সরকারের শেষ সময়ে এসে মন্ত্রিসভার কলেবর বাড়ান হল। মন্ত্রিসভা পুনর্বিন্যাসও করা হল। সরকার বলছে এটি একটি রুটিন ওয়ার্ক। অন্যদিকে বিরোধী দল বলছে এটি ডুবন্ত নৌকা বাঁচানোর শেষ চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।
বেশ কদিন ধরেই “নৌকা ডুবতে যাচ্ছে” বলে শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে ভারতীয় পত্রিকায় আওয়ামী লীগের জনসমর্থন কমছে শিরোনামে খবর বের হবার পর “নৌকডুবি”র গল্প ব্যাপক আকারে ডালপালা মেলতে শুরু করে। ঐ পত্রিকায় আগামী নির্বাচনে বিএনপি-জামাত জোটের বিজয়ী হবার আশঙ্কা করা হয়। আর তাতেই নড়েচড়ে বসেন বিএনপি তথা চারদলীয় জোটের নেতারা। মাঠে ময়দানে তারা জোর গলাতেই আগামীবার ক্ষমতায় আসলে কার কার চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করা হবে তার ফিরিস্তি দেয়া শুরু করেন।
বিএনপি-জামাতের এহেন রণহুঙ্কারে সরকার সমর্থকদের ভেতর দুশ্চিন্তার ভাঁজ স্পষ্ট। একদিকে বিশ্বব্যাংক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ড. ইউনুস অন্যদিকে দলের ভেতর শেখ হাসিনার একনায়কসুলভ আচরণে মনোক্ষুন্ন নেতাদের দল- এই দুইয়ের সম্মিলিত ধাক্কায় নৌকা বেশ টালমাটাল। এর সাথে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মত আছে নানারকম কেলেঙ্কারির দায়ভার। সব মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও অন্য সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি চাপের মধ্যে আছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
ইতিমধ্যেই তার উপদেষ্টাদের দিল্লী-ওয়াশিংটন অভিমুখে ক্রমাগত দৌঁড়ঝাপ শোনা কথাকেই সত্যতা দিচ্ছে। মন্ত্রীসভার সম্প্রসারণ ও রদবদল আপাতদৃষ্টিতে সেই দলের ভেতর থেকে আসা চাপকে হালকা করারই একটা চেষ্ট মাত্র। কিন্তু এভাবে কি নৌকা বাঁচানো যাবে? তোফায়েল আহমেদ এবং রাশেদ খান মেনন মন্ত্রীত্ব প্রত্যাখান করে এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দিয়ে দিয়েছেন। আর তা হলো এই পদ্ধতিতে নৌকা বাঁচানোর চেষ্টাটা ঠিক এই মুহূর্তে আর কার্যকর হবে না, বড্ড দেরী হয়ে গেছে।
চেষ্টা করতে হবে অন্যভাবে। সেটা কী? রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন নৌকা বাঁচানোর একটাই উপায় আর তা হল -সমঝোতা। তাদের মতে সরকার বর্তমানে যেসব আঘাতে পর্যদুস্ত তার অনেকগুলোই আওয়ামী লীগ সভানেত্রী যেচে পড়ে নিজের কাধে এনেছেন। যেমন পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সাথে বাহাস। অনেক আগেই যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনকে সরিয়ে দিয়ে তিনি এই ইস্যুটিকে শেষ করে দিতে পারতেন। ড. মুহম্মদ ইউনুসের বেলায়ও একই কথা প্রযোজ্য। শেখ হাসিনা চাইলে গ্রামীন ব্যাংক নিয়ে অবশ্যই উইন-উইন একটা সমঝোতায় আসা যেত। সেক্ষেত্রে নির্বাচনের মাত্র এক বছর আগে তাকে বিদেশী চাপ কীভাবে সামাল দিতে হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হতো না। একইভাবে চৌদ্দদলীয় জোটের শরিক দলগুলোকে পাশ কাটিয়ে আওয়ামী লীগ এককভাবে দেশ পরিচালনা করায় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে যে আস্থাহীনতার নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে- সেটি থেকেও শেখ হাসিনা মুক্তি পেতে পারতেন যদি আরও আগেই শরিকদলের চাওয়া-পাওয়াগুলোকে তিনি আমলে নিতেন।
শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনেরা অনেক আগেই তাকে এসব ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন বলে কানাঘুষা শোনা যায়। তিনি সেসব কানে তোলেননি। বরং কাউকে পাত্তা না দিয়ে নিজের ইচ্ছামত নৌকার স্টিয়ারিং হুইল ঘুরিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি ভিন্ন। নৌকাডুবি ঠেকাতে খুব অল্প সময়ের ভেতর সরকারকে বড় কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই সামনের কয়েকটি মাস মাস সরকারের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনা নিজেও তা জানেন। এখন দেখার বিষয় হল নৌকাডুবি ঠেকাতে সল্পসময়ের ভেতর তিনি কতোটা কৌশলী ভূমিকা রাখতে পারেন।
শেখ হাসিনাকে যারা চেনেন তাদের মতে, একমাত্র বিপদে পড়লেই তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। একারণেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পরবর্তী ছন্নছাড়া আওয়ামী লীগ সমস্ত ঝড়ঝঞ্জা কাটিয়ে এখনো বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি। ১/১১ র দুর্দিনেও তার সঠিক সিদ্ধান্তের কারণে দল এখন ক্ষমতায়। কৌশলী সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছেন, যা রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগকে বলিষ্ঠ করেছে। তবে ৯৬ মত এবারও যদি নৌকা ডুবে যায় তবে আওয়ামী লীগের অস্তিত্বে টান পড়তে পারে। যুদ্ধাপরাধীরা প্রতিশোধের নেশায় মুখিয়ে আছে। নৌকা ডুবলে রক্ষা নাই- এমন পরিস্থিতি শেখ হাসিনা কীভাবে উতরান, সবার মনযোগের কেন্দ্রবিন্দু এখন সেটাই।
১৬/০৯/২০১২
সিডনি, অস্ট্রেলিয়া।
মন্তব্য
ডুবন্ত নৌকা বাঁচানোর উপায় আছে কিন্তু সেপথে কি উনি হাঁটবেন?
সকালে দেশে আব্বার সাথে কথা বলছিলাম-- বলছিলাম আর ভাবছিলাম চার বছর আগের কথা। আওয়ামী লীগ এত্ত শক্তিশালী ম্যান্ডেট পেয়ে সরকার গঠন করলো--অনেকের মতো আমিও আশাবাদী হয়েছিলাম। বিশেষ করে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু দেখলাম কিভাবে একটা কার্যত বিরোধীদল শূন্য ফাঁকা মাঠে সরকার নিজের ব্যর্থতার ভারে নিজেরাই ডুবতে শুরু করলো। আগামী দিনের কথা ভেবে আমি শংকিত। বিশেষ করে দুই বৃহৎ দলের নৃতৃত্বের শূন্যতার কথা চিন্তা করে ভয় হয় দেশ ছাগলের তৃতীয় বাচ্চার কবলে পড়ে যায় কিনা। খালেদা মোটামুটি বসে গেছেন আর হাসিনার চেহারায় পরাজয়ের ছাপ দেখতে পাচ্ছি।
আমারও সেই ছাগলের তৃতীয় বাচ্চারই ভয়!শেখ হাসিনা যে কী করতে চাচ্ছেন, আল্লায়ই জানেন।
মূর্তালা রামাত
নৌকা এবার ডুবলে পুরো দেশ নিয়ে ডুববে, আর পরের ক্ষমতা যদি জামাতের হাতে যায় তাহলে কল্লা বাঁচানো দুষ্কর হয়ে দাঁড়াবে।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
মূর্তালা রামাত
জামাতেরে ভয় পাইনা, আমি ওদের চোখের সামনে হারতে দেখেছি, বহুবার: বাংলাদেশের নারী’দের হিসেবেই আনতে চাইনা আমরা, জামাত যদি সবকিছু দখল করেও নেয় তবুও হারবে, নারীদের প্রবল চেতনা অপশক্তির জন্য কত ভয়ংকর বিধ্বংসী হতে পারে তা আমি জাহাঙ্গীরনগরে দেখেছি বলেই আমি বিশ্বাস করি এ-দেশের মাটি প্রয়োজনে জামাত’কে উগড়ে দেবে, কিন্তু মেনে নেবেনা। বাজি হয়ে যাক!
আমার ভয় নব্য রাজাকারে, কতজনের লেজ বেরিয়েই গেছে এরি মধ্যে, আরো বেরুবে। জামাত নিজে করবেনা, করিয়ে নেবে। তবে একদিক দিয়ে ভালো, একটা এসপার-ওসপার না হলে আর হচ্ছেনা, যারা বেজন্মাদের আসল চেহারা দেখেনি তাদের বোধদয় ঘটা প্রয়োজন।
অরফিয়াস, কল্লা বাঁচানোর দরকার কি, সাথে করে কয়টাকে নিয়ে যাওয়া যাবে সেই চিন্তা করছি। জামাত’কে হারাতে হলে ওদের দিকে সোজা হেঁটে যেতে হয়, মাঝামাঝি কোন পথ নেই....
হ, ঠিক কথা তানিম ভাই, কয়টারে নিয়ে যাওয়া যায় সেটাই বিষয়।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
আমার ভয় নব্য রাজাকারে, কতজনের লেজ বেরিয়েই গেছে এরি মধ্যে, আরো বেরুবে। জামাত নিজে করবেনা, করিয়ে নেবে। তবে একদিক দিয়ে ভালো, একটা এসপার-ওসপার না হলে আর হচ্ছেনা, যারা বেজন্মাদের আসল চেহারা দেখেনি তাদের বোধদয় ঘটা প্রয়োজন।- সহমত।
তবে জামাতরে আন্ডার এস্টিমেট না করাই ভাল। তারা শক্তিমত্তার অনেক কিছুই তারা লোকচক্ষুর আড়ালে রাখে।
মূর্তালা রামাত
এক্কেবারে বুলসাই।
---------------------
আমার ফ্লিকার
সহমত।
মূর্তালা রামাত
সরকার নিজের জনপ্রিয়তা ফিরে পেতে যে কাজ গুলো করতে পারে তা হল-
১। এই ১৬ই ডিসেম্বরের মধ্যে না হলে ২৫শে মার্চ ২০১৩ এর মধ্যে কমপক্ষে এক জন যুদ্ধপরাধীকে ফাসিতে ঝুলানো। এইটা করতে পারলে জামাত শিবিরের সব লাফ ঝাপ চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। তারা বুঝে যাবে তাদের দিন শেষ।
২। বিএনপি আসলে যুদ্ধপরাধীদের জেল থেকে বের হতে সময় লাগবে তিন দিন। ৪র্থ দিনে তারা মন্ত্রীত্ব পাবে। এইরকম কিছু একটা মুখস্ত বুলির মত আওড়াতে হবে। এই প্রশ্ন টা মিডিয়ায় ছেড়ে দিলে আর টক শো র টপিক করলে, মির্জা ফখরুল আর খালেদার মুখ থেকে কিছু একটা বের হবে, যদি সেইটা নেগেটিভ হয় তাহলে নৌকা বাতাসে তীরের বেগে ছুটবে আর পসিটিভ হলে জামাত বিএনপির মধ্যে রিলেশনশিপ এত খারাপ পর্যায়ে নামবে যে বিএনপি জামাত নির্বাচনের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত সেই ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে ব্যস্ত থাকবে।
৩। তারেক আর কোকোর মামলা ঝুলিয়ে দিতে হবে টোপ আকারে। খালেদার সবচেয়ে দুর্বল জায়গা সেইটাই।
৪। ইউনুসের সাথে ইন্টার্নাল সমঝোতায় যেতে হবে। যেটা বাইরে থেকে কেউ জানবে না। জানলে সরকারের হার দেখবে সবাই , সেইটা কাম্য নয়।
৫। লোক দেখানো হলেও, কয়েকটা দুর্নীতি বাজকে ধরে সেন্ট্রাল জেলে পুরতে হবে। দরকার হলে তাদের ভিআইপি সমাদরে রাখতে হবে, বোঝাতে হবে ২০১৪ র নির্বাচন পর্যন্ত ওইখানে থাক, এরপরে বের করে আবার পদ ফিরায় দিব।
৬। পদ্মা সেতুর টাকা ছাড়ের ব্যাবস্থা করতে হবে।
৭। সরকারের মধ্যে মাত্র একজনকে মুখপাত্রের দায়িত্ব দিতে হবে, যে সবার হয়ে কথা বলবে। সেই একজন অবশ্যই হাসিনা, তোফায়েল, আশরাফ নয়। কাদেরকে দিলে ভাল হয়। তার মুখের কথা জনগন বিশ্বাস করে।
৮। বাম দেরকে কোন ছাড় নয় এই পদ্ধতিতে আগাতে হবে। কারন ছাত্রলীগের এক জেলার কর্মী সমান জাপাছাড়া ১২ দলের পুরো দেশের সমর্থন। তাই তাদের কথায় কান দিয়ে নিজের দলে কোর উত্তেজিত করে লাভ নাই। এতে হিতে বিপিরীত হবে।
৯। এরশাদকে আবারো টোপ দিয়ে নিজের দিকে নিয়ে আসা, যা এর আগে কমপক্ষে তিনবার লীগ করেছিল।
১০। উপরের কাজ গুলো করার পরে আত্মবিশ্বাসের সাথে বিএনপি কে মোকাবিলা করে। সব জায়গায় লীগ ডুবসে বলে একটা রব উঠেছে। এই ধরনের কথা বার্তা দলের ক্ষতি করে। সব জায়গায় একটা হতাশার বার্তা পৌছায় দেয়। এইগুলো দলের জন্য ক্ষতিকারক।
এই ১৬ই ডিসেম্বরের মধ্যে না হলে ২৫শে মার্চ ২০১৩ এর মধ্যে কমপক্ষে এক জন যুদ্ধপরাধীকে ফাসিতে ঝুলানো। এইটা করতে পারলে জামাত শিবিরের সব লাফ ঝাপ চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। তারা বুঝে যাবে তাদের দিন শেষ।
এই বক্তব্যের সাথে দ্বি-মত। তাদের দিন শেষ কোন রাজনৈতিক দল দিয়ে হবেনা, তাদের শেষ দিন আসবে যেদিন আমি, আপনি, আমরা রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে নিজেদের খুঁজে নেবো -- বেজন্মাদের বিচার কোন রাজনৈতিক ইস্যূ নয়, এটা আগে ব্যক্তিগত লড়াই, তারপর পারিবারিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক। ইতিহাস’কে রাজনীতির আওতায় নিয়ে এসে বেহুদা সময় নষ্ট করার যে প্রয়াস তাতে পর্দার আড়ালের কুশীলব যারা তারা কিন্তু এখন পর্যন্ত সফল।
চোখ-কান খোলা রাখা খুব দরকার, শিবির সব সময় সবচাইতে ভালো বন্ধুদের মাঝে থাকে, সবচাইতে নিরীহ-ভীতু (রক্ত দেখলে ফিট হয়ে যায়! সত্যি বলছি, শালাদের অভিনয়!!), কিংবা সবচাইতে প্রগতিশীল, ব্যাপক মাতাল --- এরা আজীব জিনিস, রোবট। একটু সময় লাগে কিন্তু চেনা যায়, চিনলেই দিন শেষ হবে।
সম্পূর্ণ সহমত।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
তানিম এহসান,
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
এদের চামড়া ভয়াবহ রকম মোটা। যত ইচ্ছা গালি দিবেন তাও দেখবেন চুপচাপ বসে আছে কোনো কথা না বলে।
---------------------
আমার ফ্লিকার
সহমত।
মূর্তালা রামাত
প্রান্তিক রহমান,
এ তো দেখি পুরো 'মাফিয়া' পরিকল্পনা! দলবাজি না করে দেশ আর মানুষের চিন্তা করতে কবে শিখবো আমরা? মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের দাম এতোই কম?
ইফতেখার রনি
বেশির ভাগটাই পড়তে পারলাম না। লেখা এলোমেলো দেখাচ্ছে।
মূর্তালা রামাত
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-09-15/news/289629
'মুজিব ভাই' বই বের করেও শেখ হাসিনার বাকা কথা এড়াতে পারলেন না মূসা ভাই
মূর্তালা রামাত
ইউনূস ইস্যুটা গুরুত্বপূর্ণ কেন?
সুশীলদের মন্তব্যের ইম্প্যাক্ট যদিও ভোটের রাজনীতিতে জিরো। তবু ওই লোক চিটাগাং এর লোকালদের মধ্যে ফ্যাক্টর হতে পারে। তার কাজে বা নামের ভারে কিছু না কিছু কাটতে পারে বলে বিশ্বাস। যদিও আমার কমেন্টও সুশীলীও।
ইউনূসের সাথে সমঝোতাটা আসলে কেমন হতে পারে বলে এই চট্টলাবাসীরা মনে করেন?
তার নামে আর কোন নেগেটিভ বিবৃতি না দেয়াটাই ভাল হবে মনে করি। তবে এ বিষয়ে আমার ধারনা যতসামান্য। চিটাগাং এ ১৬ বছর থাকার সুবাদে ওই জায়গার চা, রিকশাওয়ালা, দুধ ওয়ালা শ্রেনীর(আমার যোগ্যতা ওই পর্যন্ত) লোকজনদের সাথে বেশি মেলা মেশা হয়েছে। তাদের কাছে ইউনুস বিরাট কিছু। ইউনুস বিশাল কোন কিছু অর্জন করেছেন যেটা চিটাগাং এর মানুষের জন্য সন্মান বয়ে এনেছে। এটাই তাদের মূল বক্তব্য। আমি পটিয়া, আনোয়ারা, রাঙ্গুনিয়া, রাঙ্গাদিয়া এলাকার মানুষের কথা বলতে পারি যারা খালেদা আসলে ইলিশের মূল্য ২৫০টাকা কেজিতে নামবে বলে বিশ্বাস করে, আর কোরিয়ান ইপিজেড এর মানে হল বাংলাদেশের জায়গা কোরিয়াকে লিখে দেয়া হয়েছে।
আমি সিডনিতে চিটাগাঙ্গের মানুষের সাথে কথা বলে এর কোন ব্যতিক্রম পাই নাই। তবে অবশ্যই ব্যতিক্রম আছে বলে বিশ্বাস। তবে সেটা সংখ্যায় নগন্য।
সমঝোতা বলতে তারা যেটা বিশ্বাস করে সেটা হল ইউনুসকে নিয়ে কাদা ছোড়া ছুড়ি বন্ধ হোক। সে যেটা চায়, মানে গ্রামীন ব্যাঙ্কের এমডি,সেইটা দিয়ে দেয়া হোক। এর বেশি কিছু তারা চায় না।
ইউনূস সাহেব তিন দশক একটা রাষ্ট্রীয় সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। বিধি ভেঙে এগারো বছর অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন তিনি ময়দানে বলে বেড়াচ্ছেন এটা আসলে গরিব নারীর মালিকানাধীন ব্যাঙ্ক। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে আজ গরিব লোকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বলে কেউ দাবি করলে সবাই হেহে করে হাসতো। কিন্তু ইউনূসের কথা সবাই হুবহু প্রতিধ্বনিত করছে।
এখানে দুইটা সিনারিও আছে। এক, ইউনূস বোকা, তিনি জানেন না যে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক রাষ্ট্রীয় সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। দুই, ইউনূস মিথ্যা বলছেন।
চট্টলাবাসী কি বোকা ইউনূসকে সমর্থন করছেন নাকি মিথ্যাবাদী ইউনূসকে?
চট্টলাবাসী আসলে চিটাগুনিয়ান ইউনুসকে সমর্থন করে। ইউনুসের বাড়ি ফেনীতে হলে তার দু পয়সা দাম দিত বলে মনে হয় না। চিটাগাঙ্গের মানুষের কাছে সেই এলাকার মানুষের দাম অনেক, সে ভাল কিংবা খারাপ সেইটা নিয়ে মাথাব্যাথা খুব একটা নাই।
(আপনার আর কোন মন্তব্যের জবাব আমি দিব না । কারন আপনার মন্তব্যের জবাব দেয়ার আগে প্রচুর পড়াশোনা করা লাগে আর ইনফরমেশান ঘাটাঘাটি করা লাগে । এতক্ষন ধরে নির্বাচন কমিশনের প্রার্থীদের হলফনামা ঘাটাঘাটি করে উপরের এক লাইন লেখা লাগছে যে চিটাগাঙ্গের মানুষজন চিটাগানঙ্গের বাইরের কাউকে কখনো ভোট দিসে নাকি। সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে এরপরে এক লাইন লিখসি। )
দেখা যাবে সরকার ইউনূসের ভিটামাটিকে গোপালগঞ্জ জেলার চট্টগ্রাম শাখা ঘোষণা করেছে।
শেখ হাসিনা যদি এই কাজটা করে তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নাই। করতেও পারে। এই সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হল সমালোচনা গ্রাহ্য করা। বিএনপি কারো কথায় কান না দিয়ে ধানাই পানাই করে বেড়ায়, আর আওয়ামী লীগ ধানাই পানাই করবে আবার সমালোচনা গ্রাহ্য করবে, বাংলাদেশের মত জায়গায় এই দুই জিনিশ একসাথে চলে না।
পরেরবার নৌকা আসলে কি দেশের কোন উন্নতি হবে?
তবে, একটা ভবিষ্যত বাণী করতে পারি, নৌকা পরেরবার আসলে ''রাষ্ট্র কর্তৃক পোষা একটা বেসামরিক বাহিনীর'' হাতে দেশের মানুষ ভয়াবহভাবে জিম্মি হবে।
আর, চারদল আসলে যুদ্ধাপরাধীরা ছাড়া পাবে এবং বাংলাদেশ উগ্র মুসলিম রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে।
কিন্তু কথা হল যেই আসুক না কেন, দেশের কি হবে?
লীগ, বিএনপি, জাপা, বাম, ডান, মধ্য, মুসলিম দলগুলো-এরা কেউই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য উপযুক্ত নয় বরং প্রত্যেকে দেশের জন্য ক্ষতিকর।
আমাদের দেশে একটা চতুর্থ কলাম দরকার।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
হওয়ার কি কিছু বাকি ছিলো আগের বারে? তুমি কি এইটা আশংকা করলা, সন্দেহ আছে কি? আমার তো মনে হয় এটাই হবে।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
হতে পারে বলার কারণ হল, উগ্র মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্টা করতে চাইলে জলপাইদের হস্তক্ষেপ করার সম্ভাবনা আছে। জলপাইদের মাঝে প্রচুর নিমমোল্লা থাকলেও আয়েসী জীবন ত্যাগ করতে চাইবে না এরকম জলপাইয়ের সংখ্যাও কম নয়।
উগ্র মুসলিম রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া হতে বাঁচতে গেলে কওমী মাদ্রাসা-জামাত-ইসলামী ঐক্যজোট-ইশা জাতীয় উগ্র ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করতে হবে। হিজবুত তাহরীর একটা থ্রেট হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে, এদেরও মূল উৎপাটন করা দরকার।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
চতুর্থ কলাম কে বা কারা?
প্রচলিত ডান-বাম-মধ্যপন্থী দলগুলো দিয়ে বাংলাদেশের উন্নতি সম্ভব নয়। এই তিন ধরণের প্রচলিত দল আনরিপেয়ারেবল পর্যায়ের অবস্থায় চলে গেছে। এদের সংস্কারমূলক কার্যক্রমে ভরসা করাটা বোকামী। সুতরাং, প্রয়োজন চর্তুথ একটি রাজনৈতিক শক্তি।
এখন পর্যন্ত এরকম কেউ আসেনি। সময়ের প্রয়োজনে সবকিছু হয়। সময়ের প্রয়োজনে চতুর্থ কলামের আর্বিভাব যে হবে না, সেটাই বা কে বলতে পারে?
কামাল পাশার মত রিফর্মরা কিন্তু সময়ের প্রয়োজনেই আর্বিভূত হয়েছেন।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
কামাল আতাতুর্ক হচ্ছে একটা উন্মাদ, খুনী, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকামীদের হাত থেকে ক্ষমতা লুণ্ঠনকারী একনায়ক। ঐতিহ্যবাহী লিখন পদ্ধতিকে পালটে রোমান হরফ করলে, ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরা নিষিদ্ধ করে ইউরোপীয় পোশাক পরতে বাধ্য করলে, মোল্লাতন্ত্র বিলুপ্তির নামে সর্বস্তরে জলপাই বাহিনীকে বসিয়ে দিলেই রিফরমেশন হয় না। আতাতুর্ক পরবর্তী তুরস্কের ইতিহাস আর বর্তমানের তুরস্কের রাজনৈতিক অবস্থা সাবধানে খেয়াল করুন তাহলে মহামহিমের করা রিফরমেশনের আফটারম্যাথটাও বুঝতে পারবেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
শতভাগ একমত। আমি সিডনীতে অনেক তুর্কির সাথে কথা বলে দেখেছি, কামালের প্রতি তাদের কোন শ্রদ্ধা নেই।
মূর্তালা রামাত
লীগ, বিএনপি, জাপা, বাম, ডান, মধ্য, মুসলিম দলগুলো পছন্দ না হলে গণতান্ত্রিক কাঠামোতেই তো ভিন্ন রাজনীতি করার সুযোগ আছে। শর্টকাট পথ নেওয়া কেনো?
দুর্দান্ত লিখেছেন ভাইয়া। গত নির্বাচনে বিশাল ম্যান্ডেট পেয়েও ব্যাক্তিগত আক্রোশ, অন্ধ অনুগতদের তোষণ করতে গিয়ে নিজ দল ও জোটে যে অসন্তোষ তৈরি করেছেন তা সত্যিই অনভিপ্রেত।
যুদ্ধপরাধীদের বিচারে আরও গতি সঞ্চার করার প্রয়োজন ছিল। জনগণ জানে একমাত্র আওয়ামীলীগই এই বিচারকাজ করার জন্য নির্ভরযোগ্য, কিন্তু এই বিচার কখন শেষ হবে এটা নিয়ে অনেকেই হতাশ। শেষে না আবার ভিশন ২০-২১ এর মধ্যে পড়ে না যায় !
সরকারের প্রথমভাগেই বিডিআর ক্যু যেভাবে তিনি সামলেছেন, এই সরকারের পারফর্মেন্স আরও অনেক গুন ভাল হতে পারত সন্দেহ নেই।
ভাল বলেছেন।
মূর্তালা রামাত
উপরে আলোচনা পইড়া আমার মত মূর্খ যা বুঝলো:
সম্ভাব্য ঘটনা দুইটা:
১) আওয়ামী লীগ আসবে: হলমার্ক+পদ্মা সেতু+শেয়ার বাজার+কুইক রেন্টাল+অর্থব অর্থমন্ত্রীর পুনরাবৃত্তি
২) বি.এন.পি বা বৃহত্তর জামাত জয়লাভ: দুর্ণীতি+উগ্র ইসলামীকরন+রাজাকারের গাড়িতে পতাকা+তারেক ভাইয়া
অতি ক্ষীন সম্ভবনা:
৩) তৃতীয়/চতুর্থ শক্তি (যদি ও দুর্বলতা বলা উচিত)+লেফট রাইট+ ই. ইউ এবং ইউ.এস.এ-এর গনতন্ত্রের আগ্রাসন: ইহার চেয়ে দেশ সের দরে ভুটানের কাছ বিক্রি কইরা দেয়া আর্থিকভাবে লাভজনক
সুতরাং সিদ্ধান্ত: অস্ট্রেলিয়াতে মাইগ্রেশন নিয়া দৌড়-ঝাপ শুরু করতে হবে। পাকনামি কইরা কানাডারটা মিস করসি আর না।
দিনে দিনে দেখলাম কানাডার ইমিগ্রেশন কিভাবে কঠিন থেকে প্রায় অসম্ভব হয়ে গেল।
হা হা
মূর্তালা রামাত
নতুন মন্তব্য করুন