ক: আপনার পলিটিক্সে এত আগ্রহ কেন? মেয়েদের মধ্যে তো পলিটিক্স নিয়ে এত আগ্রহ দেখা যায় না।
আমিঃ বলেন কি? কোন দেশের মেয়েদের কথা বলছেন? বাংলাদেশ নাকি আমেরিকার?
কঃ সব দেশের মেয়েদের কথাই। স্পেশালি বাংলাদেশের মেয়েদের কথা বলছি।
আমিঃ তাই নাকি? যে দেশে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী থেকে শুরু করে স্পীকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এমনকি কৃষি মন্ত্রীও মহিলা ...আর আপনি বলছেন রাজনীতি নিয়ে সেই বাংলাদেশের মেয়েদের আগ্রহ নাই?
কঃ আপনি তো যারা রাজনীতি করে তাদের কথা বলছেন। আমি বলছি আপনার মত রাজনীতিতে আগ্রহ নিয়ে যারা সময় নষ্ট করে তাদের কথা।
আমিঃ হুমম...তা যেই মেয়েরা রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামায় সময় নষ্ট করে না তারা কিভাবে সময় কাজে লাগায়?
কঃ সংসার দেখা শুনা করে, কিম্বা ধরেন সোসালাইজেশান করে। যাই বলেন মেয়েদের রাজনীতিতে আগ্রহ থাকলে সংসারে অশান্তি হয়।
আমিঃ বলেন কি? কোন মেয়ের রাজনীতি বিষয়ে আগ্রহ থাকায় তার সংসারে অশান্তি হল?
কঃ আমি পার্টিকুলার কোন মেয়ের কথা বলছি না ... ইনজেনেরাল আরকি।
আমিঃ ও। বুঝলাম। কিন্তু আপনার মতে তো গুটি কয়েক মেয়ের রাজনীতিতে আগ্রহ, সে ক্ষেত্রে তো বাকি দের তাহলে সুখের সংসার হওয়ার কথা। তাকি হয়? আপনিই সেদিন বলছিলেন যে আপনার স্ত্রীর সাথে কথা বলার টপিক পান না কারন সে শাড়ি গয়না আর অন্যের সাথে নিজের অবস্থার তুলনা ছাড়া আর কিছু নিয়ে আগ্রহ দেখায় না। আর এইগুলার প্রতি আপনার স্ত্রীর ফ্যাসিনেশানের কারনে নানান অশান্তি সংসারে।
কঃ আপনি তো পার্সোনাল লেভেলে চলে গেলেন।
আমিঃ কি মুশকিল !! আপনিই তো আমার পার্সোনাল পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে কথা শুরু করলেন। আমি কি আপনাকে একবারও জিজ্ঞাসা করেছি আপনার পছন্দের টপিক কি?
কঃ তা অবশ্য করেন নি। কিন্তু আসলে কি জানেন বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে চিন্তা করার কোন মানে হয় না। এক্কেবারে পোঁচে গিয়েছে। একে আর টেনে তোলা যাবে না।
আমিঃ কিন্তু আপনি তো দেখি বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে বেশ চিন্তিত...সারাক্ষন আপনার বাসায় বাংলাদেশী টিভি চ্যানেলের খবর চলে, টক শো চলে। আপনাকে তো সেদিনও শুনলাম জামাতে ইসলামের রাজনীতি বাতিল বিষয়ে খুব কথাবার্তা বলতে। কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আর ফায়দা হাসিলের জন্যে হাসিনা সরকার কি কি করছে তার আলোচনা করতে। আমিও আপনাদের চিন্তা ভাবনায় যোগ দিলে ক্ষতি কি?
কঃ কি যে বলেন!!! আমি তো রাজনীতি বিষয়ে কথা বলি না। ইদানীং যে ধার্মিক লোকদের রাজনীতির বলি করা হচ্ছে সেই টা নিয়ে কথা বলি। এই যে সাইদী সাহেব, নিজামী সাহেব ...এত বড় বুজুর্গ লোক, সম্মানিত সংসদ সদস্য, তাদেরকে নিয়ে কি টানাটানি করতেসে হাসিনা সরকার এই সব নিয়ে কথা বলি।
আমিঃ তা সাঈদী-নিজামীরা কি রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন না? নাকি তারা এমনি এমনি সংসদে চলে গেলেন।
কঃ উনারা তো ইসলাম বাঁচানোর জন্যে রাজনীতি করেন, সংসদ সদস্য হয়েছেন। নিজের সবার্থে না।
আমিঃ তাই নাকি !!! আমেরিকায় তো সাঈদী-নিজামীরা বা তাদের মত কেউ নাই সংসদে ... তাতে কি আপনার এখানে ধর্ম পালনে অসুবিধা হচ্ছে?
কঃ আপনি তো পুরাই রাজনীতির কথা শুরু করলেন।
আমিঃ আমি কই রাজনীতির কথা বললাম? আমি তো বলছি ধর্মের কথা। রাজনীতিতে ধর্ম না থাকলেও যে ধর্ম পালনে অসুবিধা হয় না সেই কথা।
কঃ আপনি তার মানে ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতির বিরুদ্ধে। দেখলেন তো আপনার রাজনৈতিক মতাদর্শ বের হয়ে গেল কেমন? লেফটিস্ট রা রাজনীতি করতে পারলে রাইটিস্ট রা পারবে না কেন?
আমিঃ আমি আমার মতামত কখন লুকাতে চাইলাম এটা কি বলবেন? আপনিই তো নানান বাহানায় বলার চেষ্টা করলেন যে আপনি রাজনীতি নিয়ে চিন্তাই করেন না কিন্তু এখন আবার সাঈদী-নিজামীর রাজনীতির পক্ষে সাফাই গাইছেন।
কঃ (একটু রাগত স্বরে) ... আপনাদের মত মানুষদের আস্কারা পেয়েই তো আজকে বাংলাদেশ থেকে ধর্ম উঠে যাচ্ছে...দুই দিন পর দেখবেন বাংলাদেশের মসজিদে আযানও হবে না।
আমিঃ আযান না হলে আপনার কি নামাজে ক্ষতি হবে? আযান শুনে নামাজ পড়ার এত ইচ্ছা থাকলে তো বাংলাদেশেই থাকতেন। আমেরিকাতে এসে গত বিশ বছরে তো আযানের শব্দ কানে ঢোকেনি আপনার ............
কঃ কি বলতে চাচ্ছেন আপনি? আপনি বাংলাদেশে আযান বন্ধের পক্ষ পাতি?
আমিঃ জিনা বাংলাদেশে আযান বন্ধের পক্ষপাতি না। কিন্তু আমেরিকাতে যে আযান হয় না আর তারপরও আপনারা কিভাবে এত সুন্দর ধর্ম পালন করেন সেইটা বোঝার চেস্টা করছি।
কঃ এইটাতে বুঝার কি আছে? এইখানে ধর্ম নিয়ে তো কেউ রাজনীতির গেইম খেলে না যে ধর্ম চলে যাবে।
আমিঃ তাইলে বাংলাদেশেও কি ধর্ম নিয়ে রাজনীতির গেইম বাদ দেয়া দরকার না যাতে ধর্ম টা ঠিক ভাবে পালন করতে পারে সবাই?
কঃ হা হা হা। আওয়ামী লাইনের এইসব কথার মানে আমরা বুঝি...এর মানে হল বিএনপি-জামাতের জোট ভাঙ্গার পাঁয়তারা...যেন সামনের ইলেকশানে বিএনপি জামাত জোট হারে। এইসব হল আওয়ামী-বাকশালীদের ভোটের রাজনীতির মারপ্যাঁচ।
আমি মুখে শুধু বললাম "বাহ বিএনপি-জামাত শুধু এবং শুধুমাত্র ভোটের জন্যই একসাথে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করবে আর এই ব্যাপারে কিছু বললে সেটা আওয়ামীলীগের ভোটের রাজনীতির দোষ? আপনার আসলে আমি কেন রাজনীতি নিয়ে আগ্রহী সেটাতে সমস্যা না... সমস্যা হল আমি কেন বিএনপি-জামাতের পক্ষে কথা বলি না সেইটা আসল সমস্যার জায়গা। সো আমি স্টপ গেলাম।"
মনে মনে হাসতে হাসতে ভাবলাম ... ল্যাঞ্জা ইস ভেরী ভেরী ডিফিকাল্ট টু হাইড।
মন্তব্য
ধন্যবাদ
কিছুদিন আগে বাসদের এক উচুমানের সেমিনার নেতার সাথে কথা হলো রাজনীতি নিয়ে,তার ভাষ্য এরকম আওয়ামিলীগ এর সাথে থাকা যাবে না,তাহলে দোষ গাড়ে এসে পড়বে।
আমি: আওয়ামিলীগ যদি ন্যায় কিছু চায় তাহলেও কি না?
নেতা:অবশ্যই না,কারন আওয়ামিলীগ ভালোর মাঝেও স্বার্থ খুজে।
আমি: আওয়ামিলীগ যদি যুদ্ধাপরাধীর বিচার চায় কিংবা করে তাহলেও কি না?
নেতা: উত্তর সেই আগেরটাই না।
আমি তাকে শেষ প্রশ্নটা করলাম তাহলে কার সাথে থাকবো ভাই?
নেতা: জনগনের সাথে থাকতে হবে?
আমি:জনগন কি বিষয় একটু বুঝিয়ে বলবেন?কারা আসলে জনগন?
নেতা:আপনিতো দেখছি কিছুই জানেন না,আমাদের সাথে থাকেন আমরাই সত্যিকারের জনগনের প্রতিনিধিত্ব করি।
আমি:হুম বুঝলাম সে কারনেই গত ৪২ বছর যুদ্ধাপরাধের বিচারটা শুরু হয়নি।
মাসুদ সজীব
জী...আমি এদের নাম দিয়েছি জনগন জীবী। এরা জনগণের নাম বেচে খায় কিন্তু জনগণের কাছে এদের দুইটা ভোট ও নাই।
গতানুগতিকই। আপনার অসীম ধৈর্য্য, এমন সব কথা বার্তা শোনার পরেও ঠান্ডা মাথায় যুক্তি দিয়া আলাপ চালায় যাওয়া ব্যাপক কষ্টের কাজ।
ধন্যবাদ
আলাপ-সালাপ ভালোই লাগলো।
আমরা যাই হই না কেন, সেটা বের হয়ে আসেই।
তবে, "আমেরিকাতে ধর্ম নিয়ে রাজনীতির গেইম হয়না" -এটা মনে হয় না ঠিক। এখানে রাজনীতিতে ধর্মের বেশ শক্তিশালী ভূমিকা আছে বলেই আমার মনে হয়েছে (হয়ত আমার অনুভূতি আরেকজনের সাথে নাও মিলতে পারে এবিষয়ে)।
টাইপো একটু বেশি বলেই মনে হল, ঠিক করে নিলে আরো চমৎকার লাগত।
শুভেচ্ছা
বাংলা টাইপ ভাল করে শিখতে পারি নি এখনও। আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি বাংলার মুরাদ টাকলা আখ্যা নয়া পাবার। দোয়া রাখবেন।
আপনাকেও শুভেচ্ছা।
কেউ যদি প্রকাশ্যে নিজামীর, গোলাম আযমের দালালী করে, জামাতের লাইনে কথাবার্তা বলেও বিন্দুমাত্র লজ্জাবোধ না করে, তাইলে 'আওয়ামী লাইনে' কথা বললে অসুবিধা কী? একজন বাংলাদেশী হিসেবে 'আওয়ামী লাইনে' কথা না বলাটাই তো বরং চরম লজ্জার ব্যাপার হওয়ার কথা।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঈহুদী নাসারাগো দেশে থাইকা আপ্নে নাস্তিক হইয়া গেছেন। তাগোরে চান্দে চুন্দে দেখা যায়, আপ্নের আমিলিগের কাউরে চান্দে চুন্দে দেখা গেছে কোনদিন?
-----------------------------------------------------------
আঁখি মেলে তোমার আলো, প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
ঐ আলোতে নয়ন রেখে মুদবো নয়ন শেষে
-----------------------------------------------------------
হা হা হা
@ধূসর গোধূলীঃ আওয়ামীলীগ সমর্থক দের মনে জোড়ের অভাব ... চাপায় কথার অভাব .... বুকে সাহসের অভাব ... কিন্তু দেশের জন্যে ভালবাসায় এখনও অভাব হয় নাই। এইটা দিয়ে যদি বাকি তিনটা জয় করতে পারে।
দেশের জন্যে ভালবাসায় এখনও অভাব হয় নাই - এটা আওয়ামী সমর্থক হোক বা না হোক, সাধারণ মানুষদের ক্ষেত্রে সত্যি।
____________________________
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ধন্যবাদ
ল্যাঞ্জা ইস ভেরী ভেরী ডিফিকাল্ট টু হাইড - আর এই শালাদের (মাফ করবেন) ল্যাঞ্জাতে দড়ি বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা উচিৎ।
____________________________
আপনার অনেক ধৈর্য্য!!!! কথপোকথন শেষ করার আগে জিজ্ঞেস করতেন যে উনার কান চুলকালে নিজের লেজ দিয়েই চুলকায় নাকি? ল্যাঞ্জা তো বেশ বড়-ই।
ধন্যবাদ। ল্যাঞ্জার আসলেও বেশ বড়।
আমেরিকাতেও ধর্মের ব্যবহার আছে এবং ঐতিহাসিকভাবে সেটা তাদের রাজনীতির উপর দারুনভাবে প্রভাব রেখে এসেছে। থমাস জেফারসনকেও ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে অনেক কথা শুনতে হয়েছে। অনেকে বলত তিনি নাকি নাস্তিক। তাই তাকে প্রেসিডেন্ট পদে মানাবেনা। জদিও পড়ে তিনি যুক্তরাস্ট্রের ৩য় প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন।
এছাড়া প্রায়ই অনেক জনপ্রিয় এবং বিখ্যাত ব্যাক্তিরা তাদের বক্তৃতায় বাইবেল থেকে উদ্ধ্রীতি দিয়েছে। যেমন লিঙ্কন, মার্টিন লুথার কিং এবং আরো অনেকে। কেনেডি যখন প্রেসিডেন্ট হন তখন অনেকে মনে করতেন ক্ষমতা চার্চের হাতে চলে যাবে। তিনি সে দেশের ইতিহাসে একমাত্র ক্যাথলিক প্রেসিডেন্ট। এমনকি বারাক ওবামাও যখন প্রেসিডেন্ট হয় তখনও তার ধর্ম নিয়ে অনেক কথা হয়।
আপনি ঠিক বলেছেন। কিন্তু ওই দিন আর প্রসঙ্গ অন্যদিকে নিতে ইচ্ছা করে নাই এইজন্যে আম্রিকা কে ছাড় দিয়েছি।
ধুগো-দাদা এইং সাদী-ভাইয়ের সাথে সহমত।
আপনার ধৈর্য্য আছে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
গদাম আসলে তিনটা দরকার ছিলো-
১।
নিজের দেশের রাজনীতিতে আগ্রহ থাকলে সময় নষ্ট করা হয়-এইটা একটা হারামি চিন্তা।
২।
এহ,কতবড় নারী বিশেষজ্ঞ,সমাজবিজ্ঞানী-জেন্ডার এক্সপার্ট রে !!সবাত্তে বেশি বোঝে!!
৩।
এখানে আসলে ল্যাঞ্জা লুকানোর কোনো চেষ্টাই নেই,সব বোঝা যাচ্ছে।কেপি টেস্ট রেজাল্ট-পজিটিভ।এই ভাইয়ের উদাসদার কীভাবে ত্যানা প্যাঁচাবেন কোর্সটা করা উচিত।নইলে খালি ধরা পড়ে যাবেন।
-রিয়াজ
আপনি এক্কেবারে ঠিক ধরেছেন। পরে জেনেছি ওই ভদ্রলোক ২০০% জামাতি ... কিন্তু যখনকার আলাপচারিতা এটা তখন জানতাম না।
বিশাল ধৈর্য্য দেখালি আমারতো এত ধৈর্য্য নাই তার উপ্রে এতক্ষন ধরে মাথা ঠাণ্ডা রাখাই বিরাট মুশকিল। এর মধ্যি আরও অসহ্য লাগে যখন একটু চেপে ধরার পরে বলে জানেন আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আছিল
নতুন মন্তব্য করুন