আমরা তাকে ডাকবো, মিস্টার এক্স, ঠিক একটা হলিউডি সিনেমার মত। কারণ তার শোবার ঘরটা ঠিক একটা হলিউডি সিনেমার মত এবং তিনি ঘুম ভাঙ্গার পর ঠিক একটা হলিউডি সিনেমার মত যান্ত্রিক চক্রাকার পথে দৌড়াতে দৌড়াতে টেলিভিশন চালু করলেন। স্বাস্থ্যবতী সংবাদপাঠিকা হাসি হাসি মুখে ঠিক একটা হলিউডি সিনেমার মত ব্রেকিং নিউজ উপস্থাপন করলো।
প্রিয় দর্শক এই মাত্র পাওয়া একটি খবরে জানা গেছে যে, পৃথিবী থেকে দারিদ্র দূর হয়ে গেছে।
মিস্টার এক্সের দৌড়ানোর সময় অতিক্রান্ত হওয়ায় তিনি টেলিভিশনটি বন্ধ করে স্নানঘরের দিকে অগ্রসর হন।
প্রতিদিন সকালে তিনি হালকা মাখনযুক্ত দুই টুকরো পাউরুটি, একটি ডিমপোচ এবং হালকা লিকারের চিনি-দুধবিহীন এক কাপ চা খেয়ে থাকেন। খাবার টেবিলে এই নিয়মিত আয়োজন এবং বাড়িতে এই দায়িত্বপালনকারী কর্মচারিটির অনুপস্থিতি তাকে বিরক্ত করলো। কিন্তু মিস্টার এক্স এই সব তুচ্ছ বিষয়ে সাধারণত সময় খরচ করেননা। কর্মচারিটিকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি কার্যালয়ে গমনে উদ্যত হন।
লিফট তাকে মাটির কাছে নিয়ে আসলে তিনি তার গাড়িচালককে প্রতিদিনের মত ছুটে আসতে দেখলেন না। চালকটিকেও বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি নিজেই চালকের আসনে বসলেন। কিন্তু দারোয়ান নিজস্থানে না থাকায় তাকেই আবার গাড়ি থেকে নেমে সদর দরজা খুলতে হলো।
অন্যদিনের চেয়ে অনেক কম সময়ে কারখানায় পৌছে গেলেও দরজায় আটকে গেলেন মিস্টার এক্স। প্রতিদিনের মত দরজা খুলে সালাম ঠুকলোনা কেউ। দীর্ঘ সময় একঘেঁয়েভাবে হর্ন বাজানোর পরও প্রতিক্রিয়াশূন্যতায় তিনি গাড়ি থেকে নামতে বাধ্য হলেন।
দ্বাররক্ষীর ঘরটি খালি। ছোট দরজাটি ঠেলে ভেতরে ঢুকলেন মিস্টার এক্স, অস্বস্তি নিয়ে এগিয়ে গেলেন কারখানা ভবনের দিকে। যন্ত্রগুলো তাকে অভ্যর্থনা জানালো নৈঃশব্দে । একজোড়া সচল হাতও খুঁজে পেলেন না তিনি কিংবা একটি ঘর্মাক্ত মুখ। যন্ত্রের সারি সারি শবের পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে তিনি আতংকে শিউরে উঠলেন।
আরামদায়ক সফেদ বিছানায় ঘুম ভেঙ্গে উঠে আশ্বস্তবোধ করেন মিস্টার এক্স। অস্বস্তিকর স্বপ্নটি যাতে হাজারো বানানো সচল চিত্রের ভীড়ে হারিয়ে যায় তাই টেলিভিশনটি চালু করেন।
প্রিয় দর্শক এই মাত্র পাওয়া একটি খবরে জানা গেছে যে, পৃথিবী থেকে দারিদ্র দূর হয়ে গেছে।
মন্তব্য
প্লটটা ভাল লাগছে মনামী আপু
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
বেশ!
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
ভাল্লাগছে আপু। কেম্নে কইত্তে যে এইসব লেখো!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চিত্রকল্পটা সেরকম লাগলো ।
দারুণ...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বাহ!
খুব ভালো
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
সুন্দর
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
দারুণ প্লট। ভালো লাগলো।
টুইটার
বেশ ভালো লেগেছে।
মনে করিয়ে দিল 'আশি দিনে পৃথিবী ভ্রমন'-এর শুরুটার কথা। তবে সেখানে 'কর্মচারীর বরখাস্তি' নিছকই পাঠকের আগ্রহ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে, আর এখানে কর্মচারী বরখাস্তের অভিপ্রায় বহে নিয়ে গেছে অসাধারণ একটি প্লট!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ভালোলাগা আমায় নেড়ে-চেড়ে দিলো তোহ।।।।
এখন কি হবে??
ভালই হবে তাইলে।
----------------------------------
Sad Story
কর্মচারীরা মিস্টার এক্সকে বরখাস্ত করে দিল দেখা যাচ্ছে! গল্পটা ভাল লেগেছে। -রু
দুর্দান্ত।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
মচৎকার আপু।
অলস সময়
চমৎকার !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
দারুণ!
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
ভালু পাইলাম ...
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
দুর্দান্ত!!!
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
দারুণ !
অলমিতি বিস্তারেণ
অনেক ভালো লাগলো।
____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"
কইত্তে যে এই মিনি আইডিয়াগুলান পাও! দান কইরো খানিক উপচানো আইডিয়া বালতি থেকে!
দারুণ।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আয় ঘুম যায় ঘুম বর্গিপাড়া দিয়ে...
দুর্দান্ত!!!!!!
-অতীত
মাঝে মাঝে খুচরো সপ্নগুলো তাড়িয়ে বেড়ায় তাই অন্যত্র মনোনিবেশ করতেই হয়। বাস্তব লিখেছেন আপু। ঘুমের ঘোরের সপ্নগুলো ভাল বা মন্দ যাই হোক না কেনো, জেগে থাকা দিনের শুরুটা হয় সপ্নভঙ্গ দিয়ে আর শেষটাও হয় সপ্নভঙ্গের মধ্যে দিয়ে। এটাই নিয়তি।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
বাহ!
খুব ভালো........চমৎকার !!!
আপনার কি মনে হয় না যে মিস্টার এক্স ভুল করে শুক্রবারে অফিসে চলে গেসেন।
আপনার লেখাতো নীতিনির্ধারক আর অবস্থাভাবাপন্নদের চিন্তায় ফেলে দেবে, সত্যিই পৃথিবীটা দারিদ্রমুক্ত হওয়া জরুরী কিনা !!!
- সুমিত রহমান
নতুন মন্তব্য করুন