আদম মিষ্টান্নের হাঁড়িটি বিজ্ঞানিলের হস্তে ধরাইয়া দিয়া সুমধুর স্বরে কহিল, মিষ্টান্ন মিতরে জনা।
বিজ্ঞানিল তাহার রশ্মি নির্মিত বস্ত্রখণ্ডের পকেট হইতে কী একটি যন্ত্র বাহির করিয়া মিষ্টান্নের হাঁড়ির শালপাতার আবরণ সরাইয়া মিষ্টির গুণাগুণ পরীক্ষা করিয়া হাসিমুখে কহিল, আদম যে! কেমন আছ বন্ধু?
আদম মুখটিকে পলকে আঁধার করিয়া কহিল, ভাল থাকি কী করিয়া বন্ধু? ঈশ্বরের সরকার চতুর্দিক হইতে জীবন যৌবনের উপর আক্রমণ চালাইতেছে। ভাবিতেছি বনে যাব। এইখানে আর না।
বিজ্ঞানিল একটি মিষ্টি কাঠিতে গাঁথিয়া মুখে পুরিয়া কহিল, অহো, বড় সুস্বাদু! কোন ময়রার দোকান হইতে কিনিলে?
আদম কহিল, ময়রার দোকান থেকে মিষ্টি খরিদ করিয়া তোমাকে খাওয়াইব? আমি কিনিয়াছি একটি গাভী, আর কয়েকটি ইক্ষুদণ্ড। গাভীর দুধ দোয়াইয়া ইক্ষু নিংড়াইয়া নিজের হস্তে মিষ্টি পাকাইয়াছি বন্ধু!
বিজ্ঞানিল চপচপ মিষ্টি খাইতে খাইতে কহিল, তা কী কারণে আজ আমি তোমার বন্ধু বটিলাম?
আদম বিগলিতহাস্যে কহিল, তুমি যে ঈশ্বর কণা বানাইয়া বসিয়াছ বন্ধু!
বিজ্ঞানিল ভ্রু নাচাইয়া কহিল, হাঁ! যদিও সে একটি কণা মাত্র, কিন্তু সবুর কর। ছোট বালুকার কণা বিন্দু বিন্দু জল, গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল! এইরকম আরও কিছু কণা বানাইয়া অচিরেই একটি বনসাই ঈশ্বর গড়িয়া ফেলিব!
আদম কহিল, ঈশ্বরের দরবার হইতেই আসিতেছি। বুঢ়া ভয়ানক টেনশনে পড়িয়া গেছে। গিবরিলকে দিয়া ওজন মাপাইতেছে শুধু।
বিজ্ঞানিল কহিল, ওজন মাপাইতেছে কেন?
আদম কহিল, পরীক্ষা করিয়া দেখিতেছে তাহার শরীরের কোনও কণা চুরি হইয়াছে কি না।
বিজ্ঞানিল অট্টহাস্য করিয়া কহিল, বনসাই ঈশ্বরটি বানাইয়া ভাবিতেছি মোড়কে মুড়িয়া বুঢ়াকে উপহার দিব!
আদম গলা খাঁকরাইয়া কহিল, তা বিজ্ঞানিল তুমি এইসব ফালতু গবেষণা যন্তরমন্তর ছাড়িয়া কিছু কাজের গবেষণা কর না কেন?
বিজ্ঞানিল চটিয়া কহিল, ফালতু? ঈশ্বর কণা ফালতু?
আদম গলা নামাইয়া কহিল, এক ঈশ্বরের যন্ত্রণাতেই বাঁচি না বাপু, দেড়খানা হাজির হইলে লাভ কী?
বিজ্ঞানিল কহিল, সে তুমি বুঝিবে না। বিজ্ঞানের লীলা তোমার ন্যায় মৃত্তিকানির্মিত আদম বুঝিলে ত হইতই।
আদম কহিল, ইয়ে, তুমি ঈভ কণা নির্মাণে মনোযোগ দিতেছ না কেন?
বিজ্ঞানিল কহিল, ঈভ কণা? সে আবার কী?
আদম কহিল, ঈশ্বর কণার ন্যায়, কিন্তু ধর গিয়া, যাহা ক্রমশ জমাইয়া আরেকটি ঈভ নির্মাণ করা যাইবে? বিন্দু হইতে সিন্ধু আর কী।
বিজ্ঞানিল সন্দিগ্ধ নয়নে আদমকে পর্যবেক্ষণ করিয়া কহিল, আরেকটি ঈভ নির্মাণ করিলে কী ঘটিবে?
আদম বেজার হইয়া কহিল, ঈভ বড় দুষ্ট হে বিজ্ঞানিল। তাহার সহিত বহুদিন যাবত সুবিধা করিতে পারিতেছি না। আরেকটি ঈভ বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে নির্মাণ করা গেলে সুখে শান্তিতে সংসার করিতাম ভাইটু।
বিজ্ঞানিল চিন্তিত মুখে আরেকটি মিষ্টি মুখে পুরিয়া কহিল, ঈভ নির্মাণের জন্য এত খাটিয়া প্রোটনে প্রোটনে ঠুক্কি মারিয়া ঈভ কণা উৎপাদন কি ইনটেলিজেন্ট ডিজাইন হইবে? তুমি ঈশ্বরের কাছে গিয়া বল না কেন? তোমার তো এন্তার পঞ্জরাস্থি বেকার পড়িয়া আছে। ঈশ্বরকে বলিলেই তিনি আরেকটি পঞ্জরাস্থি খুলিয়া নতুন ঈভ গড়িয়া দিবেন। খরচ কম পড়িবে।
আদম ভয়ানক চটিয়া কহিল, হাঁ হাঁ, পঞ্জরাস্থি হইতে কী মাল নির্মাণ হয় তাহা দেখিতেছি এত বৎসর ধরিয়া। পঞ্জরাস্থি হইতেই যদি ঈভ বানাইব তবে তুই বিজ্ঞানিল আছিস কী উৎপাটন করিতে? ইনটেলিজেন্ট ডিজাইন মারাইতেছিস হাবুল কোথাকার!
বিজ্ঞানিল আদমকে বিজ্ঞান বুঝাইতে প্রবৃত্ত হইল, কিন্তু আদম তাহার কথা কানে না তুলিয়া মিষ্টান্নের হাঁড়িটি অবশিষ্ট মিষ্টান্নসহ ছিনাইয়া লইয়া বিজ্ঞানিলের বাটী ত্যাগ করিল।
মন্তব্য
পড়ব পরে। আগে প্রথম কমেন্ট টা দিয়া নেই। ভাই আপ্নারে আর আপনার সৃষ্টিরে বহুত মিস করি। আরেকটু ঘন ঘন দেয়া যায় না?
যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...
ওরে আদম !! ইভ কণা!!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
খেক খেক খেক।।। অহ! দুধ দোয়াইয়া ইক্ষু চিপিয়া তৈরি মিষ্টান্ন। আহা, বড়ই স্বোয়াদের জিনিস। বহুদিন পর আবার ফাটাইলেন ভাই। =))
যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...
আহা মুখফোড় আহা !!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
হা হা হা হা হা !!!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
বস ফিরা আইছে
_____________________
Give Her Freedom!
অমানুষিক। ওরে কত কণারে......
ডাকঘর | ছবিঘর
সব ই বরাত-এর পবিত্র রজনীতে ঈভের মতিগতিতে সুমতি আনিয়া দিবার জন্য ঈশ্বরের আরসে ব্যাপক নালিশ ঠুকিয়া আদম বাটি ফিরিয়া দেখে হালুয়া বরফি ইত্যাদি মিষ্টান্নর কিছুই প্রস্তুত নাই। অগত্যা বিরস বদনে সচলে প্রবেশ করিয়া আদমের মুখখানা ফোঁড় ফোঁড় হইয়া গেলো। আদমচরিত - ৪৮ এর পরে অঙ্ক শাস্ত্র তামিল করিয়া আদমচরিত- ৪৯ আসিবার কথা। উহার বদলে আসিয়াছে আদমচরিত- ৫৪। মাঝের পাঁচ পাঁচখানা আদমচরিত কে বা কাহারা সরাইল?
বিলক্ষণ উহা ইবলিশের ডিজিটাল কারসাজি হইয়া থাকিবে!!
তবেরে- বটেরে- ইত্যাদি ভয়ানক ডমরুধ্বনির ডঙ্কা বাজাইয়া আদম ছুটিয়া ঈশ্বরের দরবারে পুনঃ নালিশ ঠুকিতে হাজির হইল।
--------------
পথিক পরাণ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ভাব্লুম ঈশ্বর এবং কণার ইটিস পিটিসের কিছু ইডেনলিকস পাইমু
মিস্টান্নে উদরপুর্তি যে হইলো না।
ঈশ্বর কণার চাপেই ঈশ্বর চিন্তিত। সাথে ঈভ কণা হাজির হইলে তো ঈশ্বরের জারিজুরি সব ছুটিয়া যাইবার জোগার হইবে
টুইটার
"হাঁ হাঁ, পঞ্জরাস্থি হইতে কী মাল নির্মাণ হয় তাহা দেখিতেছি এত বৎসর ধরিয়া। পঞ্জরাস্থি হইতেই যদি ঈভ বানাইব তবে তুই বিজ্ঞানিল আছিস কী উৎপাটন করিতে?"
হাসতে হাসতে মারা গেলুম!
বিজ্ঞানিল আর একটা ঈভ কণা বানাইলে সেই ঈভ কণা ঈশ্বরের কাছে গিয়া প্রার্থণা করিবে আর একটা ঈশ্বর কণা বানাইয়া দিবার জন্য যাতে করিয়া নতুন ঈশ্বর কণা তাহার জন্য আর একটা নতুন আদম কণা বানাইতে পারে...
বেচারা বিজ্ঞানীরা ঠাট্টার ছলে ঈশ্বর কণা বলেওতো পড়েছে বিপাকে, সাগুরা এখান থেকে ফায়দা লোটতে চাইছে! যাই হোক আপনার এই লেখাটি সাগুদের জন্য একটা উচিত জবাব। ভাই এই বিষয়ে আরও লেখা দিবেন প্লিজ, আস্তিক সাগুদের কাবু করতে হলে এধরনের লেখার বিকল্প নাই। চরম হাসির খোরাক হলো
থামতে পারছি না যে।
সাধু সাধু!!
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
মুখা খ্রাপ
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
---------------------
আমার ফ্লিকার
হাসতে হাসতে মরেই গেলাম
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
মেট্রিকের পরে জেপনে কোন দিন সায়েন্স না পড়ে বিশাল বিপদে আছি, অনেক কিছুই বুঝিনা এখন।
হা হা অসাম! এবারে বাকিগুলা শুরু করি
আদমচরিতকণা বড়ই সুস্বাদু হয়েছে।
বরাবরের মতই মুগ্ধতা রেখে গেলাম।
আদম গলা নামাইয়া কহিল এক ঈশ্বরের যন্ত্রণাতেই বাঁচি না বাপু, দেড়খানা হাজির হইলে লাভ কি?
বিজ্ঞানিল কহিল, সে তুমি বুঝিবে না। বিজ্ঞানের লীলা তোমার ন্যায় মৃত্তিকানির্মিত আদম বুঝিলে তো হইতই।
আদম কহিল, ঈশ্বরের দরবার হইতেই আসিতেছি। বুঢ়া ভয়ানক টেনশনে পড়িয়া গেছে। গিবরিলকে দিয়া ওজন মাপাইতেছে শুধু।
বিজ্ঞানিল কহিল, ওজন মাপাইতেছে কেন?
আদম কহিল, পরীক্ষা করিয়া দেখিতেছে তাহার শরীরের কোনও কণা চুরি হইয়াছে কি না।
আদম মুখটিকে পলকে আঁধার করিয়া কহিল, ভাল থাকি কী করিয়া বন্ধু? ঈশ্বরের সরকার চতুর্দিক হইতে জীবন যৌবনের উপর আক্রমণ চালাইতেছে। ভাবিতেছি বনে যাব। এইখানে আর না।
আচ্ছা মুখফোড় দার কি মন্তব্য অপশন নাই ?
প্রাইভেট প্রপার্টি বলিয়া খ্যাত পঞ্জরস্থি খানা খরচা করিয়া যাহা আদম পাইয়াছিল তাহাই বাগে আনিতে পারে নাই, ততঃকিম বিজ্ঞানীলের "ঈভ-কণা"।
উপদেশঃ ঈভ অর্জন করা কঠিন, রক্ষা করা আরও বেগতিক।
নতুন মন্তব্য করুন