ষড়্ ঋতুর দেশকে কিছুদিনের জন্য ছেড়ে, এলাম চার ঋতুর দেশে।
আমার অনেক শখের একটি হলো ছবি তোলা। তাই প্রায়ই একলা দুপুরে ক্যামেরা নিয়ে হেঁটে বেরিয়েছি বাড়ির আশে পাশের রাস্তায়, রাস্তার ধারে, ঘন গাছগাছালিময় কোন বাড়ির পেছনে, বাগানে সর্বত্র। এভাবেই মাঝে মাঝে টুকটুক করে ছবি তুলেছি প্রকৃতির। নানান ঋতুর। আমার শখের তোলা কিছু ছবি থেকে কয়েকটি এখানে দিলাম। সেই রকম তুলিনা লইজ্জা লাগে, তার উপর আমার ইয়া লেন্স ওয়ালা ক্যামেরাও নেই তবু চেষ্টা- যদি কিছুটা রঙ ছড়িয়ে দিতে পারি আজ……….
এখানে, শরৎ এ পুরো রাস্তার দু’ধারকে মনে হলো জল রঙ করা ছবি! গিয়েছিলাম বাড়ির কাছের একটি পার্কে, ফটো আর কি তুলবো! পার্কের ভিতরে ঢুকে তো আমি ‘থ’! অ্যাঁ গাছগুলোতে অল্প কিছু সবুজ পাতা তখন অবশিষ্ট! বাকিগুলোতে লাল, কমলা আর হলুদ তিনটি রঙই যেমন শোভা পাচ্ছে, তেমনি কোন কোন গাছ পুরোটাই লাল অথবা হলুদ! আর ঝরে যাওয়া শুকনো পাতাগুলো ছড়িয়ে রয়েছে ঘাসের উপর, বাদবাকিরা জলের নীচে তলিয়ে গিয়ে পুকুরটিকে রঙ্গিন করে তুলছে! সেই লাল আমায় মনে করিয়ে দিলো ফেলে আসা প্রিয় কৃঞ্চচূড়ার কথা…..
যেদিকে তাকাই, শুধু লাল, সবুজ আর কমলা!
জলের নীচে পাতারাজি
ঝরে যাওয়া শুকনো পাতারা
শীত এলো। সেই জলরঙ্গা ছবির অবসান ঘটলো। শুষ্কতা এসে পাতাগুলোকে গাছ হতে শুধু যে ছিনিয়ে নিয়ে গেলো তাই নয়, ঝেড়ে নিংড়ে প্রাণহীন করে রেখে গেলো চারিধার! ক্যামেরা হাতে আমি- কি করি? যেদিকে তাকাই শুধুই অভিমানী আবরণহীন বৃক্ষরাজিরা একেলা দাঁড়িয়ে। তারপরও অপেক্ষায় রই….. আমার অদেখা এক কাঙক্ষিত দৃশ্যের অপেক্ষায়। তুষারপাত। জানালা দিয়ে যখন ছোট ছোট তুলার বলের মত নরম তুষার পরতে দেখলাম, মুগ্ধতা কাটাতে পারিনি বেশ খানিকক্ষণ! লাফিয়ে পরে আমি আমার জাম্বু জ্যাকেট আর টুপি পরে বেরিয়ে গেলাম। দেখি, নীচে সাদা! যতদূর চোখ যায় সামনে, সব সাদা! উপরে আকাশ থেকেও ভেসে ভেসে আসছে আরও সাদা তুলার বলেরা, আমি তাকিয়ে থাকি……..তুলো গুলো পরতে থাকে আমার গায়ে, মুখে, চুলে। ভিজিয়ে দেয় আমার চশমা……আমি হাসি, তুলো ঢুকে পরে আমার মুখে! একসময় তুষারপাত কমে আসে, খেয়াল হয় আংগুল গুলো জমে ব্যথা করছে! কি আর করা! দৌড়ে প্রায় জমাট বাঁধা বরফের উপর দিয়ে মচ্ মচ্ করতে করতে বাসায় ফিরি।
অভিমানী বৃক্ষ
আমার জানালা দিয়ে তুষারপাত
বরফে ঢাকা পথ
শীতের শেষে খুব অল্প সময়ের জন্য চেরী গাছের পাতাগুলো সব থোকা থোকা সাদা আর হাল্কা গোলাপী ফুলে উপচে পড়তে থাকে। এর নাম চেরী ব্লসম। এর তেমন ছবি তোলা হয়নি তবে বসন্তের অন্য কিছু রঙ্গিন ছবি দিলাম। এসময় চারপাশ কচি সবুজে ভরে ওঠে, প্রাণ ফিরে পেয়ে দোল খায় গাছেরা।
চেরী গাছের এক অংশ সব শেষে গ্রীষ্ম। গরমে যখন প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত হবার জোগাড়, সবাই তখন ছোটে একটু শান্তির নিরিবিলি কোন প্রাকৃতিক পরিবেশে, অথবা কোন সমুদ্রতীরে…..। তাই সেঁটে দিলাম ছায়াময় উদ্যান, সমুদ্রতীর আর লেকের পারে দাঁড়িয়ে তোলা জলের ছবি অথবা বলতে পারেন জলছবি! সমুদ্রতীরের নীল......
ঘন সবুজ দু'ধার
লেকের পারে
গাছের ছায়ায় শান্তির ঘুম
সূর্যাস্ত
এই ছবিটি কি, কেউ কি বলতে পারেন?
মন্তব্য
সুন্দর ছবি...
ধন্যবাদ আনোয়ার।
__________________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
অসাধারণ সব ছবি!!
অনেক ধন্যবাদ মামুন ভাই !
_______________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
সুন্দর সব ছবি, কিন্তু এক সাথে অনেক হয়ে গেল না? ভাগে ভাগে দিলে মনে হ্য আরো ভালো হতো। শেষের ছবিটা বোর্ড ওয়াক থেকে পানিতে সৃষ্টি প্রতিফলন বলে মনে হচ্ছে। আশাকরি এমন ছবি ব্লগ আরো আসবে
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
উত্তর সঠিক হইয়াছে। আপনার তো অনেক বুদ্ধি!
__________________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
wow! মুগ্ধ হয়ে গেলাম। কী অসাধারণ সব ছবি!
তাই নাকি? তবে আপনার গুলোর চেয়ে অসাধারণ নয়!
______________________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
হা হা হা। তারচেয়েও বহু বহুগুণ বেশি অসাধারণ
অসাধারণ হইছে ছবিগুলি আপু। জলের নীচে পাতারাজি আর শীতের সূর্যাস্ত ছবি দুইটা দুর্দান্ত লাগছে।
/
রেশনুভা
ধন্যবাদ রেশনুভা!
_______________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
খুব-ই ভালো লাগলো!
ধন্যবাদ সিমন
_______________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
অসম্ভব সুন্দর ছবিগুলো!!!!!
৩ নম্বরটা বেশী জটিল
শেষের ছবিটা প্রতিবিম্ব মনে হচ্ছে, কিসের তা বলতে পারছিনা।
ধন্যবাদ পিপিদা! আমিও আপনার জটিল ছবিগুলো দেখে এলাম ফ্লিকার থেকে সেদিন, দারুণ তোলেন!
আর হ্যা, উত্তর সঠিক হয়েছে। জলে আমাদের প্রতিবিম্ব ছিলো ওটা
_____________________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
হা হা . . কী যে বলেন এসব টুকটাক খুটখাট আরকি
ছবিগুলো খুব সুন্দর। আপনার বড় বড় লেন্স না হইলেও চলবো। কিন্তু এক বছরের ছবি একবারে দিয়ে দিলেন... পরের পোস্ট কি তাইলে আগামী বছর আসবে?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ভাবসিলাম একবার ঢুকলে দ্বিতীয়বার আর কেউ ঢুকবেনা আমার ছবির পোস্টে তাই একবারেই সব নামায় দিলাম!
ধন্যবাদ নজরুল ভাই।
_____________________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
বাহ্!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
ধন্যবাদ তীরন্দাজ।
__________________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
বেশীর ভাগ ছবি যদিও আমার আগের দেখা তাও দারুন লাগলো।
আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে শীতের সূর্যাস্ত ও জলের নীচে পাতারাজি।
তোমার ক্যামেরায় প্রকৃতি এরকম সুন্দরভাবে আরো ধরা দিক সেই কামনা করি।
ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা ...
অনেক ধন্যবাদ আপু!
___________________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
মৃত্তিকা,
মুগ্ধ হয়ে গেলাম ছবি গুলো দেখে-----
আর কী কী গুন লুকিয়ে রেখেছ, বলো
চমৎকার লাগল লেখাটা। আরো আসুক।
শুভেচ্ছা
আর তেমন বাকি নেই, প্রায় শেষের দিকে
অনেক ধন্যবাদ অনিকেত'দা!
_____________________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
খুব ভাল লাগল আপনার ছবিগুলো। তুলতে থাকুন। মাঝে মাঝে আমাদেরকে দেখাবেন। আর একবারে বেশি ছবির ব্যপারে আমার কোন আপত্তি নাই। ছবি তোলার হার বাড়িয়ে দেন। তাহলেই হবে।
অনেক ধন্যবাদ রিয়াজ ভাই, আপনার উৎসাহের জন্য!
____________________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
বাহ!
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
ধন্যবাদ
_______________________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
অসাধারন মৃত্তিকা অসাধারন। পাঁচ তারা
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
ধন্যবাদ তানবীরা আপু
__________________________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
'জলের নীচে পাতারাজি' এই ছবিটা দেখে মনে হচ্ছে এটা ক্যামেরাবন্দী ছবি না বরং অসাধারণ কোন চিত্রকরের সৃষ্টি। বাস্তবও এতো সুন্দর হয় মাঝে মাঝে দেখে অবাক লাগে!
দৃশা
সেরা ছবি না এটা? বলেন?
আমার মতে - 'নিঃসন্দেহে!'
ধন্যবাদ দৃশা। আসলেই তাই। প্রকৃতি বড় বেশী রকম সুন্দর....
_______________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
দুর্দান্ত সব ছবি!
অজানা ফুলের নামগুলো হবে:
১) লিলি (কোনজাতের সেইটা বলতে পারি না, বোধ হয় রেইন লিলি, Zephyranthes citrina)
২) পিটুনিয়া
৩) জানি না
৪) প্যানসি
৫) পীস (শান্তি) লিলি (Spathiphyllum wallisii)
বাহ্! এই অদ্ভূত ফুল্গুলোর নামও জানেন আপনি? প্রথমটি চেরী গাছ ভেবেছিলাম।
ভালো লাগ্লো জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ পাঠক'দা!
_______________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
প্রকাশের প্রায় সাথে সাথেই দেখেছিলাম, কিন্তু মন্তব্য করা হয়ে ওঠেনি। দারুণ লাগলো ছবিগুলো। ক'দিন আগেই ভার্জিনিয়া থেকে চলে এলাম। এমনই নৈসর্গিক বৈচিত্র্য দেখতাম সেখানে। মন খারাপ হয়ে গেছিলো ছবিগুলো দেখে। আবারও দেখে একই রকম শূন্যতা মোচড় দিলো।
শেষ ছবিটা দেখে এত্তবড় একটা ডোনাট মনে হচ্ছিলো। রমজান মাস তো... চেনা-অচেনা সবকিছুকেই প্রথম দর্শনে খাবার মনে হয়!
ধন্যবাদ ইশতিয়াক!
বলছেন কি? এই ছবিটিকে আপনার ডোনাট মনে হলো!
নাহ্, এই ছবির মহত্ত্ব কেউ বুঝলোনা আমার কাছে এটাকে ঠিক একটা জলছবি(water colour painting) এর মতন লাগে!
_________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
বাহ, সুন্দর তো! কোন জায়গায় তোলা এগুলো?
ধন্যবাদ যুধিষ্ঠির!
এগুলো আমেরিকায় ডেলাওয়ার এর এখানে সেখানে তোলা।
______________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
খুব সুন্দর। ফুলগুলো এত চমৎকার! আর ঐ রঙীন হেমন্তসৌন্দর্য! আহ।
ভালো থাকবেন, এমন লেখা আরো দেবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ধন্যবাদ তুলিরেখা।
আপনিও ভালো থাকুন।
______________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
ছবিগুলির জন্য
আমি যতোদূর জানি, আমি আপনাকে সচলায়তনের বাইরেও একটা পরিচয়ে চিনি। আপনি সম্ভবত সে'টা জানেন না। দেখা যাক, আন্দাজ করতে পারেন নাকি
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
ধন্যবাদ সবজান্তা।
আপনি যখন সবজান্তা, তখন আর কি উত্তর দেবো?
তবে মনে হচ্ছে আপনি ফটোগ্রাফি গ্রুপের একজন সদস্য। কী? ঠিক বলিনি?
_______________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
উহু, ঠিক বলেননি। আরো একটু ভাবেন। না পারলে তখন না হয় বলবো
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
না রে ভাই, ভেবে কোন কূল পেলাম না! এর চেয়ে বলেই ফেলুন।
______________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
আমি তমালের বন্ধু। আমার পুরা নাম হচ্ছে জ্যোতির্ময় বনিক, যদিও বন্ধু বান্ধবের উচ্চারণ আয়েশের কারণে, সবার মুখে শুধু বনিক নামটাই বেশি ঘুরে।
তমালের কাছ থেকে শোনা যে আপনি সচলায়তনে লিখছেন।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
হুম। বলা হয়নি, কিন্তু পরের সন্দেহটা সঠিক ছিলো তাহলে আমার। তোমার নাম শুনেছি অনেক। এখন তো তাহলে তোমার লেখাগুলোও পড়া হবে নিয়মিত!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আরেকবার। ভালো থেকো।
______________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।
যাক ! আমার লেখার পাঠক সংখ্যা এক বাড়লো
ভালো আছেন তো ? নতুন কিছু লিখে ফেলুন জলদি...
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
আহারে, এই মহিলা পুরো গায়েবই হয়ে গেল সচল থেকে!
আপু, আপনি কইইইইইইইইইইই?
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
নতুন মন্তব্য করুন