• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

ডোডোপুরাণ

মুখফোড় এর ছবি
লিখেছেন মুখফোড় (তারিখ: সোম, ০৮/০৫/২০০৬ - ১:১২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দেশী রাজনীতিতে নবডারউইনীয় বিবর্তন লইয়া একটি গুরুগম্ভীর পোস্ট ঝাড়িবার অভিপ্রায় পুষিতেছিলাম কয়েকদিন যাবৎ। নানা ব্যস্ততায় লিখিয়া উঠিতে পারি নাই। তবে ব্যস্ততা কাটিবার পর গুরুগম্ভীর ভাবখানিও মন হইতে বিলুপ্ত হইলো, একেবারে সেই ডোডো পক্ষীর ন্যায়। তাই ভাবিলাম, ডোডোদিগের গল্পই লিখি।

ডোডো পক্ষী বড় সুবোধ ও সুশীল ছিলো। জীববিজ্ঞানের শ্রেণীবিভাগের জনক Linneaus তাহার নাম হেলাভরে রাখিয়াছিলেন Didus Ineptus, পরবতর্ীতে বিজ্ঞানীরা পরম মমতায় ইহাকে পুর্নবাপ্তাইজ করেন Raphus Cucullatus, অনেকটা হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের কিসসা আর কি। তবে লাতিন নাম প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের মতো পরিবর্তনশীল হইলেও ডোডোর কিছু যায় আসে না, তাহার নিয়তি বহুকাল পূর্বেই লিখিয়া মুছিয়া ফেলা হইয়াছে।

যাহা বলিতেছিলাম, ডোডো ছিলো বড় সুশীল। পূর্বপুরুষ পারাবতগণের ন্যায় নম্রভদ্র, তবে মরিশাস দ্্বীপে আসিয়া পৌঁছিবার পর কালের গর্ভে তাহার পক্ষ দুইটি বেমালুম গায়েব হইয়া যায়। দ্্বীপবাসী পক্ষী উড়িয়া কী করিবে? উড্ডয়ন যে তাহার বিলাসিতা মাত্র! অর্থমন্ত্রী যেমন আমাদের সময়ে সময়ে আপেল খাওয়ার বিলাসিতা ত্যাগ করিতে বলেন, তিনি মর্জি করিলেই ডোডোর পক্ষলোপের উদাহরণ টানিয়া বলিতে পারিতেন, যে পক্ষের কারণে ডোডো পক্ষী, সেই পক্ষদুটিকেই যখন নির্বিবাদে তাহারা ত্যাগ করিতে পারিয়াছে, আমরা কেন চিনির পরিবর্তে লবণ খাইতে পারি না?

তো, ডোডোগণ ছিলো বড় সুশীল। তবে আকারে তাহারা বেয়াড়া হইয়া বাড়িয়াছিলো বটে, পক্ষ খসাইলে কী হইবে। যেকোন পারাবত তাহাদের সুরৎ দেখিলে নিজ বংশধর বলিয়া পরিচয় দিতে লজ্জা বোধ করিতো। মিটারখানেক উঁচু, যোগাযোগমন্ত্রীর ন্যায় মেদবহুল এই পক্ষীগণ মরিশাসের গহীন বনে বিচরণ করিতো, খুঁটিয়া খুঁটিয়া এটাওটা খাইতো, মনে তাহাদের কোন ভয়ডর ছিলো না। থাকিবে কেন, মরিশাসে তো উৎপাতপ্রবণ কোন প্রাণীকূল ছিলো না। ইহাও ডোডোর পক্ষলোপের আরেকটি কারণ, শত্রু যেহেতু নাই, উড়িয়া পলাইবার প্রয়োজনও নাই, তাই না উড়িলেও চলে।

সুখেই কাটিতেছিলো তাহাদের কাল। কিন্তু ষোড়শ শতাব্দীর ঊষালগ্নে হঠাৎ তাহাদের ভাগ্যাকাশে মেঘের ঘনঘটা শুরু হইলো, মরিশাসের আঘাটায় আসিয়া ভিড়িলো এক পতর্ুগীজ দুষ্টুদের জাহাজ। তটে আসিয়া তরী ভিড়াইয়া দ্্বীপে পদার্পণ করিলো জনৈক পতর্ুগীজ বোম্বেটে, ধরিয়া লই উহার নাম ফানর্ান্দো। উপকূল অঞ্চলে দুষ্টুমি করিয়া করিয়া জাহাজে আমিষ ও মিষ্টি পানির অভাব ঘটিয়াছে, সংগ্রহ করার অভিপ্রায়ে দ্্বীপের অভ্যন্তরে কিছুদূর যাইতেই ফানর্ান্দোর ন্যায় বিদঘুটে দ্্বিপদীকে অভ্যর্থনা করিতে ডু-ডু রবে আগাইয়া আসিলো ডোডোবংশের এক সুসন্তান। কিন্তু আর বাক্যবিনিময় ঘটিলো না তাহাদের মাঝে, পামর ফানর্ান্দো ষষ্ঠীর আঘাতে সেই ডোডোনন্দনকে ঘায়েল করিয়া স্কন্ধে চাপাইয়া সৈকতে ফিরিয়া গেলো। এই এক মুরগীতেই তাহার জাহাজের সকল বোম্বেটের এক বেলার খোরাক জুটিয়া যাইবে।

কিন্তু ডোডোর মাংস পাকাইয়া মুখে দিয়া সকলে ছিছিৎকার করিয়া উঠিলো, সদর্ার তো ছুরি বাহির করিয়া আরেকটু হইলেই ফানর্ান্দোকে কাটিতে যায়, সকলে বাধা দিলো। সাব্যস্ত হইলো, ডোডোর মাংস পাতে দিলে সংশ্লিষ্ট বোম্বেটেকে পানিতে ছুঁড়িয়া ফেলা হবে।

বিষণ্ন মনে পরদিন ফানর্ান্দো শূকর আর খরগোশ খুঁজিতে বাহির হইলো দ্্বীপে। কিন্তু মরিশাসে ঐসব তেমন নাই, সর্বত্রই সেই বিটকেল ডোডোগণ ঘুরঘুর করিতেছে। তারা বড়ই মিশুক আর সদালাপী, কয়েখ পা যাইতে না যাইতেই তাহাদের কেউ না কেউ ডু-ডু-ডু-ডু করিয়া হাজির হয়। ফানর্ান্দোর ব্রহ্মতালু জ্বলিয়া যায় আক্রোশে, সে ডোডো পাইলেই লাঠির ঘায়ে ধরাশায়ী করে।

তো এভাবেই কাটিলো আরো কিছু বছর। দুর্মতি ফানর্ান্দো চলিয়া যায়, তাহার পর আরো কত হানর্ান্দো বানর্ান্দো ধর্নান্দো বোম্বেটে আসিয়া একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করিয়া যায়, তাহার লেখাজোকা নাই। পর্তগীজ বোম্বেটেদের প্যাঁদাইয়া খ্যাদাইয়া ওলন্দাজ বোম্বেটেরা মরিশাসে ঘাঁটি গাড়ে। তাহারা আবার জাহাজে করিয়া কুকুর শূকর ইঁদুর লইয়া আসে, সেগুলি দ্্বীপে নামিয়া মহানন্দে ডোডোর আন্ডা ভাঙিয়া গিলিতে থাকে। সঙ্গমকুশল ডোডোরা প্রাণপণে ডোডোনীদের অন্ডবতী করিয়া চলে, কিন্তু কুলাইয়া উঠিতে পারে না, ডিম পাড়িলে তাহাতে ঐ সারমেয় বরাহ মূষিক বাহিনীরই পোষ্টাই বাড়ে। ডোডোরা ক্রমাগত পিছু হটিতে থাকে, যা-ও একটু তলদেশে গা ঢাকা দিয়া বাঁচিয়া যাইতো, দুম করিয়া দ্্বীপে হঠাৎ আখের চাষ শুরু করিয়া দেয় বিটকেল দ্্বিপদীর দল, ডোডোগণের আবাসস্থল একেবারে ছারখার হইয়া যায়। সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ নাগাদ সর্বশেষ ডোডোটিও প্রাণ হারায় জনৈক আদমের হাতে। মস্তানতন্ত্রের হাতে ডোডোরা বিলুপ্ত হয় চিরকালের জন্য।

বড় দুঃখ লাগে ডোডোগণের কথা ভাবিয়া। রাজনীতিতে ডোডোদের পুনর্জাগরণ ও পুনর্বাসন নিয়া যখন জ্ঞানীগুণীরা শোরগোল করেন, তখন বক্ষ ছ্যাঁৎ করিয়া ওঠে, ভাবি, এই সুশীল ডোডোগণ কি টিকিতে পারিবেন? রাজনীতি কি ডোডোদের ডোডো থাকিতে দিবে, নাকি তাহারাও বিবর্তিত হইয়া দন্তী নখীতে পরিণত হইবেন? বিলুপ্ত হইবেন নাকি বিবর্তিত? মনটা খচখচ করিতে থাকে।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।