মহারাজ হবুচন্দ্রের শখ হইলো, তিনি বেইসবল খেলিবেন। এখন বেইসবল রাজ্যে তেমন একটা প্রচলিত ক্রীড়া নহে, তাই মার্কিন মুল্লুক হইতে তিনি একজন ভালো প্রশিক্ষক আনাইবার হুকুম দিলেন গবুচন্দ্রকে।
দুনর্ীতিবাজ গবুচন্দ্র টেন্ডার হাঁকাইলো, এবং যথারীতি তেপায়ার তলদেশে প্রবাহিত অর্থস্রোতের কল্যাণে ধাধধাড়া মার্কিন গোবিন্দপুরের নাইকো ক্রীড়া চক্রের জনৈক ওয়াকে সস্তায় ভাড়া করিয়া আনিলো। ওদিকে রাজার কোষাগার হইতে কিন্তু ঠিকই মুদ্রা খসিলো গন্ডায় গন্ডায়।
তবে হবুচন্দ্র রাজার বড় পছন্দ হইলো ওয়াটিকে। মিটিমিটি তাকায়, কুটিপাটি হাসে মাঝে মাঝে, মাঝে মাঝে আপনমনে ডিগবাজি খায়, রাজাকে সেলাম ঠোকে ঘনঘন। এই ওয়া বড়ই রাজভক্ত।
তিনি সভাসদদের বলিলেন, "দ্যাখো তোমরা! মার্কিন মুল্লুকের কান্ড দ্যাখো। তাহার সুদূর জঙ্গলের বানরকে পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দিয়া ক্রীড়াবিদ করিয়া তুলিয়াছে। তাহাদের ইশারায় এই বানর এখন নাচেকোঁদে, ফাল পাড়ে, চেঁচামেচিও করে বিস্তর। শিক্ষা গ্রহণ করো, যে প্রশিক্ষণে কী না হয়?"
জনৈক বিদূষক মুখফোড় বলিলো, "হাঁ মহারাজ, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিলে বানর তো কোন ছার, গর্দভও বেইসবল খেলিতে পারিবে!"
হবুচন্দ্র খুশি হইয়া বলিলেন, "ঠিক কথা। আমিও মনস্থির করিয়াছি, বেইসবল ক্রীড়াটি রপ্ত করিবো। শৃঙ্গার আর দূ্যত ভিন্ন অন্য ক্রীড়ায় তো বহুদ্দিন যাবৎ চর্চা নাই। দেখি কী হয়?"
বৈকালে উঠিয়া মাঠে প্যান্টালুন আঁটিয়া খেলিতে যাইবেন, এই মতলব করিয়া হবুচন্দ্র দিবানিদ্রা গেলেন। ওয়াটি প্রাসাদে তার কক্ষেই তুরতুর করিতে লাগিলো।
খেলিতে খেলিতে আচমকা সরলচিত্ত ওয়াটির চোখে পড়িলো, তাহার হবু শিষ্য হবুচন্দ্রের নাকে একটি মাছি বসিয়াছে। তাহার সরল হৃদয় অস্থির হইয়া উঠিলো। রাজনাসায় মক্ষিকা? কাভি নেহি! সে ঠিক করিলো, ইহার নিরসন করিতে হইবে।
আশে পাশে তাকাইয়া কী করিবে সে বুঝিতে পারিলো না, অবশেষে হঠাৎ তাহার দরিদ্র মস্তিষ্কে মার্কিন বাবাদের প্রশিক্ষণ মনে পড়িয়া গেলো। সে তাহার ঝোলা হইতে একখানি বেসবল ব্যাট বাহির করিয়া ধীরে ধীরে আগাইয়া গেলো হবুচন্দ্রের দিকে ! মক্ষিকার মাজা বরাবর একটি মোক্ষম ঘা মারিতে পারিলেই হইবে, আর কিছু করা লাগিবে না ...!
মন্তব্য
অকর্মণ্য শখ।
দারুন !
নতুন মন্তব্য করুন