পাপ-পূণ্যের কথা আমি কাহারে সুধাই
এক দেশে যা পাপ গণ্য আরেক দেশে পূণ্য তাই
- তাই কোন পূণ্যবলে বারাক হোসেন ওবামার নোবেলপ্রাপ্তি তা নিয়ে বিচার - বিশ্লেষণ করতে চাইনা। তবে এই সংবাদটি কর্ণকুহরে প্রবেশ করিয়াই আমার প্রাণে যে উপলব্ধি জাগাইয়াছে তা প্রকাশ না করিলে বোধকরি পেটের অসুখে ভুগিব।
“এই মহেন্দ্রক্ষণে, আমেরিকায় পরিবর্তন এসেছে” - রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেয়ার পর বারাক ওবামার প্রথম ভাষণ শুনে মনে পড়ে গেল “দা ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে”র মত সেই সব হলিউডি সিনেমার কথা যেখানে পৃথিবীর ওপর হয় এলিয়েন আক্রমণ আর আমেরিকার ওপরই বর্তায় পৃথিবীকে রক্ষার ভার। এবং সিনেমার শেষে অবধারিতভাবে একটি রক্ত গরম করা ভাষণ। মিশরে ওবামা যখন বললেন “আসসালামু আলাইকুম” - তখন যে তালি পড়লো তার তুলনা কেবল মাইকেল জ্যকসনের সাথে করা যেতে পারে। অবশ্য তার আগেই ফোর্বস পত্রিকার সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ১০০ “তারকা”র তালিকায় ৪৯ তম স্থানটি দখল করে নিয়েছেন তিনি।
যাক সে কথা, জনপ্রিয়তা নয় আন্তর্জাতিক কুটনীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা ও পারমাণবিক অস্ত্র মুক্ত বিশ্ব গড়ার উদ্যোগের জন্য নোবেল দেয়া হয়েছে তাকে। যদিও ধ্রুপদী হলিউডি ধাঁচের ভাষণ দেয়া ছাড়া বিশ্ব রাজনীতিতে তেমন কোনো পরিবর্তন তিনি আনতে পেরেছেন কিনা তা কেবল আমার মত অধমই কেবল নয় বোদ্ধাদেরও চোখে পড়েনি।
আমার যা মনে হয় তার নোবেল পাওয়ার পেছনে মূল কারণটি হলো - বুশ না হওয়া। মানুষ নাকি যে কোনো কিছু বোঝে নঞর্থক বোধ দিয়ে। [১] অর্থাৎ যে কোনো অস্তিত্বের পরিচয়প্রাপ্তি ঘটে তুলনামূলক বিচারে - ক ভালো কারণ ক তা করেনা যা খ করে। তাই “চেঞ্জ উই নিড” শ্লোগানের জোরেই ওমাবার সিংহাসনপ্রাপ্তি। নোবেলপ্রাপ্তিটাও হয়তো সেই তালেই হয়ে গেল।
[১] সসুর দুটি চিহ্নের (সাইন) মধ্যের না-বোধক, বিপরীতার্থক পার্থক্যের ওপর জোর দিয়েছেন এবং কাঠামোগত বিশ্লেষণে দ্বিপদী বিপ্রতীপ (বাইনারি অপোজিশন) সমূহই মূল বিষয় (জীবন/মৃত্যু, সাদা/কালো)। সসুর বলেন, “যে কোনো চিন্তা ... বিষয়বস্তু অনুসারে হ্যাঁ - বোধকভাবে গঠিত না হয়ে না-বোধক উপায়ে একই তন্ত্রে (সিস্টেম) অবস্থানরত অন্যান্য উপকরণের সঙ্গে তুলনার মাধ্যমে গঠিত হয়। প্রত্যেকের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারিত হয় অন্যেরা যা নয় তার ভিত্তিতে। ” - ফার্দিনান্দ ডি সসুর : কোর্স ইন জেনারেল লিঙ্গুইস্টিক্স
মন্তব্য
লেখাটা ভালো লাগা শুরু হয়েছিল, শুরু না হতেই যেন শেষ হয়ে গেল লেখাটা।
"প্রত্যেকের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারিত হয় অন্যেরা যা নয় তার ভিত্তিতে।"--------
চিরসত্য তথ্যটির জন্য ও আপনার অসম্ভব সুন্দর লেখাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এস হোসাইন
--------------------
"মোর মনো মাঝে মায়ের মুখ।"
শুরুর সাথে শেষের আর নামের সাথে বিষয় বস্তুর কোন মিল খোঁজে পেলাম না। যতটা আগ্রহ ভরে পড়া শুরু করেছিলাম শেষে এসে আর পেলাম না। তবে সসুর তত্ত্বটার উপস্থাপনা ভালো হয়েছে।
ধন্যবাদ।
দলছুট।
সরি বস, আমি আসলে আলস্যজনিত রোগে ভুগতেসি। পরের বার বড় কইরা লিখার চেষ্টা করুম নে।
হুম ... ভালো প্রসঙ্গ। ভালো বক্তব্য। কিন্তু আরো বিস্তারিত হওয়া দরকার ছিল। নয় কি?
: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: :
'Cinema is over' - Master Godard
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
সবকিছুর পরেও আমার কেন যানি মনে হয়, নোবেল কমিটির বিচার সঠিক হয়েছে ।
কারন শান্তির সপক্ষে সে শুনিয়েছে, হ য়তো ভবিষ্যতে কিছুটা হলেও করা যাবে ।
নির্ভানা
...কিন্তু নোবেল পুরষ্কার দেওয়ার নিয়ম-ই হলো আগে কাজ করে দেখাতে হয়, প্রমাণ দেখাতে হয়। ভবিষ্যতে কে কী করবে- তা দিয়ে নোবেল দেওয়া হয় না। আইনস্টাইন যুগান্তকারী আপেক্ষিকতার তত্ত্ব দিয়েও নোবেল পান নি, কারণ ওটা হাতেকলমে প্রমাণ করা যায় নি। তাঁকে নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হয়েছি ফটোইফেক্ট (এইখানে আরেকটা কী শব্দ আছে, ভুলে গেছি) তত্ত্বের জন্য, যেটা অন্যকেউ প্রমাণ করেছিলেন।
এখনও কি মনে হয় নোবেল কমিটির বিচার সঠিক হয়েছে?
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ফটোইলেক্ট্রিক ইফেক্ট
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
বিজ্ঞান আর শান্তির বিষয় আসলে এক নয়। শান্তির ক্ষেত্রে কেউ যদি সীমাহিন বৈপরিত্যের মধ্যে চেষ্টাকে জারি রাখেন এবং সফল না হন আর কেউ যদি অল্পচেষ্টায় কেবল অনুকুল পরিপার্শের সুবাদে শান্তি প্রতিষ্ঠার কান্ডারি হয়ে দাড়ান সেক্ষেত্রে কেবল সাফল্য না পাবার কারনে প্রথম জনকে হিসাবে আনা যাবে না সেটা বোধকরি ঠিক হবে না। আমার মনে হয় বার্মার সুকি এক্ষেত্রে উদাহরন হতে পারে। (অবশ্য চাইলে তার পুরষ্কার পাওয়া নিয়েও আপনি প্রশ্ন তুলতেই পারেন)।
ওবামার মনের চাওয়া কি আমি বাইরে থেকে বলতে পারবনা; তিনি যখন ক্ষমতায় আসছিলেন তখন তেমন উত্তেজিতও হইনি এই ভেবে যে তার মনে যাই থাকুক আমেরিকার সরকার যেমনটা প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নির্ভর তাতে আসলে ব্যক্তির ভূমিকা রাখার গন্ডী অনেক সীমাবদ্ধ। চাইলেও বড় কিছু করা কঠিন এবং সময় সাপেক্ষ।
এই বিষয়ের আগের পোস্টে বলা হয়েছেঃ
এই বেল্টের ব্যপারটা এখানে লক্ষ্যনিয়। বেল্ট যে একটা আছে সেটা সবাই জানে সবাই বোঝে। ওবামা যে হালুম করছে সেটাও সবাই বোঝে। এখন ওবামা ইরান আক্রমন করলে সেটা কি ঠিক হত? আমি জানি না। তবে এই বেল্টের টানটার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকে থাকার ক্ষেত্রে ওবামা যথেষ্ট ধৈর্য এবং প্রজ্ঞার পরিচয় দিচ্ছেন এমনটা ভাবা সম্ভব।
আর তাঁর নোবেল প্রাইজ পাবার ব্যপারটার আরেকটা দিক আছে, সেটা যৌক্তিকতা নিয়ে নয়। বরং যদি এই পুরষ্কার তাঁকে নেগসিয়েশনের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থায় যেতে সাহয্য করে সেটাও একটা ভাল দিক হবে হয়ত। অবশ্যই এখানে ধরে নেয়া হচ্ছে এই কাজের জন্য উপযুক্ত প্রজ্ঞা আর সদিচ্ছা তাঁর রয়েছে। সে বিষয়ে চাইলে কেউ সন্দিহান হতেই পারেন। ওবামা চাইলে সেটা অপব্যবহারও করতে পারে। আর অবশ্যই নোবেল প্রাইজে দেবার উদ্দেশ্য হিসাবে এই ব্যপারটা যথেষ্ট নয়।
দারুণ তো েলখাটা। েএকটু কঠিন লাগল। কিন্তু ভােলা।
একজন বলেছিল, নোবেল কমিটির কর্তারা যে বুশকে শান্তিপুরস্কার টি দেয়নি, তাতেই খুশী!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
বুশের কাউবয় ভাবটাই ওর কাল হইসে
সবাইকে ধন্যবাদ।
এটাই মূল কথা। চলুক।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
নতুন মন্তব্য করুন