স্বর্গে সূর্য অস্তমিত প্রায়। দূরে জায়হুন নদী বহমান। পাখপাখালির কলকাকলিতে সন্ধ্যার আকাশ মুখরিত। গুহা হইতে বাদুড়ের পাল আলস্যভরে গা ঝাড়িয়া ডানা ঝাপটাইয়া বাহির হইতেছে।
আদম একটি সরাইখানায় ইয়ার-বকশী লইয়া একটি টেবিল দখল করিয়া আড্ডা গুলজার করিতেছে।
আদমের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিবরিল সন্দিগ্ধ কণ্ঠে কহিল, কিন্তু শয়তান কেন তোমার স্ত্রীর সহিত সাক্ষাৎ করিতে গিয়াছে?
আদম মৃৎপাত্র ভর্তি ইক্ষুর শরবতে চুমুক দিয়া কহিল, জানি না ভ্রাতা। কিন্তু সে ফিরিয়া আসিয়া আমার স্ত্রীর যেরূপ বর্ণনা দিয়াছে, আবেগে আমার বক্ষ মোচড় দিতেছে।
গিবরিল ও আড্ডার আরও জনাকয়েক ইয়ার-বকশী একে অপরের মুখের পানে চাহিয়া কহিল, কীরূপ বর্ণনা?
আদম ছলছল নয়নে কহিল, শয়তান কহিল, তাহার নিজের ঘরে বসিয়া ভাল লাগে না। তাই সে একটি দ্বিচক্রযানে চড়িয়া ঈভের সহিত দুইচারটি সুখ-দুঃখের আলাপ করিতে গিয়াছিল। দ্বিচক্রযান চড়িতে তাহার ভাল লাগে।
গিবরিল কহিল, ততঃ কিম?
আদম কহিল, ঈভ বৈকালে বারান্দায় বসিয়া কেশসজ্জা করিতেছিল একা একা। শয়তানকে দেখিয়া সে খাতির করিয়া বসাইল। পিঠা দিল, জল দিল। হাতপাখা দিয়া বাতাসও দিল।
গিবরিল কহিল, ততঃ কিম?
আদম কহিল, শয়তান ঈভের প্রশংসা করিল। ঈভকে দেখিয়া তাহার নাকি নিজের বাল্যকাল স্মরণ হইয়াছে।
গিবরিল কহিল, বাল্যকালে শয়তান কী করিত?
আদম কহিল, শয়তান বাল্যকালে পনের-কুড়ি বছর গোখামারে কাজ করিয়া কাটাইয়াছে। রোজ সকাল বিকাল সে গরুর দুধ দোহন করিত।
ইয়ার-বকশীরা সবাই একে অপরের মুখ দেখিল কেবল।
গিবরিল কহিল, ততঃ কিম?
আদম কহিল, শয়তান ঈভের ঘাগরা ও কাঁচুলির অনেক প্রশংসা করিল। সে ঈভের ঘাগরা ও কাঁচুলি খুলিয়া জাদুঘরে প্রদর্শনী করিবার পরামর্শ দিয়াছে। নকশা দেখিয়া নাকি তাহার শিল্পী জয়নিলের কথা মনে পড়িয়া গিয়াছিল।
গিবরিল কহিল, ততঃ কিম?
আদম কহিল, শয়তান ঈভের ওজনেরও প্রশংসা করিয়াছে। খুব কম না, খুব বেশিও না। যতটুকু পরিমাণ হইলে সকল কার্য সুচারুরূপে সমাধান করা যায়, ঈভের ওজন ততখানিই।
গিবরিল কহিল, ততঃ কিম? ততঃ কিম?
আদম কহিল, শয়তান ঈভের গৃহস্থালি রুচিরও প্রশংসা করিল। বলিল, বড় পরিপাটি মেয়েটি। সবকিছু গোছগাছ পরিষ্কার রাখে। তাহার শয্যা প্রস্তুতির নাকি তুলনা হয় না। বালিশ, কম্বল, তোষক, চাদর, সকলই সে বড় সুন্দর সাজাইয়াছে। তাহার তোষকটি অতি মনোরম। তবে খাটে অনেক ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ হয়। কিন্তু উহা তো কাঠের ভৌত বৈশিষ্ট্য। ঈভের তো আর করার কিছু নাই, তাই না?
গিবরিল আর ইয়ার বকশীগণ একে অপরের দিকে চাহিয়া কহিল, ততঃ কিম?
আদম কহিল, শয়তান ঈভের দাবনার প্রশংসা করিল বিশদ। বলিল, তোমার স্ত্রীর দাবনাটি বড় পুরুষ্টু হে আদম। বড়ই সম্ভাবনাময় দাবনা।
গিবরিল কহিল, কিন্তু ...।
আদম সজল চক্ষে ইক্ষুরসে চুমুক দিয়া কহিল, কিন্তু ফিন্তু নাই ভায়া। শয়তান কহিয়াছে, আমার স্ত্রীর সৌন্দর্য যে কীরূপ শ্বাসরুদ্ধকর, তাহা অনেকেই জানে না।
গিবরিল রশ্মিনির্মিত মস্তক চুলকাইতে লাগিল।
আদম টেবিলে কীল মারিয়া কহিল, আহা, নিজ স্ত্রীর মূল্য যদি শয়তানের ন্যায় উপলব্ধি করিতে পারিতাম! ঈভকে লইয়া শয়তানের মাঝে যে জজবা জাগ্রত দেখিলাম, তার শতভাগের একভাগও তো আমার নাই।
মন্তব্য
---------------------
আমার ফ্লিকার
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
এইটাই তো মূল গল্প? নাকি আমি ভুল বুঝলাম?
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
সৈকত
ফারাসাত
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মুখফোড় চৌধুরী একটা অভিশাপ
ডাকঘর | ছবিঘর
কইরা শোয়াইয়া দিলেন ওস্তাদ
-বেচারাথেরিয়াম
লেখা পড়ে আমারও কান্না আসলো।
গুল্লিটা আধহাত মাথার উপর দিয়া যাইতে ছিল, শেষ মুহুর্তে ধইরা ফালাইছি
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
মুখা একটি অভিশাপ! উত্তর ঢাকার মেয়ররে নিয়ে ফাইজলামি করে!
হ, উত্তর ঢাকার মেয়র সোনায় ধরে সোনার বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিছে
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
আদম তো মহাপুরুষ হইবার পথে
অসাধারণ--------
স্বয়ম
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
নতুন মন্তব্য করুন