ডাকটিকিট অথবা কয়েন সংগ্রহ করেননি ছোটবেলায় এমন কাউকে আদৌ মনে হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। অবশ্য আজকালকার জমানার কথা আলাদা, কম্পিউটার - কনসোল - টিভির ব্যাপক দৌরাত্বে এইসব হবিগুলো আস্তাকুঁড়েই নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। আগে এত কিছু ছিলো না বলেই মনে হয় ডাকটিকিট জমানো কী কয়েন সংগ্রহকেই ব্যাপক আকর্ষণীয় মনে হতো। অবশ্য সেটা ভেবে দুঃখ করেই বা লাভ কী - বিটিভিতে আলিফ লায়লা, সিন্দবাদ দেখতাম কত আগ্রহ নিয়ে; এছাড়া শুক্রবার সকালে গার্ল ফ্রম টুমরো দেখাতো, বৃহস্পতিবার রাতে থান্ডার ইন প্যারাডাইজ - সারা সপ্তাহ বসে থাকতাম তার জন্য। এখনো আলিফ লায়লা - সিন্দবাদের কতো ডায়ালগ আমার বন্ধুমহলে ইন-জোক হিসেবে রয়ে গেছে - খান্ডার তরুনীদের ডাকি মালিকা হামিরা, ব্যাপক কোন অ্যাচিভমেন্টের পরে জিঙ্গাল দেব আমি জিঙ্গাল দেব বলে সিগনেচার দাড়ি চুমরানো অথবা কাউকে পচানোর সময় চিবা মস্তকে হুলহুল বলে হাত দিয়ে ছোবল - এসব রয়ে গেছে ছোটবেলার ছেলেমানুষীর তলানি হিসেবে। এখনকার জেনারেশনেরও নিশ্চয়ই আছে এসব - আলিফ লায়লার বদলে হয়তো নানান অ্যানিমে থেকে ... তবু মনে হয় শৈশব যেমনটি হওয়া উচিত তেমনটা আর পাচ্ছে না কেউ ... বা হয়তো আমার কাছেই লাগছে শুধু, কে জানে।
যাই হোক, কোন কথা থেকে কোন কথায় চলে গেলাম। লিখতে বসেছিলাম ছোটবেলার নানান হবি নিয়ে। আমার আব্বুর ট্রেডিং এজেন্সি, সুতরাং নানান দেশ থেকে রং-বেরং এর টিকিট লাগানো চিঠি আসতো হাওয়াই ডাকে (ই-মেইল ছিলো না তখন, ভাগ্যিস)। মূলত ঐসব টিকিট দেখেই আমার শখ হয় টিকিট জমানোর। আব্বুকে বলা ছিলো, অফিসে বাইরে থেকে কোন চিঠি আসলেই সেই খামটা বাসায় নিয়ে আসার জন্য। এরপর বাসায় আসলে সেই খামের তলায় পানির গরম ভাপ দিতাম, ভাপে আঠা গলে টিকিট একটু আলগা হয়ে আসলে খুব সাবধানে একটা চিমটা ধরে টেনে তুলতাম। কখনো আঠা খুলতে চাইতো না, তখন আস্তে আস্তে খামের চারদিকটা কেটে কেটে টিকিটের সাইজ করতাম, এরপর রেখে দিতাম পেন্সিল বক্সে।
এরই মাঝে একদিন আব্বুর হাত ধরে নিউমার্কেটে গিয়ে দেখি সেখানে স্ট্যাম্প জমানোর বই পাওয়া যায়, সেই বইয়ের ওপর আবার কতো কতো স্ট্যাম্পের ছবি। মনে আছে সেই বইটার কথা, ছক কাটা ঘর ওয়ালা পাতা, আঠা দিয়ে স্ট্যাম্প সাঁটিয়ে রাখতে হতো, পাতার ওপরের দিকে আবার দেশের নাম লেখার জায়গা। একেকটা দেশের একেক পাতা বানিয়ে মহানন্দে আনুষ্ঠানিক ভাবে জমানো শুরু করলাম ডাকটিকিট।
কত কিছু যে ছিলো একেকটা ডাকটিকিটে! মজা লাগতো মালয়েশিয়া আর কুয়েতের টিকিট দেখতে, একেকটা টিকিট হতো বিশাল বিশাল, তিন চার ঘর লেগে যেতো একটা টিকিট লাগাতেই। ইরাকের টিকিট ছিলো সাদ্দাম হোসেনের ছবিওয়ালা। মালয়েশিয়ার টিকিট গুলো ছিলো খুবই রঙ্গিন, বিভিন্ন অপরিচিত ফল-ফুলের ছবিওয়ালা। আর খুব ঝকঝকেও ছিলো, এ কারনে মালয়েশিয়ার টিকিটগুলোই ছিলো সবচেয়ে প্রিয়। আমার বড় চাচা (আমরা ডাকতাম জেইয়া )এনে দিতেন বিভিন্ন উপলক্ষে প্রকাশিত বাংলাদেশের স্মারক ডাকটিকিট। জেইয়া মারা যাবার পর সেই টিকিটগুলো দেখে খুব কান্না পেতো, তাই একদিন স্ট্যাম্প বই থেকে খুলে বাংলাদেশের সব টিকিট লুকিয়ে রেখেছিলাম সেই পুরনো পেন্সিল বক্সে।
ক্লাস ফোর কী ফাইভে থাকতে আবিষ্কার করলাম ডাকটিকিট অদল-বদল করা যায়, এবং আমারই এলাকায় আরো দুই-তিনজন স্ট্যাম্প জমায়। এরপর আর পায় কে আমাকে? এতদিন শুধু মিডল ইস্ট আর এশিয়ার স্ট্যাম্প ছিলো আমার কাছে, এখন অদল-বদল করে পেয়ে গেলাম আমেরিকা, কানাডা, এমনকি সুদান, মোজাম্বিকের মতো দেশেরও টিকিট। এক বন্ধুর কাছে দেখেছিলাম প্লাস্টিকের সুন্দর পকেট ওয়ালা স্ট্যাম্প বই, আঠা লাগানো, স্ট্যাম্প খোলাখুলির কোন ঝামেকা ছিলো না, কী যে হিংসা লেগেছিলো! কত কেনার ইচ্ছা ছিলো ওরকম একটা বই, কিন্তু কীভাবে কীভাবে যেনো আর কেনা হলো না।
স্কুলের সামনে পাওয়া যেতো তখন ভিউকার্ড আর স্টিকার। একেক পাতা স্টিকার দশ টাকা করে, আর ভিউকার্ড একটাকা-দুইটাকা। একজন পঙ্গু ভদ্রলোক একটা হুইলচেয়ারকে একটু এদিক-সেদিক করে ভ্রাম্যমান দোকান বানিয়ে ফেলেছিলেন, তার দোকানের নিয়মিত খদ্দের ছিলাম আমি। মজার মজার সব স্টিকার এর পাতা পাওয়া যেতো, হি-ম্যানের সব চরিত্র নিয়ে একপাতা, মিকি মাউসদের নিয়ে একপাতা - কতো যে ভালো লাগতো। আমার খাটে মাথা রাখার জায়গাটাতে লাগিয়েছিলাম একটা হি-ম্যানের ছোট স্টিকার, কতো রাত যে ওকে নিয়ে হাজার অ্যাডভেঞ্চার করতে করতে ঘুমিয়েছি। বহুদিন পরে তাকে আরেকদিন দেখেছিলাম, সেই কার্ড বেচতে, কিন্তু এবার পোকেমনের প্লেয়িং কার্ডস।
আর কিনতাম ফুটবল-ক্রিকেট প্লেয়ারদের ভিউকার্ড। ভালো লাগতো আফ্রিকান প্লেয়ারদের নানা উদ্দাম ভঙ্গির ছবি কিনতে। রজার মিল্লা আর ভালদেরামার দুটো কার্ড এখনো আছে। ভিউকার্ডে আবার সুন্দর সুন্দর ক্যাপশন থাকতো, যেটা আজো মনে আছে সেটা হলো " ক্লদি পাগল"! ক্যানেজিয়া আর বাতিস্তুতার পোস্টার কেনা ছিলো আমার প্রিয় বাতিক, কিনে কিনে ঘরের দরজার গায়ে সাঁটতাম সব।
একদিন হঠাৎ করে শুনলাম স্টিকার আর ভিউকার্ডের মতো স্ট্যাম্পও কিনতে পাওয়া যায় নাকি। একবন্ধুর সাথে গেলাম একদিন স্ট্যাম্প কেনার দোকানে, সম্ভবত সিদ্ধেশরীতে ছিলো দোকানটা, ঠিক মনে নেই। দেখলাম অনেক স্ট্যাম্প পাওয়া যায় অনেক দেশের, একেকটা ২০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকাও আছে। ৩০ টাকা দিয়ে আমি একটা কিনলাম, কিন্তু বাসায় এসে কাজটা আমার কাছে খুবই গর্হীত মনে হতে লাগলো। কিনে কিনে স্ট্যাম্প জমানো জিনিষটা একদমই পছন্দ হলো না, তাই পরে আর কোনদিন স্ট্যাম্প কিনিনি। বড় হয়ে জেনেছি এই ডাকটিকিট কেনাবেচা কত বিশাল একটা ব্যাপার, একেকটা টিকিটের দাম মিলিয়ন ডলারও হতে পারে! নাতি-পুতিদের জন্য এখনকার কিছু স্ট্যাম্প রেখে যাবো ভাবছি, শ খানেক বছর পরে হয়তো সেগুলোই সোথবিতে বিকোবে!
এর মধ্যে অল্প কিছুদিন কয়েনও জমিয়ে ছিলাম, তবে উল্লেখযোগ্য কিছু হয়নি। একটা মাদাগাস্কারের এক হাজার টাকার নোট ছিলো, আমার এক স্যার কোথ্থেকে জানি এনে দিয়েছিলো, সেটাই ছিলো আমার একমাত্র দুর্লভ সংগ্রহ। টিয়া পুষেছিলাম কিছুদিন, কিন্তু কোন এক টইটম্বুর পড়ে বুঝতে পারলাম কাজটা বেশ নিষ্ঠুর, তাই ছাদে গিয়ে উড়িয়ে দিলাম টিয়াটাকে। কয়েকদিন অবশ্য মন খারাপ ছিলো, কারন মনে মনে ভাবছিলাম টিয়াটা যাবে না, একটু উড়ে এসে ঠিক আমার কাঁধে বসবে। কিন্তু মরিচহারাম টিয়াটা চলেই গেলো, ফিরেও তাকালো না।
ঐ টিয়ার মত একএক করে সবই পালিয়েছে - বাসা বদলের সময় হারিয়ে গেছে ডাকটিকিটের বইটা, কয়েন যা ছিলো দিয়ে দিয়েছি এক ছোট ভাইকে, স্টিকার - পোস্টার যা ছিলো পুরনো বাসার দেয়ালে আর নানা আসবাবে - একেক করে বদলাতে বদলাতে সেসবও আজ আর নেই কোথাও। সুমনের গান বেজে ওঠে হঠাৎ - ছেলেবেলার সেই ...
মন্তব্য
ভাল লাগল, ছোটবেলার অনেক কিছু মনে করিয়ে দিলেন । মালয়েশিয়ার ডাকটিকিটে ফল, কুয়েতের আযদাহা ডাকটিকিট এসব ভুলেই গিয়েছিলাম ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
আযদাহা টিকিট ... ভালো বলছেন :D
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
আগেই তো বলছি কত ভাল লাগছে। এখন কেবল তারা বসাইলাম।
অনেক দেরি হইছে আসতে। বাই দ্য ওয়ে - তোমার জন্য ড্রেক আছে!
ধন্যবাদ সিরাত ভাই। ড্রেক দেয়ার জন্যও ধন্যবাদ অনেক।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
আপনার লেখা পড়ে ছোটবেলার অনেক ঘটনা মনে পড়ে যাচ্ছে। আমার ছোটবেলার শখগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ডাকটিকিট, মুদ্রা আর কলম জমানো।
-------------------------------------------------------
--------------------------------------------------------
কলম? বাহ এটার কথা তো আগে শুনিনি। আরেকটু বিস্তারিত বলেন, কী কী ছিলো এইসব আরকি...
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
কলম আমিও জমাতাম। আমার পড়ার টেবিলের একটা ড্রয়ার ভরা ছিল কেবল কলম আর কলম।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
নস্টালজিক হয়ে যাবার দিন আজ।
সেই জমানো ভিউকার্ড আর স্ট্যাম্পগুলো কোথায় কে জানে।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
বা: বা: আমিও ছোটবেলায়্ ডাকটিকিট জমিয়েছি৷ আর জমিয়েছি বাসের টিকিট৷ আগেকার দিনে (মানে আমাদের সময়ে আর কি) কমপিউটারের ফেলে দেওয়া পাঞ্চকার্ড দিয়ে প্রাইভেট বাসের টিকিট বানাত৷ বেশ শক্তপোক্ত আর কুট্টি কুট্টি ফুটোওয়ালা৷ আমি সেগুলো জমাতাম৷ আমার কাছে ১৩০০০ এরও বেশী টিকিট ছিল৷
কয়েন কখনও জমাইনি, কারণ পাইইনি৷ তবে বছর দুই আগে আওরঙ্গাগবাদে বেড়াতে গিয়ে ঔরঙ্গজীবের আর শিবাজীর কয়েন কিনলাম৷
আর জানেন তো, এখন আমার অনেক শখের অন্যতম হল নানারকম "ভুতুম' জমানো৷
----------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
কৈ, দেখি আপনার ভুতুম ( ছবি ব্লগ দেন ) ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
ভুতুম জমানো কী? পাখি সংগ্রহ? আমি বুঝি নাই।
তবে আহার-সংস্থান ও মাসকাবারী অল্প কিছু তঙ্কার বিনিময়ে আমি জমতে রাজী আছি, জমাতে চাইলে সত্ত্বর যোগাযোগ করুন।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
আরে না না। কাঠ, পাথর, মাটি etc জিনিসের Owl Collection
--------------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
ফটুক দেন। দেখি আমার জাতভাইরা ক্যামন দ্যাখতে।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
আরে না না। কাঠ, পাথর, মাটি etc জিনিসের Owl Collection
--------------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
আমরা স্টাম্প ছাড়াও আরেকটা জিনিস জমাতাম, দেশলাইয়ের মার্কা (প্যাকেটের উপরের ছবিওয়ালা সাইডটা)। বাসের টিকিট জমাতাম অন্য কারণে, ওটা এক ধরণের কারেন্সি ছিলো।
অনেক আগে একটা মেমোয়ার গোছের লেখা লিখেছিলাম, তার পরের পর্বে এই সংক্রান্ত কৈশোরের গল্প লিখবো ভাবছি।
হ, বাংলাদেশের শিশুদের কাছেও ঐটা এক ধরনের কারেন্সি ।
ঐ সমস্ত বুড়ো ভাম গুলোকে লাত্থি মেরে গদি থেকে নামিয়ে দিয়ে বাচ্চাদেরকে দেশ চালানর ভার দেয়া উচিত । তাইলে তামাম দুনিয়ায় কোথাও আর কোন যুদ্ধ হবেনা । ভিসা মুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠিত হবে । সব দেশে অভিন্ন মূদ্রা চলবে ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
এবং সমগ্র বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকা পালন করবে। আইএমএফ এর বদলে ভলভো কোম্পানি দেশের উপর ছড়ি ঘুরাবে।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
আরি দেশলাইয়ের মার্কা তো আমিও জমাতাম। নানুর বাড়ি গেলে ওগুলোর বদলে মার্বেল কিনতাম।
লিখে ফেলুন কৈশোরের গল্প, জীবনের আর কোন সময় তো এত মধুর হয়না কখনো।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
ভাই ভুতুম, আমি বসে বসে আমার ছোটবেলার বাদরামীর গল্পই লেখছিলাম এতক্ষণ। আমার অনেক রকমের শখ ছিল। এবং আমি আমার সব ডাকটিকেট, বেশ কিছু মুদ্রা, অনেক চিঠি, সব বই, পুতুল, স্টিকার সব এখনও রেখে দিয়েছি খুব যত্ন করে।
মরিচহারাম টিয়াটার কথা শুনে হাসিও পেল, দুঃখও... তাও ভাল তার মৃত্যুতো দেখতে হয়নি। তাহলে কষ্টটা অনেক বেশি হত।
লেখাটা সেরোম হইসে। কত্তকিছু মনে পড়ে গেল। ধন্যবাদ!
------------------------------------------------
চাঁদের আলো আজ যদি ভাল লাগে, কাল হয়ে যায় ঝাপসা...
আমার এ তরী, যদি চলে যায়, ফিরে আর আসবেনা।
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
হ্যাঁ পরবর্তীতে আমারও তাই মনে হয়েছে, কারন কোন বন্দী পাখিই মনে হয় বেশি দিন বাঁচে না, ভালো হয়েছে আগেই উড়িয়ে দিয়েছিলাম। আর আপনি তো খুব লাকি, এখনো সব জমিয়ে রাখতে পেরেছেন।
লিখে ফেলুন আপনার বাঁদরামীর গল্প চটজলদি।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
আমার বড় ভাইয়ের শখ ছিল ডাকটিকিটের, তারগুলো দখল করেছিলাম আমি
তবে ভিউ কার্ডের ভাল কালেকশন ছিল, আমার একটা ফুটবল প্লেয়ার দের ডায়রী ছিল, সেখানে নানান প্লেয়ারের ছবি সহ বর্ণনা ছিল, সবই কাগজ থেকে কেটে নেয়া। তবে স্টিকারের সেইরকম কালেক্টর ছিলাম।
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
ডাকটিকেট জমাইছিলাম খুব। অদল বদল করতাম। ভিউকার্ডে কোনোই আগ্রহ ছিলো না। ওটা মেয়েদের কাজ ভাবতাম, কারণ আমার বোন কিনতো ভিউকার্ড।
কলম আর কয়েনও জমাতাম।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আবাহনী কিংবা মোহামেডান ফুটবল দলের ছবিযুক্ত কভারের খাতা কেনা।
৯০/৯১ সালে আসলো সাদ্দামের ছবিওয়ালা খাতা, উপরে লেখা 'বাপের বেটা সাদ্দাম'।
____________
অল্পকথা গল্পকথা
আরে এই খাতা আমারও ছিলো। তখন আমাদের বাসায় একটা ক্যালেন্ডার ছিলো, ইরাক এয়ারলাইন্সের খুব সম্ভবত, ওটাতে সাদ্দামের ছবি আর আর নানা বিমানের ছবি ছিলো, আমি আর আমার এক ফ্রেন্ড বাবু ঐ ছবিগুলো নিয়ে মিছিল করতাম বাসার ভিতরে, সাদ্দামের পক্ষে স্লোগান দিতে দিতে।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
হ, বাপের ব্যাটা সাদ্দাম - শ্লোগানটা ঐ আমলে খুব হিট ছিল ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
ছেলেবেলার কথা মনে করায়া দিলেন ভাই...
______________________________________
বৃষ্টি ভেজা আকাশ
______________________________________
লীন
নষ্টালজিক হতে হতে খ্যাক করে হেসেদিলাম এটা পড়ে। আমাদের বাসাতেও ছোট ভাইয়ের জন্য পাখি পালা হতো। টিয়া, ময়না, তারপর তোতা। একসময় তা উড়িয়েও দেয়া হতো।
৯০'র বিশ্বকাপের সময় প্রচুর ভিউকার্ড জমিয়েছিলাম। সবগুলো দলের সাথেসাথে প্লেয়ারদের অন অ্যাকশন (বাংলা কী) কার্ড আর কিছু পোস্টার। ম্যারাডোনার A4 সাইজের একটা না পোস্টার না কার্ড ছিল, যেটায় বাংলা ক্যাপশন ছিল 'ওরা আমাকে মারে ক্যানো?'
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
আহ ভুতুম কত কথা মনে পড়ে গেল। আমার ইচ্ছা আছে ৮০ দশকের 'বখে যাওয়া দিন গুলি' নিয়ে একটা সিরিজ লিখব। লেখাটা বাড়াবাড়ি রকমের ভালো হয়েছে, পুরা নস্টালজিক হয়ে গেলাম।
দ্রুত লিখা ফালান, কোন ভ্রান্ত ধারনার বশবর্তী হয়ে দেরি কইরেন না। আশির দশকে আপনারা কী কী দুষ্টামি করেছিলেন ঝাতি ঝানতে চায়।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য মামুন ভাই।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
নতুন মন্তব্য করুন