পমি রহমান চৌরাসিয়াকে কয়েকদিন যাবৎ বড় গুঁতাইতেছিলো। চৌরাসিয়া ভোগান্তি পান করিয়া তিষ্ঠাইতে পারিতেছিলেন না। পমি রহমান সকাল বিকাল দুই বেলা আসিয়া, "কী হলো, উল্মারের কেসটার কোন গতি করতে পারলেন?" বলিয়া এমন হইচই জুড়িয়া দিতো যে গাব্রিয়েল মগাদিশু চৌরাসিয়ার মেজাজ বিষাইয়া উঠিয়াছে।
আজ সকালে নাস্তা খাইয়া সবে মাত্র টেলিভিশন ছাড়িয়া হিন্দি নাচগান দেখা শুরু করিয়াছেন, এমন সময় পমি রহমান আসিয়া হাজির।
"কী হলো, উল্মারের কেসটার কোন গতি করতে পারলেন?" পমি রহমান তোতার মতো গড়গড় করিয়া জিজ্ঞাসিলো।
চৌরাসিয়া ভোগান্তির গেলাসে চুমুক দিয়া কহিলেন, "হুঁ!"
পমি রহমান লাফাইয়া উঠিলো, "কে কে কে?"
চৌরাসিয়া কহিলেন, "পাকিস্তান ক্রিকেট দল!"
পমি রহমান কহিলো, "যাহ, ফটাস করে একটা বলে দিলেই হলো?"
চৌরাসিয়া মৃদু হাসিয়া কহিলেন, "ফটাস করে নয়, অনেক ভেবেচিন্তে। আরো আগেই বার করে ফেলতাম, কিন্তু আপনার যন্ত্রণায় চিন্তায় মনোনিবেশ করতে পারছিলাম না। আজ টিভিতে তনুশ্রী দত্তর পাছা দেখে সব মিলে গেলো।"
পমি রহমান অন্যমনস্ক হইয়া কহিলো, "হুঁ, তনুশ্রীর পাছাটা ভালোই ...।"
চৌরাসিয়া কহিলেন, "বেশ ভালো। ... তবে উল্মারের হত্যাকান্ড নিয়ে এখনই কোন ফলাফল জানা যাবে না।"
পমি রহমান ধপ করিয়া বসিয়া বলিলো, "কেন কেন?"
চৌরাসিয়া সব খুলিয়া কহিলেন।
উল্মারের সহিত পাকিস্তানি ক্রিকেট দলের বিস্তর গন্ডগোল চলিতেছিলো। সেই কালরাতে উল্মার বসিয়া বসিয়া টেলিভিশন দেখিতেছিলেন। এমন সময় দরজায় টোকা পড়ে। উল্মার শুধান, "কে ওখানে?"
উত্তর হাসে, "আরে ইয়ার পেহলে দরওয়াজা তো খুলিয়ে না।"
উল্মার তখন বুঝিতে পারেন, ইনজামাম আসিয়াছে। দরজা খুলিয়া দেখেন, ইনজামামের পশ্চাতে ক্রিকেট দলের বাকিরাও উপস্থিত। তিনি বলেন, "কী চাও? এখন তো ঘুমানোর সময়।"
ইনজামাম ঘরে ঢুকিয়া উল্মারের টুঁটি টিপিয়া ধরিলো। আরেক ক্রিকেটার কহিলো, "উস্তাদ হাত মৎ লাগানা। ইয়ে তোয়ালা লে কর পাকড় কিজিয়ে।"
ইনজামাম তখন উল্মারের গলায় তোয়ালার একটি প্যাঁচ কষাইয়া এক মাথা নিজে টানিতে লাগিলো, অন্য মাথা দলের আরো কয়েক খেলোয়াড় ধরিয়া রাখিলো। অচিরেই উল্মার মৃতু্যবরণ করিলেন।
ইনজামাম কহিলো, "আচ্ছা কাম কিয়া গ্যয়া। আল্লা মিয়া তো পাকিস্তানকো বাচা দিয়া। লাড়কোঁ, চ্যলো ঘর যানা হায়।"
এক তরুণ ব্যাটসম্যান কহিলো, "উল্মারজীকা শার্ট বহোত উমদা হায়। মুঝকো ফিট করেগা জরুর।"
আরেক বোলার কহিলো, "উসকা প্যান্ট মুঝকো ভি আচ্ছা ফিট করেগা।"
চাড্ডির জন্যও অনুরূপ বায়না উত্থাপিত হইল।
ইনজামাম বিরক্ত হইয়া কহিলো, "তো খাড়ে খাড়ে মেরা মু কেয়া দেখ রাহে হো? লো না উতারকে!"
অতঃপর তাহারা উল্মারের মৃতদেহ হইতে জামাকাপড়জুতা খুলিয়া উলঙ্গ করিয়া বাথরুমে লাশ রাখিয়া আসিলো।
ইনজামাম কহিলো, "কিসিনে দেখ তো নাহি লিয়া?"
পাকিস্তানি ক্রিকেট দল জানাইলো, "নাহি। সিরফ খুদা নে দেখা।"
ইনজামাম হাসিয়া কহিলো, "আল্লাহ হামারা সাথ হায়। মুলক হামারা সাথ হায়। জওয়ানলোগ, আগে বাড়হো।"
পমি রহমান চোখ গোল করিয়া বলিলো, "যাহ!"
চৌরাসিয়া কহিলেন, "অসম্ভব কিছু কি?"
পমি রহমান খানিক ভাবিয়া কহিলো, "না।"
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন