কবিতা ১: ভালবেসে একগাদা হাইকু লিখলাম

জ্বিনের বাদশা এর ছবি
লিখেছেন জ্বিনের বাদশা (তারিখ: মঙ্গল, ০২/১০/২০০৭ - ৯:৩০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[ভালবাসার কবিতা যেহেতু এডাল্ট কন্টেন্ট থাকতে পারে]

['হাইকু' জাপানীজ শব্দ, সহজ মানে হলো ছোটকবিতা। বৈশিষ্ট্য হলো একটি কবিতায় একটিই বক্তব্যই থাকে, সরাসরি অথবা রূপক অথবা এ্যাবস্ট্রাক্ট অথবা পাগলামী, যেমনটা আপনার ইচ্ছে। একটি হাইকু সাধারনত তিন লাইনের হয়, জাপানীভাষায় একটি অক্ষরই অনেকসময় শব্দেরমতো, তাই প্রতি লাইনে শব্দসংখ্যা নয় বরং অক্ষরসংখ্যা নিয়ে একটা রীতি মানা হয়, তা হলো, অক্ষরসংখ্যা হতে হবে ৫ অথবা ৭।
বাংলায় এই রীতি মেনে হাইকু লিখতে গেলে কিছুই লেখা যাবেনা, তাই আমি আমার মতো করে বাংলা হাইকুর সংজ্ঞা দাঁড় করালাম (শাস্ত্রবাদীরা আপত্তি করতে পারেন), প্রতি লাইনে শব্দসংখ্যাকে ৫ বা ৭ এর রীতিতে ফেললাম। কোথাও কোথাও ছন্দ রেখেছি, কোথাও কোথাও রাখিনি]

******************************************
ভাব-প্রেমপর্ব
১.
আমার আনাড়ীহাতের খিচুড়ী তোমার রূপসীহাতে
চটকে খেয়েই বলেছিলে,'আহ্! দারুণ, আরেকটু খাই?'
সেইথেকে বিশ্বখিচুড়ীদিবস হলো, ১৭ই জুলাই।

২.
তুমিই আমায় ডেকেছিলে 'যাদুকর বাউন্ডুলা';
অথচ জানো? অনেক আগেই তুমি
এক হাসিতেই খেয়েছ আমার সব ম্যাজিকের খেলা।

৩.
কলেজ-গেটে দাঁড়িয়ে বড়ইর আচার খেতে,
অফিস যাবার পথে এখন রোজ সেখানটা পেরোই;
নিজেকে কেমন জামাই জামাই লাগে।

ভালবাসা-অভিমানপর্ব
৪.
কেউ কখনো দেয়নিকো কথা অভাগার পানে চেয়ে,
অথচ জানিনা কিভুলে দিয়েছ তুমি?
তবে, তাই তুমি আলাদা আর দশটি-মেয়ের চেয়ে।

৫.
মুখে মৃদুহাসি, গায়েতে জড়ানো সাদা সেই আলোয়ান,
কুট্টুস-চোখের দুষ্টু চাহনি, রাজ্যের অভিমান;
সুচিত্রা সেন, তোমাকে হারানোর সাহস আমার নেই।

৬.
নিজের দোষটা পড়লেই ধরা আহ্লাদ আর আস্কারা,
অথচ আমার একটু ভুলেই তীরবেগে তেড়ে আসো!
কিভাবো নিজেকে? ট্রয়ের হেলেন? এইবার ঝেড়ে কাশো।

বিরহ-পর্ব:
৭.
কথা দিয়েছিলে বর্ষায় আমার ফোটাবে কদম ফুল,
সেফুল ফুটেছে অন্য বাগানে জানি;
আমার উঠোনেও বর্ষা এসেছে, সাথে শুধু নোনাপানি।

৮.
হাতে একখানা ভাঙা বাঁশী আর একঘটি চোলামদ,
প্রভাতি সুর্যের প্রখর আগুনে দাউদাউ জ্বলে মন।
কার্তিকের কুত্তার ডাক শুনি ঘনঘন।

প্রায়শ্চিত্ত-পর্ব
৯. একহাতে শুধু বারুদের ঘ্রান, আরেক হাতেও পাপ।
অনেকটাদিন বয়েছি তোমার নিষ্ঠুর অভিশাপ;
শাপমুক্তির চেষ্টা বলছ? সেও তো আরেক পাপ।

১০.
ভালবাসব বলে বাবার পকেট মেরেছিলাম,
ভাইয়ের সানগ্লাস, মায়ের গয়না, বোনের জমানো টাকা;
অথচ এখন দেখি এজিনিস পুরোটাই যেন ফাঁকা।

প্রতিশোধ-পর্ব:
১১.
চলে গিয়েছিলে কিছু না বলেই,
ফিরেও চাইনি -- পাছে দেখেফেলি তুমিও চাওনি ফিরে।
এখন যদি ফিরেচাও তবে দুচোখই দেব গেলে!!


মন্তব্য

তারেক এর ছবি

সেরকম জটিল হইছে!

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ধন্যবাদ, তারেক ....কমেন্টেও হাইকু চলতে পারে হাসি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

১ আর ৭ নম্বর বেশী ভালো লাগলো হাসি

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ধন্যবাদ ... ৭ এর ছন্দ মিলিয়ে আরাম পেয়েছিলাম
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

আমার অনূদিত একখান হাইকু।

মদ্যপান করিনি একমাস হতে চললো,
পরনারী গমনও হয়নি এর মধ্যে একটি বারও।
কবে যে খুলে দেবে প্লাস্টার!

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

জটিলস্!! @সন্ন্যাসী
সন্ন্যাসীরাও তাহলে ....খাইছে! চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

??? এর ছবি

একি! হাইকু পড়ব ভেবে খুলে দেখলাম.... সব খাইকু!!

..........................................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

সর্বনাশ!!
বিপদে পড়ে গেলুম দেখি হাসি
খাইকু এখন হাইকুর সাথে মেলাই কিভাবে?

পড়ার জন্য ধন্যবাদ, বস্ ।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

??? এর ছবি

মজা করলাম। তবে এসব রচনাকে হাইকু বলার চেয়ে "শের" বলতেই ভাল লাগছে। হাইকুতে খুব সংহতি থাকে, ক্রিয়াপদের ব্যবহার থাকে না বললেই চলে। "শের" বরং অনেক বেশি মানবিক, প্রগলভ আর হৃদয়াভিসারী, যেটি আপনার রচনাগুলোয় পাওয়া যায়।
.............................................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

তবে তাই সই ....'শের'টাই ভাল শোনাচ্ছে হাসি

হুমমম ... শাস্ত্রীয়দিকটা খেয়াল করিনি এখানে

গতবার বইমেলায় দেখলাম (টিভির কাভারেজে) বাংলায় হাইকুর বই বেরিয়েছে ....সুমন ভাই, বাংলায় 'হাইকু'কে ঠিক কিভাবে ডিফাইন করা হয়েছে?
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

সুমন কপচে যাক হাইকুর গ্রামার
আমি লিখেই যাবো হাইকু আমার
আপনারও হাইকু জমেছেতো বেশ, দরকার নেইতো থামার

(না মিললে কি অইব, লিখছিতো হাসি )

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

হাইকু তো জমে যাচ্ছে দেখছি ,,,
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

??? এর ছবি

জ্বিনের বাদশা, বাংলায় হাইকু লেখা একটা কঠিন কাজ। হাইকু একটা ইস্ট-এশিয়ান ফর্ম, এর সাথে ঐ অঞ্চলের ভাষা সংস্কৃতি জীবনাচরণ অনেক কিছুই জড়িত। আমি ঐ বাংলায় লেখা হাইকু-র বইটা দেখি নি, ফলে বলতে পারবো না কিভাবে সেখানে হাইকু ডিফাইনড। তবে জাপানিজে হাইকু বেসিক্যালি পিকটোরিয়াল, তিনটি চিত্রকল্প, অনেকটা ফিল্মের মন্টাজের মত। এই হাইকু-চর্চার সাথে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের মঠচর্চা এবং রিগোরাস এবং মিনিমাল অনুশীলনের জীবনকে মিলিয়ে ভাবতে হবে। সব মিলিয়েই হাইকু-র এক্সপ্রেশন। তার ওপর আছে জাপানিজ চাইনিজ বর্ণমালার বিষয় -- খুবই পিকটোরিয়াল কিন্তু এরা ফর্মের দিক থেকে। আশা করি, আমার পূর্ববর্তী মন্তব্যের ধারাবাহিকতায়, কিছু একটা পরিষ্কার করতে পারলাম।

কিন্তু "রেসিস্ট" মাহবুব মুর্শেদ ঠিকই বলছেন, খামোখা আমার প্যাঁচালে (বা "ক্যাঁচালে") আপনার হাইকু-জার্নি থামায়া রাখনের কী দরকার? আমার জিহ্বা হোল্ড করায়া আপনে ভালোবাইস্যা যান!!
...............................................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

সুমন ভাই, একটু আশ্বস্ত করলেন হাসি
জাপানীজ হাইকু তো খুবই স্ট্রিক্ট .... একটা ফিলোসফিকাল এ্যাসপেক্ট আছে ,,, তো, সেই বাংলা হাইকুর বই দেখে আমি ভেবেছিলাম বাংলায় একটা ডেফিনিশন তৈরী হয়ে গেছে কিনা!
যেমন, পাশ্চাত্যে হাইকুর প্যাটার্নের জিনিস আছে (হক্কু বলে), জাপানীজ শাস্ত্রিকরা খুব খেপে আছে এই হক্কুর ব্যাপারে, কারণ হক্কু হাইকুর আত্নাকে বুঝতে পারেনি এরকম বলা হয়

এইখানে 'হাইকু' নামে যা করিতেছি, সেটা পুরোটাই "এ্যাবসার্ড কাব্য" টাইপের আরেকটা জিনিস ... সিরিয়াস কিছু না (মূলত হেলাল হাফিজের অনুসরন).... কাজেই চলুক হাসি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আমারে রেসিস্ট কইলে খেলুম না কইলাম।

তয় সিরিয়াসলী কই
আমরা আমাগো নিয়মে বাইকু লিখতে থাকি। ইতিমধ্যে আপনে হাইকু নিয়া একটা জ্ঞানগর্ভ পোস্ট ছাড়েন।

তাতে আমাগো খানিকটা লাভ হইব - আমরা জানুম যে আমরা হাইকু লিখতে পারি না লিখি বাইকু। আর আপনার খানিক ক্ষতি হইব - ডেফিনেশন দিবার পর আপনে হাইকু বা বাইকু কিছুই লিখতে পারবেন না। শয়তানী হাসি
কিন্তু সবার স্বার্থে এটাতো মানাই যায় কি কন? চোখ টিপি

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

হাইকু, খাইকু, বাইকু ...সবই চলুক হাসি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

??? এর ছবি

নিজের ক্ষতি করুম ক্যালায়, কাকু? অ্যাঁ
..................................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

??? এর ছবি

"এবসার্ড কাব্য" চিন্তিত
নিশ্চয়ই চলবে। চলুক। চ্যালচ্যালায়া চলুক। পড়তে তো ভাল লাগছে। হাসি
...........................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

হুমমম ,,চ্যালচ্যালাইয়া চলুক চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ড্যাবস!



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

শুকরিয়া
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

হাইকু পড়তে এসে বিপদে পড়লাম। ভাবলাম মন্তব্য না করেই ফুটি। কিন্তু উপরে দেখলাম কিছু কথাবার্তা হয়ে গেছে। সুতরাং আমিও যোগ করি কিছু। বিশেষত: জ্বিনের বাদশাকে আরো গভীর দিকে ঠেলে দেয়াই আমার উদ্দেশ্য।

হাইকু নিয়ে বিভ্রান্তি আছে। খুব সহজ মনে হয় বলে অনেক দেশে এখন হাইকু লেখা হয়। বাংলায় কারো কারো হাইকু'র বই আছে। আগে জাপান দূতাবাস কবিদের নিয়ে যেত বাংলাদেশ/ভারতে তারা গিয়ে দেশের কবিদের এই হাইকুর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেন। সাংস্কৃতিক বিনিময়। কর্মশালায় হাইকু শিক্ষা।

এখন জ্বিনের বাদশা নিজেই দূত। বাঙলার দূত জাপানে। সুতরাং তার যখন আগ্রহ হয়েছে হাইকুর। আশা করি গবেষণা চালিয়ে এবং জাপানি হাইকু-লেখকদের সাথে বৈঠক দিয়ে তিনি আরো বেশি হাইকুর গভীরে যাবেন, আমাদের সঙে নিয়ে।

হাইকু নিয়ে বিভ্রান্তির কারণ হচ্ছে শত শত বছর ধরে হাইকু লেখা হচ্ছে। অনেকে লিখেছেন। প্রাচীন লেখকদের ছোট-কবিতাকে হাইকুর সংজ্ঞায় ফেলতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া হক্কু ও হাইকাই-এর সাথে হাইকুকে অনেকে গুলিয়ে ফেলছেন। সুতরাং হাইকু লিখতে গেলে হাইকু, হক্কু ও হাইকাই, এই তিনটা বিষয় একটু ভালো করে বুঝে নিতে হবে।

অন্যদিকে আগের লেখা হাইকুগুলোকে বলা হচ্ছে ক্ল্যাসিক্যাল হাইকু আর নতুন হাইকুগুলোকে বলা হচ্ছে আধুনিক হাইকু।

খোন্দকার আশরাফ হোসেনের লিটল ম্যাগাজিন একবিংশের প্রথম সংখ্যায় সেই ৮০-র দশকে প্রথম হাইকু পড়েছিলাম। এখনও মনে আছে:
একটি পুরনো পুকুর
ব্যাঙের লাফ
জলের শব্দ।

পরে জানতে পারি এটা এক বিখ্যাত হাইকু রচয়িতার। বাসো বা এ ধরনের কোনো নাম তার।

আধুনিক কালে এসে হাইকু-কে একটা সীমারেখা দেয়া হয়েছে। সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তা থেকে কিছু বৈশিষ্ট্য এরকম বলে মনে হয়, জ্বি, বা, ভালো কোনো হাইকু লেখককে হাতের কাছে পেলে আরো গভীরভাবে বুঝে নিতে পারেন।

১. একটা ভাব একটা কবিতাতেই শেষ। (হাইকাই সম্ভবত: এরকম ছোট ছোট অনেকগুলো একই ভাবের কবিতার সমন্বয়ে হয়।)

২. ১৭ মাত্রার হয়। ৫/৭/৫ মাত্রার তিন লাইন।
৩. একেবারে বাস্তব কোনো বিষয়ের বর্ণনা। একটি দৃশ্য। কিন্তু লাইন তিনটিতে আপাত: বিচ্ছিন্নতা। মূল কেন্দ্র নাই।
৪. একটা তাজা অভিজ্ঞতার আবহ থাকবে। প্রতিদিনের জীবন। নিজে দেখা/ অনুভব করা সাধারণ কিছু বিষয়।
৫. সময় বা ঋতু থাকবে প্রতি হাইকুতে। যেমন ব্যাঙ। চেরি ফুল। মশা। নানা ঋতুর প্রতীক।

সাধারণভাবে আমার কাছে মনে হয় তিনটি আলাদা দৃশ্য/ শট থাকে হাইকুতে। একটা সিকোয়েন্স।
কিন্তু দ্বিতীয় বাক্যটাকে কোনো হাইকুতে তৃতীয় বাক্যের সাথে জুড়েও দেয়া হয়। (আমার ধারণায় এটি ক্ল্যাসিকাল প্রবণতা, ঠিক আধুনিক হাইকু নয়। জ্বি, বা, নিশ্চিত করতে পারেন।)
যেমন:
পিপড়া মারলাম আমি
দেখি আমার তিন সন্তান
তাকিয়ে দেখছে।

তৃতীয় লাইনটা দ্বিতীয় লাইনের সাথে সংযুক্ত এখানে।

জ্বিনের বাদশা কিছু হাইকু নিশ্চয়ই অনুবাদ করেছেন। অথবা অনুপ্রাণিত হয়েছেন।
যেমন তার ৮ নাম্বার হাইকু-টি আমার বিবেচনায় আধুনিক হাইকু। সব বৈশিষ্ট্যই রয়েছে। তবে এতো দীর্ঘ বাক্য সম্পাদনা করতে হবে। মাত্রা বা শ্বাসাঘাত কড়াকড়ি না মানলেও বা মানা সম্ভব না হলেও হাইকু রচনায় শব্দের খুব পরিমিতি থাকতে দেখা যায়। এই মিতচারিতাই দৃশ্যগুলোকে আপাত: বিচ্ছিন্ন করে বিমূর্ত করে তোলে।

চলুক হাইকু।
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

বস্, এটা পোস্ট দিয়ে দেন .... আপনি আবারও প্রমাণ করলেন আপনি বস্

আমি আসলে তেমন পড়াশোনা করিনি হাইকু নিয়ে ,,,মাঝেমাঝে টিভিতে দেখি ,,,ভাল লাগে ,,, তিনটি বাক্য ,,,মনে হয় মিল নেই, আবার মিল আছে, এমন রহস্যময়

তবে নিয়ত করে ফেলছি ,,,একটু হাইকু নিয়া পড়াশোনা করব ,,, সময় পাইলেই হাসি

আপাতত এ্যাবসার্ড হাইকু চলুক
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

আরে না আমি হাইকু-র দায়িত্ব নিতে পারবো না। যা জানি তা দিয়ে মন্তব্য হয়। তাই দিলাম।
জ্বিনের বাদশা জাপানের ও হাইকুর ভার নিবে, এইটাই স্বাভাবিক।
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

খাইছে! একসাথে দুটো মন্ত্রণালয়!! হাসি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

??? এর ছবি

হুম। একমত।
........................................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ভাব দিয়ে শুরু করে প্রতিশোধ পর্যন্ত!
ভয়ংকরি কবি চোখ টিপি
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

হুমমম বস্, প্রতিশোধই ভাবের সবচেয়ে পরিণত রূপ চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

জটিল মারলেন তো দেখি ... আপনার আরো কয়েকটি ছাড়ুন ...পোস্টই দিয়ে ফেলেন হাসি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

মাশীদ এর ছবি

হাইকু পড়ে কমেন্ট পড়তে গিয়ে হাই উঠল। বেশ একটা 'কু' ফিলিং-ও হচ্ছে সাথে। যাক, সেসব ক্যাঁচাল মাথার উপর দিয়ে যায় যাক। হাইকু হোক বা না হোক, আপনার লেখা ভাল লেগেছে খুব। আরো চলুক।


ভাল আছি, ভাল থেকো।


ভাল আছি, ভাল থেকো।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

'হাই' ও উঠল,
'কু' ফিলিংও হলো,
হাইকুর ষোলআনা পূর্ণ চোখ টিপি

ধন্যবাদ
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

??? এর ছবি

মুশকিল হল, কোনো কিছু নিয়ে ভাসা-ভাসা হয়ে থাকার বিপরীত কিছু করতে চাইলেই "কু-ফিলিং" হয়, "হাই" ওঠে! কোনটা মাথার ওপর দিয়া গেল সেটা আইডেন্টিফাই করার আগে নিজেদের এন্টেনার রেঞ্জও কিন্তু আমাদের হিসাবে রাখা দরকার।

..................................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

রণদীপম বসু এর ছবি

ইশশিরে ! একটু আগে আরেকটা হাইকু পোস্টের মন্তব্যে তাৎক্ষণিক বাংলা হেইকুটা লেইখা আইলাম কেবল। নইলে এইখানে সেই হেইকুটাই ঠিক এইভাবে উঠাইয়া দিতাম-


ওইলো ছুড়ি
যাস কই ! মরদ
গেছে নিকায়।


এদিকে আয়
দেখ্, বাটনা বাটি
শিল-পাটায়।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।