১.
সন্ধ্যার পর পর বাসার অবস্থা সবসময়ই জমজমাট থাকে।
ছোড়দা তার নিত্যকার আড্ডা সেরে বাড়ী ফিরে মা র বিছানার রাজত্ব নিয়ে বসে জোরেশোরে হাঁক দেয়, ওরে আমার কিন্তু চা চাইনে! অনি জানে এর মানে হলো - এক্ষুণি চা চাই!
দেখতে দেখতে বড়ভাইজানও ফেরে, কোন্ এক কোম্পানীর বেচা বিক্রি নিয়ে ভেবে মাথা আউলা করে ফেলছে, তাও ভালো সকাল সকাল ফিরতে পারে বাসায়- সূয্যি ডোবার পরেই।
বাবা ফেরে আর একটু আগে, কাছেই আপিস- যাওয়া আসায় তাই সময় লাগেনা একদম। এসে অবশ্যি তাঁর বিশ্রামের বালাই নেই, কিছুক্ষণ বারান্দায় বসা, আপিস ফেরত নিয়ে আসা পেপারটায় চোখ বুলিয়ে গোসলে ঢোকা, ঘুরে ফিরে মা র বিছানার পাশেই রাখা ইজিচেয়ারটায় পরের কয়েকঘন্টার জন্য বসতে বসতে সেই এক ঘন্টা।
মা এর মাঝেই চা আর একেকদিন একেকরকম টা নিয়ে হাজির হয়, আগুনের আঁচে লালচে হওয়া মুখে হাসি ছড়িয়ে। ইজিচেয়ারের পাশে রাখা গোলটেবিলে ট্রে-টা রেখে মা বালিশে হেলান দিতেই একেকজনের মুখে তুবড়ি ফুটতে শুরু করে- আরে জানো নাতো আজ কি হয়েছে..। এমনি করে। প্রতিদিন।
আর অনি ততক্ষণে নিজের জায়গা খুঁজে নেয়, বিছানার আরেক কোণে- সবাইকে নজরে রাখা চলে, আবার ইচ্ছে হলে জানলা দিয়ে অন্ধকার হয়ে আসা বাইরেটাও
দেখে নেয়া যায় চট করে।
২.
দুনিয়ায় যা হয় হোক, এ আড্ডা মিস করা অনির সয়না।
এমনো হয়েছে, বেড়াতে গেছে বন্ধুদের সাথে- কিন্তু বিকেল হতেই মন আঁইঢাই করতে শুরু করেছে, কোন না কোন বাহানা দেখিয়ে ঠিক সন্ধ্যার আগে ফিরে এসেছে বাসায়।
বন্ধুরা কথা শোনাতে ছাড়েনি, তাতে কি? ও এরপর থেকে বরং ওদেরি টেনে নিয়ে এসেছে বাসায়। হ্যাঁ, বাইরের কেউ এলে বাসার আড্ডাটা হয়না এটা ঠিক। কিন্তু এওতো সত্যি যে মনের অস্থির ভাবটা কমে।
মনের এ অস্থির ভাবটা নিয়েই আসলে যত সমস্যা! হয়তো নিজের পড়া বা কোন কাজে অনি ব্যস্ত, আড্ডার সময় ঘনিয়ে এলেই হলো- থেকে থেকে মনে চিন্তা কিলবিল করতে শুরু করে, না জানি কি হয়ে গেলো ওঘরে?! জাদুগ্রস্থের মত ঐ রুমে না ছুটে আর উপায় থাকেনা কোন।
প্রথমে দরোজার পাশের ছোট আলমিরায় হেলান দিয়ে দাঁড়ায়, এর কিছুক্ষণ পর দেখা যায় যে কে সেই, জানালার পাশে বিছানার কোণটায় ও বসে।
ছোড়দা বা মা কালেভদ্রে জিজ্ঞেস করে বসে, কিরে কাজ শেষ তোর? অস্ফূটে বলে হয়তো যাচ্ছি কিন্তু এরপরও দেখা যায় অনি ওখানেই বসে। হাসছে, বকছে বা কথা গিলছে।
৩.
গেলো বেশ ক দিনে অনির মনে ঝড় চলছে, তাও নিত্যকার অভ্যাসে বিরাম পড়েনি।
টেস্ট শেষ হয়েছে সেই কবে, এরপর রুটিনও দিয়ে দিয়েছে পরীক্ষার- তাতেও সমস্যা হয়নি কোন; কিন্তু সপ্তাহখানেক আগে কলেজ থেকেও যখন ফেয়ারওয়েল দিয়ে দিলো তখন থেকেই অকারণ চিন্তা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে মনটাকে, খানিকটা ভয়ও কেনো জানি কাজ করতে শুরু করেছে অনির।
ও এমন কিছু আহামরি ছাত্রী না, তাই বলে একদম ধুচ্ছাইও না। এক দুই তিন সে কখনোই ছিলোনা, কিন্তু দশের একজন সে অহরহ হয়েছে।
হাতে বই ঝুলিয়ে ছোড়দার কাছে গিয়ে অনি ওর সমস্যার সমাধান খুঁজেছে। কিসের কি? ছোড়দা শুনে হেসেই আকুল। বলে কিনা, ভয় পাবিনা মানে? পেতেই হবে! অমনটাই দস্তুর! এরপর আবার দাঁত ক্যালানো হাসি, গা জ্বলে যায় একদম। তবে কিনা ছোড়দাটা এরকম বললেও কথার বাঁকা মানেটুকু অনি করে নিতে পারে এই যা রক্ষা, না পারলে আবার শুনতে হয়, অ! তর তো এন্টেনাই গজায়নি!
বড় ভাইজান অত ঝামেলায় যায়নি- টেনশনের কিছু নাই, অমন একটু আধটু হয়ই বলে আবার অফিসের ফাইলে মাথা গুঁজেছে সেলস মিটিংয়ে বসের ঝাড়ি থেকে বাঁচার উপায় খোঁজার জন্য।
অনি আর কি করে, সারাদিন বই হাতে মুখ শুকনো করে ঘুরে বেড়ায়, বাসার এখানে ওখানে বই ছড়িয়ে রাখে, মাঝে মাঝে চেয়ার টেবিল ভুলে মেঝেতেই বসে যায় বইখাতা ছড়িয়ে, বেশী চিন্তায় পড়লে বিছানায় গড়িয়ে ঘুম, ব্যস, সব চিন্তা খতম।
৪.
এমনিতে কোনক্রমেই ঢাকায় আসতে রাজী হন না- বলেন ঐ বাতাসেও বিষ - কিন্তু আদরের নাতনীর পরীক্ষা, দোআ দিয়ে যাবার জন্য নানুও চলে এসেছেন বাসায়। এসে অবশ্য বলছেন, তোরা তো ভুইলাই গেছছ আমারে, গেছছ একবারো আমারে দেখবার লেইগা? সব কয়ডা অমানুষ!
এরপর অমানুষদের জন্য সাথে নিয়ে আসা পিঠার ব্যাগটা খুলেছেন সবার সামনে। নাতি নাতনীর পছন্দ সম্পর্কিত জ্ঞানটি তাঁর অতি টনটনে।
ওনার অবশ্য অন্যান্য জ্ঞানেরও অভাব নেই, সেই পুরানো দিনের ম্যাট্রিকুলেশন পাশ, মন ভালো থাকলে সে আমলে পড়া ছড়া কবিতা মুখস্ত শুনিয়ে চমকে দেন একদম।
কারক-বিভক্তি-সমাস নাকি গুলে খাইয়ে দিয়েছিলেন তাঁর বড় ভাই, শিক্ষক ছিলেন তিনি। অমন মাস্টার আর কই পাইবি তোরা - দীর্ঘশ্বাস ফেলেন নানু আর অনি চোখ বড় বড় করে শোনে। আফসোস করে- আহা আমার ভাইগুলোও যদি অমন হতো! সাথে সাথেই অবশ্য শুধরে নেয়- থাক যা আছে তাই ভালো! ছোড়দার কাছে ব্যাকরণ পড়ছে- ছবিটা কল্পনা করতেই অনি ফিক করে না হেসে পারেনা।
নানু এলে সন্ধ্যার আড্ডাটা আরো জমজমাট হয়, পার্থক্য কেবল ইজিচেয়ারটায় নানু বসেন আর আব্বু এরুমে এলে বারান্দা থেকে তাঁর বেতের চেয়ারটা টেনে নিয়ে আসেন।
তিনঘন্টার ট্রেনযাত্রার নানুকে একটু কাবু করেছে বোধ হয়, ভরদুপুরে তাই অঘোরে ঘুমুচ্ছেন। অনি জানে ঘুম থেকে তিনি পুরো ঝরঝরে হয়েই উঠবেন।
একদিকে পরীক্ষা, অন্যদিকে নানু, সন্ধ্যার পরের সময়টা নিয়ে অনি দোটানায় না পড়ে পারেনা।
৫.
বিকেলের গড়াগড়ি সেরে অনি মা র রুমের কাছাকাছি যেতেই হাহাহিহির আওয়াজ পায়। গলাই বলে দিচ্ছে বড় ভাইজান আর বাবা ওখানে নেই। ছোড়দার ফ্যাঁক ফ্যাঁক শোনা যাচ্ছে, ও কি আজ বেরোয়নি নাকি?!
দরোজায় উকি দিতেই নানুর নজরে পড়ে সে- এই তো আমরার পরীক্ষার্থী আইছে। আসো আসো। ঘুম ভাঙছে তাইলে?
অনি চোখ কচলে বিছানার কোনায় গিয়ে বসে পড়ে, নিজের জায়গাটায়।
নানু বোধ হয় কাহিনী বলছিলো কোন, ওটাতেই মনোযোগ দেয় আবার- পরীক্ষা নিয়েই বুঝি-
..তো পরীক্ষাতো দিছি ইংরেজি, বাসায় আইতেই তোমরার নানা ধরলো-
..ওমা, অনি আবার হাসস ক্যান? হাসির কি আছে? তখন এমনি চল ছিলো। তদ্দিনে বিয়া হয়া গেছে আমার, তোমরার মা তখন কোলে, অনেকে হাসছে পরীক্ষা দিমু শুইনা, তোমরার নানা ও, কিন্তু আমার শখ আছিলো ম্যাট্রিক পাশ করমু, তাই জোর কইরা পরীক্ষা দিছি- পড়ার সময় নাই, যা মনে আছে তাই সম্বল, তোমরার নানা অবশ্য শেষের দিকে ইংরেজীটা দেখায়া দিছে-
এইজন্যেই পরীক্ষা দিয়া আসতেই জিজ্ঞেস করলো, ক্যামন দিছো? কত পাইবা? আমি কইলাম, চল্লিশ! হুহ, চল্লিশ! কইলেই হইলো! আমি জোর দিলাম, পামু তো! উড়ায়েই দিলো আমার কথা।
মেজাজ খারাপ কইরা আর পরীক্ষাই দেই নাই। রেজাল্ট বাইরোইলো পরে উনিই কোথ্থেকা রেজাল্ট নিয়া হাজির। আরে তুমি তো সত্যই চল্লিশ পাইছো! আহাহা বাকি পরীক্ষাগুলা দিলেই পারতা! আমি আর কী কই! পরের বার আবার পরীক্ষা দেওয়াইছে জোর কইরা, পাশ করছি।
আহাহা! চল্লিশতো পাইসেন পরীক্ষা দিতে পারছেন দেইখা, স্যাররা তো আমার পরীক্ষা দেওয়া নিয়া টেনশনে ফালায়া দিলো। - ছোড়দা চট করে ফ্লোরটা নিয়ে নিলো। আমার সিট পড়ছে গার্লস স্কুলে। তো ঐ স্কুলের স্যাররা যেই টের পাইলো আমরা বয়েজ স্কুলের অমনি ইচ্ছামত পটপট করা শুরু করলো। এইটা খারাপ, ঐটা জঘন্য, সেটা আজাইরা- দুনিয়ার প্যাঁচাল। কিছুক্ষণ পরে দেখি মাথা ভন ভন করতেছে, পারা প্রশ্নের উত্তর ভুইলা গেছি। যখন চিন্তা করতেছি এ আজাব থেকে ক্যামনে বাঁচা যায় তখন ম্যাজিস্ট্রেট আসলো, ফাটা রেকর্ড থামলো, আমরা আবার লেখা শুরু করলাম।
অনির আরো একটা কাহিনী মনে পড়ে যায়- তোমারে যে সন্দেহ করছিলো ঐটা কবেকার কথা?
ঐটাতো আরো পরের কাহিনী, ছোড়দা বলে মুখে হাসি ফুটিয়ে, ভর্তি পরীক্ষার সময় হইছিলো। পরীক্ষা দিতেছি, খাতা সাইন করার সময় এক স্যার একবার আমার এডমিট কার্ড দেখে আরেকবার আমারে দেখে, সাইন আর করেনা। প্রথমে তো বুঝি নাই, পরে বুঝছি উনার সন্দেহ ছিলো আমি প্রক্সি দিতে গেছি কিনা! অবশ্য উনার দোষ নাই, উনি কিভাবে জানবেন যে এরমধ্যে আমার চশমার ফ্রেম পাল্টেছে আর আমার হঠাত্ করেই দাঁড়ি রাখার বাই
চেপেছে?!
মা আঁচলে হাসি মুছে বললেন, আরে স্যারেরা কি আমাদেরো কম যন্ত্রনা দিয়েছে নাকি! লিখছি আর হঠাত্ দেখি আমার চারপাশে টহল দেয়া শুরু হয়েছে! নিজেরা নিজেরা আবার শুনিয়ে শুনিয়ে বলাবলি করছে, খবর পাইছি স্যারের মেয়ে নকল করে, আজকা ধরবো! আব্বার কলিগ, কিছু বলা ঠিক না, তবু এর পরেও মেজাজ ঠিক থাকে ক্যামনে, একদম শুনায়া দিলাম সবার সামনে, যদি পান তো ধরেন যত পারেন। দেখায়া যান কোথায় নকল করছি, কিভাবে করছি। যারা করে তাদের দেখেন না, সাহসে কুলাইলে যান না, ওদের ধরেন! এরপর আর ঘাঁটায় নাই আমারে, তবে শুনছিলাম বলাবলি হইতেছে স্যারের মেয়েটা বেয়াদব, স্যারের মত হয় নাই একদম।
মা র কথা শেষ না হতেই হঠাত্ চকচক করে ওঠে ছোড়দার চোখ- নানু, একটা কথা মনে পড়লো। জিজ্ঞেস করবো? মা র দিকে তাকিয়ে শুধায় ছোড়দা। কি? - নানু প্রশ্ন করে। ঐযে, মা যে পরীক্ষার আগে- কথা শেষ না করেই ছোড়দা আবার তাকায় মায়ের দিকে। বড় ফাজিল হইসোস - মায়ের বিব্রত মুখটা চোখ এড়ায়না অনির। কি হইছিলো নানু, বলেন না! - ও নানুকেই জিজ্ঞেস করে। এমন কিছু না - এবার হেসে ফেলেন নানুই- পরীক্ষা আসলেই মেয়ের নাওয়া
খাওয়া মাথায়, সারাদিন কেবল ফ্যাত্ ফোত্, একদম রেজাল্ট পর্যন্ত। রেজাল্ট পর্যন্ত! - অনি অবাক না হয়ে পারেনা। হ্যাঁ, এরপর সব ঠিক।
অনির কিন্তু এমন ব্যারাম নেই - ছোড়দার ছোঁড়া মন্তব্য কানে আসে- তবে ও বই-বাহিক হয়ে যায় এটুকুই যা - বিছানা থেকে হাতে তুলে নেয়া বইয়ের দিকেই নজর পড়েছে ছোড়দার, বুঝতে পারে অনি, মেজাজ সামলে নেয়ার দরকার দেখেনা আর- ও কি? আমারে মারতে আসিস কেনো? নানু আপনিই বলেন ভুল কিসে বললাম? - হাত দিয়ে মাথা মুখ আড়ালে নিতে নিতে বলে অনু, অনির ছোড়দা।
নানু শুধু মুচকি হাসেন।
৬.
রাতটা আলাদা দিনের চেয়ে। অনির তাই রাতটাই পছন্দ। এই একটা সময়ে নিজের সাথে আলাপচারিতা জমে, বেশ খানিকটা সময় কাটে একদম নিজের মতো করে। দিনের অনি আর রাতের অনি তাই আলাদা।
দিনের শেষে ঘুমেই শান্তি খোঁজার কথা, কিন্তু এ এক আজব ব্যাপার, দিনের বেলা বই ধরলেই আস্তে ঘুম চলে আসে কিন্তু রাতে আর ঘুম আসতেই চায়না মোটে। আবার মাথা ঝিম ধরে থাকে বলে অনি এসময় পড়তে পারেনা একটুও। এ সময়টাতেই একলা কথা হয় নিজের সাথে।
ড্রয়িংরুমে দুই ভাই রাত জেগে খেলা দেখে, অনি ওখানে গিয়ে বসে মাঝে মাঝে, ভালো লাগেনা কোথাও, আবার ফেরে নিজের রুমে।
কেবল মনে হয়, এমন যদি হয় যে ও পরীক্ষায় কিছু পারলোনা- যেমনটা ও স্বপ্ন দেখে মাঝে মাঝে, তাহলে কী হবে? সবার হাসিমুখ কি থাকবে তখনো? নাকি কেউ মানতেই পারবেনা? ভাবতেই বুকটা খালি হয়ে আসে, ভ্রু আর কপাল কুঁচকে যায়, ঘন হয়ে আসে নিঃশ্বাস।
ছোড়দা কোন এক ফাঁকে এসে দেখে যায় ও ঘুমোলো কিনা। অনি চোখ বন্ধ করে শুয়েই থাকে। ছোড়দা প্রায় নিঃশব্দে দরোজাটা ভেজিয়ে দেয়। অনি সবি টের পায়, তবে নড়েনা একটুও। আকাশ-পাতাল চিন্তায় ডুবে থাকে সে।
অথবা অনি ঘুমিয়েই পড়ে কোন এক ফাঁকে- হয়তো।
[*ছোট বোন এইচ এস সি পরীক্ষা দিচ্ছে। এ গল্পটা ওর জন্য।]
মন্তব্য
হাচলত্ব প্রাপ্তিতে অভিনন্দন, মর্ম। এখন একটু বেরুচ্ছি। ফিরে এসে মন্তব্য করবো আবার।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
ধন্যবাদ।
সবুজ সংকেত পেয়েছি ১ হপ্তা আগে, নাম বিষয়ক জটিলতা আর আলসেমীর বাঁধা পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত 'আনুষ্ঠানিক আতিথ্য' নিতে পেরে বেশ ভালো লাগছে।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
ঘরের পরিবেশের বর্ণনা বেশ ভালো লাগলো।
পরিবেশটাই যে ভালো লাগার
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
হে নব্য হাচল,
১) >সূর্য্যি ... আপাতত আর চোখে পড়লো না তো!
২) খুব সুন্দর একটা গল্প, চেনা পরিবেশ আর পরিচিত মুখগুলোকে নিয়েই যেন লেখা...
৩) ধুর, পড়ালেখা আর ভাল্লাগেনা...
পরীক্ষার্থীটির জন্যে শুভকামনা!
--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
সূয্যি কিন্তু ঠিকই আছে।
আমি হব সকাল বেলার পাখি
সবার আগে কুসুম-বাগে উঠব আমি ডাকি।
সূয্যিমামা জাগার আগে উঠব আমি জেগে,
'হয়নি সকাল, ঘুমো এখন'- মা বলবেন রেগে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
হে প্রাচীন হাচল,
১. আমার যাহা কহিবার ছিলো তাহা হংস মহোদয়া ব্যক্ত করিয়া ফেলিয়াছেন
২. আপন পরিবেশের মূল্য বুঝিতে বোধ করি আমরা বড় দেরী করিয়া ফেলি, নচেত কেহ কি ঘর হইতে বাহির হইতো?
৩. পরীক্ষা থাকিলে পাঠগ্রহন নহে, ঘুম বাঞ্ছনীয়, ইহা অদ্য শিখিয়াছি!
৪. সকল মেধাযোদ্ধার জন্য শুভকামনা রহিলো।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
ঘরের মধ্যে একজনের পরীক্ষা মানেই পুরো ফ্যামিলির পরীক্ষা।
বোনের জন্য লেখার ব্যাপারটা বেশ মিষ্টি লাগলো।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আসলেই তাই।
পরীক্ষার সময় তো অনেক গিফট দেওয়া যায়, ওসবের ধার না ধেরে ছন্দবদ্ধ মুঠোবার্তা পাঠানোতেই আমার আনন্দ। এবার মনে হলো, নতুন কিছু হলে ক্ষতি কি?
উপহার হিসাবে গল্প, একটু অন্যরকম হলোনা?!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আপনাকে অভিনন্দন, আপনার বোনের জন্য শুভেচ্ছা...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ নজু ভাই।
শুভেচ্ছা পৌঁছে দিচ্ছি-
"ওরে কই গেলি? এদিক আয়.."
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
ভালো লেগেছে। বিশেষ করে ছোট ছোট ডিটেইলগুলো।
পরীক্ষা এলেই কেমন একটা রব পড়ে যায় বাড়িতে। পরীক্ষা তো নয়, যেন যুদ্ধের প্রস্তুতি।
বোনটির জন্য অনেক শুভকামনা রইল।
[ আঁইঢাই > আইঢাই, দরোজা > দরজা, কুড়ে কুড়ে > কুরে কুরে ]
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
ওগুলো লিখেও আনন্দ।
হুম, আসলেই যুদ্ধ।
আল্লাহ্ ওদের সহায় হোন।
আইঢাই< বেশ সন্দেহে ছিলাম চাঁদের বিন্দুদের নিয়ে, শেষে কি ভেবে বসিয়ে দিলাম তা জানিনে
দরজা< পুরোন কোন বইয়ে অমন করে লিখতে দেখেছি, হঠাত্ ওকারের প্রতি বাত্সল্য বোধ করায় ধরে এনে বসিয়ে দিয়েছিলাম
কুরে কুরে< ট্রায়াল এন্ড এরর পদ্ধতি প্রয়োগ করেছিলাম
ভুল করে ভালো লাগছে!
কারণ ভুল নেই তো শেখাও নেই!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আসলেই রাতে নিজের সাথে নিজের কথা চমৎকারভাবে বলা যায়। হাচলত্বে অভিনন্দন।
..................................................................
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।
ধন্যবাদ পান্থদা।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
দারুন
ধন্যবাদ
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
মর্ম,
আপনিও হাচল হয়ে গেলেন! শুধু আমি পড়ে রইলাম একা 'অতিথি লেখক' হয়ে :"-(
এমন করে ভালো গল্প লিখবেন না; তাহলে আমার নিজের লেখা পড়তে লজ্জ্বা লাগে!!
আপনার ছোট বোনের জন্য অনেক-অনেক শুভকামনা রইলো
মুক্ত বিহঙ্গ
চিংড়ি চিকেনে যেভাবে লেখা সাজাচ্ছেন তাতে আপনারো হাচল হতে দেরী নেই খুব বেশী
তার আগে?
অপেক্ষাং লেখ্যং দেখোং
লজ্জ্বা > লজ্জা
শুভকামনা পৌঁছে দিয়েছি।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
- আরে এইসব পরীক্ষা টরীক্ষা নিয়ে টেনশনের কিছু নাই। বিকেলের আ রকম আড্ডা গুলোই আসল। পরীক্ষার টেনশন কেটে যাবে এক সময়, কিন্তু এই পারিবারিক আড্ডাগুলোর রেশ থেকে যাবে আজীবন! এটা বোধ'য় আমরা অনেকেই জেনে গেছি এতোদিনে।
শুভ কামনা থাকলো আপনার 'অনি'র প্রতি।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
পারিবারিক আড্ডার হাহাহিহির স্বাদ আসলেই অতুলনীয়।
আমার দুয়েকজন বন্ধু আছে যারা ছুটিতে গেলেও বাড়িতে দুদিনের বেশী থাকতে পারেনা, অবাক না হয়ে পারিনা।
'অনি'র শুভকামনা ও বুঝে নিয়েছে। শুভকামনা রইলো বর্তমান আর ভবিষ্যতের সব 'অনি'র জন্য।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
বোনের পরীক্ষার জন্য রইল অনেক শুভ কামনা।
লেখা ভাল লেগেছে।
বাউলের মন্তব্যে খুশী হলাম।
শুভকামনাটুকু বোনটি নিজ দায়িত্বে বুঝে নিয়েছে।
আমি ভাবছি এতো এতো শুভকামনার বদলে ওর কাছ থেকে নিদেনপক্ষে চকবার খসানো যায় কিভাবে!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আমার জীবনের সবচেয়ে মধুর স্মৃতিগুলো এরকম পারিবারিক আড্ডা নিয়ে। চায়ের কাপ হাতে বারান্দার বেতের মোড়ায় বসে আছে আব্বু-আম্মু, চৌকাঠের উপর লালরঙ্গা শাল মুড়ি দিয়ে বসে আছে আমার বোন, বাবা পিরিচে করে চা ঢেলে দিচ্ছেন তাকে। ওদিকে ওভেনে সদ্য ফুলে ওঠা কেকের গন্ধ। আমি আশেপাশে ঘোরাঘুরি করছি। বাবা আমাকে ডেকে বলছেন, "বল দেখি, 'সংবাদ'?" আর আমি নাক ভরা সর্দি নিয়ে বলে যাচ্ছি "সগবাদ, সগবাদ" আর সবাই হেসে কুটিকুটি হচ্ছে...
ক্যান যে বড় হইলাম...ধুত্তেরি!
মজা দেখেন, তখন হয়তো বলতেন, 'কবে যে বড় হমু?'
আপনি কি স্মৃতিকথা লিখছেন বা লিখেছেন এর মধ্যে? না লিখলে শুরু করে ফেলেন না...সগগাদ- এর মতো আরো আরো কাহিনী আছে নিঘঘাত!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
নতুন মন্তব্য করুন