প্রতিটি মানবশিশুই কবি।
প্রতিটি নিষ্পাপ ভাবনাই কবিতা।
কবি হয়ে জন্মায় মানবেরা,
সকলেই,
হাসে, কাঁদে, খেলে,
টুকটাক কথা বলে,
কবিতা লেখে, গড়ে;
আর তারপর?
কবিতা লিখতে, লিখতে, লিখতে,
একদিন!
কবিত্ব হারায়!
একই সাথে সতীত্ব হারায়!
কারণ, কবিত্ব সতীত্বের মতোন;
চারিদিকে লকলকে ভয়াল, জিভগুলো সব,
নেকড়ে-সিংহ-বাঘ-ভালুক আর শৃগালের কলরব,
ধীরে, ধীর পায়ে হামাগুড়ি দিয়ে আসে;
ঠিক যেনো খুনী বুলডোজার এক,
তাড়া করে, ঘরছাড়া করে।
পথে দেখা দেয়,
আলাদীনের চেরাগ হাতে রাজকন্যা বদর-আল-বুদুর,
হাতের কাঁকন বাজে, রিনঝিন রিনঝিন;
সুর ওঠে স্খলন আর আমোদের; তামাশার।
যাদুর বাঁশী বাজে, "ভুলে যাও!!", ওঠে রব,
ভুলে যায় কবি -- কবিত্ব, সতীত্ব, আর সব!
মাথার ঠিক আধহাত দূরে
ঝুলে থাকে চেরাগের জ্বীন, হাতে থলি,
মোহরের থলি, বাজে, ঝনঝন ঝনঝন।
চকচকে চোখে চেয়ে দেখে কবি সব,
আহা বিগত কবি, প্রাচীন কবির মন।
রঙে আঁকা সঙে সাজা মঞ্চে কবি,
উলঙ্গ বিবেকে নর্তন কূর্দন চলে, রাতভর।
প্রশংসাপত্র ওড়ে একের পর আরেক,
মঞ্চ ভেসে যায়, অশ্লীল সরোবর।
হাততালি, গুনগান, কদমবুসি, অটোগ্রাফ, -- অতঃপর!
জলের অপস্রোতে ভুলে যায় কবি,
ভুলে গেছে কবি -- গুরু বলেছিলো তার,
"দূর্বোধ্য ভাষায় ভন্ডামীর দেয়াল গড়লেই,
কবি হওয়া যায়না,
কারণ, কবিত্ব সতীত্বের মতোন,
এক বর্ণহীন অহংকার।"
*[অনেক আগে রাগের মাথায় লেখা কবিতা, বেশ খানিকটা ঘষে মেজে কিছু একটা বানানোর চেষ্টা করলাম।]
**[এই কবিতার সাথে উত্তরাধুনিক কবিতার কোন সম্পর্ক নেই, কারণ যখন এই কবিতা লেখা হয়েছিলো, তখন লেখক "উত্তরাধুনিক কবিতা" কি জিনিস, খাদ্য না পোষাক না বাসস্থান, সেটা জানতোনা!]
মন্তব্য
জন্মসূত্রে কবি হওয়ায় গর্বিত কিন্তু-
আধুনিক আর উত্তরাধুনিক কিভাবে শিখব
লেখক কি শেখাবেন 'কবিতার ক্লাসে', কবিতাটি
রাগের হলেও মন্দ নয় সে বিষয় ভালো।
মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....
মাফ চাই ভ্রাতঃ
কবিতা নিয়ে লিখেই মনে হলো উদ্ধত কথা বলে ফেললাম, ক্লাস নেয়ার সাহস নাই
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
চরমভাবে একমত
----------------------------------------------------------
স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। স্বপ্ন দেখতে এবং দেখাতে চাই আজীবন।
----------------------------------------------------------
----------------------------------------------------------
স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। স্বপ্ন দেখতে এবং দেখাতে চাই আজীবন।
----------------------------------------------------------
যাক একমত কাউকে পাওয়া গেলো
আমার মনে হয়, কবিতার স্বাদটা হলো কবির পর্যবেক্ষণের সফল প্রকাশ, আর দৃষ্টিনন্দন পরিবেশন হলো ভাষার অলংকরণ ...
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
কিছুদিন ধইরাই সারল্যের ব্যাপারটা লয়া গেঞ্জামে আসি... এক ধরণের রি-অ্যাকশান বলা যাইতে পারে... মূলতঃ 'রস'-এর জন্যে কবিতায় আড়ালের যে ব্যাপার-স্যাপার... সেইটা আগে, নাকি, কবিতার ঐ একদম যে সময়টা আগে... এবং, সেইটার সেইরূপ ম্যানিফস্টেশান দরকার... এইসব বিলা আরকি... একটু ইম্প্রেশানিস্ট হয়া গেল, হালকা সুররিয়ালিস্টো...
যাউকগা, এইটার ভেতর সেই সারল্যের জন্যে আকুতিটা ভাল লাগলো... কিন্তু, কবিতা আছে কিনা সেইটা আমার পঠনে বুঝলাম না... মানে, আমি যখন পড়তাসি, এইটা তো আমার টেক্সট হয়া উঠতাসে... তখনের কথা কই...
বাদশা ভাই, আমি আরো আরো পরবার চাই...
ধন্যবাদ জিফরান খালেদ ... পড়তে চাইলে আরো দেওয়া যাইবো ...রসের গ্যারান্টি যদিও দিতে পারুমনা
এই কবিতায় ঠিক সারল্যের জন্য আকুতি অবশ্য করা হয় নাই ... হয়তো ইদানিংকার উত্তারাধুনিক কবিতা নিয়া নানান জায়গায় আলোচনার প্রেক্ষিতে আপনার মনোযোগটা এখানে একেবারে শেষ প্যারায় গিয়া পড়ছে ...
পুরো কবিতায় বলা হইছে মূলতঃ কবির কবিতা আর কার্যক্রমের হারমোনি নিয়া ... কবিরে কি শুধু কবিতাতেই খুঁজবো, নাকি ব্যক্তি কবির কার্যক্রমেও, বিশেষ কইরা যখন সেইটা লোকজনের কাছে প্রকাশিত হয়, সেখানেও খুঁজবো... বিক্রী হওয়া কবিরা হয়তো ভাবেন তাঁরা ভবিষ্যতে বেঁচে থাকবেন শুধুই কবিতায় ... তাই বিক্রী হওয়া আত্মার প্রকাশ তাঁরা লুকাইতে চান, আবার এমন কিছুও কইতে চাননা যাতে ক্রেতার বিরক্তি হয় ... সেই অবস্থান থেকে কবি সময়ের সাথে সাথে দূর্বোধ্য হইয়া উঠেন বইলা দাবী কইরা ফালাইছি ... সেইটা ঠিক উত্তরাধুনিক/ইম্প্রেশনিজমঘটিত দূর্বোধ্যতারে কাভার করে না, তবে বিক্রী হওয়া কবি যদি এই তরিকায় দূর্বোধ্যতার আমদানী করে তাইলে আবার কাভার কইরা ফেলে
'কবিতার রস' অথবা 'টেক্সটে কতখানি রসের সম্মিলন ঘটাইলে সেটা কবিতা হইবো' -- এইটা আলোচনায় অবশ্য আমি একেবারেই নাদান ...
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
আহারে বাদশা ভাই,বাংলাটা এখনো তেমন রপ্ত হয় নাই, হইলে সোন্দর বুঝাইতে পারতাম... একদিন পারবো আশা রাখি, তখন আর ভুল বুঝা হবে না...
'সরল'-এর যে বয়ান, সেইটা আপনার কবিতারে নিয়া কইসি... আপনার কবিতা পাঠের পর, বা, পাঠের সময় রূপক/ইঙ্গিতের ভার খুব ভারবাহী মনে হয় নাই... একটা স্পষ্ট স্বর... যতটুকু আড়াল আসে, সেইটাতেও মনে হইলো আপনিই আড়ালটারে নিয়ন্ত্রণে রাখসেন, আড়াল আপনারে খাইয়া ফেলে নাই...
'উত্তরাধুনিকতা' নিয়া তো কোনো বচন দেয় নাই... দেয়াটা গোস্তাখী হয়া যায়... তবে, সুররিয়ালিজম বা ইম্প্রেশানিজম লয়া যে কথা, তার মর্তবা আসিলো আমি যে প্রশ্নের মুখোমুখি হইতেসি, সেইটারে ঘিইরা... ঠিক একটা সময়ে যেইভাবে একটা দৃশ্য ধরা পড়তাসে, সেইটারেই তুইলা আনন, সেইটা তথাকথিত দৃশ্যের আদর্শ রূপ হইতে হাজার মাইল দূরের হইতারে, বা, কোনো ধরণের সৌন্দর্যবোধ দ্বারা তাড়িত না হয়া যে ফ্রি-এসোসিয়েশান... এই ব্যাপারগুলাই হবে, নাকি, একটা যত্নসহকার নির্মাণ, যেইটাতে 'কবিতা' একটা স্ট্যান্ডার্ডাউজড ফর্মে... এইগুলা লয়া যে বিলা, সেইটা আপনার লগে শেয়ার করসিলাম... আপনার কবিতার ওপর আরোপ করি নাই... আক্রান্ত না হয়া আবার আমার শব্দগুলান দেখলে এইটা হয়তো মনে হইতে পারে...।
'রস' তো রবিঠাকুরের রাইখা যাওয়া ওজন! সেইজন্যেই রসরে 'রস' কইরা কইতে হয়...আমার কাসে কবিতা যেতটুকু 'রস'-সমেত হাজির হয়, সে-পরিমাণটুকু না জাননের জন্যে আপনি নাদান হইলেন, এইটা দুঃখ দিলো... 'রস' ব্যাপারটা লয়াই তো সংশয় যায় না... আলোচনা তো দূর কি বাত...
পরিশেষ হইলো, কবিতায় কি বলা হইসে, এইটা কয়া দিলেন, বেশ হইলো, আপনার চিন্তাটা স্পষ্টতর হইলো... 'হারমোনি'র যে ব্যাপারটা কইলেন, সেইটা নিয়া আপনার যদি নিজস্ব কোনো বিস্তারিত কথন থাকে, শুনবার অভিপ্রায় রাখলাম...
আমার বক্তব্যরে আপনার কবিতায় গায়ে তুইলা নিতে হইলো বইলা শরমিন্দা হইলাম... ঐযে, ঠিকমতো বুঝাইতে পারি না, ভাষা রপ্ত হয় নাই... এইগুলা আর কি...
আরো লিখা দেন... পড়ি।
নাহ জিফরান ভাই, বাংলা আপনার ঠিকই আছে ... আমিই বুঝতে পারিনাই ... এইবার ক্লিয়ার হইলো ....কবিতার শেষ প্যারায় দূর্বোধ্যতা নিয়া যা লিখছিলাম, ভাবছি সেইটার সাপেক্ষে সারল্য/ইম্প্রেশনালিজম এিসব প্রসঙ্গ আনছেন
হ্যাঁ, আপনি ঠিকই ধরছেন, একেবারেই কিছু আড়াল করার চেষ্টা করিনাই ...
এইটা একটা ইন্টারেস্টিং আলোচনার দাবী রাখে ... তবে ফ্রি এয়াসোসিয়েশন ইটসেল্ফই কি বস একটা স্ট্যান্ডার্ড হইয়া যায়না বস্? ... একটা কবিতা পাঠের পর এর স্বাদ, ঘ্রান, ভিজুয়াল ইমপ্যাক্ট সবই পাঠকের মনে টিকে থাকে, প্রশ্ন হইলো কোনটা কতক্ষণ টিকবে ...সেই অবস্থান থিকা আলোচনা হইতে পারে যে একটা কবিতা শেষমেষ পাঠকের মনে কি হিসাবে টিকা থাকে, যেমন ধরেন এক বৎসর আপনার একটা কবিতা যেটার শিরোনাম আমার মনে নাই, সেটার রেফারেন্স যখন আমি দিবো অন্যকোথাও, তখন আমি সেইটারে কিভাবে রিপ্রেজেন্ট করতে পারি ... সেখানে আমি যা দিয়া রিপ্রেজেন্ট করবো সেইটাই আমি মনে করি যে কবিতার টিকে থাকা উপাদান ...
কবিতার উপর আরোপিত কিন্তু আমি মনে করিনাই ... আমি ভাবছি কবিটার ভাবার্থের জের হিসাবে আপনি উপরের আলোচনার অবতারনা করছেন ... সেখান থিকাই কবিতার মূল বক্তব্য আবার ব্যাখ্যা করছি
আমার কাসে কবিতা যেতটুকু 'রস'-সমেত হাজির হয়, সে-পরিমাণটুকু না জাননের জন্যে আপনি নাদান হইলেন, এইটা দুঃখ দিলো
হায় হায় ... আবারও মিসকমিউনিকেশন
সেই পরিমাণ না জানার জন্য না, কবিতার রসের ব্যাপারেই আমার আসলে আলোচনা করার সামর্থ্য নাই, সেই অর্থে নাদান
"হারমোনি"র ব্যাপারে পরে কখনও হয়তো গদ্যে একটা আলোচনার অবতারনা করবো ... তখন আপনারে চাই কিন্তু
ধন্যবাদ জিফরান ভাই, আলোচনা উপভোগ করছি ...
আমার কবিতায় (কবিতা কওয়া যায় কিনা সেইটা একটা প্রশ্ন ) অলংকরণের অভাব আমি অনুভব করি, উপমা নিয়াও খুব সাহস কইরা দূরে টুরে যাইতে পারিনা ... সাদামাটা হয়ে যায় ... এই কবিতাটার অলংকরণ নিয়া আপনার বিস্তারিত সমালোচনা শুনতে চাই
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
'টিকে থাকা' ব্যাপারটাতে আমি উতসাহ হারাইসি অ্যাশবেরী পড়নের পর থেইকা, আর, ইলিয়টের কাব্যভাবনা দেইখা...আমার আগ্রহ কবিতার শরীর, গঠন, মন লয়া... পাঠকের পঠন লয়া... কে কোথায় কি নিয়া গেলো, কি থুইয়া দিল, কিইবা ফেলাইলো, এইসব মহাকালের লগে মাইনষের হিশাব, তার শিল্পোবোধের খতিয়ান...
তবে, পাঠকের রিপ্রেসেন্টাশেন ব্যাপারটা আমার আগ্রহের... কারণ, সেইখানে কবিতারে সে যে পাঠ করলো, সেইটার একটা আলাপ আইসা পড়ে...
উপমা, রূপক, অলংকার লয়া বস হইলেন সুব্রতদা, আমি সুমন রহমান ভাইয়ের কবিতা অনুবাদ করতে করতে এইগুলারে একদম গলা চিইপা অসহায়ভাবে কবিতায় রাখনের মত রাখলাম... আপনের কবিতায় যে কয়েকটা ইঙ্গিত ব্যবহার করসেন, তার বাইরে এইটা তো content এর উপর খাড়ানো কবিতা... মানে, লাইনগুলা অলংকারের বদলে একটা কইরা বয়ান বা বিবৃতি দিতাসে, যেইটা তার পরের যে বয়ান, সেইটারে লয়া আগাইতেসে... এই বয়ানগুলাতে ফিলসফি আসে, এক ধরণের মিস্টিক আমেজ আসে, কিন্তু, সেইটা প্রতীকে অবসিত হয় নাই...
যাউকগা, আলোচনা হইলে ডাক দিয়েন, বা চোখে পড়লে তো আসিই... মিসকমিউনিকেশানের জন্যে দরদ দিয়া শরম পাইলাম
ওকে বস্, কবিতার টিকে থাকা নিয়ে একটা আলোচনা করা যায়
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
নতুন মন্তব্য করুন