চৈত্র মাসের এক ভয়াবহ গরম দুপুরে খালি গায়ে হাফ প্যান্ট পড়ে পত্রিকা পড়ছিলাম। আমার বাবা অফিসে যাবার জন্য রেডি হচ্ছেন। পাশ কাটিয়ে পাশের রুমে যাবার সময় আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টি হেনে আমার মা'কে যেয়ে বললেন,"ওরে বল ফালটা দুইটা ঢাইকা রাখতে"। টাংগাইলের ভাষায় ফালটা মানে হল লাঠি। সেই আমলে আমার খুব বডি বিল্ডারের মতন শরীর ছিল। বডি বিল্ডার মানে রবিউল কিংবা টেলি সামাদের মতন বডি আর কি। হাল আমলের ছেলে পেলেরা রবিউল কিংবা টেলি সামাদ সম্পর্কে অবগত কিনা জানি না, তবে আমি নিশ্চিত গুগল করলে উনাদের কিছু ছবি পাওয়া যেতে পারে।
সবে মাত্র ইন্টার দিয়েছি। হাতে বিস্তর সময়। দিনের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে আঠার ঘন্টাই আনন্দ সহকারে ঘুমিয়ে কাটাই। বাকি ছয় ঘন্টার মধ্যে গোসল এবং তিন বেলা খানা দানা বাবদ দুই ঘন্টা বাদ দিলে বাকি থাকে চার ঘন্টা। সেই চার ঘন্টা কি করব সে নিয়ে দুশ্চিন্তায় হাঁসফাঁস করি।
যাহোক ডোর বেল বাজছিল। কেউ দরজা খুলে না বলে অনেক কষ্টে উঠে গিয়ে নিজেকেই দরজা খুলতে হল। পিয়ন আংকেল দাঁড়িয়ে। আমাকে দেখে আকর্ণ হাসি হেসে বললেন,
বখশিশ দাও।
আমি কোমরে হাফ প্যান্ট টেনে টুনে ঠিক করতে করতে বলি,
কেন?
তুমি আমেরিকা যাইবা।
ধুর! মশকরা করেন?
বড়সর সাদা এক খানা খাম এগিয়ে দিয়ে তিনি বললেন,
আমেরিকান অ্যাম্বেসি থেকে তোমার ডি ভি'র চিঠি আসছে।
হাত বাড়িয়ে চিঠি নিলাম। উপরে আমার নাম লেখা। শরীর কেমন যেন একটু শিরশির করতে লাগল। পিয়ন চাচাকে বখশিশ দিয়ে বিদায় দিলাম। সেই থেকে শুরু হল জীবনের অন্য এক রকম অ্যাডভেঞ্চার।
দৌড়া দৌড়ি শুরু হল। কাগজ পত্র যোগাড় করি। বার্থ সার্টিফিকেট, পুলিশ সার্টিফিকেট, স্কুল/কলেজের সনদ পত্র, চারিত্রিক সার্টিফিকেট কল্পনা করা যায় এমন সব সার্টিফিকেট যোগাড় করা হল। আমেরিকা যাব বলে আমি যত হাম তাম শুরু করলাম আমার মা তত উচ্চস্বরে কান্দন শুরু করলেন। ডিভি পেয়েছি বলেই এখন যেতে হবে নাকি? আমার বাবা'র উপর চলল তার নিরন্তর প্যান প্যানানি। তিনি হলেন সমস্ত নষ্টের গোড়া। আমার বাবা আমার জন্য ডিভির ফর্ম করে দিয়েছিলেন। ইন্টার দিয়েছি। সামনে শুরু হবে ভর্তি যুদ্ধ। আমি লেখা পড়া পুরাই ছেড়ে দিলাম। আমার মা কে বললাম আমেরিকা যেতে না দিলে বুয়েটতো বহু দূরের কথা জগা বাবু'র পাঠশালায়ও চান্স পাব কিনা সন্দেহ। আমার মা ছেলের কথা শুনে বাথরুমে কলের পানি ছেড়ে দিয়ে শব্দ করে কাঁদেন।
কাগজ পত্র যোগাড়ের দৌড়াদৌড়ির পর এবার শুরু হলে অ্যাম্বেসিতে দৌড়াদৌড়ির পর্ব। সাত সকালে ঘুম থেকে উঠেই বাবার সাথে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে বারিধারার দিকে দৌড়াই। এম্বেসীর লোকজন আমার নিয়ে আসা কোন কাগজ পত্রই পছন্দ করেন না। কোন না কোন এক খুঁত বের করে অন্য একদিন আসতে বলেন। এদিক দিয়ে বাজেট নিয়ে আমেরিকায় ক্লিন্টন সাহেব কি যেন গ্যাঞ্জাম ফেঁদেছেন। হঠাৎ করে এম্বেসী গেল বন্ধ হয়ে। আমার বাবা বিরক্ত হয়ে বললেন,"আমেরিকা যাওয়ার দরকার নাই"। আমি হাল ছাড়ি না। গলায় আর্তি নিয়ে বলি,
না। না। কি বলেন? এত গুলা টাকা খরচ হয়ে গেল। আরও কিছু দিন দেখি।
বাবার জন্য মনটাও একটু খারাপ হয়। তাকে অ্যাম্বেসির ভেতর ঢুকতে দেয়া হয় না। আমি অ্যাম্বেসির ভেতরে চলে গেলে বেচারা সারাদিন প্রচন্ড গরমের মধ্যে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন। সে আমলে আমেরিকান অ্যাম্বেসির সামনে একটা টং এর দোকান আর ধান ক্ষেত ছাড়া কিছু ছিল না। তাকে নিয়মিত টেনে এনে কষ্ট দিচ্ছি। আমি বড় হয়েছি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংরক্ষিত এলাকার ভেতর। ঢাকায় নিয়মিত গিয়েছি এস এস সি পাশ করে কলেজে ভর্তি হবার পর। তাও শুধু বাসা টু কলেজ (নটরডেম, মতিঝিল) এবং কলেজ টু বাসা। ঢাকা তেমন একটা চিনতাম না। তাই বাবাকে সাথে করে নিয়ে যাই।
যাহোক কিছুদিন পর অ্যাম্বেসি আবার খুলল। ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক এল। ইন্টারভিউ নিলেন সাদা চামড়ার এক আমেরিকান। ইন্টারপ্রেটার হিসাবে তার পাশে এক বাঙ্গালী। ইন্টারভিউ দিলাম। সাদা চামড়ার ভদ্রলোক দু একটা প্রশ্ন করে চলে গেলেন। ভিসা পেলাম কি পেলাম না কিছুই বুঝলাম না। সাথে বাংলাদেশী ইন্টারপ্রেটার বললেন,
আপনাকে একটা কথা বলি।
বলেন।
আপনি যখন ডিভির জন্য অ্যাপ্লাই করেছিলেন তখন আপনি এইচ এস সি পরীক্ষাই দেন নাই। নিয়ম অনুযায়ী ডিভির জন্য নুন্যতম এইচ এস সি পাশ হতে হয়।
কথা শুনে আমার গলা শুকিয়ে গেল। আর বোধহয় আমেরিকা যাওয়া হল না। ভদ্রলোক বললেন,
আমি ইচ্ছা করেলেই আপনার এপ্লিকেশন ক্যান্সেল করে দিতে পারি। কিন্তু আমি তা করব না। আমি শুধু আপনাকে জানালাম। বিকাল তিনটার পর এসে ভিসা নিয়ে যাবেন।
আমি কাঁপতে কাঁপতে বললাম,
থ্যাঙ্ক ইউ!
এরপর শুরু হল আমেরিকা যাবার প্রস্তুতি। মক্কায় যেমন হজ্জ্ব করতে যেতে হয় তেমনি বিদেশে যাবার আগে বঙ্গ বাজারে যাওয়াটা সকল বিদেশগামীদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় একটি কাজ। বঙ্গ বাজার চষে কেনা কাটা সারলাম। যতই আমেরিকা যাবার দিন ঘনিয়ে আসতে লাগল ততই বাথরুমের পানির কল ছেড়ে দিয়ে আমার মায়ের কান্নার দৈর্ঘ্য বেড়ে চলতে লাগল।
১৯৯৬ সালের এপ্রিলের ৮ তারিখ ভোর রাতে কে এল এম এর একটি বোইং ৭৪৭ এ চড়ে আমি আমেরিকার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ছাড়লাম। আমার যাত্রা ছিল অনেকটা এরকমঃ ঢাকা থেকে আমস্টারডাম, হল্যান্ড। সেখানে এক রাত হোটেলে থাকব। তার পর দিন অ্যামস্টারডাম থেকে মিনিয়াপোলিস, মিনেসোটা, ইউ এস এ।
যে টিকেট আমাকে আমেরিকা নিয়ে এসছিল
প্লেন ভোঁ দৌড় দিয়ে আকাশে উঠে গেল। বাবা মা ছাড়া খুব বেশিদিন দূরে গিয়ে কোথাও থাকিনি। কান্নাকাটিতে আমার মা প্রায় নোবেল পুরুষ্কার প্রাপ্ত এক্সপার্ট। আমেরিকা যাবার অনেক আগে থেকেই তাকে নানা ভাবে বুঝালাম কান্নাকাটি করা যাবে না। এলাকার সমস্ত খালাম্মারাও এসে একই কথা বুঝিয়ে গেলেন।
"ভাবী, ছেলের জন্য আল্লাহর কাছে শুধু দোয়া করেন। বেশি কান্নাকাটি করলে ছেলের উপর কু লাগব"।
"ভাবী ও ভাবী, কান্না কইরেন না...কান্না কইরেন না গো ভাবী...ও ভাবী..."
......ইত্যাদি। এয়ারপোর্টে এসে আমার মা চিৎকার করে কান্না শুরু করলেন। এক হাত দিয়ে জামা ধরে রাখলেন। যেতে দেন না। মন গেল ভীষণ খারাপ হয়ে। ইচ্ছা করছিল বাদ দেই। বিদেশ যেয়ে কি হবে? কি দরকারটা? এদিকে ফ্লাইটের জন্য দেরী হয়ে যাচ্ছে দেখে আমার বাবা দিলেন ধমক। আমি মায়ের কাছ থেকে কোন মতে হাত ছুটিয়ে নিয়ে এয়ারপোর্টের ভেতরে ঢুকে গেলাম। আমার চামড়া প্রায় গন্ডারের সমতুল্য। অনুভূতিগুলো মোটা চামড়ার গভীরে আচ্ছা মতন পেঁচিয়ে রাখা। সেসব অনুভূতি সহজেই পৃথিবীর আলো বাতাসের দেখা পায় না। পেলেও অনেক সময় নেয়। যে বিরহ এখন ঘটে গেল তার বিষাদ আমায় ভর করে মাস ছয়েক পর।
ঢাকা থেকে আমস্টারডাম লম্বা যাত্রা পথ। মাঝে দুবাইতে তেল এবং যাত্রী নেবার জন্য এক ঘন্টার জন্য বিরতি। ফের একই প্লেনে আমস্টারডাম। জীবনে কখনও এত লম্বা সময় বসে থাকিনি। বসে থাকতে থাকতে পশ্চাতদেশ ব্যাথা করতে করতে এক সময় অবশ হয়ে গেল। নিজের পাছা চুল্কাতে গেলেও তখন ভয় হয়। নিজেরটা মনে করে যদি ভুলে পাশে বসা চাচা জানেরটা চুল্কে দেই তাহলে মুসিবত হতে পারে। ঢাকা থেকে আমার পাশে বসেছেন এক মুরুব্বী। গায়ে ধূসর রঙের সাফারি। আমাকে জিজ্ঞাস করলেন,
বাবা কই যাও? সৌদি?
জ্বি না।
বলে আমি মৃদু হাসলাম।
তাইলে কই যাও।
আমেরিকা যাই।
আরে বাস! পড়তে যাও?
অনেকটা ঐ রকমই।
আমেরিকায় পড়তে কত টাকা লাগে বাবা?
জানিনা।
পড়তে যাও কিন্তু পড়ার খরচ কত জানোনা। এইটা কেমন কথা বাবা?
বললাম,
আমি ডিভি পেয়েছি। থাকা-খাওয়া এবং কাজ করার পাশাপাশি সেখানে পড়ালেখাও করব। ইউনিভার্সিটিতে এখনো ভর্তি হয়নি। ভর্তি হবার পর বলতে পারব খরচ কত।
তুমি ডিভি জিতছ? তোমারতো দেখি বিরাট ভাগ্য!
আমি হাসলাম। খালাম্মা চেহারার এক সফেদ রঙের এয়ার হোস্টেস এসে খাবার/পানীয় সাধলেন। পানীয়ের মধ্যে সাদা পানি থেকে শুরু করে লাল পানিও আছে। জীবনে কখনো লাল পানি খাইনি। বলব নাকি দিতে? জীবনে বিষ ছাড়া আর অন্য সবকিছু একবার করেও হলে চেখে দেখতে হয়। এই চেখে দেখার আগ্রহ যখন একেবারেই ফুরিয়ে যায় তখন বিষ খেয়ে সেই ক্লান্তিকর জীবনের অবসান ঘটায় মানুষ। কিন্তু মুরুব্বীর সামনে নিষিদ্ধ পানীয় পান করা ঠিক হবে কিনা সেটা নিয়ে যখন আমি চরম দ্বিধান্বিত ঠিক সে সময় মুরুব্বী নিখুঁত বাংলা উচ্চারণের ইংরেজীতে বললেন,
গিভ মি হানিকেন (Heineken) প্লিজ।
আমি কোকা কোলা নিলাম। চাচা মিয়া চোখ বুজে বেশ আয়েশ করে বিয়ারে চুমুক দিতে লাগলেন।
এই আমার প্রথম বিমান ভ্রমণ। এর আগে সাইকেল, রিক্সা, ঠেলাগাড়ি, গরুর গাড়ি, মহিষের গাড়ি, বাস, এবং নৌকায় চড়েছি। কিন্তু প্লেনে কখনও উঠিনি। এই প্রথম উঠা। প্রথম আকাশ যান ভ্রমণে অনুধাবন করলাম প্লেন জার্নির মত বোরিং জার্নি আর দ্বিতীয়টি নেই। জানালা দিয়ে আকাশের মেঘ ছাড়া কিছুই নজরে আসে না। প্লেন কি চলছে না থেমে আছে বোঝা দায়/ ঘন্টার পর ঘন্টা ঠায় এক জায়গায় বসে থাকতে হয়। ফার্স্ট ক্লাস কিংবা বিজনেস ক্লাস সিটের কথা জানি না, কিন্তু আমি বসেছি ইকোনমি সেকশনে, গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি ঢাকার মুড়ির টিন বাস গুলোর সিটও এর থেকে ঢের আরামদায়ক। কোন দুর্বিপাকে পানিতে ইমারজেন্সি ল্যান্ডিং করতে হলে পাছার নিচ থেকে সিটের গদি খুলে নিয়ে যেন ভেসে থাকা যায় সেই উদ্দেশ্যে প্লেনের সিটগুলো স্পেশাল ভাবে বানানো হয়। কিন্তু তাই বলে পশ্চাতদেশে নারকেলের ছোবার মতন অনুভূতি কাঁহাতক সহ্য হয়?
দুবাই এসে শরাবি চাচাজান নেমে গেলেন। একদল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কর্মী প্লেনের ভেতর ঢুকে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল। পরবর্তী গন্তব্যের যাত্রীদের জন্য প্লেনের ভেতরটা তারা দ্রুতগতিতে সাজিয়ে ফেলল। পরিচ্ছন্ন কর্মীদের প্রায় সবাই বাংলাদেশী। তাদের কথায় নানা জেলার আঞ্চলিক টান। আমার কাছে মনে হচ্ছিল প্লেন ঘন্টা পাঁচেক আকাশে ঘুরাঘুরি করে আবার জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরেই এসে ল্যান্ড করেছে।
এবার আমার পাশের যাত্রী অল্পবয়সী এরাবিয়ান কপোত- কপোতী। কপোতির কোলে সম্প্রতি জন্ম নেয়া মানব ছানা। প্লেনে ঢুকেই প্লেনের সিলিং ফাটিয়ে সুন্দর আরবী ভাষায় কান্না জুড়ে দিল মানব ছানাটি। তাদের দিকে তাকিয়ে আমি আহাম্মকের এর মতন একটা হাসি দিলাম। বাচ্চার মা ব্যাস্ত হয়ে বাচ্চাকে দোল দিতে দিতে বলতে লাগলেন,"ইয়া আল্লাহ...ইয়া আল্লাহ...আরবী......আরবী...আরবী...।" শুধু "ইয়া আল্লাহ" টুকু বুঝলাম। বাকি সব আরবী বিধায় কিছু বুঝলাম না। তবে ছোটবেলায় আমপারা-ছিফারা পড়া থাকায় তাদের কথা বেশ পরিচিত ঠেকল।
ধবল সুন্দরী এক এয়ার হোস্টেস এসে আমাকে জিজ্ঞাস করলেন,
বাচ্চার জন্য তোমার কি কষ্ট হচ্ছে?
আমি মাথা নেড়ে বললাম,
না না কি বলেন?
বলেই জিব কাটলাম। আমি বাংলায় কথা বলছি। বাংলাদেশে বাংলা মিডিয়ামে পড়ালেখা করায় সহজে জিবের ডগায় ইংরেজি আসতে চায় না। এবার আমি ইংরেজীতে বললাম,
তেমন একটা অসুবিধা হচ্ছে না।
বলেই নিজের ভুল বুঝতে পারলাম। এই বাচ্চা সারা পথ এমন চেঁচিয়ে কান ফাটালেতো ভীষণ মুসিবতে পড়ব। তাই সাথে সাথে কথা ঘুরালাম,
সরি। আসলে অসুবিধা একটু হচ্ছে।
সফেদ সুন্দরী বললেন তাকে ফলো করতে। তিনি আমাকে প্লেনের সম্মুখভাগে নিয়ে গিয়ে ফার্স্ট ক্লাসে বসিয়ে দিলেন। মাছুম বাচ্চার উসিলায় যাকে বলে জল না চাইতেই শরবত! ফার্স্ট ক্লাসে পুরাই এলাহী কারবার। সোফার মত সিট। হাত পা এলিয়ে দিয়ে শুয়ে পড়া যায়। আমি হাত পা চাগিয়ে দিয়ে প্রায় শুয়ে পড়লাম। এমন সময় পানীয়র ট্রলি নিয়ে বিমান বালা হাজির হলেন। তার ট্রলি ভর্তি রঙ্গীন পানীয়ের বোতল। আমি মাথা চুল্কাতে লাগলাম।
(চলবে)
মন্তব্য
শরাবী চাচারে ভাল লাগেনাই ।
ট্রোল
আমারো না
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
লেখাটা ভালো লাগলো খুব।
আমিও আপনার চার মাস পরে ঠিক একই পথে আমেরিকাতে এসেছি। কেএলএমের বিমান যখন রানওয়ে টান দিল, তখন মনে হল পাইলটকে অনুরোধ করি একটু সাইড করে থামায়ে আমাকে যেন নামায়ে দেয়, বাসে চড়ে অভ্যাস ছিল, একটু স্লো করলেই নেমে যেতে পারতাম। কিছু ব্যাটা হ্যাঁচকা টান মেরে আমাকে উড়ায়ে নিয়ে গেল। ঢাকায় তেজগাঁ থেকে নিউমার্কেট যেতে যেই সময় লাগে সেই সময়ের মধ্যেই আমি বাংলাদেশের বাইরে চলে আসলাম।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ তাসনীম!
আপনিও যে আমি আসার কিছুদিন পরেই এসেছেন সেটা আমি জানতাম। আপনার কোন এক লেখায় পড়েছিলাম। সেখানে মন্তব্য করব ভেবেও পরে আর করা হয়নি। আপনিও কি আমস্টারডামে এক রাত ছিলেন?
আমরা কত কারণেই না নাড়ির টান ছিন্ন করি!
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
আমিও আমস্টারডামে একরাত ছিলাম। দ্বিতীয় পর্বে বর্ণনা শুনে মনে হচ্ছিল একই হোটেলেই ছিলাম
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনি এত ছুডু বয়সে এ নাছারাদের দেশে এসে খুঁটি গেড়েছিলেন! বাউরে বাউ।
যখণ > যখন, শুঁকিয়ে > শুকিয়ে (এখানে যেহেতু গন্ধ শোঁকার কাহিনি নয়), নারায়ন>নারায়ণগঞ্জের,
ভৌ দৌড় > ভোঁ দৌড়, রঙ্গীন >রঙিন, জাননা > জানো না, ফুড়িয়ে > ফুরিয়ে।
আর এম্বেসী _এপ্লিকেশন _এডভেঞ্চার > যতদূর জানি তিনটা শব্দ-ই 'অ্যা' দিয়ে হবে উচ্চারণ অনুযায়ী-- অ্যাম্বেসি, অ্যাপ্লিকেশন, অ্যাডভেঞ্চার এরকম।
টাইপোগুলো ঠিক করে দিয়েন।
সিরিজ মজার হবে আশা করি। পরের কিস্তি জলদি দিয়েন, সঙ্গে আছি।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অনেক ছোটকালে (বয়েস সতের) একা একা এই অচিন দেশে এসেছিলাম। তারপর বহু চড়াই উৎরাই পেড়িয়েছি। এত অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটেছে জীবনে যে পাকা কোন লেখক হলে অসাধারণ একটা উপন্যাস লিখে ফেলতে পারতাম।
বানান ঠিক করে দিচ্ছি। এই পর্ব নীড় পাতা থেকে উঠে গেলেই পরের পর্ব দেব। সঙ্গে থাকার জন্য অনেক
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
তারপর কি হলো?
তারপর কি হল সেটা এখন বলে দিলে পরের পর্বে কি লেখুম
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
চলুক, ভালো লাগল। এইটা কত সালের কাহিনী?
অফটপিকঃ আপনার নিকটা ইংরেজিতে। সচলের প্রায় সবার নিক বাংলায়। বাংলায় বদলে নিলে অন্তত আমার চোখে ভালো লাগত। ভেবে দেখবেন নাকি?
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ত্রিমাত্রিক কবি, আপনার মন্তব্যের জবাব গতকাল দিয়েছিলাম, কিন্তু কি করে সেটা যেন হাওয়া হয়ে গেছে। যাহোক এটা ১৯৯৬ সালের এপ্রিল মাসের ঘটনা। লেখা ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ!
আসলে সচলে যখন প্রথম নিকটা রেজিস্টার করিয়েছিলাম তখন বাংলা না ইংরেজী হলে ভাল হয় সেটা নিয়ে চিন্তা করিনি। আপনার মত এখন আমারও মনে হচ্ছে নিকটা বাংলায় হলেই ভাল হত। আমি মডুগণদের বলে দেখব চেঞ্জ করা যায় কিনা।
লেখা পড়ার জন্য
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
শিরোনামের জন্য হেফাজত ধাওয়া দিল বইলা
বহোৎখুব।
..................................................................
#Banshibir.
আমারে হেফাজত পাইব কই? আর কষ্ট করে এই পর্যন্ত আসলেও উইসকনসিনে যে ঠান্ডার ঠান্ডা উনাদের তেঁতুল জমে শক্ত হয়ে যাবে
নিন।
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
লেখা ভালো লেগেছে। আপনিতো দীর্ঘ পরবাসী! দেশে আসেন তো? আপনার মা কেমন আছেন? মা কে শ্রদ্ধা জানাবেন।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
মাসুদ সজীব, লেখা ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল। দেশে এক দুই বছর পর পরই আসা হয়। আমার মা ডায়াবেটিসের রোগী। ডায়াবেটিসের রোগীদের নানা রকম সমস্যা থাকে। সেসব সমস্যা নিয়ে তিনি আছেন একরকম।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই!
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
ও দাদা, লেখাটা বড্ড ছোট হয়ে গেল যে!
আসলে এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম তো, তাই মনে হলো। জবরদস্ত হয়েছে, আশা করি বাকি সচলরা জলদি কিছু লেখা দিয়ে আপনাকে নীড়পাতা থেকে বের করে দিবেন।
মরুচারী
দাদা, এক পর্বেই এত বড় লেখা দিলে অনেক পাঠক ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন। তাই মাঝারি আকারে লেখা দেয়া। লেখা ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল। ধন্যবাদ অনেক গুলা!
অন্যরা লেখা দিলেইতো নীড়পাতা থেকে আমারটা সরে যায়। আপনারা তাড়াতাড়ি লেখা দিন। তখন না হয় পরের পর্ব নিয়ে আমি হাজির হব
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
মাত্র সতের বছর বয়সে বিদেশ বিভুঁই এ একা! আসলেই কষ্ট। চলুক।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
কষ্টতো বটেই। তার উপর যদি জীবনের উপর দিয়ে বেশ কিছু ধাক্কা এক সাথে লেগে যায় তাহলে কষ্টের উপর চরম কষ্ট। ধন্যবাদ!
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
বেশ ভালো লেগেছে। গল্পে ঢুকে গিয়েছি এমন সময় দেখি সামনে লেখা "চলবে।" এই চলবে যতবার দেখি ততবারই মনে পড়ে মোবাইল অপারেটরদের কথা! তারা যেমন সুযোগ-সুবিধার কথা বলে গ্রাহকদের খুশি করে জায়গামতো (★) চিন্হ দিয়ে "শর্ত প্রযোজ্য" কথাটা লাগিয়ে গ্রাহকদের বুঝ দেয়, আপনারা বুঝ দেন পাঠকদের।
..................................................................
#Banshibir.
হা হা হা আপনি মজার কথা বলেছেন। আসলে অন লাইনে এক সাথে এত লেখা পড়াটা অনেক পাঠকের ধৈর্যে কুলায় না। তাই ভেঙ্গে ভেঙ্গে প্রকাশ করা। যাহোক পরের পর্বে অনেক লেখা নিয়ে হাজির হবে। কথা দিচ্ছি
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনার নামটা জানতে পারলে ভাল লাগত।
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
বরাবরের মত উপাদেয়। যাক এইবার প্রমাণিত হয় গেল আপনি আমার বেশ বড় তাই ঘটা করে ভাইয়া বলা যায়। আগামী পর্বের জন্য শুভ কামনা ভাইয়া
ফাহিমা দিলশাদ
ফাহিমা, লেখা ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ! ছোট বড় সবাইকেইতো ভাইয়া ডাকা যায়। সেখানে প্রমাণ লাগবে কেন ঠিক বুঝলাম না। ছোট হলে কি তুই তোকারি করতেন? এখন যেহেতু প্রমাণিত হয়ে গেল আমি বয়সে অনেক বড় আমি কি আপনাকে তুই তোকারি করতে পারি?
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
তুই তো আপনকে বলা যায়, আপনি যদি আমাকে তেমন আপন মনে করেন তাহলে না হয় তুই ডাকবেন। আমার তো বড় কোন ভাই নেই, ভার্চুয়ালিই না হয় একটা বড় ভাইয়া পেলাম
ফাহিমা দিলশাদ
ফাহিমা, সিদ্ধান্ত নিয়েছি আপনাকে আমি আপন বানিয়ে 'আপনি" থেকে সরাসরি 'তুই" তে প্রমোশন করব। কি রে কেমন আছিস? কি খবর?
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
সংলাপটির ভেতর দিয়ে মানুষের ভেতরের ডঃ জেকিল এন্ড মিষ্টার হাইড চমৎকার প্রকাশিত হয়েছে!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
মানুষের ভেতরে অনেক কিছু লুকিয়ে থাকে যা হঠাৎ করে প্রকাশ হয়ে পরে। সব মানুষই কিছু না কিছু ব্যাপারে ডঃ জেকিল এন্ড মিঃ হাইড।
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
আসলেই সুখে থাকলে ভুতে কিলায়।
টিকিটখানার ছবি দেখে মজা পাইলাম, এইটা ব্যক্তিগত মিউজিয়ামে ছিল?
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
হ্যা ভাই। এক মাত্র সুখে থাকলেই ভুতে কিলাতে পারে। কখনো শুনেছেন কেউ খুব কষ্টে আছে এবং তাকে ভুতে কিলিয়েছে? আমি নিশ্চিত শোনেননি
টিকেট খানা স্মৃতি হিসেবে যত্ন করে রেখে দিয়েছিলাম ভাই। এরকম আরো কিছু জিনিস এখনো আছে
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
এর পর বহুবার দেশে গিয়েছি এবং এসেছি, কিন্তু সেসব টিকেট জমিয়ে রাখিনি। সব কিছুর প্রথম বারে অন্য রকম অনুভূতি থাকে। এই টিকেট খানা আমি সারা জীবনের জন্য জমা করে রাখব
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
নিজেরটা মনে করে যদি পাশের চাচা জানের টা চুলকে দেই ভাল লিখেছেন !
ধন্যবাদ!
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
ভাল লিখেছেন। প্রবাস জীবনের সকল কষ্ট দূর হোক।
অপর্ণা মিতু
লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনিও ভাল থাকুন।
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
নতুন মন্তব্য করুন