টার্কী পাখীর খামার কাহিনী
বিয়ের পর থেকে যখনই রোমানিয়া বেড়াতে যেতাম, দেখতাম আত্মীয় স্বজন জামাই দর্শনে এসে বিশাল সাইজের আস্ত টার্কী উপহার দিত আমাকে। সাথে নাম নেয়া যায় না এমন সব পানীয়। অবাক হয়ে যেতাম প্রথম! যে বিশাল সাইজের মুরগী.. একেকটা ৭/৮ কেজি, কখনো তারও বেশী।
পরে ওদের গ্রামের বাড়ী বেড়াতে গিয়ে বিস্ময় আরও বৃদ্ধি পেল। আস্ত জীবন্ত মুরগীর মত টার্কী উঠোনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মারিনা স্থানীয় নামে পরিচিত করে দিত, “কুরকান”! প্রতি বছর ওর দাদা, নানা বাড়ী বেড়াতে গেলে বুড়ো বুড়িরা টার্কীর ঘর থেকে সবচেয়ে বড় টার্কীটা ধরে এনে আমাকে দেখাত। বলতো তোমার জন্য সারা বছর এটা পেলেছি, ভালো ভালো খাইয়েছি। খাওয়ার মধ্যে ওরা খায় শুধু ঘাস। উঠোনের আশে পাশে বেশী ঘাস না থাকলে মাঝে মাঝে দূরে মাঠ থেকে ঘাস, লতা-পাতা কেটে এনে দিলে সাথে সাথে খেয়ে ফেলে। কী ভাল ওরা! যেন বিশাল একেকটা দেশী মুরগী, অথচ খাদ্যের অভ্যাসে একেবারে ভেড়া। খেতে ভীষণ মজা হতো। আস্ত রোষ্ট করে টেবিলে ফেলা হতো আমার সামনে, আমি অনভ্যস্থ হাতে দু-এক টুকরা কেটে প্লেটে নিতাম। কায়দা করে আবার নানী শাশুড়ীকে আগে দিতাম, তারপর শাশুড়ীকে, তারপর বৌ'কে। মুরুব্বীরা ফিস ফিস করে বলতেন, দেখেছ? জামাই এর ভদ্রতা? বেশীর ভাগ রোমানিয়ান ভাষা না বুঝলেও প্রশংসা সূচক কোন কথা বলার আগেই বুঝে ফেলতাম।
উফ! কি বলতে কি কথা বলে ফেলছি। যা বলছিলাম, সেই টার্কীর মাংস খেতে খুবি সু-স্বাদু। টার্কীর স্যুপ, টার্কীর রোষ্ট, টার্কী ফ্রাই, টার্কী গ্রীলড; সাথে রসুনের সস মাখিয়ে। পরে অবশ্য রসুনের কটু গন্ধ দূর করতে তিনবার পর পর দাঁত ব্রাশ করতে হতো। তা 'না হলে বৌ এর কাছে.....
আবার অন্য কথা!! কি যে হয় মাঝে মাঝে আমার!
সেই সু-স্বাদু টার্কীর মাংস খেয়ে কৌতুহল বেড়ে গেল। উঠোনের পাশে টার্কীর ঘর দেখতে গেলাম। ছোট খাট বেড়ার ঘর। উপরে ও জাল দিয়ে আটকানো। মারিনা বলতো, রাতের বেলায় নেকড়ে বা ভাল্লুক এ গুলোর আক্রমন থেকে রক্ষা করার জন্য। কাছেই পাহাড় আর ঘন বন-জঙ্গল, ওখানে নেকড়ে গুলো বেশী ক্ষুধার্ত হলে রাতে হামলা দেয় কখনো। ভেতরে ১৫/২০ টা টার্কী অনায়াসে চড়ে বেড়াচ্ছে। দেখতে ভালোই। পেখমগুলো আরেকটু রঙচঙে হলে ময়ুরের কাছাকাছি চলে যেত সৌন্দর্য্যে। কেবল মাত্র ঘাস, লতা-পাতা খাইয়ে এক বছরে ৬-৭ কেজি! বাহ! এ জিনিস তো বাংলাদেশের নেয়া দরকার! সাথে সাথে আমার চাষ-বাসের মনটা নেচে উঠলো। এক লহমায় অংক কষে বের করে ফেললাম আমার কুয়াকাটার ফার্মে অজস্র ঘাসের বনে টার্কী পেলে কি করে বছর ঘুরে লাখ লাখ টাকা কামানো যায়। কিন্তু এত টার্কী পাব কোথায়? বাংলাদেশে তো টার্কী নেই!
আমার মন খারাপ দেখে মারিনা কে দেখলাম মোবাইল হাতে ব্যস্ত হয়ে যেতে। দূর থেকে মারিনার ফোনে কথোপকথন শুনে আমার শাশুড়ী বিস্ময়ে আমার দিকে তাকালেন। মুখে মিষ্টি হাসির সাথে ১০% বিরক্তির মিশেল। সে যে কি জিনিস! না দেখলে বোঝা যাবে না। তবে একই হাসি আমার শ্বশুড়ের দিকে যখন দেন তখন রেশিও টা ঠিক উল্টে যায়। মিষ্টি তখন ১০% এবং বিরক্তি ৯০। মারিনার ফোনে কথা শুনে দূর থেকে শ্বশুড় মশাই দেখলাম প্রশ্রয়ের হাসি দিচ্ছেন।
বিকেলে ভাত ঘুম থেকে উঠে (অবশ্য ভাত এর বদলে রুটি মাংস-জল ঘুম বলা যায়-) আয়েশ করে উঠোনে বসে কফি বীন সেন্ধ করে তেতো স্বাদের কফি খাচ্ছি। দেখলাম বাড়ীর গেট খুলে মাঝ বয়সী এক সুন্দরী তরুনী ভিতরে আসচ্ছেন। হাতে চমতকার সাজানো একটা বাস্কেট। সুদৃশ্য কাপড়ের কভারে ঢাকা। ভদ্র মহিলাকে কখনো মনে হয় দেখিনি। স্থানীয় গ্রামের মনে হয় না। বেশ দামী শহুরে পোষাক; শার্ট , ট্রাউজার্স, হাতে সুন্দর সুন্দর আংটি, ঘড়ি। ভদ্র মহিলা আমার দিকে স্মিত হাসি মাখা মুখে কাছে এসে সামনের টেবিলে সুদৃশ্য বাস্কেট টা রাখলেন। তারপর চির চেনা ভংগিতে জড়িয়ে ধরলেন। বাহ, একে বারে মেঘ না চাইতেই জল! আমি জানি, প্রথম দেখায় বা অনেকদিন পর দেখা হলে সবাই নারী পুরুষ নির্বিশেষে এভাবেই কাউকে বরণ করে নেন। ভদ্র মহিলা যখন দু'গালে আলতো করে চুমু খাচ্ছিলেন আর রোমানিয়ান ভাষায় মিষ্টি মিষ্টি শব্দে সম্ভাষণ বলছিলেন আমি তখন তার রূপ রস গন্ধে মাতোয়ারা। মুখে মিলিয়ন ডলার হাসি ঝুলিয়ে বার বার 'মুলসুমেস্ক' বলছিলাম যার মানে হলো ধন্যবাদ।
হ্যালো মিয়ের্লা! দেখি পিছনে মারিনা রুম থেকে বেড়িয়ে এসে বারান্দা থেকে নেমে আসছে। মিয়ের্লা নামের ভদ্র মহিলাটি ওকে দেখে এগিয়ে গেল। দুজনে জড়িয়ে ধরলো, তারপর যথারীতি দুই গালে চুমু। মারিনা আমার কাছে নিয়ে এল তাকে। বলল মিয়ের্লা ওর নানী বাড়ীর প্রতিবেশিনী। দুটো গেট পরেই উল্টো দিকে ওদের বাড়ী। পরক্ষনে মারিনা খোচা মারা হাসি দিয়ে হাসতে হাসতে বললো তুমি মিয়ের্লাকে বার বার ধন্যবাদ দিচ্ছিলে কেন তখন? চুমু খেয়েছে যে সে জন্য?
-এ্যা। না মানে, কি বলতে হয় ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না কিনা...মারিনা দেখলাম তাকেও রোমানিয়ান ভাষায় মজা করে বলছে আমার বার বার ধন্যবাদ দেয়া নিয়ে। বুঝলাম মহিলার, যার নাম মিয়ের্লা, তার সৌন্দর্য্যে বিমোহিত হওয়ার ব্যাপারটা মারিনার কাছে কেচে ফেলেছি। আমি সব ফেলে টেবিলে রাখা বাস্কেটের দিকে চোখ দিলাম। এত সুন্দর করে সাজিয়ে কি এনেছেন? ঘরে বানানো সু-স্বাদু কেক? নাকি আস্ত টার্কী রোষ্ট?
ভদ্র মহিলা বাস্কেটের কভার তুলে পাশে রাখলেন। আমার বিমোহিত দুষ্টি তখন বিস্ময়ে বিস্ফোরিত। এ দেখি বিশাল বিশাল সাইজের অনেক গুলো ডিম। মুরগীর ডিমের প্রায় ৩ গুণ। হাসের ডিমের ডবল সাইজ। রাজ হাসের ডিম শুনে ছিলাম খুব বড় হয়। এ মনে হয় সেই জিনিস! মিয়ের্লা বাস্কেট টা দু হাতে তুলে আমার দিকে স্মিত হাসি সহ বাড়িয়ে দিল। আমি তো অবাক। মিষ্টি কণ্ঠে কি যেন বললো! ৫/৬ টা শব্দের ১টা সাথে সাথে কানে বাজলো-কুরকান। কুরকান? আই মিন টার্কী? মারিনা দুষ্টুমির হাসি দিয়ে আমাকে জানালো আমার জন্য মিয়ের্লাকে দিয়ে ও টার্কীর ডিম আনিয়েছে। যেন দেশে নিয়ে যেতে পারি। আমার ফার্মের জন্য। আমি খুশীতে আত্মহারা হয়ে গেলাম। বার বার বলতে লাগলাম মুলসুমেস্ক! মুলসুমেস্ক! মারিনা আমার পেটে কিঞ্চিত খোঁচা দিয়ে ফিস ফিস করে বললো, আহা! শিবলী! শুধু মুখে ধন্যবাদ দিলে হয়? গিভ হার এ হাগ! শুধু বলতে দেরী। সাথে সাথে ওকে জড়িয়ে ধরলাম।.....এন্ড এ কিস প্লিজ, মারিনা যোগ করলো।
ওয়ান অর টু? আমিও মজা করে জানতে চাইলাম!
“মুলত”- মির্য়েলা রিন রিনিয়ে হাসতে হাসতে বললো। অর্থাত অসংখ্য!
পরে মারিনা বিস্তারিত খুলে বলল। আমার টার্কী পালনের ইচ্ছের কথা শুনে মারিনা চিন্তা করে দেখেছে সবচেয়ে ভালো বুদ্ধি হচ্ছে এ দেশ থেকে টার্কীর ডিম সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়া। যদিও টার্কী মূল্যবান প্রাণী, এবং বছরে সামান্য কয়েকটা ডিম দেয়, তবুও মারিনার অনুরোধে (এবং আমার খাতিরে) প্রতিবেশী মিয়ের্লা তার টার্কীর খামার থেকে ১৫টি সদ্য পারা ডিম উপহার দিতে রাজী হয়েছে।
আমি খুশীতে আটখানা। মারিনার সাথে ডিটেইল প্ল্যান করলাম। ডিম গুলো খুউব সাবধানে, যতনে খাঁচায় নিয়ে যেতে হবে। ঢাকা থেকে সরাসরি কুয়াকাটা। ডিম ফুটানোর জন্য বুদ্ধি হল যে কোন একটা উমানে বসা মুরগী বা রাজহাঁস যোগাড় করতে হবে। রাজহাঁস হলে ভালো হয় কারণ ডিমগুলো ঐ হাঁসের ডিমের সাইজের সমান। তারপর এক মাসের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা হওয়ার আগেই ঘর তৈরি করে ফেলবো। এ বছর যদি ১৫টা ডিমে ১৫টাই ফোটে তাহলে এক বছরের মধ্যেই মেয়ে টার্কী গুলো আবার ডিম পারবে। ২/৩ বছরেই শতাধিক টার্কীর এক বড়-সর ফার্ম হয়ে যাবে। আচ্ছা, সাগরের নোনা হাওয়ার কোন অসুবিধা নেই তো?
-নো, এখানেও সি-সাইডের এলাকা গুলোয় প্রচুর টার্কী হয়, মারিনা জবাব দেয়, নো প্রবলেম!
-হোয়াট এ্যাবাউট ক্যারিং, আবার জানতে চাই।
-কেন? বাই হ্যান্ড?
-কিন্তু এক্সরে মেশিন এট দি এয়ার পোর্ট?
-তাই তো! এয়ারপোর্ট তো সব কিছু এক্স-রে করতে চাইবে! মারিনা নিজেও কনফিউজ্ড। আমি আশ্বাস দেই,
-কোন অসুবিধা নাই, আমি বুঝিয়ে বলবো। নিশ্চয়ই বিষয়টা জানার পরে কাস্টমস্ বা সিকিউরিটি কোন গ্যাঞ্জাম করবে না..
ধীরে ধীরে আমার দেশে ফেরার সময় হয়ে এল, কি একটা কাজে যেন মারিনা ফিরে আসার তারিখ চেঞ্জ করতে হল। বাধ্য হয়ে আমি একাই দেশে ফিরবো; অনেক কাজ পরে আছে। মিয়ের্লার বাড়ীতে একদিন দাওয়াত দিয়েছিল। দুই ছেলে তার। একটা আগের ঘরের, বছর আষ্টেক। আরোটা এই ঘরের, তিন বছরের ফুটফুটে বাচ্চা। প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর মারিনার নানীর গ্রামের বাড়ীর দুই বাড়ীর পাশের প্রতিবেশী ভদ্রলোক ইয়নের সাথে বিয়ে হয়েছে। আমি মুগ্ধ হয়ে ওদের সাজানো বাড়ী, সামনের সুন্দর বাগান, পিছনে টার্কী ফার্ম দেখলাম। আমার মুখের দিকে তাকিয়ে মারিনা ফিস ফিস করে বললো 'ডোন্ট ওরি.......উ'ইল হ্যাভ আওয়ার টার্কী ফার্ম সুন ইন কুয়াকাটা! চোখ বুজে দেখতে পেলাম নানান সাইজের টার্কী ঘুরে বেড়াচ্ছে আমার দীঘি গুলোর পাড়ে।
বুখারেস্ট এয়ার পোর্টে মারিনা সবিস্তারে বুঝিয়ে বললো এয়ার পোর্ট সিকিউরিটি এবং কাস্টমসকে। সব শুনে অট্ট হাসির রোল পড়ল ইউনিফর্ম ধারীদের মধ্যে। টার্কীর ডিম নিয়ে যাচ্ছি দেশে ফুটানোর জন্য! বাহ! পিঠ চাপড়ে ছেড়ে দিল। এর পর ভিতরে চলে যাব। মারিনাকে সিনেমার নায়কের স্টাইলে বিদায় দিলাম।
লাগেজ চেক ইন করে হাতে করে মিয়ের্লার দেয়া সেই সুদৃশ্য ঝুড়িতে ডিমগুলো নিয়ে বয়ে বেড়াচ্ছি। সময় মত প্লেনের দরজার মুখে এসে দাঁড়ালাম। এখানে সিকিউরিটি ভীষণ কড়া, আটকে দিল, কি এটা? 'ঔ'- মারিনার শেখানো ডিমের রোমানিয়ান প্রতি শব্দটা বলছি। কি বলছো? দেখাও তো? এক্সরে মেশিনের দিকে নিয়ে যেতে চায়।
আমি হা হা করে উঠি! নানা, এক্স-রে মেশিনে দেয়া যাবে না। তাহলে ডিমের ভিতরের ভ্রুন মারা যাবে। প্লীজ! সিকিউরিটির লোকজন এক্সরে মেশিনের বেল্টে না দিয়ে প্রতিটি ডিম হাতে নিয়ে সাবধানে নেড়ে চেড়ে দেখলো। টর্চ মেরে আলোর বিপরীতে ভালো করে পরখ করে দেখলো ভেতরে জীবন্ত ভ্রুন নাকি ছদ্দ বেশী বোমা। মাত্র ৬ মাস আগে নাইন-ইলেভেনের ট্র্যাজেডি ঘটে গ্যাছে। নামের শুরুতে মোস্তফা থাকায় সবুজ পাসপোর্ট ধারীর প্রতি পৃথিবীর সব বিমান বন্দরেই তখন অতিরিক্ত খাতির! সবগুলো দেখে সন্তুষ্ট হয়ে যথা স্থানে ডিম গুলো রেখে দিয়ে হাসতে হাসতে বললো গুড লাক!
সবশেষে ঝুড়ি হাতে বিজয়ীর বেশে প্লেনের ভেতরে ঢুকে পড়লাম। টারোম এয়ার লাইন্সের ছোট রাশান অরিজিন প্লেন। যাবে বুখারেস্ট থেকে মস্কো। সেখানে ২ ঘন্টার হল্টেজের পর আরেক ফাইটে মস্কো থেকে দিল্লী। একটা ছোট্ট স্টপওভার নিয়ে একই প্লেনে এক লাফে ঢাকা। প্লেনের সীটে বেল্ট লাগিয়ে ঝুড়িটা পাশের সীটে রেখে, আয়েশ করে বসলাম। আগেই হ্যান্ড লাগেজ টা মাথার ওপরে যথাস্থানে রেখে দিয়েছি। ২ সীটের সারি, পাশের সীট খালী। প্লেনটা অর্ধেকই ফাঁকা। আমি ছাড়া বাদ বাকী সবাই সাদা চামড়ার। দশ-পনের জনের গায়ে আবার খেলোয়ার এর জার্সি, পিছনের একজন জার্সি পড়া যাত্রীকে কায়দা করে এ্যামেরিকান উচ্চারণে জিঞ্জেস করলাম কোথায় যাওয়া হচ্ছে? বেশ কাচুমাই কন্ঠে ভেঙ্গে চুড়ে ইংরেজীতে জানালো এরা রোমানিয়ার ন্যাশনাল হ্যান্ডবল টীম, মস্কো যাচ্ছে কি এক টুনামেন্টে খেলতে। বলে কি? চোখ কপালে উঠলো আমার! রোমানিয়ান ন্যাশনাল হ্যান্ডবল টীম তো বিশাল ব্যাপার, আমি সম্ভ্রসের হাসি দিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে হাতের ফেলুদা অমনিবাসে মনোনিবাস করলাম।
এয়ার হোষ্টেস কিছুণ পরে হট টাওয়েল দিতে এসে আমার পাশের খালি সীটে বসানো বড়সর ঝুড়িটা দেখে মিষ্টি হাসি মেখে ওটা নামিয়ে পায়ের কাছে রাখতে অনুরোধ করলো! ঠিক আছে, ঠিক আছে বলে সুবোধ বালকের মত ঝুড়িটা সাবধানে দু'পায়ের মাঝখানে রাখলাম। এ-ও মন্দ নয়, ভাবলাম। প্লেনের সীটে চড়ে যাওয়া আর মেঝেতে বসে যাওয়া টার্কীর ডিম গুলোর জন্য একই ব্যাপার, তবুও ভালো এখন পর্যন্ত কোন অজুহাতে ডিম গুলো নিতে বাঁধা দেয়া হয় নি।
বই পড়তে পড়তে টের পেলাম প্লেন টা মৃদূ ঝাকুনী দিয়ে পেছনে সরে এল। ট্যাক্সি করে ধীরে ধীরে রানওয়েতে ঢুকলো। খালি রানওয়ে, কোন প্লেনজট নেই। অল্পের মধ্যেই ফাইনাল রানের জায়গায় এসে গেল, কিছুক্ষণ ঝিম মেরে দাঁড়িয়ে থেকে এবার একটা ঝেড়ে দৌড় লাগালো। এ সময়টা আমি বরাবর খুব এনজয় করি। বেশীর ভাগ যাত্রীই এ সময় চোখ বুজে প্রার্থনা করেন। সমবেত সবার মত আমিও প্রার্থনায় অংশ নেই। নিজের ষ্টাইলে, চোখ খুলে। কখনো জালনা দিয়ে বাইরে নিমঞ্জমান পৃথিবী দেখি, কখনো চারপাশে যাত্রীদের প্রার্থনার ভংগী খেয়াল করি। প্লেনের নাকটা বেশ খাড়া হয়ে আকাশের বুক চিড়ে এক টানা মেঘেদের রাজ্যের দিকে উড়তে থাকে। এখন ও অনেকণ প্লেনটা নাক উচিয়ে উচুতে উঠতে থাকবে। আপাত: নীরব প্লেনের অভ্যন্তরে যাত্রীরা যখন প্রার্থনায় রত তখন হঠাত করে পেছনের এক হ্যান্ডবল প্লেয়ার নীরবতা ভেংগে অস্ফুট স্বরে কি যেন বলে উঠলো। সাথে সাথে তার ঐ কথাটা প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো পেছনের আরও কজন যাত্রীদের মুখে। ভালো করে কান খাড়া করে শুনতে গিয়ে মনে হল পেছনের সীটের সবাই ঔ ঔ ঔ করে আওয়াজ করছে। আরও পেছনে কেমন যেন হাসির কলরোল শুরু হয়েছে। ঘাড় ফিরিয়ে তাকিয়ে তো আমার চোখ চড়ক গাছ। ওহ মাইগড! পিছনের বেশ ক'জন যাত্রীরা হাত উচু করে ধরে আছে আর ঔ ঔ করে আওয়াজ করছে। আর হাতের মধ্যে আর কিছু নয়, বিশাল সাইজের একেকটা ডিম। ডিম দেখে সাথে সাথে বুকের পাঁচ ছয়টা হার্ট বীট মিস করলাম।
এক ঝটকায় সীট থেকে ছুটে বেড়িয়ে যেতে চাইলাম, বাঁধা পেয়ে টের পেলাম শক্ত করে সীট বেল্ট দিয়ে শরীরটা সীটের সাথে বাঁধা। ঐ অবস্থায় শরীরটা পুরোপুরি ঘুড়িয়ে ব্যাক সীটের উপর শরীরটা ঝুকিয়ে সবার দিকে ফিরে বললাম মাই এগস! মাই এগস! প্লীজ! প্লীজ!! মনে পড়লো 'ঔ' বলে যে চেচাচ্ছিল সবাই। সে 'ঔ' মানে ডিম। হায় আল্লাহ সবার হাতে হাতে আমার ডিম কিভাবে গেল? সীটের নীচে তাকিয়ে দেখি সযতনে রক্ষিত ঝুড়িটা কাত হয়ে পড়ে আছে। প্লেন উড়াল দেখার সময় আমরা সীটে বসে যখন সবাই বসা অবস্থায় উল্টে যাচ্ছিলাম, তখন পায়ের কাছে রাখা ঝুড়িটা পাল্টি খেয়ে সবগুলো ডিম রিলিজ করে দিয়েছে, আর ডিমগুলো গড়াতে গড়াতে প্লেনের পিছনের দিকে বসা যাত্রীদের পায়ের কাছে চলে গিয়েছে। প্রার্থনারত যাত্রী, যাদের বেশীর ভাগই খেলোয়ার, টের পেয়ে একে একে ক্যাচ ধরে ডিমগুলো হাতে নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করছে।
আমার অস্থিরতা দেখে প্লেনের এয়ার হোষ্টেস ছুটে এল। অস্থির হয়ে বললাম আমার ডিমগুলো ঝুড়ি থেকে ছুটে গিয়ে মেঝেতে গড়াতে গড়াতে পিছনে চলে গিয়েছে। ডিম নিয়েছ কেন প্লেনে? কিঞ্চিত উষ্ণা। জোড়ে জোড়ে চেচিয়ে সবাইকে বল্লাম, দেশে নিচ্ছিলাম ডিম ফুটাতে। যারা বুঝলো সবাই হেসে উঠলো। বাকীদের বোঝানোর পর প্লেনে রীতিমত হাসির রোল পড়ে গেল। হাতে হাতে ডিম ট্রান্সফার হয়ে সামনে আসতে লাগলো। এয়ার হোষ্টেস নিজেও ২/৩ টা পথের মাঝে কুড়িয়ে নিয়ে এল। একে একে সবেধন নীলমনি ১৫টি ডিমের প্রতিটিই ইনট্যাক্ট অবস্থায় ঝুড়িতে ফিরে এল। টোকা দিয়ে দেখলাম, বেশ শক্ত, এই জন্যই ভাংগেনি। অবশ্য প্লেনের নরম কার্পেটে গড়াগড়ি খেলে ভাংগার সম্ভাবনা এমনিতেই ছিল না। সবকিছু গুছিয়ে ঝুড়িটা এবার পাশের সীটে বসিয়ে কায়দা করে সীট বেল্টের সাথে বেঁধে নিলাম।
পথে আর কোন অসুবিধা হয় নি। মস্কোতে প্লেন থেকে নামার সময় সবাই কৌতুহল নিয়ে আমার দিকে তাকাচ্ছিল । আমি ভাব দেখালাম যেন বড় সড় এক বিজ্ঞানী আমি, ডিম নিয়ে গবেষণা করি।
মস্কো থেকে প্লেনে দিল্লী আসার সময়ও প্লেনের মুখে সিকিউরিটিকে বুঝানোর পর ছেড়ে দিল। ভাবলো বুখারেস্ট এয়ারপোর্টে যখন ছেড়ে দিয়েছে, এখানেও ছাড়া যায়। গন্ডগোল করলো দিল্লী এয়ার পোর্ট। ট্রানজিট লাউঞ্জে ঢুকে ২ ঘন্টা বসার পর যখন আবার প্লেনে চড়ছিলাম তখন মাঝ বয়সী সিকিউরিটির ইউনিফর্ম পড়া হাবিলদার পান খাওয়া দাঁত দেখিয়ে বললো “ইয়ে ক্যায়া হ্যায়?” আমি ঢং করে ইংরেজীতে ২/১ টা গুরু গম্ভির শব্দে কি এক জবাব দিলাম। যেহেতু বিদেশ থেকে আগত ট্রানজিট লাউঞ্জের যাত্রী, তাই তিনি বিষন্ন মুখে ছেড়ে দিলেন।
ঢাকায় নেমে আর দ্বিতীয় বার ফিরে তাকাই নি। লাগেজটা ট্রলিতে ফেলে ঝুড়িটা হাতে ঝুলাতে ঝুলাতে গ্রীন চ্যানেল দিয়ে বেড়িয়ে এলাম। বাইরে এসে ইয়াহু! বলে আনন্দে লাফিয়ে উঠলাম। ঝটপট পোটিকোতে এসে দেখি ড্রাইভার অপেক্ষায়। হাতের ঝুড়িটা নেয়ার জন্য হাত বাড়াতেই সাবধানে পিছিয়ে গেলাম। উহু এটা নিজেই রাখবো! ওর পাশে বসে সাবধানে ঝুড়িটা কোলের উপর রাখলোম। ড্রাইভার কৌতুহল নিয়ে তাকাচ্ছে বার বার। আনমনে ঝুড়িটার কভার সরালাম। দেখলাম গাড়ীর স্পীড কমে যাচ্ছে, আর ও বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে আমার ঝুড়ির ডিমের দিকে। মুচকি হেসে বল্লাম কি হোল? গাড়ী চালাও!
-স্যার, ডিম?
-হুম.......
-রাজ হাঁসের?
মুচকি হেসে দুষ্টুমী করে বললাম-'ময়ুরের'। ভাবলাম টার্কী তো চিনবে না..
-ময়ুরের!! আনন্দে বিস্ময়ে চিতকার করে উঠলো হারুন।
আমি মুচকি হেসে গাড়ী টানতে বললাম। ৫ মিনিটের মধ্যে উত্তরার বাসায় গাড়ী চলে এল। ঝুড়িটা সাবধানে নামিয়ে বাড়ীর নীচতলায় আমার মিনি অফিসের টেবিলে রাখলাম। দোতলায় আব্বা! আব্বার কাছে চলে এলাম। মনটা নরম হয়ে গেল। আহা কতদিন দেখি নাই আব্বাকে। প্রায় ২০-২৫দিন। একা একা ছিলেন। বাসার কাজের লোকজন ভীড় করে এল আমাকে দেখতে।
আব্বা টিভি দেখছিলেন একা একা। আমার আসার শব্দ পেয়ে দোতলার সিঁড়ির কাছে এগিয়ে এসে ছিলেন। সালাম করে উঠে দাঁড়াতে নানান খবর নিতে লাগলেন। মারিনার খবর। ওর বাবা-মা'র খবর। অন্যান্যদের। কেমন যেন শুকনা শুকনা চেহারা। তার রুমে ঢুকে এটা-ওটা দেখে মনে হল বাসার লোকজন এতদিন মোটামুটি ভালই টেক কেয়ার করেছে।
আমি আরাম করে আব্বার মুখোমুখি একটা চেয়ারে বসলাম। আধ ঘন্টা এটা ওটা নিয়ে আড্ডা দিলাম।
মোবাইল বেজে উঠলো। স্ক্রীনে দীনার নাম। একটাই ছোট বোন। নিউ ইউও এইচ এস থেকে ফোন করেছে। ও খুটিয়ে খুটিয়ে রোমানিয়ার সবার খবর নিল। বছর দুয়েক আগের বিয়ে। নতুন জামাই এর আমেজ এখনোও আছে। সেটাই মজা করে দীনাকে বললাম।
খুব ক্লান্ত লাগছিল। বুয়া একজন এসে জানালো বাথরুমে গরম পানি দেয়া। আষাঢ় মাসে ও ঢাকায় বেশ গরম। তবুও গোসলের সময় হালকা 'কাল-ভাংগা' গরম পানি হলে ভালো হয়। তিন তলায় রুমে বেশ গরম। তাড়াতাড়ি গোসলে ঢুকলাম। দীর্ঘখন শরীরটা ভিজালাম শান্তি মত। শরীর মুছতে মুছতে বাইরে এসে পরিপাটি বিছানাটা দেখে মনটা টানলো বিছানার দিকে। ফ্রেশ পাজামা, ফতুয়া পরে বিছানায় ঝাপিয়ে পড়লাম। দীর্ঘ ভ্রমনের কান্তিতে এক মূহুর্তে ব্ল্যাক আউট।
দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত টানা ৮ ঘন্টা ঘুমালাম। কানের পাশে মশার উপদ্রপে অনিচ্ছা সত্বেও ঘুম ভেঙ্গে গেল। ক্ষিধে পেয়েছে। বেল টিপতেই বড় বুয়া নীচ থেকে উঠে এসে দরজা খুলে দাঁড়ালো। বল্লাম ভাত দাও। মোবাইলের সাইলেন্স মোড চেঞ্জ করতে গিয়ে দেখলাম, মারিনার মেসেজ! হাউ আর ইউর এগস? কুড ইউ টেক দোজ হোম? তড়াক করে লাফিয়ে উঠলাম। দৌড়ে সিঁড়ির দিকে ছুটছি। নীচতলায় আমার অফিস রুমে রেখে ছিলাম ঝুড়িটা!
স্যার কই যান? বুয়ার গলায় বিস্ময়। ডিম! ডিম গুলো আনতে যাচ্ছি! বুয়া নির্ভয়ের হাসি দিয়ে বললো, চিন্তা নাই স্যার। এত গরমে ডিম গুলা নষ্ট হইব মনে কইরা আমি দুপুরেই ফ্রীজে তুইলা রাখছি!
-এ্যা!! করসো কি? ঐ ডিমগুলো তো বাচ্চা ফুটানোর জন্য আনছি! আমি হায় হায় করে আর্তনাদ করে উঠলাম।
ছুটে গিয়ে ফ্রীজ খুলে দেখি ফ্রীজের হিম শীতল কক্ষে ১৫টা ডিম বরফের মত ঠান্ডা হয়ে গ্যাছে।
নিভে গেল আমার টার্কী ফার্ম এর এত বড় আশার আলো।
অধিক শোকে মাঝে মাঝে আমার গান আসে। কুয়াকাটায় কোন এক প্রতিবেশী মহিলার শোনা বিলাপ মনে পড়ে গেল
ও.. ও.....আমার হাঁসের ছা-ওরে..
কাউয়ায় নেয় নাই, চিলে নেয় নাই,
নিছে মরার গুইলে রে
ও আমার হাঁসের ছাও রে!!
উত্তর ঘরের কোনা দিয়া, দণি ঘরের পীড়া দিয়া,
পিল পিলাইয়া গেছে রে,
ও আমার হাঁসের ছাও রে!!!
মন্তব্য
খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ছিলাম, এবং চমৎকার লেখা তাই পড়তে ভালোও লাগছিলো খুব, কিন্তু মাঝপথে আর সাসপেন্স রাখতে পারলাম না। বেয়ে বেয়ে নিচে নেমে দেখতেই হলো কী হলো টার্ক্যান্ডের পরিণতি। তার পর কি আর বাকিটা পড়া যায় ফেরৎ গিয়ে! দুঃখ পেলাম দুধের শিশুগুলির জন্য। মানে শিশুও তো বলা যাবে না। যাক বেশি বিশদে লিখবো না তাইলে স্পয়লার অ্যালার্ট লাগাতে হবে।
আরো লেখেন।
অনেক ধন্যবাদ ভাই।
ইশ!
আমার আবার টার্কী খেতে বেশ বাজে লাগে৷ কি স্টিফ!
----------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
জীবনে বহু-বহুবার রান্না করেছি টার্কি, একবারও স্টিফ মনে হয়নি তো!
আর খেতে মুর্গির মাংসের চেয়ে খারাপ, তা-ও বলতে পারছি না।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
সমস্ত কষ্ট গেল শেষ মেষ বিফলে।।
হ্যা ফার্মের মুরগীর নরম নরম মাংসের তুলনায় অনেক স্টীফ। তবুও আমার টার্কীর মাংসই বেশী ভালো লাগে।
যেমন লাগে ফার্মের মুরগীর চেয়ে দেশী মুরগীর মাংস।
টার্কি এম্নিতে আমারও প্রিয় মাংস কিছু না। তবে মহাজনে যেহেতু লাল মাংস বেশি খাওয়া ভালো না বলেছেন তাই টার্কি আনা হয় স্যান্ডুইচ-এর জন্য।
কিন্তু বার্গার বানাতে, বা স্রেফ কিমাকারি'র জন্য টার্কির গ্রাউন্ড মীট খুব সুস্বাদু, মুর্গীর চেয়ে বেটার লাগে আমার।
তীরবর্তী হইবার প্রাক্কালে তরণী তলাইয়া গেল জলে
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
আহারে! বিশাল লেখা হলেও একটানে পড়ে ফেলেছি। আন্দাজ করছিলাম কিছু একটা ঘটবে, তা শেষ মেষ বাড়িতে এসেই কান্ডটা ঘটল। বাড়িতে আসার পর ভেবেছিলাম বুয়া হয়তো পোচ বা সেদ্ধ করে ফেলতে পারে ফ্রিজে দিলে কি মরে যায়?
ফ্রীজে রাখলে ভ্রুন নষ্ট হয়ে যায়।
টার্কির মাংস খেতে খুব একটা ভালো লাগেনি একবারও। এখানকার মুরগির মতোই বিস্বাদ। মৌলভিবাজারের আদমপুরের জঙ্গলের বাংলোয় বসে মোমের আলোয় লালচে মোটা চাল দিয়ে বনমোরগের ঝোলের ধারেকাছে দুনিয়ার আর কিছু পৌঁছাতে পারলো না। আপনি কিছু বনমোরগের চাষ করেন না কেন? ওপরে নেট দিয়ে ঘিরে বেশ একটা গুয়ান্তানামো বানিয়ে শুরু করে দিন।
বন মোরগকে আটকালে সেই স্বাদ কি আর পাবেন? তবে নরমাল মুরগী ধরে ধরে বনে ছেড়ে দেয়া যায়............. ধীরে ধীরে সেই স্বাদের হয়ে যাবে হয়তো।
লেখাটা সুস্বাদু হয়েছে ।
ইশ্
...........................
Every Picture Tells a Story
আপনি কোন শিবলী? হায়দারের মাধ্যমে কি কখনো পরিচয় হয়েছিল আমাদের?
লেখা খুব উপাদেয় হয়েছে। একটানে পড়ে ফেললাম।
.......................................................................................
Simply joking around...
.......................................................................................
Simply joking around...
হায়দার আমার কুয়াকাটা ফার্মের ম্যানেজার ছিল। দিল্লী থেকে তবলায় মাস্টার্স করা। তার মুখে আনিস ভাইয়ের নাম শুনতাম খুব। আপনি কি সেই আনিস ভাই? কেমন আছেন? লেখাটা ভাল হয়েছে শুনে ভাল লাগছে। একটু উতসাহ দিয়েন:-)
কোন আনিস ভাইয়ের কথা হায়দার বলত সেটা হায়দার জানে। তবে আমিও আনিস। মেইল দিয়েন।
.......................................................................................
Simply joking around...
.......................................................................................
Simply joking around...
টার্কি ব্রেষ্ট দিয়ে বানানো বার্গার ছাড়া টার্কির আর সবকিছুই জঘন্য।
আহারে..
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
সমব্যাথী হওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
খুব ইচ্ছে ছিল, আপনি টার্কির খামার করবেন, আর আমি ওখান থেকে এনে টার্কির মাংস খাবো। দিলতো আপনাদের বুয়া সব বারটা বাজিয়ে।
তবে লেখাটা সুন্দর হয়েছে।
রোমানিয়ার জামাই আদর দেখি আমাদের মতোই।
আহারে টার্কি হলো না। হইলে খাইতে যাইতাম কোয়াকাটায়।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
আরে শিবলী, অনেকদিন পর লিখলেন দেখা যায়! এমিল কেমন আছে?
সিগ্ধা,
তুমি থেকে যখন আপনিতে চলে গ্যালে তখনই বুঝতে হয়.....আসলেই অনেক দিন হয়ে গ্যাছে। এমিল ভালো আছে। যাচ্ছি মে’র শেষ ভাগে। প্রমি কেমন আছে?
একবার হয়নি তো আবার চেষ্টা করলেন না কেন?
নিয়মিত লেখার অনুরোধ রইলো
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
ভাল্লাগলো
ও.. ও.....আমার হাঁসের ছা-ওরে..
কাউয়ায় নেয় নাই, চিলে নেয় নাই,
নিছে মরার গুইলে রে
ও আমার হাঁসের ছাও রে!!
উত্তর ঘরের কোনা দিয়া, দণি ঘরের পীড়া দিয়া,
পিল পিলাইয়া গেছে রে,
ও আমার হাঁসের ছাও রে!!!
শীবলি ভাইয়া খুব ভাল লাগলো...
keep it up
গানটা অন্য সময়ে শুনলে খুব হাসি আসতো। এখন আসছে না। আহারে আপনার সব পরিশ্রম জলে গেল!! ভাল কথা আবার রোমানিয়া গিয়ে টার্কির ডিম আনলেই তো পারেন, তাহলেই তো আপনার স্বপ্ন পুরন হয়!!
নতুন মন্তব্য করুন