চড়কের মেলায় একদিন

মুস্তাফিজ এর ছবি
লিখেছেন মুস্তাফিজ (তারিখ: রবি, ২৪/০৪/২০১১ - ২:১৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সতর্কতা: কিছু ছবি আর লেখা বাচ্চা কিংবা দুর্বল চিত্তের লোকদের দেখা কিংবা পড়া ঠিক হবে না।

-----------------------------------------------------------------------------------------

দেখতে দেখতে ঘড়ির কাঁটা রাত বারোটা পেরুলো। বিষ্ণুপুর গ্রাম। সেই গ্রামে চৌধুরী বংশের জমিদারদের এক বিশাল প্রাচীন পুকুর, কেউ বলে দুইশ কেউবা জানায় দেড়শ বছরের পুরাতন। জমিদারদের কিছুই এখন অবশিষ্ট না থাকলেও এই পুকুরটা আছে। আর আছে তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় চালু কিছু ধর্মীয় আচার। সেরকম এক আচার পালনে সন্ন্যাসী নিরঞ্জন দেবনাথসহ আরো তিন সন্ন্যাসী পুকুরপাড়ে চার জায়গায় নিজেদের শিষ্য-সামন্ত নিয়ে জ্বলন্ত আগুন ঘিরে গোল হয়ে বসে আছে। বিড়বিড় করে মন্ত্র আওড়ায় নিরঞ্জন। আজ নিয়ে নয় দিন উপবাসে কাটলো তার। শুকনো হাড় বের হওয়া শরীরে কাপড় বলতে একটামাত্র ধুতি। আগুনের আভায় নিরঞ্জনের পিঠে চিকচিক করা বড়শি গাঁথার অগুনতি দাগ আশেপাশের ভক্তদের তাঁর প্রতি আরো শ্রদ্ধা বাড়িয়ে তোলে। ওরা পুরোদমে শিঙ্গায় ফুঁ দেয়, ঢাক, ঢোল,‌ খোল, করতাল আর কাঁসার ঘণ্টার ছন্দবদ্ধ সুর তোলে। দমকে দমকে কাঁপতে কাঁপতে “বোল মহাদেব” বলে লাফিয়ে উঠে নাচতে থাকে সে। তাঁকে অনুসরণ করে তাঁর ভক্তরা, সবার গা খালি, কোমরে লাল রঙয়ের নেংটি। উন্মাদের মতন নাচতে নাচতে দলবলসহ আগুনের উপর চলে আসে নিরঞ্জন। ওরা লাফাতে থাকে সেই জ্বলন্ত আগুনের উপর, আর চিৎকার করে বলতে থাকে “বোল, বোল মহাদেব”। অতগুলা মানুষের পায়ের চাপে আগুন হার মানে, কমতে কমতে একসময় নিভে যায়। ওরা সমস্বরে একসাথে চিৎকার করে উঠে “শিবা বোল, বোল মহাদেব”।

শরীর থেকে ঘাম বেরুচ্ছে, ধড়ফড়িয়ে ঘুম থেকে উঠি। হাতড়ে হাতড়ে চশমা খুঁজে এনে ঘড়িতে সময় দেখি রাত সাড়ে তিনটা বাজে। উঠে এসে এক মগ ঠাণ্ডা পানি খাই, কফি বানাই। কফি হাতে এঘর সেঘর হাঁটতে হাঁটতেই ফোন আসে মাহবুবের, “বস আমি রেডি”। সেই ফোন রাখতে রাখতেই তৃষিয়া, “ভাইয়া, ক’টার দিকে আসবেন”? আমি আসছি বলে ব্যাগ কাঁধে নিচে নামি। বাড্ডা থেকে মাহবুবকে তুলে নিয়ে তৃষিয়াদের বাসার নিচে দাঁড়াতেই ওর খালাত ভাই হিমেলসহ গাড়িতে এসে ওঠে। ঢাকা থেকে আমরা এই চারজন চলছি সেই বিষ্ণুপুর গ্রামের উদ্দেশ্যে। সেই গ্রাম আমি চিনি না, কখনও যাইনি, আমাকে যারা বলেছে ওরাও ঠিকমতন জানে না এর অবস্থান। শুধু এটুকু বলতে পারলো মৌলবীবাজার আর শ্রীমঙ্গলের আশেপাশে কোথাও সেটা। মনে মনে “শিবা বোল, বোল মহাদেব” বলে গাড়ি স্টার্ট দেই।

ঢাকার জ্যাম পেরিয়ে ভৈরব সেতু পর্যন্ত আসতেই আটটা বেজে গেল। ভৈরব সেতুর পরই “উজান ভাটি” বলে একটা খাবার দোকান আছে, পাশের সিটে মাহবুবকে দায়িত্ব দিলাম সেখানে এলে যেন সতর্ক করে দেয় আমাকে, কিন্তু শহীদ মাখন চত্বরে পৌঁছানোর পরও ওদিক থেকে সাড়া না পেয়ে আড়চোখে তাকিয়ে দেখি মাহবুব ঘুমাচ্ছে। ঘুম আমার চোখেও, ঘুম ঘুম চোখে স্পিড মিটারের কাঁটা নব্বই ডিগ্রি বরাবর রাখাটাই সমস্যা। অগত্যা গল্প জুড়ে দিই ওদের সাথে। ডাকাতের গল্প, পুলিশের আর ছবি তোলার গল্প। একসময় খেয়াল হয় গাড়িতে তেল প্রায় শেষ। অগত্যা দাঁড়াতে হয় সামনের পাম্পে। তেল নেয়া হয়, সাথে পাশের দোকানে গানের তালে তালে নাস্তাও সেরে নেই। সিলেট থেকে যারা যাবে ওদের সাথে দুবার ফোনে কথাও হয়, ওরা তখন রওয়ানা দিচ্ছে, হিসাব করে দেখলাম প্রায় একই সময়ে বিষ্ণুপুর পৌঁছাব আমরা।

শায়েস্তাগঞ্জের মোড় পেরিয়ে খোয়াই নদীর ব্রিজ পেরিয়ে এলাম। দুই কিলোমিটার পর ডানে মোড়। কী চমৎকার সেই রাস্তা আর তার আশেপাশের দৃশ্য। দুপাশে উঁচুনিচু টিলার মাঝে চা বাগান, কয়েকদিন আগে বৃষ্টি হওয়াতে পাতার খোলতাই বেড়েছে। চিকচিক সবুজ, উপরে সূর্যের আলো পাতায় পাতায় স্বর্গীয় আভা ছড়াচ্ছে। আমরা দেখছি আর চলছি। এ রাস্তায় বাঁকগুলা খুবই তীক্ষ্ণ, সাবধানে চলতে হয়। বাঁকের মাথায় এসে আস্তে করে প্রকৃতির নীরবতা ভেঙে একবার হর্ন বাজাই, এক্সিলেটর ছেড়ে আলতো করে ব্রেকে পা দিয়েই আবার ছুটি। এভাবেই একসময় শ্রীমঙ্গল পৌঁছে গেলাম। সিলেট থেকে আসা গাড়ি থেকে নির্দেশমতন এবারে ডাইনে গাড়ি ঘুরালাম।

আগেরদিন যেভাবে কথা হয়েছিলো তাতে আমাদের বামের রাস্তায় যাবার কথা, ডান দিকের রাস্তাটা চলে গেছে লাউয়াছড়ার ভেতর দিয়ে ফুলবাড়ি চা বাগান পেরিয়ে কমলগঞ্জের দিকে। গতবছর একবার এসেছিলাম এদিকে, কমলগঞ্জ থেকে আবার ডান দিকে যে রাস্তাটা গিয়েছে তা ধরে পাত্রখোলা পর্যন্ত। আমার মনে সেই ঘটনা এখনও নাড়া দেয়। অদ্ভুত সুন্দর সেই জায়গা আর সেখানকার মানুষগুলা। ফুলবাড়ি চা বাগানের অধিকর্তা কোনো এক পূর্ণিমা রাতে তার বাগানে বাউলের আসর বসানোর কথা বলেছিলেন। এরপর কত পূর্ণিমা পেরিয়ে গেল আমার আর সময় হয়ে ওঠেনি। উনার বাগান পেরুবার সময় একবার ভাবলাম দেখা করে যাই, আবার ভাবলাম কী হবে শুধু শুধু কষ্ট বাড়িয়ে। এর আগে লাউয়াছড়ার বন পেরুবার সময় মনে পড়েছিলো সেখানকার রাজার চা পানের আমন্ত্রণের কথাও। সেটাও হয়ে ওঠেনি। লাউয়াছড়ার বনের মাঝখানের রাস্তার আশেপাশের গাছগুলো আগের চাইতে ঘন লাগলো আমার কাছে, গতবার পিকনিক পার্টির মাইক আর গাড়ির জ্বালায় যেখানে টেকা যাচ্ছিলো না সেখানে এবার গাড়ির ভেতরে থেকেও ঝিঁঝিঁপোকার ডাক শুনতে পাচ্ছিলাম।

দেখতে দেখতে কমলগঞ্জের মোড়ে পৌঁছে গেলাম, ডানদিকের রাস্তায় পাত্রখোলা, বামে ভানুগাছ আর সোজা শমশেরনগর। নির্দেশ এলো শমশেরনগরের দিকে চলে আসতে। সে রাস্তায় ঢুকেই বিশাল এক শোভাযাত্রার মাঝে পড়লাম। উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে বাংলা নববর্ষের শোভাযাত্রা। ঢাকার শোভাযাত্রার মতন বর্ণিল না হলেও এদের উৎসাহের কোনো কমতি নেই। কাদা দিয়ে মানুষ রাঙিয়ে অপরাজেয় বাংলার প্রতিকৃতি কিংবা পালকিতে নববধূ আর রঙিন নৌকা সবই আছে তাতে। শোভাযাত্রার অংশ হয়ে আমরাও চলছি আস্তে আস্তে, পাশ দিয়ে এক হাতি আমাদের সামনে চলে আসার সময় মাহুতের সাথে চোখাচোখি হলো আমার, চোখের ভাষা বুঝে নিয়ে মাহুত হাতিকে ইশারা দিলো, একবার কোমর দুলিয়ে দুপায়ের উপর দাঁড়িয়ে দুটো নাচের মুদ্রা দেখালে আশেপাশের মানুষ কিছুটা সরে দাঁড়ালে ওদের কাটিয়ে শোভাযাত্রার প্রায় সামনে চলে এলাম, এরপর আবারো আটকে গেলে মাহবুব নিচে নেমে সামনে থেকে মানুষজন সরিয়ে দিলে ওদের পেরিয়ে এলাম। সামনের উপজেলা চত্বর পেরিয়ে একটা চায়ের দোকানে অতিরিক্ত চিনি দেয়া দুকাপ চা খাবার পর উজানগাঁকে ফোন দিলাম।

এবারই প্রথম গন্তব্য সম্পর্কে স্পষ্ট একটা ধারণা পেলাম। সামনে ৩/৪ কিলোমিটার পরই মুন্সিবাজার বলে একটা জায়গা। আমাদের গন্তব্য সেখানেই। মুন্সিবাজার পৌঁছানোর প্রায় দশমিনিটের মাথায় ওদের গাড়িও চলে এলো। একটা মাইক্রোবাসে সাত/আট জন। সবার সাথে আগেই পরিচয় ছিলো, চা খেতে খেতে আমার সহযাত্রীদের সাথেও ওদের পরিচয় হলো।

পরিচয়পর্ব আর চা পানশেষে চলে এলাম পাশের বিষ্ণুপুর গ্রামের সেই পুকুরপাড়ে। সোজা রাস্তায় দূর থেকে এর পুবপাড়ে বসা মেলার রঙিন সাজ আগেই চোখে পড়েছে। চোখ ধাঁধিয়ে দেয়া রোদ সেদিন। পুবে-পশ্চিমে লম্বা পুকুরের দক্ষিণপাড় ধরে সরকারি রাস্তা, পশ্চিমপাড়ে চৌধুরীদের আদি বাসস্থান। দক্ষিণপাড়ে নামতেই প্রথমে সন্ন্যাসী নিরঞ্জন দেবনাথের সাথে দেখা, চড়কের গাছ পোঁতার যে গর্ত হয়েছে তাতে বাঁশের কাঠি ফেলে হাত দিয়ে মাপলেন। সোয়া তিন হাত গর্ত, দুবার মাপ নিয়ে নিশ্চিত হয়ে আমার দিকে তাকালেন, যেন কতকালের চেনা, বললেন মাপ ঠিকমতন না হলে অসুবিধা, গাছের ব্যালেন্স থাকবে না। একবার আকাশের দিকে তাকালেন, বিড়বিড়িয়ে অদৃশ্য ভগবানের উদ্দ্যেশে বললেন আমাদের দেবার কিছুই নেই রক্ত ছাড়া, আমরা রক্ত দান করবো। হাত ধরে নিয়ে এলেন ছাপড়া দিয়ে বানানো মন্দিরের সামনে, নিরাভরণ গোবর দিয়ে লেপা মাটির উপর কাপড় দিয়ে ঢাকা কাঠের পিঁড়ি বসানো, তাতে তার স্ত্রীর সুচিকর্মের কাজ। ছাপড়ার পাশেই গত রাতে আগুনের উপর নাচানাচির জায়গাটা বাঁশ দিয়ে ঘেরাও দেয়া। জানালেন কিছুক্ষণ পরই ছাপড়ায় প্রতিমা বাসানো হবে। আরো জানালেন রোদ নেমে না যাওয়া পর্যন্ত চড়ক ঘুরবে না। আমাদের পরামর্শ দিলেন ঘুরে ঘুরে মেলা দেখতে, আরো চারটা চড়কের আয়োজন দেখতে।

আমরা ছড়িয়েছিটিয়ে গেলাম। পুকুর লম্বায় প্রায় ৬০০মিটার, পাশে তার অর্ধেক। মেলায় আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। গ্রামীণ হাতে তৈরি জিনিসপত্রের পাশাপাশি মেশিনে তৈরি জিনিসপত্রও আছে। ঢুকতেই মানিক নামের এক তাবিজ বিক্রেতার জলসায় গেলাম, সাপ দেখিয়ে তাবিজ বিক্রি, কিছুটা সম্মোহিত করে কিছুটা ঠকিয়ে ভুলিয়েভালিয়ে টাকা উপার্জন, প্রায় চল্লিশ মিনিটের জলসায় উপার্জন একশ টাকারও কম। এরই মাঝে শিঙ্গা আর ঢোলকের শব্দে সেদিকে তাকালাম, পুবপাড়ের চড়কের গাছ উঠছে, গর্তের একমাথায় গাছের গুঁড়ি ঠেকিয়ে পেছন থেকে ঠেলে তোলা হচ্ছে, ওদের উৎসাহ দিতেই এই বাজনা। ছোট এক বাচ্চা শিঙ্গা ফুঁকছে দেখে ওর থেকে নিয়ে চেষ্টা করলাম একবার, ভোঁতা একধরনের শব্দ ছাড়া কিছুই বেরুলো না।

হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম উত্তরপাড়ে, আরেক চড়কের আয়োজন সেখানে। সারারাত আগুনের উপর নাচানাচি আর নয়দিনের উপবাসশেষে শ্রান্ত শরীর এলিয়ে নিঃসঙ্গ এক বটের তলায় কয়েকজন ভক্ত ঘুমাচ্ছে। তপ্ত হাওয়ায় এক ধরনের নির্মল বাতাস সেখানে। আমরাও কয়েকজন বসলাম। সামনের পুকুরঘাটে কয়েকজনের গোসল দেখতে দেখতে আমাদেরও গোসলের শখ জাগলো। এমন সময় খবর এলো আমার গাড়ি সরাতে হবে, যেখানে রেখেছি সেখানেও চড়ক বসবে একটা, এই রোদে উত্তরপাড় থেকে পুকুরের অর্ধেকটা ঘুরে দক্ষিণপাড়ে যেয়ে গাড়ি সরাতে যেতে মন চায় না, তারপরও যেতে হয়। গাড়ি সরাচ্ছি দেখে ওরা সেখানে চড়কের গাছ নিয়ে আসতে থাকলো। ১০/১২ জনের কাঁধে বিশাল এক শাল গাছের গুঁড়ি, সদ্য পুকুর থেকে তোলা, সবারই শরীর ভেজা, এর মাঝে উৎসাহ দেবার জন্য একজন ঢাকে তাল দিয়ে যাচ্ছে, বাকিরা সেই তালে গান বেঁধেছে, কথাগুলো উদ্ধার করতে না পারলেও “শিবা বোল বোল মহাদেব” কথাটুকু শুধু মাথায় ঢোকাতে পারলাম।

প্রচণ্ড রোদ, গরমে বাইরে বের হতে ইচ্ছা করে না। ঘড়িতে সময় দেখলাম দুপুর একটা। চড়কের মূল কাজ শুরু হতে দেরি আছে, সবার সাথে পরামর্শ করে রোদে আর ঘোরাঘুরি না করে এই ফাঁকে দুপুরের খাবার সেরে নিতে চাইলাম। অগত্যা সেই মুন্সিবাজার, সকালে যেখানে চা খেয়েছিলাম সেই হোটেলে। দুজন ভেতরে যেয়ে দেখে এলো খাবারের অবস্থা। আমরা হাতমুখ ধুয়ে বসে গেলাম। ঝাল মুরগির মাংস, ভাজি আর ডাল দিয়ে খাবারটা মন্দ হলো না।

পুকুরপাড়ে যখন ফিরে এলাম, লোকজন আগের চাইতে বেড়েছে। সাথে যোগ হয়েছে কয়েকটা টিভি চ্যানেলের স্থানীয় প্রতিনিধিদের উৎপাত। নিজেদের ভেতর একটা হামবড়া ভাব নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কিছু স্তাবকের দল পিছু নিয়েছে ওদের। স্থানীয় প্রতিনিধিদের কয়েকজন আবার আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণের ব্যর্থ চেষ্টার পর তৃষিয়ার পিছু নিয়েছে। আমরা দূর থেকে দেখি আর হাসি। তৃষিয়া এই ফাঁকে একটা সাক্ষাৎকারও দিয়ে ফেলেছে। চার জায়গার চারটা চড়কও উঠে গেছে এরই মাঝে। চড়কের আশে পাশে তখন চলছে পুরানের কাহিনির নাট্যরূপ, কিছুটা বুঝি কিছুটা ধন্ধ লাগে। ছোটবেলায় হোজ্জার একটা গল্পে পড়েছিলাম “হাসের স্যুপ তার স্যুপ, স্যুপের স্যুপ, জ্বাল দিতে দিতে পানি হয়ে গেছে”। এদের নাটকগুলোও তেমন, নানা কিছুর সংমিশ্রণে আদিরূপের খুব কমই অবশিষ্ট আছে। নানা ধরনের ধারালো অস্ত্রের পাশাপাশি চলছে শিব-কালীর যুদ্ধ। নানা জাতের নানা বয়সের নারী পুরুষ প্রচণ্ড উৎসাহ নিয়ে গোল হয়ে ঘিরে উপভোগ করছে সেসব। এরই মাঝে একজন আমার কাঁধে হাত রেখে বললেন “নিরঞ্জন দেবনাথ খুঁজছে আপনাকে”। তৎক্ষনাৎ উত্তরপাড় থেকে আবার চলে এলাম দক্ষিণপাড়ে।

নিরঞ্জন আমাকে চড়কের বড়শি দেখালেন, সুঁই দেখালেন। এক এক করে বালিতে ঘষে ঘষে সেগুলোতে ধার তুলছে লাল কাপড় পড়া সন্ন্যাসীরা, নিরঞ্জন হাত দিয়ে সেই ধার পরীক্ষা করছেন। সবগুলো ধার হয়ে গেলে অস্ত্রগুলোকে প্রণাম করে দুটো জবা ফুল ঘষে দিলেন। বললেন এটাই আমাদের মন্ত্র, এখন এটা যার শরীরেই লাগানো হোক ভগবানের দয়ায় তার কোন কষ্টই হবে না। নিরঞ্জন বলে চলেন সেই ১০বছর বয়স থেকে আমি এর সাথে জড়িত, তখন সাজতাম গৌরী। আর এখন অন্যদের চড়কের উঠার সহায়তা করি। পিঠ খুলে দেখালেন, তাতে অগুনতি বড়শি গাঁথার দাগ। আমাকে পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের একটা বিবরণ দিলেন। চারদিকে কাঁসা, শিঙ্গা আর ঢোলের শব্দে কথা তেমন বুঝা যায় না। পরিবেশ আস্তে আস্তে কেমন যেন আধ্যাত্মিক রূপ নিচ্ছে।

নিরঞ্জন আমার হাত ধরে টেনে পুকুরের কিনারে নিয়ে গেলেন। উচ্চস্বরে মন্ত্র জপতে জপতে তার পিছু নিলো জনাবিশেক ভক্ত। আমি পাড়ে দাঁড়িয়ে গেলাম, ওরা নিচে নেমে ডুব দিয়ে উঠলো, অদৃশ্য ভগবানের উদ্দেশে কপালে হাত ঠেকালো। নিরঞ্জন দুই হাত লম্বা একটা সুঁই হাতে নিয়ে উচ্চস্বরে চিৎকার দিয়ে বলে উঠলেন “শিবা বোল বোল মহাদেব”, সাথের ভক্তরাও পানিতে উদ্দাম নেচে নেচে সুর মেলালো, ঢাক, কাঁসা আর শিঙ্গার শব্দ মনে হয় আরো জোরে শোনা গেল। সামনের সদ্য লাগানো সাদা দাঁত বের করে পাগলের মতন হাসতে হাসতে নিরঞ্জন সেই সুঁই ঢুকিয়ে দিলেন একজনের জিহ্বা বরাবর, একটুও হাত না কাঁপিয়ে। আবার ঘুরে এক পাক লাগিয়ে আরেকটা সুঁই হাতে নিয়ে ঢুকিয়ে দিলেন আরেকজনের চোখ আর কানের পাশ দিয়ে নরম চামড়া ভেদ করে, ওরা নির্বিকার ভাবে একটুও উহ আহ না করে মন্ত্রের তালে তালে শরীর দোলাতে থাকলো। তাকিয়ে দেখলাম কেমন যেন ঘোর লাগা মানুষ মনে হচ্ছে নিরঞ্জনকে। অশরীরীর মতন হাঁটুপানিতে ঘুরতে ঘুরতে এক এক করে সেখানে থাকা সব ভক্তের কারো কাঁধে, কারো বাহু কিংবা কোমরে এক এক করে সুঁই বিদ্ধ করে চলছেন উনি। একসময় হাতের সবগুলো সুঁই শেষ হলে ওদের নিয়ে উঠে এলেন উনি। প্রচণ্ড জোরে বাজনার সাথে সুরে সুরে মন্ত্র পড়ে ওরা চড়কের সামনে চলে এলো, রামদা হাতে লাল কাপড় পড়া কয়েকজন ভক্ত ঘিরে রেখেছে ওদের, ঘুরে ঘুরে নাচতে থাকলো ওরা। অসম্ভব ভিড় সেখানে, গিজগিজ করছে মানুষ, ঠেলে সামনে যাবার ইচ্ছাটা দমন করতেই রামদা হাতে একজন এসে লোকজন সরিয়ে আমাকে ভেতরে ঢুকিয়ে দিলেন। পাগলের মতন নাচছে ওরা সেখানে। নাচের পর্ব একটু থামলে নিরঞ্জন একে একে সবার সুঁই খুলে নিলেন, ওরা একসাথে সবাই চিৎকার দিয়ে উঠলো “শিবা বোল বোল মহাদেব”।

সন্ধ্যা তখন লাগতে শুরু করেছে, আবহাওয়া গুমোট, কেমন একটা ঝড়ের পূর্বাভাস যেন। নিরঞ্জন আকাশের দিকে তাকালেন, আমাকে বললেন এখনই সময়। সন্ন্যাসীদের মাঝ থেকে বেছে বেছে চারজনকে নিয়ে চলে এলেন ছাপড়া দেয়া মন্দিরের সামনে। প্রতিমার সামনে দুহাত জোড় করে লম্বা হয়ে শুয়ে পড়লো ওরা। একজন এসে ওদের পিঠে দুটো করে বড়শি বিছিয়ে রাখলো, সেই বড়শির মাথায় আবার পাকা কলা আটকানো। হাঁটু গেড়ে বসলেন নিরঞ্জন, বিড়বিড় করে কী যেন আওড়ালেন, একজনের পিঠের উপর হাতটা আলতো করে সরিয়ে এনে হঠাৎ এক জায়গায় আঙুলের টোকা দিতেই পাশের একজন সেখানকার চামড়া চিমটা দিয়ে তোলার মতন হাত দিয়ে খপ করে তুলে ধরলেন, আর সাথে সাথেই নিরঞ্জন একটা বড়শি সেখানে গেঁথে আমার দিকে তাকিয়ে অদ্ভুত একটা হাসি দিলেন। সেসময় তাকে মানুষ বলেই মনে হচ্ছিলো না আমার। একট একটা করে বড়শি গাঁথেন আর আমার দিকে ফিরে অদ্ভুত একটা হাসি দেন। চারদিকে চিৎকার করে মন্ত্র পড়া সন্ন্যাসী আর সর্বশক্তি দিয়ে বাজানো বাদকের দল। ভিড়ের পেছনে দল বেঁধে থাকা মেয়েরাও উলু দিচ্ছে থেমে থেমে। একে একে সবার বড়শি গাঁথা শেষ হলে ওরা চারজন একসাথে উঠে দাঁড়ায়। আস্তে আস্তে হেঁটে আসে চড়কের পাশে, অন্যের পিঠে চড়ে ওদের তোলা হয় মঞ্চের উপর। জোড়া বড়শি বাঁধা হয় চড়কের দড়ির সাথে। গ্রামের লোকজন কেউ এসে কবুতর কেউবা কলা ধরিয়ে দিয়ে যায় ওদের হাতে। আকাশ ততক্ষণে কালো হয়ে উঠেছে, জোর বাতাস উঠেছে, লোকজন ছোটাছুটি করছে ঝড়ের আগমনের সংকেতে, ঠিক এমন সময়ই চড়ক ছেড়ে দেয়া হলো, চামড়ায় বড়শি গাঁথা সেই চারজন বড়শিতে ঝুলে ঘুরতে থাকলেন চড়কের চারপাশ। খোলা মাঠে ঝড়ের বাতাস হুঁ হুঁ করে বাড়তে বাড়তে চড়কের ঘূর্ণি বাড়িয়ে তুললো, পুকুরের পানিতে ঢেউ উঠলো, আকাশের দিকে তাকিয়ে হা হা করে অট্টহাসি দিয়ে উঠলেন নিরঞ্জন দেবনাথ। একসময় চড়ক থামলো। সারাটা মেলায় তখন মানুষের তোলপাড়, দৌড়াদৌড়ি, বাতাসে উড়িয়ে আনছে মেলা সাজানো কাগজ, পাতা, পূজার ফুল।

আমরাও দৌড়ে যেয়ে গাড়িতে উঠলাম।

এবারে ছবি দেখেন
ছবি-একঃ সাপের খেলা আর তাবিজ বিক্রি করছে মানিক সরদার
মেলায় সাপের খেলা

ছবি-দুইঃ শিঙ্গা বাজাচ্ছে ছোট্ট বালক
20110414-_Q8X0011-2

ছবি-তিনঃ চড়কের গাছ আনা হচ্ছে
চড়কের গাছ নিয়ে আসা হচ্ছে

ছবি-চারঃ ঠেলে তোলা হচ্ছে চড়কের গাছ
চড়কের গাছ তোলা হচ্ছে

ছবি-পাঁচঃ ৬৯ সাল থেকে চড়কে চড়া সন্যাসী নিরঞ্জন দেবনাথের পিঠ
'৬৯ সাল থেকে চড়কে চড়া সন্যাসী নিরঞ্জন দেবনাথের পিঠ

ছবি-ছয়ঃ ছাপড়া ঘরের মন্দির
চড়কের দেবী

ছবি-সাতঃ বাজনার তালে তালে নাচা
খেলা চলছে

ছবি-আটঃ খেলতে খেলতে রামদা,র উপর উঠে দাঁড়িয়েছে একজন
রামদা,র উপর উঠে দাঁড়িয়েছে একজন

ছবি-নয়ঃ মর্তে নেমে এলেন কালী
চড়কের নাচ

ছবি-দশঃ পুকুরে নেমে সুঁই ফোটানো হচ্ছে শরীরে
পুকুরে নেমে সুঁই ফোটানো হচ্ছে শরীরে

ছবি-এগারোঃ নিরঞ্জন দেবনাথ বড়শি গাঁথছেন
নিরঞ্জন দেবনাথ বড়শি গাঁথছেন

ছবি-বারোঃ বড়শি গাঁথা পিঠ
বড়শি গাঁথার পর উঠে দাঁড়িয়েছে

ছবি-তেরঃ চড়কে ঘোরানোর প্রস্তুতি
ঝোলানোর পর ঘোরানোর ঠিক আগে

ছবি চোদ্দঃ চড়ক ঘুরছে
পিঠে বড়শি গেঁথে চড়কে ঝুলিয়ে ঘোরানো হচ্ছে

শেষ ছবিঃ চড়ক শেষে ঝড়ের আগে
চড়ক শেষে ঝড়ের  আগে


মন্তব্য

অতিথি লেখকঃ অতীত এর ছবি

এইগুলা করে ক্যামনে মানুষ??? বিশেষ করে ১৪ নম্বর ছবিতে, ভয়াবহ, সুস্থ মস্তিষ্কের যে কেউই ভয় পেতে পারে, শুধু কিশোর না।

আপনার ছবি আগেই দেখেছিলাম মনে হয় বুনোহাঁস এর লেখায়। এইখানে বাকিগুলা দেখছি। ছবি নিয়ে কিছু বলার নাই। বিশেষ করে ৯ নম্বরটা। দুনিয়াতে দুই প্রজাতির ম্যান আছে, একটা আমাগো মতো সাধারণ ভোলভাল হিউম্যান আর আপনাগো মতো অশরীরী হাতের ক্যামেরাম্যান।

(অতীত)

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ অতীত।
এদের কাজ কর্ম আসলেই অবাক করার মতন।

...........................
Every Picture Tells a Story

নাশতারান এর ছবি

আপনার ছবি আগেই দেখেছিলাম মনে হয় বুনোহাঁস এর লেখায়।

অ্যাঁ

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

মুস্তাফিজ এর ছবি

হো হো হো

...........................
Every Picture Tells a Story

সুপ্রিয় দেব শান্ত (অতিথি) এর ছবি

ছবিতো আগেই দেখা।
লেখাটাও চমৎকার লাগলো।

সুপ্রিয় দেব শান্ত

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ শান্ত।

...........................
Every Picture Tells a Story

দ্রোহী এর ছবি

হে লোচন বক্সী,

গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

মুস্তাফিজ এর ছবি

ইয়ে, মানে...

...........................
Every Picture Tells a Story

নৈষাদ এর ছবি

মারাত্মক সব ছবি আর বর্ণনা। ভাল লেগেছে।

বুনোহাসের লেখা 'ঝড়ের বেগে চড়ক দেখাতে' - মৌলভীবাজার পৌছুলাম - বাক্যটা কিছুটা কনফিউজড করে দিয়েছিল আপনাদের রুটের ব্যাপারে। এখন বুঝতে পারলাম মৌলভীবাজার বলতে বুনোহাস আসলে মৌলভীবাজার জেলা বুঝিয়েছিল। মন খারাপ

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ নৈষাদ। বুনোহাস এব্যাপারে এখনও নাবালিকা, আর কিছুদিন আমাদের সাথে ঘুরলে ঠিক হয়ে যাবে। হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

নাশতারান এর ছবি

বুনোহাঁস এ ব্যাপারে এখনও নাবালিকা, আর কিছুদিন আমাদের সাথে ঘুরলে ঠিক হয়ে যাবে।

এইটা একটা খাঁটি কথা দেঁতো হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ম্যাপ সম্পর্কে ভালো জ্ঞান এরকম আডভেঞ্চারের জন্য অতীব জরুরী।

...........................
Every Picture Tells a Story

নাশতারান এর ছবি

হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

মুস্তাফিজ এর ছবি

হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

দুর্দান্ত!
দুর্ধর্ষ!!

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

তাই মনে হচ্ছে।

...........................
Every Picture Tells a Story

শামীম এর ছবি

সব ছবি লোড হওয়ার আগেই ভাগি। শয়তানী হাসি

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ঘাবড়ানোর কারণ নাই, ছবির সাইজ ছোট আছে।

...........................
Every Picture Tells a Story

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

আমি শুনেছি শুনেছি সেদিন তুমি তুমি তুমি মিলে
তোমরা সবাই মিলে মেলা দেখেছিলে...
আবার কখনও যদি সেই পথে যাও তবে
আমাকেও সাথে নেবে, নেবে তো আমায়?
---কি আর করি, দেখে আর পাঁচতারা দাগিয়েই সাধ মেটাই!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ রোমেল চৌধুরী। এ পর্যন্ত তো আজ্বান দিয়েই গেলাম। হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

নজমুল আলবাব এর ছবি

ছিলাম না, ইচ্ছে করেই যাইনি। চড়ক বিষয়টা আমার ঠিক ভালো লাগে না। দুর্বল চিত্তের মানুষ। আমি জানতাম আপনি সিলেটে আসবেন। বিকালে ফিরে যাচ্ছেন শুনে মনে হলো, গেলেই পারতাম। এলাকাটা আমার পছন্দের। চড়ক না দেখে আশপাশটা দেখতে পারতাম। আপনাদের সাথেও দেখা হয়ে যেতো।

আপনার লেখার বিষয়ে মন্তব্য করার কিছু নাই। এইটা এখন সুপারসনিক গতিতে এগুচ্ছে। একটা পুস্তক করে ফেলেন এখন।

সিলেটে পুনর্বার আসেন, না দেখা আরো সুন্দর বেরুচ্ছে, দেখে যাবেন।

মুস্তাফিজ এর ছবি

সিলেট যাবার ইচ্ছা এবং কথা দুটোই ছিলো। কেনো যে হয়ে উঠেনি। অবশ্য পরিশ্রান্ত ছিলাম খুউব। ভোর চারটা থেকে ড্রাইভ, এরপর সারাদিন রোদে। ভালো হয়েছে যে সেদিনই ফিরেছি। ওরা যে চা বাগানে থাকার অনুরোধ করেছিলো সেখানে কিংবা সিলেটেও যদি রাত কাটাতাম পরদিন আমাকে আর খুঁজে পাওয়া যেতোনা।
বিছানাকান্দির ছবি দেখলাম হাসান মোর্শেদের ফেসবুকে। ভালোই লেগেছে জায়গাটা।

...........................
Every Picture Tells a Story

দময়ন্তী এর ছবি

এই চড়ক আর অন্যদিকে তন্ত্রসাধনার ব্যপারস্যাপার আমার ঠিক পোষায় না৷ মন খারাপ

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

মুস্তাফিজ এর ছবি

আমার আবার সেইসব বোধ একটু কমই কাজ করে, তবে জানার আগ্রহ থেকেই এসবের পেছনে ঘোরা।

...........................
Every Picture Tells a Story

পোয়েট অব এ ডিমাইজ এর ছবি

যদিও কিছুটা অমানবিক, তবু বলতে হয় এটা বাঙালি সংস্কৃতির বিচিত্রত্ব প্রকাশ করে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ

...........................
Every Picture Tells a Story

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বাপ্রে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

হ, আসলেই কঠিন জিনিষ।

...........................
Every Picture Tells a Story

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

@মুস্তাফিজ সাহেব, হয় ভালো ছবি তুলবেন না হয় ভালো লিখবেন। দুটোই সমান ভালো হলে তো ভাই আমাদেরও মন খারাপ হতে পারে! চোখ টিপি

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

মুস্তাফিজ এর ছবি

বলেন কী?? শেষ পর্যন্ত আপনিও???

...........................
Every Picture Tells a Story

কৌস্তুভ এর ছবি

আপ্নে একটা ভচমানু, সে ব্যাপারে আর নতুন করে কী বলব। রিটন ভাইয়ের মন্তব্যে সহমত করে যাই। পাত্রখোলার লেখাটায় আমার দাবি ছিল আরেকটু লেখা আর আরো ছবির, এটায় সেসব সুদে-আসলে মিটিয়ে দিয়েছেন। আবার ওখানে দেখছি বলেছিলেন - "আমার বিবরণ দেবার ক্ষমতা এপর্যন্তই।" ! দেঁতো হাসি

মুস্তাফিজ এর ছবি

হো হো হো

...........................
Every Picture Tells a Story

মাহবুব রানা এর ছবি

এই পোষ্ট আশা করেছিলাম আরো আগেই, ভাবলাম ভুলে গেছেন কি না!
নয় নম্বর ছবিটা দেখে কেন যেন স্পেনে তোলা মনিপুরি নাচের ছবিটার কথা মনে পড়লো।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ মাহবুব রানা।
সত্য হলো সময় করে হয়ে উঠেনা। এ ধরনের আরো কিছু ছবি ফ্লিকারে আছে। সেখানেও দেখতে পারেন।

...........................
Every Picture Tells a Story

সুজন চৌধুরী এর ছবি
মুস্তাফিজ এর ছবি

হ ভাই আইতেছি রেডী থাকেন।

...........................
Every Picture Tells a Story

সুজন চৌধুরী এর ছবি

উরে বাই ! খোবে আইতাইন?!!!

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধরেন অক্টোবর নাগাদ। মেইল দিমুনে।

...........................
Every Picture Tells a Story

সুজন চৌধুরী এর ছবি

উরে!! রে! দারুণ !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

মুস্তাফিজ এর ছবি

হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

অভিকবাঙ্গালী এর ছবি

খুব ভাল হইসে বড় মামা। আপনার লেখাতো খুবি জশ, ফ্যান হইয়া গেলাম।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ মামা।

...........................
Every Picture Tells a Story

ফাহিম হাসান এর ছবি

আপনাদের ভ্রমণ-কাহিনি পড়ে মনটা খারাপ হল। কত জায়গায় যাওয়া হয় নি! আপনাদের পোস্ট পড়ে মনে মনে ঠিক করে ফেললাম - দেশে আসলে শুধুই ঘুরব।

ক্যামেরা ও কি-বোর্ডের উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ এখন আর অবাক করে না।

মুস্তাফিজ এর ছবি

আমিও ঠিক করেছি ঘোরাঘুরি করার জন্যই দেশান্তরী হবো।

...........................
Every Picture Tells a Story

ফকির লালন এর ছবি

ধন্যবাদ, আপনার সাথে আমরাও ঘুরে আসলাম মেলা।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ। আপনার শেষ লেখাটা এখনও কানে বাজে।

...........................
Every Picture Tells a Story

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

গা শিরশির করে রে ভাই। মনে হয় আমার গায়েই ওটা ফুটিয়ে দিচ্ছে হাসি

মুস্তাফিজ এর ছবি

নাহ্‌ ভয়ের কিছু নাই, আমিই ট্রাই দিতাম কিন্তু আমার কিলোয়েড হয়ে যায় বলে দেইনাই।

...........................
Every Picture Tells a Story

আরিফ (সিলেট) এর ছবি

অসম্ভব সাবলীল লিখা ,আপনার ছবি বেশি ভাল না লিখা বেশি ভাল তা নিয়ে দোটানায় পরে গেলাম, চালিয়ে যান । এই যাত্রায় আপনার সঙ্গ বেশ উপভোগ্য ছিল ।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ ডাক্তার। আবার দেখা হবে।

...........................
Every Picture Tells a Story

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চমৎকার পোস্ট - লেখা ছবি দুইই সুপার্ব!

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ মাহবুব ভাই।

...........................
Every Picture Tells a Story

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

মুস্তাফিজ ভাই,
ছয় নম্বর ছবির প্রতিমা আমার কাছে একেবারেই নতুন। এরকম প্রতিমা এর আগে দেখি নাই। নতুন বিষয় দেখানোর জন্য ধন্যবাদ। নয় নম্বর ছবিটা পুরাই কাঁকড়া...আর ভাই আপনের লেখাও সেইরম।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ মানিক চন্দ্র দাস। এটা আমার কাছেও নুতন, প্রতিমার ব্যাপারে নিরঞ্জনের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, স্থানীয় উচ্চারণে উনি যা বললেন সেটা ঠিক বুঝতে পারিনি আমি। পারলে তুলে দিতাম।

...........................
Every Picture Tells a Story

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

বহুবছর আগে কোনও একটা পত্রিকায় এই বিষয়ে একটা লেখা আর ছবি দেখেছিলাম। আজ অনেকবছর পর আপনি আবার সেই পুরোনো কথা মনে করিয়ে দিলেন। লেখা এবং ছবি, দুই'ই জোস হয়েছে। আপনার গাড়ির হেলপার না হলে আর হচ্ছেনা। আসেন বস, সপ্তাহব্যাপী উগ্রসফরে যাই, গাড়ি ভাগে চালাবো। খিদে পেলেই ইটালিয়ান হোটেলে খেয়ে নেবো। অবশ্য প্রকৃতি ডাক দিলে কি করবো তা ভাবতে হবে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মুস্তাফিজ এর ছবি

হাসি লোভ লাগেরে ভাই।

...........................
Every Picture Tells a Story

আয়নামতি1 এর ছবি

সত্যিই ভয়াবহ! সাবধানবাণী থাকা সত্ত্বেও পোষ্টে ঢুকে পড়েছিলাম পরীক্ষা করতে, আসলেই আমি দুর্বলহৃদয়ের মানুষ কিনা...চরমভাবে ফেল করেছি মন খারাপ

মুস্তাফিজ এর ছবি

চড়কের কাজে অনেক ছেলে মেয়ে ছিলও যাদের বয়স দশ বছরেরও কম! এমনকি সন্যাসী নিরঞ্জনের কথানুযায়ী উনি দশ বছর বয়সেই চড়কে চড়েছিলেন!! আমরা যারা এটাতে কোন আধ্যাতিক ব্যাপার খুঁজে পাইনা তারা পুরো ব্যাপারটাতেই একরকম নৃশংসতার ছাপ দেখি। তবে আমি তাদের অনূভুতিকে শ্রদ্ধা করি।

...........................
Every Picture Tells a Story

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমিও দুব্বল চিত্তের মানুষ... এইসবে আগ্রহ নাই
তয় লেখা ছবি [যদিও কয়েকটা চোখ বন্ধ করে দেখছি হো হো হো ] সবই দুর্দান্ত

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ নজরুল ভাই। আমিও চোখ বন্ধ করে ছবি তুলেছি। চাল্লু

...........................
Every Picture Tells a Story

মণিকা রশিদ এর ছবি

আমার কিন্তু খুব ইচ্ছে করছে চড়ক দেখার! দারুণ সব ছবি মুস্তাফিজ ভাই, লেখাগুলোও সেরাম!

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

মুস্তাফিজ এর ছবি

এদিকে পহেলা বৈশাখের সময় চড়ক বসে। কমল্গঞ্জ, ধামরাই, ঠাকুরগাঁও এই তিন এলাকার খোঁজ পেয়েছি যেখানে এখনও বড়শি গাঁথা হয়। আগে ভাগে চলে এসেন।

...........................
Every Picture Tells a Story

বাবু আহমেদ এর ছবি

ছবিগুলো সুন্দর হয়েছে।আরো ছবি দেয়া যায় না???

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ, আরো ছবি দেখতে চাইলে এখানে দেখুন http://www.flickr.com/photos/rahmanmm/sets/72157626515290628/

...........................
Every Picture Tells a Story

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

চমৎকার ছবি ও লেখা।

থাইল্যান্ডে এরকম একটা উৎসব হয়, আরো ভয়াবহ - জিহ্বার মধ্যে শলাকা গেঁথে...নাম মনে পড়ছে না।

মুস্তাফিজ এর ছবি

থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর আর মালয়েশিয়াতেও হয়। সিঙ্গাপুর আর মালয়েশিয়াতে ভারতের দক্ষিণ থেকে যারা অভিবাসী হয়ে গিয়েছেন ওরাই সাধারণত করে থাকেন। সেটার নাম "থাইপুসাম"।
আমি থাইপুসাম দেখেছি, ওখানে যেসব সেফটি মেজার থাকে সে তুলনায় এদিককার গুলা বেশী ভয়াভহ। শুধু বালিতে ঘষে পঁচা জবা ফুল ছুঁইয়ে যেটা করা হয় তার তুলনা করি কিভাবে?

...........................
Every Picture Tells a Story

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

মুস্তাফিজ ভাই, লেখা তো অসাধারণ।
আপনার ছবি বলেই দেখার লোভ সামলাতে পারিনি। উফ্ কী ভয়াবহ দৃশ্য!

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ অনিন্দিতা। ভয়াবহ ভাবলেই ভয়াবহ। চোখ টিপি

...........................
Every Picture Tells a Story

মুস্তাফিজ এর ছবি

কবে যাবা? রাজী।

...........................
Every Picture Tells a Story

উজানগাঁ এর ছবি

আপনার লেখা না ছবি ভালো সেটা নিয়া বিতর্ক হইতেই পারে এবার।

এইসব বিতর্ক থুইয়া আসেন বান্দরবনে ট্যুর দেই একটা। শর্ত একটাই সাথে ক্যামেরা নেয়া যাবে না। রাজি থাকলে আওয়াজ দেন।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বিষ্ণুপুর গ্রামটার লোকেশন বুঝতে পারলাম না। মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গলের ঐ দিকটা আমার ঘোরা আছে, একটু বিস্তারিত বললে বুঝতে পারতাম।

অটঃ একজন ভচমানু'র ছবি বা লেখার মান নিয়ে মন্তব্য করা শক্তির অপচয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মুস্তাফিজ এর ছবি

পান্ডব'দা এখানে দেখেন 24°25'47.22"N 91°49'45.31"E

...........................
Every Picture Tells a Story

অদ্রোহ এর ছবি

কিছু পরিমাণে বীভৎসতা থাকলেও এই মিস্টিক ব্যাপারগুলোর আমার একটা অন্যরকম আকর্ষণ আছে। আর লেখা, ছবি বরাবরের মতই অসাধারণ!!

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ অদ্রোহ। আশংকা যে এই ব্যাপারগুলো আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে বসেছে। কয়েক বছর পর হয়তো আর থাকবেইনা। এই প্রসংগে সুন্দরবনের মৌয়ালদের পূজার কথা মনে পড়লো। বছর সাতেক আগেও মধু সিজন শুরু হতো বনদেবীর পূজার মাধ্যমে। হাজার হাজার মৌয়াল তাতে অংশ নিতো। এখন আর পূজা হয়না, গত বিএনপি টার্মে সেখানকার এমপির (সম্ভবত জামাতের) নির্দেশে সেই যে মিলাদ শুরু হলো তা এখনও চলছে।

...........................
Every Picture Tells a Story

খেকশিয়াল এর ছবি

আচ্ছা মুস্তাফিজ ভাই, সুন্দরবনে কি এখন আর বনবিবি, দক্ষিণ রায় এদের কোনকিছুই দেখা যায় না? প্রতিমাও দেখা যায় না?

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

মুস্তাফিজ এর ছবি

কিছু কিছু জায়গায় স্ব-উদ্যোগে/স্থানীয় ভাবে অনাড়ম্বর কিছু অনুষ্ঠান হয় যেগুলো আসলেই ধর্মীয় আচার। আগে এটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ ছিলও। যেমন দুবলার রাসমেলা, এটা যতটুকু ধর্মীয় তার চাইতে বেশী স্থানীয়দের মেলামেশার একটা উপলক্ষ্য। রাসমেলা হয় মাছ ধরা সিজনের শুরুতে, সে সময় জেলেরা সবেমাত্র এসে দুবলায় ঘর বাঁধতে থাকে, মেলা উপলক্ষ্যে ওরা পুরাতনদের সাথে মিলিত আর নুতনদের সাথে পরিচিত হয়।

...........................
Every Picture Tells a Story

মুস্তাফিজ এর ছবি

বড়শি বিন্ধাইলে খবর দিয়েন, ছবি তুইলা দিমুনে। চাল্লু

...........................
Every Picture Tells a Story

খেকশিয়াল এর ছবি

নাটোরেও নাকি এইবার চড়ক পূজা হইছিলো। আমার দিদি বলতাছিলো দেখতে আসবি নাকি। বেশ ব্যস্ত আছিলাম কাজেকামে, যাইতে পারি নাই। আমি দিদিরে বলছিলাম, 'গেলে আমার পিঠে বড়শি বাইন্ধা ঘুরতে দিবো?' দিদি কয়, 'এহহহ আইসে বীরপুরুষ!'

বড়শি গাঁথার ছবিগুলা দেইখা বড় বড় ঢোঁক গিললাম!

আর আপনের ছবি আর লেখা নিয়া কী কমু.. আপনে নমস্য গুরু গুরু

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

Mahbubundp এর ছবি

অনেক ভাল লাগল লেখাটা পড়ে......... মনে হচ্ছে যেন আমি ওখানে ছিলাম......
next time আপনার সঙ্গে গিয়ে দেখে আসব......

মুস্তাফিজ এর ছবি

আচ্ছা ঠিকাছে, সাথে মাঠা নিয়ে যাবেন।

...........................
Every Picture Tells a Story

দুর্দান্ত এর ছবি

আপনার বর্ণনা সবসময়ের মতই অসাধারন।
--
একটা প্রশ্ন, চড়ক আর গাজন কি একই অনুষ্ঠান? পড়তে পড়তে জানতে পেলাম, চৈত্রের শেষে অ-ব্রাহ্মণ গোত্রেরা চড়ক ও গাজনে ধর্মদেবের মানত করে মৃৎপাত্র, ঘোড়া ও লৌহাস্ত্র। আমাদের গ্রামে গন্জের চৈত্রসংক্রান্তির মেলায় যে মাটির পাত্র, মাটির ঘোড়া আর নতুন দা'বটির সমাবেশ, তার শুরুটি কি তাহলে এভাবেই?
---
মালয়শিয়ার বাতু গুহার মন্দিরে স্থানীয় তামিলদের একটি অনুষ্ঠান দেখেছিলাম। সেখানে তারা মুরুগান (কার্তিক) এর সামনে গায়ে-জিহ্বায় সুই/বড়সি গেঁথেছিল।

মুস্তাফিজ এর ছবি

চড়কের মেলার দিনের নাম গাজন, তার মানে গাজনের দিনই চড়কে চড়া হয়। আগে বছরের শেষ দিন গাজনের জন্য নিদৃষ্ট ছিলো। এখন বছরের প্রথম দিন হলেও পুরাতন পঞ্জিকানুযায়ী এটা বছরের শেষ দিনই। চড়ক নানা ধরনের হতে পারে, ১ জন ঝুলিয়ে ঘোরানো, ৪ জনকে ঝুলিয়ে ঘোরানো কিংবা মঞ্চের উপর থেকে নীচে রাখা ধারালো কিছুর উপর লাফ দেয়া।
চড়কের পূজা হয় শিবের জন্য বা শক্তির পূজা। মুরুগানের ব্যাপারটা আলাদা, তবে সুঁই কিংবা বড়শি গাঁথার পদ্ধতি একই। চড়কের পূজা অনেক পুরাতন, কিন্তু বাটু কেভে মুরুগানের পুজা বা সিঙ্গাপুরের থাইপুসাম সবই শুরু হয়েছে বৃটিশ আমলে।

...........................
Every Picture Tells a Story

মুস্তাফিজ এর ছবি

বলতে ভুলেগেছি। যারা চড়কের সাথে জড়িত ওরা দশ দিন উপবাসে কাটায়। সন্যাসী নিরঞ্জনের ভাষ্যনুযায়ী মুসলমানদের রোজার মতন না হলেও সেটা একধরনের রোজাই। উপবাসের দশমদিন হলো গাজনের দিন। এর আগে নয়দিন ওরা বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে নিজেদের খাবার আর পূজার উপকরণ যোগাড় করে।

...........................
Every Picture Tells a Story

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

সিঙ্গাপুরে আমি এটা দেখেছি। টিক্কা মার্কেটের পেছনে যেটাকে লিটল ইন্ডিয়া বলে ওখানে। গায়ে-জিহ্বায় সুই-বড়শি গেঁথে রথের মতো দেখতে কিছু টেনে নিয়ে যাওয়া। খুবই বীভৎস লেগেছিলো আমার কাছে। (ওটা যে থাইপুসাম, সেটা জানলাম এই লেখা পড়ে) চরক নামটা শোনা ছিলো। কিন্তু সেটা যে থাইপুসামের মতো, ছবি দেখে বোঝা গেলো। বীভৎসতা আমার ভালোলাগেনা, সেটা যে ধর্মেই হোক না কেন। আমাদের দেশটার আনাচে কানাচে কতকিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কখনো দেখা ও জানা হয়নি, হয়ত এ জীবনে হবেও না। আপনার লেখা পড়ে সেটা জানি। ছবি দেখে তার স্বাদ গ্রহণ করি। অনেক ধন্যবাদ।

--------------------------------------------------------------------------------

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ ভাবি।

...........................
Every Picture Tells a Story

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

কত অজানারে জানাইলে বন্ধু।

অপূর্ব!

মুস্তাফিজ এর ছবি

হু, এক বছর হয়ে গেলো, এবারেও যাবার ইচ্ছা ছিলো। জীবনে আর কোনদিন যেতে পারবো কীনা জানিনা।

...........................
Every Picture Tells a Story

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।