-এইডা কেমায় সম্ভব, আমার মাথায় খ্যালে না, বাবা!
বৃদ্ধ মাথা নাড়াতে থাকে, ক্রম-পুঞ্জিভূত বিস্ময়ের ভার সইতে না পেরে কেমন বিহ্বল দেখায় তাকে! আশ্চর্য, এই বয়সেও শিশুর মত করে বিস্মিত হতে পারে সে!
পাশেই বসা কুড়িতে পড়া ছেলের বউ এদিকে হাসতে হাসতে শ্যাষ! কত ঢং যে জানে বুইড়া তার বুইড়া হয়ুরে!
দোকানটি খুলে বসার মাস ছয়েক বাদেই ভিড় এমন বেড়েছে, এমন লাইন লেগে যায়, আগের মত আর প্রতিটি কাস্টমারের দিকে আলাদা মনোযোগ দিতে পারে না মর্তুজা!
অথচ প্রথম প্রথম যখন শুরু করে, তখন হাতে গোনা যে দু-চারজন আসত, তাদের নিবিড়-নিশ্ছিদ্র পর্যবেক্ষণ করত সে! প্রবাসী স্বজনটি মনিটরে ভেসে উঠতেই কাস্টমারদের শরীরে বিদ্যুৎ বয়ে যেত, চোখের বেড় বেড়ে হত ইঞ্চি-খানিক! কাস্টমারদের সেই তব্দা খাওয়া মুখগুলি দেখে যেন স্বর্গের সুখ লাভ করত মর্তুজা!
তবু এই বৃদ্ধের বিস্ময় যেন মাত্রা ছাড়ানো! বৃদ্ধের কুচি করা মুখখানা প্রায় পুরোই ঝুলে গেলেও কোটর-দ্বয় ভীষন জীবন্ত, কি যেন তালাশ করে ফিরছে অবিরাম!
মর্তুজা বৃদ্ধের মুগ্ধতা আরও বাড়াতে বলে উঠে, “ দেখছেন, চাচা, মানুষের কত ক্ষমতা! মানুষের অসাধ্য কিছু আছে? পুরো দুনিয়া এখন মানুষের হাতের মুঠোয়!”
“হ, দুইন্যা কই গ্যাছে গা, বাবা! মাথা-মুথা সব আওলায় যায়! আমরা যহন পুলাপাইন, এক একটা চিডি আইতে পাক্কা তিন মাস লাগত! আর অহন পুলায় বিদাশ থনে একটা মেসেজ কইরা দেয় খালি, দুই মিনিটের মইদ্যে টাকা আইয়া পড়ে হাতে!”
“আচ্ছা, চাচা, আপনি যখন রেডিও শুনতেন, টিভি দেখতেন, আপনার অবাক লাগত না?”
“না, এইগুলা বেবাক বানাইনা মনে হইত আমার নিকটে। ভুলও হইবার পারে, কিন্তু আমার খালি মনে হইত, বাক্সের মধ্যে কিছু একটা ভইরা আমাগো চোখ আর কানে ধান্দা লাগাইবার লাগছে!”
“কিন্তু আপনার ছেলে এই যে প্লেনে চইড়া মাত্র দুই ঘণ্টায় বিদেশ চইলা গেল, হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়া, তখন আপনার কেমন লাগছিল, কন তো চাচা?”
“মিছা কমু না, বাবা, বিমান দেকলেও আমার মাথায় বিষ করে! তয় বিমান তো তেল খায়, কিন্তু এই যে তোমার সামনের যন্তরডা, কইতে না কইতেই আমার জলজ্যান্ত পুলাডারে নিয়া আইল চক্ষের সামনে, এইডা তেল ছাড়াই ক্যামনে চলে, এইডার কি রহস্য, বুঝাইয়া পারো? ”
‘তাইলে চিন্তা কইরা দেখেন, চাচা, মানুষ চাইলে কি না পারে! মানুষের কত ক্ষমতা!’ - বৃদ্ধের বাঁধ ভাঙ্গা বিষ্ময় তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করে মর্তুজা!
এদিকে জগতের অত্যাশ্চর্য আর বিচিত্র সব ঘটনার কোন কুল কিনারা না পেয়ে অশীতিপর বৃদ্ধের চোখেমুখে স্পষ্ট হতাশা ফুটে উঠতে শুরু করে, বিষ্ময়াবনত দেহটা আরও কিছুটা ঝুঁকে পড়ে সামনের দিকে! কিছুটা বিরতি নিয়ে থমথমে কন্ঠে বলতে থাকে বৃদ্ধ: ‘কেচ্ছায় হুনছি, একটা যাদুর আয়না আছে, এই আয়না যেই ভাগ্যবানের হাতে থাকে, সে চোখ দুইডা বুইজা যারেই কল্পনা করে, তারেই দেখবার পারে চোখ মেইলা, আয়নার মানুষডা দুনিয়ার যেইহানে, যেই কামেই থাকুক না ক্যান, চক্ষের নিমিষে ঢুইকা যাইতে পারে সেই যাদুর আয়নায়!’
‘আর এখন সেই কিচ্ছারেও হার মানাইতেছে মানুষ, বুচ্ছেন, চাচা! আপনার আর ভাগ্যবান হওয়া লাগব না, চোখও বুইজা থাকন লাগব না; চোখ খোলা রাইখাই আদেশ করবেন খালি, মুহূর্তের মধ্যে বাচ্চা আপনার হাজির হইয়া যাইব পর্দায়! ’ - শব্দ করে হেসে উঠে মর্তুজা।
‘আচ্ছা, বাবা, আয়নার কারিগররে দেইহা পারুম?‘
আচমকা এই প্রশ্নটিতে কেন অত চমকাল, জানে না মর্তুজা; কিছুটা সামলে যখল তাকাল বৃদ্ধের দিকে, দেখল চোখ দুটো চক চক করছে!
‘মানে.....? ও আচ্ছা, বুঝেছি, আয়নার কারিগর খুবই ব্যস্ত থাকে, চাচা, উনার দেখা পাওয়া এত সহজ না! তবে তিনি ধনী হইলেও সদাশয়, আপনি চাইলে নিশ্চয়ই দেখা দেবেন!” – মুখ টিপে হাসে মর্তুজা!
‘তাছাড়া, যারে-তারে তার দেখা দেওনেরও কথা না!’- বৃদ্ধ মুনি-ঋষির মত মাথা নাড়ায়!
আধুনিক প্রযুক্তির এক ঝলক দেখে প্রত্যন্ত গ্রামের কোন এক কোনে পড়ে থাকা এই বৃদ্ধের মাথা পুরোটাই গ্যাছে, সন্দেহ নাই! আমেরিকা-ইউরোপের আধুনিক কোন শহরে ছেড়ে দিলে বৃদ্ধের কি যে অবস্থা হবে! মর্তুজা বিজনেস ভুলে যায়, সোৎসাহে বলতে থাকে, ‘সেইদিন বেশী দূরে নয়, চাচা, মানুষ অমরত্বের ঔষধও আবিষ্কার করবে! মৃত্যু, জরা, বার্ধক্যকেও সে জয় করবে! হ্যা, চাচা, কাউকে আর বুড়ো হতে হবে না। সবাই বিশ-একুশ বছরের তরতাজা যুবক থেকে যাবে আজীবন! ”-বলতে বলতে আবার শব্দ করে হাসে মর্তুজা! উহ্। বুইড়া চাচা এইবার নিশ্চয় আফসোস করবে!
‘তাও.. শোকর নাই!”- একটা নাতি-দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে আসে বৃদ্ধের!
“ঠিক বলছেন, চাচা, সম্পূর্ণ একমত আপনার এই কথাটার সাথে। সত্যি বলতে কি, মানুষ খুব অকৃতজ্ঞ প্রাণী! আমরা টিভি দেখি, প্লেনে চড়ি, মোবাইলে কথা বলি, কম্পিউটার চালাই, কিন্তু কয়জন জানি কত কত মানুষের রাতের ঘুম হারাম করা শ্রম ও গবেষণার ফসল এগুলি? কতটুকু সন্মান আমরা দেই সেইসব মহামানবদের? ”
“এইসব কিছু থাকব না, বাবা, দেইখো, সব ধ্বংস হইয়া যাইব’’- অস্ফুট স্মরে বলে বৃদ্ধ, কেমন যেন ঝিম মেরে গেছে!
“হুম, আমারও তাই মনে হয়, চাচা! আমরা মানুষেরাই মানুষের শত্রু। যেদিকেই তাকাইবেন, খালি সংঘাত, যুদ্ধ আর ধ্বংস! কয়েকজন বিজ্ঞানী তো বলেই দিছেন, এই যুদ্ধবিগ্রহ চলতে থাকলে, বেশী না, আর মাত্র একটা শতাব্দীর মধ্যেই বিলুপ্ত হইতে পারে মানবজাতি!”
‘উপায় কি, বাবা? মানুষ তো শোকর করে না! এত জ্ঞান, এত বুদ্ধি যিনি দিলেন, তাঁর প্রতি তার কোন শোকর নাই, তাঁর দিকে একবার সে ফিইরাও চায় না; মানুষের মত অকৃতজ্ঞ আছে আর? আচ্ছা, বাবা, তুমিই কও, যিনি সবকিছু দিলেন, তারে কেমায় ভুইলা থাকবার পারে? আমার মাথায় খ্যালে না, বাবা! ’
বৃদ্ধ কনুইয়ের উপর ভর করে রাখা মাথাটা আরও নামিয়ে ফেলে! বোঁজা থাকলেও চোখজোড়া তখনো ভীষণ জীবন্ত! কি যেন তালাশ করে ফিরছে অবিশ্রাম!
মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠে মর্তুজার, মুখে কোন কথা আসে না আর, শুধু শূন্য দৃষ্টিতে এক নাগাড়ে চেয়ে থাকে বৃদ্ধের দিকে! এক সময় দূর আকাশে চোখ চলে যায় জানালা গলে ! থোকা থোকা কত শূন্য যে তার সামনে আঁকিবুঁকি করতে থাকে! দোকানটি খুলে বসা অবধি এতটা শূন্যতায় আর ভোগেনি সে!
মন্তব্য
এই বৃদ্ধ তো লেখাপড়া না জানা স্বল্প জ্ঞানের মানুষ, পি এইড ডি ওয়ালারা যখন এসব বলে তখন?
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
ধন্যবাদ, মরুদ্যান!
মোক্ষম প্রশ্ন।
আসলে পি এইচ ডি ওয়ালারা কি বলে, তা নিয়ে আর একটা গল্প লিখার কথা ভাবছি। ওরা এমন কিছু রিসার্চ ও থিয়োরি দেয়, যা দিয়ে আলাদা একটা রিসার্চ হতে পারে!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
দীনু-দা উপায় নাই, আপনার লেখা বলেই, শুধু এই না, এই গল্প থেকেই আরো খানিকটা আশা করছিলাম। কোনদিন যদি সামনাসামনি আড্ডা জমে বোঝাতে পারব। এখন শুধু এটাই বলতে পারি যে, গল্প শেষে মনে হয়েছে, গল্প-র বক্তব্য - 'আয়নার কারিগর কেউ আছে আর তিনি আমাদের জন্য যা করেছেন সেই তুলনায় তার জন্য আমরা, এ যুগের মানুষেরা যথেষ্ট শোকর করি না। এবং, তার ফলেই আমরা যুদ্ধ-বিগ্রহ করে সব ধ্বংস করে ফেলার দিকে এগিয়ে চলেছি।' আপনি কি এই কথাটাই বলতে চেয়েছিলেন?
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ইচ্ছে করছে গলায় দড়ি দেই!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ভালো শক্তপক্ত দড়ি লাগলে বলিয়েন সাপ্লাই দেয়া যাবে
উঁ-হুহু! ঐ কম্মটি করবেন না। তাইলে আমরা আপনার গল্প, মন্তব্য তারিয়ে তারিয়ে (তাড়িয়ে তাড়িয়ে নয়) উপভোগ করবো কেমনে!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
দীনুদা, হালনাগাদ-টা অনেকখানি কাজের হয়েছে। বৃদ্ধ আর মর্তুজা এখন স্পষ্টভাবে দুটি আলাদা দর্শন-কে তুলে ধরেছে। সেই কারণে গল্পটির আগের রূপে গল্পটির যে বক্তব্য ফুটে উঠছিল, এখন সেটি থেকে গল্পটি সরে আসতে পেরেছে। কিন্তু একজন প্রাচীন মানুষকে নিজের আধুনিক মনন বোঝাতে না পারলে সেই আধুনিক মানুষটির মন ব্যাপক শূন্যতার বোধে ভরে যাবে এইটি খানিকটা গোলমেলে। সে বৃদ্ধ মানুষটির মনের অবস্থা বুঝে তাকে আর বোঝানো থেকে বিরত থাকতে পারে বা তার সাথে তর্ক করে লাভ নেই বিবেচনায় খানিকটা হতাশা বোধ করতে পারে। তাই বলে থোকা থোকা শূন্যতা? তবে, এই ঝরঝরে গল্পের পরিণতি এখন গল্পটির সাথে সাংঘর্ষিক লাগছ না। আপাততঃ আমার এতেই চলে যাবে। পরে গল্পটি যখন বই হিসেবে বের করার জন্য বিবেচনা করবেন, তখন আপনার অনুমতিক্রমে আমার তরফ থেকে একটি বার এটিকে সম্পাদনার জন্য আগ্রহ জানানো রইল।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
শেষের দিকের কথোপকথনটা একটু খটকা লেগেছে,মানে কেমন যেনো মনে হচ্ছিলো কথোপকথন শুনছিনা না, লেখকের মন্তব্য শুনছি। আমি অধম মানুষ,ভুলও হইতে পারে। ।
গল্পে কি কইতে চাইছেন সিডা অনুমান করতে পারছি। কিন্তু সেইডা সবার সামনে কইতাম না
--------------------------
আশফাক(অধম)
খারাপ হইলেও লেখতে তো কষ্ট হইছে, তাই অন্তত যখন অনুমান করতে পারছেন, তখন কিছুটা হইলেও হতাশা দূর করতে পারছেন অধম দীনহিনের!
ক্যান সবার সামনে কইতে চান না, সিডা অনুমান করতে পারছি। কিন্তু সেইডা সবার সামনে কইতাম না।
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
একলহমা দাদার সাথে একমত, আরো একটু বেশি আশা করেছিলাম। আর আধুনিক মানসিকতার মূর্তজার এমন গাঢ় শূন্যতায় ডুবে যাওয়া কিছুটা বেমানান মনে হলো ।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
হাচল অভিনন্দন মাসুদ সজীব!
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
সোহেল আপনাকে কি হাচলাভিনন্দন জানিয়েছিলাম আগে? মনে পড়ছেনা। একে আমি ভুলো মানুষ, তায় বুড়ো হয়ে গেছি। বুঝতেই পারছেন! যদি আগে না জানিয়ে থাকি বা, এটাই আমার প্রথম সুযোগ হয়ে থাকে, হাচলাভিনন্দন আপনাকে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
এক লহমা, ভাই আপনি আমাকে ইতিমধ্যে হাচলাভিনন্দন জানিয়েছেন। আবার জানানোর জন্য ধন্যবাদ!
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
সোহেল ভাই আর সজীব ভাইকে হাচলাভিনন্দন।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
তাহসিন রেজা, ধন্যবাদ ভাই!
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
হাচল হয়েছেন অবশেষে!
'ওষুধে' ভাল কাজ হয়েছে দেখছি
শুভেচ্ছা
ক্যামনে ক্যামনে হয়া গেলাম? এহন কোন দুষ্ট সুক্ষ নিরপেক্ষ আর আর্ন্তজাতিক মানের তদন্ত দাবি না করলেই হয়
ওষুধ সব সময় কাজের
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
হাচলাভিনন্দন সজীব-দাদা!
(কোথাও দেখলাম জানতে চেয়েছেন হাচল হয়ে লাভ-টাভ কিছু আছে নাকি। একটা ধাপ আগালেন, পরের ধাপটার জন্য। এ লাভটা কম নয়, কি বলেন?)
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
অসংখ্য ধন্যবাদ। দাদা সত্যি বলতে দেড় বছর চলে যাওয়ার পরও আমি কখনো হাচল হওয়ার জন্যে ব্যকুল ছিলাম না। মেইলও চেক করতাম না তেমন, সচল কতৃপক্ষ আমাকে মেইল করার চার দিন পর সেটা আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সচলের বড় বড় মাপের লেখক আর মানুষদের লেখা পড়তে পারি, নিজের মত আর চিন্তাধারার মানুষদের সাথে আলাপ করতে পারি, মাঝে মাঝে টুকটাক নিজেও লেখতে পারি এতেই আমার সুখ ছিলো। তবে এটা এক অর্থে কিছুটা স্বীকৃতি, আর স্বীকৃতিতো আনন্দের। সচল এখন আমার প্রধান ভালোলাগা, তাই সচলের সাথেই আছি এবং থাকবো।শুভেচ্ছা
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
সজীব-দাদা, আপনি হাচল, সচল হলে লাভ আসলে আমাদের, সচলায়তনের পাঠকদের। আর লাভ, এই পাঠকদের মধ্য থেকে কেউ কেউ যদি আপনার লেখায় যে আলো জ্বালেন সেই আলো তাদের জীবনে বয়ে নিয়ে যেতে পারেন, তাহলে আরো অনেক মানুষের। অনেক শুভেচ্ছা আপনাকে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
কি সুন্দর কথা !!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
আমি মন্তব্য -প্রতিমন্তব্যে খুব দুর্বল। শুধু কোন লেখা ভালো লাগলে সেটা জানিয়ে যাই।
এই গল্পটা আমার ভালো লেগেছে।
দীনহিন দাদার আরও সুন্দর সব গল্পের প্রত্যাশায় নিয়ে বসলাম।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
হয়ত এই সান্ত্বনা পুরুষ্কারেরও যোগ্য নয় গল্পটি! আপনি খুব ভাল বলেই এই বদখত জিনিসও আপনার 'ভালো লেগেছে'!
কোথাও কোন দাদাগিরি করেচি বলে তো মনে হয় না!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
দাদা ডাকায় কি মাইন্ড করলেন?
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
আপনার মনে হওয়াটা একটি সুস্পষ্ট বার্তা গল্পটির জন্য, মানে, এটির সংগঠন ভয়াবহ দুর্বল!
যা গল্পের বলার কথা ছিল, তা এখন ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে আমাকেই বলতে হচ্ছে:
বৃদ্ধ অন্য বৃদ্ধদের মত নয়, সে ভয়ানক কৌতূহলী, আর কৌতূহল জীবনেরই সংকেত, তাই এই বৃদ্ধকে 'প্রাচীনপন্থী ঘাটের মড়া' টাইপের ভাবার কারণ নেই। এই বৃদ্ধ বিজ্ঞানের যাদুতে মুগ্ধ, বিস্মিত, সে বিজ্ঞানকে দুবাহু বাড়িয়ে অভিনন্দন জানাতেও প্রস্তুত।
যাদুতে সে মুগ্ধ, কিন্তু যাদুকরকে সে দেখেও দেখে না, তাকে কল্পনার জগত হাতড়ে হাতড়ে তালাশ করতে হয় কোন অচিন যাদুকরকে!
বৃদ্ধ অন্য অনেক বৃদ্ধের মত বিজ্ঞানকে অস্বীকার করে না; বরং তার অদম্য কৌতূহল ও অনুসন্ধিৎসা তাকে সহজেই পৃথক করে চারিপাশের অন্য অনেক বৃদ্ধ থেকে; কিন্তু চিরায়ত ধ্যানধারণা, যা রোপিত অনেক গভীরে, বৃদ্ধকে প্রাচীনপন্থীদের কাতারেই রাখে বন্দী করে রাখে শেষ পর্যন্ত।
এই জন্য বৃদ্ধ অনেক কাছে যেয়েও পেরুতে পারে না বর্ডার লাইন! মর্তুজার শূন্যতা হয়ত এই কারণেই!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
বিষয়টা ঠিক এমন না, ব্যর্থতার বিষয় নয় এটি। সৃজনশীল লেখার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পাঠককে সম্পৃক্ত করা। সেখানে পাঠক একটা লেখা পড়ে এক ধরণের অভিমত দিতেই পারেন, সেই অভিমত কোন লেখাকে খুব সহজে ব্যর্থ করে দিতে পারে না। পাঠক হিসেবে যে কেউ নতুন কিছু গল্পে খুঁজে বের করতে পারেন, সেটি পাঠকের স্বাধীনতা। একজন লেখকের অনেক পাঠক থাকার নানান সুবিধা অাছে, নানান পাঠক বিভন্ন দিক থেকে, তল থেকে জিনিসগুলো বিচার করে। লেখক পাঠকের জন্যে লেখলেও তিনি কিন্তু পাঠকের কথা ভেবে লেখেন না। সুতরাং লেখকের মূল ভাবনা কিংবা উদ্দেশ্য সব সময় পাঠক ধরে ফেলবে বিষয়টা এমন নয় আবার পাঠক লেখকের ভাবনাকে পেরিয়ে আরো নতুন কোন বিষয় সেখানে খুঁজে পেতে পারে। সেটিই আসলে সাহিত্যের ভালোলাগার অন্যতম কারণ। একেক পাঠক একেক ভাবে চিন্তাা করে, দেখে। টেলিভিশন সবাইকে একি ভাবে সবকিছু দেখতে বাধ্য করালেও সাহিত্য তা করে না। এই বিষয়ে শহীদুল জহিরের কিছু উক্তি ছিলো যা আপনার সাথে শেয়ার করছি
লেখক যা কিছু লেখেন, তার সবকিছুর যুক্তিও তার কাছে থাকে না। এটা অতিপ্রাকৃতিক বিষয় না, একজন লেখক হয়তো অনুমান করে নেন, এই জিনিস টা এই জিনিসটার সাথে যাচ্ছে না। কিন্তু এর কোন যক্তি তার কাছে নেই। এটা বুঝতে পারাটাই আসল ব্যাপার কিন্তু কিভাবে বুঝতে পারা যায় আর কিভাবে বুঝতে পারা যায় না সেটা কেউ বলতে পারবে না।
ভালো থাকুন, শুভেচ্ছা
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
দীনহিন ভাই, গল্প ভাল লেগেছে। কিন্তু মর্তুজা কথাবার্তা আঞ্চলিক থেকে হঠাৎ শুদ্ধ রুপ নিল কেন?
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
আঞ্চলিক ভাষা শুদ্ধ নয়?
ঠিকাছে ধরে নিচ্ছি, আপনি শুদ্ধ বলতে 'আঞ্চলিক নয়' এমন ভাষার প্রয়োগ বুঝাতে চেয়েছেন।
খেয়াল করে দেখবেন, আমাদের কথাবার্তা অনেক সময়ই আঞ্চলিক থেকে শুদ্ধ, শুদ্ধ থেকে আঞ্চলিক রুপ নেয়। আমরা কেউই কিন্তু টিভি নাটকের (মানে, আগে টিভি নাটকের একটি নিজস্ব ভাষা ছিল, যদিও এখন প্রচুর আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার হচ্ছে) ভাষায় কথা বলি না।
মর্তুজা কিন্তু শুদ্ধ ভাষাতেই শুরু করে, কিন্তু বৃদ্ধের সাথে কথোপকথনে প্রভাবিত হয়ে সে কখনো কখনো আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করে ফেলে (যেমনটা আমরা সবাই করি মনে হয়); মাঝে মাঝে আবেগাক্রান্ত হয়ে তার ভাষা আঞ্চলিকতা থেকে শুদ্ধতায় রূপান্তরিত হয় বা শুদ্ধতা থেকে আঞ্চলিকতায়।
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
শুদ্ধ বলতে আমি আসলে আঞ্চলিক নয় এরকম ভাষা বুঝিয়েছিলাম। যাহোক ব্যাখ্যা করে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ!
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
বুঝলাম না রে মন্তব্য গেলো কিনা
কি যে বলেন না, আয়না মতি, কিছুই বুঝিনে!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
ভালো ভালো।
শুভেচ্ছা, অভিনন্দন।
ভালো থাকবেন।
-----------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
নতুন মন্তব্য করুন