গত ১৭ সেপ্টেম্বর পাবনায় জেলা প্রশাসনের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। পছন্দমতো কর্মী নিয়োগের দাবীতে স্থানীয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ কর্মীরা হামলা করে সে পরীক্ষা ভুন্ডুল করে দেয়। পরীক্ষা ভুন্ডুল করেই তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি। ওই সময় তাদের হাতে লাঞ্ছিত হন স্বয়ং জেলা প্রশাসক সহ স্থানীয় প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা। হামলাকারীরা এসময় উপস্থিত পরীক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন, টাকাপয়সা, ভ্যানিটি ব্যাগসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনতাই করে রাস্তার গাড়ি ভাংচুর করতে করতে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়ে সদর্পে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এবং অদৃশ্য যাদুমন্ত্রবলে পুলিশ বাহিনী যথারীতি নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।
২৩ শে সেপ্টেম্বর স্থানীয় জেলা প্রশাসনের এক মতবিনিময় সভায় লাঞ্ছিত কর্মকর্তাগণ সেদিনের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। এসময় তাদের অনেকই কান্না চেপে রাখতে পারেননি। এখন প্রশ্ন হল জনগণের দেখভালের দায়িত্বে থাকা প্রশাসনের লেকজনই যদি এমন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে তবে দেশে সাধারণ জনগণের কী অবস্থা?
ইব্রাহীম খুনের ঘটনার সাথে ভোলার সরকার দলীয় এমপি নুরুন্নবী শাওনের নাম আসার পর সরকার যেমন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে গড়িমসি করছে। ঠিক তেমনিই পাবনায় যুবলীগ, ছাত্রলীগের এমন তান্ডবের পর সরকারের কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। বরঞ্চ হামলাকারীরা সদর্পে মিছিল মিটিং করে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করার কর্মসূচী দিয়েছে। স্থানীয় সাংসদও হামলাকরীদের সাফাই গেয়ে উল্টো জেলা প্রশাসককে সরকারী আচরণবিধি ভেঙ্গ মতবিনিময় সভা আয়োজন করার জন্য দুষেছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারাও জেলা প্রশাসককে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে পরিকল্পিতভাবে লিপ্ত থাকার দায়ে অভিযুক্ত করে চলেছেন!
কী চমৎকার কথা। একজন নির্যাতিত ব্যক্তি যদি বিচার চান তবে তিনি ষড়যন্ত্রকারী, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী। আর যারা জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানে আকাশ বাতাস মুখরিত করে হাজার হাজার লোকের সামনে হামলা চালালো তারা সরকারের ভাবমূর্তি খুব উজ্জ্বল করল তাই না!
এ ধরণের ঘটনায় অভিযুক্তদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার সংস্কৃতি আমাদের দেশে নতুন নয়। কিন্তু এইসব অপসংস্কৃতি দূর করে দিন বদলের কথা বলেইতো এই সরকারের ক্ষমতায় আসা; এসব ঘটনাকে নির্বাচনী অঙ্গীকারের আলোকে সামাল দিতে না পারলে পরবর্তী নির্বাচনে এর প্রভাব পড়তে বাধ্য। এমডিজি লক্ষমাত্রা পূরণের জন্য বারাক ওবামার কাছ থেকে প্রশংসা পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি খুশিতে আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলে দেশের জনগণের নিরাপ্তাহীনতার বিষয়ে চোখ কান বুজে থেকে যুবলীগ, ছাত্রলীগকে ক্রমাগত ফ্রাঙ্কেনেস্টাইন হয়ে ওঠার সুযোগ দেন তবে সরকার থেকে জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিতে এতটুকু সময় নেবে না।
বিভিন্ন মহল থেকে বারবার এ কথাটি বলা হলেও সরকারের নীতিনির্ধারক মহল নিশ্চুপ। বরঞ্চ কদিন আগে সরকারের এক উপদ্ষ্টো ডা. মোদাচ্ছের আলী “সবচেয়ে খারাপ ফল করলেও দলের ছেলেটিকে যেন আগে সুযোগ দেয়া হয়” বলে সরকারের প্রকৃত দিন বদলের অবস্থা জাতির সামনে স্পষ্ট করেছেন। অর্থাৎ জনগণের চাওয়া এবং সরকারের চাওয়ার সাথে যে আকাশ পাতাল ব্যবধান আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এবারও তার কোন ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে না।
প্রায় দু মাস হবার পরও ইব্রাহীম খুনের ঘটনায় এমপি শাওন গ্রেপ্তার না হওয়া বা আট দিন পার হবার পরও পাবনার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপর হামলাকারীদের আটক না করা- আমাদের সে কথাই মনে করিয়ে দেয় যে- যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ। এভাবে দিন বদল হয় না, হবেও না- সরকার না বুঝলেও জনগণ ইতিমধ্যেই তা বুঝতে শুরু করে গেছে। অতএব সরকার যদি এখনই না শোধরায় তবে সামনে তাদের জন্য সমূহ বিপদ বললেও কম হয়ে যায়।
২৫/৯/১০
সিডনি, অস্ট্রেলিয়া।
তথ্যসূত্র:
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-09-18/news/94309।
http://www.samakal.com.bd/details.phpnews=13&action=main&option=single&news_id=95040&pub_no=465
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-09-25/news/96147
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-09-24/news/95929
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-09-21/news/95195
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/09/18/44213
ছবিসূত্র: আমার দেশ
মন্তব্য
বিডি নিউজে যখন খবরটা পড়ি, তখন সেখানে জেলা প্রশাসক জানান যে প্রধানমন্ত্রীর পি এস বা এ জাতীয় কোন একজন কর্মকর্তা নিউয়রক থেকে ফোন করে তাদের সাথে কথা বলেছেন এবং সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। পড়ে অবাক হলাম। গুন্ডামি করে গেলেও সেই বিষয়ে যদি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে মাথা ঘামানো লাগে, তাহলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছেন কি করতে?
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনেক ব্যস্ত...এইসব ছোটখাট বিষয়ে মাথা ঘামানোর সময় তার নাই...
মূর্তালা রামাত
আরও ৩ বছর বাকি। দিন বদলতো শুরু হল মাত্র।তবে ডা. মোদাচ্ছের আলী সত্যি কথা বলেছেন। বাস্তবে যা হবে তিনি তাই বলেছেন। শুনতে খারাপ শোনা যায় এই আর কি।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
মূর্তালা রামাত
সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হল, সরকারের দ্বায়িত্বশীল পর্যায়ের কেউ এই ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেছে বলে চোখে পরল না। আজকে প্রথম আলোতে দেখলাম ঘটনার সময় ওসি যখন এ্যাকশনে যাওয়ার অনুমতি চাইছিলেন তখন এসপি নিশ্চুপ ছিলেন। এই দুইটা ঘটনা আমাদের প্রশাসন ব্যবস্থার বড় সত্য কে তুলে ধরে। এক, প্রশাসন হচ্ছে একটা সরকারের কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রধান হাতিয়ার। সেই প্রশাসন যখন আক্রান্ত হয় প্রকারন্তে সে হামলা যে সরকারের ভাবমূর্তির উপর হামলা এটা বোঝার মত ক্ষমতা মনে হয় সরকারের উপরের মহলের কার এখনো হয় নি। দুই, প্রশাসনে রাজনৈতিক আনুগত্য অথবা রাজনৈতিক দাক্ষিণ্য এতই প্রবল যে নিজেদের উপর হামলার সময় পর্যন্ত তারা সঠিক ভাবে দ্বায়িত্ব পালন করে না। আর এইসব সত্য কে সামনে রেখে মনে হয় দিন বদল খুব দূরহ একটা কাজ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
আমারো সেটাই মনে হয়...
মূর্তালা রামাত
এরা তো বিরোধী দলের লোকও হইতে পারে, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এমনটা ঘটনো হয়ে থাকতে পারে। সেই তত্ত্ব এখনো আসে নাই দেখে অবাক হচ্ছি। তদন্ত চলিতেছে, সেই তত্ত্বও অচিরেই আসিতে পারে।
আসিতেছে.....আসিতেছে.....
মূর্তালা রামাত
আসিবেনা ............. আসিবেনা ............। প্রধানমন্ত্রী বলিয়া দিয়াছেন যে এক হাতে তালি বাজে না। পক্ষান্তরে আংশিক দায়স্বীকার।
রাতঃস্মরণীয়
আজকের পত্রিকায় দেখলাম কাছাকাছি তত্ত্ব এসেছে। লোকগুলো নাকি ছাত্রলীগের ছিল না! এরা নাকি ডিসির ভাড়া করা গুণ্ডা ছিল!!!
--
হোম - টুইটার - ফেইসবুক - উইকিপিডিয়া - এ্যাকাডেমিয়া
টুইটার
খুবই দুঃখজনক ঘটনা। সরকারি প্রশাসনের লোকজন যদি এমন আচরণের শিকার হয় আর নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে আমজনতারতো কোথাও যাওয়ারই জায়গা নাই।
আমজনতার খোঁজ কে রাখে বলুন....
মূর্তালা রামাত
ব্যাপার না, উদ্দেশ্য মহতই ছিলো। আমরা বুঝিনি এই আর কি
ও ভালো কথা, বিভিন্ন মণ্ডপে লাগাতার মূর্তি ভাঙা নিয়ে কোনো বিশ্লেষণী পোস্ট এখনো পেয়েছি বলে মনে পড়ছেনা; শাহরীয়ার কবিরও যুদ্ধাপরাধী নিয়ে ব্যস্ত। কথা বলার মত আর কি কেউ নেই?
বিভিন্ন মণ্ডপে মূর্তি ভাঙ্গার বিষয়ে বিশদ জানালে খুশি হই...
মূর্তালা রামাত
গতকালকে আমার এক দাদা ফেসবুকে স্টেটাস দিয়েছেন এমন- "কে বলেছে দেশে বিরোধী দল নেই! ছাত্রলীগ আছে না!"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
কথাটা মন্দ বলেন নি...
মূর্তালা রামাত
এই ঘটনা থেকে দুটো বিষয় পরিস্কার--
১) বাংলাদেশের রাজনীতি পচে গেছে।
২) আমলাতন্ত্র গভীর সংকটে পড়েছে।
রাজনীতি বিষয়ে কথা না বলাই ভাল। তবে একটা কথা বলা যেতে পারে। দেশে রাজনীতির গভীরে আমলাতন্ত্রের অবস্থান। কালো টাকার মালিক এখন রাজনীতিক--এবং তাঁর ভাগীদার আমলা। অথবা আমলারাই এই কালো টাকার জন্ম প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। আমলারা ক্ষমতায় থেকে এবং অবসরে গিয়েও রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করেন। ক্ষমতা ছাড়া ওনাদের গীত নাই।
এই ক্ষমতাসীনরা একটু প্যাদানী দিছে--তাতে এত দেবনা পাচ্ছেন কেন ভাই আমলাগণ?
জনগণের জন্য ওনাদের কোনো মহব্বত নাই। ওনাদের মোকাসিনের কালার নিয়ে আভিজাত্য আছে। সে কারণে যদি জনগণ মাঝে মধ্যে আমলাদের প্যাদানী দেয় তাহলে তাদের কান্না আসে কেন? জনগণের গলায় রশি দিয়ে যখন এই আমলারা চোখের পানি নাকের পানি করে দেন তখন তো কারো আর্তনাদ শুনি না!
কোনো সহকর্মি দূর্নীতি করায় তার বিরুদ্ধে কোনো আমলা সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন--আজ পর্যন্ত চোখে পড়ে নি। প্যাদানি খেয়েই তারা সংবাদ সম্মেলন করলেন। সংবাদ সম্মেলন করে মনের ব্যাথা বেদনা আনন্দ প্রকাশের কি কোনো রুল কি সিভিল সার্ভিস বিধিমালায় আছে?
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
আপনার মন্তব্য পড়ে খুবই হতাশ হলাম।
১.
জনগণ প্যাদানী দেয়নি, দিয়েছে ছাত্রলীগ নামধারী কতিপয় গুণ্ডা যাদের দাবী ছিলো তাদের কথা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। জনগণ এবং এসব গুণ্ডাদের মধ্যে পার্থক্য বোধ করি আমরা সবাই বুঝি।
২. আমলাগণ দুর্নীতি করেন এটা ওপেন সিক্রেট, যেমন আমাদের মন্ত্রী, এমপিদের বেশির ভাগই টু পাইস কামানোর ধান্দায় থাকেন। কিন্তু তাদের দুর্নীতিতো আদালতে প্রমাণিত হয় না। দুদক দুর্নীতির দায়ে যে কজন আমলা, মন্ত্রীকে অভিযুক্ত করেছিল তাদের প্রায় সবাইই আদালত থেকে বুক ফুলিয়ে বেরিয়ে এসেছেন এবং দাপটের সাথে চলাফেরা করছেন, তো দেশের আদালত যদি তাদেরকে সাধু প্রমাণ করে তবে আমি, আপনি শুধু শুধু আমলাদেরকে দুর্নীতিবাজ বলে লাভ কি বলেন? দেশের সব সেক্টরই দুর্নীতির আখড়া বলা চলে।
৩. তারা কিন্তু সংবাদ সম্মেলন করেননি। করেছেন মত বিনিময় সভা যেখানে পাবনার বিভিন্ন স্তরের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। আমি যতদূর খোঁজ নিয়ে জেনেছি এ ধরণের মত বিনিময় সভা করার এখতিয়ার তাদের সার্ভিস রুলের মধ্যে পড়ে।
মূর্তালা রামাত
আমি কিন্তু ক্ষমতাসীনদের সাফাই গাই না। পচে যাওয়ার চেয়ে আর কি নিন্দার ভাষা হতে পারে?
বিচারের জন্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল আছে। সার্ভিস রুলস তাই বলে। জনগণ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি। তারা চাকরি বিধি না মেনে জনগণের কাছে মাইক নেমে পড়ার জন্য শপথ নেন নাই। এই একটি কারণে পাবনার আমলাদের বিচারের আওতায় আনা যেতে। তারা কোন ক্ষমতা বলে সংবাদ সম্মেলন করলেন--সেটা জানতে মঞ্চায়। তাদের কি সরকার থেকে অনুমতি আছে সংবাদ সম্মেলন করার?
কথা খুব পরিস্কার--আওয়ামী লীগ বা ক্ষমতাসীন রাজনীতির বা বিরোধী রাজনীতির সমালোচনা করেন। কিন্তু এই আমলাগুলোই যখন জনগণকে প্যাদানী দেন --তখন তাদের এই অশ্রু বিসর্জনটা কোথায় থাকে? তখন জনগণকে বলেন বিচারশঅলায় যান। আমরা সরকারী চাকরী করি। তাদের আইন ফলো করছি। আর নিজের বেলায় প্যাদানী খেয়ে আইন নয়---বাবা জনগণ তোমরা বিচার করো গো। গেছি। দেশটা কি ওনাদের বাপের তাল্লুক।
আপনার কথা মত ছাত্রলীগ নামের দানব রাজনীতিকরা তাদের প্যাদানী দিয়েছে। এর জন্য তারা নালিশ জানাবেন--প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের কাছে। কিন্তু কেন তারা জনগণের কাছে গেল---সেটার উদ্দেশ্য কি?
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
আপনার কথা আমার মুখে গুঁজে দিচ্ছেন কেন কুলদা সাহেব? আপনিই তো বললেন ক্ষমতাশীনরা প্যাদানী দিয়েছে, আমি কখন বললাম ছাত্রলীগের কথা?
আমিও বুঝতে পারছিনা, যে আমলাদের এত ক্ষমতা সেই আমলারা আজ কেন জনগণের কাছে বিচার চাইছে? ক্ষমতাসীনদের তাহলে এত ক্ষমতা যে আমলারাও প্রশাসনিক বিচারে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে?
আপনার মনে হয় এ বিষয়ে বিশদ অভিজ্ঞতা রয়েছে, একটু আলো ফেলতে পারেন বোধহয়।
ভালো বলেছেন পিপিদা
মূর্তালা রামাত
কুলদা রায়, প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল সম্ভবত প্রশাসনের অভ্যন্তরের অনিয়ম নিয়ে কাজ করে। ফৌজদারি কার্যবিধি তাদের কর্মক্ষমতার বাইরে। আর পাবনায় যে ভাংচুর আর হামলার ঘটনা ঘটেছে তা ফৌজদারি কার্যবিধিতে পড়বে। তাই এখানে প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের কাছে বিচার চাওয়ার প্রশ্ন অবান্তর।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
ভাই,
কুলদা রায় তার কথা আমার মুখে গুঁজে দেয় চলে গেছেন (ফুটছেন বললে রাগ প্রকাশ পাবে তাই বলছিনা), আপনি আবার সেটা কোট করেছেন
ভুল হয়ে গেছে পিপিদা। আসলে আমি প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের কথাটা তুলতে চেয়েছিলাম। সেইখানে কোট করতে গিয়ে পুরাটাই করে দিয়েছি। এখন আপনি উত্তর দিয়ে দেওয়ার সেইটা আর ঠিক করার উপায় নাই
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
সমস্যা নাই। আশা করি উনি পরে এসে কিছু বলবেন, এখন তো বাংলাদেশে অনেক রাত, নিশ্চয়ই উনি ঘুমাচ্ছেন।
কুলদা রায়, প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল আইন, ১৯৮০ ধারা ৪ (২), প্রজাতন্ত্রের বা বিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের কর্মে নিযুক্ত যে কোন ব্যক্তি তাঁহার পেনশনের অধিকারসহ কর্মের শর্তাবলী সম্পর্কে কোন আদেশ বা সিদ্ধান্তের দ্বারা অথবা প্রজাতন্ত্রের বা বিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের কর্মে নিযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে তৎসম্পর্কে গৃহীত কোন ব্যবস্থা দ্বারা সংক্ষুব্ধ হইলে তিনি উপ-ধারা(১) এর অধীন প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন।-চাকরির বিধানাবলী, মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া উনচল্লিশতম সংস্করণ পৃ-৬৬। এখানে প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের কাছে তারা কী নালিশ করবেন?
২৩ বছর ধরে চাকরি করা একজন জেলা প্রশাসক নিশ্চয়ই জানেন যে এ ধরনের পরিস্থিতিতে কী করতে হবে। প্রশাসনিক ট্রাইবুনালেতো তিনি আর আমাদের বলে কয়ে যাবেন না (আমি যতদূর জানি এসব ট্রাইবুনাল অফিশিয়াললি হয়ে থাকে)। আর আগেই বলেছি মত বিনিময় সভা করা তার এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে।
আর তাদের নিরাপত্তার বিধান করার দায়িত্বও সরকারের উপর বর্তায়। তারা মার খেলেন তার পর ৮ দিন চলে গেলো সরকারের কোন অ্যাকশন চোখে পড়লো না, এটা খুবই হতাশাজনক...এ ধরণের ঘটনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র যদি শক্তভাবে না দাঁড়ায় তবে সেটা কোন সরকারের জন্যই শুভ ফল বয়ে আনবে না। সেটা বুঝেই আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেছেন এ ঘটনায় সরকারকে মাশুল দিতে হবে।
http://www.amadershomoy.com/content/2010/09/25/middle0622.htm
মূর্তালা রামাত
জ্ঞ্যানী লোকজন ক্ষমতাসীন-ক্ষমতাহীন কারো পক্ষেই সাফাই গায় না। তারা জানে যে আগামীকাল হয়তো আজকের ক্ষমতাহীনই নতুন করে ক্ষমতাসীন হবে। আমি আপনার বিশ্লেষণধর্মী লেখাগুলোর ভক্ত তবে আপনার কাছ থেকে এই ধরনের একটা মন্তব্য আশা করিনি।
আমরা তো প্যাঁদানী-গুতানী সংস্কৃতিকে নীতিগতভাবে বর্জন করেছিলাম ৩৯ বছর আগে। তারপর আজও কিন্তু এই সংস্কৃতি থেকে আমরা মুক্তি পাইনি চক্রবিশেষের প্যাঁদানী-গুতানীপ্রীতির কারনে। এই চক্র হচ্ছে আমাদের ক্ষমতাসীনচক্র। তারপর যদি আপনাদের মতো বোদ্ধামহল এটাকে অনুপ্রানিত করেন, তবে তা আমাদের জন্যে হতাশাজনক।
আমলারা পাবলিককে প্যাদানী দেয় যতটুকুনা নিজের স্বার্থে তাথেকে ঢের বেশি স্বার্থ থাকে অপরের। আর এই অপরটা কে তা নিশ্চই আপনার জানা। এই 'অপর' হচ্ছে ক্ষমতাসীনরা।
দেশে আইনের শাসন কোন অবস্থায় আছে তা নিয়ে বিশ্লেষন হতে পারে কিন্তু আইনের শাসন নেই বলে 'প্যাঁদানীর শাসন' চালু করা বা তাকে উৎসাহ দেওয়াটা আমার চোখে ভালো ঠেকেনি। আমি চাইনা আপনার এই বোধ অপরের মধ্যে সংক্রামিত হোক।
সরল ভাবনায় লিখলাম। দোষত্রুটি মার্জনীয়।
রাতঃস্মরণীয়
কেবল জানার আগ্রহ থেকে প্রশ্নটা করছি, পাবনা প্রশাসন মূলত কোন সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত? মানে, ডিসি, এসপি এরা কোন কোন ব্যাচের? আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, পাবনা প্রশাসনের কর্তারা বেশিরভাগই বিএনপি আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত। হয়তো সেটাই তাদের আজন্ম পাপ!
ফারুক ভাই, বর্তমানে ডিসির দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত অধিকাংশ বিসিএস ৮৪ অথবা ৮৫ ব্যাচের সদস্য, অর্থাৎ এরশাদ দাদুর সময়কার
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
কোন আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত তা জানি না..তবে জেলা প্রশাসক মনজুর কাদের নাকী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জোরালো অবদান রাখায় দুইবার সরকারি পদক পেয়েছেন...
মূর্তালা রামাত
প্রশাসনের বিরুদ্ধে পেয়ারা কর্মীদের গাত্রদাহের কারণ কিছুটা বোঝা গেল।
পাবনার কাহিণী দেখে বুঝলাম না কিছু!!পিশতুতু পিশতুতু ভাই লাগল গাঞ্জ্যাম,আর আইয়া বিচার চায় যাদের অনেক আগেই স্ৎ ভাই বানইয়া রাখছে তাদের কাছে।।
ব্যাপারটা অত্যন্ত মর্মান্তিক।
কিন্তু আজকের ছাত্রলীগ একদিনে এই পর্যায় আসেনি। আমরাই এদেরকে লাই দিয়ে দিয়ে এই অবস্থায় এনেছি। আমরা মানে সর্বপরি সুবিধালোভী আমি, আপনি, শিক্ষক, পরিবার এবং আজকের লাঞ্ছিত সরকারি কর্মকর্তাগনও।
খালি একটা কথা আমার নীরেট মাথায় ঢুকে না, অন্যান্য সকল কাজে এবং অকাজে সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষমতার দাপটের গল্প যখন প্রায় কিংবদন্তিতূল্য, তখন মিডিয়ার সামনে চোখের পানির নাটক কেন?
অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম
তাইলেই বুঝেন অবস্থা, প্রশাসনের লোকজন চোখের পানির নাটক দেখাতে বাধ্য হচ্ছে, জনগণ তাইলে কী করতেছে!
মূর্তালা রামাত
ক'জন ব্লগারকে বেশ সন্তুষ্ট/আনন্দিত মনে হচ্ছে কর্মকর্তারা লাঞ্ছিত হওয়ায়। প্রশাসনের অসহায়ত্ব তাদের কাছে খুব আমোদের ব্যপার মনে হচ্ছে। পাবনায় অথবা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সঙ্গঠন ভাংচুর চালিয়েছে তালিকামত লোক নিয়োগ না হওয়াতে। রাজনৈতিক শক্তি আর প্রশাসন দুই'ই জনগনকে নির্যাতন করে মানি, কিন্তু এখন প্রশাসনে নিয়োগও পরিপূর্ণ রাজনৈতিক হলে সাধারণ মানুষের পক্ষে প্রশাসনে অ্যাকসেস পাওয়ারও সুযোগও থাকবে না। আজ যারা স্রেফ পড়াশোনা করে বিসিএস দেয়ার কথা ভাবছেন তাদের উপায় কী থাকবে। যোগ্যতাহীন নিয়োগ প্রশাসনকে আরো অকার্যকর করে তুলবে। এখন আমাদের নিজের স্বার্থেই প্রশাসনের পাশে দাড়ানো দরকার। কারন নইলে যখন এই সন্ত্রাসীরা প্রশাসনে ঢুকবে তখন দুয়ে মিলে যে ফ্রান্কেনস্টাইন হবে সেটা আরো ভয়ঙ্কর হবে।
ভাই,
আপনার সাথে সহমত। কিন্তু সময়ের ক্রমে আমরা এখন ফ্রান্কেনস্টাইনের জমানায়। এ দানবের মৃত্যুর পথ নাই।
অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম
নতুন মন্তব্য করুন