আমগোরটা একটু অন্যরকম... সই কইরা ফালাইও!

মৃদুল আহমেদ এর ছবি
লিখেছেন মৃদুল আহমেদ (তারিখ: সোম, ০৭/০৭/২০০৮ - ১০:৪৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঘটনাটা যথারীতি আমার নয়। আমার এক কলিগের। তার অনুমতি নিয়েই লিখছি।
নাম অরু। ছেলে, মেয়ে নয়। বয়স পঁয়ত্রিশ। কথা কম বলে তাই তার সাথে আড্ডা হয় কম।
একদিন দেদারসে আড্ডা দিতে গিয়ে তার কাছ থেকে দুটো জিনিস পেলাম।
এক. তার জন্য পাত্রী খুঁজে দেয়ার প্রস্তাব। (বেকাররা যেমন চাকরিজীবি বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে ধরে নেয়, তার এই বন্ধুটি চাকরি খোঁজায় আলাদা রকমের কুশলী, সেরকমই অবিবাহিতরা ধরে নেয় বিবাহিতরা পাত্রী ধরায় সিদ্ধহস্ত।)
দুই. এই বিশেষ গল্পটি।
পাত্রী খুঁজে দেয়ার দায়িত্বটা নিজের ঘাড়ে রেখে গল্পটা আপনাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছি।

৯৬-এর দিকের ঘটনা। অরুর দুলাভাই চাকরি করেন রেলওয়েতে। বেশ ভালোই একটি পোস্ট। তিনি থাকতেন পাহাড়তলীর কোনো একটি কোয়ার্টারে। বেশ ছিমছাম কোয়ার্টার, স্রেফ সামান্য কিছু অসুবিধে আছে। সেই অসুবিধের ব্যাপারটায় পরে আসছি।
দুলাভাই এবং বোনের পুনঃপুনঃ আহ্বানে ব্যস্ত অরু অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বেড়াতে গেল সেখানে।
বাস থেকে নেমে বেবিট্যাক্সি চড়ে সোজা সেই কোয়ার্টারে। দুলাভাইয়ের গালভরা অকপট হাসি, বোন এসে জড়িয়ে ধরল, ভাগ্নে এসে লাফ দিয়ে উঠল কোলে...
অরু খুব খুশি। চমৎকার পরিবেশ, চারদিকে উদাত্ত প্রকৃতি।
প্রকৃতির এত কাছাকাছি থাকার কারণেই হয়ত খানিকক্ষণ পরেই টের পেল প্রকৃতির ডাক। ডাকটা প্রথমে খুব হালকা ছিল, আস্তে আস্তে বেশ জোরালো হয়ে উঠল।
মিতবাক অরু তার ভাগ্নেকে জিজ্ঞেস করল, বাথরুমটা কোনদিকে?
ভাগ্নে দেখিয়ে দিল, বাসা থেকে পৃথক একটি পাকা ঘর। টিনের দরজা সামনে।
নিম্নচাপগ্রস্ত অরু ভাগ্নেকে কোল থেকে নামিয়ে নিশিতে পাওয়া মানুষের মতো দ্রুত পা চালাল সেই ঘরের দিকে।
দুই পা এগিয়েছে, এমন সময় হঠাত্ কোত্থেকে এসে খপ করে তার হাত চেপে ধরলেন দুলাভাই!
কই যাও?
বাথরুমে! (হাত টানাটানি চলছে)
কেন?
মানে? (অরু স্তম্ভিত... বাথরুমে কেন যায় মানুষ?)
ইয়ে... মানে... ছোটটা না বড়টা?
বড়টা! (অরুর কান লাল হচ্ছে)
এবার দুলাভাইকে একটু ইতস্তত করতে দেখা যায়। তার কানও একটু একটু লাল।
হাত ছেড়ে দিয়ে তিনি বললেন, ঠিক আছে, যাও। তবে আমগোরটা কিন্তু একটু অন্যরকম... সই কইরা ফালাইও!
এখানে বলি সেই কোয়ার্টারের অসুবিধের কথাটা। সেখানে কোনো সোয়ারেজ লাইন ছিল না। পাকা বাথরুমের কমোডের বেশ নিচেই থাকত একটি পাত্র, যা প্রতিদিন খালি করে দিয়ে যেত মেথররা। অসুবিধে একটাই, স্বীয় বর্জ্য একটু নিশানা করে পরিত্যাগ করতে হত!
যাই হোক, হাত ছেড়ে দিলেন দুলাভাই... অরুও তার আদেশ শিরোধার্য করে কিছুটা অস্থিরতা, কিছুটা আত্মবিশ্বাসের অভাব, কিছুটা বিজাতীয় মনোভাব নিয়ে "বাথরুমের" দিকে পা বাড়াল...
কাহিনীটি এখানেই শেষ।
তবে লক্ষ্যভেদে অরু কতটুকু পারদর্শিতা প্রদর্শন করতে পেরেছিল সে ব্যাপারে সে কিছু জানায় নি। আপনাদের কারো কৌতূহল থাকলে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারি...


মন্তব্য

কীর্তিনাশা এর ছবি

হা হা হা। মজা পাইলাম মৃদুল ভাই।
---------------------------
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে !

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

তারে শোকর গুজার করতে কন যে বাঁশঝাড়ে যাইতে হয় নাই... বাঁশঝাড়ে কর্ম সাবাড় কইরা পত্রপল্লব দ্বারা শৌচকর্ম করিবার অভিজ্ঞতা কেমন বলেন তো?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ধুসর গোধূলি এর ছবি
নজমুল আলবাব এর ছবি

আবার কি হাগু সংক্রান্ত লেখালেখি শুরু হইল নাকি? আরেফিন এইটা না দেখলেই হয়। তার আবার এই বিষয়ে বিরাট কালিকশান আছে।

হলুদ কার্ড দেখানো হইল। লাল কার্ড প্রস্তুত আছে।

সৌরভ এর ছবি

আলবাব ভাইর মন্তব্যে বিপ্লব।
সচলদের মাঝে সংক্রামক ব্যাধি খুব দ্রুত ছড়ায়।
(এক পরিবার তো)


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

কোন আরেফিন বস? আরাফাতের কথা জানি... যার হাগু সং বিখ্যাত... বিশ্বের সেরা সেরা গানগুলার হাগুপ্যারোডি ভার্সন বানাইছে... আমার শেষ জানামতে দশটা কমপ্লিট হইছে... আমার কাছে ছয়টা আছিলো... সুমন পাটোয়ারীর কাছে সবগুলা আছে... সে এক দারুন কালেকশন...
পিঙ্ক ফ্লয়েডের দ্য ওয়াল থেকে শুরু করে সে যে বসে আছে... সব গানই এক কাতারে দাঁড়াই...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সবজান্তা এর ছবি

ইনি হচ্ছেন আমাদের প্রিয় সচল লুৎফুল আরেফীন। এই সংক্রান্ত তাঁর কিছু "দুর্গন্ধময়" সুপাঠ্য লেখা ছিলো এখানে আর এখানে


অলমিতি বিস্তারেণ

তীরন্দাজ এর ছবি

গল্প ভাল লাগলেও কৌতুহল যে নেই, তা সরাসরিই বলে দিলাম!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

পার্বত্য চট্রগ্রামে শুনেছি সচু করার বিশেষ এক পদ্ধতি আছে।কাঠি পদ্ধতি।

---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

রায়হান আবীর এর ছবি

তার্পর কি হইলো?

---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍সবই বুঝলাম, কিন্তু প্রথম বাক্যে ("ঘটনাটা যথারীতি আমার নয়") "যথারীতি" শব্দটির ব্যবহার বুজতার্লাম্না চোখ টিপি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

মৃদুল ভাই, অরু ভাইয়ের নাকাল অবস্থাটাকে এভাবে সবার সামনে আনা ঠিক হলো? বেচারা এমনিতেই লাজুক, মুখচোরা টাইপের লোক।

রাফি এর ছবি

পরের কাহিনী ও পাত্রী দর্শন নিয়ে একটা পোস্ট চাই; এবারেরটা
"শেষ হইয়াও হইল না শেষ".

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

একটা ব্যস্ত ট্রাভেল এজেন্সির বাথরুমে আমি একটা কাগজে লেখা দেখেছিলাম
- ভাইজানেরা। ছিদ্রে ছিদ্রে মিলইয়া কাম সারিবেন

(হয়তো কেউ নিজের ছিদ্রের সাথে কমোডের ছিদ্র না মিলাতে পেরে ছ্যারবেরা করে দিয়েছিল)

০২
সিলেট মেডিক্যালের টয়লেটের দেয়ালে লেখা দেখেছিলাম একবার
হে মহান জ্ঞানী
হাগিয়া লইও পানি

ধুসর গোধূলি এর ছবি
মাহবুব লীলেন এর ছবি

সিলেট মেডিক্যালে সিলেটের লোকজন পড়ে না স্যার

খেকশিয়াল এর ছবি

টয়লেটে সাহিত্য একটা মহান ব্যাপার, আমার এক ফ্রেন্ড ইমরান তাদের খুলনা ভার্সিটির হলের কমন টয়লেটে ফাটাফাটি একখান কবিতা লিখসে, দেখি কি লেখা
' সাধু বাবার গুহ্য হইতে বেরোয় ঐশী রব
ওহী বলে সাধন বিনা হাগন অসম্ভব '

-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

না জিগাইয়াই লেখা শুরু করলেন। তাই তো কই লেখাটা কেন শেষ হইলো না!

____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।