মাথার ডান কোণে হাত চাপা দিয়ে বসে আছে রোদেলা। সেখানে দপ্ দপ্ করে ব্যথা করছে। গতরাতে ডিউটি ছিলো হাসপাতালে, আজ ঘুম হওয়াটা জরুরী ছিলো খুব।
ঘূর্ণ্যমান ফ্যানের দিকে চেয়ে থাকা, পাশের ঘর থেকে অবিরাম কাশির শব্দ আর মাঝে মাঝে আতংক ধরিয়ে দেয়া দু একটি কুকুরের ডাক......... এই এক চক্রে রাত কাবার। তবু আরেকটু বেশী সময় না নিয়েই উঠে পড়ে সে। হাসপাতালে যাবার সময় হয়ে এলো।
মুখ হাত ধুয়ে, কাপড় পাল্টে বেরোবার পথে রান্না ঘরে গেলো সে। টেবিলে চা নিয়ে বসে ছিলেন মা।
“কী রে, ঘুম হয়েছে আজ?” উত্তরের অপেক্ষা না করেই আবার বললেন---
“শোন, চাল প্রায় শেষ। আসবার সময় চাল আর কিছু তরকারী নিয়ে আসিস তো।”
চা বিস্বাদ লাগতে থাকে রোদেলার। তবু পুরোটা শেষ করে। ক্ষুধা মরুক। দুপুরের আগে যেনো কিছু খেতে না হয় আর।
“যাচ্ছি”, বলেই বেরিয়ে পড়ে সে।
দু’কামরার ছোট্ট ঘরটির দোর পেরিয়েই লম্বা একটা শ্বাস নেয় রোদেলা। একবারও পেছনে ফিরতে ইচ্ছে হয় না তার। হয়তো মা তাকিয়ে আছেন। অথবা নেই। কিন্তু সে সেই ক্লান্ত, ভারাক্রান্ত মুখটির ছবি নিয়ে বের হতে চায় না, থাকুক তা পেছনে পরে। যতোক্ষণ এই দু’কামরার গন্ডির ভেতরে থাকা, পুরোটা সময়ই তো দেখতে হয় সেই মুখ। নিঃশ্বব্দে শুনে যেতে হয় প্রতিটি না পাওয়ার কথা, ক্লান্তির কথা, অসুখের কথা, ওষুধের কথা। থাকুক না সেসব একটু সময় দূরে পরে।
পুরোনো স্যাঁতস্যাঁতে সিঁড়ি বেয়ে নেমে যেতে থাকে রোদেলা..........শ্যাওলা ধরে যাওয়া অন্ধকার পথ পেছনে ফেলে। হেঁটে চলে দ্রুত পায়ে আর এক মুখস্থ পথ ধরে। অর্ধেক পথ গিয়ে রিক্সা নেয়। সারাদিনের মধ্যে এই সময়টি তার খুব ভালো লাগে। নিজেকে মুক্ত লাগে। ভালো লাগে উপরে নীল আকাশ দেখতে, বাতাসের ঝাপ্টা আর দু'পাশ......... আর ভালো লাগে সারাদিনের ফাঁকে অমিয়'কে চিঠি লিখতে।
হাসপাতালের গেট দিয়ে ঢোকার পথে সালাম দেয় দারোয়ান, তারপর একে একে লিফ্টস্ ম্যান ফ্লোরবয়, নার্স সকলে। উত্তরে ম্লান হেসে তাকায় সে। নিজ ফ্লোরে উঠে রোদেলা এসে বসে তার চেয়ারে। সামনে এক স্তুপ ফাইল পড়ে আছে তার জন্য। মৃদু হয়ে আসা কান্না আর বিলাপের আওয়াজ ভেসে আসছে কোন খান থেকে। হয়ত কোন রোগী মারা গেছেন গত রাতে। এক মিনিট দম নিয়ে ড্রয়ার থেকে ডাক্তারী সরঞ্জাম নিয়ে চলে যায় সে কেবিনগুলোর দিকে।
একে একে ১৭জন রোগীর বর্তমান অবস্থা পরীক্ষা করে, সেই মতো ব্যাবস্থাপণা নিশ্চিত করে ঘর্মাক্ত অবস্থায় টেবিলে ফিরে আসে রোদেলা। দেখে, দেয়ালে নতুন রুটিন ঝুলছে। তাতে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে বসে পড়লো ফাইলগুলো নিয়ে। ফ্রেশ অর্ডার সারতে সারতে ঘড়িতে যখন দুপুর ১টা বাজলো, তখনও ওর ঘাম শুকোয়নি।
ব্যাগ থেকে লেখার ছোট্ট খাতাটি বের করে সে। লিখতে শুরু করে এবার অমিয়’কে।
“কেমন আছো?
আমি ভালো নেই। জানো? আজও রাতের ডিউটি। ভাবতেই মেঘ জড়ো হচ্ছে আমার আকাশে! আবারো সেই মরণাপন্ন রোগী গুলোর পাশে আত্মীয়দের কান্না হাসি, নার্স-বয়দের কোলাহল, ভুতুরে করিডোর। আবারো একাকি আরেকটি রাত জেগে থাকা।
তুমি কবে আসবে?
আজ কি ওখানে বৃষ্টি হয়েছিলো? কি খেয়েছিলে দুপুরে? তোমার তো এখন রাত। ঘুমুচ্ছো নিশ্চয়ই।
আচ্ছা, আমাকে আর লেখো না কেনো অমিয়?”
রোদেলার চোখ ভারী হয়ে ওঠে, অক্ষরগুলো ঘোলা হয়ে যায়। মনের মেঘেরা দলা পাকিয়ে গলার কাছে উঠে আসতে চায় আবারও, বহু কষ্টে থামাতে চেষ্টা করে সে তা।
"জানো, বাবার অসুখটা বেড়ে গিয়েছিলো আবার। ফুসফুসে পানি জমে একদম বাজে অবস্থা! তারপরও মা দিচ্ছিলো না হাসপাতালে ভর্তি করতে। বলছিলো, আর কতোবার হাসপাতালে নিবি? ভর্তি করলেই তো জলের মতন টাকা বেরিয়ে যাবে। এত টাকা কোথায় পাবো? রাগে আমি কোন কথা বলতে পারিনি। বাবার চোখের দিকে চেয়ে ছিলাম শুধু। শুকনো খটখটে ঠোঁট, খসখসে চামড়ায় হাড় জির জিরে এক বৃদ্ধ যুদ্ধ করে যাচ্ছেন বুক ভরে বাতাস নেবার জন্যে। চোখ দুটোয় পানির সমুদ্র, বুঁজলেই ভাসিয়ে দেবেন সব। বাবা কি শুনতে পাচ্ছিলেন সেসব কথা? জানিনা।
পর মুহুর্তেই দম্কে দম্কে কেশে চল্লেন বাবা, বুক চীরে দমটুকু যেন বেরিয়ে পরবে এখুণি! আমি আর পারলাম না। ছুটে যেয়ে একটা ট্যাক্সি নিয়ে এলাম। তাতে বাবাকে শুইয়ে নিয়ে চল্লাম হাসপাতালে। তারপর দু সপ্তাহ। অনেক ঝড় গেছে এরপর.......।
তুমি কেমন ছিলে অমিয়?
অভাবে মানুষ সব পাথর হয়ে যায় মনে হয়। তাই না? সে সময় মা’কে ভীষণ নিষ্ঠুর মনে হয়েছিলো। অথচ আজ দেখো, আমিই কতটা নিষ্ঠুর হয়ে গেছি। ঐ দু’কামরার বাক্স থেকে বের হতে পারলে যেনো বেঁচে যাই! ওখানে আমার ঘুম আসে না। সারারাত শুধু নষ্ট ফ্যানের ঘটাং ঘটাং শব্দ! অপেক্ষা করি শুধু ভোর হবার। মায়ের চোখের দিকে তাকাতে ইচ্ছে করেনা। শুনতে ইচ্ছে করে না শুধু নেই, আর নেই।
জানো অমিয়, আমি সেদিন একটা লটারীর টিকেট কিনেছি। জানি, পাবো না। তবু কিনি। দেখতে চাই, ভাগ্য আর সংগ্রাম দুটো কোথাও গিয়ে কখনও মেলে কিনা। তোমার কি মনে হয়, মিলবে?
আচ্ছা অমিয়, তুমি কি সত্যিই কথা রেখে আজও লড়ে যাচ্ছো একদিন ফিরবে বলে? নাকি ভাগ্যের সন্ধান পেয়ে গেছো এতদিনে? জানিনা। শুধু জানি, আমার এ সংকল্পের শক্তিতে, আমার সারাদিনের পরিশ্রম আর ছুটে চলার মাঝেও আমি তোমার অপেক্ষা করে থাকি।"
চিঠিটা আর শেষ করতে ইচ্ছে করেনা, অসমাপ্ত রেখেই খাতাটি বন্ধ করে দিলো রোদেলা। চোখ বন্ধ করে হেলান দিয়ে বসে রইলো বিষন্নতার সাথে যুদ্ধ করতে। হঠাৎ টেবিলের উপরে ফোন বেজে ওঠে। নীচ তলার এক রোগীর অবস্থা খুব খারাপ হয়ে পড়েছে, ফ্লোর ডক্টর ডেস্কে নেই, জলদি এসে যেনো দেখে যায় রোদেলা।
গরমে ভিজে যাওয়া ক্লান্ত দেহ মন নিয়েই রোদেলা উঠে পড়লো। মুহুর্তেই ভূলে যায় বিষন্নতা, ভুলে যায় আধখানি লেখা চিঠির কথা, ভুলে যায় ক্ষুধার কথা আর ব্যাগের কোণে মুচড়ে পড়ে থাকা লটারীর কাগজটির কথা.......।
দৌড়ে চলে সে সিঁড়ি বেয়ে কর্তব্যের পথে। ছুটে চলে সে উত্তপ্ত দুপুরে স্যাভলনের গন্ধ মাখা বদ্ধ করিডোর ধরে......... অন্ধকার কোণে এক কেবিনে, ঔষধ সজ্জিত ট্রলীর পাশে শয্যাগত এক জীর্ণকায় মানুষের জন্য।
মন্তব্য
ভালো লাগলো আপু।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
ধন্যবাদ রেশনুভা
মন খারাপ হয়ে গেল।
লেখাটি আমিও খুব আবেগের সাথে লিখেছিলাম।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ অনিন্দিতা।
ভালোলাগা জানাচ্ছি।
শেখ নজরুল
শেখ নজরুল
জেনে ভালো লাগলো, পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
কেমন মায়াজড়ানো লেখা, কেমন জীবন্ত একটা লেখা! চেনা সংসারের ইঁটকাঠকুটোকাটা পার হয়ে জেগে থাকা এক জানালাভর্তি আকাশের গল্প। আশা করতে ইচ্ছে হয় রোদেলাকে জিতিয়ে দেবেন পরের কোনো গল্পে।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এত চমৎকার একটা মন্তব্য পড়বার পর কিছু কি বলার থাকে আর?
অসংখ্য ধন্যবাদ তুলি'দি
আশা নয়! আমিও পরের গল্পে লেখিকার কাছে এই সুতীব্র দাবী জানাচ্ছি।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
গল্প ভাল লেগেছে, মৃত্তিকা।
ব্যাবস্থাপণা -----> ব্যবস্থাপনা
কষ্ট করে আমার এসব পড়ার জন্য ধন্যবাদ অনিকেত'দা।
বানান ভুলের জন্য (জিভে কামড় ইমো)
চমৎকার
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
অসংখ্য ধন্যবাদ রেনেট, সময় নিয়ে পড়ার জন্য
- বেশ লাগলো তো রোদেলা'র কথা শুনতে!
আচ্ছা রোদেলা কি কেবল এই হাসপাতালেই চাকরী করে? এটা কি সরকারী হাসপাতাল? অন্য কোথাও প্র্যাকটিস করে না?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
উহু, অন্য কোথাও চাকরী করে না।
কেনু ধুগো'দা?
- তাইলে ডাক্তার সুবিধার না। ভাদাইম্যা কিসিমের।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আহারে...
...........................
কেউ আমাকে সরল পেয়ে বানিয়ে গেছে জটিল মানুষ
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ভাল্লাগলো আপুনি...
আরেকটু নিয়মিত হওয়া যায় না??
--------------------------------------------------
"আমি তো থাকবোই, শুধু মাঝে মাঝে পাতা থাকবে সাদা/
এই ইচ্ছেমৃত্যু আমি জেনেছি তিথির মতো..."
*সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
যায় তো......কিন্তু কি লিখবো এতো?
ভালো লাগলো তোমার মন্তব্য পেয়ে তিথীডোর!
মৃত্তিকা খাতুন তাহলে বাক্স থেকে বের হয়েছে শেষমেষ, লেখা খুব ভালো লাগল, যেন মনে হল ৭ তালার নন-পেইং ওয়ার্ডের রুমে বসে ছিলো তোমার 'রোদেলা'।
তবে, যেভাবে ডাকাডাকি করলা 'অমিয়' কে, আমি ভাবলাম, খাইছে আমারে, কারন আমাদের সময় শিকদারের এক চিড়িয়া ছিল, যে নাইট ডিউটির নামে ... ... ...।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
এই রোদেলা আমার নিকট এক বন্ধু। বি এম সি'র কাহিনী না।
মন্তব্যের জন্য থ্যাংকু।
তো, নতুন গাড়ী কেমন চলে ভাইয়া?
- কিন্তু, একজন ডাক্তারের বাবা-মায়ের ফ্রি চিকিৎসা পাবার কথা না? গল্পে যে উল্লেখ করলেন 'জলের মতো টাকা বেরিয়ে যায় হাসপাতালে নিলে!'
যদি অষুধের জন্য তা হয়, তাহলে সেটা তো হাসপাতালে না নিলেও হওয়ার কথা। অষুধ তো সবসময়ই লাগার কথা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
উদ্ধৃতিঃ
"কিন্তু, একজন ডাক্তারের বাবা-মায়ের ফ্রি চিকিৎসা পাবার কথা না? গল্পে যে উল্লেখ করলেন 'জলের মতো টাকা বেরিয়ে যায় হাসপাতালে নিলে!"
--অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কদাচিৎ একথা সত্য হলেও, বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই এটা আসোলে ভুল একটা ধারণা। সাধারণত ছাত্রাবস্থায় বা পরবর্তিতে পরিচিতদের কারণে একজন ডাক্তার ফ্রি-চিকিৎসা পেলেও পেতে পারেন কিন্তু তাঁর পরিবার নয়।
আর গল্পে, ওর বাবাকে তো একাধিকবার হাসপাতালে যেতে হয়েছে, তাই এই অভাবের সংসারে ওর মা চিন্তিত ছিলেন কিকরে নিজেরা বেঁচে থাকা যায়। ভাবছিলেন মরণাপন্ন এই মানুষটির পেছনে টাকা ঢেলে কোন লাভ হবে কিনা আদৌ।
গল্পে কিছু কিছু জায়গায় ছবিটা দেখতে পারলাম। ভাল লেগেছে।
ধন্যবাদ আনন্দী।
খুব খুব ভালো লাগলো।
পড়তে দেরি হলো, এইদিকে আসি আসি করছিলাম দু'দিন থেকেই। তবু, এত পিছিয়ে এসে হ'লেও, এত পিছনে প'ড়ে থাকলেও, থাকলাম তো।
খুবই ছুঁয়ে যাওয়া, খুবই দেখিয়ে যাওয়া, খুবই ভিজিয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া লেখা।
অনেক লিখুন। অনেক ভালো থাকুন।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
আপনার মত লেখকের মুখে এত প্রশংসা শুনলে লজ্জা লাগে
আপনিও ভালো থাকুন।
নতুন মন্তব্য করুন