বছর পুরে গেল ঘরবন্দী জীবন। গত বছর মার্চের ১২ তারিখ বিষ্যুদবার আপিস থেকে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ডিক্সি রোডে পিড়িং করে ফোনে নোটিফিকেশন আসে এইচ আর থেকে। ঘরে এসে গাড়ি পার্ক করে চিঠি পড়ে দেখি কর্তাবিবির হুকুম পরদিন থেকে আপিস যাওয়ার দরকার নাই। দালান বন্ধ। দুই তিন সপ্তাহ পরে তারা আশা করছেন সকলই খুলে দেয়া হবে আর আমরা অন্তত আমাদের ডেস্কের জিনিসপাতি নিয়ে আসতে পারব। সেই তিন সপ্তা বেড়ে হল এক বছর, কবে আবার আপিসে ফিরত যেতে পারব কে জানে। মগে অল্প কফি রয়ে গিয়েছিল মনে হয়, কেউ কি সেটা ফেলে দিয়েছে? না ফেলে থাকলে হ্যাযম্যাট জামা পরে মগ উদ্ধার অভিযানে নামতে হবে এনশাল্লা।
বাসায় বসে কাজ করা বয়াম থেকে মুড়ি খাওয়ার মত। ঠিক কখন থামতে হবে ধরা কঠিন। আমি পিঠোপিঠি নানাবিধ মিটিঙের পরে বিকালে বসে দিনের নানা টুকে নেয়া নোট জড়ো করে কাজ করতে করতে দেখি একটা নীল ঝুঁটিওলা পাখি বসে জানালায়। ঠাণ্ডা কমে যাচ্ছে তাহলে। হেলান দিয়ে ভাবি পাখিটার মত বাইরে একটা চক্কর দিয়ে আসি। নাকি ইব্রাহীম আদিল শা’র নওরাসপুর নিয়ে আধা ফিনিস লেখাটা ধরব? দোনোমোনো করে বরঞ্চ বসি হিমু ভাইয়ের নতুন উপন্যাস আগুনি পড়তে।
বই রিভিউ কঠিন কাজ। কেউ কেউ অনায়াসে পারেন, গুডরিডসে দেখি চমৎকার লম্বা বিবিধ বইয়ের বিস্তারিত রিভিউ। আমি কখনোই লিখতে পারিনি। আমি প্রচুর টিভি সিরিজ দেখি, এক একটা দেখে মনে হয় একটা রিভিউ লিখলে চমৎকার হয়। এক দুই প্যারার বেশী লেখা আগায় না। সবাইকে দিয়ে কি আর সব কিছু হয়?
আগুনি বইটা পড়তে পড়তে রিভিউ লিখতে না পারার বেদনা অল্প চাগিয়ে ওঠে। বিশাল বই, বারোশ পাতা মনে হয়। শ আড়াই পাতা পড়েছি। আশ্চর্য একটা বই। পাতায় পাতায় ছবি, মনে হয় কৈশোরে ফিরে গিয়েছি সোভিয়েত বইগুলো পড়ার দিনে। যেমন লেখা তেমন আঁকা। গল্পদ্রুম নামে এক প্রকাশনা সংস্থার বই, নতুন ওয়েবসাইট। সেখানে লেখা “জগৎসজ্জাকেন্দ্রিক ফ্যাণ্টাসি বা রূপকথার ধারায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যে বাংলা সাহিত্যে গল্প-উপন্যাস বিরল। গল্পদ্রুম এ ধারায় নতুন রস সঞ্চারে ব্রতী।” জগৎসজ্জাকেন্দ্রিক ফ্যাণ্টাসি জিনিসটা কি আমাকে কেউ বলে দেয়নি, কিন্তু বোঝার চেষ্টা করেছি অনেক সেইটাও ঠিক না। বই পড়া আরম্ভ করলে খানিক জগৎসজ্জার ব্যাপারটা বোঝা যায়।
গেইম অফ থ্রোনস আমরা সকলেই পড়েছি, দেখেছিও। সেইখানে সুন্দরী ডানেরিস তিনটে ড্রাগন বাচ্চার জন্ম দেয়, বড় হলে সেগুলের ঘাড়ে চড়ে গ্রাম কা গ্রাম ভস্ম করে দেয়। উত্তরে দেয়ালের ঐপারে হাজার বছর বয়েসী হোয়াইট ওয়াকার আর তাদের সর্দার নাইট কিং পরে একটা ড্রাগন কব্জা করে নেয়। জীববিজ্ঞান পদার্থবিজ্ঞান গণিত এগুলির বালাই নেই। আরেক দুনিয়ার গল্প। নিয়মকানুন সবই আলাদা। আগুনি পড়া আরম্ভ করলে লেখক ঠাস করে সেরকম আরেক দুনিয়ায় নিয়ে ফেলেন। সেখানে অংদেশ আছে, বংদেশ আছে। আরো আছে চং দেশ। অং সায়র টিং সায়র। চান্নিঠাকুর সুজ্জিঠাকুর। বংদেশের তরুণ “বীর”, যে লাঠিখেলায় ব্যাপক দড় (সেও আরেক ঢ়হস্যঃ জনপ্রিয় শাস্ত্র তলোয়ারবাজি বা তিরন্দাজি ছেড়ে কেন লাঠিখেলার ওস্তাদ হল সে?)। মধুদামাদকে সে কুয়া থেকে বের করে আনে কুড়ি (নাকি দশ) গরুর প্রতিশ্রুতির বদলে। লতি ডাকাতকে কুপোকাত করা চলে সহজেই যখন সে দেখে ডাকাত লাঠির উপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশিক্ষিত শস্ত্রী লাঠিকে তৈয়ার রাখে সর্বদা। আছে বিজ্ঞানী জলিলিও জলিলি, দূরবিন নিয়ে কি যেন একটা ফ্যাঁকড়া। টহলনায়ক মোষমানিক দাঁত কিড়মিড় করে বাইরের কক্ষে তার অপেক্ষায়। এক জাদুকর আগুনের খেলা নিয়ে হাজির হয়েছে, তাকে নিয়ে তোলপাড়। তার মতলবটা সঠিক বোঝা যাচ্ছেনা, সে কি তবে আগুন নিয়ে জাদুর হাঁড়ি হাটে ভেঙেই দেবে?
লম্বা গল্প। তরতর করে চলে। এরকম শক্ত গাঁথুনির গল্প দেখে ভালো লাগে, আবার মন খারাপ ও হয়। বাইরের কেউ এরকম গল্প লিখলে শক্ত পরিচালকের হাতে আগুনি নিয়ে চমৎকার মুভি/ টিভি সিরিজ হত নিশ্চয়। সে যাক। এরকম বাংলা গল্প পড়া যাচ্ছে সেও কম নয়।
পড়া মুলতবি রেখে নিচে গিয়ে চুলা ধরাই। ফ্রিজে খাবার শেষের পথে, কিছু একটা রান্না করা যাক। টমেটো আছে। সেই টমেটো দিয়ে ইচা মাছ রান্না করলে আমি ও আমার বউ খুশী। মেয়ে বেজার। আবার টমেটো দিয়ে পাস্তা বোলনিজ করলে আমি ও আমার মেয়ে খুশী। বউ বেজার। কথা হল আজ কাকে অখুশী করা যায়। সাত পাঁচ ভেবে পাস্তা বসিয়ে দিলাম। কি আছে জীবনে। ইচা মাছ শুক্রবারে করা যাবে, নারিকেল দুধ দিয়ে।
বাহমনি সুলতানাত বলে একটা জিনিস ছিল চতুর্দশ শতাব্দীর দিকে। ভারতের যে তিনকোনা অংশটা সাগরে বেরিয়ে আছে তার উপরদিকের অঞ্চলটা মোটের উপর তাদের দখলে। দিল্লির সাথে তাদের ছিল লাভ হেট সম্পর্ক। তারা ষোড়শ শতাব্দীর পয়লাদিকে কিভাবে কিভাবে হাওয়া হয়ে যায় আর তাদের এলাকা পাঁচ টুকরো হয়ে যায় হরেদরে। আদিল শাহী নিজাম শাহী কুতুব শাহী ইমাদ শাহী বরিদ শাহী। পাঁচটা সুলতানাত। কেউ সুন্নি কেউ শিয়া। কেউ কখনো সুন্নি কখনো শিয়া। এরা কখনো মোগলের সাথে একত্র হয়ে লড়ে কখনো মোগলকে ভেট পাঠিয়ে খুশী রাখে। তারা কেউ কেউ দরবারে মারাঠি কান্নাড়া বলে, আবার দাখিনি (উর্দূর মত কিছু একটা) চলে। দিল্লী/ আগ্রা কিম্বা সুদূর ইস্ফাহানের দরবারের মত ফারসিও চলে। আমি তাদের ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করি। উত্তরে মোগল যেরকম রাজপুতের সাথে জোট বেঁধে সিপাই বাড়িয়েছিল মুসলমান দাখিনি সুলতানরা সেরকম বন্ধু করে নেয় মারাঠিদের। জটিল ভূরাজনীতি।
নিজাম শাহী সুলতানাতের পেশওয়া (প্রধানমন্ত্রী) বনে যাওয়া মালিক অম্বর এই সময়ের একজন আশ্চর্য মানুষ। তার জন্ম আফ্রিকাতে, তারপরে দাস জীবন। ইয়েমেন হয়ে বাগদাদ আহমদনগরে বেড়ে ওঠা। এরপর দাস থেকে মুক্তি পেয়ে ধীরে ধীরে প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধান! তাকে টাল বাদশা জাহাঙ্গীর ডেকে গেছেন কালা অম্বর, অভিশপ্ত, কৃষ্ণ-হৃদয় ইত্যাদি। আবার ডাকুসম্রাট মারাঠি শিবাজী তার “শিবব্রত” কবিতায় মালিক অম্বরকে নিয়ে বলেছেন “সূর্যের মত অসমসাহসী”। আজকের ভারতে শিবাজীকে মাথায় তুলে নাচতে থাকা আরএসএস আর তার স্যাঙাতরা যদি জানত তাদের নবী এক মুসলমান সেনাপ্রধানকে গুরু মেনে গেছে তাহলে তাদের চেহারা দেখতে কিরকম হত ভাবতে বেশ ভালো লাগে।
মালিক অম্বরের এক সময়ের বন্ধু বিজাপুর সুলতানাতের ইব্রাহীম আদিল শা। যে কিনা আকবরের মত বিবিধ ধর্মের লোক এনে জলসা বসান, নখে লাল রঙ মেখে গীটারের মত বাজনা “তম্বুর” বাজান। সেই বাজনার নাম নাকি দিয়েছিলেন মোতি খাঁ। তো ইব্রাহীম কখনো মালিক অম্বরের সাথে জোট বেঁধে দিল্লি/ আগ্রার মোগল হটিয়ে দেন, কখনো সেই মালিক অম্বরের বিরুদ্ধেই (মোগলের অভিযানে) নিজের সিপাই লেলিয়ে দিয়ে ঈদে নওরস নামে উৎসবে মেতে বসেন। দোস্ত দোস্ত না রহা। পিয়ার পিয়ার না রহা। পাস্তা বোলনিজের জন্য পেকোরিনো পনির গুঁড়া করতে করতে ইউট্যুবে এমা জে ফ্ল্যাটের লেকচার দেখি কিম্বা রান্না সিদ্ধ বসিয়ে ট্যাবে পিডিএফ পড়তে বসি মানু এস পিল্লাইর বই। সময় থাকলে একটা গল্প লেখা যেত। লম্বা গল্প। হয়তো এক ফিরিঙ্গী জহুরী কুতুব শাহী গোলকুন্ডায় এসেছে হীরে কিনে নিয়ে যেতে, এমন সময় দূর্গ আক্রমণ হয়ে গেল। বাইরে মোগল, বা মালিক অম্বরই হয়তো। কিম্বা আরো দক্ষিণের বিজয়নগরের কেউ। দূর্গ পতনের পর পাছদুয়ার দিয়ে পালিয়ে হীরা নিয়ে গেল জহুরী বিজাপুর কি নওরসপুর হয়তো। সেখানে সুলতানের পিয়ারা বউ অসুস্থ, তাকে হয়তো ডেকে পাঠানো হল। ভারতীয়দের ধারণা সব ফিরিঙ্গীই হেকিমি জানে। জহুরী না পারে কইতে না পারে সইতে। সুলতানকে না বলে কল্লাটা যায় আর কি। এদিকে কানকথা আসে গোয়া থেকে পর্তুগীজ আততায়ী পাঠানো হয়েছে তার জান কবচ করতে, তাদের ধারণা এই ফিরিঙ্গী ওলন্দাজ একটা চর। দেশে ফিরত যাবে পর্তুগীজ সমুদ্রপথের বর্ণনা নিয়ে, যাতে ওলন্দাজ জাহাজও ভারতে আসতে পারে। এদিকে হয়তো মোগল বাদশার ছোট পুলা নগরের বাইরে, সুলতানের অমনোযোগীতার সুযোগে তারা একের পর এক বিজাপুরি দূর্গ হাতিয়ে নিচ্ছে।
কিন্তু হীরাটার কী হল?
কতরকম গল্প লেখা যায় এসব নিয়ে। বেছতোতা দেয়না অবসর তাই বলে ভেবনা স্বার্থপর। একদিন নিশ্চয়ই সব লিখে ফাটিয়ে ফেলব, নিজেকে প্রবোধ দেই। কান্দাহার নিয়ে গল্প লেখার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। মোগল সেই বাবুরের আমল থেকে কাবুল দখলে রাখলেও তার যমজ বোন কান্দাহার এই মোগলের হাতে তো এই সাফাভিদের হাতে। কখন কোথায় সে যে কার সে নিজেও তা জানেনা। মোগল সাফাভিদ পিটাপিটি নিয়ে পারস্যের কবি সাইব তাব্রিযি লিখে গেছেন মহাকাব্য “কান্দাহারনামা”। খালিদ হোসাইনির বিখ্যাত উপন্যাস এ থাউজেন্ড স্প্লেন্ডিড সান্স নামটা সাইব তাব্রিযির কোন কবিতা থেকে নেয়া। আমি কান্দাহার নিয়ে গল্প লিখলেও তাব্রিযির কোন কবিতার লাইন থেকে হয়তো শিরোনাম রাখব। কে জানে।
ক্লাবহাউস বলে একটা নতুন অ্যাপ এসেছে। পডকাস্টের মত অডিওভিত্তিক। কেউ কেউ রুম খুলে বকবক করে যাচ্ছে, লাইভ। আমি ঢুকে শুনে যেতে পারি, কিছু করতে হবেনা। কেউ কেউ ভারতীয় গানের জলসা বসায়, সেখানে কেউ কেউ দেখি এক দু লাইন বাংলা গানও গেয়ে ফেলেন। ভালোই। রান্না শেষ করতে করতে লাইভ গান শুনতে থাকি। বা রুম পালটে অন্য বিষয়েও যাওয়া যায়। প্রচুর স্বঘোষিত “সফল” মানুষের আনাগোনা ক্লাবহাউসে। কেউ বিরাট ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট, কেউ কেউ ইনফ্লুয়েন্সার। খুবই নাকি তারা সফল। রুম খুলে বাকিদের নানাবিধ উপদেশ দিচ্ছে ব্যবসা কিভাবে করতে হবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কিভাবে সফল হতে হবে। বিরক্ত হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসি। এতো পাণ্ডিত্য দিয়ে আমি কি করিব। গানের রুমই ভালো। নতুন অ্যাপ, এখনো তেমন লোক জমেনি। সুকুমার রায়ের আমলে ক্লাবহাউস থাকলে তিনি নিশ্চয়ই এখানেই মণ্ডা ক্লাব খুলে বসতেন। তাই বলি সোমবারে, ক্লাবহাউস গড়পারে। দিলে সবে পদধূলি, ক্লাবটিরে ঠেলে তুলি। রকমারি পুঁথি কত নিজ নিজ রুচিমত। করজোড়ে বারবার নিবেদিছে সুকুমার। সেইটা একটা জম্পেশ ক্লাবহাউস রুম হত বটে। ভবিষ্যতে আমি নিজেও রুম দিয়ে দিতে পারি মণ্ডা ক্লাব নামে দিয়ে। কিম্বা সত্যপীরের জলসা। অথবা পীরের দরগা। আদিল শাহী মালিক অম্বর গোলকুন্ডা হীরেজহরত মোগল সাফাভিদ কামান তলোয়ার সবকিছু নিয়ে বকবক করা যাবে।
রাত হয়ে আসছে। লেখাটায় ক্ষ্যান্ত দেই, প্রচুর তো হল। আরেকদিন কথা হবে। দেখি দাখিনি সুলতানাত নিয়ে লেখাটা শেষ করা যায় কিনা। লুঙ্গিতে গিঁট দিয়ে অপেক্ষা করেন আর আগুনি পড়ে আসেন এই ফাঁকে।
বিদায়।
মন্তব্য
অনেকদিন পর মনে হয় একটা সত্যিকারের ব্লগ পড়লাম। ব্লগের আসল রূপই এই। এলোমেলো বকবক করে কত কিছু একসাথে বলে যাওয়া। আপনার ক্লাব হাউসের মতো আমার একটা রেডিও অ্যাপস আছে। রেডিওগ্রাম নাম। বিজ্ঞাপনের উৎপাত নাই। নানান ভাষার নানান দেশের হাজারো এফএম চ্যানেল। আমি মাঝে মাঝে কাজ করার সময় অজ্ঞাতনামা কোন একটা চ্যানেল খুলে রাখি অজ্ঞাতভাষায়(বেশীরভাগ অবশ্য স্পেনিশ আর পর্তুগীজ পাই, দক্ষিণ আমেরিকার চ্যানেল ধরি বেশিরভাগ) সেখানে বকবক করে। হঠাৎ করে তারা চেনা কোন গান বাজিয়ে বসে, অথবা এমন একটা সুর মনটাকে চাঙ্গা করে দেয়। হঠাৎপাওয়া সেই গান বা সুর দিনকে পরিপূর্ণ করে দেয়। হার্ড ডিস্কের মধ্যে এত শত গান গজল থাকতেও অচেনা অজানা দেশের সেই পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার দিকেই কেন যেন লোভ বেশী। আসলে মানুষ কমবেশী নানামুখী লোভে আক্রান্ত নিজের অজান্তেই। (একটা গোপন দীর্ঘশ্বাস হবে এখানে)
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ক্লাবহাউস এখনো ইনভাইট ওনলি, পুরা খোলেনাই। আর কেবল আইফোন বেইসড। তাদের অ্যাপ আরেকটু জমুক পরে সত্যপীরের দরগা রুম দিয়ে মাসে দুইমাসে একবার গপে নামব কি বলেন? আপনিও পরে একসময় যুক্ত হয়ে ক্লাব খোলেন "নীড়ের সন্ধানে" কিম্বা "মেঘে শান্তির নীড়" (ধরেন ক্লাউড কম্পিউটিং এর যুগে আমরা সবাই মুটামুটি মেঘের উপরই তো)। আপনে একবার একটা ছোটগল্প লিখছিলেন অল্টার্নেট হিস্ট্রি ধরণের, যেখানে বাংলাদেশের লোক উপনিবেশ গড়ে বিটিশের দেশে। অতি উত্তম ঘরানা। ধরেন একটা রুম খুলবেন "অন্য নীড়ের সন্ধানে" আর সেইখানে আমরা এই সমান্তরাল দুনিয়া নিয়ে কথা বলব। বেশ বেশ।
..................................................................
#Banshibir.
আপনার খাদ্যাভ্যাসের ভালো দিকটা হচ্ছে, চা নিয়ে কোনো কথাই নাই। কাজেই দাখিনি সুলতানাতের গল্পের জন্য নিশ্চিন্তে অপেক্ষায় বসলাম।
কেউ চা খায়, কেউ কফি। অনেকে খুরিতে পিচিং খায়। এভাবেই সবকিচু লেট হই যায়।
..................................................................
#Banshibir.
আমি একটা বিশেষ বিপদে আছি। অফিসে বসের লাইগা চা বানাইছে। আমার মুখ দিয়া বের হইয়া গেছে "বস আপ্নের পিচিং "
বস চোখ গোল গোল করে আমার দিকে তাকায়ে কয় "রিফাত, চৈত্র মাসে একটু সাবধান থাকেন "
ওনারে আগুনি গল্পের পিডিএফ লিঙ্ক পাঠায় দেন আর বলেন কোন এক শনিবারে পিচিঙের জন্য রেঢি থাকতে।
..................................................................
#Banshibir.
হিমু ভাইয়ের গল্পদ্রুম একটা দারুন ব্যাপার নিঃসন্দেহে। দুঃখ একটাই, সেটা ভুল দেশে, ভুল সময়ে।
কী ইচা? বুলা ইচা কি এখনো আছে? নাকি নতুন কোন ব্র্যান্ড এসেছে?
এই পেশওয়া টা কী শব্দ? মারাঠি নাকি ফারসি?
সফল হতে হলে ধইজ্য লাগে। ধইজ্য ধইরা জ্ঞানী লোকদের কথা শোনতে অয়। বিরক্ত হন ক্যান?
আর এত কিছু আপনে ক্যামনে ভাবেন? ক্যামনে করেন? আচানক ব্যাপার! ভাবীসাবে উস্টা দেয় না?
পেশওয়া ফার্সি শব্দই হবে। দক্ষিণ ভারতে তখন মারাঠি তেলুগুর পাশাপাশি ফার্সিও চলত।
বুলা ইচাই । এখনো ঐটাই খাই, সবুজ প্যাকেট। টমেটো পিঁয়াজ কাঁচামরিচ দিয়ে ঘন করে কষায় খাইলে জীবনটাকে মধুর মনে হয়। বেশী ঝাল দিয়া পরে আধা কাপ নারিকেল দুধ দিলে বাস আরও বাড়ে।
হ ভুল দেশে ভুল সময়ের ব্যাপার তো আছেই। তবে লেখায় যেরম বললাম, এইসব লেখা বাংলায় পড়া যাচ্ছে সেইজন্য মাঝে মাঝে নিজেরে শুভেচ্ছা জানাই। কেবল লেখা না অলংকরণ প্রভৃতি সকলই টপ কুয়ালিটি।
ভাবীসাবের আমারে নিয়া কোন উচ্চাশা নাই। আমি হাবিজাবি বই পড়ে লেখা লিখে সময় না কাটাইলে যে বিরাট রাজাগজা উল্টায় ফেলতাম সেইটা ভুয়া কথা তার পরিষ্কার জানা আছে। খামোকা উষ্ঠা খরচ করে লাভ কি। বেফয়দা।
..................................................................
#Banshibir.
দাখিনি সুলতানাত নিয়ে লেখার অপেক্ষায় রইলাম। আগুনি পড়ছি। এই বইটার একটা কাগুজে সংস্করণ চাই, অদ্ভুত সুন্দর বইটা আমার বইয়ের তাকে সাজিয়ে রাখতে চাই।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
আমিও সেটাই বলছি লেখককে। এইটা হাতে নিয়ে পড়ার মত বই। বলছি স্পিশাল এডিশন বের করেন, বেশী টাকা নেন আর টাকা নিয়া পরে ছাপান। অন ডিমান্ড সার্ভিস। যারা রেগুলার পিডিএফ পড়তে চায় তাদের অতিরিক্ত টেকা দেওয়ার দরকার নাই।
..................................................................
#Banshibir.
অনেকদিন পরে আপনার লেখা দেখলাম। ভাল লাগল!
ধন্যবাদ। লিখি তো ভাই কিছুদিন পর পর। লিখে আমারও খুব ভালো লাগে।
ভালো থাকবেন।
..................................................................
#Banshibir.
বস কি রজার্সে নাকি, ডিক্সি রোড শুনে মনে হইলো
ভাইয়ের চোখ কম্পিউটারের চাইতেও প্রখর!
নাহ রজার্সে কাজ করিনাই কখনো, কিন্তু রজার্সের ওদিকেই বাসা ছিল একসময়।
..................................................................
#Banshibir.
নতুন মন্তব্য করুন