শুরুটা কোথায় জানি না। হয়তো ছেলেবেলায় নারিকেল পাতা দিয়ে বানানো পাখা নিয়ে ছুটে বেড়ানোর সময় শুরু। বা তখন হয়তো না, খুব শীতের রাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে চোখে জ্বালা ধরিয়ে ফেলার সময় থেকেই শুরু। বা হয়তো আরেকটু বড় হয়ে প্রথম যখন সিগারেটে টান দিতে শিখলাম তখন থেকে। বা হয়তো ধূসর পান্ডুলিপি পড়লাম যখন, তখন থেকে। কে জানে? আবার জানার এমন কোন বাধ্যবাধকতাও অবশ্য নেই, এতো জেনে হবেটাই বা কী?
সিরাত ভাইয়ের পোস্টটা দেখে আবার চিন্তাগুলো চাগিয়ে উঠলো। মাঝেই মাঝেই এরকম চিন্তা অবশ্য হয়, আবার ভুলে যাই রোজকার বেঁচে থাকার বিড়ম্বনায়। তারপর আবার একসময় মনে হয়, কী হবে যদি আমি না থাকি?
কিছুই হবে না। খুব কাছের মানুষ যারা তারা কষ্ট পাবেন কিছু দিন, ফোকলা দাঁতের মত আমার শূণ্য রেখে যাওয়া স্থানের আশেপাশেই ঘুরঘুর করবে তাদের মন। আর সময়ের নিয়মে ঐ শুণ্যতাই হয়ে যাবে স্বাভাবিক, আর নজর পড়বে না কারো ঐ দিকে। আর বাদবাকি যা কিছু আছে তার সবই চলবে সহজ-স্বাভাবিক। এইসব ভাবতে ভাবতে কখনো মৃত্যুকেই মনে হয় সবচেয়ে ধ্রুব, ভালোবাসা-মায়া-মমতা-বন্ধনের চেয়েও। মনে পড়ে -
মৃত্যুরেও তবে তারা হয়তো ফেলিবে বেসে ভালো
সব সাধ জেনেছে যে সেও চায় এই নিশ্চয়তা
সকল মাটির গন্ধ আর সব নক্ষত্রের আলো
যে পেয়েছে - সকল মানুষ আর দেবতার কথা
যে জেনেছে - আর এক ক্ষুধা তবু - এক বিহ্বলতা
তাহারও জানিতে হয়। এইমতো অন্ধকারে এসে -
জেগে জেগে যা জেনেছ - জেনেছ তা - জেনে জেগেছ তা
নতুন জানিবে কিছু হয়তো বা ঘুমের চোখে সে।
সব ভালোবাসা যার বোঝা হল - দেখুক সে মৃত্যু ভালোবেসে।
ঠিকই তো, শেষে তো ওখানটাতেই যেতে হবে। শেষ আকাঙ্খা, শেষ গন্তব্য তো ওটাই। তবু মানবজন্মটা এত মধুর কেন যে মনে হয়!
সময় নীরব। এই পুরা মহাবিশ্বটাই নীরব। শুধু আমরা মানুষরাই কিচিরমিচির করে সব মুখর করে রেখেছি। মাঝে মাঝে ভাবি, মরার পর সবচেয়ে বেশি কী মিস করব (যদি মিস করার অবস্থা থাকে তবেই আর কি), তখন মনে হয়, এই অনর্ধক কিচিরমিচিরগুলাই সম্ভবত।
বয়সের গাছ-পাথর নেই। পুটুস পুটুস বেড়েই যাচ্ছে। আর মনের ভিতরের বিষণ্নতাটাও বাড়ছে দিনে দিনে। অথচ, কোন সঙ্গত কারণ নেই এমন হবার। তবু হচ্ছে। মাঝে মাঝে গভীর রাতে সিগারেট ধরায়ে ভাবতে বসি, ও হে বৎস্য, খাইয়া দাইয়া তো আর কোন কাম নাই দুঃখবিলাস করতে বসছ। ঘাতুম করে যেদিন সত্য সত্য মরিয়া যাইবে সেদিন বুঝবা হাউ মেনি প্যাডি আর কে কার ড্যাডি।
ধর্মে আমার বিশ্বাস আছে, কাজেই ভাবি একদিন বেহেশতে গিয়ে আয়েশ করব। কিন্তু যখন ভাবি কী আয়েশ করব, তখন মনে হয় এই জীবনটাই বা মন্দ কী? প্রভুর কাছে তখন নাহলে আরেকবার এই দুনিয়াতে আসার একটা আবেদন ঠুকে দেব। সত্যি সত্যি সম্ভব না হলে নিদেন পক্ষে একটা সিমুলেশন হলেও চলবে। আর নিতান্তই সেটাও না-মওকুফ হলে আবার দুঃখবিলাস করতে বসে যাব, একটা লন্ডনি ৫৫৫ এর প্যাকেট আর ভাঙ্গাচোরা একটা বেন্চি খুঁজে নিয়ে।
*কবিতার যে অংশটুকু তুলেছি তাতে যতিচিহ্ন কিছুই ঠিক নেই, হাতের কাছে বইটা খুঁজে পাচ্ছি না, কাজেই ভুলগুলোর জন্য মাফ করে দিতে হবে।
মন্তব্য
আপনার বয়স কি খুব বেশি হয়ে গেল নাকি
আমাদের সবার কি মাঝে মাঝে দুঃখ নিয়ে বিলাস করতে ইচ্ছে করে? মনে হয় করে, নাইলে কেন শুধু শুধু মাঝে মাঝে মনে হয় কি হবে কাজ কাম করে। তখন দিন দুয়েক বসে বসে খালি ঝিমাই আর ঝিমাই। তবে বিলাসিতা টা চলে গেলেই মনে হয় আরে এত চিন্তার কি আছে, আজ মরলে কাল বাদে পরশু তিন দিন (কপিঃ ধূগোদা)
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
বয়স বেশি না হলেও নিশ্চিন্তে গা ভাসিয়ে দেয়ার বয়সটা পার করে এসেছি - তাই মাঝে মাঝে এসব চিন্তা জেগে ওঠে।
ঠিক বলেছেন, সবারই মনে হয় এমন হয়।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
আসলেই দুঃখবিলাস।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আসলেই।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
ধুর! আপনারা যদি এইরকম করেন, তাইলে আমি কই যামু!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
তীরুদা, আপনার ভবঘুরে জীবনের যে বৃত্তান্ত শুনেছি তাতে আপনার দুঃখ করার অবকাশ নাই কোন। আমরা ঘরকুনোব্যাঙ, তাই দুঃখ না করে পারি না।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
না ভুতুম দুঃখবিলাস না, এমন হয়, মাঝে মাঝে এমন হওয়া ভালো। তোমারে ফেসবুকে অ্যাড করতে চাই, যদি কিছু মনে না কর।
লেখাটা খুব ভালো হয়েছে।
ধন্যবাদ মামুন ভাই। আর আপ্নে অ্যাড করতে চাইছেন, বর্তে গেলাম। ঠিকানা আপনার মেইলে পাঠায়ে দিলাম, ক্লিক দিলেই অ্যাড হয়ে যাবো।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
কই পাইলাম না তো ভুতুম। অ্যাড্রেসে পাঠাও প্লিজ।
পাঠায়ে দিছি মামুন ভাই। দেখেন এইবার পাইছেন কীনা।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
- ভাই, টেনশন নিয়েন না। বিয়াশাদী করেন, লাইফের মজা টের পাইবেন। বিয়ার প্রথম কয়েকবছর বউ নাকে দড়ি দিয়া ঘুরাইবো, আর তার পরের ফি বছর একজন কইরা জুনিয়র যখন আপনের দাড়ি ধইরা ঝুলুঙ্কি খেলবো, তখন বুঝবেন, "এ জীবন কেনো এতো রং বদলায়!"- এই বাক্যের আসল মানে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধূগোদা, আপনার সিনটা কী কন তো দেহি - শ্যালিকা (অন্যের) প্রতি আপনার আসক্তি দেখিয়া অনুমান করি নিজের শ্যালিকা বা শ্যালিকার বোন এখনো হয় নাই, তইলে আপনি এইসব বউ এবং জুনিয়র বিষয়ক জটিলতার সন্ধান জানেন ক্যামনে???
ব্যাপারটা খুব সন্দেহজনক।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
আসলেই সন্দেহজনক।
ধুগোর গতিবিধির উপর নজর রাখা দরকার।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
হ! এই বিষয়ে ধূগোদার কী মন্তব্য?
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
লেখাটা ভালো হয়েছে।
আচ্ছা, আপনার নানার বাড়ি না মায়ানী?
_________________________________________________________
খাতার দিকে তাকিয়ে দেখি,এক পৃথিবী লিখবো বলে-একটা পাতাও শেষ করিনি।
_________________________________________________________
খাতার দিকে তাকিয়ে দেখি,এক পৃথিবী লিখবো বলে-একটা পাতাও শেষ করিনি। ( জয় গোস্মামী)
ধন্যবাদ।
হ্যাঁ, আমিই সেই অধম যার নানার বাড়ি মায়ানীতে।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
ভুতুমদা, মন উদাস করা একটা লেখা, তবে তার মধ্যেও যা দিলেন,
ধুগোদাও ঠিক বলেছেন, বিবাহ করে নেন, তারপরে বুঝবেন, কে কার ড্যাডি
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আপ্নেরে আমি আগেও বলছি, আবারও বলতেছি, আমি কোন দা-বটি-খুন্তি কিছুই না। শুধুই ভুতুম। আরেকবার ভুতুমদা বল্লে আমি আপনেরে সাইফ কোদাল/শাবল/খুরপি বলবো। পরে বল্বেন্না যে আগে বলি নাই!
আর আপ্নে মাশাল্লা যে চরম পোস্ট দিছিলেন ড্যাডি দিবসে, ড্যাডি হবার লোভ জেগে ওঠে মনে! ভাস্তিরে আমার তরফ দেখে এট্টা চক্লেট কিন্না দিয়েন।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
আরে দাদা, চেতেন কা, পেটে কি কিরমি হইছে নাকি? ঠিক আছে, ডাকুম নাহয় ভুতুম, আপনার লেখা পড়লেই আমার মাথা আউলায় যায়, কি করুম? ড্যাডি হইয়া যান, আমরা আছি আপনার পিছে
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আপনেরা আছেন খুব ভালো কথা, তবে মামিটারও তো থাকা দরকার ঠিকমতোন, এরপর ড্যাডি হমু নে ।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
(১৭)
মৃত্যুরেও তবে তারা হয়তো ফেলিবে বেসে ভালো!
সব সাধ জেনেছে যে সেও চায় এই নিশ্চয়তা!
সকল মাটির গন্ধ আর সব নক্ষত্রের আলো
যে পেয়েছে, - সকল মানুষ আর দেবতার কথা
যে জেনেছে, - আর এক ক্ষুধা তবু - এক বিহ্বলতা
তাহারও জানিতে হয়! এইমতো অন্ধকারে এসে! -
জেগে - জেগে যা জেনেছ, - জেনেছ তা - জেনে জেগেছ তা, -
নতুন জানিবে কিছু হয়তো বা ঘুমের চোখে সে!
সব ভালোবাসা যার বোঝা হল, - দেখুক সে মৃত্যু ভালোবেসে!
জীবন, ধূসর পাণ্ডুলিপি, অগ্রহায়ণ ১৩৪৩, ডিসেম্বর ১৯৩৬
(লক্ষ্য করুন, যতিচিহ্নগুলো কেমন অদ্ভূত আর ব্যাতিক্রমী ধারার)
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হ্যাঁ, মনে ছিলো যে অনেক ! এর ছড়াছড়ি আর অনেক - এর সমাহার ছিলো, লেখাটা পোস্ট দেয়ার পর বইটাও খুঁজে পেলাম (আজীবনের কাহিনী, দরকারের সময় পার হলে সব নাকের সামনে মিছিল করে বেড়ায়, আর দরকারের সময় গেরিলা হয়ে ডুব মারে)।
ধন্যবাদ এই শেয়ারটা করার জন্য। আমার এডিটিং ক্ষমতা থাকলে ঠিক করে দিতাম, কিন্তু নেই যখন, আপনার এই পোস্টটা দিয়ে বেশ কাজ চলে যাবে।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
ভালই।
ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
নতুন মন্তব্য করুন