অসুন্দরের সুন্দরবন

মুস্তাফিজ এর ছবি
লিখেছেন মুস্তাফিজ (তারিখ: রবি, ১১/১২/২০১১ - ৩:৩৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.
দুই তিনটা বৈঠা মেরেই থেমে গেলো ওরা, বাকি পথটুকু চলে এসেছি স্রোতের টানে, আমি যে ট্রলারে ছিলাম সেখান থেকে ঘাটে বাঁধা ট্রলারগুলো হাত পঞ্চাশেক দূরে। অতটুকু পেরুতে সময় লাগেনা। বসেছিলাম নৌকার পেছনে, ঘাটে ট্রলারের গায়ে নৌকা লাগতেই চালকদের একজন বললো- “সাবধানে উঠে আসেন, আপনাকে সামনের ফরেস্টের ট্রলারের উপর দিয়ে যেয়ে ঐ ট্রলারে নামতে হবে, সেখান থেকে ঘাটে উঠবেন। মাথা ঝাঁকিয়ে পেছন থেকে উঠে ফরেস্টের ট্রলারের ছাদ পেরিয়ে এপাশে চলে এলাম, নীচে যখন নামছি কেবিনের দরজা খুলে ওদের অফিসার মুখ বের করে ফিস্‌ফিসিয়ে বললেন যান, ভয় পাবেন না, আপনি যতক্ষণ থাকবেন আমার ট্রলার এখানেই এদের ট্রলারের সাথে লাগানো থাকবে।“ আমি কোন কথা না বলে বনবিভাগের ভাড়া করা ট্রলার থেকে নীচের ট্রলারে পা রাখলাম।
নিকষ কালো আলকাতরা মাখা ছাদবিহীন সেই ট্রলার লম্বায় চল্লিশ ফুটের মতন, মাঝের অর্ধেক ত্রিপল দিয়ে ঢাকা, এর নীচে শুয়ে থাকা মানুষের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়, ত্রিপলের ঢাকনার বাইরে দু’পাশেই বস্তা ফেলে বাংকারের মতন বানানো, ট্রলারের মাথায় সোলার প্যানেল আর একটা ছোট এন্টেনা। আমি নীচে নামতেই বাংকার থেকে কালো গেঞ্জি আর হাফপ্যান্ট পড়া বন্দুক হাতে একজন উঠে সালাম দিয়ে আমার হাত ধরে বললো “ডাকাতের নৌকায় স্বাগতম”।

২.
শীড়দাঁড়া বেয়ে একটা শিহরণ নেমে গেলো, ঠিক ঐ মুহুর্তে বুঝতে পারলাম সময় এবং পরিস্থিতির উপর আমি আমার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছি। যতক্ষণ আছি আমাকে নির্ভর করতে হবে এদের মন আর মেজাজ মর্জির উপর। ইচ্ছে করলে আমাকে নিয়ে যা খুশি তাই করতে পারে ওরা। আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়, মেরে ফেলা কিংবা আড্ডায় ঠাট্টা তামাসা অপমান সবকিছুই।

১৮ই ফেব্রুয়ারির এই রাতে আমার এখানে আসার কোন পূর্ব পরিকল্পনা ছিলোনা। অনেকটা উদ্দেশ্যহীনভাবে দুপুরের আগে আগে বুড়িগোয়ালিনী দিয়ে সুন্দরবনে নেমে একটানা ট্রলার চালিয়ে এদিকে চলে এসেছি। এই শিবসা নদীর দু’পাড় এবং স্বয়ং শিবসা নিজেই সুন্দরবনের ভয়ংকর জায়গাগুলোর অন্যতম। পর্যটকদের এখানে আসা হয়না। সুন্দরবনের ভেতরে কয়েকশ বছর আগের জনবসতির যেসব চিহ্ন এখনও বর্তমান তারই একটা শেখেরটেক, এখান থেকে পনের মিনিটের পথ। চল্লিশ/পঞ্চাশ বছর আগে সেখানে দোতলা ইঁটের বাড়ি চোখে পড়লেও এখন নদীতে মিশে যাওয়ার অপেক্ষায় কিছু ভাঙ্গা ইঁট ছাড়া আর কিছুই দেখা যায়না। এছাড়া লক্ষ্মীনারায়ণের কালী মন্দির এখান থেকে আগুনমুখার পথ বেয়ে ঘণ্টাখানিক যেয়ে হাতের ডানে প্রায় দেড় কিলোমিটার বনের ভিতরে। এই পড়োমন্দির কে কবে কখন বানিয়েছে সেটাও জানা যায়না। বিকেলে সেখানে যাবার ইচ্ছাটা বাদ দিতে হয়েছে সেদিকে গোলপাতা কাটার দায়িত্বে থাকা বনবিভাগের কর্মকর্তাদের কথায়। উনারা জানিয়েছেন নদীর পাড় থেকে এই দেড় কিলোমিটার হাঁটা পথ খুবই দূর্গম, হাঁটতে হবে ডালপালা কেটে রাস্তা বানিয়ে বানিয়ে, আমি যেসময় পৌঁছেছি তাতে সূর্য ডোবার আগে হয়ত কয়েকশ মিটার মাত্র যেতে পারবো, তাছাড়া আছে সাপের ভয়। ঐ অঞ্চল তাঁদের কথায় বিষাক্ত সাপের অভয়ারন্য। একান্তই যদি যেতে চাই তাহলে ঢুকতে হবে ভোরে, সবকিছু দেখে শুনে যেয়ে আবার ফিরে আসতে আসতে আট ঘণ্টা লেগে যাবে। ঠিক হলো পরদিন সকালে একবার চেষ্টা চালাবো সেদিকে যাবার। তাই রাতকাটানোর জন্য বেছে নিয়েছিলাম আদাচাই ফরেস্ট টহলফাঁড়ির পাশের খাল।

বিকেলের পরেই সুন্দরবনে রাত নেমে আসে। দিনের আলোয় সাহসী মানুষেরা বনে খালে নদীতে জীবিকার প্রয়োজনে ঘুরে বেড়ালেও রাতে নিজেদের আটকে রাখে ট্রলার কিংবা নৌকার ভেতর, সে আস্তানাও থাকে নদীর পাড় থেকে খানিকটা দূরে বাঘের লাফ দেয়া দুরত্বের বাইরে। সুন্দরবনের সেসময় অন্যরূপ। চাঁদের নরম আলোয় বনের সব গাছপালা অশরীরীর মত নিজের উপস্থিতি জানান দেয়, এরই ফাঁকে ফাঁকে জ্বলজ্বল করে বন্য পশুর চোখ, জোনাকের আলোর সাথে তার তফাৎ করাটাই তখন ধন্ধে ফেলে দেয়। কোথাও সামান্য শব্দ হলেই অভিজ্ঞরা ধরতে পারেন কী ঘটছে! একটু আগে গাছের ডালে ঝাঁপ দেবার শব্দ শুনে ওয়াহাব নিশ্চিন্তে বলে দিলো সাপে বানর প্যাঁচ দিয়েছে! কিংবা হরিণের ত্রস্ত ছুটে চলার শব্দের ধরন খেয়াল করে ওরা বুঝতে পারে হরিণের ভয় পাবার কারণ। বনে থাকা মানুষের এসময় ঘুমানো ছাড়া আর কোন কাজ নেই, এই নিয়মের ব্যতিক্রমে সন্ধ্যা থেকে পাশাপাশি নোঙর ফেলা বনবিভাগের ছয় ট্রলারের সব কর্মকর্তারা এসে আড্ডা জমিয়েছিলো আমাদের ট্রলারের ছাদে। দেড়মাস ধরে ট্রলারেই তাদের অফিস আর বাসস্থান। বাইরে থেকে আসা কারও সাথে আড্ডার সুখ উনারা ছাড়বেন কেনো? এই অঞ্চলে গোলপাতা কাটার মওসুম প্রায় শেষের পথে, আর হয়ত দুই এক দিন চলবে। আজ দেখেছি গোলপাতা ভরা বজরা বিজবিজ করে আস্তে আস্তে উপরদিকে উঠতে শুরু করেছে। ভরা বজরা জোয়ারে উপরে উঠে আর ভাটায় পাশের খালে বিশ্রাম নেয়। আমাদের আড্ডার বিষয়বস্তু নানান দিকে ঘোরাঘুরির পর সুন্দরবনের জীবন আর অবধারিত ভাবে এই অঞ্চলের ডাকাতদের কথায় ঘুরপাক খায়। জোৎস্নার আলোয় বসে বসে গল্প শুনতে মন্দ লাগেনা। একসময় জোৎস্না চলে যেয়ে দুই এক ফোঁটা বৃষ্টিও পড়েছিলো। গল্পের ফাঁকে রাতের খাবার সারা হয়েছে। গল্প থেমে যায় পাশের কাঁকড়া ধরা নৌকা থেকে ভেসে আসা গানে-

কান্দিয়া আকুল হইলাম ভবনদীর পাড়ে
মন তোরে কেবা পার করে
সুসময়ে দিন খোয়াইয়া অসময়ে
মন অসময়ে আইলাম নদীর পাড়ে
মাঝি তোর নাম জানিনা আমি ডাক দিমু কারে
মন তোরে কেবা পার করে
নাও আছে, খেওয়ানি নাইরে, মানুষ নাইরে পাড়ে
ও মন মানুষ নাইরে পাড়ে
মাঝি তোর নাম জানিনা আমি ডাক দিমু কারে
মন তোরে কেবা পার করে

ভাঙ্গা গলার উঠানামার সাথে হাড়ি পাতিলের তাল ঠুকাঠুকির অদ্ভুত ছন্দে অজানা গায়ক একটানা গেয়ে যায়। আমরা উদাস হয়ে পড়ি। বর্তমান ছেড়ে চলে যাই অন্য জায়গায়। ঠিক এমন সময় নিশুতি রাতে দূর থেকে সেই ট্রলারের পটপট শব্দে সচকিত হয়ে বর্তমানে ফিরে আসি সবাই, মাঝপথে থেমে যায় গান, মাছ ধরা নৌকাগুলোর বাতি এক সাথে টুপ করে নিভে যায়, আসরের সবাই একবার মুখ চাওয়া চাওয়ি করে, কেউ কেউ উঠে যার যার ট্রলারে ফিরে যায়। বনবিভাগের বন্দুকধারীদের কয়েকজন তৈরি হয়ে ছাদে পজিশন নিলে কোন একজন ভরাট গলায় বলে উঠে “আমি দেখছি”।

৩.
তখন অন্ধকার ভেদ করে শিবসার বাঁক থেকে কালো নীচু একটা ট্রলারের মাথা ভেসে আসে, একটু থেমে দুই একবার চক্করদিয়ে চারদিক পর্যবেক্ষণের পর আদাচাই টহলফাঁড়ির ঘাটে নোঙর ফেলে, সেখান থেকে টর্চের আলোয় সংকেত দিলে আরেকটি ট্রলার সোজা এসে আগেরটার সাথে যোগ দেয়। আবদুল ওয়াহাব আমার কানে কানে ফিসফিস করে বলে “রাজুর বোট”। বুঝতে সময় লাগলোনা সেসময়ে জীবিত সুন্দরবনের তিনটা প্রধান ডাকাতদলের অন্যতম শক্তিশালী রাজু ডাকাত এইমাত্র আদাচাই টহলফাঁড়িতে নেমে এসেছে।

হালকা কুয়াশায় কিছুটা পিচ্ছিল সেই ট্রলারের কাঠ, কিনারা ধরে হাঁটতে একবার পিছলে যেয়েও পড়ে যাইনি, নিচু হয়ে পায়ের কাছে হাত দিয়ে দেখলাম বাইরে কাঠের বডি হলেও ট্রলারের ভেতরের দিকটায় স্টিলের পাত বসানো, হয়ত গুলি ঠেকানোর কৌশল। আমি ট্রলারের খোল বেয়ে সাবধানে পা ফেলে ঘাটের কাছে চলে এলাম। সুন্দরবনের ফরেস্ট অফিসের ঘাটগুলো সাধারনত হয় চিকন, লম্বা আর উঁচু। জোয়ার-ভাটায় পানি বাড়ে-কমে বলে ঘাট থেকে বেশ কিছুটা হেঁটে ডাঙ্গায় আসতে হয়। ঘাটের এমাথায় আবারো দেখলাম দুই বন্দুকধারীকে। একজন হালকাভাবে আমার শরীরে হাত বুলিয়ে পরীক্ষা করে দেখলো, সাথে কিছু আছে কীনা।অনভ্যস্ততার কারণেই বোধহয় আমার পকেটে অন করা ছোট্ট রেকর্ডারটা ওদের সন্দেহের কারণ হয়নি। পরীক্ষা শেষ হলে আমাকে সোজা ফরেস্ট অফিসে ঢুকে যেতে বললো।

জোৎস্নার আলো কালো মেঘের আড়ালে, তারপরেও চারদিকে আবছা আবছা দেখা যায়। আমি যেদিক থেকে এসেছি সেই বামে তাকিয়ে আমাদের ট্রলারটা একবার দেখে নিলাম, সহযাত্রী পান্থকে রেখে এসেছি সেখানে। ট্রলারে ব্যাটারিতে চালানো বাতির প্রতিবিম্ব নীচের পানিতে দুলছে, আমাদের ট্রলারের পাশে বনবিভাগের গোলপাতা কুপের ট্রলারগুলোর কোন কোনটার ভেতর মানুষের আনাগোনা এখনও টের পাওয়া যায়। শিবসার ঢেউয়ের শব্দ আর কাছে-দূরে হরিণের ডাক আর তাদের হঠাৎ ছুটে চলার শব্দ ছাড়া চারদিক এখন নিঝুম। ঘাট থেকে আড়াইফুট চওড়া আর লম্বা কাঠের পথ মাটি থেকে পাঁচ হাত উপরদিয়ে সরাসরি বনঅফিসের বারান্দায় চলে এসেছে। সেই পথের দুধারে কাঠের রেলিং পতন আর বন্য পশুর যাতায়াত ঠেকানোয় সাহায্য করে। এই পথে আরো দুজন বন্দুকধারী, একজন মোবাইলে টর্চ জ্বালিয়ে বারান্দার পথ দেখালো আমাকে। মাফলার দিয়ে ঢাকা ওদের কারো চেহারা দেখতে পেলামনা। বারান্দায় ইতি উতি ঘোরাঘুরি করছে আরো জনা চারেক, প্রায় সবার হাতেই মোবাইল, কথা বলছে প্রিয়জনের সাথে। আরেকদিকে শব্দ শুনে বুঝলাম একজন কাঠের রেলিং এ ছুরি শানাচ্ছে।

সুন্দরবনের সবজায়গায় মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। ডাকাতের পলায়নপর জীবনে সংসার থেকে আলাদা এই মানুষগুলো তাই হঠাৎ পাওয়া ফ্রিকোয়েন্সির সদ্ব্যবহার করছে। নিঝুম এই এলাকায় হঠাৎ করে মোবাইল ফিকোয়েন্সি ব্যবহারের সূত্র ধরেই অতি সহজে এদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব এই সহজ বিষয়টা আইনপ্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মাথায় কেনো ঢোকেনা তা চিন্তা করতে করতেই ভেতরে ঢোকার সময় হয়ে এলো।

আমি এখন আদাচাই ফরেস্ট স্টেশনে। কাঠের মাচানের উপর দুইকক্ষের ফরেস্ট স্টেশন, পেছনে লাগোয়া রান্নাঘর আর একটু দূরে টয়লেট।স্টেশনের সামনে ছোট্ট একটা পরিত্যক্ত ঘর, তাতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য বিশাল কয়টা মটকা।সবগুলো ঘরই কাঠের মাচান দিয়ে একটার সাথে অন্যটা লাগানো। অন্য আর সব স্টেশনের মত এর পেছনে একটা পুকুর থাকলেও তাতে পানি নেই, তবে কাঠ আর লতাপাতা দিয়ে চারদিক ঘেরাও দেয়া। পরিচর্যার অভাবে সেই ঘেরাও এর নিশানা খুঁজে পাওয়া মুশকীল। একজন মাত্র সরকারী কর্মকর্তা আর দু’জন মাঝি নিয়ে এই স্টেশন। শুনেছিলাম বন্দুক নেবার অনুমতি থাকলেও বন্দুকের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই এখানকার কর্মকর্তা বন্দুক নেননি। নিজের নিরাপত্তার চাইতে এদের কাছে বন্দুকের নিরাপত্তা অনেক বেশী। পাশে বিশাল শিবসা নদীতে বড় বড় জাহাজ চলে, উজানে বজরা উঠে যায় মংলার দিকে আবার ভাটায় নীচে নামে, খাবার পানি নেই, বিশ্রামের জায়গা নেই তাই কেউ এখানে থামার প্রয়োজন দেখেনা। শুধু আশে পাশের খালে দূর থেকে কাঁকড়া আর মাছ ধরতে আসা গরীব মানুষেরা কখনও রাত হলে এই ঘাটের আশে পাশে নৌকা বেঁধে থাকে। আর মওসুমের সময় গোলপাতা কাটার দল। এছাড়া ধরতে গেলে পুরো সময়টাই এদের নিঃসঙ্গ কেটে যায়, সবচেয়ে কাছের জনপদ নলীয়ান কিংবা হড্ডা ইঞ্জিন চালিত নৌকায় দেড় দুই ঘণ্টার পথ।এই নিঃসঙ্গতার মধ্যেও সবসময় সতর্ক থাকতে হয় কখন ক্ষুধার্ত বাঘ হামলা করে। এই আদাচাই স্টেশন কর্মকর্তাই একবার দুইরাত নৌকায় কাটিয়েছে তার বিছানা বাঘের দখলে ছিলো বলে।

ফলে যা হবার তাই হয়। সময় অসময়ে ডাকাতেরা এসে এসব স্টেশনে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়, মাঝে মাঝে রান্না বান্না, খাওয়া দাওয়াও সারে।ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রলারে কাটানোর পর বন অফিসের খোলা জায়গায় হাঁটাহাঁটি করে, কখনও আশে পাশে নোঙ্গর ফেলে রাত কাটায়, বন অফিসে কোন এক দলের ডাকাতের উপস্থিতি অন্য ডাকাত দলকে সতর্ক করে দেয় তাদের সীমানা সম্পর্কে, তারপর চলে যায়। এসব স্টেশনে ডাকাতরা নিরাপদ, বিনিময়ে কর্মকর্তারাও এদের কাছে নিরাপদ, নিয়ম আর অনিয়মের এ এক অলিখিত সমঝোতা। ইচ্ছা থাকলেও অসীম সাহসী বনবিভাগের কোন কোন কর্মকর্তাকে তাই বিবেকের কাছে দোষী হওয়া ছাড়া কিছুই করার থাকেনা।

বারান্দা থেকে ভেতরে ঢুকলাম, বারো বাই বারো ফুটের ছোট্ট একটা ঘর, দুপাশে দুটো দরোজা, দুটো জানালা, দুপাশের কাঠের দেয়াল ঘেঁষে দুটো চৌকি, চৌকির মাঝখানে একটা কাঠের টেবিল, দুটো চেয়ার, উপরে টিমটিম করে জ্বলছে একটা হারিকেন। হারিকেনের মৃদু আলো আর সিগারেটের ধোঁয়ায় চারদিকে একটা ভৌতিক আবহ।টেবিলে ভারতীয় মদের বোতল, কোক, নানান সাইজের চার পাঁচটা গ্লাস, তিনটা আগ্নেয়াস্ত্র আর দুইটা বড় ছুরি। দরোজার ডানে প্রথম চৌকিতে শুয়ে বসে আছে তিন জন, সামনের চৌকিতে দুজন আর পেছনের দরোজায় অস্ত্র হাতে পাহারায় একজন। প্রথম কথা এলো সামনের দুজন থেকে, “আসেন, এই চেয়ারে বসেন।“

চেয়ারে বসতে বসতে সামনে হাত বাড়িয়ে তাকালাম দুজনের দিকে, আমার ঠিক সামনের জন পদ্মাসনে বসে আছে, লাল বার্মিজ লুঙ্গী, চটকদার রঙ্গীন ফতুয়া আর মাথায় রাজস্থানী পাগড়ি, কোলের উপর আড়াআড়ি একটা নাইন শুটারগান কিন্তু কাঁধের উপর দিয়ে পেঁচানো টোটা গুলির ফিতা। ক্লিন শেভ, ফর্সা গোলগাল চেহারার সাথে ইবনে মিজানের ছবির চরিত্রের অনেক মিল। অন্যজন একটু দূরে, অন্ধকারে চেহারা ঠিক ঠাহর করা যায়না, হালকা পাতলা, কালো, চোয়াল ভাঙ্গা, গাঢ় রঙের প্যান্ট আর একসাইজ বড় জ্যাকেট গায়ে। শরীরের সাথে বেমানান মোটা লম্বা আঙ্গুল দিয়েআমার সঙ্গে হাত মেলানোর সময় বললো “আমার নাম রাজু।“

বাকিটুকু পরের পর্বে


মন্তব্য

উজানগাঁ এর ছবি

দিলেন শেষপর্যন্ত!

মুস্তাফিজ এর ছবি

হ, এখন ঘুম দেই।

...........................
Every Picture Tells a Story

ফারুক হাসান এর ছবি

উফ! টানটান উত্তেজনা নিয়ে পড়লাম। জলদি পরের পর্ব দিয়েন।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ ফারুক ভাই। আশাকরি জলদিই লেখে ফেলবো।

...........................
Every Picture Tells a Story

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

আগামী পর্ব কবে দিবেন? ইটা রাইখ্যা গেলাম...

মুস্তাফিজ এর ছবি

এইতো, দিচ্ছি।

...........................
Every Picture Tells a Story

তারেক অণু এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম চলুক দারুণ, অপেক্ষা করছি।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ।

...........................
Every Picture Tells a Story

অরফিয়াস এর ছবি

উত্তেজনার ঠেলায় এই শীতেও ঘাম বের হয়ে গেছে .... চোখ বড় বড় করে এক নিঃশ্বাসে শেষ করলাম....

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মুস্তাফিজ এর ছবি

"উত্তেজনার ঠেলায় এই শীতেও ঘাম বের হয়ে গেছে"
লাইনটা চমৎকার, ধার নিলাম।

...........................
Every Picture Tells a Story

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

এবার বনের ছবি নাই! তবে যার বর্ণনা এত দুর্দান্ত তার চোখে বন দেখতে অত কষ্ট করতে হয় না।
কিন্তু এখানে এসে ছেড়ে দিলেন! তারপর কী হলো? এই গল্প বিস্তারিত শুনতে চাচ্ছি কবে থেকে! তাড়াতাড়ি পরের পর্ব আসবে সেই আশা রাখছি...

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

আরে তাইতো!! উত্তেজনার ঠেলায় ছবির ব্যাপারটাই ভুলে গেছি। হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হ! ডাকাতদের সাথে গলা জড়ায়ে ধরে দুইটা ফটুক দিবেন, তা না... খালি ফাঁকিবাজি, বুঝি তো...! দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ছিঃ ডাকাতরা সব পুরুষ। গলা জড়িয়ে ধরি কেমনে?

...........................
Every Picture Tells a Story

ফারুক হাসান এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (অফ্লাইন) এর ছবি

দোস্ত'দের লগে দোস্তরা ঘাড়ে ঘাড় মিলায়ে গলা জড়ায়ে ফটুক তুলে না?! চিন্তিত

মুস্তাফিজ এর ছবি

হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

টান্টান উত্তেজনা ... অপেক্ষায় ...

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ কবি।

...........................
Every Picture Tells a Story

সুপ্রিয় দেব শান্ত এর ছবি

অনেকদিন পর লিখলেন।

টান টান উত্তেজনা .......... তাড়াতাড়ি পরের পর্ব দেন।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ শান্ত।

...........................
Every Picture Tells a Story

তাপস শর্মা এর ছবি

চলুক দারুন অভিজ্ঞতা। পরের পর্বের জন্য পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম বসলাম ।

মুস্তাফিজ এর ছবি

আসলেই অভিজ্ঞতাটা অন্যরকম।

...........................
Every Picture Tells a Story

হাসান মামুন এর ছবি

ঘেঁয়াও... আপনি এইসব ডাকাতদের মতই দেখি। সব সময় চিন্তায় রাখেন । আবার কবে বাকিটা দিবেন সেই চিন্তায় কাহিল হইয়া যাব দেখি।
ইটা রাইখ্যা গেলাম... দিয়া বইসা থাকলাম অসাধারন লেখার বাকিটা পড়ার জন্য ।

মুস্তাফিজ এর ছবি

নাহ্‌ এবারে পরেরপর্ব লেখেই ফেলবো।

...........................
Every Picture Tells a Story

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আপনার লেখা, মুস্তাফিজ ভাই, দিন দিন শুধু ধারালো হচ্ছে।

অপেক্ষায় থাকলাম।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ পিপি দা।

...........................
Every Picture Tells a Story

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দমবন্ধকরা ব্যাপার স্যাপার... পরের পর্বের অপেক্ষায়

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মুস্তাফিজ এর ছবি

সেখানে আপনার প্রসঙ্গও এসেছিলো হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

মানে! ডাকাতদের কি নজরুলের রেফারেন্স দিয়েছিলেন অথবা ডাকাতরা কি ...........!!!

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ডাকাতরা নজরুলের রেফারেন্স দিছে।

...........................
Every Picture Tells a Story

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অনেকদিন পর লিখলেন। লেখা তো বরাবরের মতোই দারুণ। পরের পর্বের অপেক্ষায়। তাড়াতাড়ি দিয়েন।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ প্রহরী। আসলেই কী অনেকদিন পর লেখেছি? শ্রাবণমেঘের দিনের পর এই মাঘ মাসেও তোমার লেখা নাই!

...........................
Every Picture Tells a Story

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

শ্রাবণমেঘের দিনের পর এই মাঘ মাসেও তোমার লেখা নাই!

চলুক

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সুমাদ্রি এর ছবি

রোমাঞ্চিত! ডাকাতদলের ডাকেই গিয়েছিলেন ফরেস্ট অফিসে? পরের পর্বের জন্য বসে রইলাম।

মুস্তাফিজ এর ছবি

পরেরপর্বে পেয়ে যাবেন। ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।

...........................
Every Picture Tells a Story

চরম উদাস এর ছবি

দারুণ

মুস্তাফিজ এর ছবি

হু, লাইফ সাক্স

...........................
Every Picture Tells a Story

কাশফুল এর ছবি

উফ্ দারুণ লেখা।
কিন্তু এটা কি হলো, এখানে শেষ করে দিলেন।
তাড়াতাড়ি পরের পর্ব দিয়ে দম নিতে দেন ভাইয়া। দম আটকে বসে আছি। দেঁতো হাসি

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ, পরের লেখা চলে আসবে।

...........................
Every Picture Tells a Story

পথিক পরাণ এর ছবি

দুর্দান্ত!!! বনের পুরো ছবিটা যেন চোখের উপর মেলে ধরলেন!
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

---------------------------
পথেই আমার পথ হারিয়ে
চালচুলোহীন ছন্নছাড়া ঘুরছি ভীষণ...

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ পথিক পরাণ

...........................
Every Picture Tells a Story

সাফি এর ছবি

খাইসে খাইসে খাইসে

মুস্তাফিজ এর ছবি

হুম খাইসে

...........................
Every Picture Tells a Story

খেকশিয়াল এর ছবি

ওরে খাইসে রে!! উইঠা বসি!! শিঘ্রো পরের পর্ব ছাড়েন!!

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

মুস্তাফিজ এর ছবি

হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

অন্যকেউ এর ছবি

দুর্ধর্ষ! দুর্ধর্ষ! পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম নিয়ে বসে আছি। প্রতিটা সেকেন্ডের কাহিনি না শুনলে অতৃপ্ত রয়ে যাবো। হাসি

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

মুস্তাফিজ এর ছবি

চেষ্টা থাকবে।

...........................
Every Picture Tells a Story

কল্যাণF এর ছবি

গুরু গুরু ^:)^ গুরু গুরু ^:)^ গুরু গুরু ^:)^ গুরু গুরু ^:)^ গুরু গুরু ^:)^ গুরু গুরু

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ

...........................
Every Picture Tells a Story

নীড় সন্ধানী এর ছবি

টানটান উত্তেজনা নিয়ে পড়তে পড়তে শেষ লাইনে এসে চরম ধাক্কা খেলাম- "বাকিটুকু পরের পর্বে" মন খারাপ

এরকম সময়ে কেউ থামে!!?? পরের পর্ব না আশা পর্যন্ত অশান্তিতে থাকবো, জলদি আসুক পরর পর্ব

লেখায় আগাগোড়া চলুক

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

মুস্তাফিজ এর ছবি

বেশী উত্তেজনা শরীরের জন্য খারাপ

...........................
Every Picture Tells a Story

যুধিষ্ঠির এর ছবি

দু'দিন বিরতিতে সচলে ঢুকে আপনার নাম নীড়পাতায় দেখে ভেবেছি সচল মনে হয় ডাউন, আর পুরনো কোন একটা পাতা দেখাচ্ছে! আমি বার বার রিফ্রেশ করার পরে বুঝলাম, না আপনি আসলেই লেখা দিয়েছেন! অনেক ধন্যবাদ!

লেখা পড়ি নি এখনো। পড়ে এসে বাকি মন্তব্য করছি দাঁড়ান।

মুস্তাফিজ এর ছবি

আসেন আসেন বসে আছি। আপনার দেয়া রেকর্ডারটা সেদিন পকেটে অন করা অবস্থাতেই ছিলো। হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

যুধিষ্ঠির এর ছবি

পড়লাম। চমৎকার লাগলো লেখা, বর্ণনা। মনে হচ্ছে রহস্যোপন্যাসের শুরু। হয়ে যাবে নাকি উপন্যাস একটা?

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ যুধিষ্ঠির, উপন্যাস লেখতে লিলেন'দা কে লাগবে।

...........................
Every Picture Tells a Story

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

উফ! সেই রুদ্ধশ্বাসের রাতের কথা কি বলবো! এসি'র হিম ঠাণ্ডাতেও গা দিয়ে ঘাম ছুটছে।
আচ্ছা মুস্তাফিজ ভাই, ভাঙ্গা স্থাপনার একটা ইঁটের টুকরা নমুনা হিসেবে আনছিলেন না, ওইটা কি কোনো প্রত্ন গবেষককে দেখাইছেন? তারা কত পুরোনো বলে?
আমি বই ঘেঁটে সুন্দরবনের প্রাচীন স্থাপনার একটা খোঁজ নিতে গেছিলাম। সতীশচন্দ্র মিত্রের খুলনা যশোহর জেলার ইতিহাস বইতে এ নিয়ে একটু-আধটু বলা আছে। সেখানে এগুলো মোঘল আমল ও রাজা প্রতাপদিত্য'র সময়কালের বলে বলা হয়েছে। যদিও নিশ্চিত করে বলতে পারেনি।
এ বইটাতে এই কালিমন্দিরের কথাও আছে। এ এফ এম আবদুল জলিলের সুন্দরবনের ইতিহাস বইতেও দেখলাম এগুলো নিয়ে বলা হয়েছে। বইগুলো আবার দেখে আপনাকে জানাবোনে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

আবদুল জলিলের সুন্দরবনের ইতিহাস বইটা আমি পড়েছি। সতীশ মিত্রও,অনুমান নির্ভর সময়ের কথা সব জায়গাতেই, তাই সিদ্ধান্তে গেলামনা।

...........................
Every Picture Tells a Story

বন্দনা এর ছবি

উফ কি ভয়ংকর সব ব্যাপারস্যাপার, কিন্তু এইখানে শেষ করে দিলেন এটা কোন কথা হোল ভাইয়া। মন খারাপ

মুস্তাফিজ এর ছবি

শেষ হয়নাই। আসিতেছে। এইটা ট্রেলার।

...........................
Every Picture Tells a Story

অভিকবাঙ্গালী এর ছবি

মামা জব্বর হইছে, আপনি রেগুলার লেখবেন এই অভিজ্ঞতা গুলি। দারুন!

মুস্তাফিজ এর ছবি

এখন মামা দিন আনি দিন খাই অবস্থা!

...........................
Every Picture Tells a Story

মাহবুব এর ছবি

দারুন এবং ভয়াল লেখা। খূব ভাল লাগল পড়ে...

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে।

...........................
Every Picture Tells a Story

নজমুল আলবাব এর ছবি

এই গল্পতো আমার শোনা গল্প। ফোনে, তারপর সামনাসামনি বসে তারপর আবার লেখার শুরুতে জিমেইলে...

আপনি কি চমৎকার আসর বানিয়ে গল্প করতে পারেন সেটা কি জানেন? পানের বাটা নিয়ে বসে বয়েসী বৃদ্ধরা যেমন পরত পরত খুলে দেয় গল্পের এপিঠ - ওপিঠ, ঠিক সেরকম আপনিও।

আপনার লেখার ধরন ধারন এখন সেই বলার ধরনের সাথে মিলে মিশে একাকার। লেখক হিসাবে আপনি কতর মাঝে কত পাবেন সেটা জানি না। কিন্তু নাম্বারিং এর দায়িত্বটা আমি যদি পাই তবে ১১০ দেবো। পরিচ্ছন্নতার জন্য যে মার্কসটা থাকে, সেটাও যে দিতে হবে।

পেশাদার একটা ভাব কিন্তু চলে এসেছে। আগে যখন দেশ প্রত্রিকায় নিয়মিত উপন্যাস পড়া হতো, তখন শেষ দিকে এসেই মেজাজ বিগড়ে যেতো, এমন একটা যায়গায় থামানো হতো একেকটা পর্ব! উফ্, হিন্দি সিরিয়াল দেখা বাংগাল মহিলা সমাজে এখন সেই উচাটন দেখি। এই যে পিশাদারিত্ব, সেটা আপনি পুরাটাই আয়ত্ব করে ফেলেছেন। মেজাজ টন টন করছে নিশ্চয় অনেকের। শোনা গল্প পড়তে গিয়ে যদি আমারই এমন হয়, নতুন পাঠকের কেনো হবে না?

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ হাজী সাব। তোমাকে অনেকদিন পর দেখে ভালো লাগছে। সব মানুষের জীবনেই এমন কিছু গল্প থাকে যেই গল্প তাকে অনেকদিন অন্যদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখে। অন্য অনেকের মতই আমি সেই গল্পগুলো স্মৃতি থেকে তুলে রাখার চেষ্টা করছি মাত্র।
পর্বের ব্যাপারটার মাঝে কোন পেশাদারিত্বের ঘটনা নাই, অতটুকুই লেখা হয়েছে, বাকিটুকু সহসাই লিখে ফেলবো আশা করি।

...........................
Every Picture Tells a Story

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আপনি কি চমৎকার আসর বানিয়ে গল্প করতে পারেন সেটা কি জানেন?

পুরাই! আর মানে লেখেনও ঠিক একইরকম, পুরা আসর জমাট!

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ আবারো।

...........................
Every Picture Tells a Story

কৌস্তুভ এর ছবি

একেবারে পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

মুস্তাফিজ এর ছবি

এক প্যাকেটে হবেনা, ঝামেলায় আছি।

...........................
Every Picture Tells a Story

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

একদম কাকাবাবুর গল্পের এডভেঞ্চারের মতন।

... পরের পর্ব আসুক। চলুক

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ

...........................
Every Picture Tells a Story

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

এমন একটা জায়গায় এসে পজ দিলেন ভাই। তাড়াতাড়ি পরের পর্ব ছাড়েন, তর সইছে না।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মুস্তাফিজ এর ছবি

আচ্ছা

...........................
Every Picture Tells a Story

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

এমন একটা জায়গায় এসে পজ দিলেন ভাই। তাড়াতাড়ি পরের পর্ব ছাড়েন, তর সইছে না।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নির্ঝরা শ্রাবণ এর ছবি

মুস্তাফিজ ভাই,
এইটা কি হইল.........মনে হইতাছিল দস্যু বনহুর সিরিজ পড়তাছি......... হঠাৎ এমন এক জায়গায় এমনভাবে থামলেন মনে হইল হিন্দি সিরিয়াল.........
পরের পর্ব তাড়াতাড়ি ছাড়েন

মুস্তাফিজ এর ছবি

দস্যু বনহুর?? রোমেনা আফাজ এত ভালো লেখতো জানতামনা। হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

এহ্‌হে, পড়ছি। কমেন্ট করা হয় নাই।

আর পুরাই সেরাম। পরের পর্ব ছাড়েন।

মুস্তাফিজ এর ছবি

হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

ওডিন এর ছবি

ঠিক এই জায়গাটাতেই কি শেষ করতে হইতো??????? মন খারাপ

পরেরটার অপেক্ষায়!

মুস্তাফিজ এর ছবি

তবুও তো আমি লেখেছি, আর তুমি? ফেসবুকে শুধু ছবি দিলে চলবে?

...........................
Every Picture Tells a Story

নাশতারান এর ছবি

অনেককিছু মনে পড়ে গেল। সেই চড়কের মেলা, যাওয়ার পথে এই গল্প শুনেছিলাম। আর সুন্দরবন যাওয়ার অপূর্ণ ইচ্ছেটা তো আছেই।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

মুস্তাফিজ এর ছবি

সবাই সবকিছু আগে থেকে জেনে গেলে কেমনে কী?

...........................
Every Picture Tells a Story

আনিস মাহমুদ এর ছবি

এটা কি ভ্রমণকাহিনী নাকি রোমাঞ্চউপন্যাস? অপূর্ব বর্ণনা!

.......................................................................................
Simply joking around...

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ আনিস ভাই, সচলে নিজ নামে আপনাকে দেখতে পেয়ে কত আনন্দিত হয়েছি তা বুঝানো যাবেনা। আর সুন্দরবনের সেই কাহিনী আমার বর্ণনার চাইতেও রোমাঞ্চকর ছিলো, আমার অপারগতায় ঠিক মতন তুলে আনতে পারিনি।

...........................
Every Picture Tells a Story

তদানিন্তন পাঁঠা এর ছবি

কেমন আছেন ভাই? চিনেছেন? শুধুইবাংলার (sbps) এর জুন্নুন.. পরেরটুকু দেন না ভাই। এত দেরি করলে হয়? খুব ভাল লাগছে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ পড়ার জন্য, পরের পর্ব চলে এসেছে।

...........................
Every Picture Tells a Story

বিড়ি এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

মুস্তাফিজ এর ছবি

অপেক্ষার পালা শেষ, পরের পর্ব চলে এসেছে

...........................
Every Picture Tells a Story

দ্রোহী এর ছবি

গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

দুর্ধর্ষ একটা উপন্যাস হতে পারে এই গল্প!

পরের পর্ব পড়ি....

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ দ্রোহী। উপন্যাস লেখা লিলেন'দার কাজ। আমি তুলি ছবি, সেখান থেকে ধরে বেঁধে আমাকে দিয়ে লেখানো হচ্ছে, এটুকু লেখতেই আমার জান শেষ আবার উপন্যাস।

...........................
Every Picture Tells a Story

অভিকবাঙ্গালী এর ছবি

জোশ। মামা আপনি আপনার জীবনের ভাল মন্দ সব অভিজ্ঞতা লিখে ফেলেন। আপনার লেখার হাত এক কথায় দূর্দান্ত। এরপর সাথে কিছু দূর্দান্ত ছবিও দেখতে চাই। সেল্যুট।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ মামা

...........................
Every Picture Tells a Story

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

এই এতোদিনে পড়লাম! সময় নিয়ে পড়বো বলে জমিয়ে রাখতে রাখতে এই ডিলে। তুমি আজকাল ছবির মতো বর্ণণা দাও ভাইয়া, ছবি দেখা লাগে না তোমার পোস্টে আজকাল। দুই পর্ব একসাথে পড়বো ভেবেই ভালো লাগছে। ভাগ্যিস আগে পড়িনাই তাহলে হাপিত্যেশ করতে হতো পরের পর্বের জন্য।

তুমি ক্যামেরায় চোখ রেখে চারপাশ দেখো বলেই বোধহয় বর্ণনা গুলো এরকম হয়। চারপাশের সিন থেকে শুরু করে একেকটা দৃশ্যে উপস্থিত সবাইকে এক ফ্রেমে দেখে ফেলা যায় চট করে। আর নিরাবেগ নির্মেদ বর্ণনা। এতোটুকু কম বেশী নেই।

পড়তে পড়তে পচাব্দী গাজীর বইটার কথা মনে হলো কেন যেন! হাসি

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ধন্যবাদ বালিকা।
মন্তব্য পড়ে খুশী হইলাম।

...........................
Every Picture Tells a Story

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

আই হেইট লাফাং মন্তব্য!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

মুস্তাফিজ এর ছবি

মি সেকেন্ড।

...........................
Every Picture Tells a Story

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

আমার বাড়ি সুন্দরবনের কাছাকাছি। পাথরঘাটা থানায়, বরগুনা জোলার। চরদোয়ানি থেকে লালদিয়া চর বা ফাতরা জঙল খুব কাছে। এই এলাকার জেলে জীবন, হরিণ শিকারীদের কায়কারবার, মধু ব্যাবসায়ীদের আনাগোনা এবং এই বিষয়ে নানা রাত-জাগা গল্প বাবার মুখে শুনেছি। আবার বাবা বলতে গেলে শিশু বয়স থেকে শিকারী (আমার দাদার বদৌলতে), সুন্দরবনে শিকারের কাহিনী নিয়ে অসাধারণ সব লেখা হতে পারে, ডক্যু হতে পারে, ছবি তো আছেই, আর আপনার লেখায় তার সাক্ষাত প্রমাণ তো আছেই।

আপনার লেখাগুলো বই আকারে ছাপানোর জন্য অনুরোধ রেখে গেলাম।

(তবে অত্যন্ত ভালো ছাপা চাই, যে কোন প্রকাশনী থেকে ছাপবেন না। মুদ্রণযন্ত্র যেন পৃথিবীর সেরা হয়। ছবি সমৃদ্ধ বইয়ের 'কালার কারেকশান' এবং কোন কাগজে ছাপা হয়ে হচ্ছে, বাইডিং - যাতে বইটা আরাম করে পুরো খোলা যায় - এসব অত্যন্ত গূরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। যথাসময়ে সাহায্য প্রয়োজন হলে বলবেন, আমার সামান্য জানাশোনা নিয়ে হাজির হওয়ার চেষ্টা করবো)

মুস্তাফিজ এর ছবি

কোন একদিন সুন্দরবনের ছবি বই বের করার ইচ্ছা আছে।

...........................
Every Picture Tells a Story

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।