তাদের অন্ন ছিলনা, পেট ছিল
তাদের ছাদ ছিলনা, সম্পর্ক ছিল
তাদের মাটি ছিলনা, দেশ ছিল
আর ছিল পথ
...
নগরীতে যেহেতু উদ্বৃত্ত খাদ্যপ্রাপ্তির সম্ভাবনার শতকরা হার বেশি কাজেই পিঁপড়ার মত পিলপিল করতে করতে তারা এসেছিল, বিরক্তি উদ্রেক করেছিল অভিজাত নগরবাসীর। প্রচলিত রাষ্ট্রব্যবস্থায় তাদের নাম দেয়া হয়েছিল ছিন্নমূল অর্থাৎ যারা মূল থেকে ছিন্ন অর্থাৎ যাদের নিয়ে লোফালুফি ...
হাত না পা, কোনটা চাস?
এক অন্তহীন ধাতব গহ্বর তাকিয়ে আছে মনোয়ারের দিকে। পৃথিবীর সব আলো শুষে নিয়েছে ঐ গহ্বর, কেড়ে নিয়েছে সব ওম। মনোয়ারের চামড়ার ওপর দিয়ে গড়িয়ে পড়ে হিম।
অই হাউয়ার পো! কানে কতা ডুকে না?
কানে কথা একটু কমই ঢোকে মনোয়ারের। যেমন ঢোকেনি শামসুর কথা। ফেন্সি শামসু - পাড়ায় সবাই তাকে এই নামেই চেনে। ফেন্সিডিলের ধান্দা করে, মাঝে মাঝে হেরোইনেরও। সেই সঙ্গে পার্টটাইম পুলিশের সোর্স।...
তাদের অতীত বলে কিছু ছিলনা। কারণ তাদের অতীতবাহী বয়ঃবৃদ্ধরা ছিলেন অনুপস্থিত। তাদের পুঁথিগুলো ছিল হরফশূন্য। তাদের ধর্মযাজকেরা ছিলেন মূক। এমনকি তাদের সামষ্টিক অবচেতন থেকে ঘষে তুলে দেয়া হয়েছিল পুরাণের জলছাপ।
একজন নেতার ডাকে তারা সমবেত হয়েছিলেন, তারা অতীতবিচ্ছিন্ন হয়েছিলেন এবং কাতারে কাতারে তারা এসে দাঁড়িয়েছিলেন একটি বসতিহীন ভূমিতে যেন পুরো পৃথিবীতে কেবল তাদেরই অস্তিত্ব রয়...
এই দুইটা তো হিন্দুর বাচ্চা
দারিদ্রের শেখানো চাতুরির ফাঁক গলে টুপটাপ ঝরছে শৈশবের সারল্য। থমকে যাওয়া শহুরে সংস্কৃতির মুখের ওপর আবারও পড়ে হাসিমাখা চাবুক।
হিন্দু , এই দুইটা হিন্দু।
যে দুজনের পরিচয় দেওয়া হচ্ছে তারা সদ্য উপার্জিত দশটাকার কিয়দংশ খরচ করে কেনা গাজর যে তুচ্ছার্থে তাদের পরিচয় তুলে ধরছে তারই সঙ্গে কামড়চুক্তিতে পেটে চালান করতে ব্যস্ত। একজন একবার কামড় দিতে পারবে কাজ...
হিমে জমে যাওয়া জোৎস্নার বরফে চিড় ধরিয়ে দিয়ে ডেকে ওঠে বাড়ির আশ্রিত নেড়ি কুকুরটি। ওম ওম ঘুমে তা ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনা। কুকুরের মতো মানুষের ইন্দ্রীয় তীব্র ও তীক্ষ্ণ নয়।
ভালোই হইসে, বাড়ির লোককে কোনো কষ্ট করতে হয় নাই, কোনো ঝামেলা নাই।
ঠিকই বলসেন। আমার শ্বাশুড়ির কথাই ধরেন, বাঁচবেনা সবাই জানে তারপরও হাসপাতালে কী দৌড়াদৌড়ি! বিছানায় পেশাব - পায়খানা করে ফেলতেসে, কী যে অবস্থা! আমার বৌ আর তা...
আজ বাসায় উৎসবের রোদ। কিন্তু তুলির মুখে একরাশ কালো মেঘের ছায়া। তার বাড়ির ধারাই হচ্ছে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ব্যপক হইচই করা।
আরে হানিফ ভাই অফিস থেকে ফিরলেন নাকি?
হুম, কি অবস্থা?
আরে বাসায় ঢুকেন, দ্যাখেন কি করসি।
আরে বাহ! লাগায় ফালাইসেন! রংটা একটু হালকা হয়া গ্যাসে।
আমার এই রংটাই পছন্দ।
আব্বুর আদিখ্যেতার বিরক্তিকে ফাঁকি দিয়ে তুলি অনেক ভাবনার ভীড়ে গা ঢাকা দেয়। উঁকি দেয় সময়ের সেই সব গলি...
"...
- তবু সে দেখিল
কোন ভূত? ঘুম কেন ভেঙ্গে গেল তার?"
করিম সাহেবকে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিনের মত মহল্লার মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। এশার ওয়াক্ত হয়ে গেলেও যখন ফিরলেন না, তখন বাড়ির লোক ভেবে নিলো এশার নামায পড়েই ফিরবেন। তারপরও যখন ফিরলেন না তখন মোবাইলে ফোন দেয়া হলে, সুললিত নারীকন্ঠ বলে ওঠে - আপনি যে নাম্বারে ডায়াল করেছেন তা এই মুহূর্তে বন্ধ আছে ...।
প্রথাগত প্রক্রিয়া অনুসার...
আমেরিকার সবচেয়ে ভালো দিকটা কি জানেন - এই দেশে সবচেয়ে ধনীতে যা কেনে সবচেয়ে গরীবও তাই কেনে – মার্কিন পপ আর্টের প্রবক্তা হিসেবে খ্যাত অ্যান্ডি ওয়ারহল গর্বভরে বলেছিলেন এই কথা। সবচেয়ে ধনী থেকে সবচেয়ে গরীব – একই ভোগপণ্য অর্থব্যায়ের বলয় তৈরি করে সব শ্রেণীর মানুষের চারপাশে।
অই ভালবাসা দিবসে অরে কি দেওয়া যায়?
কি সরল,আবেগঘন প্রশ্ন ! আহা ! ভালবাসা দিবস সবার জন্য।
রিকশায় মাল চড়িয়ে তার ও...
নিজের পেশার ওপর মাঝেই মাঝেই বিরক্তি ধরে যায় শৈলীর। এই যেমন এখন এই থানায় বসে থাকাটা। কিছু তথ্য দরকার। মিনিট দশেকের বেশী লাগার কথা নয়। কিন্তু তাকে বসিয়ে রাখা হয়েছে। সময় কাটানোর উপকরণ খুঁজতে খুঁজতে চোখ চলে যায় গরাদের পেছনে। এক কোনে সিটিয়ে বসে আছে একটি মেয়ে - দেয়ালের সঙ্গে নিজেকে মিশিয়ে দেয়ার নিষ্ফল প্রচেষ্টায় ব্যর্থ। ভালো একটা স্টোরি হতে পারে - চক চক করে ওঠে শৈলীর সাংবাদিকের চোখ।
...
শারমিন খুবই বিরক্ত। কাজের বুয়ার জ্বালা কি আর ঘুচবে না! সোহেলের মাকে কাজে রাখার সময়ই স্পষ্ট বলে দিয়েছিলো বাচ্চা–কাচ্চা বাসায় আনা যাবেনা। ঠিকই নিয়ে এসেছে!
তোমাকে আমি বলি নাই বাচ্চা নিয়ে আসা যাবেনা? বলি নাই তোমাকে?
আম্মা পোলাটার শরীলটা ভালা না।
আমার বাড়ি কি হাসপাতাল নাকি যে রোগী নিয়ে চলে আসলা? রোগ-বালাই ছড়িয়ে আমরা সবাই মরি আর কি। তুমি চাও আমার বাচ্চাটারও অসুখ হোক?
ছি ছি আম্মা কি ...