সমাজবদ্ধতা

মনামী এর ছবি
লিখেছেন মনামী (তারিখ: শনি, ১৪/০৫/২০১১ - ১১:৩৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অফিস যেতেই হয়। সবারই কোনো না কোনো কারণ থাকে। টাকা, মানুষের সমাজে জায়গা, ক্ষমতা, জীবনে বৈচিত্র, ব্যস্ত থাকা ইত্যাদি।

শাহিন অফিসে যাওয়া শুরু করে কর্মজীবী নারী হওয়ার জন্য। তারপর সে বলা শুরু করে কাজটাকে ভালোবেসেই সে কাজ করে। বিশ্বাসও করতে চেয়েছিল কথাটা। কিন্তু কোনো সৃষ্টি আর তার স্রষ্টার সম্পর্ক এখন আর সরাসরি ও সহজ নাই। কাজেই কাজের প্রতি আদিম ভালবাসার দিনও নাই। যান্ত্রিক পুনরুৎপাদনের ছলাকলা ছাড়া করার তেমন কিছুই নাই।

মানুষ সাধারণভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকা একটি জীব। এর নানা বৈজ্ঞানিক ও সমাজতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা আছে, বিজ্ঞজনেরা তা জানেন, এখানে বলার তেমন প্রয়োজন কী? সম্পর্কিতরা একে অন্যের ক্ষতি করেনা (অন্তত এটাই প্রচলিত ধারণা)। তাই মানুষ ক্রমাগত সম্পর্ক তৈরি করে। রিকশাওয়ালাকে মামা ডাকে, দোকানিকে ভাই, অফিসকে বলে পরিবার।

পরিবার সমাজের সমাজের ক্ষুদ্রতম একক, এরকমই কিছু একটা লেখা থাকে সমাজ বইয়ে, তাই না? যাই হোক। আসল কথা হচ্ছে পরিবার প্রাথমিক ক্ষমতাকাঠামো, যেখান থেকে আমরা জানতে পারি এবং অভ্যস্ত হই ক্ষমতা-সংগ্রামের সঙ্গে। এরপর তা প্রতিনিয়ত প্রতিফলিত হতে থাকে-আমাদের ক্ষমতার কেন্দ্রে যাবার আকাঙ্ক্ষা-আমাদের প্রতি কাজে, প্রতি উদ্যোগে, প্রতি চাহনিতে। আমরা জানি আবার জানি না।

শাহিন জানে আবার জানে না। শাহিন খেলে আবার খেলে না। খেলা খুব জরুরি। মানুষের আনোনা জীবনে নুনের ছিটা। সবাই তো খেলে সবার সঙ্গে, প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে।

খেলতে খেলতে খেলা বাড়ে। আহা কি চমৎকার খেলা! অসুস্থ স্বামী বিছানায় কাৎরায়। জমানো আড্ডা ঠান্ডা হয়ে আসে। মা খাবার নিয়ে অপেক্ষা করতেই থাকে। তবে সজ্জায় সময় দিতেই হয়। লড়াইয়ে অস্ত্র জরুরি।

এভাবে যাচ্ছিল দিন, তারপর একদিন, হঠাৎ রাস্তায় জারুল ফুলের মায়ায়, ঘোর লাগে অথবা কাটে। জারুলের বেগুনি রংও সময়ের সঙ্গে ফিকে হয়ে আসে। শাহিন টের পায়, কিছুই হয় নাই, কিছুই করা হয় নাই। অতএব, বাঁচো, কেবল বাঁচো অস্তিত্বহীনতায়। কারণ আর কিছুই করার নাই।


মন্তব্য

রু (অতিথি) এর ছবি

সচলায়তন পড়লে পারে তো! ইচ্ছা করলে লিখতেও পারে। আসল কথা, লেখাটা আমি বুঝি নাই। কিন্তু প্রথম চার প্যারা খুব ভালো লেগেছে।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

শিরোনামটা আবার পড়েন ভাইজান, তারপর লেখাটা আবার পড়েন, সব পরিষ্কার হবে!

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

meghdut  এর ছবি

অনেকদিন পর দেখলাম আপনার লেখা। আবার ভাল লাগলো।

guest_writerকৃত্যদাস এর ছবি

গল্পটা এত ছোট করলেন কেন? ভালই তো হচ্ছিল।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

দারুণ লাগল, এত অল্পকথায় একটা সাইকেল পূর্ণ করলেন!

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অতিথি লেখকঃ অতীত এর ছবি

চলুক চলুক চলুক

অতীত

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

হুম। তয় শাহিনতো পুলাগো নামও হয়।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দুর্ধর্ষ

নির্জন স্বাক্ষর এর ছবি

চলুক

সুজন সুপান্থ এর ছবি

মনামী,
আপনার বেশ কয়েকটি গল্প পড়েছি। অসাধারণ লেগেছে। কিন্তু এই বার কেন যেন একটু অন্য রকম লাগলো। এর দায় আমারই বোঝার ব্যর্থতা হয়তো। তবে এই বিষয়টি এখানে মূখ্য নয়। বিষয় হলো ঝরঝরে লেখাগুলো ভালই লাগে। আর তার মাঝে একটু ভালো না লাগা পাঠকেরই চাহিদার কারণ হতে পারে। আর তা যদি কোনো কারণে না হয়, তাহলে অনেক অসাধারণের মাঝে দু'একটা সাধারণ থাকলে ক্ষতি নেই।
এতো কথার অর্থ হলো-----আপনার আরও ভালো লেখা পড়তে চাই।
ভালো লিখুন.....ভালো থাকুন
শুভকামনা নিরন্তর

সুজন সুপান্থ
স্বপ্নের ফেরিঅলা

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

অসাধারণ। গল্পে খুব বেশি সত্যি কথা বলা হলে, সেটা অনেক সময় মনে হয় পাঠক নিতে চান না, এই গল্পের পাঠ প্রতিক্রিয়া পড়ে তাই মনে হচ্ছিলো।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দারুণ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আয়নামতি1 এর ছবি

আপনার গল্পের ভক্ত হয়ে যাচ্ছি কিন্তু দিনদিন! কিন্তু আপনি লেখেনও কম, তারচেও কম করেন মন্তব্যের প্রতিত্তোর।

নজমুল আলবাব এর ছবি

কমু? নাহ্, কমু না।
চলতে থাকুক

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

সুজন সুপান্থের কথাগুলোরই প্রতিধ্বনি তুলি।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

মুগ্ধ! এক অচ্ছেদ্য চক্রের গল্প। এরকম গল্পের কোন সমাপ্তি হয় না।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।