ট্রেনে আমাদের জন্য বরাদ্দ ছিলো দুটি স্লিপিং কোচের চারটি কক্ষ। নন এসি এই স্লিপিং কোচগুলো দিনের বেলা প্রতি কক্ষে ছয়জন করে বসালেও রাতে ঘুমানোর সুবিধার জন্য চারজনের জন্য নির্দিষ্ট থাকে। সমমনা কয়েকজন একসাথে হলে যা হয় আমাদের বেলাতেও তার ব্যতিক্রম হলো না, আড্ডা জমে উঠলো, ছবি তোলার গিয়ার থেকে শুরু করে বর্তমান রাজনীতি, ড্যাপ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, পরবর্তী দিনের কার্যক্রম কোনোকিছুই বাদ গেলো না।
আমি আগেই আমাদের কক্ষ ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করাতে আড্ডা জমেনি সেখানে। অন্য কক্ষে তুমুল আড্ডার এক পর্যায়ে যখন বিশ্রাম নিতে উঠে চলে এলাম কেউ মানাও করেনি। ট্রেন ততক্ষণে আখাউড়া পেরিয়ে সিলেটের দিকে ছুটে চলেছে। একসময় খুব ট্রেনে চড়তাম। আব্বা যখন ফেনীতে সে সময় ময়মনসিংহ থেকে ফেনী যাতায়াতের প্রধান উপায় ছিলো ট্রেন। আমাদেরও চড়া হতো, কখনও সিট মিলত কখনও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কিংবা জানালায় বসে যেতাম, একবার ট্রেনের দরজায় ঝুলেও ছিলাম কয়েক ঘণ্টা। লম্বা পথ, নানা কিসিমের, নানা মতের মানুষ, আলাপের ধরনও বিভিন্ন। তবে ৭৫ এর আগে ট্রেনে রাজনীতি নিয়ে আলাপ শুনতাম বলে মনে পড়ে না।
সিদ্ধ ডিম, চানাচুর, শশাওয়ালার চাইতে আমাকে বেশি টানত শ্রীপুরের লাল বড়ি কিংবা, দাদের মলম বা দাঁতের মাজন বিক্রেতারা। এদের কথাবার্তায় এতই মোহিত হতাম যে ওদের বক্তব্যগুলো একসময় আমার মুখস্থ ছিলো। তবে একবার সম্মোহিত হয়েছিলাম এক তাবিজ বিক্রেতার কথায়। পঞ্চাশ পয়সায় সাপ বশীকরণ তাবিজ কিনে বাড়িতে ফিরে বিশাল কাণ্ড ঘটিয়েছিলাম। তাবিজ বিক্রেতার কথামতন সেটা মুখে পুরে হাত দিয়ে টেনে গাছের খোঁড়ল থেকে বের করেছিলাম হাত ছয়েকের উপর লম্বা বিষাক্ত সাপ। সেই সাপ হাতে পেঁচিয়ে গামছায় ঢেকে তিন কিলোমিটার দূরে বাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসে চড়ে বসেছিলাম, কোনো এক অসতর্ক মুহূর্তে হাত থেকে পিছলে বেরিয়ে যাওয়া সেই সাপ আরেকটু হলেই বাস দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়াত। আরেকবার সেই তাবিজ হাতে বেঁধে রাতের অন্ধকারে ঢুকেছিলাম মধুপুর বনে। কিছু সময় পর টের পেলাম পথ হারিয়ে ফেলেছি এবং সাথে সাথে শুরু হয়েছে ঝড়-বৃষ্টি এবং কোনো কারণে আমার তাবিজ কোনো কাজেই আসছে না। আমার বয়স সে সময় তের পেরিয়ে চোদ্দতে পড়েছে, আশে পাশের ঝোপঝাড়ে বৃষ্টি থেকে বাঁচতে লুকিয়ে থাকা শেয়াল বা বাঘডাসের লাল লাল চোখগুলো সেদিন আমাকে বেশ ভয়ই পাইয়ে দিয়েছিলো। তাতে লাভ যা হয়েছিলো এরপর থেকে চিরদিনের জন্য এসবের উপর আস্থা হারিয়েছি আমি।
বালক বয়সের সেই দিনগুলোর কথা ভাবতে ভাবতে ঝিমুনি চলে এলেও ঘুম আসেনি একবারও। “যাচ্ছি চলে যাচ্ছি চলে যাচ্ছি চলে” বলতে বলতে দুলতে দুলতে ট্রেন এগিয়ে চলে। মাঝে মাঝে আশেপাশে গ্রাম বা বনের ভেতর দিয়ে চলার সময় একধরনের “হুঁ হুঁ” শব্দ তোলে, তাতে ভাবনায় ছেদ পড়ে। আমাদের কক্ষে চারটি পাখা, তার মাঝে দুটি অকেজো। জানালা খোলা থাকাতে বাতাস আর ধুলা দুটোই আসে, ধুলার গন্ধে সোঁদা মাটির ঘ্রাণ, বাতাসে আর্দ্রতা বেশি, শরীর ম্যাজম্যাজ করে। এরপরও ট্রেন যাত্রা মন্দ লাগে না। এর একমাত্র কারণ হয়তো একই গতিতে ছুটে চলা, বাস বা অন্য গাড়িতে যা আমরা পাই না।
ভোর সাড়ে পাঁচে সিলেট পৌঁছায় ট্রেন। নেমেই পরিচিত হলাম নতুন স্টেশনের সাথে। শেষবার ট্রেনে সিলেট এসেছিলাম নব্বই এর শেষের দিকে। এই স্টেশন তখনও তৈরি হয়নি। বৃটিশদের সময় যে সব স্টেশন তৈরি হয়েছিলো সবগুলোর ধরন ছিলো একইরকম, লম্বা টানা প্লাটফর্ম, লোহার রেলের লাল রঙের খাম্বার উপর টিনের চাল দিয়ে ঢাকা, প্লাটফর্মের উল্টোদিকে সার বেঁধে স্টেশন মাস্টার, টিকিট কাউন্টার, মাল গুদাম, যাত্রীদের বিশ্রামকক্ষ আর চায়ের দোকান, প্লাটফর্মের দুপাশে দুটো পত্রিকার স্টল। সবচাইতে বেশি নজর কাড়তো প্লাটফর্মের মাঝখানে পানির কলগুলো। স্টেশনের গুরুত্বানুযায়ী এদের সংখ্যা কম বেশি হতো। আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা আমাদের এ অঞ্চলের রেলের ইতিহাস বেশ পুরোনো। এমনকি বৃটিশদের দ্বারা তৈরি হলেও বৃটেনের আগেই ১৮৫৪ সালে কলকাতায় প্রথম যাত্রী রেল চলাচল শুরু করে। বর্তমান বাংলাদেশে প্রথম রেল চলে ১৮৬২ সালে দর্শনায়। এর কিছুকাল পরে ১৮৮৫ সাল থেকে ঢাকার মানুষ রেলে চড়ে নারায়ণগঞ্জ বেড়াতে যেতে পারত। পাকশীতে পদ্মার উপর স্থাপিত লর্ড হার্ডিঞ্জ সেতুর নামকরণ করা হয়েছে এ অঞ্চলের রেল স্থাপনের পরিকল্পনাকারী ফিল্ড মার্শাল লর্ড হেনরী হার্ডিঞ্জের নামে যিনি ১৮৫৬ সালে মৃত্যুর আগেই এ অঞ্চলে রেল চলাচল দেখে যেতে পেরেছিলেন।
নব্বই সালে শেষ বার সিলেট থেকে ট্রেনে ঢাকায় ফেরার জন্য খুব ভোরে স্টেশনে এসেছিলাম, রিকশায়। নিম্নচাপের কারণে চারদিকের আকাশ কালো হয়ে আছে, এরই মাঝে বগিতে উঠে দেখলাম আমি ছাড়া সেখানে আর কেউই নেই। ব্যাগ রেখে স্টেশনে এগিয়ে দেয়া বন্ধু কে বিদায় জানাতে নিচে নেমেছিলাম, ফিরে এসে দেখি ব্যাগ হাওয়া, স্পষ্ট মনে আছে সীটের উপর হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিলো কামরা ছিলো খালি, জানালাগুলো বন্ধ, শুধু আমার সীটের পাশেরটা খোলা ছিলো, একদম পিছনের দিকের কম্পার্টমেন্ট বলে আশে পাশে হকার বা এ জাতীয় কেউ ছিলো না। তাহলে ব্যাগ যাবে কোথায়? দু/একটা কাপড়ের সাথে ব্যাগে প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকা, সে সময়ের হিসাবে অনেক। দ্রুত কামরায় চোখ বুলিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়েছি, বৃষ্টি শুরু হয়েছে, এর মাঝে বিদায় জানানো বন্ধুটির দৌড়ে প্লাটফর্মে যাওয়া ছাড়া আর কাউকে দেখা যায় না। ট্রেনের হুইসেল আর গার্ডের বাঁশি বেজেছে, যেকোনো মুহূর্তে ছেড়ে দিবে, নামবো না ট্রেনেই থাকবো চিন্তা করতে করতেই রুম এটেন্ডেন্ট এসে হাজির, হাতে আমার ব্যাগ, আমাকে নিচে নামতে দেখে সাবধানতার জন্য নিজের কাছে নিয়ে রেখেছিলো।
পুরোনো সেই স্টেশনের দেখা না পেয়ে মন খারাপ হলো কিছুটা, ইচ্ছা করলেই রেলের কর্তারা পুরোনো এসব স্টেশন গুলো সাজিয়ে রাখতে পারে দর্শনার্থীদের জন্য, যেমন ঈশ্বরদী স্টেশনের কাছে এখনও শোভা পায় ন্যারো গেজে চলাচল করা ছোট্ট কয়লার ইঞ্জিন আর সাথে একটা বগি। প্লাটফর্ম পেরিয়ে এসে ওয়েটিং রুমের সামনে পাতা চেয়ারে বসলাম। জয়ন্তীয়া কলেজের শিক্ষক সেই সাথে সিলেট ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সভাপতি ফকরুল ভায়ের আসার কথা স্টেশনে। উনার অপেক্ষায় ত্রিশ মিনিটের মতন বসে থাকলেও যখন দেখা পাইনি সে সময় ফোন দিলাম, একবার দুবার করে পঁচিশ বার “ভালোবাসি...ভালোবাসি” রবীন্দ্র সংগীত শোনালো ফকরুল ভায়ের ফোন। অগত্যা সচল উজানগাঁ আর মোনায়েম ভায়ের শরণাপন্ন হলাম। বললেন চলে আসবেন পনেরো মিনিটের মাথায়। ভিক্ষুকের যন্ত্রণায় বসে থাকার উপায় নেই।
ক্যামেরা হাতে উঠে পরলাম। স্টেশনের গেটের ঠিক ওপারেই লাল টকটকে চোখ নিয়ে বসে আছে শ্মশ্রুমণ্ডিত এক গাঁজাখোর, তার পাশে পুরাতন খবরের কাগজ বিছিয়ে ঘুমাচ্ছে কেউ কেউ। আমি ছবি তুললাম। স্টেশনের এক কুলিকে পাঠিয়ে গাঁজাখোর ডাকালেন আমাকে, “বাবা ডাকে”। আমাদের গাড়ি চলে এসেছে, বাবার ডাকে আর সাড়া দেওয়া হলো না। আমরা চলে এলাম হোটেলে।
দুটো রুম রাখা ছিলো এখানে। কাড়াকাড়ি পড়ে গেলো কার আগে কে যাবে তাই নিয়ে। কেউ কেউ গোসলও সেরে নিলো ঝটপট। তৈরি হয়ে নিচে নাস্তার টেবিলে এক এক করে সবাই এসে হাজির, এরই মাঝে চিটাগাং আর সিলেটের ফটোগ্রাফাররাও চলে এসেছে। সপরিবারে এসেছে সচল আলবাব আর শাহ্জালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সচল আলমগীর। আমাদের দলটা বেশ বড়ই বলতে হবে। তিনটে মাইক্রোতে রওনা দিলাম ভোলাগঞ্জের দিকে।
সিলেটের এ অঞ্চলগুলো আমাকে টানে, প্রাকৃতিক সোন্দর্যের বাইরেও মুক্তিযুদ্ধের সময়কার এ অঞ্চলের বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধ যুদ্ধ আর গণহত্যার নিকৃষ্টতম উদাহারণগুলোর অনেকগুলোই ঘটে গেছে এখানে। সিলেটজুড়ে গণহত্যা শুরু হয় ২৭শে মার্চ। সেদিন মির্জাজাঙ্গাল নিম্বার্ক আশ্রমে স্থানীয় দালালদের সহযোগিতায় শহরের ধনী ও প্রভাবশালী হিন্দু পরিবারগুলো একসঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। আমরা জিন্দাবাজারে যে হোটেলে উঠেছিলাম এর কাছাকাছি জায়গায় ৭১ এ ন্যাশনাল ব্যাংকের অবস্থান ছিলো, সেবছর এপ্রিলের চার তারিখ সেখানে পাহারারত নয় বাঙালি পুলিশসহ কর্মরত সবাইকে একসঙ্গে হত্যা করে পাকবাহিনী। সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের উল্টোদিকে যেখানে বর্তমানে শহীদদের স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দ্বায়িত্বরত ডাক্তার আর রোগীদের ধরে এনে হত্যা করা হয় নয়ই এপ্রিল। এসবের মাঝেই প্রতিরোধ চলাকালীন পাকবাহিনী জড়ো হয় বিমানবন্দরে। এ রাস্তায় যাবার আগেই লাক্কাতুরা চা বাগান, পাশের জায়গাটার নাম ইলাশকান্দি, পাকবাহিনী ইলাশকান্দি জ্বালিয়ে দিয়ে লাক্কাতুরা চা বাগানে ক্যাম্প তৈরি করে। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টাই এখানে পাকবাহিনীর ক্যাম্প ছিলো। সিলেটের বেশ কয়টা চা বাগানের মালিক রাজেন্দ্র লাল গুপ্তের পরিচিতি ছিলো বেশ। পুরো পরিবার আর বাগানের সমস্ত কর্মচারীসহ উনাকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয় মালনীছড়া চা বাগানের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজারের বাংলার পাশে।
এ জায়গাগুলো পেরিয়ে আসার সময় গাড়িতে অন্যান্যদের কাছে এ সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম, দেখলাম কেউই এ ঘটনাগুলো জানেন না। ভোলাগঞ্জ যেতে এয়ারপোর্ট রোড থেকে ডানে সালুটিকরের রাস্তায় উঠে এলাম আমরা। এর কাছেই কালাগুল চা বাগান। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা বলে এপ্রিলের প্রথম দিক থেকেই সিলেট থেকে স্থানীয়রা এখানে সরে আসতে থাকে। এপ্রিলের শেষের দিকে (সম্ভবত ২৬ তারিখ) পাকবাহিনী সালুটিকর থেকে রওনা দিয়ে চেঙ্গেরখাল, তেলিহাটি, কালাগুল পুরো এলাকা ঘেরাও দিয়ে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে হত্যা করে, ২৫শে মার্চে ঢাকায় গণহত্যার পর সবচাইতে বড় নির্বিচার গণহত্যা সংগঠিত হয় এখানেই।
সালুটিকর পেরিয়ে গোয়াইনঘাটের দিকে গাড়ি চললো। গোয়াইন নদীর ব্রিজ পেরুবার সময় পাশের টিলার উপর নজর পরবেই, এখানেও পাকবাহিনী বধ্যভূমি বানিয়েছিলো একটা, মানুষ হত্যা করে গোয়াইন নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হতো। একসময় নদীতে লাশ আটকে গিয়ে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকলে পুড়িয়ে ফেলার বন্দোবস্ত করা হয়।
গোয়াইনঘাটের পর কোম্পানিগঞ্জ, এখান থেকেই সামনে মেঘালয়ের পাহাড় স্পষ্ট হতে থাকে। শুরু হতে থাকে ভোলাগঞ্জের রাস্তার সবচাইতে খারাপ অংশটুকু। সবচাইতে খারাপ যে কতটুকু খারাপ তা ভাষায় বোঝানো যাবে না। শুধু এটুকু বলতে পারি এ রাস্তায় কোনো বাস চলে না, অটোরিক্সা চলে না, কার চলে না, আমাদেরগুলো ছাড়া আর কোনো মাইক্রো দেখিনি সে রাস্তায়। অল্প কয়েক কিলোমিটার রাস্তায় মালবোঝাই দুই তিনটা ট্রাক উলটে থাকতে দেখেছি। এ রাস্তার প্রধান বাহন এখন ভারতীয় মহিন্দ্র ট্রাক্টর। চুনাপাথর আর সাধারণ পাথর বোঝাই ট্রাক্টরগুলো লাফিয়ে লাফিয়ে ভাঙা রাস্তা পেরিয়ে যায় অনিবন্ধিত চালকের হাতে। দুর্ঘটনা যে ঘটে না তা নয়। আমাদের চোখের সামনে ভাঙা রাস্তা থেকে লাফিয়ে দোকানে উঠে যেতেও দেখেছি। অথচ একসময় শিলং এ যাবার জন্য এটাই ছিলো প্রধান রাস্তা। এখন এরাস্তার বাংলাদেশ অঞ্চলের শেষ মাথায় বাঁশ ফেলে বর্ডার গার্ডদের অবস্থান। আমাদের গাড়ি যেয়ে থামে ঠিক তার একটু আগেই।
চারদিকে ঝকঝকে রোদ। এরই মাঝে সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে চলে যায় ছবি তুলতে। সীমানার ঠিক ওপারেই ভারতের খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড়, সেখান থেকে নেমে আসা ধলাই নদী পানির সাথে নিয়ে আসে প্রচুর পাথর। নদীর তলদেশের বালুর একটু নিচেই পাওয়া যায় পাথর। হাজার হাজার মানুষ পাথর তুলছে ঠান্ডা নদীর নিচ থেকে, পেছনে সবুজ পাহাড়, কুয়াশার মতন হালকা নীলচে ধোঁয়া তার উপর, পাহাড়ের পেছনে নীল আকাশ তাতে সাদা সাদা মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে। প্রচণ্ড রোদে আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখি, ছবি তুলতে ইচ্ছা করে না। এই সৌন্দর্য ক্যামেরায় বাঁধা পড়ুক তা চাই না আমি। নদীর পাড় বেয়ে পানিতে পা ডুবিয়ে আমি হাঁটতে থাকি। হাঁটতে হাঁটতে সামনের দিকে যাই, আমার পাশাপাশি ডানে হাঁটে বর্ডার গার্ড, মোশাররফ, কুষ্টিয়া বাড়ি, মাসখানেক হয় এখানে এসেছে, হঠাৎ খেয়াল করি বামে আরেকজন ভিন্ন পোশাক পরা, ভারতীয় বর্ডার গার্ড, দুজনে কুশল বিনিময় করে। মোশাররফ চা সাধে ভারতীয় বর্ডার গার্ডকে। মোশাররফ জানায় এখানে সীমানা বেশ আঁকাবাঁকা, স্থানীয়রাও মাঝে মাঝে ভুল করে কোনটা বাংলাদেশ আর কোনটা ভারত। তবে এদিকে ভারতীয় বসতি নেই, তাই আশে পাশের সবাইকেই বাংলাদেশী মনে করা হয়। একটু আধটু এদিক ওদিক হলে দুপক্ষের কেউই তেমন গা করে না। তবে আমাদের মতন পর্যটকদের জন্য ব্যাপারটা আলাদা। তীক্ষ্ণ নজর থাকে দু পক্ষেই।
আমি আবার পেছন দিকে হাঁটি, ছেলে বুড়ো, পুরুষ মহিলা সবাই মিলে পাথর তুলছে। কেউ নৌকায় করে পাথর নিয়ে এসেছে, কেউ সেই নৌকা থেকে পাথর মাথায় পারে তুলছে, কেউ সেখান থেকে তুলে দিচ্ছে ট্রাক্টরে। কাজটা কষ্টকর নিঃসন্দেহে। আরো কষ্টকর তাদের জন্য যারা মহাজনের অধীনে কাজ জোটাতে পারেনি তাদের জন্য। এরকম অনেককেই দেখলাম নদীতে ডুবে ডুবে মাটি হাতড়ে পাথর বের করতে। এরপর পাথরগুলো নিয়ে একজায়গায় জমিয়ে পরে দালালের কাছে বিক্রি করে। ভোর পাঁচটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত একটানা পাথর তুলে সারাদিনে একশ থেকে দেড়শো টাকা উপার্জন, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত। বাচ্চাদের লেখাপড়ার কথা সেখানে বাহুল্য, বরঞ্চ ছোট ছোট বাচ্চাদেরও দেখলাম মাকে পাথর তুলতে সাহায্য করতে। আমার ভালো লাগে না।
সেখান থেকে ইঞ্জিন নৌকায় নদীর মাঝখানে চরের মতন জায়গায় চলে এলাম। প্রায় ৪০ হেক্টরের মতন জায়গা। এখানে ১৯৩০সালে বৃটিশদের স্থাপিত একটা রজ্জুপথ (রোপওয়ে) আছে। ভোলাগঞ্জ থেকে ছাতক পর্যন্ত প্রায় উনিশ কিলোমিটার লম্বা এই রজ্জুপথে ১২০টি টাওয়ার এক্সক্যাভেশন পয়েন্ট, চারটি সাব স্টেশন আর দুমাথায় দুটি ডিজেল চালিত ইলেকট্রিক পাওয়ার হাউস আছে। এলাকাটা অনেকটা বদ্বীপের মতন, ধলাই নদী এখেনে এসে দুভাগ হয়ে স্টেশন পেরিয়ে আবার মিলিত হয়েছে। নিরিবিলি এ জায়গাটাতে একজনকে দেখে আলাপে জানা গেল লোকবলের অভাব, পাথরের স্বল্পতা আর বিকল ইঞ্জিনের কারণে ৯৪-৯৫ সাল থেকে এক্র্ক্যাভেশন মেশিন দিয়ে পাথর তোলা বন্ধ আছে। আরো জানলাম এখানে যেসব পাথর তোলা হয় তা স্থানীয় ভাবে ভাঙার পর ভাঙা, ধোয়া ও টুকরোর আকার অনুসারে বালু, স্টোন চিপস ও ট্রাক ব্যালাস্ট নামে শ্রেণীভুক্ত করা হয়, একেক ধরনের দাম একেক রকম।
হাঁটতে হাঁটতে রজ্জুপথের শুরুতে গেলাম, অনেকগুলো বাকেটে তখনও পাথর ভরা, প্রতিটি বাকেটে ২৩৭ কেজি পাথর ধরে। ছুটির দিন বলে আজ পারাপার বন্ধ। ঘুরে ঘুরে দেখলাম এলাকাটা, এর উত্তর দিকে ভারতীয় অংশের দিকে তাকাতেই চোখ ছানাবড়া হবার যোগাড়, হাজার হাজার নৌকা গিজ গিজ করছে সেখানে। দূর থেকে দেখতে পিঁপড়ার মতন লাগে। এর মাঝে ঘরর ঘরর শব্দ এখান থেকেও শোনা যায়। আমাদের একজনের ফোন পেলাম, সে ওখানে ক্যাম্পে বসে আছে। চলে আসতে বললো আমাকে। পাওয়ার হাউসের পাকা সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলাম, একটা নৌকা ডেকে অনুরোধ করলাম সেখানে পৌঁছে দিতে। রাজি হলো, প্রায় ত্রিশ ফুটের মতন লম্বা পাশে দুই ফুট নৌকা। এরা পাথর তোলে চালনিতে ছেঁকে ছেঁকে কিংবা হাত দিয়ে মাটি খুঁড়ে। এক নৌকা পাথরের দাম ছয়শো টাকার মতন। যতই কাছে যাচ্ছি শ্যালো মেশিনের ঘরর ঘরর শব্দ জোরালো হচ্ছে। প্রথমে ভেবেছিলাম অনেকগুলো পাথরবাহী নৌকা একসাথে পেছন পেছন বেঁধে ইঞ্জিনে টেনে নেবার শব্দ সেটা। কাছে গিয়ে ভুল ভাঙলো আমার।
ভোলাগঞ্জ কোয়্যারিতে শুকনা মওসুমে সাধারণত গর্ত খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করা হয়। এ পদ্ধতিতে শ্রমিকরা প্রথমে কোয়্যারির ওপরের বালি সরিয়ে পর্যায়ক্রমে গর্ত খুঁড়ে নিচের দিকে যেতে থাকে, ৭/৮ ফুট নিচু গর্ত খোঁড়ার পর কোয়্যারিতে পানি উঠে যায়, পানি উঠে গেলে শ্যালো মেশিন দিয়ে কোয়্যারির পানি অপসারণ করে শ্রমিকরা পাথর উত্তোলন করে। এর বাইরে ‘শিবের নৌকা’ পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন করা হয়, এ পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের উপায় হচ্ছে-একটি খালি নৌকায় শ্যালো মেশিনের ইঞ্জিন লাগানো হয়। ইঞ্জিনের পাখা পানির নিচে ঘুরতে থাকে। পাখা অনবরত ঘুরতে ঘুরতে মাটি নরম হয়ে পাথর বেরোতে থাকে। শ্রমিকরা সেই পাথর নৌকায় তোলে। এসময় বেশির ভাগ এভাবেই পাথর তোলা হয়।
ভোলাগঞ্জের এ জায়গাটা সবচাইতে সুন্দর। শুধু তাকিয়েই থাকতে ইচ্ছা করবে। আমরা এখানে ছিলাম ঘণ্টাখানেক। এরপর ফিরতি যাত্রা। সে গল্প না হয় আরেকদিনের জন্য তোলা থাক।
মন্তব্য
ছবি আসছে না মুস্তাফিজ ভাই।
হ
---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
সমস্যা, এখন ঠিক হয়েছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
একেই বলে শিল্পীর চোখ। আমি তো ছবির মতো দেখলাম না, ওপারেও গেলাম না
যাত্রার কষ্টকর চিত্র ছিলো ছোট বাচ্চাগুলোর পাথরের ধুলোর মাঝে বেড়ে উঠা। ক্রাশার মেশিনগুলো যে ধুলোটা বানাচ্ছে তা শরীরের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর হওয়ার কথা।
লেখাছবি দুর্দান্ত।
সেলিনা তুলি, বাবাইর নাম বাদ পড়ছে মুস্তাফিজ ভাই।
আলবাব পরিবার লিখেছিলাম, আচ্ছা এরপর থেকে সবার কথা আলাদা করে জানাবো।
...........................
Every Picture Tells a Story
সপরিবার খেয়াল করছি না
এ নিয়ে কিছু লেখবেন আশা করি।
...........................
Every Picture Tells a Story
মুস্তাফিজ ভাই আপনার ছবি নিয়ে নতুন করে আর কী বলবো?
লেখাও যে একদম ফাটাফাটি এটা বলে ও বোঝাতে পারছি না।
ধন্যবাদ আপনাকে। আমি বুঝে নিলাম।
...........................
Every Picture Tells a Story
দুর্দান্ত - লেখা, ছবি দুই-ই।
.........
আমাদের দূর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
ধন্যবাদ সংসপ্তক।
...........................
Every Picture Tells a Story
আমি এবার ছবি নয়, মুস্তাফিজ ভাইয়ের বর্ণনা এবং বর্ণনার ব্যাপ্তি ও গভীরতা নিয়ে ভাবছি। এটি নিছক ভ্রমণ কাহিনী হয়নি, ভ্রমণের আদলে প্রকৃতি, পরিবেশ, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, বিপদসঙ্কুল বর্ডার-- সবই উঠে এসেছে।
ছবির মধ্যে একদম প্রথম ছবিটা ফ্লিকারে যেমন দেখলাম এখানে একটু অন্যরকম লাগছে। ফ্লিকারে যেন বেশী সাদা মনে হচ্ছিল। এখানে একটা আলাদা টোন এসেছে মনে হচ্ছে। চোখের ভ্রম হবে হয়তো।
ভোলাগঞ্জের জায়গাটার অনেক ছবি ক্যাচ দ্য ড্রিমের ছবিতে (মনে হয়) দেখেছি। আসলেই দারুণ জায়গা মনে হয়।
ধন্যবাদ পিপি দা। আমি কোথাও গেলে স্থানীয় ইতিহাস, কালচার এসব আগে থেকেই জানতে চেষ্টা করি। হয়তো তার ছাপ লেখাতেও থাকে। আর আমাদের ছোট বেলায় মানে ৭৫ এর আগে সব পত্রিকায়, ম্যাগাজিনে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কিছু না কিছু লেখা থাকতই, আর অঞ্চল ভিত্তিক ম্যাগাজিন গুলোর প্রায় পুরোটাতেই থাকতো যুদ্ধ আর বীরত্বের কাহিনী, এসব সেখান থেকেই জানা।
ছবির কথা যেটা বলেছেন সেটা অন্য ছবি, একই মানুষের। ভোলাগঞ্জ নিয়ে অনেকেরই খুব ভালো কাজ আছে, সে তুলনায় আমারগুলা নস্যি। আমাদের উজানগাঁ এবারেও আমাদের সাথে ছিলো, ভালো ছবি দেখতে চাইলে ওর থেকে একটা ছবি ব্লগ আদায় করে নিন।
...........................
Every Picture Tells a Story
ছবি ও লেখা দুটোই দুর্দান্ত
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ তাসনীম
...........................
Every Picture Tells a Story
হ
আচ্ছা
...........................
Every Picture Tells a Story
দুর্দান্তিস!!!!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদান্তিস
...........................
Every Picture Tells a Story
একই যাত্রার পৃথক ফল যারে বলে !! আপনি অনেককিছু দেখতে দেখতে ভোলাগঞ্জ যান আর আমার সারাটা রাস্তা গেল ঘুমের উপর দিয়া। আপনারা যখন নদীর ওপারে আমি তখন এপারের বিডিআর ক্যাম্পে ঘুমে।:পি
লেখা ছবি দুইটাই ভালা পাইলাম।
হ, তোমাদের বাড়ি ঘর, একদিন না দেখলে কিছু না।
...........................
Every Picture Tells a Story
পাশবিক লেখা। অসাধারণ লেখা। ফাঁটাফাঁটি লেখা।
পূর্ণ পাঁচানন্দ!!
সিরাত ভয় পাইছি
...........................
Every Picture Tells a Story
সিলেটে উন্দাল নামে একটি খাবার দোকান আছে । ওখানে ভোলাগঞ্জের দারুণ একটা ছবি আছে ।
উনদালের মালিকদের একজন মোনায়েম ভাই। একজন বস ফটোগ্রাফার। আমার প্রথম দিককার লেখায় উনদালের কথা আছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
লেখা আর ছবি- দুটাই ফাটাফাটি!!
ধন্যবাদ বাউলিয়ানা
...........................
Every Picture Tells a Story
অসাধারণ বর্ণনা।
ফ্লিকারে বৃদ্ধের ছবিটা দেখে আগেই মুগ্ধতা জানিয়েছি। রোপওয়ের ছবিটা খুব সুন্দর লাগলো।
"আমরা জিন্দাবাজারে যে হোটেলে উঠেছিলাম" অংশটুকু একদম জড়িয়ে পাকিয়ে দেখতে পাচ্ছি। সমস্যাটা কোথায়?
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
সমস্যা কোথায় আমিও বুঝতে পারছিনা। আবারো চেষ্টা করলাম।
...........................
Every Picture Tells a Story
কে হায় হৃদয় খুড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে? :(
আপনার লেখাগুলো বাধিয়েঁ রাখনের মতো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বললাম যেতে, গেলেন না, থাকলে আরো মজা হইতো
...........................
Every Picture Tells a Story
আপনার হৃদয়ের বেদনা আরেকটু বাড়ানোর জন্যে অচিরেই একটা ছবিব্লগ আসিতেছে............. অপেক্ষায় থাকুন। :পি
...........................
Every Picture Tells a Story
আপ্নে কী খান গুরু?
কি মাঝি, ডরাইলা?
ভেজা,শুকনা সবই
...........................
Every Picture Tells a Story
- এইটা একটা বাঁধিয়ে রাখার মতো লেখা হয়েছে, ঈমানে কইলাম।
আর আপনার তোলা ছবি নিয়ে কী বলবো, সে আশা দিয়াছি ছাড়ি!
আপনি এরকম দৌড়ের উপরই (মতান্তরে, ঘুরার উপর) থাকেন মুস্তাফিজ ভাই। তাহলে এরকম ভয়ানক সুন্দর সব লেখা সম্বলিত ফটুব্লগ পাবো আমরা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আচ্ছা, আপনার Kreditkarte আর Belasten Sie Karte পাঠাইয়া দিয়েন। ঈমানে কইলাম বাসাতেই থাকুমনা।
...........................
Every Picture Tells a Story
- যাহ্ দুষ্টু!
[পোয়েটিক তুই-তুকারি কৈলাম]
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
...........................
Every Picture Tells a Story
দারুণ!
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ধন্যবাদ অনিন্দ রহমান।
...........................
Every Picture Tells a Story
মুগ্ধ হলাম! আমিও যেতে চাই...
সুমিমা ইয়াসমিন
সহজ উপায় হলো একদিন বন্ধু বান্ধব নিয়ে হুট করে চলে যাওয়া।
...........................
Every Picture Tells a Story
লেখা ছবি দুটোই দারুণ!
ধন্যবাদ পান্থ ভাইয়া। ইদানীং দেখাই পাওয়া যায়না।
...........................
Every Picture Tells a Story
মুস্তাফিজ,
'৭০ সালে সিলেটের এক ব্রিটিশ চা বাগানের 'মিস্ত্রী সাব' হিসাবে কাজ করতাম। খুব স্বরনীয় ছিল সেই দিনগুলি। লাক্কাতুরাসহ ঐ এলাকার অনেক চা বাগানে তখন ঘুরেছি। রাজেন্দ্র লাল গুপ্তের পরিবার আর বাগানের সমস্ত কর্মচারী হত্যার কথা জানা ছিল না। দুঃখ পেলাম শুনে।
আপনার লেখা খুব গভীর, আপনার ছবির মত সুন্দর।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
ধন্যবাদ সাইফ ভাই, একদিন সময় করে সিলেটের সেই কথা গুলো লেখে ফেলুন।
...........................
Every Picture Tells a Story
মুগ্ধান্তিস!
কুটুমবাড়ি
ধন্যবাদ
...........................
Every Picture Tells a Story
আপনার ছবি আর লেখা দেখে একএক দিন এক এক কথা মনে হয়-- কোনদিন মনে হয়, "আহ কী সুন্দর, আচ্ছা আমিও কেন তুলি না"? আরেক দিন মনে হয়, "আহ কী সুন্দর, দূর ... আমাকে দিয়ে এত ভালো ছবি হবে না"!
তারচে' মুগ্ধ হয়ে দেখতে থাকি...
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
ধন্যবাদ ভাই, আমি কিন্তু এখনও আপনার সেই ‘পানির ফোঁটার” ছবি গুলার দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি।
...........................
Every Picture Tells a Story
বরাবরই মুস্তাফিজিয়
--------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
ধন্যবাদ
...........................
Every Picture Tells a Story
আলোকবাবা অন ফায়ার! আমিও কয়দিন আগে ওইদিকে ঘুরে আসলাম- কিন্তু এতো কিছু তো খুঁটিয়ে খেয়াল করি নাই! আর রোপওয়ে পর্যন্ত যাওয়ার ইচ্ছা ছিলো- সময়ের অভাবে যেতে পারিনাই। এই আফসোসটা থেকে যাবে।
আর আসলেই- আপনার এই লেখাটাকে ভ্রমণব্লগের টেম্পলেট হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। লেখা, ছবি, ইনফো- সবকিছুই পারফেক্ট!!
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
মোবাইল ফোনে পড়েছিলাম, ছবি দেখিনি তখন।
দারুণ!!!
ধন্যবাদ শিমুল। একদিন ভোলাগঞ্জ থেকেই ঘুরে আসেন।
...........................
Every Picture Tells a Story
ইচ্ছা রইলো, মুস্তাফিজ ভাই...
বাসা থেকে আধঘন্টার পথ, তারপরও সিলেট গেলে ভোলাগঞ্জ যাওয়া হয় না এখন। লেখা পড়ে আর অসম্ভব সুন্দর ছবিগুলো দেখে ভালো লাগলো।
___________________________________
বৃষ্টির মধ্যে রোদ হয়ে তুই
পাতার গায়ে নাচ
কষ্টের রঙে সুখ হয়ে তুই
আমার মাঝে বাঁচ...
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
নতুন মন্তব্য করুন