অবশেষে বিষয়টা নিয়ে একটা পরিষ্কার ধারনা পাওয়া গেল। আমি তো ধরেই নিয়েছিলাম, রাজনৈতিক সরকারগুলো যেমন মুলো ঝুলিয়ে রেখেছে, সেই মুলো ঝুলোনো অবস্থাতেই বিষয়টা থেকে যাবে। হ্যাঁ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথাই বলছি। একটা দেশের জন্মের পর এর গলায় শক্ত করে একটা ফাঁসির রজ্জু বেঁধে দেয়া হলো যেন! তার বিচার বিভাগ স্বাধীন না!! আমি রাস্ট্রবিজ্ঞান শাস্ত্রের কিছুই জানিনা, তবে রাস্ট্রের একজন নাগরিক, একটা অংশ হিসেবে সবসময়েই মনে করি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছাড়া একটা দেশ সভ্য হয় কিভাবে! শাসক আর আমলাদের ক্ষমতাধীন থাকলে সেখানে ন্যায়বিচার আশা করা যায় কিভাবে?
বিষয়টা নিয়ে এক ধরনের ধোঁয়াটে অবস্থা তৈরী করেছিল দেশের পত্রিকাগুলোও; মাঝেমাঝে খবরের পাতায় প্রসঙ্গ হিসেবে আসত, "গুরুত্বপূর্ণ" কেউ যখন কোন রাষ্ট্রীয় সেমিনার বা আলোচনা-ভালোচনা সভায় 'বিচার বিভাগের স্বাধীনতা' শব্দটা উচ্চারন করতেন, তখন। আবার উধাও হয়ে যেত! আমরা বুঝতাম কাজ হয়ত এগুচ্ছে অথবা এগুনোর ভান করা হচ্ছে, তবে কবে থেকে আসলেই স্বাধীন হবে সেটা নিয়ে কুয়াশার মাঝেই ছিলাম।
যাক কুয়াশাটা কেটে গেল, আজ খবরের পাতায় পড়ছি '১লা নভেম্বর থেকে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করা শুরু করবে'।
আবারও পত্রিকাগুলোর প্রসঙ্গ আসে, তারা ঠিকমতো খবরটাকে ট্রিটও করতে পারেনি বলেই মনে হচ্ছে। শুধু 'প্রথম আলো'তেই দেখলাম লীডে এসেছে; এটা কি সবাই মানে অন্য পত্রিকাওয়ালারা জানত নাকি আগের থেকেই? নাকি বিষয়টার গুরুত্বটা ধরা পড়ছেনা? এত বড় একটা ঘটনা? এখনও একরকম কুয়াশার মাঝে আছি। এরমধ্যে দেখলাম কিছু কিছু পত্রিকা 'সুচিত্রাসেনের পুজো হাসপাতালে কাটবে/ হাসিনা-খালেদা টিভি দেখতে পারছেননা' টাইপের খবরগুলোকেও এর উপর ট্রিট করেছে। সত্যি সেলুকাস!
যাই হোক কাগজে কলমে সভ্যতার দিকে আরো একধাপ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, ১লা নভেম্বর থেকে। এটা একটা ফান্ডামেন্টাল বিষয় ছিল, যদিও ভাবতেও অবাক লাগে কিভাবে একটা সভ্য গনতান্ত্রিক দেশে ৩৬ বছর বিচারবিভাগ স্বাধীন ছিলনা!!
তবে সিঁদুরে মেঘ দেখলেই আমরা ঘরপোড়া বলদেরা ভয় পাই; স্বাভাবিক। কাগজে কলমে আরো অনেক অনেক ভাল ভাল আইন আছে এদেশে, কাজেকর্মে নেই। তাও আশা রাখি স্বাধীন বিচার বিভাগ অন্ততঃ সেরকম হবেনা, দেশে জবাবদিহিতার একটা পরিবেশ সৃষ্টি হবে। আশা করতে তো দোষ নেই, আর এছাড়া আমরা আর কিইবা করতে পারি?
তাই আশার উপর ভরসা রেখেই প্রিয় বাংলাদেশকে একটা সর্বান্তকরণ অভিনন্দন জানাতে চাই। এগিয়ে যাও মাতা, গুটি গুটি পায় হলেও, এগিয়ে যাও।
মন্তব্য
খুব সৎভাবে নিজেদের কাছেই জিজ্ঞেস করা দরকার যে আমাদের রাষ্ট্রের বয়স ৩৬ ঠিকই,কিন্তু জোড়াতালি দিয়েও গণতান্ত্রিক ছিলাম আমরা ঠিক কতোদিন? এখনও তো নেই। সভ্য হওয়ার কথা না হয় বাদ থাক।
তবু যদি সত্যি সত্যি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা মেলে, এক ধাপ এগোনো হলো তাতে সন্দেহ নেই। জিনিসটা একদিনে কার্যকর হবে না, অনেককালের অনেক জঞ্জাল পরিষ্কার করতে সময়ও লাগবে। তবু শুরুটা হওয়া দরকার ছিলো। হোক।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
ধন্যবাদ,ভাল পয়েন্ট বলেছেন জুবায়ের ভাই ... আসলেই এই রাস্ট্রের সবকিছুই অদ্ভুত!!
তবে বিশেষ করে গত ১৫/১৬ বছরের 'তথাকথিত গণতান্ত্রিক' সরকারগুলোর টালবাহানায় ক্লান্ত ছিলাম ...ভোটের আগে সবাই এমনভাব দেখাইত যে জেতার সাথেসাথেই স্বাধীন করে দেবে বিচার বিভাগকে ... আর কোন খবর থাকতনা
তবে এখন তো শুধু শুরু হতে যাচ্ছে ...কোন পথে যায় সেটা দেখার বিষয় ,,,যদিও একই লেভেলে তুলনীয় না কোনভাবেই, তাও স্বাধীন দূর্ণীতি দমন কমিশনতো একটা তামাশা ছিল গত সরকারের আমলে ,,,এখন সরকারগুলো বিচার বিভাগকে নিয়ে কি তামাশা করে ---সেটা দেখার ভয়টাও আছে
তবুও ভাল লাগছে যে শুরু হলো
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
বিচার বিভাগের বড়ো ক্ষতিটা হয়েছে যে এখানে দলবাজদেরকে বিচারক নিয়োগ করা হয়েছে ।এই দলবাজদের হাতে বিচারবিভাগকে রেখে একে স্বাধীন করলে কতোটুকু ফল আসবে এটাও চিন্তার বিষয়। তবে জুবায়ের ভাইয়ের মতো আমিও বলি,শুরুটা হোক ।
ধাপে ধাপে ঠিক হয়ে যাবে এক সময়।
এই সরকার কিছু সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ঠিকঠাক করেছে ।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা তার মাঝে সবচেয়ে বড়ো বিষয়।
একই সাথে পাবলিক সার্ভিস কমিশন থেকে এক উন্মত্ত চোর মহিলাকে সরিয়ে একজন সত্যিকার আমলাকে বসানো, "থ্রি স্টুডেজ" ক্লাউনদের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশন উদ্ধার,মনুষ্যরূপী রামছাগলদের হাত থেকে দুদককে রক্ষা করা এগুলোও বিশাল অর্জন ।
বিএনপি অন্য সব কিছুর ক্ষতির চেয়ে বড়ো ক্ষতি করেছিল যে,সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভাঁড় পুনর্বাসন সংস্থা বানিয়ে ফেলা ।বিএনপির সবচাইতে বড়ো যোগ্যতা হলো সবচাইতে অযোগ্য লোকটিকে খুজেঁ বের করে সঠিক স্থানে বসানো ।পৃথিবীতে এই কাজ বিএনপির মতো ভালো আর কেউ করতে পারবে না ।
দেশে ন্যায়পাল নিয়োগও জরুরী।৩৬ বছর ধরে সংবিধানে থাকা এই ন্যায়পাল নিয়োগ হচ্ছে না,এর চেয়ে বড়ো ট্রাজেডী আর কয়টা হতে পারে ?
সবগুলো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ঠিকঠাক চললে একটা জবাবদিহিতার পরিবেশ এমনিতেই তৈরী হয়ে যাবে,আর সেই পরিবেশ থেকেই আমরা এগিয়ে যাবো ।
"বিএনপির সবচাইতে বড়ো যোগ্যতা হলো সবচাইতে অযোগ্য লোকটিকে খুজেঁ বের করে সঠিক স্থানে বসানো " -- বিপ্লব
হুমমম ,,,শুরুটা হয়েছে সেটাই বড় ,,, দেখলাম বিসিএস অফিসার/জেলা-প্রশাসকদের ম্যাজিস্ট্রের পদ থেকে সরিয়ে সেখানে বিচার বিভাগ লোক নিয়োগ দেবে ....এটা নিঃসন্দেহে ভাল ...তবে নিয়োগের/অপসারনের ক্ষেত্রে রাস্ট্রপতির ক্ষমতা এখনও বলবৎ, যেটা নিয়ে চিন্তিত
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
একমত!
ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি তোমায়!
ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
গতকাল পত্রিকায় যখন পড়লাম যে সেনা প্রধান বলেছেন তিনি রাষ্ট্রপতি হতে চান না
শুনে ভালো লাগলো
আজ যখন পড়লাম বিচার বিভাগ স্বাধীন হচ্ছে
শুনে আরো এক ধাপ ভালো লাগলো
কিন্তু আজই যখন আবার পড়লাম যে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের উপমন্ত্রীর মর্যাদা খাতায় আছে বাস্তবে নেই
তখন আবার তিন ধাপ খারাপ লাগলো
গতকালের নিউজ
আজকের নিউজ
এইনিউজগুলো কি যেভাবে পড়লাম সেভাবেই থাকবে?
নাকি শুধু খাতায়?
শুধু খাতায় যেন না পড়ে থাকে সে আশা করছি
তবে ভাবছি, নভেম্বরের ১ এর পর ঢা.বি/রা.বি'র শিক্ষক-ছাত্রদের বিচারটা কেমন হবে?....সেখানে কি আর্মির প্রভাব থাকবেনা?...এটাই হয়ত স্বাধীন বিচার বিভাগের প্রথম অগ্নিপরীক্ষা হতে পারে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
ঠিক এই প্রশ্নটা আমার মাথায়ও এসেছিলো খবরটা পড়ে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
দেখা যাক।
______ ____________________
suspended animation...
এগুলো একেকরকম আইওয়াশ। ভারতে ৬০ বছর হয়ে গেল, কত হাজার মামলার রায় কার্যকর হয়নি। মামলার রায়ের ওপর দিয়ে স্টিমরোলার চালিয়ে দেয় লোকসভা। তবে, মিডিয়ার দাপট বাড়বে ...
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
হুমমম ,,, হয়ত ফলাফল সেরকমই হবে ,,, তাও বিচারবিভাগ স্বাধীন না থাকার চেয়ে মনে হয় ভালো
আসলে নির্ভর করবে বিচার বিভাগের কর্ণধারদের মেরুদন্ড কতটা শক্ত তার ওপর
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
==============================
আমিও যদি মরে যেতে পারতাম
তাহলে আমাকে প্রতি মুহূর্তে মরে যেতে হত না।
ভাল লক্ষণ ,,,
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
আ-শা!
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
নতুন মন্তব্য করুন