মিলওয়াকি'র মানুষখেকো-০১

Sohel Lehos এর ছবি
লিখেছেন Sohel Lehos [অতিথি] (তারিখ: সোম, ০৫/০১/২০১৫ - ১:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই গল্পের ঘটনা হয়তো অনেকেই জেনে থাকবেন। এক সময় এ নিয়ে অনেক তোলপাড় হয়েছিল। আমি নিজে যে শহরে থাকি সেখানে এমন ঘটেছে জানার পর এ ব্যাপারে আমার লেখার আগ্রহ জন্মায়, কিন্তু কয়েক পাতা লেখার পর থামতে হল। ঘটনা এত অসুস্থ রকমের যে এ নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে যেয়ে আমি নিজেই মানসিকভাবে অনেকটা বিপর্যস্ত হয়ে যাই। যাহোক কি কারণে জানি না, একদিন এক বন্ধের দিনে এই ঘটনার বেশিরভাগ যেখানে ঘটেছে, সেখান থেকে ঘুরে এলাম। কিছু ছবিও তুলে নিয়ে এলাম। এরপর আবার লেখার আগ্রহ জন্মাল। গল্পাকারে লেখা এক বীভৎস সত্য কাহিনী। নিজ দায়িত্বে পড়ুন।

*****

লায়নেল...লায়নেল......লায়নেল.........

অনেক অনেক দূর থেকে কেউ ডাকছে। জেফের প্রথম মনে হল তার বাবা। তারপর মনে হল তার বাবার নাম লায়নেল। সে কেন নিজের নাম ধরে ডাকবে? তাছাড়া যে ডাকছে তার গলার স্বর মেয়েলী। সে ডাকে অসুস্থ এক ধরণের ব্যাকুলতা আছে। জেফ বুঝতে পারল তার মা তার বাবাকে ডাকছে। সে তার বাবা কিংবা মা কাওকেই দেখতে পেল না। চোখের সামনে একটা ঝাপসা আলো ঝুলে ছিল। সে আলোটাও এবার দপ করে নিভে গেল।

ক্রিস, ভাল নাম ক্রিস্টোফার স্কারভার, খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামি, ঝাড়ুর হাতল দিয়ে নির্মম ভাবে পিটিয়ে এই মাত্র যাকে হত্যা করল তার ভাল নাম ছিল জেফ্রি এল ডামার। ডাক নাম জেফ। স্থানঃ কলম্বিয়া কারেকশনাল ইন্সটিটিউশন, পোর্টেজ, উইসকনসিন। তারিখঃ নভেম্বর ২৮, ১৯৯৪।

লায়নেল ডামার বাড়িতে প্রবেশ করতেই শোবার ঘর থেকে তার নয় মাসের গর্ভবতী স্ত্রী, জয়েস, রক্তহিম করা চিৎকার করে উঠল। শোবার ঘরে ছুটে গেল লায়নেল। বমি করে নোংরার উপরেই শুয়ে ছিল জয়েস। বহুদিন স্নান না করা উস্কু খুস্কু চুল, চোখের কোনে জমে থাকা কাতুরের স্তুপ, মৃত মানুষের মত ফ্যাকাশে চামড়া, আর অসম্ভব রোগা শরীরে বেঢপ এক খানা পেট নিয়ে বিছানায় চিত হয়ে পড়ে ছিল তার স্ত্রী । এগিয়ে গিয়ে স্ত্রী'র শীর্ণ হাত চেপে ধরে লায়নেল জিজ্ঞাস করল,

ব্যাথা উঠেছে?

জয়েস ভাবলেশহীন দৃষ্টিতে সামনের দেয়ালের দিকে তাকিয়ে রইল। লায়নেল জানে স্ত্রী'কে প্রশ্ন করে লাভ নেই। গর্ভবতী হবার পর থেকেই কেমন বদলে গেছে সে। কোন কিছুই সহ্য হয় না তার। প্রেগনেন্ট অবস্থায় হরমোন জনিত কারণে মেয়েরা অদ্ভুত আচরণ করে সেটা অজানা নয় লায়নেলের। কিন্তু প্রতিনিয়ত চিৎকার চেচামিচি, অকথ্য গালি গালাজ, জিনিস পত্র ছুড়ে ফেলা ইত্যাদি লায়নেলকে ধৈর্যের প্রায় শেষ প্রান্তে নিয়ে গেছে। মাঝে মধ্যে লায়নেলের ইচ্ছা করে সব কিছু ছেড়েছুড়ে অন্য কোথাও চলে যায়। আর কত? জয়েসের পেটের আকৃতির সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলছে তার অসুস্থ আচরণ। পেটে বাচ্চা নিয়ে এসময় তার খুব সাবধান থাকা উচিত। কিন্তু সে ব্যাপারে তার কোন তোয়াক্কাই নেই। খেতে চায় না। প্রায়ই হাত মুখ খিঁচে শক্ত হয়ে বিছানায় পড়ে থাকে। লায়নেল নিশ্চিত এটা শারীরিক কোন ব্যাপার নয়। জিনিসটা মানসিক।

বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে দেয়ালের দিকে তাকিয়েই ঠান্ডা গলায় জয়েস জিজ্ঞাস করল,

এতক্ষণ কই ছিলে?

আমার কাজে কিছু সমস্যা যাচ্ছে জয়েস। কাজে আটকে গিয়েছিলাম।

কাজে আটকে গিয়েছিলে নাকি কারো সাথে ফস্টি নস্টি করতে করতে দেরি হয়েছে?

কি বল এসব?

যা সত্য তাই বলি। আমাকে সময় দিতে পারিস না কিন্তু কাজের কথা বলে বেশ্যা মাগীদের সময় দিস শুয়োরের বাচ্চা কোথাকার।

লায়নেল জানে এই কথার উত্তরে কিছু বলে লাভ নেই। সাধারণ বিবেচনাবোধ জয়েসের লোপ পেয়েছে। নিজের যা মনে আসে তাই বলবে এখন। সে চুপ করে থাকল।

দাঁত কিড়মিড় করে জয়েস বলল,

আমার সামনে থেকে সর তুই। তোর চেহারা আমি দেখতে চাই না।

রুম থেকে চুপ করে বেরিয়ে এল লায়নেল। সেদিন রাতে হাসপাতালে নিতে হল জয়েসকে। অসম্ভব ফ্যাকাশে একটা বাচ্চার জন্ম দিল তার স্ত্রী। বাচ্চার নাম আগেই ঠিক করা ছিল। জেফ্রি। জেফ্রি এল ডামার। তারিখঃ মে ২১, ১৯৬০।

জুলাই ২২, ১৯৯১। মাঝ রাত। এতো রাতেও বাইরে গা চিড়বিড় করা ভ্যাপসা গরম। মনে হচ্ছে চামড়ার উপর দিয়ে নরক থেকে উড়ে আসা কোন কীট তার পায়ের শেষ প্রান্তে ড্যাগারের মত ধারাল কাঁচের টুকরা বেঁধে টেনে হিঁচড়ে হেটে যাবার সময় নিজের মুখ থেকে গড়িয়ে পড়া বিষাক্ত লালা কেটে ফালি হয়ে যাওয়া ত্বকে ইচ্ছামত লেপে দিয়ে যাচ্ছে।

এমন সময় ল্যাম্প পোস্টের মৃদু আলোয় হালকা পাতলা কালো একটা ছেলেকে পড়ি মরি করে রাস্তা দিয়ে ছুটে আসতে দেখা গেল। তার বাঁ হাতের কব্জি থেকে ঝুলছে রূপালি হাত কড়া। ছেলেটার চেহারায় এমন কিছু ছিল যা দেখে মনে হতে পারে এই মাত্র মানুষ খেকো কোন হীংস্র প্রাণীর কবল থেকে জান নিয়ে ছুটে পালিয়েছে।

অদূরেই স্কোয়াড কার পার্ক করে বসে ছিল দুজন সিটি পুলিশ। ছেলেটার কব্জি থেকে হাত কড়া ঝুলতে দেখে সন্দেহ হল তাদের। গাড়ি থেকে বেড়িয়ে এসে থামাল তাকে। ছেলেটা হাঁপাতে হাঁপাতে বলল,

হি ইজ ক্রেজি ম্যান!

অফিসার ম্যাথেউ মার্স জিজ্ঞেশ করলেন, কে ক্রেজি? কার কথা বলছ?

দম নিতে নিতে ছেলেটা দূরের একটা অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং এর দিকে হাত তুলে দেখাল।

যারা ঠিকমত কথা বলতে জানে না কিংবা চায় না তাদের বন্ধুর সংখ্যা তাদের বলা কথার থেকেও কম হয়। জেফ্রি বেশ চুপচাপ ছেলে। কথা বলতে না পারলেই সে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। এ থেকে ধরে নেয়া যেতে পারে যে জেফ্রি'র তেমন কোন বন্ধু নেই। কথা অবশ্য পুরোটাই সত্য। জেফ্রি'র বন্ধু বলতে মাত্র হাতে গোনা দু'জন। এতে অবশ্য জেফ্রি'র তেমন কোন সমস্যা হয় না। সে একা থাকতেই পছন্দ করে।

তাদের বাড়ির পেছনের উঠোনটা পার হলেই পড়ে বন। সিডার, পাইন, আর অ্যাশ গাছে ভর্তি। দৈনিক স্কুল থেকে ফিরেই বনে ঢুকে পরে জেফ্রি। বন হল একটা বড়সড় সিন্দুকের মত। সিন্দুক ভর্তি হাজার রকমের গুপ্তধন। প্রতিদিনই কিছু না কিছু গুপ্তধন মিলে যায়। আজ বনে ঢুকতে না ঢুকতেই সুন্দর একটা গুপ্তধন মিলে গেল। এক হরিণ ছানা। তবে জ্যান্ত নয়। মৃত। বন্য প্রানী তার অর্ধেক শরীর খেয়ে ফেলেছে। তাতে কিছু যায় আসে না। জেফ্রি'র কাছে তাই অমুল্য। হরিণ ছানার অর্ধেক শরীর খানা ঝোলায় ভরে নিল সে।

পরের তিন ঘন্টা বনে ঘুরাঘুরি করে জেফ্রি যা পেল তার একটা লিস্ট দেয়া যাক-

১) ১টা মরা কাঠ বিড়ালী। বেশ কিছুদিন আগে মরেছে। কোন মাংসই অবশিষ্ট নেই।

২) ১টা মরা বুড়ো হুলো বেড়াল। দেখে মনে হল আজই মরেছে। দেহের সব কিছু এখনো বেশ টাটকা। মৃত্যু'র কারণ সম্ভবত বার্ধক্য জনিত। কারো পোষা হবার সম্ভাবনা নেই। এ ধরণের বেড়াল হয়তো এক কালে কারো পোষা থাকে। কিন্তু পরে কোন এক কারণে ছাড়া পেয়ে মুক্ত জীবন যাপন করতে করতে বন্য হয়ে যায়।

৩) বেশ কিছু অচেনা প্রানীর পাঁচ মিশালী হাড় গোর। হাড় গুলো এক জায়গায় ছড়ানো ছিটানো ছিল। দেখে মনে হল কোন রেকুনের (পশম ওয়ালা ছোটখাট কুকুরের মত দেখতে এক ধরণের প্রানী) কাজ।

বাড়ি ফিরে যত্ন করে হাড়গোর গুলো পানি দিয়ে পরিষ্কার করল জেফ্রি। তারপর বসল হুলো বেড়ালটাকে নিয়ে। ছুড়ি দিয়ে বেড়ালের পেটের কাছটায় জোড়ে কয়েকটা পোঁচ দিতেই নাড়িভুড়ি বেরিয়ে এল। নাড়িভুড়িগুলো ময়লার ব্যাগে ফেলে দিল সে। দ্রুত পচে গিয়ে বিকট গন্ধ বের করা ছাড়া এগুলোর কোন কাজ নেই। বেড়ালের হৃদপিণ্ডটা আলাদা করার সময় মোহিত হয়ে বেশ কয়বার জিনিসটা টেপাটেপি করল জেফ্রি। কি লাল আর নরম!

রাতে খেতে বসে জেফ্রি তার বাবাকে জিজ্ঞেস করল,

ব্লিচের ভেতর একটা মরা বেড়াল ফেলে দিলে কি হবে বাবা?

জেফ্রি'র বাবা, লায়নেল ডামার, পাতলা সোনালী ফ্রেমের চশমার ফাঁক দিয়ে জেফ্রি'র দিকে এক মুহূর্ত তাকিয়ে থেকে বললেন,

তোমার যদি আগ্রহ থাকে তাহলে কালকেই এটা নিয়ে একটা এক্সপেরিমেন্ট করে ফেলতে পারি।

উত্তেজনায় জেফ্রি'র চোখ ঝলমল করে উঠল।

১৮ জুন, ১৯৭৮। বাথ টাউনশিপ, ওহাইও। গ্রীষ্মের ঝক ঝকে আকাশে উদার হস্তে ভিটামিন ডি বিলাচ্ছে সূর্য। চৌরাস্তার মোড়ে বুড়ো আঙ্গুল তুলে দাঁড়িয়ে আছে স্টিভ। ভাল নাম স্টিভেন মার্ক হিক্স। পড়নে ধূসর টি শার্ট আর ময়লা তেল চিট চিটে জিন্স। গন্তব্য ষোল মাইল দূরের টাউন লক উড কর্নার। বিকেলে রক কনসার্টের আয়োজন হয়েছে সেখানে। ভালোয় ভালোয় সে পর্যন্ত পৌছাতে পারলে হয়। রাইডের জন্য আধা ঘন্টা ধরে চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে সে। এখন পর্যন্ত তুলে নেবার জন্য কেউ আগ্রহ দেখায়নি।

আরো মিনিট পনের পর সাদা একটি ফোর্ড টাউন ভিক্টোরিয়া তাকে পাশ কাটিয়ে রাস্তার ডান দিকে গিয়ে থামল। হাঁফ ছেড়ে সে দিকে দৌড় লাগাল স্টিভ। রাইড শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেল। আরেকটু হলে আশা ছেড়ে দিয়েছিল সে।

*****

স্টিভের মাথার মাঝ খানে সিঁথি করা। কপালের দুই পাশে ঝুলে আছে লম্বা মসৃণ চুল। মাথা যেদিকে কাঁত করে চুল গুলো সাথে সাথে সেদিকে হেলে পড়ে। ছেলেটা বড্ড অস্থির। এক জায়গায় বেশিক্ষণ স্থির হয়ে থাকতে পারছে না। এতক্ষণ বিছানায় বসে বিরামহীন পা দুলাচ্ছিল। এবার ঊঠে এসে ফ্লোর থেকে বেজ বলের ব্যাট খানা তুলে নিয়ে এমন ভাব করতে লাগল যেন ওই পাশ থেকে এখুনি বল ছুঁড়ে মারবে কেউ।

এক বোতল বিয়ার এগিয়ে দিয়ে জেফ্রি জিজ্ঞেশ করল,

কি নাম বললে?

পাছাটা পেছনের দিকে উঁচু করে সামনের দিকে ইঞ্চি খানেক ঝুঁকে শাঁই শাঁই করে বাতাসে ব্যাট চালিয়ে স্টিভ বলল,

কার?

যাদের কনসার্টে যাচ্ছ।

দ্য স্টাফোর্ডস।

নাম শুনিনি আগে।

লোকাল ব্যান্ড। নানা রকম মেলায় আর বারে গান করে বেড়ায়।

গায় কেমন?

ভালই। যাবে নাকি?

যেতাম, কিন্তু সন্ধ্যায় আমার আবার একটা কাজ আছে।

ওহ আচ্ছা।

বাতাসে অদৃশ্য বল পেটা করতে লাগল স্টিভ। ছেলেটার চোখে অদ্ভুত এক নিষ্পাপতা আছে, অনেকটা ঘুঘলিতে বাসা বাঁধা মা চড়ুই পাখির মত। ছটফটে কিন্তু নিষ্পাপ। জেফ্রির কেন যেন ভীষণ মায়া হল। তার ইচ্ছা হচ্ছিল স্টিভের মসৃণ চুল গুলোতে হাত বুলিয়ে আদর করে দিতে। তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখে ব্যাট চালানো থামিয়ে স্টিভ বলল,

কি ব্যাপার? কিছু বলবে?

জেফ্রি দ্রুত নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,

না। তোমার কনসার্ট যেন ঠিক ক'টায়?

স্টিভ বলল,

ছয়টা'র মধ্যে গেলেই হবে। তবে একটু আগে যেতে চাই। স্টেজের ঠিক সামনে দাঁড়াতে না পারলে অর্ধেক মজাই মাটি।

মাথা দুলিয়ে জেফ্রি সায় জানালো, তা ঠিক।

জেফ্রিকে ওভাবে তাকাতে দেখে স্টিভের ভেতর অস্বস্তি ফুটে উঠল। কনসার্টের এখনো ঘন্টা দুয়েক বাকি আছে বলে কয়েক বোতল ফ্রি বিয়ারের প্রস্তবে জেফ্রি'র এপার্টমেন্টে আসতে দ্বিধা করেনি স্টিভ। একেতো ফ্রি রাইড তার উপর মাগনা বিয়ার- যাকে বলে সোনায় সোহাগা। পকেটে পাঁচ ডলারের একটা কড় কড়ে নোট ছিল স্টিভের। এখান থেকে বিয়ার খেয়ে গা গরম করে গেলে কনসার্টে গিয়ে গাঁটের টাকা খরচ করতে হবে না। সামনের উইক এন্ডের ফুর্তির জন্য টাকাটা বেঁচে যায়। জেফ্রির চাহনীতে কিছু একটা ছিল। হাত থেকে ব্যাট নামিয়ে রেখে স্টিভ বলল,

আমি যাই।

ব্যস্ত হয়ে জেফ্রি বলল,

এখুনি যাবে?

হ্যা।

থাক না আর কিছুক্ষণ। তোমার সাথে আড্ডা দিয়ে মজা পাচ্ছিলাম।

এখন গেলেই ভাল হবে। পরে ভীরের মধ্যে ভাল স্পটে দাঁড়াতে পারব না।

নিজের ব্যাক প্যাক খানা তুলে কাঁধে ঝোলানোর জন্য নীচু হতেই স্টিভের মাথার পেছন দিকটায় গায়ের সমস্ত শক্তি এক করে ব্যায়াম করার ভারী বার বেল দিয়ে আঘাত করল জেফ্রি। ভচ করে মাথা থেঁৎলে যাবার একটা ভোঁতা শব্দ হল। প্রায় নিঃশব্দে মেঝেতে গড়িয়ে পড়ল স্টিভ।

হাত থেকে বার বেল খানা নামিয়ে রেখে স্টিভের নিথর দেহের দিকে অপলক তাকিয়ে রইল জেফ্রি। উত্তেজনায় তার হাত পা কাঁপছে। টেবিলে রাখা ছিল আধ খাওয়া বিয়ার। বোতলটা শেষ করবে কিনা সেটা নিয়ে এক মুহূর্ত দ্বিধায় ভুগল। তারপরই বোতল খানা হাত বাড়িয়ে নিয়ে ঢক ঢক করে গিলে ফেল শেষ পানীয় টুকু।

উপুর হয়ে পড়ে ছিল স্টিভ। তাকে এবার টেনে চিত করল। দুই হাতে টেনে নিজের জিন্স হাটু পর্যন্ত নামিয়ে আনল জেফ্রি। জীবনে অনেকবার হস্ত মৈথুন করেছে সে। কিন্তু আজ কাজটা করার সময় অন্য এক রকম উত্তেজনায় থর থর করে কাঁপতে লাগল। হাত পা এলিয়ে দিয়ে স্টিভের মৃত দেহের উপর শুয়ে পড়ল। গভীর মমতায় স্টিভের ঠোঁটে চুমু খেল সে। তারপর উঠে গিয়ে রান্নাঘর থেকে বড়সড় একটা মাংস কাটার ছুড়ি নিয়ে এসে স্টিভের নিথর দেহ খানা টেনে বাথরুমে নিয়ে এল।

ধীরে কিন্তু খুব যত্ন সহকরে স্টিভের হাত, পা, মাথা, এবং শিশ্ন দেহ থেকে আলাদা করল জেফ্রি।

ভাইয়া...

বল।

ভাইয়া...

বল ডেভ।

ক্ষুধা লেগেছে।

ক্ষুধা আমারও লেগেছে। একটু অপেক্ষা কর। মা স্যান্ডউইচ করে দেবেন।

জেফ...

বল ডেভ।

আই অ্যাম হাঙ্গরি জেফ।

এবার আর বিরক্তি ধরে রাখতে পারল না জেফ্রি। রুঢ় গলায় বলল,

তোমাকে একবার বলেছি মা খাবার করে দেবেন। আর কতবার বলব?

করুন স্বরে ডেভ বলল,

তুমি এক ঘন্টা আগেও বলেছিলে মা স্যান্ডউইচ বানিয়ে দেবেন।

একবার না বলেছি তোমাকে অপেক্ষা করতে?

বলে ডেভের গালে ঠাশ করে চর কষিয়ে দিল জেফ। ডেভের চোখ গলে গড় গড় করে পানি বেরিয়ে এল। ফোঁপাতে ফোঁপাতে ডেভ বলল,

আই লাভ ইউ জেফ।

ভাবলেশহীন দৃষ্টিতে ডেভের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে উঠে গেল জেফ। রান্নাঘরে গিয়ে একটা পি নাট বাটার স্যান্ডউইচ বানাল সে। স্যান্ডউইচ আর এক গ্লাস জুস তার ছোট ভাইয়ের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে দিয়ে জেফ বলল,

নাও।

স্টিভেন?

হ্যা। স্টিভেন টুমি। তুমি আমাকে স্টিভ বলে ডাকতে পার। তুমি?

ডাউন টাউনের এক সমকামীদের বারে বসে মদ গিলছিল জেফ। পাশে বসে সোনালী চুলের লম্বা চেহারার এক ছেলে তার সাথে পাল্লা দিয়ে গলায় মদ ঢালছিল। আড় চোখে জেফকে তাকাতে দেখে নিজেকে স্টিভেন বলে পরিচয় দিয়েছিল। হাত বাড়িয়ে দিয়ে জেফ বলল,

আমি জেফ। জেফ্রি ডামার।

করমর্দন শেষে স্টিভ জিজ্ঞাস করল,

তুমি এখানে প্রায় আস?

জেফ বলল,

প্রায় না। এর আগে মাত্র দু'বার এসেছিলাম।

তোমাকে দেখে মনে হয় আর্মিতে কাটিয়েছ কিছুদিন।

স্টিভের কথায় খানিকটা অবাক হলেও মাথা দুলিয়ে সায় জানালো জেফ,

তুমি ঠিক ধরেছ। এখন অবশ্য আর্মি'র সাথে নেই।

তাই? ছাড়লে কেন?

আর্মি'র ডিসিপ্লিন্ড লাইফ আমার পোষায়নি। আর্মিতে থাকলে কি আর এখন এভাবে মদ গিলতে পারতাম?

জেফের কথা শুনে খেঁক খেঁক করে হেসে স্টিভ বলল,

তা ঠিক।

পরের দুই ঘন্টা তারা চুটিয়ে আড্ডা দিল। পেশাপ করার জন্য একবার উঠে গিয়েছিল স্টিভ। সেই ফাঁকে বাসা থেকে বানিয়ে আনা খুব পোক্ত ঘুমের ঔষধের গুঁড়ো গোপনে স্টিভের মদের গ্লাসে মিশিয়ে দিল জেফ। বোতল দশেক বিয়ার শেষে তারা সিদ্ধান্ত নিল বাকি রাতটা তারা জেফের ভাড়া করা হোটেল রুমে আড্ডা দিয়ে কাটিয়ে দেবে।

তারপর দিন ডাউন টাউনের অ্যাম্বাসেডর হোটেল রুমে জেফের যখন ঘুম ভাঙ্গল তখন দুপুর গড়িয়েছে। পাশ ফিরতেই ছিটকে উঠল সে। বিস্ফোরিত নেত্রে হা করে চিত হয়ে পড়ে আছে স্টিভ। উলঙ্গ। তার চউড়া বুক ভেঙ্গে ভেতরের দিকে ঢুকে গেছে। শরীর জুড়ে কালো আর নীল কালশিটে। মুখের কোনে শুকিয়ে যাওয়া রক্তের ধারা। দেখে মনে হচ্ছে দৈত্যাকৃতির কোন এক হাতুড়ি দিয়ে নির্মমভাবে পেটানো হয়েছে তাকে। জেফ মুহুর্তেই বুঝতে পারল স্টিভ বেঁচে নেই। দুই হাতে নিজের মাথার চুল টানতে টানতে পুরো ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করল সে। তারমানে গত রাতে যেটাকে সে স্বপ্ন মনে করেছিল তা আদৌ স্বপ্ন ছিল না? তার ভাসা ভাসা মনে পরল সে স্টিভের বুকের উপর চড়ে বসেছিল। এক হাতে ঘুমন্ত স্টিভের মুখ চেপে ধরে অন্য হাতে তার বুক সই করে উম্মাদের মত ঘুষিয়ে যাচ্ছিল সে। নিজের হাতের দিকে তাকাতেই ব্যথা অনুভব করল জেফ। ছুঁলে ফেটে গেছে আঙ্গুলের গাঁট।

কোনমতে গায়ে কাপড় চড়িয়ে হোটেলের পাশের এক দোকান থেকে বড় দেখে একটি স্যুটকেস কিনে নিয়ে এল সে। স্টিভকে কায়দা করে তার ভেতর ঢুকিয়ে হোটেলের রিসেপশনে ফোন দিয়ে বলল,

তোমারা কি কাউকে একটু আমার রুমে পাঠাবে? আমার একটা বড় স্যুটকেস আছে। সেটা গাড়িতে তোলার জন্য একটু হেল্প দরকার।

অন্যপ্রান্ত থেকে রিসেপশন ডেস্কের মহিলা বলল, অবশ্যই। আমি এখুনি বেলম্যানকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।

স্যুটকেস নিয়ে বাড়ি চলে এল জেফ। একজন দক্ষ কসাইয়ের মতন দ্রুত স্টিভের হাত, পা, এবং মাথা কেটে আলাদা করল। হাড় থেকে মাংস ছুটিয়ে নিয়ে কেটে ছোট ছোট টুকরো করে ফেলল। তারপর হাড়গুলো চাদরে পেচিয়ে হাতুড়ি পেটা করে গুঁড়া করে ফেলল। পুরো কাজটা শেষ করতে তার ঘন্টা দুয়েকের মতন লাগল। স্টিভের মাথাটা রেখে বাকি সবকিছু ডস্টবিনে ফেলে দিয়ে এল জেফ।

কাজ শেষে স্টিভের মাথা নিয়ে বসল জেফ। বেচারার মুখটা এখনো হা হয়ে আছে। একটা শিরশিরে অনুভূতি তার ঘাড় থেকে বেয়ে তলপেটের দিকে গেল। বেল্ট খুলে প্যান্ট হাঁটু পর্যন্ত নামিয়ে আনল সে।

জেফের বাবা লায়নেল ডামার পেশায় একজন এনালিটিক্যাল কেমিস্ট। তিনি চেয়েছিলেন ছেলে তার মত কেমিস্ট না হোক কিন্তু কলেজ পড়াশোনাটা শেষ করুক। ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হবার তিন মাসের মধ্যে লেখাপড়া ইস্তফা দিয়ে বাড়ি চলে এল জেফ। মদ গেলা ছাড়া তার আর তেমন কাজ নেই। বিরক্ত হয়ে ছেলেকে আর্মিতে ঢুকিয়ে দিলেন লায়নেল। ট্রেনিং শেষে জেফের পোস্টিং হল জার্মানি।

অল্প কিছুদিনের মধ্যে আর্মি থেকেও তাকে ইস্তফা দেয়া হল। জেফ চরম মদখোর। বাবার লেকচার শুনতে হবে ভেবে বাড়ি না গিয়ে ফ্লোরিডা চলে গেল জেফ। এক স্যান্ডউইচের রেস্টুরেন্টে কাজ পেল। থাকার জায়গা হল এক মোটেলে। দেদারছে শরাব পেলানোর কারণে কাজ চলে গেল মাস খানেকের ভেতর। হৈহুল্লোড়, চিতকার-চেচামেচি আর ভাড়া না দেয়ায় মোটেল থেকেও বের করে দেয়া হল। তারপর কিছুদিন সমুদ্র সৈকতে রাত কাটিয়ে বাবার কাছে ফোন দিয়ে "ভাল হয়ে যাব" টাইপ শপথ করে ওহাইওতে বাড়ি ফিরে জেফ।

বাড়ির ফেরার দুই সপ্তাহের ভেতর মাতাল হয়ে পুলিশের সাথে ফ্যাকড়া বাঁধিয়ে বসল জেফ। ৬০ ডলার মুচলেকা দিয়ে সে যাত্রা রেহাই পেল। তিতিবিরক্ত হয়ে লায়নেল ছেলেকে উইসকনসিনের ওয়েস্ট এলিসে (মিলওয়াকি'র একটি উপশহর) নিজের মায়ের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। দাদীকে কিছুটা মান্যগন্য করে জেফ। যদি তার উসিলায় ছেলে একটু পথে আসে।

দাদীর সাথে কিছুদিন ভাল গেল জেফের। দাদীকে চার্চে আনা নেয়া, বাজার করা, এবং ঘর বাড়ি ঠিক ঠাক করতে লাগল। মিলওয়াকি ব্লাড এবং প্লজমা সেন্টারে কাজও পেল সে। সমস্যা শুরু হল দাদী যখন রাত বিরেতে জেফের ঘরে অল্প বয়স্ক ছেলেদের আনাগোনা দেখতে লাগলেন। সেই সাথে জেফের ঘর আর গাড়ি রাখার গ্যারেজ থেকে আসতে লাগল বিজাতীয় এক দুর্গন্ধ। দুর্গন্ধের উৎসের খোঁজে জেফের ঘরে গিয়ে পেলেন এক পুরুষ ম্যানিকেন। জেফকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করে কোন সদুত্তর পেলেন না। আর সইতে না পেরে জেফকে নিজের রাস্তা মাপতে বললেন তিনি।

(চলবে)


মন্তব্য

ধ্রুব আলম এর ছবি

এই জাতীয় খুনিদের নিয়ে আগ্রহ রয়েছে, লেখাটা নিয়ে এগিয়ে যান। তবে খুব বেশি অগোছালো মনে হলো, জানি ইচ্ছাকৃতভাবেই করেছেন এমন, তবুও কেমন যেন খাপছাড়া লাগছে। আত্মীয়তার সম্পর্কগুলো আরেকটু পরিষ্কার করে বললে সুবিধা হতো মনে হচ্ছে।

Sohel Lehos এর ছবি

ধ্রুব আলম, জিনিসটা ইচ্ছাকৃতভাবেই করা। দুটো সময় ধরতে চেয়েছিলাম। একটাতে মূল চরিত্র দ্বারা ঘটিত পৈশাচিক কার্যকলাপ তুলে ধরতে চেয়েছিলাম। আর অন্যটিতে চেয়েছিলাম তার এই রকম কার্যকলাপের পেছনে সম্ভাব্য কারণগুলো তুলে ধরতে (যেমন তার জন্ম সময়কার ঘটনা। গর্ভবতী অবস্থায় মায়ের মানসিক রোগীর মতন আচরণ)। লেখার সময় আমি বুঝতে পারছিলাম হয়তো অনেকেই কনফিউজড হবে কিছু কিছু ব্যাপারে। যাহোক দেখি আরো পরিষ্কার করে লেখা যায় কিনা।

আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ!

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

আইলসা এর ছবি

জিনিষ জটিল করলেই মহাকাব্য হয়ে যায় না। স্যরি।

Sohel Lehos এর ছবি

আইলসা, আমি কিন্তু কোথাও বলিনি যে আমি মহাকাব্য লিখতে বসেছি। লেখা জটিল করাও আমার ইচ্ছা ছিল না। আমি যেহেতু বিরাট কোন লেখক নই তাই অনেক সময় লেখা সহজ হচ্ছে না জটিল হচ্ছে তা বুঝি না। অন্যদের দেয়া মন্তব্যের জবাব পড়লেই বুঝতে পারবেন যে পাঠকের মতামতের উপর ভিত্তি করে আমি লেখা সম্পাদনায় আগ্রহী। গল্প আমি নিজেকে শোনানো জন্য লেখি না। লেখি পাঠকের জন্য। তাদের বুঝতে অসুবিধা হলে লেখার ফর্মেট অবশ্যই বদলে দেব। "...জটিল করলেই মহাকাব্য হয়ে যায় না" এ কথা আমার কোন কাজে আসবে না। বরং নির্দিষ্ট করে বলুন লেখা পড়তে আপনার কি সমস্যা হচ্ছে। আমি চেষ্টা করব সেগুলো ঠিক করে দিতে।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

ধ্রুব আলম এর ছবি

আলপটকা খোঁচা দিয়ে মন্তব্য করলেই মহাজ্ঞানী হওয়া যায় না। অফ যা

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১। বানান ভুল আর ভুল শব্দ রয়ে গেছে অনেক। সম্পাদনা করুন।
২। লেখার ফরম্যাট পাঠকের পক্ষে খুবই অসুবিধাজনক। সাবহেডিংগুলো বিভ্রান্তিকর, অদরকারী। লেখা শেষ হবার পর ফরম্যাট নিয়ে আবার ভাবুন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

Sohel Lehos এর ছবি

১। বানান ভুল ঠিক করে দেব।
২। এই লেখাটা আমার জন্য একটু পরীক্ষামূলক ছিল। উপরে ধ্রুব আলমের দেয়া মন্তব্যের জবাবে এ ব্যাপারে বলেছি। যাহোক পাঠক যেহেতু বিভ্রান্ত হচ্ছে সেহেতু ফরম্যাট অন্য রকম করা যায় কিনা চেষ্টা করব।

আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

এক লহমা এর ছবি

ষষ্ঠ পাণ্ডব-এর মন্তব্যর সাথে সহমত। লেখা চলুক। হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

Sohel Lehos এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ এক লহমা। লেখা সম্পাদনা'র কাজ চলছে। লেখা চলবে হাসি

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

আয়নামতি এর ছবি

আমি হরর মুভি দেখিনা, ভয়ের কারণে না রে ভাই। এসব পোষায় না ঠিক। পিতিমিতে এত সব থাকতে মানুষখেকো নিয়েই লিখতে হলু কেনু রেগে টং সুন্দর একটা গপ লিখেন ওটা পড়ে উল্টে দেই দেঁতো হাসি
আপনার উপন্যাস কতদূর পৌঁছালো? লিখে ফেলুন সময় সুযোগ মত।
শুভেচ্ছা থাকলো নতুন বছরের।

Sohel Lehos এর ছবি

এক্সপেরিমেন্টাল লেখা এটা। দেখতে চেয়েছিলাম এই ধরণের লেখা লেখতে পারি কিনা। সুন্দরের ফাঁকে ফাঁকে অসুন্দর থাকা উচিত। এতে সব কিছু ব্যালেন্সড হয় হাসি পড়ে উল্টে ফেলার মত সুন্দর/অসুন্দর কোন গল্পই ঠিক মতন লেখতে পারি না। তারপরো বউ এর ঝারি অগ্রাহ্য করে নিরন্তর চেষ্টা চলছে দেঁতো হাসি

ছোটখাট গল্প লেখতেই ধৈর্যে কুলায় না আর আর উপন্যাস! উপন্যাস ফালাইয়া রাখছি। বড় হয়ে উপন্যাস লেখব খাইছে

আপনাকেও শুভেচ্ছা।

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

ময়ুখ কিরীটি এর ছবি

সাইকো কাহিনি মাঝে মাঝে ভালো লাগে......আসলে উপলব্ধি করার চেষ্টা করি মনস্তত্ত্বটা.....উইকিতে খানিকটা পড়লাম জেফকে নিয়ে। আপনার লেখা পরার অপেক্ষায় থাকলাম হাসি

Sohel Lehos এর ছবি

লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ ময়ুখ কিরীটি! Jeffrey Dahmer দিয়ে গুগলে ইমেজ সার্চ দিয়ে দেখতে পারেন। এই লেখা তখন আর পড়ার ইচ্ছা নাও থাকতে পারে। হাসি

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

লগ অফ অবস্থায় আগেই পড়েছিলাম। লেখা সম্পাদনা হচ্ছে দেখা যাচ্ছে। আফসোস, এসব লেখা আমি লিখতে পারি না। আমার ভাবনা আর উপাদানের গণ্ডি বড়ো সীমাবদ্ধ! চলুক লেখা। সাথে আছি।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

Sohel Lehos এর ছবি

লেখা বোধ হয় একটু বেশি ছাড়া ছাড়া হয়ে গেছে। দেখি জোড়াতালি দিয়ে ঠিক করা যায় কিনা। তাই সম্পাদনা চলছে।

আফসোসের কিছু নেই। আপনি যে বিষয়গুলো নিয়ে লেখেন তা নিয়ে আমিও লেখতে পারি না। যারা লেখে তাদের সবারই লেখার ব্যাপারে নিজস্ব কিছু কমফোর্ট জোন থাকে। নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে তারা লিখে আরাম পায়। অন্য অনেকেই অনেক কিছু নিয়ে এত সুন্দর লেখে যে তাদেরকে নিয়ে শুধু হিংসা করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। আমি মাঝে মধ্যে পরীক্ষামূলক লেখা লেখার চেষ্টা করি। এ তারই অংশ।

সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ হাসি

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

সতর্কবার্তা দেখেও পড়ে ফেললাম। পড়ে ফেলার পর মনে হলো পড়া উচিত হয় নাই। দূর্বল পাকস্থলী এসব কাহিনী নিতে পারেনা মন খারাপ

আমার বন্ধু রাশেদ

Sohel Lehos এর ছবি

আমার বন্ধু রাশেদ, সবেতো শুরু। জঘন্য ঘটনাগুলোর বৃত্তান্ত পরের পর্বে থাকবে। স্যালাইন, বমি'র ঔষধ, আর এক জোড়া পরিষ্কার জাংগিয়া নিয়া রেডি থাকেন। পরের পর্ব শীঘ্র আসতেছে খাইছে

(বাই দা ওয়ে, আমার লেখা বুঝতে কি আপনার কোন অসুবিধা হয়েছে?)

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা কি শুরু থেকেই এমন ছিল নাকি ফরম্যাট এডিট করা হয়েছে পোস্ট দেয়ার পর জানা নেই। কিন্তু পড়তে কোনো সমস্যা হচ্ছে না, সম্পর্ক বা নতুন চরিত্রের আগমন বোঝা যাচ্ছে । মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার পড়তে, জানতে ভালো লাগে। শেষ পর্যন্ত এটা পড়ার ইচ্ছে রইলো।

শুভকামনা রইলো।

অপর্ণা মিতু

Sohel Lehos এর ছবি

অপর্ণা মিতু, লেখা অল্প একটু বদলে দেয়া হয়েছে। তা সামান্যই। আপনার পড়তে সমস্যা হচ্ছে না জেনে খুশি হলাম। কিছু পাঠকের অভিযোগ শুনে মনে হচ্ছিল পুরো লেখাটাই বদলে ফেলতে হবে কিনা কে জানে।

লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনার জন্যও শুভ কামনা রইল।

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

রংতুলি এর ছবি

সাইকো থ্রিলার, মাল্টিপল পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার, খুনখারাবি, সেক্স এইসব গ্রোগাসে গিলছি গত ক’মাসে। চারপাশের বাস্তবতার সাথে তাল মিলিয়ে নার্ভ মজবুত রাখতে অন্য কোন উপায় নেই আপাতত।
আর ইয়ে, পাঠকের মন্তব্যে লেখকের লেখার ধরণ বদলে ফেলাটা দুর্বল মনে হলো আমার কাছে। এধরণের লেখার শুরুটা একটু খাপছাড়া হতেই পারে, নিজের মতো চালিয়ে নিয়ে শেষ করলে পারতেন। ব্যক্তিগত মতামত। পড়ছি, চলুক...

Sohel Lehos এর ছবি

রংতুলি, আসলে বেশ কয়েকজন পাঠক যখন একই অভিযোগ তুলল তখন সেটা গুরুত্ব সহকারে না নিয়ে পারিনি। আসলে আমার কাছে যা মনে হয় সেটা হল এখানে স্বল্প পরিসরে অনেকগুলো ডিফারেন্ট চরিত্র নিয়ে এসেছি যাদের নামগুলো বিদেশী। কে কোনটা সেটা মনে রাখতে হয়তো কিছু পাঠক হিমশিম খাচ্ছেন। এই লেখার ঘটনাটা এরকম যে অল্প সময়ের মধ্যে অনেকগুলো চরিত্র নিয়ে আসা ছাড়া উপায় নেই। লেখার শেষ পর্যন্ত পড়ার পর হয়তো পাঠকরা পুরো জিনিসটা ভাল করে বুঝতে পারবেন।

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

Sohel Lehos এর ছবি

লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

দুটো ভিন্ন সময়ে আনাগোণা করা কঠিন ব্যাপার। যেহেতু এই ছোটো লেখায় সেটা করার চেষ্টা আপনি করেছেন, তদুপরি একাধিক বীক্ষণ কোণ থেকে গল্পটা বলতে চেয়েছে- একটু মনে হয় জট পাকিয়ে গেছে সুতোগুলো।

একটা কাজ করতে পারেন। দুটো আলাদা কাগজে দুই টাইমলাইনের ঘটনাগুলো সাজান। এরপর সেগুলোকে একত্র করে কাহিনিটা বলতে শুরু করুন। হাতে কলমে এই কাজগুলো করলে মগজের চিন্তাটা অনেকটা সঙ্ঘত, স্থির হয়ে আসে। লেখকের জন্যে সেটা সুবিধার।

আর যদি নিশ্চিত থাকেন যে আপনি শুধু নিজের আনন্দের জন্যেই লিখছেন, তাহলেও সই। সেই ক্ষেত্রে যাবতীয় উপদেশ গুল্লি মেরে আনন্দের জন্যেই লিখে যান, হ্যাপি ব্লগিং হাসি

Sohel Lehos এর ছবি

দুটো ভিন্ন সময়ে আনাগোণা করা কঠিন ব্যাপার।

সহমত। আপনার সাজেশন ট্রাই করে দেখব। আসলে আমি মূলত পাঠকের আনন্দের জন্য লেখি। পাঠকের আনন্দেই আমার তৃপ্তি। শুধু নিজেকে আনন্দ দিতে চাইলে নেটে এসে লেখা পাবলিশ করার কোন প্রোয়জন বোধ করতাম না। লেখা নিজের কম্পিউটারে লিখে ফেলে রাখতাম।

আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ হাসি

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

লেখার বিষয় যাই হোক না কেন সব লেখাতেই শলমা-জরির মিহি কাজ করবার অবকাশ থাকে। আপনার মিহি কাজ করবার ক্ষমতা আছে। তার প্রমাণ,

মনে হচ্ছে চামড়ার উপর দিয়ে নরক থেকে উড়ে আসা কোন কীট তার পায়ের শেষ প্রান্তে ড্যাগারের মত ধারাল কাঁচের টুকরা বেঁধে টেনে হিঁচড়ে হেটে যাবার সময় নিজের মুখ থেকে গড়িয়ে পড়া বিষাক্ত লালা কেটে ফালি হয়ে যাওয়া ত্বকে ইচ্ছামত লেপে দিয়ে যাচ্ছে।

তবে এইসব জায়গায় কাজগুলোকে আরো ফোটাতে হলে দীর্ঘ বাক্যে টেনে না নিয়ে ছোট ছোট বাক্যে সাজালে সোনামুখী সুঁইয়ে বোনা নকশী কাঁথার মতই রূপবতী মনে হবে।

লেখাটিতে আপনি পাঠককে যেন রোলার কোষ্টারে চড়িয়ে ইচ্ছেমত সময়ের জটিল গ্রন্থিতে আবর্তিত করেছেন। কখনও নিকট অতীতে ফেলে দিয়ে আবার হিঁচড়ে টেনে তুলেছেন দূর অতীতে। এমন পরীক্ষা দোষের কিছু নয়। তবে সময় উল্লেখ করে যোগসূত্র বুনবার চাইতে আরো কোন ভালো পদ্ধতি বের করা যায় কিনা সেই চেষ্টা করা যেতে পারে।

বানান সম্পর্কে আপনাকে আর সাদিয়াকে আর কখনই কিছু বলবো না।

ছোট ছোট বর্ণনাগুলো হীরের নাকফুলের মতো। বেশ মানিয়েছে।

সিরিজ চলুক। সময় নিয়ে লিখুন। তাড়াহুড়ো করে পোস্ট করবার দরকার নেই। হাসি

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

বানান সম্পর্কে আপনাকে আর সাদিয়াকে আর কখনই কিছু বলবো না।

কেনো বলবেন না রোমেল ভাই। এতদিনে কি এতটুকুও হইনি? না জানার ইচ্ছে থাকলে নিজের লেখাগুলো ড্রয়ারবন্দি করেই রাখতাম। আপনাদের সামনে দিতাম না। মন খারাপ হয়ে গেল।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

হায় হায়, দেখ দেখি? বোন আমার অল্পতেই অভিমান করেছে! আচ্ছা, ভুল মানছি! এবার একটু হাসো তো! হাসি

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

তাইরে নাইরে নাই
ভুল করেছে ভাই,
আর অভিমান নাই। হাসি

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

Sohel Lehos এর ছবি

রোমেল ভাই, আপনি লিখেন যেমন চমৎকার, মন্তব্যগুলোও করেন দারুণ। ধন্যবাদ আপনাকে।

আমি বেশিরভাগ সময় লেখি ছোট ছোট বাক্যে। মাঝে মধ্যে দুই একটা লম্বা লাইন ঢুকিয়ে দেই। গল্পটাতে দুটি সময় ধরতে চেয়েছিলাম। খুব কষ্টসাধ্য কাজ। হয়তো ভালভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারিনি। দেখি অন্য কোন ভাবে কাজটা করা যায় কিনা।

বানানের সাথে আমার সিরিয়াস রকম "কাইজ্জা" আছে। আমার কথা শুনতে চায় না মন খারাপ

"শলমা" মানে কি?

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

সোহেল, অভ্র স্পেল চেকার ব্যবহার করতে পারেন। কাজে দেবে। বানানের সাজেশন দেয় সেটি। সাজেশন পেতে পেতে সঠিক বানানটি মগজে ঢুকে যাবে। বানানের শুচিবায়ুগ্রস্ত সুশীল পুত্র নাকে রুমাল চাপা দিয়ে এই বুড়ো-মগজের পুঁতি গন্ধময় গলিতে যদি ঢুকতে পারে, তবে তরুণ তাজা মগজ পেলে তো কথাই নেই।

হাতের কাছে বাংলা অভিধান নেই, এই মুহূর্তে স্মৃতিও সহায়তা করছে না। তবে আক্ষরিক অর্থকে ছাপিয়েও কিছু অর্থ টইটুম্বুর মগ গলে উপচে পড়া বিয়ারের ফেনার মত জেগে থাকে, তাই না?

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

অতিথি লেখক এর ছবি

সহজে মুগ্ধ হওয়ার মত লেখা

আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।