ধরা যাক আপনি গ্রামবাংলার দরিদ্র কৃষকদের একজন। একমাত্র মেয়েটিকে নিয়ে আপনার পরিবারে অনেক স্বপ্ন। মেয়েটি লেখাপড়ায় ভালো। এইচএসসি পাশ করে সে ঢাকার একটি নামকরা কলেজে চান্স পেলো। আপনি ধার দেনা করে ভর্তির টাকা যোগাড় করে তাকে ঢাকায় পড়তে পাঠালেন। আপনার মেয়ে কলেজে ভর্তি হলো ঠিকই কিন্তু তার নামে হলে বরাদ্দ সিটটি সে পেলো না। কলেজ প্রশাসনকে থোড়াই কেয়ার করে হলের কতৃত্বে থাকা ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রনেত্রী তার কাছে হলের সিটে ওঠা বাবদ হাজার বিশেক টাকা দাবী করে বসলেন! আপনার মেয়ের কাছে এতগুলো টাকা থাকার প্রশ্নই ওঠেনা আবার ঢাকায় আপনাদের কাছের তেমন কোন আত্মীয়স্বজনও নেই যে মেয়েটি তাদের কাছে থেকে লেখাপড়া করবে। চোখে অন্ধকার দেখে সদ্য অনার্স ১ম বর্ষে ভর্তি হওয়া মেয়েটি এই শহরে একটা নিরাপদ আশ্রয়ে মাথা গুঁজে লেখাপড়া করার প্রয়োজনে নেত্রীর পা ধরতে বাধ্য হলো...
নেত্রীর মনে অনেক দয়া। তিনি বললেন ঠিক আছে টাকা ছাড়াই সিট দেয়া হবে তবে আপনার ময়েটিকে সবসময় তার কথামতো চলতে হবে। মেয়েটি নিরুপায় হয়ে রাজি হলো। নেত্রীর খাস কামরায় মেয়েটির সিট বরাদ্দ হলো। নেত্রী তাকে দিয়ে নিজের কাপড়চোপড় ধোয়ান, রান্না করান, পা টেপান, গা ম্যাসাজ করান...আপনার আদরের মেয়েটি নিরবে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে নেত্রীর নির্যাতন সহ্য করে আর আপনাকে চিঠি লেখে "তোমাদের দোয়ায় ভালো আছি বাবা......"
তারপর নেত্রী একদিন রাতে তাকে সেজেগুঁজে তার সাথে এক নামজাদা নেতার বাসায় যেতে বলেন। আপনার মেয়ে কিছুতেই রাজি হয় না। নেত্রী তাকে সেই রাতেই চুলের মুঠি ধরে হল থেকে বাইরে বের করে দেন। জীবনের প্রথমবারের মতো রাজধানীতে আসা অসহায় মেয়েটি হলের সামনে নির্জন রাস্তায় দাঁড়িয়ে একাকী কাঁদে.....রাতের ঢাকার কুৎসিত রূপ তাকে চরম আতঙ্কিত করে তোলে...নেত্রী বলেন এই কলেজে আমিই প্রধানমন্ত্রী, হলে থাকতে হলে আমার আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে....
কোন উপায় না দেখে মেয়েটি নেত্রীর অন্যায় আবদার মেনে, নেত্রীর প্রয়োজনে উপরমহলের কোন এক নেতার কাছে লোভনীয় উপঢৌকন হয়ে যেয়ে নিজেকে বিকিয়ে দিতে বাধ্য হয়। আর এভাবেই একদিকে নিত্য আপনার আদরের মেয়েটি, আমার লাজুক বোনটি অথবা কারো আত্মীয়কন্যাটির অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ছাত্র নামধারী কতিপয় নেতা/নেত্রীরা দামী গাড়ি, আলিশান ফ্ল্যাট, কোটি কোটি টাকার মালিক হন http://www.mzamin.com/index.php?option=com_content&task=view&id=8179&Itemid=83আর অন্যদিকে বরাবরের মতো ক্ষমতাসীনদের দাপটে আপনি আমিসহ তাবৎ আমজনতা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গের বাস্তবতায় মাথা ঠুকে রক্তাক্ত হই অবিরাম.....
২০/০৩/১০
সিডনি,অস্ট্রেলিয়া।
মন্তব্য
এগুলো কি সত্যি? অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। সত্যি যদি হয় তাহলে পরিস্থিতি তো ভয়াবহ।
খুবই সম্ভব প্রকৃতি ভাই। ছাত্রদের হলে যা হয়, যেভাবে ক্যাডার রিক্রুট হয় সেটাই লক্ষ্য করুননা। সারাদেশ থেকে ছেলেপেলারাত পড়াশুনা করতেই আসে। এরা এখানে এদের ক্যাডার হয়ে যায় কেন? অবশ্যই ক্যাডার হবার স্বপন নিয়ে আসে না তারা। ছাত্রি দের হলেও এরকম ব্যপার আছে এমনটা শূনেছিলাম। কিন্তু এরকম খবর কখনো প্রত্রিকায় দেখিনি। আহত হয়েছি অবশ্যই।
কি বলবো??
--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অসহনীয় পরিস্থিতি। ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আজ খেকে বছর দশ বার আগে একজনকে বলেছিলাম। এমন সব ঘটনা ঘটছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। উনি খুব উষ্মা প্রকাশ করে বলেছিলেন এসব রটনা। সেই ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ নেই। তাই জানাতে পারলাম না। আমাদের চালচিত্র। আমাদের ভবিষ্যৎ।
কষ্ট হল অসহায়ত্বের কথা শুনে।
মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....
বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। অনেক ধন্যবাদ।
শেখ নজরুল
শেখ নজরুল
পড়বো, দম আটকে আসতে চাইবে, কিছুক্ষণ রাগে জ্বলবো, এরপর ভুলবো - এছাড়া আসলেই কি কিছু করবো আমরা!?
ক্যাম্পাসে 'ছাত্ররাজনীতি'র নমুনা খানিকটা দেখেছি, চোখ খুলে চারপাশ দেখে হতাশ হচ্ছি। এসব বন্ধ করার দায়িত্ব যাদের তাঁরা কিছু করবেন না এটা জানা, কেউ কিছু করতে চাইলে তাও যে থামিয়ে দেয়া হবে তাতেও সন্দেহ খুব অল্প।
মর্ম
আমাদের নিজেদের ইয়াহু গ্রুপে প্রথম এক বন্ধু এই খবরটা ফরওয়ার্ড করে । খবরের সূত্র 'আমার দেশ' পত্রিকা ছিল বলে ঠিক বিশ্বাস করতে পারিনি।
এই খবরটা এবং 'মানবজমিন' পত্রিকার খবরটায় যেসব বর্ণনা দেয়া আছে তা যদি সত্য হয় তাহলে আর কিছু বলার নেই । এই আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ই কিন্তু গতবার সেঞ্চুরিয়ান মানিকদের জন্ম হয়েছিল!
এই খবরের বিন্দুমাত্র যদি সত্যতা থাকে তাহলে আমি সচলায়তন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করব এই পোস্টটা স্টিকি করার জন্য আর দেখতে চাইব আমাদের নারীর এত বড় অপমানের পর আমাদের নারী প্রধানমন্ত্রী আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি ব্যবস্থা নেয়।
মনে পড়লো, মিছিল করা, আর ডাকামাত্রই হাজিরা দেয়ার শর্তে আমিও হলে সিট পেয়েছিলাম!
..................................................................
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।
দীর্ঘশ্বাস ....
খুব-ই দুঃখজনক !! মনটা খারাপ হয়ে গেল ! অনেক ধন্যবাদ 'মূর্তালা রামাত' কে এই চরম নির্মম এবং নোংরা সত্যটা সুন্দরভাবে তুলে ধরবার জন্য ।
"মুক্ত বিহঙ্গ" [অতিথি লেখক]
মোঃ জিয়াউর রহমান ববি
কী বলবো?
-----------------------------------------------------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে আমার প্রাণের কাছে চলে আসি, বলি আমি এই হৃদয়েরে; সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
হুমমম! শুধু হলে থাকা নিয়ে নয়, অনেক অফিসেও হয়, হচ্ছে অনেকদিন ধরে। বাইরে অতটা আসে না, আর কি।
যতদিন না আইনের সাহায্যে অন্যায়কারীদের একটা ভাল হিল্লে না হচ্ছে, এসব ঘটনা চলতেই থাকবে।
নিজেকে ততদিন এসব ঘটনায় না-ভুক্তভোগী হওয়ার জন্য শুকরিয়া বলবো, না-কি 'বিশ্ব নারী দিবস' আর কতকাল পালন করতে হবে তা নিয়ে ভাববো, হয়তো বা লেখেও ফেলবো রাগ-দুঃখ-ক্ষোভের কথা, তাই ভাবি।
পৃথিবীটা অনেক ছোট আসলে, মেয়েদের দুঃখের, কষ্টের দীর্ঘশ্বাস ধারণ করার জন্যে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।
নতুন মন্তব্য করুন