আজ একই সাথে তিন তিনটি দিবস পালিত হচ্ছে বিশ্ব জুড়ে। আইনস্টাইনের জন্মদিন নিয়ে একটি লেখা প্রথমেই এসেছে সচলায়তনে। পাই দিবস নিয়েও লেখা হয়ে গেছে। বাকি থাকলো কেবল টক লাইক আ ফিজিসিস্ট দিবস। কেন এই দিবসটি প্রয়োজনীয় হয়ে উঠলো তা বলে নেই আগে। মানব সভ্যতার প্রকৃত অগ্রগতি বিচার করতে হয় সামষ্টিক জ্ঞানের ভিত্তিতে। যেমন, পৃথিবী সূর্যের চতুর্দিকে ঘুরছে এটি বর্তমানে একটি সামষ্টিক জ্ঞান। সবাই জানে এটা। কিন্তু, পৃথিবীর গতিটা আসলে এতো সরল নয়। এর মধ্যে প্যাঁচ আছে আরও। চার'শ বছর আগে নিউটনই এসব প্যাঁচের কথা বলেছিলেন। এতো দিনেও সেই প্যাঁচগুলো আমাদের সাধারণ জ্ঞানে আসে নি। তার মানে সামষ্টিক জ্ঞানের বিচারে মানব সভ্যতা এখনও পিছিয়ে আছে অনেক। টক লাইক আ ফিজিসিস্ট দিবসের উদ্দেশ্যই হল এই সামষ্টিক সাধারণ জ্ঞানের প্রসার ঘটানো। গাণিতিক জটিলতা না বুঝলেও পদার্থবিজ্ঞানের মৌলিক তত্ত্বগুলোর সাধারণ জ্ঞান এবং তার মর্মার্থ জানতে হবে সবার। নয়তো বিজ্ঞানমনস্ক সভ্যতা গড়ে উঠবে না। দিবসটি সম্বন্ধে জানতে হলে এখানে যান।
এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই টক লাইক আ ফিজিসিস্ট নামের এই বিজ্ঞান ধারাবাহিকটা শুরু করছি। আমি এমনভাবে লিখার চেষ্টা করবো, যাতে বিষয়টা বুঝেই কেউ ক্ষান্ত হয়ে না যান। একই সাথে তিনি যেন পদার্থবিজ্ঞানীর মত সেটা বুঝিয়ে দিতে পারেন অন্যদেরকে। আজ যেহেতু আইনস্টাইনের জন্মদিন, তাই তার সব থেকে যুগান্তকারী আবিষ্কারটির গল্প দিয়ে শুরু করছি। এই বৈপ্লবিক আবিষ্কারের নাম সাধারণ আপেক্ষিকতা।
আপেক্ষিকতা কাকে বলে সেটা আমরা সবাই জানি। পরমের বিপরীত হলো আপেক্ষিকতা, একটির সাপেক্ষে অন্যটিকে বিবেচনা করার নামই আপেক্ষিকতা। আপেক্ষিকতার সাধারণ ধারণাটি কিন্তু আইনস্টাইন প্রথম দেননি। নিউটনই তার গতির সূত্র দিয়ে প্রথমে আপেক্ষিকতার কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, পরম স্থিতি বা পরম গতি বলতে কিছু নেই। স্থিতি বা গতির বিচার অন্য কোনটির সাপেক্ষে করতে হয়। সেখান থেকেই বোঝা গিয়েছিল, স্থান হলো আপেক্ষিক। পরম স্থান বলতে কিছু নেই। এরিস্টটল বিশ্বাস করতেন স্থান এবং কাল সবই পরম। নিউটন বললেন স্থান আপেক্ষিক কিন্তু কাল পরম। আর আইনস্টাইন ১৯০৫ সালে এসে বললেন স্থান ও কাল, কোনটিই পরম নয়। পরম একমাত্র আলোর বেগ। আইনস্টাইনের এই তত্ত্বের নাম হলো আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব বা বিশেষ আপেক্ষিকতা। এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলছি না, কারণ এখানে আমাদের বিবেচ্য হল সাধারণ আপেক্ষিকতা।
বিশেষ আপেক্ষিকতা প্রচারের পর মহাকর্ষ নিয়ে ঝামেলায় পড়লেন আইনস্টাইন। তার তত্ত্ব মতে কোন কিছুর বেগ আলোর বেগের থেকে বেশী হতে পারে না। নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্ব অনুসারে, মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু একে অপরকে আকর্ষণ করে; এই আকর্ষণ বল তাদের দূরত্ব যত বাড়ে তত কমতে থাকে। দূরত্ব দ্বিগুণ হলে বলের মান চার ভাগের এক ভাগ হয়ে যায়। এবার পৃথিবী আর সূর্যের কথা ধরুন। সূর্যকে যদি তার জায়গা থেকে আরও দূরে সরিয়ে নিয়ে যাই তাহলে পৃথিবীর উপর তার মহাকর্ষ বলের মান কমে যাওয়ার কথা। মহাকর্ষ তত্ত্ব অনুসারে বলের মানের এই পরিবর্তন ঘটতে কোন সময়ই লাগবে না। তার মানে মহাকর্ষ বলের বেগ অসীম। সূর্য থেকে আলো পৃথিবীতে আসতে আট মিনিট লাগে, আর মহাকর্ষ বলের প্রভাব আসতে কোন সময়ই লাগবে না? বিশেষ আপেক্ষিকতা মতে তো এটা ঠিক হয় না। সব বিজ্ঞানীরা বিশেষ চিন্তিত হয়ে পড়লেন, মহাকর্ষের একটা আপেক্ষিকতাভিত্তিক তত্ত্ব বের করার চেষ্টা শুরু করলেন সবাই। এদের মধ্যে আইনস্টাইনও ছিলেন।
আইনস্টাইনই প্রথমে সফল হলেন। ১৯০৭ থেকে ১৯১৫ সাল পর্যন্ত গবেষণা করে বের করলেন একটা নতুন তত্ত্ব। এই তত্ত্বের নামই আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব বা সাধারণ আপেক্ষিকতা। বুঝতেই পারছেন, সাধারণ আপেক্ষিকতা হল একটি মহাকর্ষ তত্ত্ব। অর্থাৎ মহাকর্ষের এমন তত্ত্ব যা আপেক্ষিকতাকে সমর্থন করে। এতে কিন্তু বিশেষ আপেক্ষিকতারও মান থাকলো। আইনস্টাইন বললেন, সাধারণ অর্থে মহাকর্ষ কোন বল নয়। মহাকর্ষ তাহলে কি? এই প্রশ্নের উত্তরটিই স্থান-কালের মৌলিক ধারণা উন্মোচন করে দিয়েছে আমাদের সামনে। আইনস্টাইন বলেছেন স্থান-কালের বক্রতার প্রভাবই হলো মহাকর্ষ। একটা স্থূল উদাহরণ দিলেই বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
আইনস্টাইনের মতে স্থান ও কালকে পৃথক করার কোন উপায় নেই। স্থানের তিনটি মাত্র ও কালের একটি মাত্রা মিলে তাই চতুর্মাত্রিক স্থান-কালের ধারণা ব্যক্ত করেছেন তিনি। এবার মাত্রার সব ধারণা ঝেড়ে ফেলুন, ধরে নিন স্থান-কাল হল একটি চাদর। এই চাদরের উপরই তাই সব কিছুর অবস্থান। এবার চাদরটি চার কোণায় শক্ত করে বাঁধুন যেন টানটান হয়ে থাকে। এরপর একটি ভারী গোলাকার পাথর চাদরের উপর রাখলে পাথরটি চাদরের মাঝখানে গিয়ে স্থির হয়ে থাকবে। পাথরের ভরের কারণে চাদরটি কুঁচকে যাবে এবং চাদরের মাঝখানের অঞ্চলটা নিচের দিকে ডেবে যাবে। এবার অপেক্ষাকৃত কম ভরের আরেকটি পাথর চাদরের উপর রাখলে কি হবে? নিঃসন্দেহে যেখানেই রাখি না কেন কম ভরের পাথরটি চাদরের মাঝখানে চলে আসতে চাইবে। কারণ বড় পাথর চাদরে যে বক্রতার সৃষ্টি করেছিল তার কারণে, মাঝের অঞ্চলটা ঢালু হয়ে গেছে। এই যে কম ভরের পাথরটা বড় ভরের পাথরের দিকে আসতে চাইছে, এই প্রবণতার নামই মহাকর্ষ।
অদ্ভুত সুন্দর এই তত্ত্বের মাধ্যমে মহাকর্ষ বুঝিয়ে দিলেন আইনস্টাইন। মহাবিশ্বের জটিল চাদরে মাঝখানের বড় পাথরটিকে যদি সূর্য ধরেন, তাহলে ছোট পাথরটিকে বলা যায় পৃথিবী। স্থান-কালের চাদরের বক্রতা থেকে সৃষ্ট মহাকর্ষের মাধ্যমেই সূর্য বেঁধে রাখছে সৌর জগতের সব কিছুকে। এ থেকেই বলা হলো, বিশাল ভরের যেকোন বস্তু স্থান-কালকে বাঁকিয়ে দিতে পারে। ভর যত বেশী হবে সে বাঁকাতেও পারবে তত বেশী। এবারে প্রমাণের কথা আসে। তাত্ত্বিকভাবে প্রমাণিত হলেও সাধারণ আপেক্ষিকতার কোন ব্যবহারিক প্রমাণ আছে কি? উত্তর হল হ্যাঁ। অনেক ব্যবহারিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই প্রমাণগুলো তত্ত্বের মতই অদ্ভুত সুন্দর। এখানে একটি প্রমাণ দিচ্ছি।
আমরা জানি, সূর্যের চারদিকে গ্রহগুলো সব উপবৃত্তাকার কক্ষপথে ঘুরছে। তার মানে সূর্য থেকে একটি গ্রহের দূরত্ব কখনও কমে আবার কখনও বারে। তাহলে এমন একটা সময় নিশ্চয়ই আছে যখন কোন গ্রহ সূর্যের সবচেয়ে কাছে আসে। এই সর্বনিম্ন দূরত্বকে অনুসূর দূরত্ব বলে। সৌর জগতের ৭টি গ্রহের জন্যই অনুসূর দূরত্ব প্রায় ধ্রুবক। অর্থাৎ কক্ষপথগুলো স্থির। একমাত্র ব্যতিক্রম হলো বুধ গ্রহ। এই গ্রহের অনুসূর দূরত্ব প্রতি ১০০ বছরে ১°৩৩'২০'' পরিমাণ এগিয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনাকে বলে অনুসূরের অগ্রগমন। সাধারণ আপেক্ষিকতার আবির্ভাবের পূর্বে এই ব্যতিক্রমী গতিকে ব্যাখ্যা করা যাচ্ছিলো না। অনেকে তাই বুধ ও সূর্যের মাঝে ভালকান নামে আরেকটি গ্রহের কল্পনা করেছিলেন। আমাদের দেশের বইপুস্তকে এই কাল্পনিক গ্রহের কথা পড়েছি অনেকেই। কিন্তু, সাধারণ আপেক্ষিকতা দিয়ে সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা গেল এই অগ্রগমন।
ব্যাখ্যাটা এরকম: সূর্যের বিশাল ভরের কারণে তার চারপাশের স্থান-কালে বক্রতার সৃষ্টি হয়েছে। সূর্যের একেবারে কাছে এই বক্রতার পরিমাণ অনেক বেশী। সূর্য তার নিকট স্থান-কালে যে বিশাল বক্রতার সৃষ্টি করেছে তাকে একটি জলপ্রপাতের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। জলপ্রপাতের পাদদেশে সূর্যের অবস্থান। যত উপরে উঠবো বক্রতার পরিমাণ তত কমবে। বুধ গ্রহের অবস্থান জলপ্রপাতের শুরু হয়েছে যেখানে, ঠিক সেখানে। অর্থাৎ বুধ সূর্যের দিকে পড়ে যেতে চাইছে। এই চাওয়ার প্রবণতা অন্য যেকোন গ্রহ থেকে অনেক বেশী। কারণ অন্য গ্রহগুলো স্রোতের স্বাভাবিক টানে আকর্ষিত হচ্ছে আর বুধ গ্রহ দাড়িয়ে আছে চূড়ান্ত সীমায়। এ জন্য একটু একটু করে সূর্যের দিকে পড়ে যাচ্ছে বুধ। অংক কষে বুধ গ্রহের অনুসূরের অগ্রগমনের মান নির্ণয় করেছিলেন আইনস্টাইন। এই তাত্ত্বিক মান পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত মানের সাথে মিলে গিয়েছিলো।
উদাহরণটা একটু বেশী স্থূল হয়ে গেছে। তাই একটি চিত্র দিয়ে খানিকটা প্রায়শ্চিত্ত করছি। পাশের চিত্রে দেখুন, বুধ গ্রহ উপবৃত্তাকার কক্ষে আবর্তিত হচ্ছে এবং সেই কক্ষপথগুলোও সূর্যের চারদিকে আবর্তিত হচ্ছে। অর্থাৎ কক্ষপথ স্থির নেই। এই চঞ্চল কক্ষের কারণেই অনুসূর বিন্দু পরিবর্তিত হচ্ছে। এই চিত্রটি দেখে অনুসূর বিন্দুটা বোঝা বেশ কষ্টকর। তাই ইংরেজি উইকির একটা লিংক দিয়ে দিচ্ছি: এখানে যান।
আর কি লাগে। বিজ্ঞানীরা মহাজাগতিক রহস্য সন্ধানের চাবিকাঠি হাতে পেয়ে গেলেন। এরপর আবিষ্কৃত হলো আরও অনেক কিছু। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও টিকে রইল সাধারণ আপেক্ষিকতা। মহাবিশ্বের সুবিশাল স্কেলে আজীবন টিকে থাকবে সাধারণ আপেক্ষিকতা আর আইনস্টাইন। তবে সাধারণ আপেক্ষিকতার সাথে বিবাদ রয়েছে কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের। সেটা না হয় আরেক দিন বলবো।
মন্তব্য
আপনার চাদরের ওপর পাথর রাখার কনসেপ্টটা খুব সুন্দর লেগেছে। এতে খুব সুন্দর ভাবে আপেক্ষিকতা বলের কার্যপ্রণালী বোঝা যাচ্ছে। আমি ভাবছি আমার স্কুলের ম্যাগাজিনের লেখায় এই উদাহরণটা ব্যবহার করব। আশাকরি আপনার আপত্তি নেই তাতে ....
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
চাদরের উপর পাথর বা রাবারের থিমটা কিন্তু আমার না। এই উদাহরণটা অনেক স্থানেই ব্যবহার করা হয়। সবচেয়ে জনপ্রিয় উদাহরণ বলা যায়।
স্থূল উদাহরণের মাধ্যমে জটিল বিষয়ও পরিষ্কার হয়ে যায়। সুতরাং অনেক অনেক বাস্তব উদাহরণ তৈরী করাটাও আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। আর যে উদাহরণগুলো আছে সেগুলো তো ব্যবহার করতেই হবে।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
স্পেস-টাইম কার্ভেচার বুঝার জন্য "চাদর/রাবারের চাদরের উপর একটা লোহার বল" ব্যাখাটাই সবচাইতে চমৎকার।
"শিক্ষানবিস/মুহাম্মদ" চমৎকার সব বিষয় নিয়ে পোষ্ট দিচ্ছেন। আপনার জন্য আমার পক্ষ থেকে বরাদ্দ রয়েছে জাঝা।
যদি কিছু মনে না করেন তাহলে আরেকটা ব্যাপার নিয়ে কথা বলতে চাই। আপনার নামের বানান "শিক্ষানবিস" এর পরিবর্তে "শিক্ষানবীশ" হলে ভাল হয়। আমার যতদুর মনে পড়ে "শিক্ষানবীশ" বানানটি সঠিক। মডুরামদের বললে ঠিক করে দিতে পারে।
কি মাঝি? ডরাইলা?
শিক্ষানবিস বানানটা আসলেই একটু ভুল ভুল লাগে। আমিও বানান বিষয়ে নিশ্চিত ছিলাম না। তাই নিকটা নেয়ার আগে অভিধান দেখেছিলাম। সেখানে শিক্ষানবিস ও শিক্ষানবিশ দুইটি বানানই আছে। "স" এর প্রতি দুর্বলতা থাকায় এটাই নিলাম।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
একটানে পড়ে গেলাম...
কিছু কিছু জিনিস এ খটকা আছে।পরে একসময় রুমে গিয়ে বুঝে নিব
=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=
LoVe is like heaven but it hurts like HeLL
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
এখানে বুধ গ্রহের অনুসূরের অগ্রগমনটা ভালোভাবে বোঝাতে পারিনি। বিষয়টা আসলে আরও বিস্তৃত।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
হ্যা, আমিও এটার কথাই বলছিলাম।
=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=
LoVe is like heaven but it hurts like HeLL
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
ঝরঝরে গদ্যে আপেক্ষিকতার মত জটিল বিজ্ঞান চমতকার জলবত্ তরলং করে লিখেছেন। এই বিষয়ে দিব্যি ফিজিসিস্টের মত টক করতে পারা যাবে এখন থেকে
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
মুহাম্মদ,
তুমি মিয়া আমার আজকে রাতের পুরা পড়া মাটি করসো।ফ্লুইড মেকানিক্স পড়া স্টার্ট করতে চাইসিলাম ১০ টার সময়।এখন বাজে একটা।বইটা বালিশের চিপায়ই পড়ে আছে।আর আমি তোমার পুরানা সব লেখাগুলা একটার পর একটা পড়তেসি।
কী মুশকিল,আমার তো পুরা ফিজিসিস্ট এর মত টক করতে ইচ্ছা করতেসে
=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=
LoVe is like heaven but it hurts like HeLL
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
বিজ্ঞানের মোহ এমনই মোহ।
পড়াশোনা করতে আমারও ভাল লাগে না। আসল ব্যাপার হল, যা পড়তে বলা হয় তা পড়তে আর ভাল লাগে না। আমাদের ভার্সিটি সিস্টেমটা যেন কেমন কেমন।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
কিন্তু একটা ব্যাপার হল, মহাকর্ষের গতির ব্যাপারটা কিন্তু সমস্যাই থেকে গেল। মানে, এখনও বস্তুর স্থান পরিবর্তনে বক্রতা পরিবর্তিত হতে তো সময় নেয়। কিন্তু এই বল পরিবাহিত হয় কি ভাবে? আমার ধারণা এই প্রশ্নের এখনো কোনো জবাব নেই, স্ট্রিং থিয়োরী একটা জবাব দেবার চেষ্টা করছে, কিন্তু কোনো প্রমাণ নেই এখনো।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
মহাকর্ষের বিষয়টা এখন স্থান-কাল জ্যামিতির অংশ হয়ে যাচ্ছে। স্থান-কালের জগৎটা কিন্তু একেবারে আলাদা। সেখানে আলোর মত স্বাভাবিক বস্তুর সাথে তুলনা চলে না। স্থান-কাল পদার্থবিজ্ঞানে ট্যাকিয়ন নামে একটা কণা আছে যেটার বেগ কখনও আলোর বেগের চেয়ে কম হবে না, কিন্তু আলোর বেগের থেকে অনেক বেশী হতে পারে এমনকি হতে পারে অসীম।
কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের সাথে সাধারণ আপেক্ষিকতা মিলিয়ে কোয়ান্টাম মহাকর্ষের বিভিন্ন তত্ত্ব প্রদানের চেষ্টা শুরু হয়েছে। এই তত্ত্বগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এখন লুপ কোয়ান্টাম মহাকর্ষ তত্ত্ব।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
যারা ব্যাপারটি আরো সহজ ও বোধগম্য ভাবে বুঝতে চান তারা Einstein and Eddington মুভি টা দেখতে পারেন।
নতুন মন্তব্য করুন