আফগাস্থানে সৈন্য পাঠাতে বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১১ সালে সে দেশ থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের কথা রয়েছে। তারপর দেশটির দায়িত্ব নেবে আফগান নিরাপত্তাবাহিনী। ২০১১ সালের আগে বিভিন্ন উচ্চতর প্রশিক্ষণ দিয়ে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে দেশের দায়িত্ব নেয়ার উপযোগী করে গড়ে তুলতে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছে ওবামা প্রশাসন। এই প্রশিক্ষণে সাহায্য করার জন্যই বাংলাদেশের সামরিক সাহায্য তাদের প্রয়োজন।
বিডি নিউজের খবর অনুযায়ী নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের এক ফাঁকে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত রিচার্ড হলব্রুক বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিকে এ সংক্রান্ত অনুরোধ জানান। এবং বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে যে তারা প্রস্তাবটি বিবেচনা করছে।
৯/১১ এর পর শুরু হওয়া সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের আওতায় মার্কিন বাহিনী ৭ অক্টোবর, ২০০১ সালে আফগানস্থান আক্রমণ করে। এসময় ব্রিটিশ সেনারাও তাদের সহযোগী হিসেবে সেখানে যোগ দেয়। মার্কিন ও ব্রিটিশ যৌথ বাহিনী, স্থানীয় তালেবান বিরোধী উত্তরাঞ্চলীয় জোটের সহায়তায় তালেবানদেরকে কোনঠাসা করে আফগানস্থানের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়। ২০০১ সালের ডিসেম্বর মাসে জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাসিস্টানস ফোর্স (ইসাফ) আফগানস্থানের রাজধানী কাবুলসহ আশেপাশের এলাকার নিরাপত্তা দায়িত্বভার গ্রহণ করে। বিশ্বের ৪২ টি দেশের সৈন্যরা এই ফোর্সে রয়েছে। ২০০৯ সালের জুলাইয়ে ন্যাটো এই ফোর্সের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে সব মিলিয়ে প্রায় দেড় লক্ষ বিদেশী সৈন্য সে দেশে রয়েছে।
২০০৬ সালে তালেবানেরা পুণরায় শক্তি সঞ্চয় করে যুদ্ধের ময়দানে হাজির হয়। সেই থেকে প্রায় প্রতিদিনই আফগানস্থানে বিদেশী সৈন্যদের হতাহতের খবর আসছে। মার্কিন সামরিক রিপোর্ট অনুযায়ী আফগানস্থানে এ পর্যন্ত প্রায় ২১০০ বিদেশী সেনা নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ২০১০ সালেই মারা গেছে ৫৪১ জন, আহত হয়েছে প্রায় ১২৫০০। এছাড়া এসময়ে আফগান বাহিনীর প্রায় ৭০০০ সেনা প্রাণ হারিয়েছে।( তবে গণমাধ্যমের হিসেব অনুযায়ী হতাহতের এ সংখ্যা আরো বেশি)
এতো গেলো বিদেশেী সৈন্য। আফগানস্থানে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু হবার পর থেকে এসময় জুড়ে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৫০,০০০ নিরীহ মানুষ। গণমাধ্যমে বারবার এসেছে বিদেশী সেনাদের হাতে মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা। সম্প্রতি উইকিলিকস-এর কল্যাণে ফাঁস হওয়া গোপন মার্কিন দলিলপত্রেও বিদেশী সৈন্যদের হাতে পাইকারি হারে নিরীহ আফগান নাগরিক নিহত হবার বিভিন্ন ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায়। এসব কারণে সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড- আফগানস্থান থেকে তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছে। পোলান্ড এবং কানাডাও সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। গত একমাসে বেশ কিছু অস্ট্রেলীয় সেনা নিহত হবার পর অস্ট্রেলিয়াও সেনা প্রত্যাহারের কথা ভাবছে।
অন্যদিকে তালেবান আক্রমনে পর্যদুস্ত হতে হতে ইঙ্গ-মার্কিন বাহিনীরও ছেড়ে দে মা কেন্দে বাঁচি অবস্থা। যে কোনভাবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা এখন আফগানস্থান ছাড়তে উৎগ্রীব। এমন বিপদসঙ্ককুল অবস্থায় বাংলাদেশী সৈন্যদের সে দেশে পাঠানো কতোটুকু যৌক্তিক?
ইতোমধ্যেই তালেবানেরা তাদের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশকে এ বিষয়ে সতর্ক করে আফগানস্থানে সৈন্য না পাঠাতে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ধারণা করা হয় যে বিন লাদেনের আল কায়েদার সাথে তালেবানদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। তাই মার্কিনীদের সমর্থনে আফগানস্থানে সেনা পাঠানোর অর্থ হলো আল কায়দার টার্গেটে পরিণত হওয়া। প্রশ্ন হলো সেধে সেধে আল কায়েদার নজরে নিজেদের নিয়ে আসার কোন প্রয়োজন কি আমাদের রয়েছে?
এ ছাড়াও ব্র্যাকের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় অনেক বাংলাদেশি আফগানস্থানে কর্মরত আছেন। এখন বাংলাদেশ সেখানে সৈন্য পাঠালে এইসব সাধারণ বাংলাদেশীরা সহজেই তালেবানদের বন্দুকের লক্ষ্য হবেন। জেনে শুনে বাংলাদেশীদের, জীবণ মৃত্যুর ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়াটা কতোটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে?
সর্বোপরি ইরাক ও আফগানস্থানে মার্কিন তাণ্ডবে http://en.wikipedia.org/wiki/File:Azizabad_airstrike_civilian_death.jpg শিশু থেকে শুরু করে অসংখ্য নিরীহ মানুষ হতাহত হওয়ায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই ক্ষিপ্ত। সরকার যদি মার্কিনীদের সহায়তায় সেখানে সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় তবে তা জনগণকে সরকারের বিরূদ্ধেও ক্ষিপ্ত করে তুলতে বাধ্য। এবং এই সিদ্ধান্তের ফলে আদতে কট্টর মৌলবাদীদেরই দল ভারি হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তাই বলা চলে যে বর্তমান প্রেক্ষাপটে মার্কিন অনুরোধে সাড়া দিয়ে আফগানস্থানে সৈন্য পাঠানোটা বাংলাদেশের জন্য হবে এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। সাম্প্রতিক খবর অনুযায়ী মার্কিনীদের সহযোগী হয়ে সৌদি আরব সাম্প্রতিককালে প্রায় ২০০ 'র বেশি সন্ত্রাসী হামলার সম্মুখীন হয়েছে। তালেবান হামলার বিষে পাকিস্তানেরও ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। নিরাপত্তাহীন এমন ভয়াবহ অবস্থার মুখোমুখি হবার জন্য আমরা বাংলাদেশীরা প্রস্তুত নই। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র বাংলাদেশের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রকে না করা কঠিন। তথাপি দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে যে কোন উপায়ে সৈন্য পাঠানোর এই আবদারকে উপেক্ষা করাই হবে বাংলাদেশ সরকারের বড় একটি সাফল্য।
২৮/০৯/১০
সিডনি, অস্ট্রেলিয়া।
তথ্যসূত্র:
http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?cid=2&id=137267
http://www.reuters.com/article/idUSTRE67E0EN20100815
http://en.wikipedia.org/wiki/War_in_Afghanista(2001E28093present)
http://en.wikipedia.org/wiki/International_Security_Assistance_Force
http://icasualties.org/OEF/ByYear.aspx
http://www.nytimes.com/interactive/world/war-logs.html
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-09-28/news/96925
ছবিসূত্র:
http://samsonblinded.org/news/wpcontent/uploads/HLIC/5fa838be6cc61d2c3b12eeba93b4f3d5.jpg
মন্তব্য
নিজেরা সরে যাচ্ছে, আর আমাদের ঠেলতে চাইছে বিপদের মধ্যে!
আমারও সেটাই মনে হয়।
মূর্তালা রামাত
--- না ।
সহমত
মূর্তালা রামাত
, পিপিদার সাথে একমত, আর অর্থনৈতিক দিক ছাড়া আমি তো আর কোন প্রাপ্তি দেখি না, আর বেঁচেই যদি না থাকে আমাদের সেনারা, তাহলে অর্থ দিয়েই বা কি হবে? না পাঠানোই ভালো বলে মনে হয় আমার কাছে
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
মূর্তালা রামাত
প্রশ্নের উত্তর দেয়াটা কঠিন বৈকি। কখনও মনে হয় পাঠানো উচিত কখনও না।
সৈন্য পাঠানোর উদ্দেশ্য যদি শান্তি শৃংখলা বজায় রাখা হয় (যা সাধারণত পুলিশেরা করে থাকে) তাহলে আমি সমর্থন করি।
...........................
Every Picture Tells a Story
যেখান থেকে অন্যরা পালাতে পারলে বাঁচে সেখানে আমরা যাবো কোন কারণে?
মূর্তালা রামাত
কেউকি বলতে পারে বাংলাদেশেকে কোন ব্যানারে আফগানিস্তানে যেতে ডাকছে আমেরিকা? ইসাফ নাকি জাতিসংঘ শান্তিমিশন তৈরী করে সেখানে? দ্বিতীয়টি হলে তাতে আমি সমস্যা দেখিনা।
আমেরিকার নিজস্ব ব্যানারে....
মূর্তালা রামাত
আফগানিস্তানে মার্কিনদের সৈন্য লাগলে পাকিস্তান এবং কেবল পাকিস্তান থেকেই নেয়া উচিত।
আরও ভালো হয় যদি তাদের পেশাওয়ার এবং এনডব্লিউএফপি থেকে নেওয়া হয়। ওরা তালিবানদের প্রধান ঘাটি যে যেখানে সেই এলাকাগুলো ভালো চেনে।
রাতঃস্মরণীয়
জব্বর কইছেন।
মূর্তালা রামাত
ওইসব বিলাসিতা করার মত অবস্থা আমাদের নাই। আমাদের সৈন্যরা আমাদের কাছে অনেক মূল্যবান। জেনে শুনে তো আর মৃত্যুর পথে ঠেলে দেয়া যায় না।
ঠিক
মূর্তালা রামাত
আমাদের দেশের অনেকেই এটাকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে দেখবে। ঠিক এই মুহুর্তে, আমরা যখন '৭১ এর ঘাতক-দালালদের বিচার দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষারত, তখন এমন কোন ইস্যু মৌলবাদীদের হাতে তুলে দেয়া ঠিক হবে না যা দিয়ে তারা জনগনকে বিভ্রান্ত করতে পারে।
ভাই, বাংলাদেশের মানুষ এতোটা অন্ধ হলে পাকিদের সাথেই আমাদের ক্যাচাল লাগতো না, ধর্মের ভাইদের সাথে মিলেমিশেই থাকতাম আমরা। আমরা ধর্মান্ধ না। বাংলাদেশের মানুষের জন্য ধর্মের-নামে-সন্ত্রাস দূরে থাক, ধর্মই কোনো শক্তিশালী মোটিভেশন না। ঈদে হুড়োহুড়ি লাগে পরিবার-পরিজনের সাথে উৎসব করার জন্য, আল্লাহর ইবাদতের জন্য না। ঈদের জামায়াত আর জুমার নামাযেও এজন্য ভিড় দেখা যায় নরমাল-নামাযিদের তুলনায় এক্সট্রিম পর্যায়ে। এক্ষেত্রে আমরা তো আর আফগানদের হত্যা করতে যাচ্ছি না, আমরা যাচ্ছি তাদের সাহায্য করতে।
একাত্তরের ঘাতক-দালালরা ধর্ম ভাঙিয়েই খায়। আমরা ধর্মান্ধ হলে তাদেরকে গ্রেফতার করাই সম্ভব হতো না। মৌলবাদী সন্ত্রাসীদের হাতে ইস্যু তুলে দেয়া নিয়ে পুতু পুতু করে ভয়ে জীবন কাটাতে হবে কেন? তাদেরকে মোকাবেলা করতে হবে। তাদের ইস্যুর অভাব এমনিতেও নেই, ওমনিতেও নেই। এমন না যে, আমরা আফগানিস্তানে সৈন্য না পাঠালে তারা যুদ্ধাপরাধীর বিচারে সাহায্য করবে।
অন্যদিকে আমেরিকাবান্ধব হলে যুদ্ধাপরাধীরা তাদের বাপ সৌদির থ্রেট দেওয়ার সময় খুব একটা মনোবল পাবে না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ভালো পয়েন্ট...
মূর্তালা রামাত
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তো তালিবানদের সাথে যুদ্ধ করতে যাচ্ছে না, তারা যাচ্ছে আফগান সেনাবাহিনীকে ট্রেনিং দিতে। ২০১১তে মার্কিনবাহিনী সে দেশ ত্যাগ করার পরে মাস্তানি করার জন্য তো বাংলাদেশবাহিনীকে রাখা হচ্ছে না, তারাও আফগানিস্তান ত্যাগ করবে। এখানে প্রশ্ন হলো নৈতিকভাবে আমরা যদি আফগানিস্তানের মানুষকে সাহায্য করতে চাই, তাহলে সেটা কি তালেবানদের পক্ষে করলে ভালো হবে, নাকি বর্তমান আফগান সেনাবাহিনীকে। আমার জানার পরিধি অনুসারে, তালিবানদের প্রতি কোনো সমর্থন নাই। বর্তমান সরকারব্যবস্থা যদি দেশটাকে একটু স্টেবিলিটি দিতে পারে, তার জন্যই চেষ্টা করা উচিত। সুতরাং নৈতিকতার প্রশ্নে আফগানসেনাবাহিনীকে সাহায্য করা সমর্থনযোগ্য।
এরপরে আসে ঝুঁকির প্রশ্ন। বাস্তবতার বিচারে আমেরিকার অনুরোধ আর আদেশ সমান। সে আদেশ অমান্য করাটা সুখকর হওয়ার কোনো কারণ নেই। আর এই ক্ষেত্রে আমেরিকার আহবানে সাড়া দেয়াটা অনেকটা দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোর মতো।
অন্যদিকে তালেবানি হামলার ভয়। তালেবানরা নিজেদের দেশের যুদ্ধ সামলাতেই বেশি ব্যস্ত, স্ট্রাটেজিক দিক দিয়ে বাংলাদেশের সাথে যে কোনো ফর্মে যুদ্ধ করাটা তাদের জন্য খুব যৌক্তিক মনে হয় না। পাকিস্তান-ভারত-সৌদিআরবের গুরুত্ব আর বাংলাদেশের ট্রেনিং দিয়ে শত্রু হওয়ার গুরুত্ব এক না। বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় বোমা হামলা হতে পারলে আমরা যে এই আবেদন উপেক্ষা করলেই মৌলবাদীদের খপ্পর থেকে রক্ষা পাবো, তা হওয়ার কোনো কারণ নেই।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ মার্কিনবিরোধী (প্রকারান্তরে তালেবানসমর্থক) এটা সঠিক তথ্য না। মুসলমান হওয়া আর টেরোরিজমের সমর্থন করা সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। বাংলাদেশের মানুষ সমর্থন করবে আফগানিস্তানের মানুষকে, সেখানকার মানুষের জন্য তালেবান তাদের বর্তমান সরকারের চেয়ে ভালো সমাধান না। সুতরাং এই সরকারকে সাহায্য করার জন্য বাংলাদেশের মানুষ আমাদের সরকারের ওপর খেপবে এটা ভুল ধারণা।
এতে মৌলবাদীদের মিছিল মিটিং বাড়বে। তবে মৌলবাদীরা যেহেতু বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র রেপ্রেজেন্ট করে না, সেহেতু মানুষের কাছে ওই মিছিল মিটিং গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। বিশেষ করে, এটা যে জাস্ট এনাদার 'শান্তি মিশন', যুদ্ধ নয়, তা মানুষকে বুঝানোর ক্ষেত্রে সরকার সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে। এর বিপরীত দিকে, তালেবানের ভয়ে সৈন্য না পাঠালে মৌলবাদী সন্ত্রাসীদেরই জয় হবে। তাদের কাজই ত্রাস সৃষ্টি করা। বাংলাদেশ সরকার তালেবানের ওয়েব-হুমকিতে ভয় পেলে মৌলবাদীদের মনোবল বাড়বে বৈ কমবে না।
সেনা মৃত্যুর বিষয়ে ঝুঁকি থাকবেই। এই ঝুঁকি মাথায় রেখেই মানুষ সৈনিক হয়। বাংলাদেশ যদি যুদ্ধ না করে ট্রেনিংয়েই সীমিত থাকে, তাহলে এই ঝুঁকিও অনেক কমে যায়।
বাংলাদেশ সরকার যদি যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতে চায়, তাহলে তার অবস্থান আরো শক্ত করা দরকার। যুদ্ধপরাধীদের মা-বাপ সৌদি আরবের কথিত প্রভাবকে সীমিত করতেও আমেরিকাবান্ধব হওয়ার বিকল্প নেই। তালেবানের থ্রেট খেয়ে লেজ গুটালে আমাদের কোনো দিক দিয়েই লাভ নেই। আমি বরং একটি শক্ত সরকারকে দেখতে চাই, যারা মৌলবাদী সন্ত্রাসীদের ভয়ে ভীত না হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমেরিকার এই আহবান সেদিক দিয়ে একটা 'সুযোগ', একটা 'সমস্যা' নয়। পাশ কাটানোর চেষ্টা না করে বরং এই সুযোগকে কিভাবে কাজে লাগানো যায়, সে চিন্তা করা উচিত।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এখানে আমেরিকার প্রভাবটা দরকার আমাদের মৌলবাদ দমনের জন্য না, সৌদি থেকে শ্রমিকদের পুষব্যাকের থ্রেট ঠেকাতে। আমেরিকার সাথে সম্পর্ক খারাপ হলে ওই থ্রেটটা বাড়বে।
------
বাংলাদেশের সেনারা সেখানে গেলে অবশ্যই ঝুঁকি থাকবে। ঝুঁকিমুক্ত জীবনযাপনের জন্য সৈনিক জীবন না। কথা হলো, ঝুঁকির মাত্রা কতোটা হবে এবং প্রত্যাশিত লাভের সাথে ঝুঁকির হিসেবটা কি। জাতিসংঘের শান্তিবাহিনীতে যোগ দেয়া সৈনিকরাও গুলি খায়, আফগানিস্তানে গেলেও সেই ঝুঁকি থাকে।
-----------------
আমি আফগানিস্তানে এই স্বল্প সময়ের জন্য সৈন্য পাঠানোটাকে সমস্যা না, বরং সুযোগ হিসেবে দেখছি। ওখানে সৈন্য না পাঠালে আমরা মৌলবাদীদের টার্গেট না হবার কোনো কারণ নেই। অন্যদিকে আমেরিকার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা মানে আমেরিকার সাথে সম্পর্ক আরেকটু নষ্ট হওয়া, যেটা শুভলক্ষণ হওয়ার তেমন কোনো কারণ নেই।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
- ইরাক যুদ্ধের আগেও বাংলাদেশ আমেরিকার সাথে সৈন্য পাঠানোর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিলো। কোন সম্পর্কের অবনতি হয়েছে বলে মনে পড়ে না। আমেরিকার কাজ কর্মে বাংলাদেশ বড় ছোট মাঝারি কোন ধরনের হুমকি না। আমেরিকান কোম্পানি যাতে প্রশ্নাতীত আইনের বলে কাজকর্ম পায় এখানে সেটার দেদার ব্যবস্থা বাংলাদেশ সরকার করে যাচ্ছে। ওটুকু হলেই যথেষ্ট মনে হয়। বাণিজ্যে বসতি লক্ষী - এইটা আমেরিকা ভালোই জানে। আমেরিকা নিজের স্বার্থেই সম্পর্ক খারাপ করে (অর্থাত কোটা উঠিয়ে দেয়া, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক থেকে কম সুদে ঋণের সাপ্লাই বন্ধ করা) আমেরিকা বিরোধী মনোভাবে পুর্ন একটা সরকার/জনগণ এদেশে চাইবে না।
- আফ্রিকার কঙ্গোর জঙ্গলে গুলি খাওয়া আর ঘরের কাছের আফগানিস্থানে গুলি খাবার উপলক্ষ তৈরীর মধ্যে পার্থক্য আছে মনে হয়।
- প্রথম প্যারায় এইটা নিয়ে বলছি।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
ইরাক যুদ্ধ আর আফগানিস্তানে ট্রেনিং দিতে সৈন্য পাঠানোর মধ্যে পার্থক্য অনেক। বাংলাদেশের জনগণের কাছে সাদ্দাম হোসেন ছিলো হিরো, তালেবানরা হিরো না। জনমত শক্ত থাকলে সেটাকে কারণ হিসেবে দেখানো যায়, এক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন। সময়ও ভিন্ন।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আফগানস্থানে কি বাংলাদেশের সৈন্য পাঠানো উচিৎ?
উত্তরঃ না।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও আমেরিকা বাংলাদেশ থেকে আফগানিস্তানে মোতায়েনের জন্য সেনা চেয়েছিল, সে সময়কার সরকার এ আহবান প্রত্যাখ্যান করেছিল।
এবারো সরকার মনে হয় না সেনা পাঠাতে রাজী হবে, সেটা আমাদের সেনা সদ্যসদের নিরাপত্তার খাতিরে যতটা নয়, তার থেকে বেশি রাজনৈতিক ঝুঁকির কারনে। জনগনের ইসলামী সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী পক্ষ সরকারের বিরুদ্ধে বেশ বড় একটা ইস্যু বানিয়ে ফেলতে পারে এটাকে, সেই সাথে তালেবানের টার্গেট হবার ভয় তো আছেই।
আর যতটুকু জানলাম আমেরিকা বাংলাদেশের সেনা চেয়েছে আফগান বাহিনীকে প্রশিক্ষন প্রদান এবং একই সাথে সামরিক বাহিনী (কম্ব্যাট গ্রুপ) হিসেবে কাজ করার জন্য।
এ 'অনুরোধ' রক্ষা করলে যদি বাংলাদেশের 'বার্গেইন পাওয়ার' বাড়ে, তবে যাওয়া উচিৎ।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
আমার কাছে যদি প্রশ্ন করা হয় তাহলে আমার উত্তরও হবে না, আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠানো উচিত হবে না।
এটা তালেবানদের হুমকির জন্যে না, এটা হচ্ছে নীতির প্রশ্ন। আমেরিকানরা আফগানিস্তানে যুদ্ধটা শুরুই করেছিল অনৈতিকভাবে। জোর করে ওরা যুদ্ধটা আফগানদের উপরে চাপিয়ে দিয়েছিল। তাই আমার মনে হয় যদি আজ আমরা আমেরিকানদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সৈন্য পাঠাই তাহলে সেই অন্যায়টাকে প্রশ্রয়ই দেয়া হবে। একারণে ইরাকেও আমাদের সৈন্য পাঠানো ঠিক হবে না, যদিও এখন পর্যন্ত এরকম কোন অনুরোধ/আদেশ আসেনি।
পাগল মন
আমেরিকা আফগানদের সাথে যুদ্ধ করলো কবে? তালেবান = আফগান?
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আমরিকানরা কি আফগান আর তালিবান বাইছা বাইছা শুট করছে? আফগানরা তালেবানদের সাপোর্ট করাতেই তো ওগোর এই দশা।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
তার মানে তালেবানরা আফগানদের প্রতিনিধিত্ব করে, তালেবানি শাসনে তারা সন্তুষ্ট ছিলো, আমেরিকা গিয়া ঝামেলা পাকাইছে?
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
একটু আগের দিকের ঘটনা স্মরণ করেন। আমেরিকা আফগানিস্থানে হুট করে যুদ্ধ করতে হাজির হয় নাই। এবং আফগানিস্তানে তালিবান শাসনের শুরু ৯৬ সালে। এই সরকার হঠাতে না পারার দায়দায়িত্ব আফগান জনগণরেই নিতে হবে। ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের বেশীরভাগ এলাকাই তারা নিয়ন্ত্রন করতো।
এইখানে সন্তুষ্ট বা আমেরিকা ঝামেলা পাকাইছে এইটা বস আপনার আরোপিত শব্দাবলি। ঐ জাতীয় দাবি আমি করি নাই বা আমি ভাবতেছি না আমার উপরের কমেন্ট ঐ রকম কিছু অর্থ দাড় করায়।
ঘুমাইতে গেলাম। সকালে কামলা।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নৈতিক দিক দিয়ে মূলকথা আমরা আফগান জনগণের সাথে থাকতে চাই। আফগান জনগণ তালেবানদের চাইলে (সেটা তাদের জন্য ভালো, না মন্দ, তা বিচার করার দায়িত্ব তাদের) তালেবানবিরোধী সেনা ট্রেনিংয়ে সাহায্য করা অবশ্যই খারাপ।
আমেরিকা তো নিজের স্বার্থ ছাড়া আফগানদের উদ্ধার করতে যায় নাই, যাবেও না, কেউ যায় না। আমাদের সরকারও সেখানে সৈন্য পাঠালে শেষতক স্বার্থেরই হিসেব।
শুভ রাত্রি।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
তালেবানদের অধিকাংশ তো আফগানি ই। সাধারন মানুষ মারা গেছে তালেবানদের চেয়ে অনেক বেশি। আমেরিকা আফগানিস্তান আক্রমণ না করলে এই ৫০,০০০ সাধারন নাগরিক মারা যেতো না।
শিক্ষক-চিকিৎসক-সেবাদানকারী কর্মী পাঠালে বুঝতাম.....কিন্তু সৈন্য পাঠানো সর্মথন করতে পারলাম না বলাইদা।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
আমেরিকা নিজের স্বার্থেই যুদ্ধে গেছে, আফগানিস্তান উদ্ধার করতে না। আমরা তো আমেরিকার সাথে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করতে যাচ্ছি না, যাচ্ছি তালেবানদের বিরুদ্ধে 'আফগান'বাহিনীকে ট্রেনিং দিতে। যা স্বল্প সময়ের এবং এরপরে আমরাও দেশে ফিরে আসবো। এটা হলো নৈতিকতার হিসাব।
আর বাস্তবতার হিসাবে (সরকারের যেটা করা উচিত) আমাদের লাভ-ক্ষতিটাই মূলকথা। আমেরিকা কত হাজার আফগানকে গুলো করলো, সেটা লাভ-ক্ষতির হিসেবে বড়জোর একটা চলক হতে পারে, তার বেশি কিছু না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
শুধুমাত্র নৈতিকতার কারণে সাহায্য করা হলে কাজটা সহজ থাকে, কিন্তু সেভাবে যাওয়া শক্ত আছে। আমেরিকা নিঃশুল্ক বাণিজ্যের লোভ দেখাবে, ভিসা সহজ করার কথা বলবে। তখন বাংলাদেশ ট্রেনিং ছেড়ে বেরিয়ে যুদ্ধে সেনা পাঠাতে বাধ্য হতে পারে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
তালিবান আমলে তালিবানদের হাতে মারা যাওয়ার রেকর্ড কিন্তু খুব একটা খারাপ নয়।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
এইখানে একটা ব্যাপার বুঝতে হবে যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যদি আফগানিস্তানে যায়, তাহলে তারা যাবে মূলত প্রশিক্ষণ দিতে, যুদ্ধ করতে নয়। একবার ভাবুন তো, এখন হুট করে যদি ইসাফ এবং ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যায় তাহলে কি ঘটবে? তালেবানরা খুব সহজেই আফগান নিরাপত্তাবাহিনীকে পরাস্ত করে পুনরায় ক্ষমতায় চলে যাবে। আফগানিস্তানের মানুষেরা কি তালেবান শাসন চায়? এ কারণেই আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে, দায়িত্ব নেয়ার উপযোগী করে তারপর সৈন্য প্রত্যাহার করা উচিত। আমাদের সেনাবাহিনী এই কাজে সুযোগ পাবে তাদের দক্ষতার কারণে। আমরা জানি শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের সেনাবাহিনীর সাফল্য এবং সুনামের কথা। 'জীবন মৃত্যুর ঝুঁকি যতটা ভয়াবহ মনে হচ্ছে তা কি আসলেই অতটা ভয়াবহ? যেহেতু মার্কিন বাহিনী ২০১১ সালে সে দেশ থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাই ধরে নেওয়া যায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সেখানে গেলেও মাত্র এক বছর থাকবে। ২০০১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যদি ২১০০ জন বিদেশী সেনা নিহত হয় তাহলে এই নয় বছরে প্রতিবছর গড়ে মৃত্যুবরণ করেছে ২৩৩ জন, দেড় লাখ সৈন্যের ক্ষেত্রে এই মৃত্যুর বাৎসরিক হার হচ্ছে ০.১৬%, এটা কি একটা সেনাবাহিনীর জন্য ভয়াবহ ঝুঁকি কিংবা 'মৃত্যুর পথে ঠেলে দেয়া'? মৌলবাদীদের হুমকির ব্যাপারে বলাই দা সুন্দরভাবে বলে গেছেন, এই নিয়ে আর কথা না বলি। হ্যাঁ আমি জানি ধর্মকাতর'রা গাঁইগুঁই করবে, কিন্তু আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। আমরা আফগানদের সাহায্য করতে যাব, যুদ্ধ করতে নয়।
আর যদি অবস্থা সত্যিই খারাপ হয়, 'ছাইড়্যা দে মা, কাইন্দা বাঁচি' অবস্থা হয়, তাহলে সৈন্য ফিরিয়ে আনলেই হয়। এমন তো না যে একবার পাঠালে আর ফিরেয়ে আনা যাবেনা!
সত্যান্বেষী
আমেরিকাকে সাহায্য করে বিভিন্ন দেশের রেকর্ড বিভিন্নরকম। পূর্ব এশিয়াতে যে দেশগুলো আমেরিকাকে ভিয়েতনাম যুদ্ধে সরাসরি সাহায্য করেছিল (কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন্স) তাদের আমেরিকা কিন্তু বাণিজ্য-ছাড়ের মাধ্যমে অনেক পালটা সুবিধা দিয়েছে। পাকিস্তান আরো বড় শত্রু সোভিয়েতদের পরাস্ত করতে সাহায্য করেছিল কিন্তু সোভিয়েতরা পরাস্ত হবার পরে মার্কিনিদের আর ইউনিপোলার বিশ্বে পাকিস্তানকে সাহায্য করার দরকার ছিল না, যুদ্ধ চলাকালীন মার্কিন সাহায্য গেছে সব আর্মির পেটে। বরং, আফগানদের নিয়ে সমস্যায় জড়িয়ে যায় তারা। সুতরাং, আম্রিকাকে সাহায্য করলেই ভাল প্রতিদান পাওয়া যাবে সে ধারণা ঠিক নয়। বরং প্রতিদানে কি পাওয়া যাবে সেটাই আগে হিসাব করা দরকার। বাণিজ্য-ছাড় বা একতরফা বছর কুড়ির জন্য শুল্ক প্রত্যাহার করা হলে মার্কিনিদের খুব কিছু লোকসান নেই (তারা এমনিতেই জিনিসগুলো চিন থেকে কিনত, এখন বাংলাদেশ থেকে কিনবে), কিন্তু বাংলাদেশের লাভ অনেক। হিসাবটা তাই আগে করে নেওয়া উচিত ...
আপাত মনে হতে পারে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য আফগানিস্স্থানে গেলে দেশে অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু এ নিয়ে আমার যথেষ্ট দ্বিমত আছে। বাংলাদেশ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হিসাবে ২০০১ সালে আফগানিস্থান যুদ্ধের পক্ষে ভোট দিয়েছিল - একবার নয়, একাধিকবার। আফগানিস্থানে সেনা পাঠানো হয়েছে জাতিসংঘের ম্যান্ডেট মেনেই (ইরাকে নয়)। বাংলাদেশে লোকে এ নিয়ে খুব কিছু মাথা ঘামায় বলে মনে হয় না। তবে দেশে দু-চারটে বোমা পড়তে পারে, কিছু লোকে এ নিয়ে রাজনৈতিকভাবে জলঘোলা করতে পারে - এর বেশী কিছু হবেনা।
আরো একটা ব্যাপার হল আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে মার্কিনিরা শুধু আফগান সেনাদের ট্রেনিং দেবার কাজেই বাংলাদেশ থেকে সেনা পাঠাতে বলছে। কার্যত, মার্কিন সেনারা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরে বা দেশ ছাড়া শুরু করলেই তালিবানেরা আবার দেশের ওপর কব্জা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করবে। সেসময়ে বাংলাদেশী সেনাদের যুদ্ধের এক-পক্ষ হিসাবে দাঁড়ানো ছাড়া কোনো গতি থাকবেনা, বরং মার্কিন সেনারা আফগান ও বাংলাদেশী সেনাদের বোড়ের মত সামনে ঠেলে দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ কমিটমেন্ট রাখতে আরো সেনা পাঠাতে বাধ্য হবে।
সৌদি তালেবানদের ভেতরে ভেতরে সমর্থন করলেও কার্যত তারা মার্কিনিদের কথায় ওঠে-বসে। সুতরাং মার্কিনিদের সাহায্য করলে সৌদি সরাসরি কোনোরকম ভাবে বাংলাদেশকে ঘাঁটাবে না। এ বিষয়ে আমি ১০০% নিশ্চিত। তাছাড়া সৌদি নিজের প্রয়োজনেই শ্রমিক নেয়, এটা নিয়ে বাংলাদেশে একটা অপপ্রচার শুরু হয়েছে যে কারণে অকারণে সৌদি শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করতে পারে। এটা কখনই ঘটবে না।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
বাংলাদেশের পরপরাস্ট্রনীতি হলো পূব পাড়ার আক্কাছের মেয়ের মতো!
কাউকেই 'না' করতে পারে না।
বাংলাদেশের পররাস্ট্রনীতিকে 'না' বলার মতো বলিষ্ঠ পর্যায়ে দেখতে চাই।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভাই আপনি বাংলাদেশের পররাস্ট্রনীতিকে কিভাবে দেখেন জানিনা। কিন্তু আমার কাছে এটা অত্যন্ত কার্যকরী এবং সফল। আমরা হলাম, "...Politically secular, religiously Muslim and culturally Bengali...."। যত যাই হোক আমাদের এখন গঠনের সময়। এখন না বলার সময় নয়। আমরা এখন "না" না বলে উচিত হবে হ্যাঁ বলা এবং সেই সাথে সেই হ্যাঁ এর বিপরীতে কিছু সুবিধা আদায় করা যায় কিনা তা চিন্তা করা।
আমরা বহুমাত্রিক। ওআইসিতে আমরা আছি, সার্ক এ আছি, জাতিসংঘে আছি। আমরা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে Secular। তাই আমাদের ক্ষমতা অবশ্যই আছে না বলার। এই বিষয়ে আপনার সাথে দ্বিমত পোষন করি।
১৯৭১-এ এই আফগানরাই পরোক্ষভাবে বাঙালিদের সমর্থন করেছিল যখন অন্য অনেক মুসলিম রাষ্ট্র করে নাই। অফিসিয়ালি নিরপেক্ষতা অবলম্বন করলেও বাস্তবে অজস্র বাঙ্গালিকে পাকিস্তান থেকে বর্ডার ক্রস করে পালিয়ে যেতেও সাহায্য করেছে - আশ্রয় দিয়েছে - প্রোটেকশন দিয়েছে- দেশে ফেরত যাবার ব্যাবস্থা করেছে। আজকে সেই আমরাই ওদের শত্রুপক্ষের হয়ে ওদেরকে মারতে যাবো? ওরা যদি এর ফলে বাঙালি/বাংলাদেশিদের 'মা...-চু...র জাত' বলে এবং কচুকাটা করতে চায়, তাহলে কি খুব অন্যায় হবে ?
তালেবানের বিরুদ্ধে যাওয়াটাকে আপনি আফগান জনগণের বিরুদ্ধে যাওয়া বলছেন কেন? বাংলাদেশ তো দেশ দখল করতে যাবে না, স্পষ্টতই বলা হচ্ছে যে বাংলাদেশ বাহিনীর কাজ হবে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে শক্তিশালী করা, সেটা কীভাবে জনগণের জন্য খারাপ হয়?
সৈন্য পাঠানো কিংবা না পাঠানো- এর যে কোনটিই বাংলাদেশের জন্য তেমন ক্ষতিকর সিদ্ধান্ত না। কিন্তু পাঠালে উপরি কিছু লাভ আছে, বলাই ও দিগন্তের মন্তব্যে সেগুলো উঠে এসেছে। আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে আমরা কি এই মুহূর্তে প্রোএকটিভ হয়ে কিছুটা লাভবান হব, না কি যে রকম চলছে সেরকমই চলব। এই ইস্যুতে আমেরিকার সাথে গেলে আমি পররাষ্ট্রপর্যায়ে প্রাপ্ত লাভটাকেই বড় করে দেখব। প্রথমত, আমেরিকা বলয়ের অন্যান্য দেশের সাথে কূটনৈতিক পর্যায়ে কিছু স্বার্থের ক্ষেত্রে আপার হ্যান্ডে থাকা - এইটা এই মুহূর্তে খুব দরকার। দ্বিতীয়ত, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যে তালিবান ইস্যু অনেকদিন জারি থাকবে এবং এর বিরুদ্ধে যত আগে অফিশিয়ালি অবস্থান নেয়া যায় ততই ভাল- বিশেষ করে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য। এখন যখন লাভসহ সেই সুযোগ এসেছে- সুযোগটা নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
তালেবানের প্রতি সহানুভূতিশীল বাঙালি খুব কমই আছে। সুতরাং মৌলবাদিরা লাফঝাপ মেরেও তেমন কোনো সমস্যা তৈরি করতে পারবে না। আর সৈন্যদের ক্ষেত্রে ঝুকির ব্যাপারটা বোধহয় গৌণ, তাদের ঝুকি সবখানেই, সেটা মেনেই তারা এই পেশায় এসেছেন, তারজন্য এ ধরণের মিশনে জাতিসংঘ থেকে আলাদা বরাদ্দও পান। মূল ঝুকি যেটুকু নেয়া হবে সেটা হচ্ছে আফগানে কর্মরত বেসামরিক বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে। এ ব্যাপারে সরকার আগে থেকেই বার্গেইন করতে পারে যে তাদের যথেষ্ট নিরাপত্তা থাকলেই পজিটিভ কিছু সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ নেবে, নইলে না। আর সৈন্য পাঠানোকে কেন আফগান সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার সাথে গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে সেটা বুঝতে পারছি না। তাদেরকে সাহায্য করার ইচ্ছে থাকলে সেটা কীভাবে সম্ভব? তালেবানকে মদদ দিয়ে? নাকি তালেবানকে ঠেকিয়ে? আমার তো মনে হয় দ্বিতীয়টাই সাহায্যের পন্থা। চিকিৎসা সেবা দেয়া যেমন জরুরী, তেমনি চিকিৎসা যাতে না লাগে সেজন্য আঘাত ঠেকানোর ব্যবস্থা করাটাও জরুরী। প্রথমটা ঠিক থাকলে, দ্বিতীয়টা কেন ঠিক হবে না।
সব মিলিয়ে, আমার মনে হয় বাংলাদেশের প্রোএকটিভ হবার জন্য এই সময়টাই ভাল।
কয়েকটি বিষয় :
১. আহ্বানটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। জাতিসংঘের না।
২. মার্কিন সৈন্যরা এতদিন ধরে আফগানিস্থানে যে আক্রমণের মুখে আছে সেখানে তাঁরা বাংলাদেশীদের সেট করে নিজেরা ভাগতে চাইছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে আক্রান্ত হয়ে সমব্যথীর তালিকা তৈরী করতে চাইছে।
৩. বিশ্ববাজারে খব বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রক্রিয়া চলছে। অক্ষশক্তির পুরনো হিসাবনিকাশ সবই বদলে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মতো একটা দেশের জন্য এখন আর আগের মতো যুক্তরাষ্ট্র কিছু বললেই চট করে চোখ বুঁজে হুকুম তামিল করা আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত হবে।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
দুইটা প্রশ্ন:
আমেরিকা কি আমাদেরকে সেট করে নিজেরা ভেগে যাবে?
বাংলাদেশ কি তাইলে আমেরিকান অক্ষশক্তিকে ইগনোর মেরে বা (এক্সট্রাপোলেটেড ভিউ) তালেবানবান্ধব অক্ষশক্তি(কারা তারা?)তে যোগ দিয়ে বেশি লাভবান হবে?
আরেকটা না বলা প্রশ্ন:
আমেরিকা এবং জাতিসংঘের মধ্যে ব্যবহারিক পার্থক্য কি?
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
১. হ্যা। ২০১১'র মধ্যে। ওবামার সেরকমই সিদ্ধান্ত। শুধু আমেরিকা না জার্মানী, বৃটেন এরাও সরে আসার ঘোষনা দিয়েছে।
২. এতদিন লেজিটিমেসির তত্ত্বীয় পার্থক্যটাই প্রধাণ ছিল। আফগানিস্থান আর বিশেষত ইরাকের ঘটনার পরে ব্যবহারিক পার্থক্যটাও ক্রমশ প্রবল হয়ে উঠছে। যার কারণে ওবামা প্রশাসন শুরু থেকেই সৈন্য প্রত্যাহারের কথা বলে আসছে।
তালেবানবান্ধব অক্ষশক্তি আমেরিকা নিজে। এই কাজে আমেরিকাকে অসহযোগীতা করাই সঠিক তালেবান বিরোধিতা।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
১। তার মানে, ২০১১র পরে আমেরিকা থাকবে না, তার বদলে আমরা আফগানিস্তান পাহারা দেবো!
২। আমেরিকা তালেবানবান্ধব হলে তো আমাদের জন্য কাজ সহজ হয়ে গেলো। দুই পক্ষকেই সহযোগিতা করি অর্থাৎ সৈন্য পাঠাই, তালেবান অ্যাটাকও হবে না, আমেরিকার সাথেও সম্পর্ক ভালো হলো। লাভে লাভ।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
১) ২০১১ সালে সেনা সরানো শুরু হবে, শেষ নয়। ইরাকে সেনা সরানো শুরু হয়েছে কিন্তু কবে শেষ হবে কেউ বলতে পারেনা। তাও ওবামা ইরাক নিয়ে কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আফগানিস্থান নিয়ে সেরকম কোনো বক্তব্য দেয় নি।
২) আমেরিকা আর জাতিসংঘ নিশ্চয় আলাদা। কিন্তু আফগানিস্থানের বাহিনী জাতিসংঘের ম্যান্ডেট মেনে শুরু হয়েছে ও ম্যান্ডেটের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হিসাবে বাংলাদেশ ভোটও দিয়েছে। দেখুন এখানে -
http://en.wikipedia.org/wiki/United_Nations_Security_Council_Resolution_1386
আফগান আর্মি মূলত তাজিক, আর তালিবানরা মূলত পাশতুন।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আমার মনে হয় বাংলাদেশ সৈন্য না পাঠানোই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। জাতিসংঘ শান্তি মিশন হলে আমার কোন আপত্তি ছিল না।
পথিক৭৭৭
আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠানোর লাভ-লোকসানের হিসেব কষেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমার মনে হচ্ছে লোকসানের জায়গাটুকু এখানে ভালই উঠে এসেছে, কিন্তু লাভটা একটু অতিরন্জিত হয়ে যাচ্ছে।
১। স্নায়ুযুদ্ধের সময় যারা আমেরিকার সহযোগী ছিল, তারা যতটা সুবিধা পেয়েছে এখনকার ইউনিপোলার বিশ্বে আমেরিকা কাউকেই অতটা সুবিধা দেবে না। কারন এখন বলয় পরিবর্তনের কোন সুযোগই নেই।
২। আন্চলিক রাজনীতির কথা বললে আমাদের সবচেয়ে বেশি বারগেইন করতে হয় ইনডিয়ার সাথে, কারন বিশাল সীমান্ত আমাদের অনেক কিছুকেই একসাথে জুড়ে দিয়েছে। মিডলইস্টেও আমাদের শ্রমবাজারের মুল প্রতিদ্বন্দি ইনডিয়া। বাংলাদেশে আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠিয়ে কখনই আমেরিকার ইনডিয়ার চেয়ে ঘনিষ্ট মিত্র হতে পারবে না। ফলে বারগেইন পাওয়ার বাড়বে এটা আশা করার কোন কারন নেই।
৩। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অতীত অর্জনও (কোন সরকার স্পেসিফিক নয়) বিবেচনা করা উচিত। ইনডিয়ার সাথে আমাদের বেশ কিছু আপারহ্যান্ড ছিল (ট্রানজিট, বন্দর ব্যবহার সুবিধা), কিন্তু এর কোনটার বারগেইনেই কী আমরা লাভজনক কোন ডিল পেয়েছি। হঠাৎ করে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় খুব দক্ষ হয়ে আমেরিকার সাথে প্রচন্ড লাভজনক কিছু আদায় করতে পারবে আশা করা একটু বেশি হয়ে যায় না?
সত্যিকার অর্থে লাভটা কি হবে তাহলে? আমরা আমেরিকা বা আই এম এফ বা ওয়ার্ল্ড ব্যাংক থেকে কিছু লোন (হয়তো কিছু অনুদানও) পাবো, যাতে আরো অনেকগুলো শর্ত জুড়ে দেয়া থাকবে। আমেরিকা আমাদের সিকিউরিটি বা সামরিক উন্নয়নে সহায়তা হিসেবে ট্রেনিং দেবে, কিছু আধুনিক আর্মস কেনার সুযোগ দেবে। আর আমেরিকা যাওয়ার ভিসা একটু সহজ হবে।
আদর্শিক আরো একটা জায়গা আছে বলে আমি মনে করি। তালেবান আফগান জনগনের প্রতিনিধিত্ব করে না মানি, কিন্তু এক্ষেত্রে সরকার পরিবর্তন আফগান জনগনকেই করতে হবে। বাইরে থেকে কেউ এসে সরকার পরিবর্তন করে দেবে এইটা জনগনের পক্ষে যাওয়া নয়। তাই আমেরিকার সহযোগী হিসেবে আফগানিস্তানে যাওয়া (মনে পবিত্রতম উদ্দেশ্য নিয়েও), আফগান জনগনের পাশে দাড়ানো নয়।
বাংলাদেশের করণীয় হতে পারে এমন - এখন আমেরিকা তালেবানদের একটা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে এনে সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনের পথ খুজছে। এটা আলোচনার টেবিলেই হতে হবে। বাংলাদেশ একটা মুসলিম দেশ, যে আমেরিকার মিত্র, হিসেবে আলোচনা ফ্যাসিলিটেট করার উদ্যোগ নিতে পারে। বাংলাদেশ আমেরিকাকে সহায়তা করবে আলোচনার টেবিলে। সেজন্য আফগান জনগনের কাছে যাবে বাংলাদেশ, সেটা সৈন্য পাঠিয়ে নয়, সেবাকর্মী পাঠিয়ে।
এইটা না জেনে একটা পদক্ষেপও সদর্থক হবে না।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
উত্তরটা এক কথায় না হওয়া উচিত।
এখনো যুদ্ধাবস্থা বজায় আছে আফগানিস্তানে। সৈন্য পাঠিয়ে তাঁদের বিপদের মুখে ফেলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের চিন্তা না করাই ভালো। আমরা কী শান্তি স্থাপন করতে এসেছি না যুদ্ধ করতে এসেছি সেটা গোলযোগপূর্ণ জায়গায় প্রথম বিবেচনা নয়।
এটা যুদ্ধ বা শান্তি প্রতিষ্ঠা যাই হোক না কেন, এটা মার্কিনিদের লড়াই। অন্য লোক দিয়ে নিজের যুদ্ধ হয় না।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
যদি আমেরিকা আফগানিস্তান থেকে চলে যায় এবং আমরা বা অন্য কেউ সেখানে না যায়, তবে কি আফগানিস্তান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা জঙ্গীর সংখ্যা দেশে বাড়বে না কমবে,আমরা আফগানিস্তানে না গেলে তারা কি আমাদের দেশে জঙ্গী পাঠাবে না?
নীতির প্রশ্ন, লাভের প্রশ্ন আসতেই পারে, কিন্তু নিরাপত্তা?
আফগানিস্তান খোলা বাজার হলে কি এ অঞ্চলে বর্তমান পরস্থিতির চেয়ে খারাপ অবস্থা হবে নাকি ভাল?
তালেবানদের প্রধান ঘাঁটি আফগানিস্তান, সেক্ষেত্রে একটা জিনিস বুঝতে হবে, জনগণকে শক্তিসালী করা না গেলে তারা পুতুল মাত্র। তাদেরকে যেভাবে ব্যবহার করা হবে তারা সেভাবেই ব্যবহৃত হবে। আমার ধারণা ওবামা প্রসাশন চাইছে আফগানিস্তানের সমস্যা আফগানিস্তানই সামলাক। তবে এখন থেকে না, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের পর।
আমার ধারণা চাইলেই কিন্তু আমেরিকা সৈন্য প্রত্যাহার করতে পারতো বলতে পারতো আফগান বাহিনী প্রস্তুত তালেবানদের সাথে যুদ্ধ করতে। ছেড়ে দিয়ে চলে আসতো।
অবশ্য এ আমার ধারণা। হয়তো পিছনের অনেক কথা আছে। জানার ইচ্ছা আছে সেসব।
উত্তরগুলো পেলে ভালো হত।
প্রতিনিয়ত চিনছি নিজেকে
অলস সময়
আমার মনে হয় না আগামী ১০ বছরের মধ্যে আমেরিকা আফগানিস্তান থেকে পুরোপুরি সৈন্য প্রত্যাহার করবে।কমব্যাট ট্রুপ সরায় নেয়া টাইপের ব্যাপার হতে পারে খালি।
আফগানস্থানে কি বাংলাদেশের সৈন্য পাঠানো উচিৎ?
না, তার পরেও কথা থেকে যায়, কারণ;
'যেথায় দেখ দুর্বলেরে
পায়ে পিষে মার তারে'
পার্সোনালি আমি মনে করি সৈন্য পাঠানোর ঝামেলায় যাওয়া উচিৎ হবে না। তবে বৃহত্তর ইস্যুটা হল - এটা আমেরিকার একটা লিটমাস টেস্টের মত। বাংলাদেশকে আমেরিকা সাহায্য করবে শুধুমাত্র তখনই যখন বাংলাদেশ আমেরিকার সাথে একই নৌকায় সহযাত্রী হবে। এমনিতে আমার মনে হয় না বাংলাদেশের গুটিকয়েক সৈন্য নিয়ে আমেরিকার কিছু আসবে যাবে। তাই বাংলাদেশের উচিৎ হবে খুব সাবধানে পদক্ষেপ নেয়া এক্ষেত্রে। শাঁখের করাতের মত বিষয়টিতে খানিকটা ক্ষতিকারক হলেও ভবিষ্যতের বৃহত্তর প্রাপ্তির কথা বিবেচনা করে সঠিক পদক্ষেপটি নিতে হবে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
নতুন মন্তব্য করুন