সারাহ কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্তের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এই নিয়ে শততম বারের মত আবারও তিনি নিজের হাতব্যাগের ভিতর জিনিষগুলি ঘেঁটে দেখলেন। শীতের আবহাওয়ায় তার দীর্ঘশ্বাসগুলি বাস্প হয়ে উড়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেট তাকে বলেছে আজকের সূর্যাস্ত ৫:২৭ মিনিটে। সারাহ ঘড়ি দেখলেন। আর মাত্র ২ মিনিট বাকি - তার হৃৎপিণ্ড ধকধক করছে।
সারাহ তার ব্যাগ থেকে জরুরী জিনিষপত্রগুলি বের করতে করতে ভাবলেন, এবং সেটা এই প্রথম বারের মতই নয় যে, তার মাথাটা নির্ঘাৎ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। মিনারেল ওয়াটারের বোতলে ভরে আনা পবিত্র-জল এক হাতে, আর চেঁছে চোখা করা একটা ঝাড়ুর হাতল আরেক হাতে নিয়ে তিনি এবার সরাসরি কবরটার মুখোমুখি হলেন।
আর এক মিনিট! গলার ভেতরটা যেন মরুভূমি হয়ে গেছে।
সারাহ ঘরে তৈরি অস্ত্রগুলি আরও শক্ত করে আঁকড়ে ধরলেন। তার গবেষণায় তিনি নিশ্চিত হয়েছেন এই কাজের জন্য এই অস্ত্রগুলিই সেরা। সেকেণ্ডগুলি এখন ধীর থেকে ক্রমশ আরও ধীরতর লয়ে বইছে, তার ঝড়োগতির চিন্তার সাথে কিছুতেই পাল্লা দিতে চাইছে না।
অবশেষে সূর্যাস্ত! সারাহর হাত কাঁপছে!
তার তীব্র কেন্দ্রীভূত মনোযোগের কাছে শীত আর তুষার অস্তিত্ত্বহীণ হয়ে গেল। সারাহ নখ দিয়ে আঁচড়ানোর শব্দটা শুনতে পেলেন। প্রথমে খুব আবছা ভাবে, কিন্তু ধীরে ধীরে আওয়াজটা জোরালো হচ্ছে।
এক সংক্ষিপ্ত অনন্তকাল পরে কবরের উপর জমে থাকা তুষার থর থর করে কাঁপতে শুরু করল। তারপর হঠাৎ ছোট্ট একটা হাত এক ঝটকায় কবরের মাটি ভেদ করে বেরিয়ে পড়ল - নোংরা আর কোন কোন জায়গায় হাড় পর্যন্ত ছেড়াখোঁড়া। সারাহ জোর করে দৌঁড়ে গিয়ে ওকে সাহায্য করার তাগিদটা দমন করলেন। আগে কত শত বার কত শত কাঁটাছেঁড়ার ক্ষেত্রে যেমনটি করেছেন। রূপন ভেজা স্যাঁতসেঁতে মাটি ভেদ করে পুরোপুরি বেরিয়ে আসল। বেরিয়ে সারাহর দিকে মুখ করে দাঁড়ালো। কিন্তু না, ওর ঘোলাটে চোখে তাকে চিনতে পারার কোন চিহ্ণ নেই। ওর নাকের ফুঁটোগুলি ফুলে উঠেছে। বাতাসে গন্ধ নিচ্ছে। তারপর খানিকটা যেন দীর্ঘ অনভ্যস্ত পায়ে টলতে টলতে সামনে বাড়ল।
সারাহ একহাতে গজালের মত চোখা-করা হাতলটা দু'হাত দিয়ে আরও জোরে ধরার জন্য অন্য হাতের পবিত্র জলের বোতলটা ফেলে দিলেন। সমস্ত শক্তি সঞ্চয় করে দাঁড়ালেন মৃত্যুবাণ হানার জন্য। মনে মনে কল্পনা করলেন কিভাবে তিনি দু'পায়ে শক্ত করে দাঁড়িয়ে গজালরূপী মন্ত্রপূত হাতলটা রূপনের বুকে গেঁথে দিবেন। তারই রূপন! তার ছোট্ট বাচ্চাটা! না, সারাহ সাথে সাথে নিজেকে মনে করিয়ে দিলেন - তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এই জিনিষটা আর তার সেই ছোট্ট বাচ্চাটি নেই। তার চোখের মণিটা মরে গেছে - এই নারকীয় জীবগুলির একটাই তাকে মেরেছিল। না, মা হয়ে তিনি ওকে এভাবে থাকতে দিতে পারেন না। তিনি তার নয়নমণিকে চিরবিশ্রামের জগতে পাঠিয়ে দিবেন। ওকে দুনিয়ার সব অশুভ থেকে রক্ষার দায়িত্ব তারই ছিল। তিনি ইতিমধ্যেই একবার তাতে ব্যর্থ হয়েছেন - কিন্তু আবারও ব্যর্থ হতে চান না।
রূপন তার শেষ পদক্ষেপ ফেলল, হাতের নাগালের মধ্যে চলে এসেছে এবার। সারাহ তার মন শক্ত করলেন এবং নিজের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা মনেপ্রাণে মেনে নিলেন। তিনি জানেন, এটাই একমাত্র সিদ্ধান্ত যার কোনরকম অর্থ হয়। সারাহ গজালটা পবিত্র জলের পাশেই মাটিতে ছেড়ে দিয়ে তার সন্তানের দিকে দু হাত বাড়িয়ে দিলেন ব্যাকুল ভাবে। চোখের পলকেই রূপন তার উপরে চলে আসল। সারাহর দন্তছিন্ন শ্বাসনালী ভেদ করে বেরিয়ে আসা ফোঁটা ফোঁটা অরুণধারায় শুভ্রধবল তুষারের বুক লালে লাল হয়ে গেল। সারাহর মনে পড়ে গেল কিভাবে তিনি ওকে বুকের দুধ খাওয়াতেন পুরনো রকিং চেয়ারটায় বসে, যখন সে রাতের বেলায় ঘুম থেকে জেগে উঠত। রূপনের ছোট্ট, নরোম মাথাটায় তিনি আস্তে আস্তে চুমু খেতে থাকতেন যতক্ষণ সে তাকে শুঁষে নিত ব্যস্ত। পৃথিবী যখন পিছলে যাচ্ছে পায়ের তলা থেকে চিরতরে, সারাহর চোখের পাতাগুলি ঝাপ্টে উঠল কয়েকবার আর দু'ঠোঁটে ক্ষীণ একটা হাসির ছায়া ফুটে উঠল। তার মনে পড়ে গেছে, তিনি রূপনকে নিয়ে সব সময়ই খুব গর্ববোধ করতেন ও খুব ভাল খাদক ছিল বলে।
মূলঃ স্টিভ ভোল্কার
রূপান্তরঃ মন মাঝি
মন্তব্য
ও মা গো রে ছবির উপ্রে কার্সর দিলে এইরাম অশৈলি আওয়াজ বাইরায় ক্যা?
ডরাইসি!
..................................................................
#Banshibir.
কন কী! আপনি ডরাইলে ক্যাম্নে কী? আমি তো ভাবছিলাম এই ভূতের বাচ্চাগুলিরে মারার জন্য আপনার কাছেই জালালাবাদী মোজেজাযুক্ত পানিপড়া চামু!
****************************************
ধুর্মিয়া পানিপড়া, আওয়াজে আমার জালালি কবুতর উইড়া গেলগা
..................................................................
#Banshibir.
আম্রিকার পাবলিক জোম্বি ভূতের ভয়ে যতটা তটস্থ থাকে আমরা ততটা নই।
বরং এগুলোকে কেমন অকর্মন্য ভূত বলে মনে হয়।
তবে এটা ভ্যাম্পায়ার কিনা বুঝলাম না।
এটা ভ্যাম্পায়ারই মনে হয়।
****************************************
আমিও ডরাইসি
****************************************
সাউণ্ডে মজা পাইছি, ক্যামনে করে এইটা?
****************************************
এইটা করতে হলে আগে মইরা ভূত হইতে হয়!
****************************************
গল্প ভালৈছে, তবে অনুবাদ সামান্য আড়ষ্ট মনে হল
হ্যাঁ, আমিও পুরোপুরি সন্তুষ্ট না। আসলে খাজনার চেয়ে বাজনাতেই বেশি সময় নষ্ট হয়ে গেছে।
****************************************
ডরাই নাই।গল্প
আপনি বীরপুরুষ মানুষ, না ডরানোই স্বাভাবিক!
****************************************
ভয়াবহ গল্প।
বানানগুলি আরেকটু দেখবেন?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
কোন বানানগুলি বললে একটু সুবিধে হয়।
****************************************
আমি কার্সর দিলে আওয়াজ পাইনা কে? পীরসাব কেমনে পায়? হের কি উপর লেভেলে যোগাযোগ আছে নাকি?
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
অনেক কারন থাকতে পারে, তার মধ্যে একটা হল আমি কম প্রচলিত আর পুরনো ভার্শানের প্রচলিত ব্রাউজারগুলির (এইচটিএমএল৫ অনুপযোগী) জন্য নিঃশব্দ বিকল্প ছবি রেখেছি। আপনি হয়তো ওটাই দেখতে পাচ্ছেন। অন্য কারনও হতে পারে। তবে আসল কারন মনে হয়, হেডিসজয়ী যাদুর বাঁশরীওলা 'অর্ফিয়াস'কে ভূতপ্রেতরা ভয় পায়। যেভাবে 'সত্যপীর', 'অর্ফিয়াস'-দের মত রথীমহারথীরা হঠাৎ করে ঐ কবরস্থানে পাড়া দিচ্ছেন, তাতে ওখানে ঘাঁটি গাড়া সব ভূঁতের বাচ্চা এখন তল্লাট ছেড়ে ভাগসে!
****************************************
না দেখলাম অনেকক্ষণ পরে হালকা পাতলা শোনা যায়।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
আমিতো ভয়ে ভয়ে পড়ছি, আবার না ফাজিল কোনহানকারের হাতে ঘুঘু বনে যাই, তাই এই প্রথম ভূতের গল্প পড়ে ভয় না পেয়ে স্বস্তি পেলাম।
আহারে!
****************************************
ধুর, এইটা একটা কাম করলেন? রুমমেট থাকেনা মাঝে মাঝে। ঘরের পেছনেই বিশাল জঙ্গল। ওখানে কবর থাকাটা খুব স্বাভাবিক। আমার কিছু হইলে আপনেই পেত্থম টার্গেট কিন্তু কইয়া রাইখলাম।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
আপনারে কে কৈল যে আমি ইতিমধ্যেই........
****************************************
গল্প পইড়া ডরাই নাই। তয় শব্দ শুইনা খাঁটি ডর ডরাইসি--
হু, একটু ভয় ভয় ভাব ছিল বটে তবে.....।
হা হা, পিলে চমকানো না, ঐ 'একটু ভয় ভয় ভাব'টাই এই গল্পের লক্ষ্য ছিল। আর সেই সাথে একজন মায়ের সন্তানের জন্য নিজে ড্রাকুলা-সন্তানের খাদ্যে পরিণত হওয়ার চমকটা। ঐটুকুই।
তবে..... ভয় পেতে, বা অন্তত একটু ভয় ভয় ভাব পেতে ভাল লাগলে আমার প্রিয় এই গল্পদু'টি পড়ে দেখতে পারেন - ১ ও ২। দেখা যাক আপনার কতটুকু ভয় বা ভাল লাগে!
****************************************
নতুন মন্তব্য করুন