তাকে প্রথম যেদিন দেখি সেই দিনটা বেশ অনেকদিন পার হয়ে গেলেও এখনো বেশ পরিস্কার মনে পড়ে। স্মৃতি পরীক্ষার নামে চট করে চাইলেই বলে দিতে পারি দিন-ক্ষণ, বলবো কেন? থাকনা কিছু কথা, কেবল আমার আর ওর।
একেবারে বাসাতেই দেখা হয়েছিল, আগেই জানা ছিল আসবে- তবে কবে তা জানা ছিলোনা। ভূবনের সেরা তাকে বলবো না, তবে এক দেখাতেই পছন্দ না করার কোন কারণও ছিলনা। নাদান বালক আমি, কাজেই তাকে পেয়েই যে আকাশের চাঁদ পাবো তাতে আর আশ্চর্যের কী আছে?!
সেই শুরু। তারপর কত দিন গেলো, কত রাত। দুজন দুজনার। অমূল্য সব স্মৃতি। আমি যেখানে যাই তাকে সাথে নিয়ে যাই, তার ভাল লাগলেও, না লাগলেও। ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাই, সেও যায় সাথে। সিলেট ঘুরে আসার সাধ জাগে, তার যাওয়াও নিশ্চিত করি। সময় কাটানোর জন্য ঢাকা ভার্সিটির ক্যাম্পাসে যাবো, ওকে ছাড়া যাবার কথা ভাবতেও পারিনা।
নিজের কথা বলি, গোপন কথা। ও শোনে, যত্নে সাজিয়ে রাখে স্মৃতির গভীরে। আর কেউ জানেনা, আমিই শুধু জানি কোথায় লুকোনো সেসব জমানো কথা- আমারি অধিকার তাতে, আর কারো নয়। বড় অবাক লাগে, একজনের সাথে আরেকজনের দূরত্ব দূরে ঠেলা এত সহজ?
ওকে আমি গল্প শোনাতাম, নিজেরি বানানো। কখনো ছড়া, কখনো কবিতা- যখন যা মনে আসে। ও চুপটি করে বসে থাকতো না মোটেই- গান শোনাত, চমৎকার সব গান। সেই হেমন্ত, মান্না দে, কিশোর কুমার থেকে শুরু করে হালের সুমন, শ্রীকান্ত, অর্ণব, হাবিব, ফুয়াদ, সজীব এবং আরো অনেকের। রবীন্দ্র সংগীত যেমন শুনিয়েছে, বাদ পড়েনি নজরুলের গান বা আধুনিক গানও। ও গান শুনিয়ে কখনো আমাকে আনমনা করে দিয়েছে, কখনো চিন্তায় ফেলেছে, কখনো মুক্তি দিয়েছে অসহনীয় অবসাদ থেকে, কখনোবা স্রেফ আনন্দে ভরে দিয়েছে মন।
ছবি তোলা ওর শখ ছিল। যা তোলার তা তুলতো, যা তোলার না তা-ও। আমার বন্ধুদের সাথে পরিচয় ছিলো তার, নানান সময়ে তোলা ছবি আর সাথের দারুন সব গল্প মনে করিয়ে ও ওদের একজন হয়ে উঠেছলো। কখন কোন ছবি তুলে ফেলে পরে বন্ধুদের সামনে বিপদে ফেলে এ ভয়ে ওর ক্যামেরা থেকে দূরে থাকতো সবাই, আবার ক্যামেরা ছাড়া দেখলে ঠিকই খোজ করতো- “ক্যামেরা কই?”
রাতে বাসায় ফিরে লেখালেখি না করলে শান্তি পাইনা, ওর পছন্দ হোক আর না-ই হোক, ঠিক সুযোগ করে দিত লেখার। ছাঁইপাশ যা-ই লিখি, কার কেমন লাগলো তা জানার জন্যও ওর-ই শরণ নেয়া নিত্যদিনের অভ্যাস। আর উপায় কি, ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়ার বেলাও যে ও-ই ভরসা!
সব মনে পড়ছে আজ একে একে, না পড়ার উপায়-ইবা কোথায়?
চলে গেছে ও, অনেক স্মৃতে ফেলে, অনেক স্মৃতি নিয়ে। ও কি জানে, সেই স্মৃতিগুলো ওর চেয়ে অনেক বেশী মূল্যবান?!
দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখে গেছে সে আমাকে, সবার থেকে আমি এখন বহু দূরে। একা একা লাগছে।
একা থাকলেই মেজাজ খারাপ হয়, রাগারাগি করতে ইচ্ছে করে- তা করে যে কিছু শান্তি পাবো সে সুযোগ-ও নেই। কার কাছে রাগ দেখাবো?
ও নিয়ে যার সাথে গেছে তার উপর রাগবো? তার দোষ কোথায়? সে তো চাইবেই এমন একজনকে নিজের অধিকারে নিতে, আমারি বরং সাবধান থাকা উচিত ছিলো!
নিয়ে গেছে তাতে আফসোস নেই, আরেকজন আসবে। কিন্তু যে স্মৃতিটুকু গেছে তা কি আর ফিরে পাবো কখনো?!
''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''
মোবাইল-টা হারানোর শোক সামলে উঠবো, কিন্তু ‘স্মৃতি’ হারানোর ‘শক’ সামাল দেয়ার দাওয়াই কি আদৌ আছে?!?
মন্তব্য
প্রথমেই আন্দাজ করেছিলাম - মোবাইল ফোন।
পুরোটাই তো দুঃখের কাহিনী লিখলেন, রম্য কই
লেখা তাহলে ব্যর্থ!
পাঠক এত চালাক হলে তো বিপদ!! ['চোখ টিপি'র ইমো আছে ধরে নিন]
একজনের দুখে আরেকজনের সুখ না? সে সূত্রে রম্য!!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
না রে ভাই, ব্যর্থ হবে কেন! লেখা ভাল্লাগছে।
রম্যের চাইতে স্যাটায়ার বেশি হইছে
তাই বলেন! ধন্যবাদ, অনেক ধন্যবাদ!!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আমার সিমেন্স এম সিক্সটি ফাইভটার কথা মনে পড়ে গ্যালো। বেচারার একদিন ঘুমই ভাঙলো না। নিষ্প্রাণ শরীরটা এখনো যত্ন করে রেখে দিয়েছি।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
মমি করা?!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আমি বলি কী, "সে" খোয়া গেছে এক হিসেবে ভালোই হয়েছে। কিভাবে?
পুরোনোর অজুহাতে আপনি যখন আরেকজনকে ড্যাং ড্যাং করে ঘরে তুলতেন তখন বেচারার কেমনটা লাগতো ভাবুন দেখি! প্রিয় জিনিস হারিয়ে ফেলবার কারণে সমবেদনা জানিয়ে গেলাম। ভালো থাকবেন।
নয় দুই পকেটে দুইজন থাকত, সমান জায়গা, সমান অধিকার...!!!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
একজন গেছে, আরেকজন আসবে। বর্তমান ভোগবাদী যুগে এই অনুভূতিগুলোর মূল্য কই বলুন :)।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
আসবেতো ঠিক, কিন্তু পুরানো স্মৃতি কাঁটা দেবে যে তার কী হবে...?!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
এভাবেই চলে যাওয়া ভালো
অযতনে পরে থাকার চেয়ে ঘরের কোণে |
একদিন তার ও যৌবন ফুরিয়ে যেত !
সারা দিত না কারো ডাকে,
গাইত না মান্না হেমন্ত কিনবা রবীন্দ্রনাথ !
অযতনে কি রাখতে না তাকে ?
ধুলোয় ভরে যেত শরীর, অথবা মাকড়সার জালে,
তার স্থান হয়ে যেত হয়তবা আস্তাকুড়ে !
তোমার আর কি ! নাচতে নতুনের তালে,
নতুন তখন থাকত যে ভাই তোমার মনটা জুড়ে !
এরচেয়ে ভালোই হলো তার চলে যাওয়া,
সযতনে এখন থেকে সে থাকবে তোমার মনের কোণে!
||হেমন্তের শিশির||
ওর স্মরণে কবিতা পর্যন্ত লেখা হয়ে গেলো!
ওর মোবাইল জন্ম সার্থক!!
[অফটপিকঃ আপনার লেখার ধরণ খুব চেনা ঠেকছে! সচলায়তনের বাইরে আমি কি আপনাকে চিনি কোনভাবে, বা আপনি আমাকে?!]
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আপনার প্রিয়ার একটা ব্যক আপ নিয়ে রাখলেই পারতেন!
বেশি খরচ হতো না আবার কিছুই হারাতো না....
জহিরুল ইসলাম নাদিম
প্রিয়া!? তা নেহায়েৎ ভুল না!
আলসেমী যে একটা রোগ তা তো জানেন-ই...!!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
মাত্র তরশুই যেমন একটা ছবি তুললাম বাসে...
কাঁচের উপর সাদা কালিতে লেখা নোটিস-
ও বহিদ মালের জন্য গাড়ীর প্রতিপক্ষ দহি নয়।
এ ছবি হারানোর ব্যথা কি জীবনে যাবে?!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
সমবেদনা
মুবাইলটা হারাইল ক্যামনে?
বসিয়া ছিলেম ঠিক জানালার ধারে,
আয়েশ করে, বাতাস এসে খেলছিলো বেশ ঘাড়ে!
তিনখানা সিট, একখানাতে ব্যাগখানি মোর রেখে,
পায়ের উপর পা তুলিয়া, সামনে পিছে দেখে!
একটু খানি সুযোগ পেতেই মোবাইল হাতে নিয়া,
ব্যস্ত হলেম সুর শ্রবনে সেই সে মোবাইল দিয়া।
একখানি কর ব্যস্ত হলো; নেট যোগাযোগ খুলে,
ঝাঁপ দিনু এই সচল পাতায়, মনের আগল তুলে!
কোথায় গেনু, কিচ্ছুটি নাই মনে,
কেবল জানি সুমন মশায় গাইছিলো সেই ক্ষণে!
হঠাৎ করে একখানি হাত দারুন বেগে এসে,
কাড়লো আমার মোবাইলখানি, গেলুম আমি ফেঁসে!
গানের বাণী শব্দ নিয়া ছুটলো চোরের সাথে,
রইনু বাসেই; চুপটি করে, ছুঁইনু কপোল, হাতে!
সঙ্গী যারা বাসের মাঝে মাতলো চুরি নিয়া,
কিচ্ছুটি আর কইনি আমি, কইনু লেখা দিয়া!!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আমার প্রিয় সিমেন্স সি-৬৫ টাও একদিন কেউ আমাকে কিৎসু না বলে নিয়ে গিয়েছে . . .
আফসোস!! বলে কয়ে নেয়া দরকার ছিলো...!!!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
"আর উপায় কি, ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়ার বেলাও যে ও-ই ভরসা!"
এই লাইনডা পইরাই বুজছিলাম ঘাপলা আছে। পরথম দু'ই প্যারা পইরা তো আরেকটু হইলেই কাম সারছিল আরকি.....আমারেই আপনের সমবেদনা জানাইতে হইতো।
শাফি।
দরকার হইলে বইলেন, পারিনা তেমন, তবু সমবেদনা জানানোর চেষ্টা করবো...!!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
মর্ম ভাই,
কঠিন খারাপ লাগছে আপনার জন্য। তার চেয়ে বেশী মোবাইল ( যার ক্যামেরার ভয়ে দূরে থাকতাম) এর জন্য।
আমার জন্য খারাপ লাগার কিছু নাই, তবে মোবাইলের জন্য খারাপ লাগলে আমি আপত্তি করব না- তোমাদের বহু যন্ত্রনা দিয়েছে সে, এরপরও যদি খারাপ লাগে, তাহলে তো ভালোই!!
পাকনা, ধন্যবাদ খুঁজে খুঁজে লেখাটা পড়ে যাবার জন্য!!!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আমার জন্য খারাপ লাগার কিছু নাই, তবে মোবাইল-টার জন্য খারাপ লাগলে আমি আপত্তি করবোনা।
ধন্যবাদ, পাকনা!!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
নতুন মন্তব্য করুন