http://www.sachalayatan.com/mustafiz/19925
http://www.sachalayatan.com/mustafiz/19895
আমরা ফিরছি হোটেলে, সবাই পরিশ্রান্ত, ঠান্ডা পানিতে গোসল আশা করি ভালোই লাগবে, ঠান্ডাযে কত ঠান্ডা হতে পারে টের পেলাম কল ছেড়ে। কিছুক্ষণ হাত পানিতে ভিজিয়ে রাখলে হাত ব্যথা করতে থাকে, অগত্যা গীজারই সম্বল। শেভ করে, গোসল সেরে খেয়ে নিলাম। শরীর আর চলেনা। সঙ্গীদের গঙ্গামায়া পাঠিয়ে শুয়ে ছিলাম কিছুক্ষণ, মনটা ভালো নেই।
আগেই বলেছি এবারে দার্জিলিং যাবার উদ্দেশ্য সবার দার্জিলিং ঘোরা শেষ হলে বাসে তুলে দিয়ে সেখান থেকে আমি লাভা, ললিগাও, ঋষপ, পেডং ঘুরে আসবো, কিন্ত খরচের বোঝা বেড়ে যাওয়ায় সিদ্ধান্ত পাল্টিয়েছি। সংগী ছবিয়ালদের বাজেট ট্যুর, এরপর খরচ দ্বিগুনের বেশী হয়ে যাওয়ায় টানাটানি অবস্থা। সবার মন খারাপ দেখে বলেছি চিন্তা না করতে, অতিরিক্ত যা লাগে আমি দেব, তোমাদের দার্জিলিং বেড়ানো নিয়ে চিন্তা করতে হবেনা।
গঙ্গামায়া, রকগার্ডেন... এসব জায়গা এতবার গিয়েছি নূতন করে যাবার আগ্রহ বোধ করলামনা। এরচাইতে মলে যেয়ে বসে থাকা ভালো। গুর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুং এর নির্দেশে পাহাড়ের সব লোক এই একমাস নুতন কাপড় পড়বে, মেয়েদের জন্য ঢাকাই প্রিন্টের কাপড় আর ছেলেদের স্থানীয় পোষাক। নূতন কাপড় পড়া হাসি খুশী মানুষ দেখতে ভালোই লাগে। পরবর্তী দুদিন আক্ষরিক অর্থে সারাবেলা মলে বসে ছিলাম, সাতশর মত ছবি তুলেছি বসে বসে, শুধুমাত্র ফিরে আসারদিন ভোরে টাইগারহিল গিয়েছিলাম। আমার তোলা সেসব ছবি থেকে বেছে বেছে কিছু সবার জন্য দিলাম, আশা করি ভালো লাগবে।
সুনীমা ডোমা ওয়াংচুক।
২৪ বছরের মেয়েটি পার্থে থাকে, অস্ট্রেলীয়ান নাগরিকত্ব নিয়ে আছে। বাবা নেপালী আর মা কার্সিয়াং এর, চেহারায় পাহাড়ের ছাপ কম বলাতে জানলাম ওর নানা ছিলেন বাঙ্গালী, ব্যবসার খাতিরে পাহাড়ে আসতেন এবং এখানেই ওর মায়ের সাথে পরিচয়, পড়ে বিয়ে করে কার্সিয়াং এ স্থায়ী হয়েছিলেন। এবারে উত্সবকে কেন্দ্র করে দার্জিলিং আসা এবং এটাই প্রথম। বিকেলে যখন মলের বেঞ্চে বসেছিলাম খালি পেয়ে পাশে বসেছিলো, তখনই আলাপ। পরে আবার দেখা হয়েছিল সকালের ঘুরে আসা রাস্তায়, ছবিটা তুলেছি তখন।
নীচের মহিলাটির জন্ম তিব্বতে।
আমাকে পাশ কাটিয়ে যাবার সময় ছবি তুলেছিলাম, বয়স আশির কাছাকাছি, খুব দ্রুত হাঁটতে পারেন, ছবি তুলেছি টের পেয়ে আমার দিকে ঘুরে হাই বললেন, ততক্ষণে এগিয়ে গেছেন আমাকে ছেড়ে, ক্যামেরা চোখ থেকে নামেনি আমার, আবারো ক্লিক, অসম্ভব সুন্দর হাসিটা দেখুন। তাল মিলাতে দৌড়ে যেয়ে ধরলাম, হাঁটতে হাঁটতে শুনলাম উনার বয়স যখন ত্রিশের কাছাকাছি সেসময় সেই ১৯৫৪ সালে তিব্বত থেকে দার্জিলিং আসেন, এখন এখানকার তিব্বতি স্কুলের শিক্ষক। নাম বলেছিলেন, মনে করতে পারছিনা।
এ মেয়েটির নাম সিরিল
হিমালয়ান মাউন্টেনারিং ইন্সটিটিউটের ভেতর কাফেটেরিয়া আছে একটা। সেই কাফেটেরিয়ার মালকিনের আট বছরের হাসিখুশী প্রানবন্ত মেয়ে সিরিল। ওকে প্রথম যখন দেখি ওর বয়স তখন পাঁচ বছর, আমার ছেলে মাতিসের সমবয়সী, সেবারে ঐ কাফেটেরিয়াতে কফি খাবার সময় বাইরের চত্বরে দুজনে অনেক দৌঁড়াদৌঁড়ি করেছিলো। এবারে দেখলাম কাফেটেরিয়ার বাইরে ফিল্ম, ঠান্ডা পানীয় বিক্রীর কাউন্টারে বসে আছে, স্কুল ছুটির অবসরে মাকে সাহায্য করতে। সন্ধ্যায় আবার দেখেছি মলে বেলুন নিয়ে খেলা করতে।
নীচের ছবির উনাকে তুলেছি দূর থেকে।
মলের এমাথা থেকে ওমাথা হাটঁছিলেন, দুহাত পেছনে দিয়ে মাথা নীচু সারাক্ষণ, গভীর ভাবে কি যেনো ভাবছিলেন, জানা হয়নি। তবে ক্যামেরার চোখ আকৃষ্ট করার জন্য যথেষ্ট।
মন্তব্য
নাহ, বায়োডাটা বানানোর সময় আসলে আপনাকে দিয়ে পোর্ট্রেট তোলাতে হবে। দ্বিতীয় ছবিটা অসাধারণ লেগেছে।
ধন্যবাদ
(আমি কিন্তু পাম দিলে ফুলি)
...........................
Every Picture Tells a Story
অসাধারণ !!
প্রথম ছবির এই ভদ্র মহিলা কি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ? কোন তথ্য এই ব্যাপারে
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
আমিতো 'সবজান্তা' না রে ভাই
দেখেন না ক্যাপশনের বানান ভুল করসি কিন্তু ঠিক করতে পারিনা। মডু'রা কেউ যদি দয়া করে
...........................
Every Picture Tells a Story
পার্থনিবাসীর ছবিটা অসামান্য ... দেখেই প্রেম পড়ে যাওয়ার মত ...
বাকি ছবিগুলিও দারূণ ...
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...
আপনার দূর্ভাগ্য সে বাংলা পড়তে জানেনা। কিন্তু অনলাইনে আছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
দ্বিতীয় ছবিটা আসলেই অসাধারণ!
আপনার তোলা ছবিগুলো এত্তো জীবন্ত- যেন কথা বলে!
দার্জিলিং যাবার আগে একটা লেন্স কিনেছিলাম, ক্যাননের ভালো লেন্স গুলোর অন্যতম (Canon EF 70-200mm f/2.8 L USM ), লেন্সটা যে কত ভালো ছবি তুলে বুঝলাম
...........................
Every Picture Tells a Story
সুনীমার সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হলাম।
মোটেও বিশ্বাস করতে চাচ্ছি না এ ছবি ক্যামেরার কারসাজি, ক্যামেরাম্যানের বাহাদুরি
ধন্যবাদ
...........................
Every Picture Tells a Story
বৃদ্ধার ছবিটি অসাধারণ হয়েছে। হাসিটা আসলেই স্বর্গীয়।
আমিও তাই মনে করি
...........................
Every Picture Tells a Story
অসাধারন সব ছবি।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
ধন্যবাদ
...........................
Every Picture Tells a Story
সুনীমার ছবি দেখে তো সুনামী হয়ে যাচ্ছে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ইশ্, ইংরেজীতে মন্তব্য করলে তো মেয়েটা বুঝতেপারতো
...........................
Every Picture Tells a Story
কোন মডু ভাই দয়া করে ঐটা ঠিক করে দিয়েন, কথাটা আসলে হবে
"জানলাম ওর নানা ছিলেন বাঙ্গালী, ব্যবসার খাতিরে পাহাড়ে আসতেন এবং এখানেই ওর নানুর সাথে পরিচয়, পড়ে বিয়ে করে কার্সিয়াং এ স্থায়ী হয়েছিলেন।"
...........................
Every Picture Tells a Story
এখন ওকে বাংলা শেখান। নানা না হলেও তো নানার দেশের মানুষ আপনি
তারপর আমার নাম দিয়ে নজুদার কমেন্টটা বলে দ্যান - "সুনীমার ছবি দেখে তো সুনামী হয়ে যাচ্ছে"
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
দার্জিলিং এখনো আমার শরীরে শিহরন জাগায়।
লেখা ছবি দুটোই ভালো হচ্ছে মুস্তাফিজ ভাই।
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
ক্যামেরা কথা বলছে নাকি মুস্তাফিজ ভাইয়ের চোখ, হাত কথা বলছে?
দুটোই
...........................
Every Picture Tells a Story
"সংগী ছবিয়ালদের বাজেট ট্যুর, এরপর খরচ দ্বিগুনের বেশী হয়ে যাওয়ায় টানাটানি অবস্থা। সবার মন খারাপ দেখে বলেছি চিন্তা না করতে, অতিরিক্ত যা লাগে আমি দেব, তোমাদের দার্জিলিং বেড়ানো নিয়ে চিন্তা করতে হবেনা।"
পরেরবার যাবার সময় আমাকে নিয়ে যান দয়া করে। আমার কখনো বাজেট বলে কিছু হয়না।
সুন্দর ছবিলেখা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
চলেন, মার্চে যাবো
...........................
Every Picture Tells a Story
ভাইয়া আপনি অতিরিক্ত টাকা দেন। রানা মেহেরের সাথে আমাকেও কি নেওয়া যায়না??
=============================
...........................
Every Picture Tells a Story
এইটা কি মৌনতাই সম্মতির লক্ষণ বলে ধরে নেবো?
=============================
নতুন মন্তব্য করুন