আট নম্বর সিগারেটটা শেষটান দিয়ে ছুঁড়ে ফেলল ছেনো। লক্ষণ খারাপ মনে হচ্ছে। সকাল ৯টায় মতিঝিলে এসে চার পাঁচবার এটেম নিয়েছে। ফেল। স্টকএক্সচেঞ্জ,ডলারের হাট,আরামবাগের মোড়,বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে, সব ট্রাই শেষ।এবি ব্যাংকের সামনে বটতলায় বসে এখন অলস সময় কাটাচ্ছে।
ছেনো। আগে-পরে কিছু নেই। সোজাসাপ্টা- ছেনো। কাগদি নামের বিলঘেরা এখন্ড গ্রামে জন্মেছিল চেনো। ছাগলে খাওয়া খেজুরগাছের মত বেড়েছিল। কুঁতে কুঁতে। এই তিরিশেও তাই আঠারোর আদল.....................................................
-মামা চা দেও। আর একটা নেভী।
-কয়ডা হইল?
-তোমার কী?
-কাম ধান্ধা অয় নাই?
-হবে,হবে। ছেনো কোনদিন খালি হাতে ফেরে না।
ছেনোর জীবনে বাপ বলে কিছু নেই। মা কে 'ব ' দিয়ে অনেক কিছু বলতে শুনেছে...বালতি-বালিশ-বাটি-বাড়ি-বাঁশ-বাল......কিন্তু কোন দিন 'বাপ' বলতে শোনেনি। সে কারণে বাপ ব্যাপারটা ছেনোর মগজে নেই। বড় হয়ে আড়ে-বাড়ে শুনেছে কেউ কেউ ওকে জারজ বলে । এ নিয়ে ওর কোন মাথাব্যাখা নেই।
-ফেডারেশনের সামনে গ্যাদারিং মামা, কেস কী? জানো কিছু ?
-কেস আর কি, বাল। দেহগা কোন বিলাতি আইছে...
ছেনো আশাবাদী হয়ে ওঠে। পরক্ষণেই চুপসে যায়। দুই বিলাতি। তিন কুড়ি দেশী দামড়া। বিলাতিরা চ্যাপটা মত একটা গাড়ি থেকে নামে। তিনকুড়ি দেশী দামড়া টুথপেষ্টের বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। সাথে এককুড়ি খোচর । প্রজেক্ট বাতিল।
চা। নেভী। অলস বসে থাকা। তার মানে পেছনে ফিরে যাওয়া। ছেনোর দু'তিন বছর বয়সে ওর মা ওকে নিয়ে গোলাপবাগ বস্তিতে ওঠে। একা ঝুপড়িতে ছেনো গু-মুত ছেনেছুনে কাগজ পাতা ছাইমাটি খেয়ে খেয়ে বড় হয়েছে। ইস্কুলেও পড়েছে। দশ ক্লাস। ওর মা যে বাড়ি কাজ করে সেই সায়েব যেদিন মাকে রাতে বাড়ি আসতে দিল না,তার পর দিনই ছেনো সায়েবে বাড়ির গেটে তক্কে তক্কে যেয়ে সায়েব গাড়িতে ওঠার সময় পেছনদিক থেকে জড়িয়ে ধরে কামড় বসিয়ে দিল পাছায়। প্যান্ট ছিঁড়ে গেল। ড্রাইভার আর সায়েব লাথি মারতে মারতে ছেনোকে রাস্তায় এনে ফেলল। ছেনো উঠে দাঁড়িয়ে দেখল ওর হাতে একটা মানিব্যাগ !সেই থেকে ছেনো এমপ্লয়ি। সকাল-রাত ডিউটি। বেতন নিদৃষ্ট নয়। ছেনো পেশাদার পকেটমার.......................................................................
হঠাত্ ছেনো উঠে দাঁড়ায়।
-মামা চললাম, দোয়া করো....
-শালা হারামির বাচ্চা ! যাইতাছে পকেট মারতে ! কয় দুয়া করো ?
ছেনো রাস্তা পার হয়ে ফেডারেশনের সামনে। বিলাতিরা হাওয়া। পুলিশও হাওয়া। দাঁত ক্যালানো মালগুলো জটলা করে ভেরেন্ডা ভাঁজছে। ছেনো বিসমিল্লা বলে হাত চালিয়ে দিয়েছিল। মালটা যে সাদা পোশাকের পুলিশ ছিল সেটা ছেনোর গু-মুত খেয়ে বেড়ে ওঠা ঘিলুতে জানার কথা না। এর পরের দৃশ্যগুলো সিনেম্যাটিক। এক্সট্রিমলি সিনেম্যাটিক।
-ধর ধর, মার শালারে।
-খানকির পোলা ? রংবাজি দেহানোর জাগা পাওনা?
-মাঙ্গের পুতরে পিষা ফালা।
-কাইল এক চুত্মারানিরে ধরতে পারি নাই. আইজ শালা কই যাইবা?তর পুঙ্গার মইধ্যে যদি বাঁশ না ঢুকাইছি তয় আমার নাম.....পরক্ষণেই ভাষণদানকারীর মনে হলো তারে কে চেনে?
চল্লিশ-পঞ্চাশ জন বীর পুরুষ হামলে পড়ল। যারা নেটের ব্যাগে তরিতরকারী নিয়ে হাবদা বোকাচোদার মত ঘরে ফিরছিল তারাও ব্যাগটা একজনকে ধরতে দিয়ে ঝাপিয়ে পড়ল। কেরানি,সাহেব,দোকানদার,হকার,বেশ্যার দালাল,স্মার্ট তরুণ,পেটমোটা রমনী,প্রাইভেটের ড্রাইভার,বাসের হেল্পার,এমন কি সেই চা দোকানি মামাও। সচেতন জনতার ক্ষোভ-ক্রোধ-ঘৃণা-জিঘাংসা-মর্দানি-কর্তব্যবোধ-হ্যাডোম উত্থিত হয়ে স্খলন শেষে প্রশমিত হলে দেখা গেল রক্তাক্ত ছেনো ভেঙ্গেচুরে দুমড়েমুচড়ে বিভত্স ভঙ্গিতে শুয়ে আছে। এইফাঁকে দু'তিনটা কিশোর ভয়ে ভয়ে এসে লাথি লাগাল। বীর জনতা তখন লাউডস্পিকার! শ'খানেক লাউডস্পিকার একসাথে দেশ-জাতি-সমাজ-আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ওয়াজ নসিয়তে ব্যাস্ত।
-বান্দিরবাচ্চা মারা গেছে কিনা এইমর্মে সন্দেহ যখন,তখন কে যেন ভালমানুষি ঢঙ্গে বললেন....থামো ! মেরে ফেলবে নাকি? এভাবে আইন হাতে তুলে নেয়া.......ওই মাঙ্গু, আফনে কেডা? এই হালায় সাগরেদ নি? ভালমানুষ সটকে।
ইত্যবসরে তিন খোঁচর এসে হাজির। ওয়াকি টকি। গাড়ি।পুলিশদের নির্লিপ্ত পান চিবোনো।গাড়ি স্টার্ট। পাবলিক পুন:মূষিকভব:
লকাপে জ্ঞান ফিরল ছেনোর । তখন রাত। সেপাই জানান দিল-
-সার মরে নাই, শালার দি হার্ট অপ কৈ মাছ সার !
-বাঞ্চোত্ ,ভুলভাল এই বালের ইংরেজি না মারালে হয় না?
-ইয়েচ সার,শালার কৈ মাছের প্রাণ সার।
-দেও,তোমার বউয়ের ভাইরে খাবার দেও,মরলে তো আর এক বিপদ। পোস্টমর্টেম-লাশচালান-ফাইল-মাটি কবর কত ফ্যাসাদ।
পুলিশের হোমমেড ম্যান্যুয়ালে কেস মেইনলি তিন ধরণের-তিন 'ত '। তরমুজ কেস, তাল কেস, তিল কেস। ছেনোর কেসটা 'তিল কেস '। একটা ঘসা পয়সাও মিলবে না। দারোগা হতাশ। টেবিলে পা তুলে ম্যাচের কাঠি কানে ঢুকিয়ে পাক দিয়ে বের করে নাকের কাছে নিয়ে শুকে ছুঁড়ে ফেলল।এদিকে কোন কিছু মনে করার আগে আবারো জ্ঞান হারাল ছেনো।
পরদিন খবরের কাগজঅলারা লিখল:'গণধোলাই'। গতকাল মতি.....জনতা পাকড়াও করে........মারাত্মক আহত......দেশের আইন-শৃংখলা.......জনতা সচেতন হওয়ায়......... এরকম দাগি........এভাবেই.........সমাজ মুক্ত হবে.......শেষ খবর পাওয়া.........
সারাদিন ঘোরের মধ্যে কাটল ছেনোর।সকালেই ওকে হাসপাতালে র সেলে নেওয়া হয়েছে। হাত-পা কিছুই নাড়াতে পারছে না। একবার একটুখানি কাত হয়ে জানালা দিয়ে আকাশ দেখেছে। ডাক্তার নার্স সবাই ব্যাস্ত। ছেনো এক কোনায় ক্ষণে ক্ষনে কেঁপে কেঁপে উঠছে। আবার শান্ত। শুধু মনে হচ্ছে ঘুম ,কতকাল যেন ঘুমায় না।
ছেনো ঘুমাচ্ছে না স্বপ্ন দেখছে নিজেই জানে না। ওর নিজেকে মনে হলো সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া বাছুর। ওলানে মুখ দিয়ে দুধ খাচ্ছে।আবার মনে হলো ওর বয়স পাঁচ। কাগদির পুকুরে ডুবে যাচ্ছে। শির শির করে কানের পাশ দিয়ে পানি কেটে যাচ্ছে। ছোট ছোট ডাকানা মাছগুলো ওর সাথে সাথে নামছে। মাটির ছোঁয়া লাগতেই চমকে তন্দ্রা কেটে গেল! অসহ্য ব্যাথায় কঁকিয়ে উঠে আবার জ্ঞান হারাল অথবা তন্দ্রাঘুম। এবার দেখল ও ঘুড়ি ওড়াচ্ছে। আকাশ ছেয়ে গেছে রং বে রংয়ের ঘুড়িতে। কিন্তু সব কেমন যেন আস্তে আস্তে হচ্ছে। ছেনোর ঘুড়িটা চাঁদিয়াল। পেটকাটা চাঁদিয়াল। সবার উপরে উড়ছে। বাঁক খাচ্ছে,গোত্তা মারছে............হঠাত্ একটা ববকা ওর ঘুড়ির পাশে এসে কাট্টি খেলা শুরু করল...ওর সূতোয় তো মান্জা নেই ! যদি কেটে যায় ! একটা প্যাঁচ দিয়েই ববকাটা সূতো ছাড়া শুরু করল.....কাট্টি ! কাট্টি ! কারা যেন চিত্কার করতে লাগল....ছেনোর চাঁদিয়াল আড়াআড়ি দোল খেতে খেতে ভেসে যাচ্ছে......হঠাত্ ওর চারপাশে আলোর বন্যা বয়ে গেল...কারেন্ট ছিল না। এলো। পট পট করে বাতিগুলো জ্বলে উঠল.....একটা বাতি একটু জ্বলে আর জ্বলল না, কিছুক্ষণ লাল হয়ে থেকে দপ করে নিভে গেল...... ব্লাকআউট।
মন্তব্য
পড়তে মজা লাগর কিন্তু শেষটা বুঝি নাই!
(আচ্ছা রেটিং দেয় কিভাবে?)
ভেরি সিম্পল ! ছেনো পটল তুলল।
রেটিং ব্যাপারটা আমিও বুঝি না।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
বেশি ফাটাফাটি একটা গল্প ! বেশি জোস ! গল্পের বর্ণনা, উপমা সবই অসাধারন !
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
বেশি স্বাদ- বেশি লাভ- বেশি কাপ চা.......................
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
এন্টিগল্প সিরিজটা দারুন হচ্ছে... মুগ্ধ আমি...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মুগ্ধতায় আমি লীন।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
যথারীতি দারুন।
---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল
ধন্যবাদ
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
আপনি তো খুবই ভালো লেখেন। গদ্যে আপনার দখল অনবদ্য। এটি সমরেশ বসুর লেখা হলে একটি পুরস্কার পেয়ে যেত। আপনি যেহেতু সমরেশ বসু নন, পুরস্কারদাতারাও এই দেশে বিরল এবং আপনিও হয়ত কারো কারো পুরস্কার নিতে আগ্রহী বোধ করবেন না, তাই আপনাকে সরলচিত্ত পাঠকের অকুণ্ঠ ভালোবাসার পুরস্কারটিই দিচ্ছি।
গল্পটি আরেকটু দীর্ঘ হতে পারত এবং ঘটনাক্রমের আরেকটু উত্থানপতন থাকলে ভালো হত। ছেনোর ধরা পড়া আর মার খাওয়া একেবারেই সরল হয়ে গেছে। বাস্তবতা বজায় রেখেই ঘটনার নাটকীয় মোড় যেতে পারত অন্যদিকে। গল্পটি উতরে গেছে আপনার সুনিপুণ গদ্যের কারণে।
বাঙালি লেখকদের একটি দুর্বলতা খেয়াল করেছি আমি, আমার নিজেরও আছে সেটা। আমরা নিজের গদ্যভঙ্গি নিয়ে যত না মাথা ঘামাই, গল্পের কাহিনী নিয়ে সে পরিমাণ মাথা ঘামাতে পারি না বা ভয় পাই বাস্তব হবে না বলে। কারণ আমাদের নিজেদের জীবনের বাইরে খুব বেশি কিছু দেখা হয় নি। তাই বাংলাভাষাটাকে ব্যবহার করেই নিজের ডেস্কে বসে রাজা-উজির মারার চেষ্টায় থাকি। আপনার ক্ষেত্রে কী ব্যাপার জানি না, কিন্তু খুব খুশি হব এই গল্পটাকে নিয়ে যদি আরেকটু নাড়াচাড়া করেন। বাংলা ভাষার ভালো গল্পের তালিকায় আরো একটি যুক্ত হলে ভালোই লাগবে আমার।
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আপনার বুদ্ধিদীপ্ত মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। সম্পূর্ণ একমত। আপনি ঠিক সেই মোচড়টাতে হিট করেছেন। আমার কিছু লিমিটেশনের কথা:-প্রথমত: কীবোর্ডে আমার বিরক্তি। এই লেখাটা কাগজে হলে আরো বিন্যাস হতো। আরো চরিত্র ঢুকত। কাহিনী বিভিন্ন বাঁকে ট্যুইস্ট করত।
দ্বিতীয়ত:ব্লগে আমি নিজেই একটা লেখা স্ক্রল করে সাইজ দেখে নেই! খুব বড় দেখলে, যেমন উপন্যাসের অংশ দেখলে ভীত হই। সে হিসেবে আমারো কোন'মহাভারত' দেখলে পাঠক লেফট ক্লিক করে চলে যেতে পারেন ভেবে 'অসম্পূর্ণ'। আমার নিজেরই তৃপ্তী মেটে না।
'ছেনো' কাহিনীর দু'টো অধ্যায় বাদ দিয়ে দিয়েছিলাম। আসলে শেষ হয়নি। 'ঘনা 'কে দিয়ে আজ সম্পূর্ণ করার ইচ্ছা আছে।
সর্বপরি ব্লগ দুনিয়ায় প্রথম এসেই কিছু বিব্রতকর অবস্থার সম্মূখিন হয়েছিলাম। সেই থেকে ভয়ে আছি,কী লিখতে কী লিখি ! কে রুষ্ঠ হন পাছে! এক তো কীবোর্ডে বোতাম খুঁজতে টেম্পু হারাই,দুই-কোন ক্লাসের কৌলিণ্য ভ্রষ্ঠ হয় কীনা,তিন-আমার টাইপটা ব্লগকমিউনিটিকে রুষ্ঠ করে কীনা?এই যখন বাস্তবতা,আমার শতভাগ স্বাধীনতা ব্যবহারের সুযোগ কোথায়?
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
এই ধারার গল্প এখন বিরল। যা হচ্ছে তা দারুণ হচ্ছে, যা হবে তাও নিদারুণই হবে। অচিরেই বই করা দরকার। গল্পের ম্রিয়মান মানচিত্রে তাহলে বইটা কড়া দাগ হয়ে দেখা দেবে।
তার আগে একটা জিজ্ঞাস্য আছে : আপনার গল্পগুলো চরিত্র বা ঘটনা প্রধান। এবং ঘটনা ঘটনার নিয়েমে ঘটে যায় এবং চরিত্র তার মধ্যে শেষতক ডুবে যায়। জীবন্ত ও নাটকীয় বর্ণনায় সাক্ষাত আস্বাদন আসে। কিন্তু গল্পে আরেকটা মাত্রা আসে আসে করেও আসে না। কবিতায় যা এপিফ্যানি, গল্পে তা দেখা থেকে অদেখায় যাত্রা, জানা থেকে অজানায় যাওয়া। জানি না, সমালোচকেরা কী বলবেন, কিন্তু একটা উত্তরণের প্রয়োজন হয়। আপনার গল্পগুলো তার আগেই যেন থেমে যায় তৃতীয় মাত্রায়। চতুর্থ মাত্রা অর্থাত ঐ উত্তরণের বিষয়টি নিয়ে আপনার ভাবনা জানলে আরো চিন্তা করা যেত।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
অভিনন্দন ফারুক। আমার বিষয় আসলে খুবই মাইক্রোস্কেপিক। নিতান্ত সাধারণ বিষয় বা ঘটনা। ছোট ক্যানভাসে ছোট আঙ্গিকে ওই চতুর্থ মাত্রাটা আসতে গেলে দু'টো ঘটনা ঘটতে পারে। হয় ওটা নৈর্ব্যক্তিক কবিতা হয়ে যেতে পারে অথবা গল্পের ঢঙে প্রবন্ধ হয়ে যেতে পারে। যেমন 'একাকি জানালায় 'গল্পটা অসম্পূর্ণ।
আপনারা যদি আমাকে 'শৃঙ্খলমুক্ত 'লিখতে দেন তাহলে আমার সবটুকু নিংড়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারি।
আপনাদের ভালবাসায় মোড়া সমালোচনা,প্রশংসা,অভিনন্দন আমার পাথেয়।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
মনজুরাউল ভাই, কোন কিছু বলার ভাষা নেই। শুধু একটাই প্রশ্ন আপনি এত চমত্কার লেখেন কি ভাবে?
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
ভালোর কি দেখলেন? একটা ফাটাফাটি প্রেমের গল্প লিখতে বলেন ?
আমি কাত্ ।
ধন্যবাদ।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
শুরুতেই বলি রাখি সচলায়তন আমার ভালো লাগেনা,কেমন একটা এলিট-এলিট ভাব,আমার মতো মুরুক্ষরা সেখানে ঠিক যুইত করে উঠতে পারেনা।তবু মাঝে মাঝে চোরাগুপ্তা উকি দিয়ে গোয়েন্দাগিরি করে যাই;মন্তব্য করা হয়না।
কিন্তু আপনার গল্প টা পড়ে মন্তব্য না করাটা মনে হয় অপরাধের পর্যায়ে পড়বে।কিন্তু মন্তব্য করতে যে পরিমান ঘিলু লাগে,তাও আবার নেই।কি মুশকিল!তার উপ্রে ওয়াসিফ ভাই আর মৃদল ভাই যে কড়া মন্তব্য করে গেছেন,এখন যদি কিছু লিখার চেষ্টা করি সেইটা দুগ্ধপোষ্য শিশু হয়ে দৌড়ানোর চেষ্টা করার মত হবে।
তবু বলি আপনার গল্পটা অসম্ভব অসম্ভব রকম ভালো লেগেছে।
কাহিনী,চরিত্রগুলোর সৃষ্টি কিংবা উহার পরিণতী শুরুতেই
আঁচ করা গেছে কিন্তু আপনার গদ্যের টানে আটার মতো শেষ পর্যন্ত সেঁটে থাকলাম।আমরা যখন দ্রব্যমুল্যের উর্দ্ধগতি,নির্বাচন,সামরিক সরকার,সামরিকায়ন থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণ,কবে বাংলাদেশ মধ্য-আয়ের দেশে পরিণত হবে,বিশ্বায়ন বনাম আন্তর্জাতিকায়ন,গ্লোবাল ভিলেজ,কল সেন্টার ইত্যাকার বিষয় নিয়ে নানাবিধ আলোচনায় ব্যাতি-ব্যাস্ত তখন আপনার গল্পটা যেন এক বড়-সড় চড় মেরে জানিয়ে দিলো,উহারা আমাদের দেশেরই মানুষ;উহারাই মেজোরিটি এইভাবে উহারা শুধুই মাত্র বেঁচে(টিকে) থাকার জন্য প্রতিদিন-প্রতিনিয়ত প্রাণবায়ুটা হাতের তালুতে নিয়ে ঘুরে-ফিরে?
ফর্ম,চেনা-জানা কাহিনী'র পূনর্ব্যবহার কিংবা "বাস্তবকে ছাড়িয়ে অন্যরকম বাস্তব'কে না খোঁজার প্রয়াসের ব্যার্থতা ইত্যাকার বিবেচনায় গল্পটি হয়তোবা তৃতীয় স্তর থেকে চতুর্থস্তরে উত্তীর্ণ হবে না কিংবা হয়তোবা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে ইহা "সোশ্যাল রিপোর্টিং" কিন্তু ব্লগীয় পরিমণ্ডলে এই গ্লপটি দীর্ঘকাল আমার র্যান্ডম এক্সেস্ মেমোরিতে স্পেইস্ দখল করে থাকবে তা নিশ্চিত।
এটাই আসল কথা। প্রণীর প্রাণই তার শ্রেষ্ঠতম সম্পদ। সেটাকে নিয়ে যখন জুয়া খেলতে হয় তখন 'দান ধরব কি ধরব না' এই মধ্যবিত্ত অনিশ্চয়তা আর থাকে না। সে কারণেই ছেনোরা বলতে পারে_'ছেনো কখনো খালি হাতে ফেরে না,' সেই মেয়েটির বাপ বলতে পারে_'কাষ্টমার বহাইতে রাজি অয় নাই তাই আমি মারছি'।
জীবনানন্দ জীবন কে কুড়ি কুড়ি বছরের পর নিয়ে যেতে পারেন।
আমরা পারিনা।
আমাদের এক একটি দিন পার করতে হয় আফগান রনাঙ্গনের বারুদের আর মানুষ পোড়া গন্ধে......................................
চেনা ফর্মের বাইরে নতুন মাত্রার মন্তব্যের জন্য অজস্র ধন্যবাদ।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
"ধুর বাল্, দিলেন তো মন খারাপ করে ?"
এখানেই বোধহয় লেখকের জয় । অসম্ভব ভালো হয়েছে । শুভকামনা রইলো ।
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
'বাল '! এলিটিয় সিংহ দুয়ারে 'নো এন্ট্রি 'র এই শব্দগুলোই
ছেনো দের শক্তি।
শুভকামনা।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
আমার এক বন্ধু আমায় শিখিয়েছিল রাস্তায় চোর পেঁটায় সব চোরেরা-------নিজের দিকে তাঁকিয়ে আমি চমকে যাই--------আমার মনের চোরাগলি সেই সবকে নাক সিঁটকায় যা দিয়ে আমি চরম দুর্বল। আপনার গল্প পড়ে আমার কথাগুলো আবারও মনে হল।
লেখকের প্রাপ্তি বিখ্যাতদের মন্তব্য থেকে ইতিমধ্যে পেয়েই গেছেন---তবুও বলি আপনার গল্পের বিষয়,শব্দ বিশেষ করে শেষ করাটা অসম্ভব ভাল। গল্পের শুরু করতে কমবেশি প্রায় সবাই জানি শেষ অনেকেই করতে পারি না। আপনি অনেক বেশি ভালভাবে করেছেন।
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........
আমরা আসলে মোটা দাগে বিচার করতে ভালবাসি।
এর বিপরীত অবস্থানটাই আমার সাবজেক্ট ।
ধন্যবাদ।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
ম্যাড়মেড়ে গৎ থেকে সাম্প্রতিক বাংলা গল্পের উত্তরণে আপনার প্রয়োজন বিশেষভাবে অনুভূত হচ্ছে।
................................................................
জেতা মৎস্য গিলে বকে মনুষ্য খায় বাঘ-ভালুকে
রহস্য বোঝে না লোকে কেবল বলে জয়।
(দীন দ্বিজদাস)
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
কৃতজ্ঞ ।
আমি এভাবে কখনো ভেবে দেখিনি।
'আনআইডেন্টিফাইড' বা 'নোবডি' হিসেবে বেশ আছি।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
মনজুরুলের লেখাগুলোকে ঘাড় ধরে নুইয়ে রাখার প্রবণতা দূর হোক- এই প্রত্যাশায়।
এ না হলে দীর্ঘদিন টেম্পুতে দাঁড়িয়ে যাওয়া যাত্রীটির দশা ঘটতে পারে।
লেখা লিখুন হাত খুলে। প্রয়োজনে খন্ড খন্ড করে পোস্ট দিন। এবং আপনার সুমতি হোক।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
সিদ্দিকী ভাই,
আমি কোনো ক্ষোভ বা বিদ্রোহের কথা জানাইনি। তবে কেন 'গলা ছেড়ে গান গাইতে' পারছি না সেটা বলেছি।
সহমর্মিতা প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
অসাধারণ। আপনি জানেন আত্মপ্রেমে আকণ্ঠ নিমজ্জিত মধ্যবিত্তকে কি ভাবে উলংগ করতে হয়।
জাঝা
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
অসম্ভব সুন্দর...
যে রাতে গুঁজেছো চুলে বেগুনি রিবন বাঁধা ভাট,
সে রাতে নরকও ছিলো প্রেমের তল্লাট।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . (আবু হাসান শাহরিয়ার)
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
দারুণ! মুগ্ধ আমি!
দেবদ্যুতি
নতুন মন্তব্য করুন