পুরনো বাসাটাকে ছেড়ে যেতে কান্না পাচ্ছিল সিফাতের।
এই বাসাটাকে ঘিরে অনেক মায়া জমে আছে। অনেক স্মৃতি। সবচেয়ে বড় কথা, এই বাসাতেই তো মা মারা গেলেন! এই তো, শোয়ার ঘরের ঐ ডানদিকে জানালার পাশে ছিল বড় বিছানাটা। জানালার ওপাশ থেকে উঁকি দিচ্ছে একটা পেয়ারাগাছ।
মৃত্যুর আগমুহূর্তেও ঐখানেই শুয়ে ছিলেন মা। তখন অবশ্য তার কোনো চেতনা ছিল না। সিফাত তার মায়ের হাত ধরে বসে ছিল পাশে। পাশেই বাবা ছিল, ছোট বোন আনুশকা ছিল, আরো অনেকে।
কত বছর ধরে তারা আছে এই বাসাতে? প্রায় বারো বছর! তাহলে তো এক যুগ বলা যায়!
বাসাটার সামনেই ছোট একটা উঠান। দুটো গাছও আছে। একটা আতা, আরেকটা ডালিম। এই আতা গাছ থেকেই একবার পড়ে গিয়েছিল সিফাত। বেশি না, হালকা একটু মচকে গিয়েছিল, ছড়ে গিয়েছিল শরীরের বেশ কয়েকটা জায়গা। কিন্তু তাকে জড়িয়ে ধরে মায়ের সে কী কান্না!
আনুশকা তখন তিন বছরের। মায়ের কান্না দেখে সেও কান্না শুরু করেছিল। তার ধারণা, ভাইয়া মরে গিয়েছে!
সিফাতের হাঁটুতে এখনো সেই কেটে যাওয়ার দাগ অল্প অল্প আছে।
একটু পুরনো দিনের বাড়ি। সামনের টিনের গেটটা ক্যাঁচকোঁচ শব্দ করে। কয়দিন পর পরই সেটাতে তেল দিতে হয়। গেটটার মজাই এই যে, বাসায় কেউ এলেই দিব্যি টের পাওয়া যায়। হুড়কো সরিয়ে ভেতরে ঢুকতে গেলেই ক্যাঁচ-চ-চ...
মনে আছে, একবার এক রাতে ভীষণ ঝড়। বাবা তখনও অফিস থেকে বাসায় ফেরেন নি। তখন তো আর কোনো মোবাইল ফোন ছিল-টিল না, বাসায়ও কোনো ফোন ছিল না। এর মধ্যে আবার লোডশেডিং। কারেন্ট গেল যে গেল, আর এলই না! বাবার জন্য মায়ের সে কী চিন্তা! রাত এগারোটার মধ্যে সিফাত আর আনুশকাকে খাইয়ে দাইয়ে বিছানায় পাঠিয়ে দিলেন মা। তারপর হারিকেন জ্বালিয়ে বসে রইলেন বাবার জন্য।
বিছানায় চুপচাপ শুয়ে শুয়ে মায়ের উৎকণ্ঠা টের পাচ্ছিল সিফাত। তখন তার বয়স কত? আট-নয় হবে!
বারোটার দিকে সেই টিনের গেট ক্যাঁচ-চ-চ করে উঠল! সেই টিনের বিশ্রি আওয়াজ সেই রাতেরবেলা কী যে ভালো লাগল!
তার পরেই শোনা গেল বাবার গলার আওয়াজ। কী করে বৃষ্টিতে আটকে পড়ে ছিলেন সেই দুরবস্থার বৃত্তান্ত। মায়ের গলায় কান্না মেশানো অনুযোগ।
সেই বাসা ছেড়ে চলে যাচ্ছে তারা। সিফাত একটা বড় দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল!
বাবা খুব ভালো চাকরি করছেন একটা। খালি প্রমোশনের পর প্রমোশন। তাই এখন তারা এই বাসা ছেড়ে আরো একটা ভালো বাসায় উঠে যাচ্ছে। বিশাল বড় একটা দোতলা ফ্ল্যাট। সেখানে আনুশকা আর তার নিজের রুম হবে। দেয়ালগুলো হবে সব ঝকঝকে। এই বাড়ির দেয়ালগুলোর মতো নোনা ধরা হবে না। পায়ের নিচে থাকবে টাইলস। এখনকার মতো জায়গায় জায়গায় খোদল হয়ে যাওয়া মেঝে থাকবে না। আনুশকা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি হবে। সবকিছু আরো ভালো হয়ে উঠবে। আরো অনেক ভালো!
কিন্তু সিফাতের যে এই পুরনোই যে অনেক ভালো লাগে! এই সহজসরল পুরনো দিনের বাড়িটা! যার কোনো ঝকমকে আকর্ষণ নেই, শুধু পুরনো দিনের স্মৃতি আছে অনেক!
সিফাত ভাবতে ভাবতে একটু আনমনা হয়ে পড়েছিল। এমন সময় দরজায় একটা ক্যাঁচ-চ-চ করে শব্দ হল।
সিফাত ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল, একটা কমবয়সী মেয়ে ঢুকেছে বাসার ভেতর। কীরকম বয়স হবে? তের-চোদ্দ বোধহয়।
মেয়েটা বাসায় ঢুকেই তাকাল তার দিকে, তোমার নাম সিফাত?
সিফাত একটু অবাক হয়েই বলল, হ্যাঁ, কিন্তু... তুমি কে?
আমি?... মেয়েটা হাসল, আমরা এই বাড়িতে নতুন আসছি, দেখতে এলাম আমাদের বাসার কী হাল!
সিফাত মনে মনে একটু বিরক্ত হল। এই মেয়েটার বয়স তার থেকে অন্তত তিন-চার বছর কম হবে। কীরকম দিব্যি তুমি তুমি করে বলছে!
তা দেখ বাসার কী হাল!...
মেয়েটা আঙ্গিনাতে ঘুরতে লাগল।
সিফাত একটু বিরক্ত গলায় বলল, তোমার সঙ্গে বাবা-মা কেউ আসে নি?
এসেছে তো! বাইরে কার সঙ্গে যেন কথা বলছে! কিন্তু তুমি আমার সঙ্গে সঙ্গে এরকম রাগ রাগ ভাব দেখিয়ে কথা বলছ কেন?
সিফাত একটু লজ্জা পেল। তার গলায় কি আপনা থেকেই রাগ রাগ ভাবটা চলে এসেছে?
লজ্জা লুকোবার জন্য সে কথা ঘোরাল, তুমি আমার নাম জানলে কী করে?
তোমার নাম জানা কোনো বিষয় নাকি? বাড়িঅলার কাছে বার বার শুনছি সিফাতদের ফ্যামিলি... সিফাতদের ফ্যামিলি...
ও! তোমার নাম কী?
মেয়েটা কোনো জবাব না দিয়ে একটু এগিয়ে এসে আতা আর পেয়ারাগাছগুলো দেখতে লাগল। বেশ টানা টানা চোখ মেয়েটার, ভারী মায়াকাড়া। তারপর আচমকা ঘাড় ঘুরিয়ে সিফাতের দিকে তাকিয়ে বলল, তোমার মন খারাপ?
সিফাত অবাক হয়ে বলল, কেন বল তো?
কারো মন খারাপ হলে আমি দিব্যি বুঝতে পারি! কেন মন খারাপ বলবে?
সিফাত ঠোঁট উল্টে বলল, মন খারাপ হতেই পারে। তুমি জানো কিনা জানি না, এই বাসাতে আমরা বারো বছর ধরে আছি! আমাদের অনেক স্মৃতি জমে আছে এখানে!
একটু থেমে বাঁকা গলায় বলল সিফাত, তোমরা যারা নতুন থাকতে এসেছ, তারা সেগুলোর আর কী বুঝবে?
মেয়েটা তার দিকে নরম চোখে তাকিয়ে বলল, তা কেন? আমরা যারা এখানে থাকতে আসব, তাদেরও অনেক স্মৃতি জমা হবে এখানে! আমরাও ভালোবাসব এই বাসাটাকে! তোমাদের আগে যারা এই বাসাতে ছিল, তাদেরও নিশ্চয় অনেক সুন্দর সুন্দর স্মৃতি আছে এই বাসাটাকে নিয়ে, তুমি কি আর সেগুলো জানো?
সিফাত অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল মেয়েটার দিকে।
মেয়েটা কিন্তু তার দিকে না তাকিয়ে আপনমনে গাছের পাতা কুড়োচ্ছে।
কী যেন একটা খুব চেনা এই মেয়েটার। সিফাত ধরতে পারছে না। মাঝেমধ্যে কিছু চেহারা দেখলে খুব পরিচিত মনে হয় না? কিন্তু এই মেয়েটার যেন তার চেয়েও বেশি কিছু।
সিফাত বলল, তোমার নাম কিন্তু জানলাম না!
মেয়েটা না শোনার ভান করে বলল, তোমরা নতুন যে বাসায় উঠছ, সেটা কোথায়?
আমরা ফ্ল্যাটে উঠছি একটা, ধানমন্ডিতে। বিশাল বড় ফ্ল্যাট, ঝকমকে, তকতকে। আমাদের সবার আলাদা ঘর। আমার ছোট বোন সেখানেই ইংলিশ মিডিয়ামে ভর্তি হচ্ছে। আর আমি যাচ্ছি একটা ভালো প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে।
তো ভালোই তো হচ্ছে!... মেয়েটা বলল, যেটা হচ্ছে, সেটা তো ভালোই! তোমাদের অনেক উন্নতি হচ্ছে। ভালো জায়গায় যাচ্ছ, ভালো করে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছ, আরো সুন্দর করে গুছিয়ে থাকছ...
সিফাত তাকে থামিয়ে দিয়ে বিরক্ত মুখে বলল, কিন্তু এই বাসাটাকেই আমি সবচে ভালোবাসি!
তাতে তো কিছু আসে যায় না! তুমি কি সারাজীবন এই বাসা ধরে আগলে বসে থাকবে? আর দুই বছর বাদেই দেখবে এই বাসা ভেঙ্গে সেখানে বারো তলা অ্যাপার্টমেন্ট উঠেছে! তখন কী হবে?
সিফাত মনে মনে ভারী বিরক্ত হচ্ছিল। মেয়েটা তো ভারী পণ্ডিতের মতো কথা বলে! ওর সব কথাগুলোই যুক্তি দিয়ে কেটে দিচ্ছে!
সে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, তার আগেই মেয়েটা বলল, আমরা যা কিছু ভালোবাসি, তার জায়গা আমাদের মনের মধ্যেইÑআমাদের স্মৃতিতে আর ভালোবাসাতেই সে বেঁচে থাকে! কিন্তু সময়ের সঙ্গে তোমাকে তো নতুন কিছু করতে যেতেই হবে, তাই না? একটা বয়সে তুমি তো পুতুল দিয়ে খেলতে, তোমার কত প্রিয় পুতুল এখনো আছে তোমার বাসায়! তাই বলে বড় হওয়ার পর তুমি কি সেই পুতুল দিয়েই খেল? নাকি এখন ক্রিকেট-ব্যাডমিন্টন খেলতে যাও?
সিফাত বিরক্ত হতে গিয়েও হল না! বলল, তুমি তো দেখছি একদম বয়স্ক মানুষদের মতো কথা বল! হ্যাঁ, মানছি, তোমার কথাগুলো একেবারে সত্যি কথা! পুরনো জিনিস আগলে বসে থাকলে চলে না, নতুন জিনিসের দিকে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হয়। ...কিন্তু এটা বল তো, তোমাকে আমার এত পরিচিত লাগছে কেন...
মেয়েটি এবার হেসে তার চোখের দিকে চোখ রেখে বলল, হ্যাঁ, আমি তো তোমার অনেক পরিচিত... তুমি তো আমাকে খুব ভালো করেই চেন...
সিফাত ভুঁরু কুঁচকে মেয়েটির দিকে তাকাল।
মেয়েটি খুব মমতাভরা গলায় তাকে বলল, সিফাত, তুমি না প্রত্যেকবার পহেলা বৈশাখে গান গাও... মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জ্বরা... তাপস নিশ্বাস বায়ে, মুর্মূষূরে দাও উড়ায়ে... এগুলোর মানে কী? পুরনোকে ছেড়ে নতুনের দিকে এগিয়ে যাও... যা কিছু তুমি ভালোবাস আর শ্রদ্ধার চোখে দেখ, সেটাকে শুধু বুকের ভেতরে করে নিয়ে যাও! এটাই জীবন, এই নিয়ে তুমি কখনো কষ্ট পেয়ো না! এই কথাগুলোই শুধু তোমাকে বলতে এসেছিলাম!
সিফাত অবাক চোখে তাকিয়ে আছে মেয়েটির দিকে। কী যেন বলতে গেল সে, কী যেন বলতে গিয়েও বলতে পারল না।
মেয়েটি বলল, যা কিছু হচ্ছে, ভালোর জন্যই হচ্ছে! তোমাদের অনেক ভালো হবে, তোমরা দুই ভাইবোন অনেক উন্নতি করবে, আমি এখনই বলে রাখলাম! পুরনো কোনোকিছুই বেশিদিন টিকে না! এমন কি দেখ, আতাগাছ থেকে পড়ে তোমার হাঁটুতে যে কাটা দাগ ছিল, সেটাও এখন প্রায় মিলিয়েই গেছে!
সিফাত চমকে তার হাঁটুর দিকে তাকাল। এই মেয়েটা তার আতাগাছ থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা জানল কীভাবে?
হাঁটুর দিক থেকে মুখ তুলে তাকিয়েই দেখেÑসামনে কেউ নেই!
বিকেলের লালচে রোদের ভেতর হাল্কা বাতাসে নড়ছে শুধু গাছের পাতা!
সে লাফিয়ে উঠে এদিক ওদিক তাকাল। না, কেউ নেই! টিনের গেট খুলে বাইরে তাকাল, সামনের রাস্তায় দু-চারজন হেঁটে চলছে, কিন্তু তাদের কেউ সেই মেয়েটি নয়!
কে মেয়েটি? কোত্থেকে এসেছিল সে? কেন তাকে এত চেনা চেনা লাগছিল! রহস্যটা অমীমাংসিতই রয়ে গেল।
কিন্তু সিফাতের বুক থেকে কষ্টের ভারটা নেমে গেছে। এই পুরনো বাসা ছেড়ে যেতে তার আর বিশেষ কোনো কষ্টবোধ হচ্ছে না। বরং রোজ সন্ধ্যায় হারমোনিয়াম সামনে টেনে সে ‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জ্বরা...’ গান প্র্যাকটিস করে চলছে।
সামনেই পহেলা বৈশাখ আর সে আবার তাদের কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নিয়মিত গায়ক।
রহস্যটার মীমাংসা হল বাসা ছাড়ার দুদিন আগে। বাবার জিনিসপত্র গোছাতে গোছাতে পুরনো দিনের একটা অ্যালবাম বেরিয়ে পড়ল।
বাবা এগিয়ে দিলেন সিফাত আর আনুশকার দিকে, দ্যাখ অনেক পুরনো পুরনো মজার সব ছবি আছে! বহুদিন ধরে খুঁজে পাচ্ছিলাম না...!
অ্যালবামের প্রথম পাতাতেই একটা ছোট দুই বছরের বাচ্চার ছবি, আর তার নিচেই একটা টানা টানা চোখের এক কিশোরী...
সিফাত লাফ দিয়ে উঠল, এই মেয়েটা কে বাবা? কে?
বাবা তার দিকে তাকিয়ে রইলেন স্নেহভরা চোখে... নিজের মায়ের ছবি চিনলি না! তোর মায়ের বয়স তখন এই আনুশকার মতোই ছিল... সেই সময়ের ছবি!
বাবা আরো কী কী যেন বলে যাচ্ছিলেন, কিন্তু সিফাত আর কিছুই শুনছিল না! তার বুকের ভেতরে কোত্থেকে যেন একটা হু হু করা বাতাস এসে ধাক্কা দিচ্ছিল!
মা এসেছিল! মা এসেছিল!
সিফাত বিড়বিড় করে বলল, ঠিক আছে মা, পুরনোকে ধরে আমি আর বসে রইলাম না! পুরনো কিছু তো টিকেও থাকে না! তোমাকে আর তোমার এই সমস্ত স্মৃতিকে আমার বুকের ভেতরে করেই নিয়ে গেলাম! সারাজীবনের মতো!
(বিশেষ : লেখাটা এই গেল এপ্রিলেই পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ছাপা হয়েছিল ভোরের কাগজের ইষ্টিকুটুমে। সেখানে এর নাম ছিল "রহস্যের উত্তর"। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে লেখা হলেও এই মা দিবসেও মনে হচ্ছে গল্পটির কিছুটা আবেদন রয়েছে। কদিন থেকে খুব ব্যস্ততা যাচ্ছে বলে কিছু লিখতে পারছি না, প্রাণে বেঁচে থাকার তাগিদে তাই এটাই তুলে দিলাম সচল অচল সবার জন্য!
আপনাদের সময় নষ্ট করলাম কি?)
মন্তব্য
বেশি ভাল লাগল, দারুন ।
লেখার জন্য আর সময় নষ্ট করার জন্য পাঁচ তারা
-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
ধন্যবাদ! আপনি যেরকম ভালো মানুষ, আপনার হৃদয়টাও অনেক বড়!
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আপনি যে লেখেন ভালো সেটা তো নতুন করে আর বলার কিছু নেই, আজকের মন্তব্য তা নিয়ে নয় -
আমরা বাঙ্গালীরা (আমার মতে, কোন সাক্ষ্য প্রমাণ চাইলে দিতে পারবো না) বেশীর ভাগ সময় কেন যেন পুরোনোকে আঁকড়ে না থাকাটাকে খারাপ মনে করি - অন্তঃত গল্প উপন্যাসগুলোতে 'স্মৃতি' নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের কাড়াকাড়ি করতে দেখা যায়! আপনি যে সোজাসুজি অন্য কথাটা বললেন সে জন্য আপনাকে সাধুবাদ জানাই
মানব ভুনা'র মত আরো রেসিপি আসবে কবে? আপনার স্ত্রীকে আরো বেশী করে convinced করার জন্যই নাহয় লিখলেন আরেকটা ?
ঠিক আছে স্নিগ্ধা, অচিরেই আরেকটা রেসিপি নিয়ে আসছি... নামটা হচ্ছে "আবুল মিয়ার হোটেল"! অপেক্ষায় থাকুন!
আপনার সুচিন্তিত এবং পরিচ্ছন্ন গদ্যের মন্তব্যটি পড়ে খুবই ভালো লাগল!
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
পাঁচ তারা তো দূরের কথা, কোন তারা দেয়ার ক্ষমতাই এখনো তাঁহারা আমাকে দেন নাই (আমি যে অচল...)। কিন্তু মনে মনে আপনাকে আরো অতিরিক্ত ২ তারা যোগ করে সাত তারা দিলাম।
সৈয়দ আখতারুজ্জামান
পুরাতন বাসা ছাড়ার কষ্ট অনুভব করেছি মাস ছয়েক আগেই। আপনার লেখা পড়ে আবার মনে পড়ে গেল ওই বাসাটার কথা। কতই না স্মৃতি জড়িয়ে আছে!
সুন্দর লিখেছেন। আবুল মিয়ার হোটেলে খাওয়াবেন কবে?
পড়লাম ও অবিভুত হলাম।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
এই প্রবাসে হস্টেল-জীবন শেষ হবার পর থেকে ভাড়া বাসাতেই থাকছি। বদলাতেও হয়েছে বেশ কয়েকবার। এই বদলের সময়টায় আমি, কম আবেগের মানুষ হয়েও, অবধারিতভাবে স্মৃতিকাতর হই। তবে নতুন বাসায় ওঠার পরপরই হারিয়ে যায় "কাতরতা", থাকে শুধু স্মৃতি।
খুবই অনবদ্য একটি লেখার জন্য অভিনন্দন। আপনার গদ্যও অতি ঝরঝরে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি তুষ্ট আত্মপ্রেমেই। এর সুবিধে হলো, প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নেই
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
খুব খুব ভালো লাগলো।পুরানো কে ভুলে নতুনকে আমিও সহজে মেনে নিতে পারি না।কখনো ভাবি না কি হবে অতীতকে ধরে পরে থাকলে?
-নিরিবিলি
শেষ পর্যন্ত আমাদের বাড়িটার বিক্রি যখন আটকানো গেলো না
তখন বাড়ি ছাড়ার এক মাস আগেই আমার বই আর লেখার আবর্জনাগুলো মায়ের জিম্মায় রেখে আমি চলে এলাম ঢাকায়
তার ছয়মাস পরে লোকজনকে ঠিকানা জিজ্ঞেস করে করে গিয়ে উঠলাম নিজের নতুন বাসায়
শুক্রবারিবাজারের সেই বাড়িটার যে কোনো ঘাসের পাতা কেটে এনে কিংবা যেকোনো জায়গা থেকে একমুঠো মাটি তুলে এনে দেখালেও আমি নিশ্চিত চিনতে পারব ওটা সেই বাড়ির ঘাস
সেই বাড়ির মাটি...
০২
অসাধারণ মোচড় দেয়া একটা গল্প
দারুন বলেছেন!
শেষটা আগে থেকে অনুমান করতে পারিনি বলে খুব ভালো লাগলো। সচলায়তনে দিয়েছেন বলে সুন্দর একটা গল্প পড়া হলো।
আমি এক সিফাত কে চিনি ,তারও মা নেই,আমার ও মা নেই এখন,আমার মা সহ আমরা কিছুদিন হলো আমাদের পুরনো অনেক দিনের সেই বাসা ছেড়ে নতুন অ্যাপার্টমেন্ট এ উঠেছি । আজ আমার মা নেই । এই গলপ টার সংগে এত মিল ।
নতুন মন্তব্য করুন