এক জোড়া নীল চোখ সমুদ্রের বিশাল ঢেউ তুলে সুনামির মতো আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। ঘটনার শুরু দু'মাস আগে।
রাত এগারোটায় আমার কাজ শেষ হয়। তার দশ মিনিট পরই আমার রুটের বাস এসে থামে। আমার কাজ থেকে ঠিক দুই স্টপ পরেই মেয়েটিও উঠে নিয়ম করে।
তার মাথায় দীঘল সোনালী চুল। তার অদ্ভুত কমনীয় ত্বকে ঝর্ণার পানির সতেজতা। সে যখন হেটে এসে আমার সামনের সিটটায় বসে তখন তার সোনালী চুলগুলো আরব দেশীয় ঘোড়ার কেশরের মত ঢেউ খেলতে থাকে। আর তার সুগভীর অয়াত নীল চোখে মহাশুন্যের কালো গহ্বরের গভীরতা। কে জানে সেখানে হারিয়ে গেছে কত পুরুষ!
শুধু মেয়েটিকে দেখব বলে আমি মাঝেমাঝে ছুটির দিনেও কাজে গিয়ে বসে থাকি। আমার কলিগেরা হাসাহাসি করে। বলে,"কি হে বন্ধের দিনে এখানে কি করছো?
আমিও কৌতুক করে বলি,"তোমাদের না দেখে আমি বেশিক্ষণ থাকতে পারি না জানেমান।"
আমি জানি মেয়েটির চোখে চোখ পড়ার পর থেকেই আমি আর আমি নেই। আমি বদলে গেছি। আমার প্রতিটি মুহুর্ত কাটে তাকে ভেবে। আমি তার সোনালী চুলে হাত বুলিয়ে দেই। তার মোহনীয় ত্বকে নাক দিয়ে দাগ কেটে যাই। তার দীর্ঘ গ্রীবায় আঁকি আলতো চুমুর পরশ।
অদ্ভুত এক ভালো লাগায় আমি ছেয়ে থাকি সারাক্ষণ। ভাবি বাস্তবে না হোক সে আছে আমার কল্পনায়। এটাই কি কম পাওয়া? এমনভাবে কাউকে কোনদিন ভালবাসিনি। বিশুদ্ধ ভালবাসায় যে সুখ পৃথবীর আর কোন কিছুর সাথে তার তুলনা হয় না।
সেদিনও কাজ শেষে বাসে চেপে বসেছি। আর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি মেয়েটি কখন উঠবে। সামান্য সময়ের অপেক্ষা। তাতেই আমার মনে হয় অনন্ত কাল। দুই স্টপ পরে বাস থামে। সোনালী চুলে ঢেউ তুলে উঠে আসে মেয়েটি। আমি দম বন্ধ করে তাকিয়ে থাকি।
আমার ভুবন কাঁপিয়ে দিয়ে আমার পাশে এসে বসে মেয়েটি। মিষ্টি করে হেসে বলে,"তোমাকে দৈনিক দেখি।"
নিজেকে কোনমতে সামলে বলি,"আমিও তোমাকে দৈনিক দেখি।"
হাত বাড়িয়ে দিয়ে মেয়েটি বলে,"আমি সোফিয়া। তুমি?"
হাত মিলিয়ে বলি,"আমি হাসান।"
সোফিয়ার সাথে দারুন কথা জমে যায় আমার। জানতে পারি সে এদিকেই কোথাও নাইট শিফটে জব করে। তবে আজ তার কাজ নেই। বন্ধের দিন রাতে সে বাসে একা একা ঘুরে বেড়ায়। একথা সেকথায় কখন আমার বাসার স্টপেজে চলে এসেছি টের পাইনি।
আমি কাতর গলায় বলি,"আমাকে এখানে নামতে হবে।"
সেও উঠে দাঁড়িয়ে বলে,"এখানে আমিও নামবো।"
বাস থেকে নামতে নামতে জিজ্ঞাস করি,"এখন কই যাবে?"
সে বলে,"ব্লু মুন সেলুনে। দুটো বিয়ার খাবো।"
আমি উত্তেজিত হয়ে বলি,"আরে! আমিওতো ওদিকেই যাচ্ছি। ব্লুমুনের সামনের বিল্ডিংটার দোতলাতেই আমি থাকি।"
মেয়েটি,"বলো কি!"
আমি বলি,"যদি কিছু মনে না করো আমি কি তোমাকে ড্রিংক্সের অফার করতে পারি।"
সোফিয়া মিষ্টি হেসে সায় দেয়। সেলুনে আমাদের সময় উড়তে থাকে কখনো স্ট্রবেরি মার্গারিটায়, কখনো রাম এ্যান্ড কোক কিংবা কখনো ভদকা শটে।
এক সময় আমাদেরকে আবিষ্কার করি আমার বিছানায়। ব্লুমুন থেকে কখন আমার ছোট্ট এপার্টমেন্টায় চলে এসেছি টেরও পাইনি। আমি তাকে উম্মাদের মত চুমু খেতে থাকি। সোফিয়া আমার নীচে পড়ে গোংগায়। বাঁধ ভাংগা জোয়ারের মতো আমি সব উজাড় করে দেই। আমার মনে হতে থাকে এ স্বপ্ন। অবশ্যই স্বপ্ন।
বিছানায় চিত হয়ে পড়ে যখন আমার বুক হাপরের মতো উঠা নামা করছে তখন আমাকে টেনে পৃথিবীর বাস্তবতায় নামিয়ে আনে সোফিয়া। নেশাতুর কন্ঠে বলে,"এমনিতেই আমি পার নাইট আড়াইশো করে চার্জ করি। কিন্তু তোমাকে আমার মনে ধরেছে। এছাড়া অ্যালকোহলও খাইয়েছো তুমি। আপাতত দেড়শো দিলেই চলবে লক্ষ্মীটি।"
বিছানা থেকে উঠে গায়ে কাপড় চড়াতে লাগে সোফিয়া।
মন্তব্য
পাউন্ড না ডলার ?
___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা
সেটা জেনে কাম কি? এরপর হয়তো সোফিয়ার ফোন নম্বর চাইবেন
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
শাহানা ফেরদৌস অথবা আবুল খায়ের মুসলেহ উদ্দিনের একটা গল্প ছিল ঠিক এই প্লটের - নাম মনে নেই। সেখানে প্রাক্তন স্ত্রীর সাথে পথে দেখা হয়ে যায়, গল্প করতে করতে তার বাসায় চলে যায়, পরদিন সকালে প্রাক্তন স্ত্রী আড়াইশো টাকা দাবি করে।
মপাসারও এমন একটা প্লটের কথা মনে পড়ল-
স্বামী রক্ষিতাদের পেছনে অনেক টাকা খরচ করেন।
স্ত্রী একদিন খুব প্রেমকামনাময়ী হয়ে তার কাছে এসে।
স্বামীর মধ্যে যখন কামনা জেগে ওঠে
তখন স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে টাকা দাবি করে।
তিনি তার রক্ষিতা প্রেমিকাদের জন্য স্বামী যে খরচ করেন, সেই রেট ধরে
হুমম, অই গল্প পড়িনি। তবে প্লটখানা "ঠিক এই প্লটের" মতোই কিনা বুঝলাম না।
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
আগের মন্তব্যটা পড়ে দেখি, লেখাটাই হয় নি তখন। বোঝার উপায়ই নেই। ঠিক করে দিয়েছি।
এখন যদি বোঝা যায়- ঠিক মিলও আছে তা নয় আসলে-
একটা কিছু দেখে আরেকটা কিছু মনে পড়ে যায় না। তেমন আর কি-
ধন্যবাদ!
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
নতুন মন্তব্য করুন