এর আগে জানিয়েছিলাম পাঁচ ঘন্টা ড্রাইভের পর অবশেষে পেনাং পৌঁছেছি। অরূপের গাড়িতে আমি, রিতা, মাতিস, অভিক আর অরূপ নিজে। পেনাং এ ঢুকে প্রথমেই যা করেছি তা হলো পরদিন স্নোরক্লিং এর টিকিট কনফার্ম করা। সেটা হয়ে গেলে রাজ্যের আলস্য আমাদের জড়িয়ে ধরে। আমি দেশে একটানা ১০ ঘন্টার উপর ড্রাইভ করলেও ক্লান্ত হইনি কখনও, কিন্তু এখানে পেছনে বসে থাকার অনভ্যস্ততায় অন্যরকম ...
এর আগে জানিয়েছিলাম পাঁচ ঘন্টা ড্রাইভের পর অবশেষে পেনাং পৌঁছেছি। অরূপের গাড়িতে আমি, রিতা, মাতিস, অভিক আর অরূপ নিজে। পেনাং এ ঢুকে প্রথমেই যা করেছি তা হলো পরদিন স্নোরক্লিং এর টিকিট কনফার্ম করা। সেটা হয়ে গেলে রাজ্যের আলস্য আমাদের জড়িয়ে ধরে। আমি দেশে একটানা ১০ ঘন্টার উপর ড্রাইভ করলেও ক্লান্ত হইনি কখনও, কিন্তু এখানে পেছনে বসে থাকার অনভ্যস্ততায় অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছিলো। গতবার তিওমেন যাবার সময় অনেকখানি রাস্তা আমার হাতে স্টিয়ারিং তুলে দিলেও এবারে অরূপ মহানন্দে গাড়ি চালাচ্ছিলো, আমিও কিছু বলি নি।
যাই হোক আসুন আবারো মূল গল্পে ফিরে যাই।
বালি হাই
সন্ধ্যা নামি নামি করছে। আকাশও মেঘলা, কয়েকটা গাড়ি ইতোমধ্যেই হেড লাইট জ্বালিয়ে দিয়েছে। ঠিক করলাম কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে ডিনার সেরেই হোটেলে উঠব। গাড়ি চললো গার্নি ড্রাইভের দিকে। ১৯৫১ সালে তৎকালীন বৃটিশ রাষ্ট্রদুত স্যার হেনরী গার্নিকে মালয় কম্যুউনিস্ট গেরিলারা এ রাস্তায় গুলি করে মেরেছিল। গুলির সময় সাথে থাকা স্ত্রী আর ড্রাইভারের জীবন বাঁচাতে উনি রোলস রয়েস থেকে নেমে যান এবং নিহত হন। মালয় কম্যুউনিস্ট পার্টির নেতা চিন পেং পরবর্তিতে জানিয়েছেন সেটা ছিলো একটা নিয়মিত টহলের ঘটনা এবং কয়েকদিন পর পত্রিকার খবরে তারা নিহতের পরিচয় জানতে পারেন।
অরূপ এর আগেও এদিকে এসেছে, সুতরাং রাস্তা খুঁজে পেতে সমস্যা হলো না। এ ফাঁকে চুপিচুপি একটা কথা জানিয়ে রাখি, আমাদের সচল মাশীদের জন্ম কিন্তু এই পেনাং-এ। জর্জটাউনে সাগরের পাড় ঘেঁষে চমৎকার রাস্তা গার্নি ড্রাইভ, একপাশে নিচু রেলিং এর ওপারে সমুদ্র অন্যপাশে বেশিরভাগই খাবারের দোকান, স্টেশনারি শপ, প্রচুর টুরিস্ট হেঁটে বেড়াচ্ছে সমুদ্রের পার ধরে, সময়টা ভাটার, রেলিং থেকে কিছুটা দূরে শান্ত সমুদ্র আস্তে আস্তে আরো দূরে নেমে যাচ্ছে, দুয়েকটা সামুদ্রিক পাখি ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছে তাতে। এপারের নিয়ন সাইনগুলো আস্তে আস্তে আলো ছড়াতে শুরু করলে আমরা এসে পৌঁছালাম চমৎকার রেস্টুরেন্ট “বালি হাই”এ। ঢোকার দরজায় বড় বড় লেখা “If it swims we have it”।
প্রায় ৫০০ জনের বসার ব্যবস্থা রাখা বিশাল এই রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায় না তেমন কোনো সামুদ্রিক প্রাণী নেই। আর আশ্চর্য যে সবই জীবন্ত! একপাশে বিশাল বিশাল ট্যাঙ্কে ভেসে বেড়াচ্ছে ৫/৬ কেজি ওজনের অস্ট্রেলিয়ান লবস্টার থেকে শুরু করে নানান জাতের মাছ আর কাঁকড়া, কাঁকড়ারও আছে প্রকারভেদ, আলাস্কান স্পাইডার থেকে শুরু করে ৮ কেজি ওজনের রাজ কাঁকড়াও দেখলাম। আঙুল তুলে দেখিয়ে দিলেই কিছুক্ষণ পরই খাবার টেবিলে চলে আসবে, চাইলে পাশে কাচ দিয়ে ঘেরা রান্নাঘরের ভেতরে রান্নাটাও দেখে নেয়া যায়।
আমরা বসেছিলাম মূল শেডের বাইরে রাস্তার দিকে ছোট ঝুপরির নিচে, এদিকটা খোলা, তাকালেই সমুদ্র, একটু পর আমাদের দৃষ্টি আটকে দিয়ে গাড়ি পার্ক করা শুরু হলো, খাওয়ায় মন দিলাম আমরা।
চমৎকার স্বাদের এক টেবিল ভরা খাবার শেষ করে আমাদের আর উঠতে ইচ্ছা করছিলো না, এমন সময় শুরু হলো আকাশ কাঁপিয়ে ঝড়বৃষ্টি। আমরাও আড্ডা আর বিশ্রামের সময় পেলাম। ঘন্টা খানিক পর বৃষ্টি ধরে এলে উঠলাম, তখনও হোটেল ঠিক করা হয় নি আমাদের।
বাটু ফিরিঙ্গি
মালয়েশিয়ান ভাষায় বাটু মানে পাথর, সে অর্থে জায়গাটার নাম ফিরিঙ্গিদের পাথর। পেনাং এর উত্তর-পুবে বাটু ফিরিঙ্গি এর সুন্দর বিচ আর রাতে বসা হকার মার্কেটের জন্য বিখ্যাত। অনেকগুলো সুন্দর হোটেল পাহাড়ের কোল বেয়ে প্রায় বিচের উপরে দাঁড়িয়ে আছে। জর্জটাউন থেকে বেশ আঁকাবাঁকা আর উঁচুনিচু রাস্তা ধরে এদিকে আসতে হয়। রাতে থাকার জন্য আমরা বেছে নিয়েছিলাম এখানকারই ডি'ফিরিঙ্গি হোটেল। পরদিন ভোরে আমাদের তুলে নেবার জায়গা এখানথেকে হাঁটা পথে পাঁচ মিনিট।
পরদিন ভোর ছয়টায় বাস ধরতে হবে, ডেকে তোলার দায়িত্ব আমি নিয়ে যার যার রুমে। চাবি ঘুরিয়ে ঢুকতেই অভ্যর্থনা জানালো বিশালাকায় ইঁদুর।
পুলাও পায়ার
ভোরে সঠিক সময়ে উঠার বাড়তি সতর্কতা হিসাবে হোটেল ম্যানেজারকে বলে রাখলেও ভোরে ঠিক সময়মতো উঠতে পেরেছিলাম সবাই। ডাকতে এসে যদি ফিরে যাই সেজন্য দরজা খোলা রেখেই ঘুমিয়েছে অভিকরা। হাতমুখ ধুয়ে বাসের অপেক্ষায় হলিডে ইনের লবিতে পাঁচ মিনিট আগেই আসতে পেরেছি। বাসও এলো সময়মতো, আমরাও উঠে বসলাম, গাইড এসে সবার হাতে প্লাস্টিকের ব্যান্ড পরিয়ে দিয়ে গেল, পরবর্তী কয়েক ঘন্টা এটাই আমাদের টিকিট।
ভোরে রাস্তায় তেমন ভিড় নেই, রাস্তায় মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে ২/১ জন কে তুলে নিয়ে জেটিতে এসে দেখলাম আমাদের মতন জনা পঞ্চাশেক দাঁড়িয়ে আছে ফেরির অপেক্ষায়। পেনাং থেকে পায়ার ফেরিতে দুঘন্টা উত্তরে, লাংকাউই থেকে দক্ষিণে এক ঘন্টা। প্রতিদিন এ দু দ্বীপ থেকে ১০০ জনের অনুমতি মেলে পায়ারে যেতে। স্নোরক্লিং কিংবা স্কুবা এগুলোই থাকে উদ্দেশ্য। মালয়েশিয়ার অন্য সব স্নোরক্লিং সাইটের চাইতে এখানকার খরচ অনেক বেশি।
দু ঘন্টা পর তীর থেকে আধ কিমি দূরে পায়ার এর ভাসমান জেটিতে নেমে চারদিক একবার দেখে নিলাম। পানির নিচে কোরালের উপর ভাসমান ৪৯ বাই ১৫ মিটারের জেটি, তার উপর বসার জন্য গোল করে সাজানো টেবিল চেয়ার, কয়েকটি টয়লেট আর বাথরুম, একপাশে খাবার জায়গা আর স্যুভেনির শপ। চারদিকে নীল পানি, এর মাঝে কিছু জায়গা ঘেরাও দেয়া টুরিস্টদের জন্য, তার বাইরে সাঁতার কাটা নিষেধ। নিচে পানিতে তাকালে হরেক রকমের মাছ আর কোরাল চোখে পড়ে।
টেবিলের উপর মাস্ক, একপাশে ফ্লিপার আর লাইফ জ্যাকেট। এক এক করে পড়তে পড়তে গাইডের বক্তব্যও শুনে নিলাম। সিঁড়ি বেয়ে পানিতে নামার সময় নিচে তাকালে কয়েক মিটার নিচের মাটি পরিষ্কার দেখা যায়, কোরালের পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে ভেসে বেড়াচ্ছে নানান প্রজাতির মাছ, খুব কাছে এসে গা ছুঁয়ে যায়, আবার ধরতে গেলে পালিয়ে যায়। পানির নিচে আলোছায়ার অদ্ভুত খেলা। উপরে কড়া রোদ। মাস্ক ঠিক থাকলে একটানা নিচে তাকিয়ে ভেসে থাকা সম্ভব। এখানকার সরবরাহ করা মাস্কগুলো অতি ব্যবহারে নতুনত্ব হারিয়েছে। মাঝে মাঝেই নোনা পানি ঢুকে যায়, নিঃশ্বাসের গরমের সাথে নোনা পানিতে চোখ জ্বলে।
মাতিসের সাইজের মাস্ক মেলে নি, যেটা পড়েছে তাতে একটু পরপরই পানি ঢোকে, ফ্লিপারটাও সাইজে একটু বড়, তাতেও তার উৎসাহের কমতি নেই, সাঁতার কেটেই আনন্দ করছে। রিতার অবস্থাও তথৈবচ। সে আবার সাঁতার জানে না। মাতিস মাঝে মাঝেই ওর মাকে উৎসাহ দিচ্ছে, ‘মা মা এভাবে করো’।
আমি নেমেছিলাম ক্যামেরা হাতে, একটু পর সেটা তুলে দিলাম অভিকের কাছে। এখানকার কোরাল সুন্দর, মাছ আর সামুদ্রিক প্রাণীর সংখ্যাও বেশি। জেটির নিচে কাচ দিয়ে ঘেরাও দেয়া কেবিন আছে, তাতে দাঁড়িয়ে থাকলেও নিচের সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়।
দুপুরের খাবার ব্যবস্থা জেটিতেই, বুফে। অনেকক্ষণ সাঁতার কেটে ক্ষুধা ভালোই পেয়েছে। পেটে ক্ষুধা নিয়ে খাবারের মান বিচার করি নি। খাওয়ার পর সবাই শার্ক দেখতে গেলেও আমি আবার পানিতে নেমেছিলাম।
বিকেলে ফিরতি যাত্রা, লানকাউই থেকে ফেরি এলে এক এক করে উঠে পড়লাম, মাঝখানে একটু ঝিমুনি এলেও উঠে বাইরের ডেকে চলে এসেছি। চারদিকে পানির উপর জেগে থাকা দু একটা পাহাড়ের মাথা আর দূরে পেনাং এর হাইরাইজগুলো আবছা আবছা দেখা যায়, ফেরির গতি ভালোই, ডেকের রোদ গায়ে অসহনীয় উঠার আগেই ফেরি জেটিতে চলে এলো। সেখান থেকে শেষ বিকালে হোটেল পৌঁছালাম। কথা ছিলো সেদিনই কুয়ালালামপুর ফিরবো। কিন্তু দেখা গেল সবাই আরেকদিন থাকব বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি।
বিচ আর হকার মার্কেট
হোটেলের ঠিক উলটো দিকে রাস্তার পাশে বিশাল খোলা পার্কিং লট, সেখান থেকে পায়ে চলা পথ নেমে গেছে বিচের দিকে। পার্কিং লটের ঢোকার মুখে পাশের পাকা দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে একচালা স্যুভেনির শপ। হরেক রকমের জিনিস, কিছু সেখানকার নিজস্ব তৈরি হলেও বেশির ভাগই ভিয়েতনাম থেকে আনানো। হোটেল থেকে বের হয়ে অরূপ আর অভিক নিচে বিচে চলে গেলে আমরা মার্কেটে ঘোরাঘুরি শুরু করলাম। বড় একটা কাঠের প্লেটে জর্জটাউনের রাস্তা আঁকা, তাতে আবার সাদা ঝিনুক বসানো, দেখেই পছন্দ হলো, আবার ঝিনুক বসানো কাঠের টিস্যু বক্স। দামাদামি করতে যেয়ে দেখলাম দোকানদার বাঙালি। কেনাকাটা সবে মাত্র শুরু হয়েছে তেমন সময় নিচ থেকে ফোন, মামা তাড়াতাড়ি আসেন, গোলাপি সানসেট, আমরা দৌঁড়ালাম।
বিচ সুন্দর, এরইমাঝে জেটস্কির ভমভম আওয়াজ দৃষ্টি সেদিকে টানে। তাকিয়ে দেখি ওর পেছনে দড়িতে বেলুন বেঁধে উড়ছে কয়েকজন। আবহাওয়া খারাপ হচ্ছে দেখে মাতিস আর রিতা কোমরে দড়ি বেঁধেও উঠতে পারল না। একটা বাঙালি ছেলে ঘোড়া ছুটিয়ে মাতিসকে নিয়ে গেল। আমার ক্যামেরা ব্যস্ত হয়ে উঠার আগেই শুরু হলো ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। পেনাং এর বৃষ্টি, কখন আসে কখন যায় কোনোই ঠিক নাই। ছুটলাম সবাই পারের দিকে। ঘোড়ার সহিস ছেলেটা মাতিসকে নিরাপদে পারে পৌঁছে দিয়ে গেছে।
ভারতীয় খাবার, রাতের পেনাং, আর ম্যান ফর ম্যান, লেডিস ফর লেডিস
বৃষ্টি থামতে থামতে রাত নেমে এসেছে পেনাং-এ। রাস্তাঘাট ভেজা, এরই মাঝে লোক চলাচল শুরু হয়েছে আবারো, তিন চাকার রিকশাও দেখলাম কয়েকটা। আশে পাশের দোকানগুলো ঝাঁপ খুলে তৈরী। ঠিক করলাম রাতের খাবার খেয়েই মার্কেটে ঢুকব। কোথাও বেড়াতে গেলে স্থানীয় খাবারের প্রতি একটা পক্ষপাতিত্ব থাকলেও কাছাকাছি ভারতীয় খাবারের দোকান দেখে ঢুকে পড়লাম। নামেই শুধু ভারতীয়, মান আর স্বাদ কিংবা দামের তুলনায় পরিমাণ কোনটাই আমার পছন্দ হয়নি।
এবারে ঘোরাঘুরি, টিপটিপ বৃষ্টি, নানান জাতের আর পদের শোপিস, ঘড়ি, ঘর সাজানোর সাজসরঞ্জাম, চুলের ফিতা, হারবাল ক্রিম, বাঘ আর বানরের তেল, ট্রাভেল ব্যাগ, জুতা কিংবা স্যান্ডেল, আইসক্রিম, ক্রোকারিজ, টিশার্ট, স্কার্ট, বাটিকের কাপড়, কাঠের কাজ করা লাইট শেড, বই, সিডি, ছোট খাটো বৈদ্যুতিক সামগ্রী কোনো কিছুরই অভাব নেই এই মার্কেটে। এরই মাঝে ব্যাগের ওজন বাড়তে থাকল, সাথে চললো ক্যামেরার ক্লিক ক্লিক।
আমরা ঘুরছি এক দোকান থেকে অন্য দোকানে। এক পাশে কাগজ-পেন্সিল নিয়ে চিত্রকরের দল বসে গেছে, তাদের সামনে এক তামিল পরিবার মূর্তির মতন বসে আছে। আস্তে আস্তে কাগজে ফুটে উঠছে তাদের চেহারা। পাশেই সিংহলি মালিকাধীন স্যুভেনিরের দোকান তার আলোকসজ্জার গুণেই ভেতরে টেনে নিলো আমাদের। চমৎকার সুন্দর সব জিনিস, দামও তেমন চড়া। অনুমতি নিয়ে ছবি তোলা শুরু করলাম। দোকান বন্ধ হবার সময়ও ত্রিশ মিনিট পেরিয়ে গেছে, অগত্যা আমরা বের হলাম হোটেলে ফিরব বলে। গল্প করতে করতে ফিরছি সবাই, হোটেলের গেটের কাছে আসতেই পাশ থেকে স্থানীয় একজন নিচু গলায় বললো কাম ইন স্যার, ম্যান ফর ম্যান, লেডিস ফর লেডিস।
বুঝতে কিছুক্ষণ সময় লাগলেও বুঝলাম ভদ্রলোক পাশের পা টেপা দোকানের। ব্যাংকক, বেইজিং এর মতন মালয়েশিয়ার টুরিস্ট স্পট গুলোতেও পা টেপা দোকানের অভাব নেই। কুয়ালালামপুরের দোকানগুলোর সামনে বড় বড় পোস্টার টানিয়ে পা টেপার বৈজ্ঞানিক দিক ব্যাখ্যা করে ক্রেতা আকর্ষণ করা হয়। আমরা পা টেপাটেপিতে না যেয়ে রঙ্গীন আলো গায়ে মেখে ঘুরতে ঘুরতে হোটেলে ঢুকে গেলাম।
প্রজাপতি আর লাভ লেন
বুকিং এর সময় দেখেছিলাম এ হোটেলের চেক আউট সময় সকাল দশটা, তাই তখনই বলে রেখেছিলাম আমরা বিকেল ৩টায় হোটেল ছাড়বো, এসময় টুরিস্ট কম বলে রাজি হয়েছিলো তখন। সকালে নাস্তা করে আমরা তাই চলে গেলাম প্রজাপতির বাগান দেখতে।
প্রজাপতির বাগান এরা বলে তামান রামা-রামা।আমরা যে রাস্তায় বাটু ফিরিঙ্গি এসেছি সে পথ ধরে আরো ১০ কিমির মতন সামনে এই পার্ক। প্রায় আড়াই একরের এ বাগানে ওদের কথানুযায়ী ১২০ প্রজাতির ৪০০ ধরনের প্রজাপতির সংগ্রহ আছে।
পার্কে ঢোকার মুখেই বানানো পাহাড়ে বসে থাকা বিশাল তিনশিঙা বিটল আমাদের অভ্যর্থনা জানালো। টিকিট কেটে ভেতরে ঢুকেই প্রজাপতির ছোঁয়া পেলাম। নানান রঙ, আকৃতি আর ধরনের অগুনতি প্রজাপতি উড়ে বেড়াচ্ছে, প্রত্যেকটাই আলাদা আলাদা সুন্দর। উড়ে এসে গায়ে বসে আবার চলে যায়। কিছু কিছু প্রজাপতি খুব শান্ত হয়ে বসলেও কয়েকটাকে একবারের জন্যও ক্যামেরার ফ্রেমে আনতে পারি নি ওদের ব্যস্ততার জন্য। ছোট্ট এ বাগানের বাড়তি আকর্ষণ এর ভেতরের মিনি জু আর পোকা মাকড়ের জাদুঘর। এছাড়াও স্যুভেনির শপ আর একটা আর্ট গ্যালারিও আছে। জু তে বিটল, শিংওয়ালা কচ্ছপ, স্করপিয়ন আর ড্রাগন দেখলাম। জাদুঘরটা আরো চমৎকার, বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করা নানান জাতের পোকামাকড় আর সরীসৃপ বয়ামে রাখা। দু’ঘন্টার চমৎকার সময় কাটিয়ে বাটু ফিরিঙ্গিতে বেলা বারোটার আগেই ফিরে এলাম। রিতা আর মাতিসকে হোটেলে রেখে আমরা তিনজন চলে এলাম জর্জটাউনে।
জর্জটাউনের আধুনিক ইতিহাস সিঙ্গাপুরের চাইতে পুরোনো। জর্জটাউনের জন্ম ১৭৮৬ সালে আর সিঙ্গাপুরে বৃটিশরা আসে ১৮১৯ সালে। তারও কিছুকাল পর বৃটিশরা এ দুটো অঞ্চলকে সিটি হিসাবে ঘোষণা করে। বৃটিশদের দখলে যাবার আগে এ দুটোই যথাক্রমে কেদারের সুলতান আর জোহরের সুলতানদের দখলে ছিলো। বৃটিশদের কাছে সে সময় সিঙ্গাপুরের চাইতে জর্জটাউনের গুরুত্ব অনেক বেশি ছিলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এবং এর পরবর্তী আন্তর্জাতিক রাজনীতির নানান মেরুকরণে জর্জটাউন সিঙ্গাপুরের কাছে তার অবস্থান হারায় এবং ২০০৮ সালে এর পুরোনো অঞ্চলগুলো ইউনেস্কো হেরিটেজ হিসাবে ঘোষিত হয়।
স্থানীয় মুসলমান, ভারতীয় তামিল আর চাইনিজ বংশোদ্ভূতদের নিয়ে জর্জটাউন। হাতে সময় কম বলে স্বল্প সময়ে শুধুমাত্র দু একটা রাস্তা ঘুরে দেখা ছাড়া আর কিছুই হলো না। ছবি তোলার জন্য জর্জটাউনে কমপক্ষে দিন দুই থাকা উচিত।
এবারে ফেরার পালা
বিকেল ৩টায় হোটেল ছেড়ে দুপুরের খাবার খেয়ে ফিরতি যাত্রায় কুয়ালালামপুরে। এবারে রাস্তায় ভালোই বৃষ্টি পেয়েছিলাম। মাতিসের টুইন টাওয়ার দেখার শখ মিটিয়েছে অরূপ ওর বাসায় ফেরার পথে টুইন টাওয়ার ঘুরিয়ে এনে। রাতে গোছগাছ সেরে খুব ভোরে যখন অরূপ মাশীদের বাসা ছাড়লাম মাতিস তখন তার সেই চেনা ডায়লগ ছাড়লো “বাবা, আমরা কী আবার এখানে আসবো?” উত্তর দিতে পারি নি, আসলে এ উত্তর আমার জানা নেই।
মন্তব্য
হাতে একটা ক্যামেরা থাকলে আমিও এরকম ঘুরতে বের হতাম! ঈর্ষা জাগানর জন্য মাইনাস।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
গৌতমের পদধুলিই যথেষ্ঠ
...........................
Every Picture Tells a Story
পড়লাম
দেখলাম
এবং জানলাম...
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আপনি পড়েছেন, দেখেছেন এবং জানতে পেরেছেন শুনে আনন্দিত হইলাম
...........................
Every Picture Tells a Story
আয়েশ করে পড়ার মত ভ্রমন্থন। আগেরটা পড়তে পারিনি। এটা পড়লাম। কিন্তু ছবিগুলো এরকম দেখাচ্ছে কেন? মনে হচ্ছে ছোট ছবিকে টেনে বড় করা হয়েছে।
লিঙ্ক দেয়াই আছে, পড়ে ফেলেন।
ছবির ব্যাপারটা আমিও খেয়াল করেছি, জানিনা কেন, ফ্লিকারে তো ঠিকই আছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
আপনি পুরা এইচটিএমএল কপি করেননি, শুধু লিংক কপি করে দিয়েছেন। সচলায়তনে (আমি যতটা বুঝি) সরাসরি লিংকের ছবি একটা নির্দিষ্ট মাপের করে দেখায়, যেটা ফ্লিকারের ছবির সাইজের চেয়ে একটু বড়। এজন্যই এরকম হয়েছে।
হুম, পড়ে ফেলব।
এখন কিছুটা ঠিক হয়েছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
ছবিগুলো দেখে একটা ক্যামেরার জন্য আফসোস হচ্ছে। ইশ কবে যে এরকম ছবি তুলতে পারবো!
ফন্ট বানানোর চাইতে সহজ
...........................
Every Picture Tells a Story
এত colourful !
পড়তে পড়তে আর ছবি দেখতে দেখতে আমিও বৃষ্টিস্নাত পেনাং এ ঘুরে এলাম।
ধন্যবাদ অনিন্দিতা চৌধুরী। এবারে ঘুরে আসার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
...........................
Every Picture Tells a Story
আহা ! প্রাণ জুড়িয়ে গেল !
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ। ইদানীং কোথায় থাকা হয়?
...........................
Every Picture Tells a Story
ভাই, যে ছবি তুলছেন, পুরাই পাঙ্খা লাগতেছে। ইস, আমি যদি একটা ক্যামেরা পাইতাম!!!
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
...........................
Every Picture Tells a Story
পড়তে দেরী হলো!
মনের মত করে পড়ব বলে জমিয়ে রাখছিলাম। অবশেষে পড়লাম।
আগামী সপ্তাহে মালয়েশিয়া যেতে পারি আমিও। গেন্টিং।
আর নেক্সট মাসের শুরুতে থাইল্যান্ড। ফুকেট।
কিন্তু ভালো ক্যামেরা নেই। যাই হোক মনের ক্যামেরায় ধরণ করার চেষ্টা করব। আপনার ভ্রমন ছবি-লেখাগুলো পড়তে পড়তেই ভ্রমনের প্রতি অদম্য একটা ঝোক তৈরি হচ্ছে দিনে দিনে বুঝতে পারি।
শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। নিজেও ঘুরে এলাম যেন।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ঘুরে এসে আমাদের সাথে শেয়ার করবেন আশা করি। আমি ফুকেট যাইনি।
ভ্রমনের প্রতি আগ্রহ তৈরি হওয়াটা ভালো।
...........................
Every Picture Tells a Story
- প্রথম ছবিটা দেখে মনে হচ্ছিলো, অরূপকে অনেকদিন দেখি না। এই অরূপ গেলো কদিনে বেশ বুড়িয়ে গেছে দেখি! এখন সাদাকালো বুড়া বয়সে আবার সাইকেলও চালায়!
তারপর মনে হলো, ব্যাটা তার ট্রেডমার্ক লাল রঙের টিশার্ট পরে মাথায় হাত দিয়ে কি তবে রাস্তা খুঁজছে সমুদ্র পাড়ে! পাচ্ছে না!
এবার মাথার ফোকাস অরূপ থেকে সরে লাভলেইনে গিয়ে ঠেকলো। কিন্তু একি! লাভলেইনের 'লাভ' এর যে আধেকটাই কেটে ফেললেন মুস্তাফিজ ভাই!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বেঁচে থাকলে সবাই একদিন বুড়ো হবো, খুব খেয়াল।
ছবিটা তোলার সময় এক বেরসিক তার গাড়িটা সেখানে রেখে গিয়েছিলো অগত্যা তা মেনে নিয়েই ছবি তুলবো ঠিক করলাম। ব্যস্ত রাস্তা, হুট হাট ফ্রেমে অন্য কিছু চলে আসে। আর আমাদের হাতে যেটুকু সময় ছিলো তাতে এখানে সময় বেশী দেয়াটা বিলাসিতা হতো। তাই কাটা ভালোবাসাই সম্বল।
...........................
Every Picture Tells a Story
ভাল্লাগছে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ধন্যবাদ।
...........................
Every Picture Tells a Story
পেন্নাম পেন্নাম ...
ধন্যবাদ আলমগীর ভাই।
...........................
Every Picture Tells a Story
ছবি দেখলাম। মুগ্ধ হলাম।
শুধু ছবিই দেখলা?
...........................
Every Picture Tells a Story
রাগে, দুঃখে, ঈর্ষায় হা-পা................
রাগ=ক্যামেরা নাই। আশায় আছি আপনি একটা ক্যামেরা উপহার দিবেন।
দুঃখ = ক্যামেরা থাকলেও এমন ছবি তুলতে পারুম না!
ঈর্ষা= আমি ক্যান আপ্নে হইলাম না?
ঢাকায় আসেন কোলাকুলি করুমনে।
...........................
Every Picture Tells a Story
সহমত!
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
হুম, বালিকাও কোলাকুলি করবে।
...........................
Every Picture Tells a Story
এইটাকেই বলে ভ্রমণব্লগ!
এই লেখাটায় তারা দেবার জন্য আমি একদিনের জন্যে হইলেও সচল হইতে চাই!
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
আচ্ছা, মডুদের বলে দেওয়া হবে।
আরেকটা কথা বেশি মাথা ঝুকালে বুদ্ধি পড়ে যায়, বুদ্ধির একটা ওজন আছেনা?
...........................
Every Picture Tells a Story
Boro mama, darun laglo porey! Super! Miss you so much!
অভিক'দা ধন্যবাদ
আবার দেখা হবে।
...........................
Every Picture Tells a Story
এই পর্বটা আগেরটার চাইতেও অনেক সুন্দর। বর্ণনাতে, এবং প্রাসঙ্গিক টুকিটাকি তথ্যতেও। দারুণ লাগলো পড়ে। অনেকটা যেন আপনাদের চোখেই দেখা হলো, একসাথে ঘোরা হলো, এমন অনুভূতি।
তবে মাত্র দুই পর্বে এরকম একটা ভ্রমণের কাহিনী শেষ করে দিলেন? এইটা খুব অন্যায় হইলো
আমি তবু চেষ্টাতো করি লেখতে তাইনা?
...........................
Every Picture Tells a Story
তা অবশ্য ঠিক
কিন্তু ভাই, এমনিতেই কোথাও যাইতে পারি না বাইরে, আপনি যদি এমন ছবি আর লেখা না দেন, তাইলে তো ভার্চুয়াল বেড়ানোটাও হবে না!
সেদিন কে যেন পেইচিং থেকে ঘুরে এলো?
...........................
Every Picture Tells a Story
ঈর্ষা ছাড়া আর কিছু নাই। তাই যথারীতি মাইনাস।
অভিকের সঙ্গে আমার দিনের পর দিন রাতের পর রাত আড্ডা এই ঢাকা শহরে। শুধু অভিকের সঙ্গে আড্ডার গল্প দিয়েই একটা বই লেখা যাবে। আমি জানি অভিক কী!
বিপ্লবী হুমায়ুন কবীরের ছেলে, আহমদ ছফার লেখায় যে অভিকের ছোটবেলা, তবলাবাজ, তুমুল ড্রামার, অসাধারণ গ্রাফিক্স ডিজাইনার, আমার ফটোশপের গুরু, অসাধারণ মিউজিশিয়ান, পাগলা ফটোবাজ অভীক! সঙ্গে আপনি অরূপ, ভাবী, মাশীদ, মাতিস!
আমি এই পোস্টে মাইনাস ছাড়া আর কিছু দিতে পারতেছিনা
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পছন্দ করেছেন এটা বোঝা যায় কারন মাইনাসের বদলে পাঁচ তারা পড়েছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
তারা দেবার ক্ষমতা নাই। থাকলে মনে হয় এক দিতাম। এই ধরণের দুঃখু জাগানিয়া পুস্টের জন্য একই বরাদ্দ এখন থেকে!
[ছবি আর লেখায় ৫+৫=১০ তারা]
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
ধন্যবাদ বালিকা
...........................
Every Picture Tells a Story
আহ্ মুস্তাফিজ ভাই,কতদিন পর আপনার লেখা!
বাংলাদেশে গেলে তো মনে হয় আপনার ক্যামেরার সামনে ২৪ ঘণ্টাই ভ্যা করে চেয়ে থাকতে হবে। যদি তাতে কিছু ভালো ছবি ওঠে!
দুই পর্বের ছবিগুলো দেখলাম।
ওটা কি স্যালামান্ডার না কি ড্র্যাগন,ওইযে রঙিন নকশাওয়ালা প্রাণীটা,গত পর্বে?
ধন্যবাদ আপনাকে, ২৪ ঘণ্টা না হোক কিছু সময় বের করে নিব।
স্যালামান্ডার না ওরা বলে ড্র্যাগন।
...........................
Every Picture Tells a Story
চোখ ট্যাঁরা হয়ে গেছে, এমন পোস্টে তারা দাগায়া সচলত্ব সার্থক হইল
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আচ্ছা, এইবার মিলাদ দ্যান
...........................
Every Picture Tells a Story
নতুন মন্তব্য করুন