পাঠকের ভালোবাসা আর বিশ্বাসকে পুজিঁকরে প্রথম আলোর পুজিঁবাজারে বাণিজ্য এবং আমরা

রাহা এর ছবি
লিখেছেন রাহা (তারিখ: বিষ্যুদ, ২০/০৯/২০০৭ - ১০:৪৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যা কিছু ভালো তার সাথে প্রথম আলো ।
আমি তো এমনি এমনি খাই রকমের জনপ্রিয় একটি বিজ্ঞাপনের লাইন । একবিংশ শতাব্দির মুক্তবাজার অর্থনীতির যুগে আমরা আমদের খোলাবাজার নিয়েই যখন যুক্ত হয়েগেছি মুক্তবাজারে তখন নিজের ঢোল নিজেই না পেটালে নানারকম বিপদ-আপদ । বিগত শতাব্দির নিজের ঢোল নিজেই না পেটানোর প্রবাদ কিংবা মতবাদ তাই একবিংশ শতাব্দিতে এসে খারিজ হয়ে গেছে ।এখন আত্ম সচেতনতার জামানা । তাই নিজের ঢোল অন্যের হাতে বাজাতে দেয়া মুর্খতা , তাছাড়া যখন তখন ফেটে যাবার সমুহ বিপদ । সব কিছু আগে পিছে চিন্তা করেই এই জামানায় এসে সবাই নিজের ঢোল পেটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে । তাই প্রথম আলো তা থেকে কেন পিছিয়ে থাকবে । আর সবার বাজনা সবসময় জনপ্রিয় হয়না , অনেক অনুঘটক-প্রভাবক সবকিছুর সমন্বয়ে আসে সেই জনপ্রিয়তা । তবে সবকিছুর শেষ কথা হচ্ছে 'যা কিছু ভালো তার সাথে প্রথশ আলো' বিজ্ঞাপনটি জনপ্রিয় হয়েছে ।যদিও বাস্তবে আদতেই ১০০% হালাল কিনা ক্রেতা কিংবা বিক্রেতা কেউ নিশ্চি হননা কিংবা হবারও প্রয়োজনও বোধ করেন না ।
প্রথম আলো পত্রিকা প্রকাশের পর থেকে বেশকিছু বিষয় আর ভূমিকা তার পাঠক প্রিয়তা বাড়িয়েছে । স্বভাবে বাঙালি বলেই শুধু নয় মানুষ হিসেবে আঙ্গুল দিতে না পারলেও তা দেখতে সবারই কমবেশি ভালো লাগে । স্বৈরাচার বিরোধী খ্যাত পত্রিকা যায়যায়দিন এরপর প্রথম আলো সেই একই ফর্মুলায় খুব সহজেই আঙ্গুলবাজদের জনপ্রিয়তা পেয়ে যায় । সেই সাথে সঞ্জিবদার পাঠক ফোরমখ্যাত সেইসব তৈরী পাঠক আর বাহিনীর প্রথম আলোর বন্ধুসভায় যোগদানসহ নানারকম বাণিজ্যের হিতকারী প্রবণতায় তা দিনে দিনে বাণিজ্য সফলতা ও পাঠক জনপ্রিয়তায় এগিয়ে যায় । সেই প্রথম আলোর ঢোলের বাড়ি কেমন কর্কশ ছিল । প্রচার সংখ্যায় সবার শীর্ষে টাইপ বিজ্ঞাপন আমার মতন ক্ষুদ্রাকার পাঠককে কেমন যেন কুণ্ঠিত করত ।

সারা বিশ্বে যখন মুক্তবাজারের মুক্ত হাওয়া তখন আমাদের খোলাবাজার কেন বাদ যাবে । যদিও আমার ধারণা এই মুক্তবাজার কন্সেপ্টটা আমদের খোলাবাজার থেকেই উদ্ভূত । তাই দেশের বুদ্ধি বৃত্তিক জনগোষ্ঠি বাণিজ্যে নেমে গেল । আর তার সহায়সম্বল যেহেতু খুলির ভিতরের হলদেআঠালে জাতীয় ঘিলু নামক পদার্থ তাই সম্বল নিয়ে নেমে পড়ল । আর সেই ঘিলু যেহেতু বাজারে কাচামালের মতন বিকানো যায়না তাই সেই ঘিলু থেকে নানারকম গোলটেবিল, ত্রিভুজটেবিল চতুষ্পদী নানাপদের খাদ্য বাজারজাত করা হলো । সবরকম সুস্বাদু মুখরোচক খাদ্য আমরা গোগ্রাসে গিলতে লাগলাম । আর তার ফলশ্রুতিতে সমাজে নতুন কাচা পয়সার মোড়ল এলো । মোড়ল হতে শুধু টাকা পয়সা থাকলে চলেনা চাই সমাজের ক্ষমতাবানদের কৃপাদৃষ্টি । তাই নতুন মোড়ল শুরু করলেন ক্ষমতাবাজদের তৈলমর্দন । জলপাই এ তেল দেন যেন আচার কবশীদিন টেকে অফ সিজনে বিকিয়ে বেশী লাভ!!সমাজের মহাজনদের আস্থাভাজন হতে তার বেশী সময়ও লাগেনা । তিনিও ক্রমে রমজানের লাইফ কেইস স্টাডি করে সফল ভাবে এগুতে থাকেন । বিভিন্ন জায়গা থেকে নিজে যেমন পৈতা আমদানী করেন তেমনি অনেক ক্ষেত্রে পৈতা বিতরণও শুরু করেন ।
ক্রমে ক্রমে আঙ্গুলবাজ , তরুণ আর ভোলেভালা পাঠকের ভালোবাসা আর বিশ্বাসকে পুজিঁকরে প্রথম আলো পুজিঁবাজারে শক্তিশালী হয়ে ওঠে । শুরু হয় পুজিঁর বাণিজ্য ।অন্য বেনিয়ারাও লগ্নিকরেন । জমে ওঠে বাণিজ্য । সেই কাচাঁটাকা আর জমজমাট পসরা আর ক্ষমতা তাদের করে তোলে অন্ধ আত্মবিশ্বাসী বাণিজ্যে লগ্নি করতে করতে তারা একসময় পাঠকের বিশ্বাস ভালোবাস লগ্নি করতেও দ্বিধান্বিত হয়না । শেষ অবধি আজ দেশকে ও অন্যের হাতে তুলে দিতেও তাদের কুন্ঠা নেই । কতিপয় নরসুন্দর , উর্দিধারী আর নয়া মোড়ল মিলে করছে সেই পায়েতারা ।
কিন্তু ভোলেভালা হলে সব মানুষই নিজেরটা বোঝে । কেউ ষোল আনা আর কেউ হয়তো ১ আনা । আর বাঙালি যদিও সময়মতন বোঝেনা তবে বোঝে । পাঠকরা দিন যাবার পরে হলেও নেশাগ্রস্ত প্রথম আলোর বানণজ্য নেশা বুঝে গেছে । বেশ কিছুদিন থেকেই তেলে মাথায় তেল দেয়া , জলপাই প্রেম সবকিছু মিলিয়ে প্রথম আলোর পাঠকসমাজ দ্বিধাগ্রস্ত । প্রিয় পত্রিকার এমন করুণ অবস্থা নিয়ে হতাশ । ঠিক তখনি পুজিঁপতিগণ বাজারে তাদের কাটতির কমতি দেখে ফন্দি আটেন তবে ফন্দি খুব সস্তা দরের । শিবিরের পত্রিকার বস্তাপচা রদ্দিমাল তারা চালান করে দিল । মোল্লারা হুংকার দিল । এখন নিশ্চয়ই এই পত্রিকার পাঠককুল আর পিছিয়ে যাবেনা । এমন আপদ কালীন সময়ে অতীতের সবভুল দালালির কথা ভুলে গিয়ে আবার তার ভালোবাসর পত্রিকাটি কোলে তুলে নেবে । হয়তো নেবে কিন্তু সেই একই কায়দায় যে আবার আমাদের মতন হতদরিদ্র পাঠক সহ বিকিয়ে দেবে না পুজিঁবাজারে তার গ্যারান্টি কি ?


মন্তব্য

আরিফ জেবতিক এর ছবি

একমত নই।

বিপ্লব রহমান এর ছবি

প্রিয় পত্রিকার এমন করুণ অবস্থা নিয়ে হতাশ । ঠিক তখনি পুজিঁপতিগণ বাজারে তাদের কাটতির কমতি দেখে ফন্দি আটেন তবে ফন্দি খুব সস্তা দরের । শিবিরের পত্রিকার বস্তাপচা রদ্দিমাল তারা চালান করে দিল । মোল্লারা হুংকার দিল । এখন নিশ্চয়ই এই পত্রিকার পাঠককুল আর পিছিয়ে যাবেনা । এমন আপদ কালীন সময়ে অতীতের সবভুল দালালির কথা ভুলে গিয়ে আবার তার ভালোবাসর পত্রিকাটি কোলে তুলে নেবে ।

বিনীতভাবে বলছি,

এক.শিবিরের পত্রিকার বস্তাপচাঁ রদ্দিমাল কেউ চালান করে দেয়নি। এটি সম্ভবত অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি। আর মোল্লারা এই সব ত্রুটির জন্য অনেক আগে থেকেই মুখিয়ে ছিলো। এখন তারা প্রথম আলোকে ইস্যু বানানোর জন্য আস্কারা পেয়েছে মাত্র।...

দুই. পাঠক কিছুই ভোলে না। পাঠক প্রেম এতো সস্তাও নয়।...ইতিহাস স্বাক্ষী, পুঁজি ও নীতির কাছে ধরাশায়ী হয়ে এক সময়ের মহিরুহ দৈনিক ইত্তেফাক, সংবাদ, জনকন্ঠ, ভোরের কাগজ,আজকের কাগজ (গতকাল বিলুপ্ত)-এর প্রচার সংখ্যা এখন কোথায় গিয়ে ঠেকেছে! চিন্তাশীল, নিরপেক্ষ ও সাহসী বিকল্প কোনো কাগজ পেলে পাঠক সেটিকেই তুলে নেবে; আর প্রথম আলোর পরিনতি হবে এইসব মহিরুহ থেকে বনসাই হয়ে যাওয়া কাগজগুলোর মতো। ...

এসবই আমার ব্যাক্তিগত মত। ধন্যবাদ।


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

'দৈনিক সচলায়তন'এর অপেক্ষায় রইলাম...

রাহা এর ছবি

দেখুন আপনার মতি ভাই যদি ভুলই করে থাকেন তিনি ঈশ্বরের কাছে মাফ চাইবেন ওই খতিব ব্যাটাকে ?

..হৃদি ভেসে যায় অলকানন্দার জলে...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।