এরশাদ; বাংলাদেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট!!!!!

মূর্তালা রামাত এর ছবি
লিখেছেন মূর্তালা রামাত (তারিখ: রবি, ০৩/০৮/২০০৮ - ২:২৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আওয়ামী লীগের সাথে মহাজোট করে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশের সাবেক স্বৈরশাসক হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ কদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। গতকাল রংপুরের এক জনসভায় তিনি পুণরায় এদেশের প্রেসিডেন্ট হবার খায়েস ব্যক্ত করেছেন। ইতোমধ্যেই তার পক্ষে বিপক্ষে পত্রপত্রিকায় জোরালো লেখালেখি শুরু হয়েছে। দৈনিক আমাদের সময়ে লেখা এক কলামে কলামিস্ট পীর হাবীব তাকে মাহাথির মোহাম্মদের সাথে তুলনা করে হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন। সব মিলিয়ে এরশাদ এখন লাইম লাইটের মধ্য গগণে।

৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী গণআন্দোলন যারা দেখেছেন তারা এরশাদকে স্বৈরাচার ছাড়া অন্য কিছু মানতে নারাজ। অবশ্য এরশাদের মতে তিনি নিজ থেকে পদত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করেন। কিন্তু ৯০ পরবর্তী গণতান্ত্রিক সরকারগুলো চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে দেশকে লুটপাটের আখড়া বানিয়ে ছেড়েছে। তাই এরশাদের দাবী তার শাসনামলই ছিলো বাংলাদেশের স্বর্ণযুগ।

বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা এরশাদের এ দাবীর সাথে আমাদের ভিন্নমত পোষণে বাধ্য করে। এরশাদের শাসনামলের যেকোন সময়ের চেয়েই জিডিপির বিচারে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন ভালো। শত দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদী জরুরী অবস্থা স্বত্তেও আশির দশক থেকে দেশ এখন এগিয়ে । গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশের পত্রিকাগুলো অন্তত সরকারের সমালোচনা করতে পারছে যা এরশাদের সময়ে ভাবাই যেতো না। তার চেয়ে বড় কথা লাম্পট্যের জন্য বিখ্যাত এরশাদই দেশকে ধর্মনিরপেক্ষতা থেকে ইসলামীকরণের দিকে নিয়ে যান। মাহথির যেখানে মালয়েশিয়াকে উন্নতির শিখরে নিয়ে গেছেন সেখানে এরশাদ কোটি কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার করেছেন বলে শোনা যায়। তার সময়ে সেনা অফিসারসহ অসংখ্য লোকের মৃত্যু হয় যার জন্য তাকেই দায়ী করা হয়।

সুতরাং যে যেভাবেই বলুক না কেনো ইতিহাস এবং পরিসংখ্যান অনুযায়ী এরশাদ প্রেসিডেন্ট হিসেবে সফল হবার চেয়ে ব্যর্থই বেশি। এহেন লোক যদি আবার দেশের প্রেসিডেন্ট হন তবে দেশের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়াটা স্বাভাবিক। স্বৈরাচারী শাসক হিসেবে বিতাড়িত হবার পর পুণরায় শাসক হিসেবে ফিরে আসার কীর্তি বিশ্বে বিরল। সব সম্ভবের দেশ খ্যাত বাংলাদেশে এই বিরল কীর্তিটিই হয়ত করতে চলছেন এরশাদ; বাংলাদেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট!!!!!

murtala31@gmail.com


মন্তব্য

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আগে বিশ্ববেহায়া ছিল একটা। এখন দেখা যাচ্ছে পুরো রাজনৈতিক মহলই বিশ্ববেহায়া হয়ে গেছে। দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে স্পষ্ট হয়ে গেছে, পুরো রাজনৈতিক মহলই এক সময় মূল বিশ্ববেহায়ার শয্যাসঙ্গী ছিল।


রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!

ফেরারী ফেরদৌস এর ছবি

পুরো রাজনৈতিক মহলই এক সময় মূল বিশ্ববেহায়ার শয্যাসঙ্গী ছিল

অসাধারণ বলেছেন।

১/১১ এর পটপরিবর্তনে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিলেন। তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। ভুল ভাঙল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আগস্ট বিক্ষোভে। আর এখন আশার ছিটেফোঁটাও নেই। সরকার যখন ন্যায়-নীতি বিসর্জন দিয়ে নিজেই আপোসের রাজনীতিতে জড়ায়, তখন তাদের উপর সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের ভিত বলে আর কিছু কি থাকে? দেশ এখন 'যেই লাউ, সেই কদু'।

এই যখন অবস্থা, তখন বিশ্ববেহায়ারা বত্রিশ দাঁত বের করে হাসবে এতে আর বিচিত্র কি!

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

কি হাস্যকর! বাংলাদেশে সবই সম্ভব!

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

এই লোকটাকে আবার যারা ক্ষমতায় বসাবে তাদের আবার বিয়ে করা অতীব জরুরি। পরের বউ নিয়ে টানাটানিতে যাতে সমূহ সুবিধা পায়। দেঁতো হাসি

____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।