার সেনাপতি খবর এনেছেন কাছেই নদীর ধারে আপনার ভাইয়ের লাশ পাওয়া গেছে, তার মাথা কেটে আনার আঞ্জাম করা হচ্ছে। তার সকল সিপাইসান্ত্রী হাওয়া! সাব্বাস, গদি তাহলে আপনারই!! কুহু কুহু শোনা যায় কোকিলের কুহুতান, বসন্ত এসে গেছে। কেমনে গাঁথিব মালা, কেমনে বাজিবে বেণু। আবেগে কাঁপিছে আঁখি।
হ্যাঁ মিয়াভাই, বসন্ত এসে গেছে। অভিনন্দন বাদশা এ হিন্দুস্তান! আপনিই পারলেন। সাব্বাস, ফাডায়ালান!
পপি গাইডটি শেষ হল।
(সমাপ্ত)
সূত্রঃ
মুনিস ডি ফারুকি, দ্য প্রিন্সেস অফ দ্য মুঘল এম্পায়ার
স্যার যদুনাথ সরকার, স্টাডিজ ইন মুঘল ইন্ডিয়া
সোমা মুখার্জি, রয়্যাল মুঘল লেডিজ অ্যান্ড দেয়ার কন্ট্রিবিউশন্স
স্যার হেনরি মায়ার্স এলিয়ট, দ্য হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া অ্যাজ টোল্ড বাই ইটস ওউন হিস্টোরিয়ান্স
ডার্ক কলিয়ের, দ্য গ্রেট মুঘলস অ্যান্ড দেয়ার ইন্ডিয়া
http://harvardartmuseums.org/art/216542
মন্তব্য
ক'দিন ধরে আপনার আনাগোনা দেখে মনে হচ্ছিলো পপি গাইড আসছে। অপূর্ব একটি সিরিজ, কিন্তু শেষ হইয়া গেলো।
---মোখলেস হোসেন
সকলই শেষ হইয়া যায় জীবনে বুঝলেন
..................................................................
#Banshibir.
সুলতান মুহাম্মাদ আকবর সমাচারঃ
আওরঙ্গযেবের পুত্রদের মধ্যে যারা গোনাগুনতিতে ধর্তব্য —
* মুহাম্মাদ সুলতান (রাজপুত মা রাহমাত-উন-নিসা ওরফে নওয়াব বাই ওরফে রাজমহল বেগমের পুত্র)
* মুহাম্মাদ মুয়াজ্জম ওরফে বাহাদুর শাহ্ (প্রথম) ওরফে শাহ্ আলম (রাজ মহল বেগমের পুত্র)
** মুহাম্মাদ আযম শাহ্ (সাফাভিদ প্রিন্সেস দিলরাস বানু বেগমের পুত্র, মা ও ব্যাটা উভয়ে কঠিন শিয়া যেখানে বাপ কঠিন সুন্নী ও শিয়াবিরোধী)
** সুলতান মুহাম্মাদ আকবর (দিলরাস বানু বেগমের পুত্র বটে তবে শিয়া না সুন্নী জানতে পারিনি)
*** মুহাম্মাদ কাম বখ্শ (দারা শুকোহ্’র হারেমে একটা জর্জিয়ান ক্রীতদাসী ছিলেন — মুসলিম না ক্রিশ্চিয়ান নিশ্চিত না। দারা’র পরাজয়ের পর গণিমতের মাল হিসাবে তিনি আওরঙ্গযেবের হস্তগত হন। আওরঙ্গযেব তাঁকে বিয়ে করেননি। উদয়পুরী মহল নামে পরিচিত হলেও তাঁর আসল নাম জানতে পারিনি। কাম বখ্শ তাঁর গর্ভে জন্মান। উদয়পুরী মহল নাকি একবার আওরঙ্গযেবের সাথে সহমরণে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কেন? তিনি কি হিন্দুত্বে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন?)
যোধপুরের মহারাজা যশোবন্ত সিং (রাঠোর গোত্র) দুই জন গর্ভবতী স্ত্রী এবং কোন জীবিত পুত্র না রেখে মারা গেলে আওরঙ্গযেব যোধপুর দখলের মওকা পান। তিনি যোধপুরে এক বিশাল সেনাবাহিনী পাঠান যেখানে সুলতান মুহাম্মাদ আকবরও ছিলেন। আওরঙ্গযেব এমন ভাব ধরলেন যে যশোবন্তের দুই বিবি’র কেউ একজন পুত্র সন্তান প্রসব করলে, এবং সেই পুত্র বয়োঃপ্রাপ্ত হলে তাকে যোধপুরের সিংহাসনে বসিয়ে মুঘলরা বিদায় নেবে। যেহেতু জীবদ্দশায় যশোবন্ত সিং-এর সাথে আওরঙ্গযেবের সম্পর্ক ছুরি-মুরগী’র ন্যায় ছিল তাই অমন আষাঢ়ে গল্প যোধপুরের কারো বিশ্বাস করার কোন কারণ ছিল না। আওরঙ্গযেব যোধপুর কব্জায় এনে প্রথমে রাঠোর আমলাদের হঠিয়ে মুঘল আমলাদের বসান এবং জিযিয়া কর আবার চালু করেন।
এই ঘটনা, বিশেষত জিযিয়া পুনঃপ্রবর্তনের ব্যাপারটি রাজপুতদেরকে আওরঙ্গযেবের বিপক্ষে একসাথ করে ফেলে। এরমধ্যে যশোবন্ত সিং-এর পুত্র অজিত সিং রাঠোর জন্মান। রাঠোররা মহা ধুমধামে তাকে যোধপুরে এনে জনগণকে নিজেদের অভিপ্রায় জানান দেন। মুঘলদের হঠাতে যোধপুরের রাঠোররা মেওয়ারের শিশোদিয়া গোত্রের মহারাণা রাজ সিং-এর সাহায্য প্রার্থণা করেন। রাজ সিং আরাবল্লী পর্বতমালা অঞ্চল ও তার পার্শ্ববর্তী মুঘল অঞ্চলসমূহে মারাঠা কায়দায় দ্রুত আক্রমণ-লুট-ধ্বংসসাধণ এবং ব্যাটেল অভ দিয়েন-বিয়েন-ফুহ্ কায়দায় সাপ্লাই লাইন কেটে দিয়ে মুঘলদেরকে পর্যদুস্ত করার কৌশল নেন। মুঘলদের অবস্থা কাহিল হলে আওরঙ্গযেব সর্বাত্মক যুদ্ধের পরিকল্পনা করেন; কিন্তু আরাবল্লীর পার্বত্যাঞ্চলের যুদ্ধে আওরঙ্গযেবের পুত্র আযম এবং মুয়াজ্জমের বাহিনী ব্যাপক পিট্টি খেয়ে পিঠটান দেয়। আকবরও রাজ সিং-এর পিট্টি খান।
আকবর আরাবল্লীতে পিট্টি খেতে খেতে ভাবলেন তার বাপের হালুয়া টাইট, সিংহাসনের দাবিদার সহোদর আযম আর পরোদর মুয়াজ্জমের অবস্থাও কাহিল। সুতরাং এটাই দিল্লীর মসনদ দখলের সুবর্ণ সুযোগ। তিনি আর তার সেনাপতি তাহাবুর খাঁ মুঘলদের ভেতরের রাজপুতদের হাত করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু এটা যে রাজপুতদের জন্যও একটা মওকা সেটা মুঘলদের ভেতরের-বাহিরের সব রাজপুতই বুঝতে পেরেছিলেন। সুতরাং তারা আকবরের ভাঙা নৌকায় চড়তে বিশেষ রাজী ছিলেন না। রাজপুতদের ধান্ধা ছিল আগে আকবরকে দিয়ে আওরঙ্গযেবকে নিকাশ করা। তাই তারা আকবরের বাহিনীর সাথে যোগ দিলেও তার কমান্ডে থাকেনি।
আওরঙ্গযেব প্রথমে তাহাবুর খাঁকে পত্র পাঠান এই বলে যে, যদি তাহাবুর আত্মসমর্পণ করেন তাহলে তাকে ক্ষমা করা হবে, নচেৎ তার পরিবারের বাকীদেরকে অসম্মান ও হেনস্থা করা হবে। তাহাবুর সব দিক রক্ষার চিন্তায় গোপনে আওরঙ্গযেবের সাথে সাক্ষাতের চেষ্টা করেন। সম্রাটের তাঁবুর বাইরে একটা সাজানো ঘটনায় তাহাবুরকে খুন করা হয়। এর মধ্যে দ্বিতীয় পত্রের ঘটনাটা ঘটানো হয় (যা মূল পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে)। গভীর রাতে রাজপুতরা যখন আকবরের ভাষ্য জানার জন্য আকবরের শিবিরে আসেন, তখন দেখেন তাহাবুর নাই। ব্যাস, তারা চিঠির বয়ান সঠিক মনে করে সদলবলে পিঠটান দেন। সকালে আকবর যখন দেখলেন তার সাড়ে সর্বনাশ হয়ে গেছে তখন তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। পালাতে গিয়ে আকবর সেই রাজপুতদের হাতেই ধরা খান। রাজপুতরা যখন দেখলেন আকবরের কোন দোষ নাই, কিন্তু সে কিঞ্চিৎ অপদার্থ তখন তারা তাকে ঝেড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। মারওয়ারের মহারাজা দুর্গা দাস রাঠোর আকবরকে মারাঠা অধিপতি শম্ভাজী’র (ছত্রপতি শিবাজীর পুত্র) হাওলায় ছেড়ে দেন। অতঃপর আকবর বছর পাঁচেক শম্ভাজীর দরবারে টাকাপয়সা, সৈন্যসামন্ত চেয়ে চেয়ে কাটিয়ে দেন। আকবরকে সাহায্য করার চেয়ে বহু জরুরী কাজ শম্ভাজীর ছিল, তাই তিনি আকবরকে খালি হাতে তার মামা বাড়ি ইরানের মাশাদে পাঠিয়ে দেন।
আকবর মারা যান ১৭০৬ সালে, আর তার বাপ আওরঙ্গযেব মারা যান তার এক বছর পর ১৭০১ সালে। আকবরের এলজিবিটি ঘরাণার পুত্র নিকুশিয়ার মুহাম্মাদের জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে হেরেমের অভ্যন্তরের জেলে। ১৭১৯ সালে আগ্রার গভর্নর বীরবলের বুদ্ধিতে তিনি নিজেকে মুঘল সম্রাট বলে ঘোষণা দেন। দিল্লীতে তখন সৈয়দ ভ্রাতৃদ্বয়ের (সৈয়দ আবদুল্লাহ্ খান ও সৈয়দ হাসান আলী খান বার্হা) রমরমা চলছে। মুঘলরা তখন তাদের হাতের পুতুল। নিকুশিয়ার-বীরবলের এমন বেয়াদবীতে বিরক্ত হয়ে সৈয়দ ভাইয়েরা তাদের বাহিনীকে ব্যাপক পিট্টি দিয়ে নিকুশিয়ারকে আবার হেরেমের জেলে পাঠিয়ে দেন।
তুর্কীস্তানী সুন্নী মুঘলদের বানানো পিঠা বহুবার ইরানী শিয়ারা একার ভোগে নেবার চেষ্টা করেছে। কিন্তু কখনো সফল হতে পারেনি। আওরঙ্গযেবের শিয়াপুত্র মুহাম্মাদ আযম শাহ্ বাপের মৃত্যুর পর নিজেকে সম্রাট বলে ঘোষণাও করেছিলেন। কিন্তু জাজাউ-এর যুদ্ধে তার রাজপুত ভাই মুহাম্মাদ মুয়াজ্জমের বিশাল বাহিনীর কাছে হেরে পুত্র মুহাম্মাদ বিদার বখ্তসহ প্রাণ হারান। পশ্চিমাঞ্চলের শিয়া ডায়নাস্টিগুলোর কোনটা যদি মুঘলদের হারাতে পারতো অথবা আযম শাহ্ সিংহাসন দখল করতে পারতেন তাহলে আজকের ভারতবর্ষের মুসলিমদের মধ্যে হয়তো শিয়ারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হতো।
কার মা কোন পরিবারের মেয়ে, তার ধর্ম কী, বর্ণ কী; কার শিক্ষক কে ছিলেন; কার নানা-মামারা কোন পজিশনে আছেন; কাকে বর্তমান সম্রাট কোন চোখে দেখেন; কাকে কী পদ দেয়া হলো; কার মেলামেশা কাদের সাথে; কার ট্যাঁকের জোর কতটুকু; কার মুখের ভাষা কী — এমন হাজারোটা ফ্যাক্টর কাজ করেছে কে মুঘল সম্রাট হতে পারবেন আর কে পারবেন না সেটা নির্ণয় করতে। সুতরাং গাইড নামে ‘পপি গাইড’ হলেও সেটা অনুসরণ করা খুব সহজ ছিল না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পপি গাইড হইল জিপিএস। সে রাস্তা দেখাতে পারে কিন্তু গাড়ি চালাইতে হবে আপনারই। বুঝতে হবে। অনুসরণ করা সহজ না হলেও কবি খেলায়েতের ভাষায় লাইক দিয়ে পপি গাইডের পাশে থাকুন।
যদুনাথ সরকার লিখছেন মুহম্মদ আকবর পটল তুলছেন ১৭০৪ এ, আপনে লিখছেন (এবং আরো কয় জায়গায় আছে) ১৭০৬। বিষয়টা নিয়ে গভীর চিন্তার প্রয়োজন আছে। আরেকটু খুঁজে দেখব ভাবতেছি। (অটঃ পলাতক প্রিন্সেরা তাড়া খায়া কেবল মামাবাড়ি সাফাভিদ ইরানে পলাইত, মক্কামদীনা যাওয়ার উছিলায় কেউ ওসমানি সাম্রাজ্যে পলায়নাই কেন জবাব দেন। একইসাথে, তিন সাম্রাজ্যের ইন্টার্ন্যাশনাল রিলেশনঘটিত ভাল বই জানা থাকলে তর্জনি নির্দেশ করেন)
নিকুশিয়ার এক বিভ্রান্ত বাদশা। কখন কোথায় সে যে কার সে নিজেও তা জানেনা, তারে নিয়া কথা না বাড়ানোই ভাল। সে হেরেমেই পচুক সমস্যা নাই।
উদয়পুরি মহল আওরঙ্গজেবের সাথে সতী হইতে চাইছিলেন এ তো বড় আজব কথা। উনি হিন্দুত্বে কনভার্ট হইছিলেন কিনা সেইটা কথা বটে, কিন্তু আমি তো শুনছিলাম আওরঙ্গজেব কঠরহস্তে সতী নিষেধ কইরা ফরমান জারি করছিলেন (যদিও লাভ হয়নাই কোন)। সেই তার বউ/রক্ষিতা সহমরণের প্রপোজাল দিলে তো হিসাব মিলে না...
বিগত কয়েক মাসে খাবলা খাবলা রাজপুত গোত্রপরিচয় ও বিবিধ গোত্রের ইন্টাররিলেশন ও এক্সটার্নাল রিলেশন (মোগল মারাঠা শিখের সাথে ধরেন) বুঝার চেষ্টা করতেছি। সবই কানেক্টেড এগিলি।
..................................................................
#Banshibir.
ওসমানী বংশের সঙ্গে মুঘলদের কি কোন বৈবাহিক সম্পর্ক ছিল? আর থাকলেও খুব একটা লাভ হত বলে মনে হয় না। সাফাভিদ শাহ্দের সঙ্গে মুঘলদের সংঘর্ষ ছিল; সুতরাং সাফাভিদ শাহের মুঘল ভাগ্নে হয়ত আশা করতে পারত মামা তাঁর পক্ষে কিছু একটা করবে! একে তো ওসমানীদের সঙ্গে মুঘলদের কোন ঝগড়াঝাঁটি ছিল না; তার ওপর ভাগ্নের মামার বাড়ির আবদার মেনে নিয়ে কোন ওসমানী সুলতান যদি ভারত আক্রমণ করতেও চাইতেন, তাঁকে ইরান আর আফগানিস্তান পার হয়েই আসতে হত। পুরো ব্যাপারটাই হত একটা ইম্প্র্যাকটিকাল এক্সারসাইজ!
মার্শাল হজসনের The Venture of Islam, Volume 3-তে কিছু থাকলেও থাকতে পারে...
Emran
চোরাপথে কাউরে না বইলা হজসন নামাইলাম। পড়িনাই এখনো খালি চোখ বুলাইছি। তিন সাম্রাজ্যের বিষয় তিন চ্যাপ্টারে লেখা দেখলাম। এরম আলাদা আলাদা তিন সাম্রাজ্যের উপর ফোকাস করা বই আগেও পড়ছি যেগুলিতে এরা একে অপরের সাথে ঠোকাঠুকি গলাগলি কতখানি করছে আর একে অন্যের সম্পর্কে কী ভাবত সেই বিষয়ে বিশদ নাই। এই বইয়ে থাকলে ভালোই হইব। লিঙ্কের জন্য থ্যাঙ্কু এবং হালিম।
মোগল-ওছমানি বিষয়ে দূরত্ব অবশ্যই ফ্যাক্টর, আপনে সঠিক। আমি খালি কইতে চাইলাম যত মোগল পাপীতাপী হারুপার্টি স্থল ও নৌপথে পালানোর সময় বুলবুলিস্তান পারস্যেই গেল, কেউ একটু সুন্নি আরব এলাকায় পলাইলনা। তিন সাম্রাজ্যের মধ্যে মোগল সর্বকনিষ্ঠ, ওসমানি মামুরা কি সেইজন্য মোগলরে গণায়ই ধরতনা? এই বিষয়টা বুঝার চেষ্টা করতেছি। মালমশলা থাকলে কন "অটোমান চোখে মোগলঃ কোন আলো লাগল চোখে" শীর্ষক এমরান-পীর যৌথ প্রযোজনা নামাই। পাণ্ডবদা আওয়াজ দিলে গণপুস্টও করা যায়।
..................................................................
#Banshibir.
আরও দুইটা লিঙ্ক পাইলাম! এর মধ্যে জনাব আলী-র থিসিসটার পিডিএফ গুগল স্কলারে ফ্রি পাওয়া যায়; প্রথম চ্যাপ্টারের বিষয়বস্তু ওসমানী-মুঘল সম্পর্ক।
The Land of the Foreign Padishah: India in Ottoman reality and imagination
Ali, S. (1988) Relations of the Ottoman Empire with the Indian Rulers 1750-1924.
Emran
মায়া পেত্রোভিচ মাদামের পয়লা পেপার পড়তে পড়তে ঘুম চলে আসছিল, এতোই অ্যাকাডেমিক ...কিন্তু আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শমশাদ আলীর দুই নম্বর পেপারটা একবারে লাইক দিয়ে পাশে থাকার মত পেপার। মোগল বাদশা ধরে ধরে ওসমানি সম্পর্ক লেখা, পার্ফেক্ট। বিশেষতঃ কান্দাহার নিয়ে সাফাভিদ-মোগল কামড়াকামড়ির সুযোগে অটোমান চাইর নং মুরাদের জাহাঙ্গীরের প্রতি চিটঠির কথা পইড়া হলাম চমৎকৃত ও ভূপাতিত। চিঠিতে মুরাদ উজবেগ সাহায্য নিয়া সাফাভিদকে পোঙ্গা মারতে উৎসাহ নাকি দিছিলেন। ফ্যাছিনেটিং গঠণা। অটোমান-উজবেগ-মোগল তিন সুন্নি শক্তি তিনদিক দিয়া শিয়া সাফাভিদকে চাইপা ধরার ক্ষীণ সম্ভাবনা নাকি দেখা দিছিল জাহাঙ্গীর মরার আগে আর শাজাহানের এক সময়, কিন্তুক জাহাঙ্গীর গেলেন মইরা আর তার পুলার আমলে এক মধ্য এশীয় মামু নাকি কাবুল না কাশ্মীর দখল করায় এই ত্রিপাক্ষিক শক্তি ভেস্তে যায়। ভালো কথা। কোন তথ্যই ক্রস চেক করে দেখিনাই কিন্তু ভালো একটা পেপার দিবার জন্য ধন্যবাদ ও হালিম। কান্দাহার নিয়া দূর ভবিষ্যতে অত্যন্ত বড় প্রজেক্টে হাত দিবার ইচ্ছা আছে, ঘনঘন ঘটনার ঘনঘটায় ঘনীভূত এলাকা কান্দাহার।
আরেকটু খুঁজে এসে পরে জানাচ্ছি আর কিছু পাইলাম কিনা এই বিষয়ে। আপাতত আপনি যা পাইছেন তা জড়ো করে একটা পোস্ট দিবেন নাকি?
..................................................................
#Banshibir.
আমি নিজে তেমন কিছুই পাইনাই! ওসমানিয়াদের সঙ্গে ইউরোপীয়দের সম্পর্ক নিয়ে যত গবেষণা হয়েছে, তার এক ভগ্নাংশও সমসাময়িক মুসলিম শক্তিগুলির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নিয়ে হয়নাই। আর শামশাদ আলী ওসমানিয়া আর্কাইভে গবেষণা করেননি; সেটা করতে পারলে তার থিসিস আরও সমৃদ্ধ হত!
প্রথম মহাযুদ্ধের ইতিহাস পড়তে যেয়ে ওসমানিয়াদের ব্যাপারে আমার আগ্রহের সূত্রপাত ঘটে। আমি আরও যেটা চিন্তা করি, "ইসলামী সভ্যতা" বলতে আমরা সাধারণভাবে যা বুঝি, তাতে ওসমানিয়া তথা বারুদ সাম্রাজ্যগুলির অবদান কতটুকু? ইসলামী সভ্যতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি হয়েছে আব্বাসিয়া বাগদাদ আর উমাইয়া আন্দালুসিয়াতে; ওসমানিয়া, সাফাভিদ, মুঘল - এরা করল কী?
Emran
অটোমান সাফাভিদ নিয়া আমার কোন পড়াশোনা নাই, মোগল সাইন্স ও টেকনোলজি নিয়া কয়টা বই পড়ছিলাম অবশ্য। সেইগুলাও পুরা বুঝিনাই অথবা ঠিকমত লেখা নাই, বিজ্ঞানবিষয়ক মোগল অবদান/কর্মকাণ্ড নিয়ে রেফারেন্সমূলক বই স্বল্প।
তবু রেফারেন্স নাই বইলা বসে থাকলে চলবে না। বাগদাদ হাউস অফ উইজডম আর বারুদ সাম্রাজ্য নিয়া তুলনামূলক যা বুঝছেন কিঞ্চিৎ লিখতে পারেন কিন্তু। বিশেষত অটোমান আর সাফাভিদ বিষয়ে যা পড়ছেন লিখে পোস্টান। আমি মোগল বিষয়ে যা জানা আছে তার সামারি দিতেছি মন্তব্যে। ছয় নম্বর পাণ্ডবরে গুঁতা না দিলে জীবনে কোন তথ্য বাইর হয় না, উনারে পোস্ট দিতে বলার বদলে আপনে পোস্টানোর পরে উনারে ট্যাগ কইরা কড়া কড়া রিলেভেন্ট কুশ্চেন করব, দেখবেন সব ভ্যারভ্যার করে বের হয়ে আসতেছে। সাথে দেখা যাবে আরও অনেকে আওয়াজ দিছে। জমজমাট আলোচনা হৌক আপনার পোস্ট ঘিরে।
ছোট করেই লেখেন, আস্ত ইতিহাস লেখার দরকার নাই। অপেক্ষায় পীর এ নাজির।
..................................................................
#Banshibir.
এইভাবে পাবলিকলি আমার গোমর ফাঁস করে দিলেন! পাল্লেন, আপনে পাল্লেন!!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমি পেপার দুটোর একটাও নামাতে পারিনি তাই শামসাদ আলীর বয়ানের ব্যাপারে কিছু বলতে পারছি না। তবে মুঘলদের ব্যাপারে দুটো পর্যবেক্ষণের কথা বলি তাহলে ধারণা করা যাবে তাদের বহিঃযোগাযোগ কেমন ছিল।
এক, মুঘল সাম্রাজ্যের কোন পর্যায়ে তাদের সন্নিহিত অন্য কোন সাম্রাজ্যের সাথে তাদের বিশেষ কোন যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি। ব্যতিক্রম আফগান ও ইরানী সাম্রাজ্যগুলো। বাড়ির কাছের নেপাল, আসাম, তিব্বতের সাম্রাজ্যগুলো, একটু দূরের চীন, ইন্দোচীন, কোরিয়া, জাপান, বর্তমান আসিয়ানের সাম্রাজ্যগুলো কারো সাথেই তাদের বিশেষ সম্পর্ক ছিল না। মক্কা-মদিনা ওসমানীয়দের দখলে থাকায় তাদের সাথে একটা দূরবর্তী যোগাযোগ ছিল মাত্র। দক্ষিণ ভারতীয় পেনিনসুলার অনেক জায়গায় মুঘলদের পা-ই পড়েনি। তারা নিজেদের তৈরী এক প্রকার অদৃশ্য বাউন্ডারির মধ্যে নিজেদেরকে রেখেছিল। ইউরোপীয়দের সাথে মুঘলদের যোগাযোগের কৃতিত্ব ইউরোপীয়দের। ঘোরতর রেনেসাঁর আমলে মুঘলরা ভারতবর্ষ শাসন করে গেলেও এবং ঐ সময়ে ইউরোপীয়দের সাথে যোগাযোগ থাকলেও রেনেসাঁর হাওয়াবাতাসের বিন্দুমাত্রও এখানে বয়নি।
দুই, আওরঙ্গযেব পূর্ববর্তী সবার আমলে ফরগানা পর্যন্ত সাম্রাজ্য বিস্তারের অভিযান চলেছে বার বার, কিন্তু কখনোই তা সফল হয়নি। মুঘলরা ফরগানা থেকে বাংলা পর্যন্ত সাম্রাজ্য বিস্তার করতে চেয়েছিল। রুশ এবং তুর্কীস্তানীদের ভারত মহাসাগরে পা রাখার যে আজীবনের স্বপ্ন মুঘলরা তার আংশিক পূরণ করেছিল মাত্র। মুঘলরা তার বাইরে যেতে পারেনি। অবশ্য বিশাল ভারতবর্ষের ছোট-বড় অসংখ্য রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে সাম্রাজ্য বাড়ানো, টিকিয়ে রাখার জন্য এক মুঘল জীবন যথেষ্ট নয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আপনার ইমেইলে পাঠিয়েছি।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
লাফানো মন্তব্য______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এই বিষয়ে ইউট্যুবে শিক্ষামূলক পুস্ট আছে।
..................................................................
#Banshibir.
পেত্রোভিচের ডকুমেন্টটা পড়া যায় না। ডাউনলোড করে ওপেন করা মাত্র কয়ঃ "দিস ডকুমেন্ট ইজ নো লঙ্গার ভ্যালিড"। তারপর শুধু সূচীপত্রটা ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না!
****************************************
অ্যাক্রোব্যাট কোন একটা ঝামেলা করতেছে। ক্রোম দিয়া খুইলা দেখেন, ক্রোমে আমারে এরর মেসেজ দেখাইলেও ওকে দেওয়ার পরে পুরা ডকুমেন্ট ঠিকমত খুলছে।
..................................................................
#Banshibir.
রাজপুতদের হাতে ফেলে দেওয়া আওরঙ্গজেবের চাতুরির চিঠির ব্যাপারটা মজা লাগলো। এ নিয়ে একটা মোগলাই স্পাই থ্রিলার জমিয়ে ফেলেননা পীরসাহেব। মোগলাই গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে সেরকম কিছু রচনা করা যায় কি?
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
কবুতর ফারুক লিখি তো স্পাই থ্রিলার। দুইটা আধা-ফিনিশ গপ আছে ঝাড়ামুছা কইরা দিবনে।
..................................................................
#Banshibir.
এখন আর মুগল হইয়া কি ফয়দা? এই জমানায় কিভাবে গদিতে বসতে পারমু সেই পপি গাইড টা দেন পিলিজ
ভুল জমানায় জন্ম নেওয়ার কষ্ট ও বেদনা আমিও ফিল্করি
..................................................................
#Banshibir.
এই প্রশ্নটা আমি করবো ভাবছিলাম।
খালি অন্যরে উস্কানি দেয়া না! পপি গাইড লেখক নিজে কয়টা সালতানাত উল্টে দিয়ে বাদশা এ হিন্দুস্তান হইছেন জানতে মুঞ্চায়
বড় পোস্ট কিন্তু লেখা এত মজার, পড়তে ক্লান্তি আসে নাই(জ্ঞান বিজ্ঞান দুটোরই অভাব আমার, তথাপি উপভোগ করছি)। অনেক দিন পর সচলে এসে আপনার মজারু পোস্ট পাইয়া ব্যাপক আনন্দিত হলেম।
কুচের ছক্কা মারা লাগেনা, কুচ কেবল দেখায় দেয় ব্যাট কুন্দিক ঘুরাইলে ছক্কা হইব।
..................................................................
#Banshibir.
ইয়ে মানে 'কুচ' একটা বাংলা শব্দ যেটার অর্থ একটু ইয়ে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
..................................................................
#Banshibir.
মোগল আমলের প্রমোদবালাদের নিয়ে এইবার "কীভাবে পপি হবেন: একটি সহজ মোগল গাইড (ভিডিওসহ)" শিরোনামে একটা ছাত্রসখা লিখেন গো পীরসাপ।
কবুতর ফারুকের গালফ্রেন্ডের গপ চাইর বছর ধইরা পেন্ডিং আছে। সে মহলের তহশীলদার, তার গপে হেরেমের সকল ললনা ও ছলনার কথা ফাঁস হইবার কথা। হইবনে একদিন।
..................................................................
#Banshibir.
১. সুলতান মুহাম্মাদ আকবরের পারস্যের জীবন নিয়ে প্রায় কিছুই জানি না। তাই সালটা ১৭০৪ নাকি ১৭০৬ এটা নিশ্চিত বলতে পারছি না।
২. ইরানে মামাবাড়ীতে পালানোর সুবিধা অনেক। প্রথমত, সেখানে আশ্রয় দেবার মানুষ পাওয়া যাওয়া সম্ভব যেটা মক্কা-মদিনায় সম্ভব না। দ্বিতীয়ত, ইরান বহু বহু কাল আগে থেকে যথেষ্ট সমৃদ্ধ দেশ ওই আমলের আরবের মতো দরিদ্র-বিরান দেশ না। ফলে ইরানে মৌজ-মস্তি’র সুযোগ অনেক বেশি ছিল। তৃতীয়ত, ইরান ভারতের গা লাগোয়া বলে একটা আশা সবসময় থাকে যে একদিন একটা মওকা বুঝে কোন না কোন কোনা দিয়ে ভারত আক্রমণ করে কিছুটা দখল করা যাবে।
৩. গানপাউডার ডায়নাস্টিত্রয়ের মধ্যকার অন্তঃসম্পর্ক নিয়ে কোন বই চোখে পড়েনি। বিশেষত উসমানীয়দের সাথে মুঘলদের সম্পর্ক নিয়ে বলার মতো কিছু পড়তে পাইনি। সর্বত্র কেবল এদের মধ্যকার তুলনাটা চোখে পড়ে। এই ব্যাপারে আমার একটা হাইপোথিসিস আছে। উসমানীয়-সাফাভিদ-মুঘল তিন বংশেরই উৎপত্তি আসলে বৃহত্তর তুর্কীস্তানে। গানপাউডারসহ আরও কিছু টেকনোলজি এরা পেয়েছে হানদের কাছ থেকে। সুতরাং কাস্পিয়ানের চারপাশ ঘেঁষে হোক আর গোবির বিস্তার জুড়ে হোক কোথাও না কোথাও এদের কমন নোড আছে। তিন বংশই নিজ ভূমি ছেড়ে অন্য দেশে গিয়ে সাম্রাজ্য স্থাপন করেছে। উসমানীয়রা রাতারাতি তুর্কীস্তানী থেকে তুর্কী, সাফাভিদরা তুর্কীস্তানী থেকে ইরানী হয়ে গেছে, এই ক্ষেত্রে মুঘলদের ভারতীয় হতে সময় অনেক বেশি সময় লেগে গিয়েছিল। সাফাভিদদের সাথে মুঘলদের বা উসমানীয়দের যেসব টুকটাক অম্ল-মধুর সম্পর্ক দেখা গেছে সেটা নিতান্ত কমন সীমান্ত থাকার দরুন। আধমরা সাফাভিদদেরকে একসময় উসমানীয়রা যে খেয়ে দিয়েছে সেটাও প্রক্সিমিটি বিবেচনায়। নয়তো উসমানীয়রা পূর্ব দিকে আসতে চাইলে অনেক আগেই সাফাভিদদের সমূলে খেয়ে দিতে পারতো।
৪. নিঃসন্দেহে এই পোস্ট নিকুশিয়ারের সাথে সম্পর্কিত নয়। তবে প্রসঙ্গটা যেহেতু আমি তুলেই ফেলেছি তাই তার সম্পর্কে একটা ধারণার কথা বলে যাই। নিকুশিয়ার বেঁচেছিলেন ৪৩ বছর। এর মধ্যে প্রথম তিন আর শেষের দুই বছর ছাড়া মাঝের ৩৮ বছরই তাকে কাটাতে হয়েছে হেরেমের বন্দীশালায়। কিন্তু কেন? কী অপরাধে? একটা সম্ভাবনা হতে পারে নিকুশিয়ার বৃহন্নলা ছিলেন, আরেকটি সম্ভাবনা হচ্ছে তিনি পুরুষদেহে একজন নারী ছিলেন। নিকুশিয়ারের আমৃত্যু অবিবাহিত থাকার কারণ বোধকরি এটা। মুঘল পরিবারে এই প্রকার কোন সন্তান জন্মালে তাকে সনাক্তকরণের নূন্যতম সময়ের মধ্যে মেরে ফেলার কথা। কিন্তু নিকুশিয়ার বেঁচে যাবার কারণ সম্ভবত তার ক্ষমতাবান পিতা অথবা তার সর্বময় ক্ষমতাবান ঠাকুরদা’। এক্ষেত্রে তার পিতার ভূমিকা কম হবার কথা। কারণ, তার পিতা আগ্রাতে ছিলেন কম সময়, বিদ্রোহী হয়ে ফেরারী হয়ে দীর্ঘদিন আগ্রা থেকে বহু বহু দূরে কাটিয়েছেন। নিকুশিয়ার যদি তার ঠাকুরদা’র স্নেহধন্য থেকেও থাকেন তাহলেও ১৭০৭ পরবর্তী সময়ে তাকে কে আগলে রেখেছিলেন? রাজ্যপাট তখন তার পিতার বৈরীদের হাতে। একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা হচ্ছে নিকুশিয়ারের সাথে ওই সময়কার কোন ক্ষমতাধর পুরুষের শারিরীক সম্পর্ক ছিল, যে তাকে নিহত বা নির্বাসিত হবার হাত থেকে রক্ষা করেছিল।
৫. উদয়পুরী মহল হিন্দু হয়েছিলেন এমন কোন প্রমাণ আমাদের কাছে নেই। আওরঙ্গযেবের অসুস্থতাকালীন সময়ে তার পাশে থাকা উদয়পুরী মহল যদি স্বামীর সাথে মৃত্যু কামনা করে থাকেন তাহলে সতীশ চন্দ্রের মতো লেখকেরা তাকে সহমরণে যাবার ইচ্ছা > হিন্দুত্বে কনভার্ট হওয়া ইত্যাদি লিখতে পারেন।
৬. হিন্দু ধর্ম একটা বিশাল আমব্রেলা। রাজস্থানে সেই আমব্রেলার নিচে যারা আছে তাদের একটা বড় অংশ আগে ছিল সৌর উপাসক। সেই আমব্রেলার বাইরের রাজপুত মুসলিম, শিখ, জৈন ও খৃষ্টানরাও আগে মূলত সৌর উপাসক ছিল। রাজপুত গোত্রগুলোর মধ্যকার অন্তঃসম্পর্ক এবং অন্যদের সাথে তাদের সম্পর্কে বুঝতে চাইলে এই বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে। এই বিষয়টা এখনও গুরুত্বপূর্ণ। রাজপুতণা’র বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের উৎসও এখানে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
৪। আকবর বেঈমানি করবার পরে আওরঙ্গজেব তার ফ্যামিলিরে (নিকুশিয়ারসুদ্ধা) জেলের পুলাউ খাওয়ায় মারছেন আর এমনকি কন্যা জেবুন্নিসারেও কয়েদে ভরছেন আকবরের উপর রাগ করে...এইরকমটাই তো পড়ছি। আপনার নিকুশিয়ার ঘটিত সুসমাচার দেইখা আবার চিন্তা করতে বাধ্য হইলাম। উনি যদি সত্যই তৃতীয় লিঙ্গ হয়া থাকেন আর সেইটা লুকানোর জন্য আওরঙ্গজেব, মুহম্মদ আকবর কিংবা অজানা কোন প্রভাবশালী লোক তাকে চল্লিশ বছর গারদে ভরে রাখে, সেইটা তো একটা কঠিন প্লট ট্যুইস্ট কইতে হয়। ব্যাপক। হ্যাড টু বি ক্রুয়েল ওনলি টু বি ইত্যাদি।
একদিক দিয়া ভাবলে এই সম্ভাবনা আছে বইলাই মনে হয়, বাপের অপরাধে ছেলেকে শাস্তি দিতে আওরঙ্গজেব বধ্যপরিকর থাকলে শম্ভুজির পুলা শাহুজিকেও তিনি কুত্তা দিয়া খাওয়ানোর সুব্যবস্থা করতেন। সেইরকম কিছু তো দেখলাম না।
আর কোন মোগল কন্সপিরেসি থিউরি আছে নাকি?
৬। রাজপুত গোত্রটোত্র বিরাট আমব্রেলা হইলেও তাদের ক্রীম দে লা ক্রীম অলিগার্কির মুঠোভর্তি রাজপুতের বংশ ও বিবিধ মোগল শাসকের সাথে তাদের মুহব্বত বা খেউরাখেউরির খসড়া তালিকা করতেছি। আম রাজপুত গোত্র ও তাদের হাজার বছরের ইতিহাসে আমার আপাতত প্রয়োজন নাই। একই তরিকার খসড়া মোগল বিবি ও প্রধানমন্ত্রীর কুলুজি নিয়াও করতে হবে। এরপর বিজিনেছ ইনসাইডারের মত মোগল ইনসাইডার খুলুম আর ক্লিকবেইট পুস্টামু। "ফর্টিন থিংস ইউ ডিডন্ট নো এবাউট মোগল ওয়াইফসঃ নাম্বার নাইন উইল শক ইউ"
..................................................................
#Banshibir.
৪। নিকুশিয়ার প্রশ্নে আর কোন সম্ভাবনা আমার জানা নাই। মুঘল প্রাসাদের অভ্যন্তরে এতো অমানবিক, হৃদয়বিদারক, নৃশংস ও মর্মান্তিক ঘটনা প্রতিদিন ঘটেছে যে আপনাকে কোন অনুকল্প ভাবতে গেলে ক্রুয়েল হওয়া ছাড়া গতি নাই।
৬। ইতিহাসের জট খোলার ক্ষেত্রে ceteris paribus বলে ব্যাখ্যা ঝাড়ার উপায় নেই। সেখানে এতো ফ্যাক্টর, আবার সেগুলোর অন্তঃসম্পর্ক এতো বেশি যে খেই রাখা যায় না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বুঝলাম। জ্ঞানের অভাবে আলোচনায় অংশ নিতে পারতেছি না (স্টোরি অফ মাই লাইফ )
পুনশ্চ, আপনার গাইডের তরিকায় সিংহাসন দখল করতে গেছিলাম। সমস্যা হইছে যে আমার আব্বার কাঠের চেয়ার তিনি বিনা বাক্যব্যয়ে ত্যাগ করে খাটে গিয়ে শুইলেন! এমতবস্থায় আমার ষড়যন্ত্র কী ব্যর্থ বলে ধরা হবে!?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
জ্ঞানের অভাব না পুস্টে বিজ্ঞানের অভাব সেইটা হইল কথা।
পিতার এহেন আচরনে আপনার ভাইদের প্রতিক্রিয়া কিতা? তারা কি মাঠে, ঘাটে ও গাছে হলদে/সবুজ/লাল (আপনার কালার না মিললেই হইল) ঝাণ্ডা উড়ায় তেড়ে আসতেছে? আপনার সৎ তথাপি অসৎ মাতা কি হিংসায় জারেজার?
উপরোক্ত আভাস না পাওয়া গেলে প্রাসাদ ষড়যন্ত্র সমাগত। বেস্ট কেস সিনারিও আপনার চউখ যাইব, আর উয়োর্স্ট কেস সিনারিও আপনেরে গোয়ালিয়র দূর্গে বাইন্ধা চাবকানো হবে, ফলোড বাই রাইতের আন্ধারে অনামা কব্বরে বডি খালাস
..................................................................
#Banshibir.
খতম তারাবী পইড়া ফেললেন, কিন্তু পপি গাইডের মালকিন মিস পপি সম্পর্কে কিছুই কইলেন না?
খতমে তারাবির পরেও থাকে তাহাজ্জুদ।
..................................................................
#Banshibir.
শেষপর্ব জেনে একটু ব্যথিত হইলাম। আরেকটু কী যেন বাকী আছে বলে মনে হচ্ছে বারবার। খানিক অতৃপ্তি রয়ে গেল। ভেবে দেখেন আরেকটু এক্সটেনশন করা যায় কিনা। অন্তত আপনার লেখার ক্ষেত্রে সাইজ ডাজন্ট ম্যাটার
ভারতবর্ষে মোগলদের পিতা পুত্র ভাই বেরাদরদের বৈচিত্রময় প্রাসাদ ষড়যন্ত্র নিয়ে একটা পুস্তক রচনা করা যায় কিনা ভেবে দেখতে পারেন। মালমশলা তো সবই আছে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
কিভাবে ______ হবেন শীর্ষক আরও গাইডের জন্য পপি লাইব্রেরি তাগাদা দিতেছে আপনার মত। পরে হবিনে। আপাতত রাজপুত গ্রোত্র নিয়ে পড়তেছি তাদের সাথে মোগল সম্পর্ক বুঝতে পারার জন্য। বিস্তারিত বুঝার পরে মোগল ও রাজপুত রহস্যঃ লাভ ইন রাজপুতানা শীর্ষক পোস্ট দিতে হবে।
..................................................................
#Banshibir.
পপি গাইড যাকে বল্যে একেবারে ঝিলম ঝিলম হইচ্চে।
জ্বীনের বাদশার আকবর করে দেওয়াটা চরম
লাভ ইন রাজপুতানা পোস্ট পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
অনেকদিন পর এই মুল্লুকে পীরের উঁকিঝুঁকি দেখতে পাচ্ছি। নতুন মাজেজা আসছে নিশ্চয়ই!
---মোখলেস হোসেন
কে কৈছে, আমি তো নিয়মিত নটা-পাঁচটা লগড ইন থাকি আর সবই নজরে রাখি...
..................................................................
#Banshibir.
নতুন মন্তব্য করুন