১.
আত্মীয়তার সূত্রে এক মুরুব্বীর বাসায় কয়েকদিন কাটিয়েছিলাম। মুরুব্বী আবার খানদানী জমিদার বংশের, দাদার তাঁর সত্যি সত্যিই বিরাট জমিদারী ছিলো; তাই নিজে জমিদার না হলেও কথায় কথায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পূর্বপুরুষের সেই বাহারী জমিদারীর প্রসঙ্গ তুলে আনায় যে মুরুব্বী সিদ্ধহস্ত ছিলেন, সেটা বুঝতে একদিনেরও কম সময় লেগেছে। তবে মুরুব্বীর এরকম বাহাদুরী ফলানোর পেছনে কারণ যে নেই তাও না; শুধু জমিদারীই যে তাঁরা হারিয়েছিলেন তা তো নয়, কোন কাজকর্ম না করে ঘরে বসে নবাবী চালে চলা আর তালুক বেচে খাওয়ার যে তরীকা তাঁদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছিলো, তাতে এই প্রসঙ্গ তুলে গর্ব করার চেয়ে বেশী কিছু করার সাধ্যও তাঁর ছিলোনা।
যদিও আতিথ্য গ্রহনের পর এরকম বদনাম করাটা অভব্য আচরণে পড়ে, তাও লেখার খাতিরে লিখতেই হচ্ছে; যেক'দিন ছিলাম সেখানে, মুরুব্বীর সাথে যেখানে গিয়েছি, সেখানেই দেখেছি প্রত্যক্ষভাবে হোক, পরোক্ষভাবে হোক, তিনি যে জমিদার বংশের উঁচুজাতের লোক এবং তাঁকে যে আশপাশের সবার মান্যগণ্য করা উচিত, তা প্রকাশ না করে তিনি থাকতে পারতেননা। যেমন, ধরুন মাছ কিনতে গেলেন মুরুব্বী, হাতে একশো টাকা আছে মাত্র। কিনলে কেনা যাবে গুড়া মাছ কয়েক ভাগ, বা বড়জোর একটা নলা মাছ! এখন বাজারে গিয়ে চার-পাঁচশো টাকার মাছ দেখে সাধ আর সাধ্যের লড়াইয়ের সাথে সাথে মুরুব্বীকে মানসম্মানের লড়াইও করতে হবে; উপায় নেই, কারণ আশপাশে প্রচুর মানুষজন আছেন যারা তাঁকে জমিদারের নাতি বলে চেনেন।
সেজন্যই দেখতাম, হাতের মুঠিতে একশো টাকা গুঁজে ধরেই মুরুব্বী বাজারের সবচেয়ে বড় মাছের সামনে গিয়ে মাছওয়ালাকে জিজ্ঞেস করেন যে মাছের ওজন কতো। জমিদারের নাতির সামনে বিগলিত হাসিমুখে বিক্রেতা যখন বলে সাড়ে তিন সের, তখন তিনি মুখের পেশী নাড়িয়ে চাড়িয়ে খানিকটা অবজ্ঞার প্রকাশ দেখান (এই একটি কাজে এঁদের জুড়ি থাকেনা, অবজ্ঞা, উপহাস প্রকাশে)। মাছ তো কিনবেননা জানিই, তারপরও দেখি দাঁড়িপাল্লা দিয়ে মাছের ওজনও করাচ্ছেন, মাছের গায়ে টিপে-টুপে দেখছেন, কানকো তুলে মাছ তাজা কিনা তাও পরীক্ষা করছেন। সবশেষে হতাশমুখে "পাঁচ সের না হইলে কি বোয়াল মাছ খাই মজা আছে নিকি!!" বলতে বলতে গুড়া মাছের দিকে হাঁটা শুরু করলেন। যেতে যেতে আশপাশের লোকজনকে শুনিয়েই স্বগোতোক্তি করেন, "করম আলী তো সকালেই কাতল মাছ নিয়া গেছে, অখন আমি কিছু গুঁড়ামাছ নিয়া যাই।" মুরুব্বীর কথা শুনে যারা তাঁর ট্যাকের খোঁজ রাখেনা, তারা খানিকটা হতচকিত হয়; যারা ট্যাকের খবর রাখে তারা মুচকি মুচকি হাসে।
এখানেই শেষ না, যেমন ধরুন বাজার থেকে ফিরতে ফিরতে পথেই হাতের ডানে বা বাঁয়ে জোলাবাড়ীর নারকেল গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে নিজের সগর্ব অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে জোলার দুবাই বা নিউইয়র্কবাসী ছেলের পাঠানো টাকায় করা পাকা দোতলা বাড়ীটি, টিনশেড যদিও। মুরুব্বী ইচ্ছে করেই আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন সেদিকে, তারপর এই ক'বছর আগেও জোলারা অঘ্রান মাসে কিভাবে তাঁদের বাড়ীতে এসে একবেলা পেটপুরে খাওয়ার জন্য বাপে-পুতে লাইন ধরে বসে থাকতো সে গল্প একদম দাঁড়ি-কমাসহ বয়ান করবেন। অথবা, মফস্বলের হাটে গিয়ে দেখলেন আকন বাড়ীর ছেলে তার কটকটে লাল রঙের টয়োটায় সুখী সুখী চেহারায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে উঠছে, বেড়াতে যাচ্ছে। মুরুব্বী খুব সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করতে পারবেন যে ছোটলোকের পয়সা হলেও কেন রুচির পরিবর্তন হয়না! এই রঙের গাড়ী মানুষে কেনে! সেখান থেকে দাদার ঘোড়ার গাড়ী বা বজরার গল্প শুরু করাটা তাঁর জন্য তখন মুহূর্তের ব্যাপার মাত্র।
উপরে যে মুরুব্বীর কথা বললাম, তিনি একটা কমপ্লেক্সে ভুগছেন, এই কমপ্লেক্সের কথা আমরা সবাই কমবেশী জানি। একসময় নিজেদের অনেক ছিলো, এখন শুধু যে নেই তাই নয়, এখন অন্যদের অনেক হচ্ছে সেটাও তাঁকে দেখতে হচ্ছে। এই অন্যদের হচ্ছেটাকে তিনি সহজভাবে নিতে পারছেননা, পুরোনো স্মৃতি বা পূর্বপুরুষ সম্পর্কে শোনা কথা সেখানে বারবার হানা দিচ্ছে। সেই স্মৃতি রোমন্থনই অন্যের প্রতিপত্তি দেখে মনকে শান্ত করার একমাত্র ঔষধ তাঁর জন্য। অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম, এই কমপ্লেক্সটার কি নাম দেয়া যায়?
২.
পৃথিবী জুড়ে অধুনা সাড়াজাগানো ছবি স্লামডগ মিলিয়নিয়ার সম্পর্কে নানা খবর পড়তে পড়তে আবারও একইরকম আরেকটি কমপ্লেক্সের কথা মাথায় খেলছে। সেটা একদা সবকিছু হাতের মুঠোয় থাকা বৃটিশদের, এবং মূলতঃ বৃটিশদেরই কমপ্লেক্স।
একসময় বৃটিশ সাম্রাজ্যে সূর্যাস্ত হতোনা, আজ হয়। শুধু তাইনা, আমেরিকাকে বাঘ ভেবে বৃটিশ পান্ডবকে আজ "পুডল" হয়েও নাচতে হয়। যে প্রতাপে তারা জগত নিয়ন্ত্রণ করেছে কয়েক শতক জুড়ে, আজ সেই প্রতাপকে ছাড়িয়ে যেতে দেখছে তারা পৃথিবীজুড়ে, নানানভাবে নানান জায়গায়। সেই অভিজ্ঞতা থেকে জমিদারের নাতি ঐ মুরুব্বীর মতোই কমপ্লেক্সের তৈরী হবার একটা সম্ভাবনা দেখা দেয়, সেজন্যই হয়তো স্যুটপ্যান্ট পরে সমুদ্রপাড়ে হাঁটতে থাকা আনস্মার্ট জাপানীদের নিয়ে বা উন্নত জীবিকার জন্য মরিয়া চীনাদের নানান ডেসপারেট কাজকর্ম নিয়ে কৌতুক হাস্যরসে মেতে উঠে তাঁরা আলাদা মজা পান।
তাঁদের সেই মজার লিস্টিটেই নতুন যোগ হয়েছে ভারত, যে ভারত আগামী বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবার সবরকমের পোটেনশিয়াল রাখে, এবং তা প্রকাশও পাচ্ছে সময়ের সাথে সাথে। তাই নাকবোঁচাদের মতো ভারতীয়রাও কতটা রুচিহীন, নিন্মগোত্রের সেটাওতো দেখাতেই হয়! সেই মানসিকতা স্লামডগ মিলিয়নিয়ার বানাতে গিয়ে ড্যানি বয়েলের কাজ করেছে কিনা জানিনা, তবে যেরকম এক্সট্রিম পর্যায়ের দারিদ্র্য আর অনাচার দিয়ে ভারতকে উপস্থাপন করা হয়েছে, তাতে কেউ কমপ্লেক্স খুঁজলে আমি দোষ দিতে পারিনা।
উপরোক্ত কমপ্লেক্সের বিচারে ড্যানি বয়েল আর তাঁর ক্রুরা খানিকটা গ্রে এরিয়ায় আছেন বলে টেনেটুনে পার পাইয়ে দেয়া গেলেও (যদিও আমি তাতে একমত না), বৃটেনের এক ট্যাবলয়েড পত্রিকা দু'চারদিন আগে যা করলো তা কিন্তু কোনভাবেই পার পাচ্ছেনা। যে দরিদ্র বাচ্চা মেয়েটি (রুবিনা আলী) স্লামডগের নায়িকা লতিকার ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয় করেছিলো, তার বাবাকে এরা একটি ভুয়া প্রলোভন দেখিয়েছে এই ট্যাবলয়েড। আরব ব্যবসায়ী সেজে তারা মেয়েটির বস্তিবাসী বাবাকে এই লোভ দেখিয়েছে যে মেয়েটিকে তারা ২ লাখ পাউন্ডে কিনে নেবে। ভারতীয় ছোটলোক বলেই হোক, অভাবে স্বভাব নষ্ট বলেই হোক -- মেয়ের বাবা নাকি রাজীও হয়েছেন। এ খবর জগতে সাড়াও ফেলেছে।
ভাবলাম, ট্যাবলয়েড ওয়ালাদের এই এক্সপেরিমেন্ট করার উদ্দেশ্য কি? দক্ষিণ এশিয়ার মানুষেরা কতটা লূজার লেভেলের দরিদ্র সেটা দেখানো? এই ঘটনা দিয়ে কি তারা আরেকবার সমগ্র বৃটেনবাসীকে নিশ্চিত করতে চাইলেন যে ভারতীয়দের এখনও তাদের পর্যায়ে আসতে অনেক দেরী? এই লোভী ফকিরের দল এখনও "অসভ্য" আরবদের কাছে সন্তান বিক্রী করে দেয় -- এটাই কি উপসংহারে টানতে চান ট্যাবলয়েড সাংবাদিক?
মজার ব্যাপার হলো, এই বস্তিবাসী শিশু অভিনেতাদের নিয়ে স্লামডগের বৃটিশ পরিচালক ড্যানি বয়েলের একটা ক্ষত কিন্তু রয়ে গেছে। কারণ, এ সত্যটা ফাঁস হয়ে গেছে যে, এই হতদরিদ্র শিশু অভিনেতাদেরকে বেতন দেবার বেলায় ঠিকই নিজের একটা পরিচয় প্রকাশ করে ফেলেছিলেন। শ্রমের ব্যাপারে যে তিনি জাতিভেদ সমর্থন করেন, সেটা প্রকাশ করে দিয়েছেন অদ্ভুত কিপ্টেমীর মাধ্যমে। তুমি মহারাজ তাজ হোটেলে বসে টেবিলের উপর ঠ্যাং উঠিয়ে এক সন্ধ্যায় ১৯৩৯ ল্যাবেলের যে মদ পান করো, তার অর্ধেক দামও শিশু অভিনেতাদের পারিশ্রমিক হিসাবে দাওনা, আবার বলো, তাদের বেতন ভারতের সাধারণ বেতনের তিনগুণ! তা পরিচালক আর অভিনেতার বেতনের অনুপাত কতো? সেই একই অনুপাতে কি ড্যানি বয়েল নিজের বেতন নিয়েছে? নাকি ভারতীয় আর বৃটিশ, জাতি আলাদা বলে বেতন আলাদা?মধ্যপ্রাচ্যের তৈলশেখেরা এখন চরম চিত্তচাঞ্চল্যের সাথেই ড্যানি বয়েলকে নিয়ে এককাতারে "জামাতে নামাজ" আদায় করবেন।
৩.
চীনা-জাপানীদের মতো ভারতীয়দেরও ছোটলোক হিসেবে প্রমাণ করতে যেভাবে জনাবেরা উঠে পড়ে লেগেছেন, তা দেখে আমার মনে যে বেসিক প্রশ্নটা সবসময় জেগেছে তা হলো, এসব করে এদের আদতে লাভটা হচ্ছে কি! আত্মতৃপ্তি?
তাদের কোন লাভ হোক বা না হোক, আমার একটা লাভ হয়েছে। জমিদারী হারানো উত্তরপুরুষদের পরশ্রীকাতরতাজনিত যে কমপ্লেক্স, তার একটা জুতসই নাম খুঁজছিলাম। একদম খাপেখাপ পেয়ে গেলাম, এটাকে "দ্য গ্রেট বৃটেন কমপ্লেক্স" নাম দেয়া যায়।
মন্তব্য
ট্যাবলয়েডের একটা লিঙ্ক দ্যান, হতচ্ছাড়াগুলো কী লিখেছে পড়ে দেখি।
স্লামডগ যে দেখি নাই ভালোই করেছি মনে হয়।
আপনি লিংক চেয়ে ভালোই করেছেন ... একটা মারত্মক ভুল ধরা পড়লো ... জামাল মালিকের চরিত্রের শিশু অভিনেতা না, লতিকা চরিত্রের মেয়েটি, রুবিনা আলীর বাবাকে নিয়ে এই এক্সপেরিমেন্ট করেছে তারা
http://www.thaindian.com/newsportal/uncategorized/shekhar-kapur-slams-british-tabloid-for-slumdog-sting_100183230.html
গতকাল সকালে টিভির খবরে দেখে মেজাজ চড়ে গেছিলো ... আজ সকালে মিটিংয়ে ঝিমানোর বদলে ল্যাপটপে নোট তোলার ভান করে লিখে ফেললাম
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
কমপ্লেক্স দ্যা ব্রিটানিয়া
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
এই নামটা ফ্রেঞ্চ ফ্রেঞ্চ লাগতেছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
পরে বিস্তারে লিখব, তবে আমার ধারণা একে বলা হয় কলোনিয়াল হ্যাং-ওভার। একটা উদাহরণ পড়তে পারেন এখানে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
হুমমম ... তবে কলোনিয়াল হ্যাংওভারটা একটু ভিন্ন জিনিস ... বনেদী অভ্যাস হিসেবে কাউন্ট করে পুরোনো নিয়ম থেকে বের হয়ে আসতে না পারা, যেমন, সেই কলোনী আমলের নিয়মেই আসক্ত থাকার টেন্ডেন্সী ... এটা মূলতঃ কলোনীগুলোতে বা সেখানকার লোকদের মাঝে দেখা যায়
সেসাপেক্ষে এখানে আলোচ্য কমপ্লেক্সটা একটু ভিন্ন প্রকৃতির ... আরো ওয়াইড স্কোপে ভাবা যায় এটাকে নিয়ে ... এটা ঠিক হ্যাংওভার না যে একবার মদ খেয়ে তাতেই টাল হয়ে আছি .... বরং এটাকে বলতে পারেন এমন যে, আগে মদ খেতাম, এখনও মদ খেতে ইচ্ছে হচ্ছে কিন্তু হাতে পয়সা নেই, তাই বাজারের সব মদকে নিন্মমানের বলে প্রমাণের চেষ্টা
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
"সেই কবে ঘি খাইসি, এখনো গন্ধ শুঁকি"
বেড়ে বলেছেন
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
আত্মতৃপ্তি-ই হবে হয়তো।
সেইটাই ... অদ্ভুত আত্মতৃপ্তি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
এই কমপ্লেক্সে ভুগতেন, আমাদের গ্রেট ব্লগকূলশিরোমনি ইরাদ সিদ্দিকী। উনার ওয়েব সাইটে গেলে উনার পূর্ব পুরুষেরা কে কবে রাজা মহারাজা পাগল মোঘল ইত্যাদি ছিলো সেইটার হদিশ পাওন যাইতো।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
হা হা হা
ব্যাটার ব্লগটা একটা পারফেক্ট বিনোদন ছিলো
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
আপনি ভারতীয়-চীনা-জাপানিদের ছোটলোক প্রমাণ করার বিষয়টি ঠিক ধরেছেন, তবে এর উদ্দেশ্য সম্ভবত আপনার গল্পের মুরুব্বী থেকে আলাদা। ব্রিটিশরা আর্থিক লাভ ছাড়া কোনো কাজ করবে না। (চীনারাও তাই, জাপানিদের কথা জানি না, ভারতীয়দের অন্তত একটা বিরাট অংশও তাই।) সুতরাং এখানে প্রতিযোগিতাটা মূলত অর্থনৈতিক, মুরুব্বীর মতো অতীত স্মৃতি রোমন্থন জাতীয় অনুৎপাদনশীল কোনো চিন্তাধারা নয়।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
না বস্,
সিম্পলি টাকা আয়ের উদ্দেশ্যে ট্যাবলয়েড পত্রিকা এই কাজ করছে বললে মানতে পারলামনা ... স্লামডগ যেই জোয়ার তৈরী করছে, তাতে এর চেয়ে আরো অনেক খবরই পাবলিক বেশী খাইতো ... এইটার বরং নিন্দিত হওয়ার রিস্ক বেশী ছিলো, এবং হয়েছেও .... এই কাজের পেছনে যে হীনমণ্যতা কাজ করছে বলা যায় ...
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
তাইলে এটা করে তাদের 'লাভ' কি? লাভ ছাড়া তারা কিছু কি করবে?
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আর্থিক লাভ তো অবশ্যই হিসাবে ছিলো ... কিন্তু তারসাথে এক ধরনের ইনসাল্টও অনুভব করছি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
- রাগিব ভাইয়ের নামকরণটা সেইরম হৈছে। আকীছিরে!! সিম্পলী সুপার্ব
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
বাদশা ভাই, লেখা ভালো লাগলো বিশেষ করে এক্স-নবাবের কান্ড-কারখানার বিবরণ। স্লামডগ দেখেছি, সাধারণ মানের ছবি। বয়েলেরই এর থেকে অনেক ভালো ছবি আছে (28 Days Later যেমন)। তবে যেই জায়গাটায় একমত হতে পারলাম না, তা হলো ব্রিটিশ পরিচালক বয়েল প্রাক্তন চাকরের সাফল্য সহ্য করতে না পেরে ভারতকে ছোট করতে চেয়েছেন।
ভারতের বিগত দশকের উন্নয়ন খুবই ভারসাম্যহীন অবস্থায় এগোচ্ছে। এটার দিকে মনোযোগ আকর্ষণ করলেই তাতে হিংসা বা বিদ্বেষ প্রকাশ পায়, এমনটা আমি মনে করি না। একদিকে আছে শহুরে এমটিভি জেনারেশানের তাং-ফাং, বলিঊডের মিশ্রিত হিংলিশ ডায়ালগ আর অতি আধুনিক বোলচাল, পোশাক-আশাক। আছে মালটিন্যাশনালদের চকচকে অ্যাড সব টিভি জুড়ে। সেটা ভারতের একটা রূপ, যেটা দেখে আমরা অনেকেই প্রতিদিন তাজ্জব বনছি। সেই রূপ ভারতের একটা জনগোষ্ঠীর চেহারা। বিজেপি সরকার এর নাম দিয়েছিলো 'ইন্ডিয়া শাইনিং'। আশু সুপারপাওয়ার।
এদের বিপরীতে আছে আরেক রূপ যেটা বয়েলের ছবিতে কিছুটা হলেও এসেছে। খেয়াল রাখবেন যে বয়েলের ছবির আদিসূত্র এক ভারতীয়েরই লেখা উপন্যা্স - সেই লেখকের নাম বিকাশ স্বরূপ। সেই বৈষম্য, দারিদ্র্য, নিপীড়ন আর দম্ভের দেশ নিয়ে লিখেছেন অনেকেই, ভারতীয় এবং বিদেশী। এরা সবাই ব্রিটিশ কমপ্লেক্সে ভুগছেন এমনটা মনে করি না। ব্রিটিশ ট্যা্বলয়েডের কাজই হলো স্টান্টবাজি করে টাকা বানানো। এরা মরা ডায়ানার ছবি ছাপিয়েও কাটতি বাড়াতে রাজি। তাদের কারসাজি থেকে কেউ একটা পুরো দেশ সম্পর্কে ধারণা নেবে, তাই যদি হয় তাহলে সেটার সাথে তুলনা করা যায় আমরা যদি নাইট রাইডার বা ম্যা্কগাইভার দেখে ভাবি আমেরিকা পুরো দেশটাই টিভির ছবির মতন।
হতাশা আর যন্ত্রণার অপর ভারত নিয়ে প্রতিদিন লিখে যাচ্ছেন সাংবাদিক সাইনাথ, প্রবন্ধকার অরুন্ধুতি - এরা দেশীয় মাধ্যমের সাথে আছেন। বিদেশী মাধ্যমের জন্য লিখছেন আনন্দ গিরিধারাদাস বা সোমিনি সেনগুপ্ত। এরা কেউই দালাল না, যদিও শহুরে ভারতীয়রা তাদের লেখা একদম পছন্দ করেন না, আর NRI ভারতীয়রা তো যে কোন রকম সমালোচনা একদম বরদাশত করতে পারেন না। ভারতের 'ইমেজ' ব্যথা পায় বলে কথা। তারপরেও এই সব গল্প বলতে হয় - সেটা অরুন্ধুতি হোক, বা বয়েল হোক, বা সাচার কমিশনের রিপোর্টই হোক। (স্লামডগের মূল চরিত্র মুসলমান বস্তিবাসীরা - এই মিয়াদের জীবনযাত্রার কি যে প্রকৃত হাল, সাচার তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছিলেন কয়েক বছর আগে। হরিজন দলিত অস্পৃশ্যদের সাথে খুব বেশী তফাত নেই, সাচারই বলেছেন।)
আমাদের দেশেওএকই জিনিস দেখি। আমাদের শহুরে শিক্ষিত সমাজ তাদের চোখের সামনে যে তাবত অনাচার বেমালুম ভূলে থাকতে পারে, সেটা ভারতীয় মিডেল ক্লাসের আচার-আচরণের আরেকটা প্রতিফলন। সত্য বটে যে আমরাও একই উন্নাসিকতা আর দম্ভের পথে হাঁটছি।
আনন্দ গিরিধারাদাস একটা লেখা দিয়েছিলেন হেরাল্ড ট্রিবিউনে - এই জিনিস নিয়েই। আশা করি পড়ে দেখবেন।
The Slumdog Effect - Afflict the Comfortable
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
ধন্যবাদ, সুবিনয় দা ... ঠিক বলছেন, একটা কমপ্লেক্স যে ধনী-দরিদ্রের হিউজ ডিসপ্যারিটিওয়ালা সমাজের ধনী বা মধ্যবিত্ত অংশে কাজ করে, সেটা ঐদিন সকালে খবরটা শুনে নিজের ক্ষেপে ওঠার মধ্যেও টের পাইছি ... জাপানী কোন হোমলেসকে বোকা বানালে হয়তো আমি এমন ক্ষেপতামনা
এটাও মানতেছি যে ট্যাবলয়েডওয়ালাদের আচরণ দিয়া পুরো বৃটিশ জাতিকে বিচার করাটা স্টেরিওটাইপিং .... আমিও বিশ্বাস করি সাধারণ বৃটিশদের মধ্যে এই কমপ্লেক্স নেই ... কিন্তু বৃটিশ কেউ যখন এরকম কাজ করে যেটাতে কমপ্লেক্স এন্টিসিপেট করা যায়, তখন সেটাকে কেন জানি জমিদারী কমপ্লেক্স বইলা ভাবতে ভালো লাগে
যখন চিন্তা করি, এই ট্যাবলয়েড সাংবাদিকের কোন মনস্তত্বটা এধরনের বোকা-বানানোতে তাকে উদ্বুদ্ধ করেছে, আমি সূক্ষ্ম একটা কমপ্লেক্স টের পাই
ড্যানি বয়েলের বয়াপারে হয়তো আমি বেশীই উগ্রবাদী ভাবে ভাবতেছি, তবে তার উপরে মেজাজ খারাপ হওয়ার একটা কারণ আছে। তিনি যদি অরূন্ধতী রায়দের মতো ভারতীয় সমাজের এই ধনী গরীবের ডিসপ্যারিটিটাকে ফোকাস করে তুলতেন, সেটাকে মূল সমস্যা হিসেবে ফিড করাতেন, আমি হাততালিই দিতাম ... কিন্তু তিনি কেমন একটা স্বপ্নময় মেসেজ দিলেন, দারিদ্র্যের মধ্যে থেকেও ডেসটিনির মাধ্যমে বহু টাকার মালিক হওয়ার কাহিনী প্রচার করে তিনি আসলে কি বলতে চাইলেন -- সেটা ভেবেও কিছু পাইনি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
আপনার খানদানী জমিদার বংশের মুরুব্বীর কাহিনী পড়ে প্রভূত আনন্দ পেলাম।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
ধন্যবাদ সন্ন্যাসীদা ... পড়েছিলেন নাকি, এরকম কারো পাল্লায়?
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
ধন্যবাদ
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
লেখাটি যে অসামান্য কিছু, তা প্রকাশের মুহূর্তেই বুঝেছিলাম। সময় করে এবং অনুভবের সাথে পড়বো বলে তুলে রেখেছিলাম। এই মাত্রই দুই বার পড়লাম। দারুণ লিখেছেন। আপনার ও সুবিনয় দা'র মিলিত বক্তব্যের সাথে একমত।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ...
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
নতুন মন্তব্য করুন