মাছের মাথাটা শফিকের প্লেটে তুলে দিয়ে ময়না বলল,” আরেক টুকরা মাছ দেই?”
খাওয়া থামিয়ে বিরক্ত হয়ে শফিক বলল,” মাছতো আলরেডি প্লেটে ঢাইল্লা দিছ। দেওয়ার পর পারমিশন চাও এইটা কেমন স্বভাব?”
ময়না খিলখিল করে হাসে। বিরক্ত হয়ে শফিক মাছের মাথা চিবাতে চিবাতে বলল,” কথায় কথায় এত হাস কেন? সমস্যা কি তোমার?”
ময়না আরো জোরে জোরে হাসে। খিলখিল। খিলখিল।
“আরে কি সমস্যা! আবার মাথায় ঘোমটা দিছ? বলছি না আমার সামনে ঘোমটা দেওনের দরকার নাই?”
খিলখিল। খিলখিল। খিলখিল। খিলখিল।
“ধুর বাল খামুই না।”
ধাক্কা দিয়ে প্লেট সরিয়ে দেয় শফিক। শাড়ির আচল কামড়ে অতি কষ্টে হাসি থামিয়ে ময়না বলল,”এত চ্যাতেন কেন? নেন, নেন, খান। আর হাসমু না।”
হি হি হি করতে করতে দৌড়ে ঘর থেকে পালিয়ে গেল ময়না। অবস্থা দেখে শফিক নিজেই ফিক করে হেসে ফেলে। বাচ্চা মেয়ে আর কাকে বলে। তার বয়স নাকি আঠারো। বিয়ের সময় ময়নার চাচা তাই বলেছিল। ময়নার বাবা মা মারা গেছে অনেক কাল আগেই। শফিকের বিশ্বাস হয়না। মেয়ের কথা বার্তা শুনলে মনে হয় চৌদ্দ পনের। শুধু শরীরটাই যা বেড়েছে।
মিনিট দুয়েক পর ফেরত এসেছে ময়না। মুখে চাপা হাসি। তাকে দেখে বিষম খেল শফিক। ময়নার মাথায় ঘোমটা নেই। শাড়ির আচল কোমরে বাঁধা। তার সুউন্নত স্তন যুগল ব্লাউজ ফেটে বেড়িয়ে আসতে চাইছে। শফিক মাথা নিচু করে বলল,”আব্বা কই?”
“গঞ্জে গেছে। কি নাকি মিটিং। ফিরতে রাইত হইব।”
“ওহ আইচ্ছা।” প্লেটে হাত ধোয় শফিক।
“একটা কথা কই?”
“কও।”
“চলেন বেড়াইয়া আসি।”
“কই?”
“যেইখানে ইচ্ছা।”
“না।"
“চলেন না? কখনওতো কোনখানে যাই না।”
“এই ভর দুপুরে কই যামু? বাইরে ঠা ঠা রইদ।”
“আরে চলেন না।”
“ধুর বাল!”
ময়নাকে পেছনে বসিয়ে বাতাসের বেগে সাইকেল চালায় শফিক। এক হাতে শফিককে ধরে রেখেছে ময়না। শফিকের অস্বস্তি লাগে। অদ্ভুত কেমন একটা অনুভূতি অলস এক সাপের মত ধীরগতিতে তার তলপেটের দিকে এগিয়ে যায়।
মাটির উঁচু রাস্তা ধরে শনশন করে ছুটে চলে সাইকেল। দুই ধারে অবারিত শর্ষের ক্ষেত। এদিকটায় লোকজন তেমন নেই। পেছন থেকে দুই হাত দিয়ে শফিককে জড়িয়ে ধরে ময়না। দম বন্ধ করে মেশিনের মত প্যাডেল চালায় শফিক।
বাসায় ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল তাদের। দরজায় মুখ প্যাঁচা করে বসে ছিল হাফিজ উদ্দিন। শফিকের বাবা। তাদেরকে দেখে উঠে দাঁড়িয়ে গম্ভীর গলায় জিজ্ঞাস করল,”কই গেছিলি?”
সাইকেল থেকে নেমে দ্রুত মাথায় ঘোমটা টানে ময়না। ভয়ে নীল হয়ে যায় শফিকের হলদে ফর্সা মুখ। হাফিজ উদ্দিন এলাকার মাতবর। চরম বদরাগী মানুষ। মাথা নিচু করে শফিক বলে,”একটু ঘুরাইতে নিয়া গেছিলাম।”
“ঘুরাইতে নিয়া গেছিলি?”
শফিক কিছু বলে না। মাথা নিচু করে রাখে। হঠাত পা থেকে স্যান্ডেল খুলে বিদ্যুৎ গতিতে ছেলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হাফিজ উদ্দিন।
“শুয়োরের বাচ্চা, নিজের মায়ের লগে পিরীতি চোদাও?”
পটাশ পটাশ স্যান্ডেল ফাটে শফিকের পিঠে। ছয় মাস আগে শফিকের মা ক্যান্সারে মারা যাওয়ার পর অনাথ ময়নাকে বিয়ে করে ঘরে এনেছিল হাফিজ উদ্দিন।
মন্তব্য
এই টুইস্ট আশা করিনাই! আপনার লেখা খুব সাবলীল। পড়তে আরাম।
চমৎকার!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আশা করা যায় এমন টুইস্ট কোন টুইস্টই না। অনেক ধন্যবাদ
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
বেশ ভালো লাগল।
ধন্যবাদ
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
আপ্নে জ্যাতা!?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
..................................................................
#Banshibir.
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
লেখকের নাম সোহেল লেহস আর ট্যাগে অণুগল্প দেখে বুঝতে পারছিলাম ট্যুইস্ট আসছে। পড়তে পড়তে আমি ধারণা করেছিলাম ঠিক দুক্ষুর বেলা ভূতুরে কিছু হবে। লম্বা ঘোমটা দেখে সন্দেহ আরও বেড়েছিল। শেষে ট্যুইস্টের ধাক্কাটা খেয়ে মনে হলো ঠিকই আছে। আপনি আর নীড়দা' ট্যুইস্ট নিয়ে খেললেও 'তেনা'রা আপনাদের কাছে বিশেষ পাত্তা পায়না।
ট্যুইস্টের বাইরেও গল্পটা চমৎকার। আপনার দেখার চোখ আছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দশ বারোটা বাচ্চা গল্প পয়দা করেছি গত ছয়মাস। সব কয়টাতেই ট্যুইস্ট দেয়া। পাঠক বুঝবে যে ট্যুইস্ট আছে। তবে কি ট্যুইস্ট সেইটা বুঝবে না। এইটাই কেরামতি মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
@ষষ্ঠ পাণ্ডব'দা আপনার মতামত কে আমি সমর্থন করি। তারা দু'জন পারেও বটে! গল্প কইতে কই চইল্লা যায়
-বৃদ্ধ কিশোর
দাদা আপনি পারেনও...... পড়লেই মনে হয় কতটা বাস্তব আবার শেষের দিকে এসে মনে হয় ঠাডায় বারি মারছে!!
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই। আপনি যেন কে? নাম দেখি না
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
দুঃখিত নাম লিখতে প্রাই ভুলে যাই।
-বৃদ্ধ কিশোর
চমৎকার । এবং বাস্তবতা আমাদের গ্রামগঞ্জের।
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
এমনটা আশা করিনি হে! তুখোড় ।
অনেক ধন্যবাদ
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
আপনার পরিবর্তনটা চোখে পড়ার মতো। ভালো লেগেছে।
----মোখলেস হোসেন
লিখতে লিখতেই পরিবর্তন আসে। ভাল লেগেছে জেনে অনেক ভাল লাগল। ধন্যবাদ!
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
ঐ যে বলছিলাম আপনার নাম দেখলে না পড়ে থাকাই যায়না।
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
ধন্যবাদ
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
শেষটা একেবারেই ঠা ঠা রইদের মত হইছে !
এ্যানি মাসুদ
ধন্যবাদ
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
শেষটায় এসে চরম একটা ধাক্কা খেলাম! কী চমৎকার করে গল্পের প্লট সাজান আপনি!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
অনেক ধন্যবাদ
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
জিনিস লিখসেন একটা। লাস্টের টুইস্ট পইড়া মুখ যে হাঁ হইসিলো, বন্ধ হইসে পাক্কা এক ঘন্টা পর। নাহ, অদ্ভুত হয়েছে। মানে ধাক্কাটা; পুরা ধক করে লাগে। অসাধারন। এই এক লেখা পড়ে এতটাই মুগ্ধ হয়েছি যে আপনার বাদবাকি লেখাগুলা লাইন ধরে পড়ে ফেললাম।
হা হা হা খিয়াল কইরা মুখ দিয়া আবার মাছি ঢুইকা না যায়। গল্প ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগল। আপনার নামটাতো জানা হলো না। অনেক ধন্যবাদ
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
নাম লিখতে ভুলে গিয়েছিলাম।
আপনার গল্পগুলার মধ্যে এইটা আসলেই "এ ক্লাস এপার্ট।" যতবার পড়ি ভাল্লাগে। এইটাও একটা মজা। লাস্টের টুইস্ট জেনে পড়াটা।
অন্তরা রহমান
গল্পটি তবে এই?! সাংঘাতিক টুইস্ট। চমৎকার গল্প। আমাদের গ্রাম বাংলার চিত্র। ভাল লেগেছে আর কেঁদে উঠেছে মন।
ধন্যবাদ!
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
এইটার টুইস্ট অত না। কিন্তু ভাল্লাগছে
অজ্ঞাতবাস
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
নতুন মন্তব্য করুন