আষাঢ়ের সকাল বাসি মুখেই দুপুরে গড়ায়। রাতের সঙ্গে কলহকাতরতায় হয়ত মুখভার করে রাখেতো রাখেই। বেলায় বেলায় তার বসন পাল্টানোয় অভ্যস্ত আমি তার এই বৈচিত্রহীন বিরাগে কিছুটা ব্যবহারিক সমস্যায় পড়লেও বিচলিত হইনা। আরামদায়ক আলস্যে মোড়ানো সকালটা অবলীলায় বিছানায় খরচ করে বেলা দ্বিপ্রহরে হাতে তুলে নেই চায়ের কাপ। পত্রিকাটা খুলতেই মুখে লাগে রক্তের ছিটা। টিস্যু পেপারে মুছে দেই তড়িৎ হাতে। আমার আগ্রহ খেলার খবরে।
দুপুরের ভাতঘুমে অবচেতনের সুযোগ নিয়ে ট্রেনে কাটা পড়া শরীর হেচড়াতে হেচড়াতে হাজির হয় খবরের কাগজের লাশগন্ধি শিরোনামগুলো। প্রায়ই আসে ওরা - বিষের গ্যাজঁলা তুলে অথবা আগুনে ঝলসানো হাড়-মাংস সামলে। আত্মকে হত্যা করে কিংবা হত্যা হয়ে চিন্তুার পুকুরে বলয় তৈরির চেষ্টা করে। কিন্তু আমি টেলিভিশন দেখতেই বেশি পছন্দ করি।
টেলিভিশনে যুদ্ধ হয়, আমি যুদ্ধ করি। আমি ভিয়েতনামী, আমি ইরাকী, আমি ফিলিস্তিনি, আমি আফগান, আমি কাশ্মিরি। আমি লালগড়ের জঙ্গলের না খেতে পাওয়া মাওবাদী। আমি পপকর্নের ঠোঙ্গায় লড়াইয়ের ছক কাটি।
আমি ফ্রয়েড পড়েছি কাজেই তোমরা আমার স্বপ্নে এসোনা। মৃত্যু অভাবনীয় নয় আর। লাশের ইশারায় চমকে উঠিনা এখন। যাও ঘুমাও সব আমাকেও মগ্ন থাকতে দাও নিস্পৃহ তন্দ্রায়।
অভিমানী রোদনের পর প্রেমাদ্র তরুণীর সলাজ গালের রং নিয়ে বিকাল আবির্ভূত হয়। বেহায়াপনার চুড়ান্ত উদাহারণ হিসেবে রংধনুতেও সাজায় নিজেকে। রংধনুর লাল ফোটায় ফোটায় ঝরে। সফেদ টিস্যুতে মুছে ফেলি লাল কিন্তু জড়িয়ে থাকে লোহাগন্ধ, পাত্তা দেইনা। আকাশে তাকিয়ে নিস্পৃহতার সুত্র শেখায় মন দেই।
মন্তব্য
আরো লিখুন । ভালো লাগলো পড়তে ।
দারুণ! ভালো লাগলো।
জহিরুল ইসলাম নাদিম
খুব ভালো লাগলো, খারাপ লাগার এই কথাগুলো!
গল্প লিখবেন নাকি একটা? অনেকদিন আপনার গল্প পড়া হয় না।
বাহ বেশ লেখেন তো আপনি। আজ সকাল থেকে আমিও কাগজ পড়তে পারছি না। খুব-ই একাত্ম বোধ করলাম আজ আপনার সাথে।
হুম! আমরা অনেকেই ঠিক এইরকমভাবেই দিনযাপন করছি। খুব ভালো লিখেছেন।
নতুন মন্তব্য করুন