ছবিতে কোন একটা ভ্রমনের বিবরন দিতে গেলে পোস্টের আকার অনেক বড় হয়ে যায়। আমাদের মতন অভাগা কানেকশন দিয়ে তাই মজাটা ঠিক ধরে নেয়া যায় না। একারনেই দ্বিতীয়দিনের ছবিগুলো দুইভাগে পোস্ট করলাম। এখন দেখবেন দ্বিতীয় ভাগ।
সুন্দরবনের নৈসর্গিক দৃশ্য কমবেশী সব জায়গায় একই রকম, কটকায় ছবি তুলে যদি বলেন বুড়িগোয়ালীনীতে তুলেছেন তাতে আমাদের মত নবিস চোখে সত্যতা যাচাইয়ের উপায় নেই।
ছবি-১
নীচের ছবিটা একজন জেলের, বড়শী দিয়ে মাছ ধরে। ছিপ দেয়া বড়শী নয়, সুতার মাথায় বাঁধা বড়শীতে ছোট মাছের টোপ, তেমন শ’খানিক বড়শী বড় আরেকটা সুতায় বাঁধা, সেই সুতা খাঁড়ির পাড় ঘেষে ঝুলিয়ে দেয়া হয়, বড়শী ঝুলাতে ঝুলাতে কয়েক মাইল চলে যায় ওরা। ভোর বেলা আবার ঘুরে এসে বড়শী তুলে নেয়। নৌকার খোলে বরফ দেয়া, তাতে ধরে আনা মাছ জমে থাকে দিনের পর দিন।
ছবি-২
গোল পাতার ছাউনি দেয়া নৌকাতেই তাদের বসত, রান্না,থাকা খাওয়া, ঘুমানো সব ছোট্ট এই নৌকাতেই
দ্বিতীয়দিন আকাশ ছিলো মেঘলা, ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত চলছিলো। আমরা মাঝারী এক নদীর পাশ দিয়ে যাচ্ছি তখন বৃষ্টি এলো, হঠাৎ করেই খুব জোরে, সাথে বাতাস, ছোট্ট নৌকার হাল তাতে ধরে রাখা কঠিন, মরা কাগার খালের মুখে নৌকা বৃষ্টি থামার অপেক্ষায় যাবার আগেই কয়েকটা ছবি তুলেছিলাম, ছবি ৩ আর ৪ সেই বৃষ্টির ছবি।
ছবি-৫, নৌকা যখন মরাকাগার খালে দাঁড়িয়ে আছে সে সময় আমি আর লিলেন দা ছাড়া বাইরে কেউ নেই, এমনকি নৌকার লোকজনও সব ভেতরে, হঠাৎ কি মনে করে পানিতে নেমে গেলাম, খুব ইচ্ছা হচ্ছিলো পানির লেবেল থেকে ওয়াইডে পুরো বন টাকে ধরার, নীচ থেকে হাত বাড়িয়ে ক্যামেরা নিলাম, ব্যালেন্সিং এর সমস্যা হচ্ছিলো, এছাড়া বৃষ্টিতে চশমার ভিজে যাচ্ছিলো বলে ঠিকমত তুলতে পারিনাই
ছবি ৬-৭, আমি এরপর লিলেনদা নিঃশব্দে নেমে গেলেও একটু পর সবাই টের পেয়ে যায়, সাথে সাথে দুজন গার্ড লুঙ্গী পড়েই রাইফেল হাতে পানিতে ঝাঁপ দেয় আমাদের জন্য, ওদের দেখাদেখি সাহস পেয়ে প্রায় সবাই এই ঝুম বৃষ্টিতে সুন্দরবনের মাটিতে। ছবি দুটো নজরুল ভায়ের তোলা
ছবি-৮,৯, হিরনপয়েন্টে ঢোকার ঠিক আগের খাঁড়ির দু’পাশ অসম্ভব সুন্দর দেখতে, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি তেমন সময় খেয়াল করলাম দুটো বিশাল সাইজের বক উড়ে যাচ্ছে, ছবি তুলে ঘুরতেই দেখি পাশে হরিন, একটু পর বুঝতে পারলাম এমন দৃশ্য এখানে সর্বত্রই
ছবি ১০,১১। হিরনপয়েন্ট নাম কেন হয়েছে জানিনা, অন্যনাম নীলকমলই বরঞ্চ সুন্দর লাগে শুনতে। সুন্দরবনের শুধুমাত্র এ স্টেশনেই দেখলাম লোহার পন্টুন বাঁধা ঘাটে, স্টেশনে বিশাল দুটো পুকুর, একটি খাবার পানির জন্য সংরক্ষিত, পুকুর পাড় আর আশেপাশের ছোট রাস্তা ছাড়া বাকি সবই কর্দমাক্ত, তারই মাঝে অসংখ্য হরিনের পায়ের ছাপ, সারাদিনই আনাগোনা তাদের। জানা কথা হরিন থাকলে বাঘ থাকে। আমরা হেঁটে হেঁটে বনের ভেতর কিলোমিটার খানিক ভেতরে ঘাসের মাঠের মত একটা জায়গায় গিয়েছিলাম, কটকা বিচে যাবার সময় তেমন একটা মাঠ পেরিয়ে এসেছিলাম মনে আছে। আকাশ ততক্ষণে অন্ধকার হয়ে এসেছে, ছবি তাই কমই উঠেছে
ছবি-১২, সবশেষে বাইন ফলের ছবি, সুন্দরী, হেতাল, গড়ান, গেওয়া, গোলপাতার পাশাপাশি বাইন গাছও এখানকার অন্যতম
মন্তব্য
আলাদাভাবে বলবো বৃষ্টির ছবি দুইটার কথা ... অসামান্য
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
বৃষ্টির ভালো কিছু ছবি আছে, সময়পেলে ফ্লিকারে তুলে দিবো
...........................
Every Picture Tells a Story
চমৎকার!
ধন্যবাদ
...........................
Every Picture Tells a Story
সুন্দরবনে কাউয়া নাই?
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
আছে। ফরেস্ট অফিসের কাছাকাছি থাকে। তবে সুন্দরবনে কুকুর নেই।
...........................
Every Picture Tells a Story
৩, ৪, ৮, ৯
৬ আর ৭ দেইখা মন্টা খ্রাপ হইলো। একদিন আমিও...
বৃষ্টির ছবি দু'টি মন ছুঁয়ে গেল।
সুন্দরবনের পানিতে আপনাদের দাপাদাপি দেইখা ডরাইলাম, যদি কুমীরে ধরত!!
আমিও সেটাই ভাবছিলাম! বছর পনেরো আগে এসব জায়গায় যখন গিয়েছিলাম, আমাদের বারবার সাবধান করে দেয়া হচ্ছিলো পানি থেকে দূরে থাকার জন্য!
এসব দিনে কুমীর সাধারণত ঘুমিয়ে থাকে। তবে পানিতে ভয় কামট এর (কামট এক প্রজাতির হাঙ্গর)।
আমাদের গার্ড অবশ্য অন্যকারনে নেমেছিলো আমাদের সাথে। খাড়ী থেকে জঙ্গলে উঠার সময় কাদা ছিলো প্রচুর, হাঁটুর উপর পর্যন্ত, এছাড়া জঙ্গলেও কাদা ছিলো, কাদা মাটিতে আমাদের গতি স্লথ হলেও মামারা কিন্তু ঠিকই চলতে পারে, সেই মামাদের হাত থেকে রক্ষার জন্যই...
...........................
Every Picture Tells a Story
আপনার ছবিগুলো মনলোভা! বিশেষত: ৪ নম্বর ছবিটায় শাদাকালোর ছায়ারা
জব্বর আসছে।
ধন্যবাদ
...........................
Every Picture Tells a Story
ভিতুর ডিম নজু ভাই
পানিতে নামে নাই
বৃষ্টির ছবি দু'টো আসলেই অসাধারণ।
নাহ্ সুন্দরবন না গিয়া আর উপায় নাই।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
নজু ভাইকে ধিক্কার পানিতে না নামার জন্যে
বৃষ্টির ছবিগুলো অসাধারণ।
ধিক্কার জানানোটা অন্যায় হবে। না নামাতেই তো বোটে থেকে ছবি তুলতে পারছে।
তবে আরেকটা কথা ফেরার দিনও কিন্তু নেমেছিলাম আমরা, সেদিনও নজরুল ভাই নামেননি।
...........................
Every Picture Tells a Story
২ নম্বর ছবিতে ওরা কি খেতে বসেছে?
বৃষ্টির ছবিগুলো অদ্ভুত।
১০ নম্বর ছবিটা দেখলেই কেমন শান্তি শান্তি লাগছে।
শেষের ছবিতে বাইন ফলগুলো দেখতে অনেকটা কাঁচা আমের মতো লাগছে।
অতো ভিজেছেন আপনারা, কারো জ্বরটর হয়নি?
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
নাহ্ , যাদের মনে হচ্ছে খাচ্ছে আসলে ওরা কাজ করছে, বড়শীতে মাছ গেঁথে পাশাপাশি সাজিয়ে রাখছে, ১ নং ছবিতে দেখুন বোঝা যাবে।
বাইন ফলের ছবি দেখে আমারও তাই মনে হয়েছিলো।
সবাই কমবেশী ভিজেছে, তবে সবচাইতে বেশী মনে হয় আমি আর লিলেনদা। ভেজার কারনে আমাদের জ্বরটর আসেনি। তবে পেট খারাপ হয়েছিলো কমবেশী সবারই।
...........................
Every Picture Tells a Story
খেয়াল করেন ১০ নম্বরে একটা হরিন আছে, ছবি তোলার সময় খেয়াল করিনাই।
...........................
Every Picture Tells a Story
আমি দেখেছি।
আপনি তোলার সময় খেয়াল করেননি শুনে অবাক হলাম।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আমি দু'বার গিয়েছি সুন্দরবন, অনেক ছোটবেলায়। ফরেস্ট অফিসারদের লঞ্চে করে।
আবার যেতে চাই মুস্তাফিজ ভাই --- দ্বিতীয় বৃষ্টির ছবিটা একদম স্নো ফলের মতো এখানে আজ যা বৃষ্টি হচ্ছে এখন -- ---- ---
আপনি কবে আবার যাবেন, জানাবেন ---
যেতে তো চাইরে ভাই কিন্তু চারদিকে এত সমস্যা।
ভালো কথা আমাদের বাপ্পি ভাই ২০কেবিনের লঞ্চ নিচ্ছেন একটা, দেখি নভেম্বরের শেষদিকে পুরো লঞ্চ বুক দেয়া যায় কীনা।
...........................
Every Picture Tells a Story
আমি কিন্তু সব দেখতেসি, কিছু বলতেসিনা!
আমি কিন্তু সব বুঝতাসি, কিছু বলতেসিনা
...........................
Every Picture Tells a Story
ওয়াও!!!
...................................................................................................
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।
ম্যাঁও!!
...........................
Every Picture Tells a Story
হ
মাজায় দড়ি বেঁধে যে আপনারে প্রথমে পানিতে নামালাম আবার টেনে তুললাম সেই কথা বললেন না?
সেইটা তো লিখবে ৩টাকার কলম। ভালো কথা নট গুলা যে আমি শিখিয়েছি সেইটাও বলে দিয়েন
...........................
Every Picture Tells a Story
জটিল সব ছবি!
ধন্যবাদ
...........................
Every Picture Tells a Story
নভেম্বরের শেষ দিকে গেলে আমিও যেতে চাই।
আমি যদি যাই জানতে পারবেন আগে ভাগেই।
...........................
Every Picture Tells a Story
আফসোস!
দারুণ সব ছবি মুস্তাফিজ ভাই! মন উদাস করে দেওয়ার মতো...
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আপনার তো এখন এসব দেখে উদাস হবারই কথা
...........................
Every Picture Tells a Story
অসাধারণ! বৃষ্টির ছবি দেখে খুব লোভ হচ্ছে।
নৈশী।
ধন্যবাদ নৈশী,
এমন বৃষ্টিতে ভিজতে পারার মজাই আলাদা। একদিন এমন হয়েছে সবাই ভেতরে, আমি নৌকার গলুইয়ে দুপাশে পা ঝুলিয়ে বসে আছি, তর তর করে এগিয়ে যাচ্ছে নৌকা, বৃষ্টির শব্দে নৌকার ইঞ্জিনের শব্দও শোনা যায়না, আমি ভিজছি আর ভিজছি
...........................
Every Picture Tells a Story
আহহহহহহহহ।
ঐ বৃষ্টিতে ঝাপ্পুর ঝুপ্পুড় করতে ইচ্ছা করে! বকগুলো,ওহহহহ। হরিণটা! আহহহ।
কী ছবি! আহ।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ধন্যবাদ তুলিরেখা।
আশা করি একদিন তেমন বৃষ্টিতে ঝাপ্পুর ঝুপ্পুর করতে পারবেন।
...........................
Every Picture Tells a Story
কিভাবে যে এরা গেল........মন উদাস করা আর ঈর্শা উদ্বেগকারি দারুণ সব ছবি কিন্তু পানির বক গাছে উঠল কেমনে!
মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....
উড়াল দিয়ে।
...........................
Every Picture Tells a Story
দেখছেন... মুস্তাফিজ ভাই ছবি তুলতে পারে না, শেষ পর্যন্ত আমার ছবি ধার করতে হইলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আরো কয়টা ধার দ্যান
...........................
Every Picture Tells a Story
আরে খাসা সব ছবি - আরো দেন।
আসবে
...........................
Every Picture Tells a Story
সুন্দরবনের এত সুন্দর ছবি আগে দেখিনি! সুপার্ব!!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ধন্যবাদ নীড় সন্ধানী
...........................
Every Picture Tells a Story
শেষের থেকে তিন নম্বর ছবিটা অসাধারন।
বন্যা দুর্গতদের ছবিটাও তোফা।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
বন্যা দুর্গতদের জন্য ত্রানের ব্যবস্থা করেন
...........................
Every Picture Tells a Story
সবগুলো ছবিই মুহূ্র্তগুলোকে সুন্দরভাবে ধরতে পেরেছে। বৃষ্টির ছবিগুলো অসাধারণ।
বাল্যকালে সুন্দরবন গিয়েছিলাম বাবার সাথে। ঝাপসা ঝাপসা মনে আছে। এই ছবিগুলি সত্যই আবার সুন্দরবনে নিয়ে গেল। অনেক সুন্দর ছবি! পছনের পোস্টে রাখলাম।
........................................
......সবটুকু বুঝতে কে চায়!
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
ধন্যবাদ
...........................
Every Picture Tells a Story
আমি আলাদা ক'রে কোনোটার কথাই বলতে পারছি না। একটারে চে' আরেকটা ফাটাফাটি!
বস!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
ধন্যবাদ
...........................
Every Picture Tells a Story
নতুন মন্তব্য করুন