জেনো নামের এক ফাজিল গ্রীক পন্ডিত ছিলেন যিনি অনেক প্যাঁচ লাগিয়ে গেছেন গণিতবিদদের মাথায়, জেনোর প্যারাডক্স নামে বিখ্যাত একটা গাণিতিক ফাজলামো (ম্যাথমেটিকাল ফ্যালাসি) আছে, যেখানে তিনি দাবী করেছেন যে, বজ্রগতির উসাইন বোল্টকে যদি আমার মতো নাদুস-নুদুস এক আরামপ্রিয় লোকের সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় নামিয়ে দেয়া হয় এই শর্তে যে আমার স্টার্টলাইন বোল্টের চেয়ে ধরুন মিটার দশেক সামনে হবে, তাহলে নাকি বোল্ট আর কোনদিন আমাকে অতিক্রম করতে পারবেনা!
এরকমই আরেকটি গাণিতিক ফাজলামো উপরের শিরোনামের অনুসিদ্ধান্তটি, যেখানে দাবী করা হচ্ছে যে পৃথিবীর সব মানুষের আয় যে সমান, তা নাকি অংক(মানে গণিত আর কি) দিয়ে প্রমাণ করা যায়।
এই ফাজলামোর ঝামেলাটা ঠিক কোথায়, সেটা বোঝা কষ্টের, আর সেজন্যই একটু মজার।
এই ফাজলামোটা বুঝতে হলে একটু গণিত নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে, ঘাবড়াবেননা, একদমই কঠিন না। গণিতের সূত্রগুলোকে নানান পদ্ধতিতে প্রমাণ করা যায়, এর মধ্যে এযাবৎ আমার কাছে সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি বলে যেটাকে মনে হয়েছে সেটা হলো ম্যাথমেটিকাল ইন্ডাকশন (গাণিতিক আরোহ)। যারা ইন্ডাকশন সম্পর্কে জানেননা তারা সবশেষে ইটালিক অংশটি আগে পড়ে নিতে পারেন।
মোটা দাগে বললে ইন্ডাকশনের মাধ্যমে সিরিজের প্রমাণ যায় সহজে। এখানে একটা সূত্র প্রমাণ করতে হলে যা করতে হবে তা হলো,
১। প্রথমে প্রাথমিক মানের (যেমন ধরুন ১ ) জন্য সূত্রটা প্রমাণ করতে হবে যোগ বিয়োগ করে।
২। তারপর যে কোন সংখ্যা k এর জন্য সূত্রটা সঠিক এটা ধরে নিতে হবে, এটা এ্যাসাম্পশন।
৩। (২)কে ব্যবহার করে দেখাতে হবে যে k এর জন্য সূত্রটি সঠিক হলে (k+১) এর জন্যও সেটা সঠিক হবে।
তিনটা কাজ মাত্র, সব শেষ!প্রমাণ হয়ে গেলো!!
সব মানুষের আয় সমান -- ইন্ডাকশন পদ্ধতিতে এই থিওরীর প্রমাণ।
পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা যেহেতু পজিটিভ পূর্ণসংখ্যা, তাই প্রথমে আমরা দেখবো এর প্রাথমিক মান ১ জন মানুষের জন্য থিওরীটি খাটে কিনা। পৃথিবীতে একজন মাত্র মানুষ থাকলে এটা এমনিতেই প্রমাণিত যে এখানকার সবার আয় সমান।
এখন ধরলাম কোথাও যদি মোট k জন মানুষ থাকে, তাহলে সবার আয়ই সমান হবে। এটাই এ্যাসাম্পশন।
এখন আসুন k + ১ এর বেলা এটা প্রমাণ করা যায় কিনা।
ধরুন পৃথিবীতে k + ১ জন মানুষ আছে, এবং এদের মধ্য থেকে জনাব "ক" কে (যে কেউ হতে পারেন এই জনাব "ক") বাদ দিয়ে বাকীদের হিসাব আমরা করবো। তখন মোট মানুষের সংখ্যা হয়ে যাচ্ছে k জন, আমরা উপরে ধরে নিয়েছি যে যখনই কোথাও k জন মানুষ থাকবে, তাদের সবার আয় সমান হবে। কাজেই"ক" বাদে বাকী সবার আয় সমান।
এখন আসুন আবার ঐ k + ১ জন থেকে জনাব "খ" কে ("ক" ছাড়া যে কেউ হতে পারেন) বাদ দিয়ে বাকী সবার হিসেব করি। আবারও মোট জনসংখ্যা k হয়ে যাচ্ছে এবং আমাদের এ্যাসাম্পশন অনুযায়ী এদের সবার আয় সমান।
এখন আসুন আমরা আবারও ঐ k + ১ জন থেকে জনাব "গ" কে ("ক" এবং "খ" ছাড়া যে কেউ হতে পারেন) এর কথা ভাবি। উপরের দুই প্যারা থেকে বলা যায় যে, "ক" এর আয় "গ" এর আয়ের সমান, আবার "খ" য়ের আয়ও "গ" এর আয়ের সমান। অতএব মোট k + ১ জনের বেলায়ও সবার আয় সমান -- এটা প্রমাণ হলো।
আমরা দেখালাম ১ জনের বেলা থিওরিটি সঠিক, তারপর k জনের বেলায় এটিকে সঠিক ধরে দেখালাম যে k + ১ জনের বেলায়ও এটি সঠিক হয়। মানে একজনের বেলা সঠিক হলে ২ জনের বেলায়ও সঠিক হবে, আবার ২ জনের বেলা সঠিক হলে ৩ জনের বেলায়ও সঠিক হবে, এভাবে যতদূর যাবেন সবার আয় সমান!
অতএব ইন্ডাকশন পদ্ধতিতে প্রমাণিত হলো যে
পৃথিবীর সব মানুষের আয় সমান!!
আহ! ভাবতেই ভালো লাগছে, বিল গেটসের এ্যাকাউন্টের ঐ বিশাল অংকটা গাণিতিকভাবে ভুলভাল কিছু!
****************************************************
****************************************************
সহজে ইন্ডাকশন পদ্ধতিটা ব্যাখ্যার চেষ্টা করি।
ধরুন আপনাকে প্রমাণ করতে হবে ১ থেকে n (এটা হলো যেকোন পজিটিভ পূর্ণসংখ্যা) পর্যন্ত সংখ্যাগুলোর যোগফল n*(n+1)/২।
মানে প্রমাণ করতে হবে যে,
১ + ২ + ৩ + ... ... + n = n*(n+1)/২
ইন্ডাকশন পদ্ধতিতে আপনাকে যেটা করতে হবে তা হলো, প্রথমে ১ এর জন্য দেখাবেন যে উপরের সূত্রটা ঠিক। মানে n = ১ ধরলে, ১ থেকে ১ এর যোগফল হলো ১, এবং দেখুন n*(n+১)/২ = ১*(১+১)/২ = ১।
তারপর অবশ্য ২, ৩, ৪, ... এরকম লাইন ধরে সব সংখ্যার জন্য হিসেব করতে হবেনা, সূতরাং রিলাক্স করুন।
যেটা করতে হবে তা হলো, এখন আপনি ধরে নেবেন যে যেকোন পজিটিভ পূর্ণসংখ্যা সংখ্যা k এর জন্য, উপরের প্রমাণিতব্য বক্তব্যটি সঠিক। ধরে নিলেই চলবে, মানে আপনি নির্দ্বিধায় বলে দিন যে,
১ + ২ + ৩ + ... ... + k = k*(k+১)/২ ... ... (১)
এখন আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যে k এর জন্য সত্য হলে সূত্রটি k+১ এর জন্যও সত্য হবে, ব্যস, তাহলেই ইন্ডাকশন পদ্ধতিতে আপনার প্রমাণ শেষ। এখন আসুন ১ থেকে k +১ পর্যন্ত যোগ করে দেখি কি হয়!
১ + ২ + ৩ + ... ... + k + (k + ১)
= (১ + ২ + ৩ + ... ... + k) + (k + ১)
= k*(k+১)/২ + (k + ১) [(১) নং থেকে]
= (k^২ + ৩*k + ২)/২
=(k + ১) (k +১ +১)/২
(এখানে একটু উৎপাদকে বিশ্লেষণ মনে করতে হবে)
তো দেখা গেল যে যেকোন পজিটিভ পূর্ণসংখ্যা k এর জন্য যদি সূত্রটা সঠিক হয়, তাহলে এরপরের পজিটিভ পূর্ণসংখ্যা (k+১) এর জন্যও সেটা সঠিক হবে।
এখন মনে করুন, প্রথমে আমরা দেখিয়েছিলাম যে ১ এর জন্য সূত্রটা সঠিক। প্রশ্ন জেগেছিলো নিশ্চয়ই, কেন হুদাই ১ এর জন্য প্রমাণ করতে হলো!
কিন্তু এখন দেখুন, আমরা বলতে পারি যে ১ এর জন্য যেহেতউ সূত্রটা সঠিক, তাই উপরের k আর(k+১) বিষয়টক প্রমাণ অনুযায়ী (১+১)= ২ এর জন্যও সূত্রটা সঠিক।
আবার যেহেতু ২ এর জন্য সূত্রটা সঠিক, তাই উপরের প্রমাণ অনুযায়ী (২ + ১) = ৩ এর জন্যও সেটা সঠিক হবে।
এভাবে যতবার ইচ্ছা ১ যোগ করে পরের সংখ্যার জন্য সূত্রটা সঠিক এইকথা আরামসে বলা যায়।
এই হলো ইন্ডাকশনের মজা। সিরিজের প্রমাণগুলো ইন্ডাকশন দিয়ে সহজে করা যায়।
(সহজে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কঠিন করে ফেললাম?)
মন্তব্য
আরেকটু সহজ করা লাগবে আমার বুঝার জন্য।
...........................
Every Picture Tells a Story
- ধরেন, গ্রামে একটাই বড়ই গাছ আছে এবং সেটা চেয়ারম্যান-এর। ঐ শালা মহা পাঁজিলোক। কাউকে বড়ই খেতে দেয় না। তো আপনি একদিন দাবী করে বসলেন, "চেয়ারম্যান জনগণের, বড়ই গাছ চেয়ারম্যানের; অতএব, বড়ই গাছ জনগণের।"
গাণিতিক ভাবে,
চেয়ারম্যান ---> বড়ই গাছ;
জনগণ ---> চেয়ারম্যান
সুতরাং, জনগণ ---> বড়ই গাছ।
— এটা হলো প্রধাণ সূত্র, মনে রাখবেন। (ভুললে কৈলাম ব্যারাছ্যারা লাইগা যাইবো।)
এইবার মনে করেন, চেয়ারম্যান আপনের বড়ই অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পাশের গ্রাম বিলপাড়ে গিয়ে একটা বড়ই গাছ কিনলো। এখন আপনি এবারও দাবী করে বসলেন যে, পূর্বের সূত্রানূযায়ী, এইটা থেকে বড়ই খাওয়াও আপনার অধিকার।
তাইলে কী দাঁড়ালো একটু গাণিতিকভাবে দেখি?
জনগণ ---> বড়ই গাছ + বড়ই গাছ
এবার চেয়ারম্যান যতোগুলো বড়ইগাছ-ই কিনুক না কেনো, সূত্রমতে আপনি সবগুলো বড়ই গাছের বড়ই খাওয়ারই অধিকার রাখেন। কেউ কিছু বললে এমনে প্রমাণ করে দিবেন।
বিদ্রঃ চেয়ারম্যান-এর "উঁহুলালা" পরিবার কিংবা তার "ছালছাবিলা" কন্যার ক্ষেত্রে এই সূত্র খাটবে কীনা সেইটা অবশ্য মহান গণিতজ্ঞ ব্যাখ্যা করে যায় নাই। অতএব, এই দুই ব্যাপারে সূত্র প্রয়োগ করতে না যাওয়াই মঙ্গল।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
খাইছে!! জটিল উদাহরণ দিলেন
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
---------------------
নামে কি'বা আসে যায়...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
চিন্তার বিষয়!!
কোন কোন অংশ বুঝতে কঠিন লেগেছে দেখিয়ে দিলে আরেকটা চেষ্টা দিতে পারি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
পৃথিবীর সব মানুষের আয় যে সমান এইটার ইন্ডাকশনে একটু ভুল আছে মনে হয়। যখন n=২ তখন এইটা কাজ করবে না কারন এইখানে যেই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে সেটা হল ১থেকে n-১ লোকের আয় সমান এবং ২ থেকে n মানুষের আয় সমান। কিন্তু এখানে n=২ হলে ১ থেকে ১ লোকের আয় সমান এবং ২ থেকে ২ লোকের আয় সমান কিন্তু ১ আর ২ সম্পূর্ণ আলাদা দুটি সেট। তাই n=২ এর জন্য এইটা প্রযোজ়্য নয়।
( এই প্রশ্নটা আমি কানুথের কনক্রিট ম্যাথ বইতে পেয়েছিলাম ওখানেই উত্তর দেওয়া ছিলো )
---------------------
আমার ফ্লিকার
সুন্দর ধরেছেন ....
আরেকটু খুলে বললে, k = 1 এর জন্য থিওরীটা সত্য এই এ্যাসম্পশনের ভিত্তিতে যখন আপনি k = 2 এর জন্য উপরের ইন্ডাকশন প্রয়োগ করতে যাবেন তখন "গ" কে খুঁজে পাওয়া যাবেনা ... অর্থাৎ, কোন জায়গায় দুজন মানুষ থাকলে তাদের আয় সমান হবেই -- এই কথাটা প্রমাণ করা যাবেনা ... এটা প্রমাণ করা গেলে কিন্তু আর ঝামেলা ছিলোনা ... অটোমেটিকালি বাকী সবস সংখ্যার জন্য কথাটা সত্য হয়ে যায়
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
ইয়ে সব মানুষের ঋণ তো তাইলে সমান...বিল গেটস যদি আমার ঋণ টা শোধ কইরা দিত নিজের মনে কইরা।
জ্বিনের বাদশা আপনে তো মনে হইতেছে গণিতের লোক...যদি সময় থাকে তাইলে anova টা একটু সহজ কইরা লিখেন তো। বড়ো জালায়ছে এইটা।
আমি একদমই গণিতের লোক না .... সারাজীবন নোটবই মুখস্থ করে পাশ করছি
এই যে আপনি বললেন এ্যানোভা, এটা জীবনে প্রথম শুনলাম ... তবে পড়ার আগ্রহটা জাগলো ... সেজন্য আপনাকে ধন্যবাদ
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
অ্যানোভা নিয়া লেখার জন্য পরিসংখ্যানবিদ দরকার। সেরকম কেউ থাকলে বর্ষার মতো আমারও অনুরোধ রইলো।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
সাথে অ্যানকোভা-ও...
সিরিয়াস কমেন্ট
গাণিতিক আরোহ পদ্ধতি এইভাবে কাজ করে না। আপনি "ক" কে বাদ দিতে পারেন না।
উদ্ভান্ত পথিক সহজ ভাবে ফাঁকিটা ধরায় দিসে।
ধন্যবাদ, ইন্ডাকশনের বাংলাটা মনে পড়ছিলোনা ....
তবে আপনার মন্তব্যের সাথে একমত নই ... গাণিতিক আরোহ এভাবে অবশ্যই কাজ করে ... আপনি ১০ জনের একটা সেট থেকে ৯ জনের একটা সাবসেট বের করে তার উপর একটা এ্যাসাম্পশন অবশ্যই প্রয়োগ করতে পারেন ...তাই "ক"কে বাদ দেয়া যায়
তবে ফাঁকি তো অবশ্যই একটা আছে ... এখানে যে ফাঁকিটা, তা হলো এই পদ্ধতিটা শুধু k = 2 এর সময় কাজ করেনা ... কারণ k =1 এর সময়, k এর বেলায় থিওরিটি ভ্যালিড এই এ্যাসাম্পশন থেকে k +1 এর বেলায় থিওরিটিকে ভ্যালিড দেখানো যাচ্ছেনা (কারণ মোট জনসংখ্যা ২ হওয়ায় তার সাপেক্ষে "ক", "খ", "গ" নামের তিনজনকে এখানে আমদানী করা যাচ্ছেনা) ... এই কেইসে আপনি বরং বলতে পারতেন যে "গ"কে সবক্ষেত্রে আমদানী করা যাবেনা (এখানে উদাহরণ হলো ২ এর ক্ষেত্রে)...
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
এইটা 'গাণিতিক আরোহ' পদ্ধতি না?
ঠিক, আরোহ হবে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
এজাম্পশন নিয়েই যেহেতু আমার কাজ কারবার, তাই বলি k জনের আয় সমান-- এমন একটা এজাম্পশন আপনি ধরলেন যার উপরেই হাইপোথিসিস প্রমাণ/অপ্রমাণ করা নির্ভর করছে। সেটা আগে ভ্যালিডেট করতে হবে না?
সবাই প্রধান মন্ত্রী এমনটা প্রমাণ করা গেলে হলে মন্দ হতো না
কিন্তু এটাই যে ইন্ডাকশনের নিয়ম!
যেকোন একটি সংখ্যার জন্য অনুসিদ্ধান্তটিকে গায়ের জোরে সঠিক বলে ধরে নিয়ে, সেই যেকোন সংখ্যার পরের সংখ্যার জন্য অনুসিদ্ধান্তটি কাজ করে এটুকু প্রমাণ করলেই যথেষ্ট। তারপর প্রাথমিক মানের জন্য অনুসিদ্ধান্তটি কাজ করে দেখালেই বলা যাবে তার পরেরটার জন্য অনুসিদ্ধান্তটি কাজ করবে, এটা ব্যবহার করে আবার বলা যাবে পরেরটার পরেরটার জন্যও অনুসিদ্ধান্তটি কাজ করবে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
ফ্যালাসিটা আসলে দ্বিতীয় স্টেপে। k জনের টাকা সমান। বলার পর 'ক' যখন ইনক্লুড করলেন তখন k জনের টাকা সমানই থাকবে ধরে নিলেন। সেটাই ভুল। কেননা 'ক' এর টাকা যে 'মোট টাকা'/k এর সমান এর প্রমান কি?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
"ক"কে ইনক্লুড করে কিন্তু "খ"কে বাদ দেয়া হয়েছে, তাই আবরও সেটটিতে মোট লোকসংখ্যা kই রয়ে গেছে, সূতরাং আগের এ্যাসম্পশন অনুযায়ী সবার আয় সমান হতে বাধ্য
এটা একটু বোঝানো কঠিন, তাও এভাবে চেষ্টা করা যায়
ধরুন আমরা নিচের সিদ্ধান্তটিকে থিওরী বা চিরন্তন সত্য বলে মেনে নিলাম
সিদ্ধান্তটি হলো:
যদি পৃথিবীর যেকোন স্কুলের যে কোন ক্লাসে ১০ জন ছাত্র থাকে তাহলে তাদের সবার বয়স সমান হবে।
এই সিদ্ধান্তটি মেনে নিলে কিন্তু অটোমেটিকালিই এটাও প্রমাণ হয়ে যায় যে কোন ক্লাসে যদি ৫০ জন ছাত্র থাকে তাহলে তাদের সবার বয়স সমান হবে।
এই পোস্টের ফ্যালাসীটা "ইউনিট" বা "এক"এর ধারনা বোঝার জন্য বেশ উপকারী, মানে কেন "এক" অন্যদের চেয়ে এত আলাদা!
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
অংক আর যুক্তির মারপ্যাঁচ নিয়ে এই লেখাটি পড়তে পড়তে অনেকদিন আগের একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। আমার ছাত্রজীবনের কথা। সে আমলে আমাদেরকে একটি স্ট্যাটিসটিকস এর কোর্স নিতে হয়েছিল। শুধু ক্লাশে মাঝে মাঝে গেলেই হোত। পরীক্ষা-টরীক্ষার বালাই ছিল না। একদিন পড়াতে এলেন একসময়ের বিখ্যাত নাট্যকার আশকার-ইবনে-শাইখ। উনার পিতৃদত্ত নামটি ভুলে গেছি। উনি বলছিলেন মীন, মিডিয়ান আর মোড বিষয়গুলো নিয়ে। উনি বললেন,"মীন সবসময়ে সঠিক তথ্য দেয়না। এই যেমন ধরো-তোমার মতো একটা ফ্যা ফ্যা করে ঘুরে বেড়ানো ছাত্রের মাসিক আয় হচ্ছে (বাবার পাঠানো) তিনশো টাকা, আর আমাদের দেশের (সেই আমলের) বিখ্যাত বড়লোক জহুরুল ইসলামের মাসিক আয় হোল তিন লাখ টাকা। তাহলে তোমাদের দুজনের গড় মাসিক আয় হোল দেড় লাখ টাকা। এ হিসেব যদি আমি বলি, তাহলে তুমি আর জহুরুল ইসলাম দুজনেই বুক ফেটে মারা যাবে। একজন সুখে, অন্যজন শোকে।"
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
হা হা হা ... মজা পেলাম ... এখানে আয়রনিটা দেখেন, আমার যে সামান্য আয় তিনশ টাকা, গড় হিসাবে সেটা একেবারে উধাও হয়ে গেলো, তাও আনন্দে বুক ফেটে মরতে হচ্ছে
মীন বা গড় নিয়ে একটা মজার প্যারাডক্স আছে
যেমন ধরুন, ২০০০ সাল থেকে ২০০৯ পর্যন্ত পরপর দশবছর দেখা গেলো যে প্রতিবছরই লীগে আশরাফুলের ব্যাটিং গড় সাকিবের ব্যাটিং গড়ের চেয়ে বেশী। সেটা দেখে যে কেউই মনে করবে যে তাহলে এই ১০ বছরের মোট ব্যাটিং গড় হিসেব করলেও সেখানে আশরাফুলেরটা সাকিবের চেয়ে বেশী হবে।
তবে মজাটা এখানেই, এটা নাও হতে পারে, পুরো হিসেবে সাকিবেরটাও বেশী হতে পারে।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
শিরোনাম দেখে ভাবলাম যাই বিল গেটসের আয় থেকে আমার ভাগটা নিয়ে আসি। কিন্তু দুই মিনিটের মাথায় বুঝলাম এইটা অংকশাস্ত্র নিয়া কথাকথি... পলাইলাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
শিরোনাম দেইখাই আপনারও বিল গেটসের কথা মনে পড়ছে ...
আমিও প্রথম শুইনাই ভাবছি ব্যাটার এ্যাকাউন্ট থেকা নিজের ভাগের কথা
কোথায় জানি শুনছিলাম ব্যাটার মোট টাকাকে একশ ডলার নোট হিসেবে একটার উপর আরেকটা রাখলে এভারেস্টের সাত আট গুণ উঁচু হবে!!!
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
এইসব কথা শুনলে মিজাজটা এত্তো খ্রাপ হয় যে, মনে হয় বইসা বইসা ঝালমুড়ি খাই...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সব মানুষের চাহিদা মেটানোর মত সম্পদ পৃথিবীতে সব সময় ছিল কিন্তু সব লোভ মেটানোর মত সম্পদ পৃথিবীতে কখনো হবে না।
আপনার শিরোনামটা সেই রকম।
আহা যদি গণিত বুঝতাম!
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
নতুন মন্তব্য করুন