আমি বললাম, আমি এখানে আসবো তা তো আমি নিজেও জানতাম না, আপনারা কেমন করে জানলেন?
দেখেন, আমার লোক সব জায়গাতেই আছে, বুড়িগোয়লিনী থেকে যখন যাত্রা করেছেন তখনই আমি সংবাদ পেয়েছি, আর সন্ধ্যায় যখন এখানে পৌঁছেছেন তখন এখান থেকেই সংবাদ গিয়েছে আমার কাছে। আপনার সাথে একজন ছাড়া আর কেউ নেই শুনে সিদ্ধান্ত নিলাম এবারই দেখাটা সেরে নিই।
৫.
কথা শুনে অবাক হইনি, রাজু ডাকাতের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে পূর্ব থেকেই ভালো ধারণা ছিলো আমার। আমি যতবার সুন্দরবন এসেছি, চেষ্টা করেছি স্থানীয়দের সাথে মিশতে। ওদের সাথে ওদের ভাষায় কথা বলেছি, আপন করে নিয়েছি তাদের। বনজীবী সেসব মানুষ যখন কাউকে আপন করে নেয় তখন উজাড় করে দেয় নিজেকে, কখনও বিমুখ করে না, তথ্যগুলো ওদের থেকে পাওয়া। নিজের সাম্রাজ্যে তো বটেই সাম্রাজ্যের বাইরেও বনবিভাগের বনমাঝি বা কাছাকাছি পদবীর কর্মচারীদের সাথে রাজু ডাকাতের নিয়মিত যোগাযোগ আছে। সময় অসময়ে নিয়মিত কথা হয় ওদের সাথে, বেশিরভাগ আলাপের বিষয় কে কোথায় কখন বা কতজন গোলপাতা কাটার অনুমতি পেয়েছে, কোন কোন নদী আর খালকে নিয়ন্ত্রণে রেখে মাছ ধরছে, কোন স্টেশনের কে কখন কোথায় বদলি হচ্ছে এসব ছাড়াও বনবিভাগের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত কিংবা আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার খবর প্রায় নির্ভুল অগ্রিম পৌঁছে যায় ওর কাছে। বিনিময়ে রাজু দেয় নিরাপত্তা (ক্ষতি না করার অলিখিত চুক্তি) আর মাঝে মাঝে কারো পারিবারিক প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তা। সুন্দরবনে এমনও কিছু বনমাঝি আর প্রহরী আছে যারা দুঃসময়ে রাজু বাহিনীর বাজার পৌঁছানোর কাজ করা ছাড়াও ডাকাতির টাকা আদায় আর বিতরণের সাথেও জড়িত। রাজুর খবরের আরেকটা উৎস ওর নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মাছ আর কাঁকড়া ধরতে আসা মহাজনের জেলে আর স্থানীয়রা। সুন্দরবনে ডাকাতির মানে চাঁদাবাজী। একটা নিদৃষ্ট পরিমাণ অর্থ যাদের থেকে আদায় হওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা রাজু ডাকাত তাদের সবসময়ই এসব খবর সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করে থাকে। এসব ছোট খাটো মাছ বা কাঁকড়া শিকারীর সাথে আলাপে রাজু সম্পর্কে কখনই কোন খারাপ কিছু শুনিনি, ব্যাপারটা প্রথম প্রথম আমার কাছে আশ্চর্য লাগলেও পরে আস্তে আস্তে ভেতরের ব্যাপারটা ধরতে পেরে বুঝেছি অশিক্ষিত হলেও যেকোন কর্পোরেট ব্যবস্থাপনার চাইতে শক্তিশালী আর কার্যকর নিয়মের কারণে রাজু সুন্দরবনে খবর সংগ্রহ আর এলাকা নিয়ন্ত্রনে অন্যান্য ডাকাত দলের তুলনায় অনেক এগিয়ে।
জানতে চাইলাম আমার প্রতি তার আগ্রহের কারণ। “আমার আশ্চর্য লাগছে আর জানতে ইচ্ছা করছে কী কারণে আপনি আমার সাথে দেখা করতে এলেন বা আমার সাথে আপনার দেখা করার ইচ্ছাই বা হলো কেন।“
রাজু হেসে দিয়ে বললো, “আপনি গত কয়েক বছরে যতবার সুন্দরবন এসেছেন মানে বুড়িগোয়ালিনী দিয়ে ঢুকেছেন ততবারই আমি খবর পেয়েছি। বছরে চার/পাঁচ বার এদিক দিয়ে সুন্দরবনে যারা ঢোকে শুধু বেড়ানো যে তাদের উদ্দেশ্য না সেটা আমি বুঝি, প্রথম দিকে অন্যান্য খবরের মতই ধরে নিলেও গতবছর থেকে আপনাদের ব্যাপারে খোঁজ খবর রাখতে বলি। এরপর লম্বা চুল এসেছে শুনলেই বুঝতাম আপনি ঢুকেছেন। এর মাঝখানে দুইবার আপনাদের অজান্তে আপনাদের ট্রলারের সাথে ট্রলার রেখে রাত কাটাতে হয়েছিলো আমাকে। আর আপনাকে দেখেছি আরো দুইবার।“
রাজু কথা বলে যায়। “আপনার মনে আছে একবার ঝড়ে আপনারা পাটকোষ্টায় রাত কাটিয়েছিলেন? সেবার পাটকোষ্টার সেই ফরেস্ট অফিসের পাশের খালে আপনাদের পাশেই আমরা ছিলাম। আরেকবার রাসমেলার দিনদুই আগে হিরণপয়েন্টে আপনাদের পাশেই ঘণ্টাকয়েক কাটিয়েছি আমরা, পরদিন দুপুরে দুবলায় চায়ের দোকানে আমি বসা ছিলাম। আরো একবার দিনে বৃষ্টিতে বনের খোলা জায়গায় নেমে আপনাদের সবাই যখন কোমরপানিতে হাঁটছিলেন আমরা ঠিক তার ৫০ হাত দূরে বনের আড়ালে ছিলাম। সেসময়গুলোতে খুব কাছে থেকে দেখেছি আপনাকে। ট্রলারে সবার সাথে আপনার ব্যবহার, কথাবার্তা, সুন্দরবন নিয়ে আলোচনা আর সাদা সাদা ক্যামেরা দেখে আপনার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি।“
আমার মনে পড়ে যায় পাটকোষ্টায় সেই রাতের কথা। প্রচণ্ড ঝড় আর পূর্ণিমার জোয়ারে নদীর পানি ক্রমাগতই বেড়ে যাচ্ছিলো। আমাদের জানা ছিলো না সেদিন রেডিওতে ঘোষণা দেয়া সতর্কবাণীর কথা। ঢেউ এর তোড়ে ট্রলার ডিঙ্গি নৌকার মতো দুলছিলো, এমতবস্থায় ফরেস্ট স্টেশনের ঘাটে বা ছোট নদীতে রাত কাটানোর নিয়ম থাকলেও আমাদের গাইড বাপ্পি’দা সে রাতে নিষেধ সত্ত্বেও হঠাৎ করেই নোঙর তুলে বড় নদীতে চলে এসেছিলেন, গার্ড আর ট্রলারের সহকারীদের নিয়ে পাহাড়া দিয়ে সারা রাত জেগে কোনোরকমে রাত কাটিয়ে ভোর হওয়ার আগেই স্থান ত্যাগ করেছিলেন। রাতে ওদের অতিরিক্ত সতর্কতায় সেসময় আন্দাজ করলেও এখন ঘটনাটা পরিষ্কার যে উনি বুঝতে পেরেছিলেন আমরা ডাকাতদের কাছাকাছি আছি। আমাদের দলে সেবার সচল লীলেনদা আর নজরুল ছিলো মনে আছে। আর দুবলার চরে পরের সেই ঘটনায় সেদিন আমার সাথে ছিলো সচল আলবাব।
রাজুর কথায় শঙ্কিত হই আমি। বুঝতে পারি এখানে পর্যটকরা যত নিরাপত্তা আর সতর্কই থাকুক না কেন, সব নিরাপত্তা নির্ভর করে ডাকাতদের খেয়াল খুশির উপর। যদিও পর্যটকদের উপর হামলা না করার একটা অলিখিত নিয়ম আছে ডাকাতদলের ভেতর। এর কারণটাও খুঁজে পেয়েছিলাম ওর সাথে আলাপে। বনের ভেতরে বনজীবীদের নিয়ে যত দুর্ঘটনাই ঘটুক না কেন, তার শতকরা ৯৯ ভাগই থেকে যায় লোক চক্ষুর আড়ালে, পারস্পরিক বোঝাপড়ার কারণে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব খবর নিজেদের ভেতরই রাখে। হিসাব থাকে শুধু কাগজেকলমে, তদন্ত হয় দাপ্তরিক। পক্ষান্তরে পর্যটকদের উপর হামলা বা নির্যাতনের খবর খুব দ্রুতই লোকালয়ে চলে আসতে পারে, শিরোনাম হতে পারে খবরের। আর একবার এ ধরনের খবর বাইরে এলে উপর থেকে চাপ বাড়ার সম্ভাবনা প্রবল, তাতে পারস্পরিক বোঝাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটে এদের চলাচল সীমিত হয়ে পরতে পারে। হিসাবটা খুবই সরল।
৬.
রাজুর সাথে আমার প্রথম কথা হয়েছিলো ২০১০ এর ফেব্রুয়ারিতে। মোবাইলে সেদিন ফোন পেয়ে চমকে গেলেও অবাক হইনি। আমি আর সচল সবুজ বাঘ সেসময় সচল আনিস হকের “যাযাবরের ডাইরী”র প্রকাশনা উৎসবের শেষে খাওয়া দাওয়া করছিলাম। ওরা আমার নাম্বার পেয়েছে বনবিভাগের এক কর্মচারীর কাছ থেকে। সেসময় কথাবার্তার এক পর্যায়ে ওদের সাথে সুন্দরবন ঘোরার আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখে। কবে যেতে পারবো তা সেই কর্মচারীকে জানিয়ে রাখলে সেভাবে বন্দোবস্ত করবে জানিয়েছিলো। আমার সাথে রাজুর কথপোকথনের বিষয়বস্তু জেনে পেশাগত সাংবাদিক সবুজ বাঘ লাফিয়ে উঠলেও ঘটনাটা আমি বেশিদূর নিতে দেইনি। প্রথমত আমি কোনোভাবেই সাংবাদিকতার সাথে জড়িত না আর দ্বিতীয়ত শুধুমাত্র মৌখিক পরিচয়ে কোনো সাংবাদিককে সেখানে নিয়ে যাওয়াটা সেসময় আমার কাছে “ডেকে নিয়ে বিপদে ফেলা”র মতো মনে হয়েছিলো। এই ঘটনার পর আমি বেশ কয়েকবার সুন্দরবন গেলেও ওদের সাথে যোগাযোগ করিনি। অথচ ওরা আমার খবর ঠিকই পেয়েছে।
আলাপের এইপর্যায়ে চা এলো, দুধ ছাড়া। চায়ে চুমুক দিতে দিতে জানতে চাইলাম রাজুর ডাকাত হবার কাহিনী।
রাজু বললো- “দেখেন আমি পরিস্থিতির শিকার, আমার তো ডাকাত হবার কথা না। আমি গরিব ছিলাম, আমার বাপ মা গরিব ছিলো, কিন্তু কখনো ডাকাতির কথা মাথায় আসেনি। জীবনে প্রথম চাকরি নিয়েছিলাম খুলনার একটা বরফ কলে, বরফ ভাঙার কাজ। একদিন হুট করে দু’সপ্তার মজুরি বকেয়া রেখে সেখান থেকে আমাকে বের করে দেয়া হলো। আমার বাড়ি বর্তমান বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার সোনাইতলা গ্রামে। কাজ হারিয়ে না খেতে পেয়ে বখাটেদের দলে যোগ দিলাম। খুলনার লিটুর নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই? এভাবেই একদিন সেই লিটুর দলে ভিড়ে গেলাম।“
বললাম “তারপর?”
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে রাজু বলতে থাকলো, “লিটুর খপ্পরে একবার যে পড়েছে সে আর কোনোভাবেই সেখান থেকে বের হতে পারেনি। সুন্দরবনে গত দশ পনের বছরে যেসব ডাকাতের জন্ম হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখেন তাদের সবাই কোনো না কোনোভাবে লিটুর সাথে সম্পৃক্ত ছিলো। মোতালেব, জুলফিকার, গামা, হাফিজ, মান্নান আমি সবাই। এদের সবাইকে ডাকাত বানিয়েছে লিটু। না সবাই না, হাফিজ ছাড়া, ঐটা জামাতি, এমপি পরহেজগারের বডিগার্ড (মিয়া গোলাম পারওয়ার, জামাতের সাবেক এমপি, খুলনার আমীর)।”
জিগ্যেস করলাম “কীভাবে?”
“ঐটা তো সহজ হিসাব। তার ওখানে যেতাম, বসে থাকতাম, মাঝে মাঝে মিছিল-মিটিং এ গেলে টাকা পেতাম, এরপর ছোটখাটো মারামারি। মামলা, থানা পুলিশ। সব সামলাইতো তার লোক। বড় কোনো ঘটনা হলে, পালিয়ে থাকার প্রয়োজন পড়লে সুন্দরবন তো আছেই। আপনারা জানেন কি না জানি না লিটুর অস্ত্র আর মানুষ খুনের ব্যবসাও ছিলো। ঐরকম ঘটনায় বড় ঝামেলা হলে অস্ত্র দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হতো সুন্দরবনে পালিয়ে থাকার জন্য। আবার ধরেন কাউকে অস্ত্র দিয়ে বনে পাঠানোর কয়েকদিন পর তার লোকজনই আবার মেরে নদীতে ফেলে দিত, লোকজন জানতো বাঘে নিয়েছে কিংবা ইন্ডিয়া চলে গেছে।”
“এভাবেই একসময় আমি জুলফিকারের দলে চলে আসি। এরপর জুলফিকারের সাথে ঝগড়া হলে দুইটা অস্ত্র নিয়ে বেড়িয়ে যাই। সেসময় বনে নামতে পারতাম না জুলফিকারের গুলির জন্য আর উপরে উঠতে পারতামনা পুলিশের জন্য। ঘোরাফেরা করতাম মংলা বন্দরের আশেপাশে।”
“কী নিয়ে ঝগড়া হয়েছিলো জুলফিকারের সাথে?”
“ঐটাতো একটা হারামির বাচ্চা। আমি ডাকাত হলেও নিয়ম মেনে চলি, আপনি আমার এলাকায় যে কাউকে জিজ্ঞেস করে দেখেন রাজু কারো গায়ে হাত তুলছে কি না, কাউকে পাবেন না। মাওয়ালী, বাওয়ালী, ছোটখাটো জেলে এদের কারো উপর রাজু অত্যাচার করেছে, সেটা কোথাও শুনবেননা আপনি। কিন্তু জুলফিকার এসব মানে না। ওর ধারণা যত অত্যাচার করা হবে, মানুষের মনে তত ভয় ঢুকবে আর তার ব্যবসাও ভালো হবে। ওর সাথে এই অত্যাচার নিয়েই লেগেছিলো। গতবছর আপনারা যেদিন দুবলার চরে গেলেন সেদিনও ওরা সেখানে যে অত্যাচার চালিয়েছিলো সেটাতো নিজের চোখেই দেখলেন।”
আমি বললাম, “হুঁ, দেখেছিলাম, নয়জনকে ধরেও নিয়ে গিয়েছিলো।”
“ধরে নিয়েছিলো মুক্তিপণের জন্য। অথচ আমি কখনও অপহরণ করি নাই। তবে মোতালেবের নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন? ওর একটাই কাজ ধরে নিয়ে যেয়ে মুক্তিপণ আদায়। না পেলে মেরে সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া। পাঁচ হাজার থেকে পঞ্চাশ লাখ টাকাও মুক্তিপণ নিয়েছে সেই খবরও আছে আমার কাছে। মোতালেবের এলাকাও নিচের দিকে, গভীর সমুদ্রে।”
“অত্যাচারও করেন না, মুক্তিপণও নেন না তাহলে আয়টা আসে কোত্থেকে?”
“আমার ইনকাম ফিক্সড, ধরেন এই বছর এই এলাকায় ছয়শ গোলপাতার নৌকা আছে, নৌকা প্রতি আমার রেট পাঁচ হাজার টাকা। ছয়শ মাছ ধরার পারমিশন আছে, এইটাও পাঁচ হাজার করে। আর মূল টাকাটা আসে শুটকির মৌসুমে, দখলে থাকতে পারলে সেখান থেকে প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি টাকা আসে।”
“এইটা তো বিশাল ব্যাপার!”
“আপনাদের কাছে বিশালই মনে হবে। জুলফিকার নৌকা প্রতি নেয় আট হাজার করে, আপনাদের ট্রলারের পেছনে যেই গোলপাতার নৌকাটা আছে সেইটা নূর বাক্কারের, ওর কাছে জানতে পাবেন। আর মোতালেব নেয় ছয় করে। আমার বছরে প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিনকোটি টাকার মধ্যে দুই কোটিই যায় সরকারি লোকের হাতে, এছাড়া আমার জনা পঞ্চাশেক লোক আছে, তাদের পরিবার আছে, সবকিছু শেষে একজন রিকশাওয়ালার চাইতে বেশিকিছু ওরা পায় না।”
“আর অস্ত্র কেনা? ঐটার পেছনে খরচ হয় না?”
“না, রাজুর কোন অস্ত্র কেনা না। মাঝে মাঝে গুলি কিনলেও আমি কখনও অস্ত্র কিনিনাই। সরকারি অস্ত্রও না। এইগুলা সব দখল করা অস্ত্র। বিভিন্ন ডাকাতদের থেকে কেড়ে নেওয়া। এমনকি আমার অস্ত্রের বেশির ভাগই এসেছে একবার জুলফিকারের সাথে যুদ্ধে। সেবার আমাকে আটকিয়ে ফেলেছে ভেবে গুলি করতে করতে খালের ভেতর দিকে নিতে থাকে, আমি আমার লোকজনকে গুলি না করে খালি পেছাতে বলি, আর আমি অন্যদিক দিয়ে ওর পেছনে চলে এসে দুইদিক দিয়ে খালের মাঝখানে আটকিয়ে ফেলি। গুলির বাক্স মাথায় তুলে ওর সাথের লোকজন আমার দিকে চলে আসে।”
“তারপর?”
“তারপর আর কী? অস্ত্র ফেলে রেখে জুলফিকারকে হেঁটে চলে যেতে বলি। শত হউক একসময় একসাথে ছিলাম।”
“আর পুলিশের সাথে?”
“হা হা হা, পুলিশের খবর তো পুলিশই দেয়। ওরা ডানদিক দিয়ে এলে আমরা বামদিকে ঘুমাই। তবে র্যা ব আর যৌথ বাহিনীর অভিযান হলে সতর্ক থাকি।”
“খবর কি আগেই পেয়ে যান?”
“পাই। এই যেমন গতকালই খবর পেয়েছি পরশু থেকে কম্বিং শুরু হবে।”
“সে সময় কী করবেন?”
“আমরা যেখানে থাকি বা থাকবো সেদিকে ওদের যাবার সম্ভাবনা নাই, উপরে উঠব না কারণ ওরা আমাদের ঘরবাড়িতেও নজর রাখবে। নিচেও নামবোনা কারণ বেশিদিন নিচে থাকলে আমার সাপ্লাইয়ের সমস্যা হবে, কারণ আমি খুব অল্প বাজার করে চলি। ভেতরের দিকে গভীরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবো।”
“বাঘের ভয়?”
সেইটা থাকবে। একবারের কথা বলি, কালাবগীতে একবার সরকারি লোকজনের ঘেরাওর মধ্যে পড়ি, আমার দলে তখন দশ বারো জন, জোয়ারের সময় কাদা পানিতে সারা শরীর কাদায় ডুবিয়ে শুয়ে ছিলাম, এরপর জোয়ার শেষে ভাটা শুরু হয়, আমাদের সারা শরীর ভাটার কাদায় এমনভাবে মিশে আছে যে উপর থেকে কিছুই বুঝা যায় না। সেই চরে আবার সরকারি লোকজনের খাওয়া দাওয়ার আয়োজন চলছে, মানে পরবর্তী জোয়ার না আসা পর্যন্ত আমাদের সে অবস্থাতেই থাকতে হবে। এমন সময় সামনে কয়েকটা হরিণ ঘুরতে থাকলো, হঠাৎ একটা বাঘ আমাদের পেছন থেকে খাল দিয়ে কাদা পেরিয়ে আমাদের কামরু নামে একজনের কাঁধ শক্ত কিছু মনে করে সেখানে থাবা রেখে বসে থাকলো প্রায় আধা ঘণ্টা, বাঘের ওজনে কাদায় ডাবতে ডাবতে কোনরকমে শ্বাস নিতে পেরেছিলো সে। ওর দুই কাঁধে এখনও ছয়টা আঙুলের ক্ষত আছে।
এইযে এত চাপের মধ্যে থাকেন, সারাদিন একজায়গা থেকে অন্য জায়গায় পালিয়ে পালিয়ে ঘুরেন, বউ বাচ্চা সংসার ফেলে, খারাপ লাগে না?
খারাপ তো লাগেই। আমি তো চাইই ফিরে আসতে, সরকার একটা সাধারণ ক্ষমা দিক আর বলুক ক্রস ফায়ারে দিবে না, আমি রাজু এই বলে দিলাম আমার সবাইকে নিয়ে আত্মসমর্পণ করবো। আরেকটা কথা, আমি যদি আজকে নিজে থেকে আত্মসমর্পণ করিও, তারপরেও তো আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে সেই গ্যারান্টি কোথায়? নিজেদের রক্ষার জন্যই তো আমাকে মেরে ফেলবে। আমাকে বাইরে কোনো দেশে পাঠিয়ে দিক, কত লোকজনকে লেবারের চাকরি দিয়ে বিদেশ পাঠায়, আমাকেও পাঠিয়ে দিক, বিদেশে লেবারগিরি করে খাবো কিন্তু এই জীবন আমি চাই না।
ঠিক এই মুহূর্তে এই পরাক্রমশালী মানুষটিকে আমার খুব অসহায় একজন মনে হয়। আমরা দুজনই অনেক্ষণ চুপ করে বসে থাকি। শুধুমাত্র করুণা ছাড়া এই মানুষটার জন্য আর কী ই বা করার আছে আমার?
৭.
সে রাতে প্রায় চার ঘণ্টা ছিলাম ওদের সাথে। পুরো আলোচনাতেই আরো কিছু বিষয় উঠে এসেছিলো যেমন চাঁদার ভাগ বাটোয়ারা কীভাবে হয়। বড় চাঁদাদাতাদের নাম এবং কিভাবে ওরা টাকাটা পাঠায়। এছাড়া আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো কোনো কর্মকর্তার সাথে ওর নিয়মিত যোগাযোগ, কীভাবে সে তার পরিবারের সাথে দেখা সাক্ষাত করে এইসব নিয়ে। এই ঘটনাগুলো এতটাই অবিশ্বাস্য যে অপরপক্ষের সাথে সত্যতা যাচাই ছাড়া একপক্ষীয় ভাবে ব্লগে দেয়াটা অনুচিত হবে আমার জন্য।
সচল যুধিষ্ঠির বনের শব্দ ধরে রাখার জন্য আমাকে একটা রেকর্ডার দিয়েছিলেন, পুরো আলোচনাই তা দিয়ে ওদের অজান্তেই রেকর্ড করে রেখেছি। তবে রাজু এই কথোপকথন প্রকাশের ব্যাপারে সম্মতি জানিয়ে রেখেছিলো (শুধু ছবির ব্যাপারে ওর আপত্তি ছিলো)।
সুন্দরবন থেকে ফিরে আসার সম্ভবত দিন তিনেক পর শুরু হওয়া যৌথ অপারেশনের সময় ডাকাত মোতালেব মারা যায়। এই অপারেশনের দিন তারিখের কথা রাজু থেকে শুনেছিলাম, মোতালেবও জানতো, তাই সাবধান হবার জন্য সে উপরে তার বাড়িতে উঠে এসেছিলো এবং সেখানেই নিহত হয়। মোতালেব নিহত হবার পর তার কিছু এলাকা (গভীর সমুদ্র) দখল নেয় রায়মঙ্গলে থাকা ভারতীয় ডাকাত দল, আর উপরের অংশ মাননান আর রাজুর দখলে আসে। এই ঘটনার কিছুদিন পর আবার সুন্দরবনে গেলে খইলশাবুনিতে মাননান ডাকাতের মুখোমুখি পড়েছিলাম, আমাদের সতর্ক করে দিয়ে সেখানে ঢুকতে মানা করেছিলো মান্নান। এই মান্নানও পরবর্তীতে নিহত হয়।
ডাকাত জুলফিকারও নিহত হয়েছে বলে শুনেছিলাম। আমি ঢাকা ছেড়ে চলে আসার পর রাজু গ্রেফতার আর নিহত দুই রকমের খবরই শুনেছি। সত্য মিথ্যা যাচাই করতে পারিনি। ডাকাত হাফিজের ছবি দেখিয়েছিলো একজন আমাকে, মিয়া গোলাম পারওয়ারের সাথে, মিছিলে। তাকে আরেকদিন দেখেছিলাম সাতক্ষিরার বর্ষা ট্যুরিজমের অফিস থেকে বের হতে।
মন্তব্য
দুর্দান্ত। শেষ হয়ে গেল, নাকি আরো আছে?
আপাতত শেষ।
...........................
Every Picture Tells a Story
মুগ্ধ হয়ে পড়লাম। গল্পকেও হার মানায় এমন দুর্ধর্ষ কাহিনী।
ধন্যবাদ ফারুক ভাই।
...........................
Every Picture Tells a Story
ইটা, জলদি জলদি ইটা।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
...........................
Every Picture Tells a Story
দুর্ধর্ষ! স্রেফ দুর্ধর্ষ! শ্বাস বন্ধ করে পড়ে ফেলেছি একটানে। পড়ার সময় বারবার ভাবছিলাম, এটা কল্পিত কাহিনী না, এটা বাস্তব; তখন রোমহর্ষক একটা অনুভূতি রোমকূপে বয়ে যাচ্ছিলো। অসাধারণ!
রাজু ডাকাতের কথাগুলো শুনতে শুনতে একেবারেই নতুন একটা দিক থেকে সুন্দরবনের জীবনটাকে দেখতে পেলাম। নিজস্ব গুপ্তচর, কর্পোরেট ব্যবস্থার মতো করে আর্থিক ব্যবস্থাপনা, পুলিশ আর স্থানীয়দের সাথে সমঝোতামূলক মিথষ্ক্রিয়া... অবিশ্বাস্য!
সপ্তম টুকরোটায় এসে তো ভাই তৃষ্ণাটা বাড়িয়ে দিলেন। যাচাই করা যদি সম্ভব না-ও হয়, রাজুর একচোখো জবানিতেই নাহয় শুনলাম, প্রয়োজনে ছদ্মনাম ব্যবহৃত হোল। তবুও শুনতে চাই।
এতো জলদি শেষ করে দেয়া মানি না মানবো না। এতো ভালো লিখে লোভ বাড়িয়েছেন আপনি, এখন নতুন পর্ব হিসেবে বাকি অংশ দিতেই হবে।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
ধন্যবাদ অন্যকেউ।
কিছু কিছু ঘটনা থাকে যেগুলো একান্তই নিজস্ব, বাইরে প্রকাশ করাটা তসলিমার বইয়ের মতন হয়ে যায়। সচেতন ভাবেই আমি সেসব পরিহার করেছি।
আমি রাজু থেকে উপকারভোগী লোকজনদের দীর্ঘ তালিকা দেখেছি। সাংবাদিক, প্রশাসনের লোক, আইনশৃংখলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত সহ তাতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নামও আছে।
আসলে এসব ডাকাত তৈরি করা হয় এদের স্বার্থেই আর ধরা হয় সেই স্বার্থকে সুরক্ষিত করার জন্যই, এক রাজু চলে যাবে সেখানে অন্য রাজু এসে জায়গা নিবে।
...........................
Every Picture Tells a Story
বাপ্রে! একবসায় পড়ে ফেলা, গায়ে কাঁটা দেয়া, ঠাসবুনোট, দুর্ধর্ষ!!! আপনার সাহসও আছে বটে! রাজু ডাকাতের শেষমেষ কি হলো জানতে পারলে ভালো হতো।
আপনার সাথে একবার সুন্দরবনে যাওয়ার বহুদিনের ইচ্ছেটা এখনও ধরে রাখি।
আপনি আমার সাথে কোথাও গেলে সমস্যায় পড়বেন, সেই এক্সিডেন্টের কথা ভুলে গেলেন?
অবশ্য যখন দেশে ছিলাম আপনাকে নিয়ে যাওয়াটা উচিত ছিলো, দেখি পরে কখন সময় মেলাতে পারি।
...........................
Every Picture Tells a Story
খুব ভালো লাগলো, মুস্তাফিজ ভাই। কাজকাম ফাঁকি দিয়ে, একটানে শেষ করলাম।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
ধন্যবাদ আবদুর রহমান
...........................
Every Picture Tells a Story
অনেকদিন এমন মন্ত্রমুগ্ধের মত কিছু পড়ি নাই। হ্যাটস অফ মুস্তাফিজ ভাই।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ধন্যবাদ স্যার
...........................
Every Picture Tells a Story
আহা সুন্দরবন....
ওহো সুন্দরবন, আই এম মিসিং ইউ
...........................
Every Picture Tells a Story
'অন্যকেউ' এর মন্তব্যটাই আবার রেখে যাই: দুর্ধর্ষ!
love the life you live. live the life you love.
ধন্যবাদ তারাপ কোয়াস
...........................
Every Picture Tells a Story
ভয়াবহ সুন্দর!! সুন্দরবনের ডাকাতির মধ্যে যে এতো পলিটিক্স জড়িত থাকতে পারে কখনো ভাবিনি।
পলিটিক্স আমি যতটুকু লেখতে পেরেছি তার চাইতেও বেশী
...........................
Every Picture Tells a Story
মুগ্ধ হলাম!
একটা উপন্যাসকে এইভাবে মেরে ফেলতে পারলেন আপনে?
ধন্যবাদ দ্রোহী
ছিলাম ফটোগ্রাফার, বেড়াতে যেয়ে ছবি তুলতাম। সেই কাহিনী আমাকে দিয়ে জোর করে লিখিয়ে লেখক বানানো হলো, এখন যদি এই আবদার করেন তাহলে সমস্যা।
আমাকে দিয়ে এসব হবেনা।
...........................
Every Picture Tells a Story
অসাধারণ
ধন্যবাদ চরম উদাস
...........................
Every Picture Tells a Story
জোশ। মামা আপনি আপনার জীবনের ভাল মন্দ সব অভিজ্ঞতা লিখে ফেলেন। আপনার লেখার হাত এক কথায় দূর্দান্ত। সাথে কিছু দুর্দান্ত ছবিও দেখতে চাই। সেল্যুট।
ধন্যবাদ অভিক'দা।
ইদানীং ছবি তোলাই হয়না, লেখা তো আরো পরে। জীবন একটা বৃত্তে আটকে গেছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
দারুণ !
এমন আরও লিখুন না অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে!
facebook
ধন্যবাদ।
সেই যে বললাম একটা বৃত্তে আটকে গেছি।
...........................
Every Picture Tells a Story
দাদা বৃত্ত ভাঙ্গুন..সমান্তরাল পথে আসুন। আমরা আছি আপনার সাথে। কিছু ছবি সংযোজন করলে বোধহয় খুব ভালো হত।
আমার সব লেখাতেই ছবি থাকে, এবার না হয় নাই থাকলো।
আর বৃত্তের বাইরে আসার চেষ্টা চলছে।
ধন্যবাদ।
...........................
Every Picture Tells a Story
প্রথম পর্ব পড়ে হা হয়ে ছিলাম...এতক্ষণে বন্ধ হইলো। স্রেফ দুর্ধর্ষ!!!!!!!!!
বিপদের সময় স্বাভাবিক মানসিক স্থিরতা বজায় রাখতে পারা অনেক বড় একটা গুণ। মুস্তাফিজ ভাই, আপনার সেই জিনিসটা একেবারে দুর্দান্ত মনে হইলো।
রাজু ডাকাতের নিজের কাহিনি পড়ে অনেক খারাপ লাগলো। কিন্তু আসলে তার কিংবা তার মতো মানুষদের উত্তরণের জন্যে কি কিছু করার আছে? এই দেশে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা কোথায় আছে? আর একটা ব্যাপার, এ পর্যন্ত জীবনে যত এরকম দুষ্কর্মের কাহিনি শুনেছি বা জেনেছি, তার প্রায় সবগুলোতেই আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ হাত রয়েছে। আমার তো মনে হয় ডাকাতদের চাইতে এরা বেশি বিপদজনক সাধারণ মানুষের জন্যে। টাকা খেয়ে কী না করতে পারে এরা।
এত্ত দুর্দান্ত একটা কাহিনি মাত্র দুই পর্বে শেষ হয়ে গেলো মানতে কষ্ট হচ্ছে। দাবী জানাচ্ছি, এইরকম লেখা পাওয়ার জন্যেই মুস্তাফিজ ভাইকে আবার সুন্দরবনে পাঠায় দেয়া হোক।
-অতীত
ধন্যবাদ অতীত। সুন্দরবন এখন আমার কাছে অতীত।
সুন্দরবন নিয়ে সচলেই আমার অনেকগুলা লেখা আছে, আপাতত সেসবেই চোখ বুলিয়ে যান।
...........................
Every Picture Tells a Story
আপনার গদ্যের হাত অসম্ভব রকমের ভালো। সেটা আগেও বলেছি। তবে এই লেখাটা এককথায় অসাধারন। আপনি চাইলেই সুন্দরবন নিয়ে একটা উপন্যাস লিখে ফেলতে পারেন। একটা উপন্যাস লেখার জন্যে যা যা দরকার তার সবই আপনার আছে।
ধন্যবাদ উজানগাঁ।
উপন্যাস কিভাবে লেখে জানিনা।
...........................
Every Picture Tells a Story
পাটকোষ্টায় সেই ঝড়ের রাতের কথা মনে পড়ে। জীবনে সেই প্রথম ঝড়ের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে ভেজা কম্বল গায়ে ঘুমিয়েছিলাম সারারাত!
মুস্তাফিজ ভাই, অভিকদার মতো আমিও বলি... আপনার অভিজ্ঞতাগুলো সব লিখে ফেলুন। লোমহর্ষক সিরিজের বই হয়ে যাবে একটা।
লিখে ফেলেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হু, এবং দিনের বেলায় আপনার দাঁড়িয়ে হেলান দিয়ে ঘুমানোর ছবিও তোলা আছে আমার কাছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
অসাম ভাই, রোমহর্ষক। শেষ করে দিলেন নাকি?
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
কাকে শেষ করবো কবি?
...........................
Every Picture Tells a Story
আপনার লেখার প্রশংসা করবো কিনা বুঝতে পারছি না। আসাধারন।
ধন্যবাদ ফারহান আবিদ
...........................
Every Picture Tells a Story
অসাধারন
ধন্যবাদ সাফি
...........................
Every Picture Tells a Story
অদ্ভুত!
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
ধন্যবাদ।
...........................
Every Picture Tells a Story
আরেকটু বড় করলে কি দোষ হতো??? আর এতো তাড়াতাড়ি শেষ করারই বা কি দরকার ছিল? না হয় আরো ৪-৫ টা পর্ব হতো।
শান্ত, যত কম জানবা তত বেশি ভালো থাকবা। আর একটা ব্যাপার টেনে টুনে লেখা আমার পোষায় না।
...........................
Every Picture Tells a Story
দুর্দান্ত জীবন কাহিনি, চমৎকার বর্ণনা।
ধন্যবাদ রায়হান।
...........................
Every Picture Tells a Story
অসাধারন লেখা। খুবই ভাল লাগলো। রাজু এখন কই আছে মুস্তাফিজ ভাই। আপনার সুন্দরবন অভিজ্ঞতা নিয়ে আরো লেখা চাই। ধন্যবাদ আপনাকে।
একবার শুনেছিলাম মারা গেছে, আবার শুনলাম ধরা পড়েছে, আরেকবার শুনলাম বহাল তবিয়তেই আছে। জানিনা। ওর ফোন নাম্বার ছিলো আমার কাছে, কখনও ফোন করা হয়নি।
...........................
Every Picture Tells a Story
অসাধারণ, এরকম অভিজ্ঞতা অসাধারণ, এরপরে সুন্দরবনে গেলে আপনার সাথে যেতে চাই ...
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
ধন্যবাদ অরফিয়াস। আমি এরপর কখনও গেলে মনে থাকবে।
...........................
Every Picture Tells a Story
জাস্ট স্যালুট।
আরেকটা কথা কানেকানে বলে যাই - সব কিছু ঠিকঠাক চললে খুব শীঘ্রই সুন্দরবন যাচ্ছি। তবে আপনার লেখা পড়ে খানিকটা ভয় হচ্ছে বৈকি ...
আর এটা কিন্তু অন্যায়। এই লেখাটাকে সত্যিই একটা নতুন আকৃতি দিতে পারেন দাদা। একটু ভেবে দেখবেন ... চরম একটা উপন্যাস হয়ে যাবে।
ডাকঘর | ছবিঘর
ধন্যবাদ তাপস শর্মা।
সুন্দরবন রোমাঞ্চকর কিন্তু ভয় পাবার মতন নয়। নিজ থেকে গড়ে উঠা প্রকৃতি সবসময় একটা নিয়মের মধ্যে চলে। সেই নিয়ম প্রকৃতির সুরক্ষার জন্যই, মানুষের ক্ষতির জন্য নয়।
...........................
Every Picture Tells a Story
ভয় পাইনি দাদা , জঙ্গল আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা
ডাকঘর | ছবিঘর
শুনে ভালো লাগলো।
...........................
Every Picture Tells a Story
জীবন্ত লেখা, পড়ার সময় মনে হচ্ছিল চোখের সামনেই সব দেখতে পাচ্ছি!
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
ধন্যবাদ কল্পনা আক্তার, আপনাকে অনেকদিন দেখিনা, আবার এটাও হতে ্পারে আমিই কম আসি।
ভালো থাকবেন।
...........................
Every Picture Tells a Story
অসাধারণ।
****
"জোয়ারের সময় কাদা পানিতে সারা শরীর কাদায় ডুবিয়ে শুয়ে ছিলাম"
মাটির এত কাছে যেতে পারলেই বুঝি সুন্দরবনকে অধিকার করা যায়।
****
"নিরবতা ভেঙে ডানা ঝাপটিয়ে একটা পেঁচা উড়ে গেলো উপর দিয়ে"
আমার সীমিত টিভি-বই থেকে প্যাঁচার নিরব উড্ডয়নের কথা জেনেছি। আপনার বদৌলতে সুন্দরবনের ব্য়াতিক্রমি প্য়াঁচার কথা জানলাম। ধন্য়বাদ।
ধন্যবাদ দুর্দান্ত।
"নিরবতা ভেঙে ডানা ঝাপটিয়ে একটা পেঁচা উড়ে গেলো উপর দিয়ে" পেঁচা উড়ে যাবার ব্যাপারটা অনুমান। সেই সময়ের কিছু আগে পেঁচা যেদিক থেকে এসেছিলো সেদিকে ওর ডাক শুনেছিলাম। এটা অন্য পাখিও হতে পারে। সব পাখিই সাধারণত নিঃশব্দে উড়ে। উড্ডয়নের মুহূর্তে ডানা খোলার সময় শব্দ হয়, আর অনেকগুলো যখন একসাথে উড়ে সেসময় বাতাসে ডানার বাড়িতে শব্দ ঘুরে ফিরে।
আমার ধারণা ভুলও হতে পারে।
...........................
Every Picture Tells a Story
দুর্দান্ত!
যেমন ঘটনা, তেমন বর্ণনা। এই সফরের ছবি দিয়ে একটা আলাদা পোস্টের জন্য ইট রেখে গেলাম।
.......................................................................................
Simply joking around...
ধন্যবাদ আনিস ভাই। মনে থাকবে।
...........................
Every Picture Tells a Story
শ্বাসরুদ্ধকর কাহিনী। অনেক ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই। আফম আবদুল জলীল ছাড়া মনে হয় এভাবে সরাসরি কথোপকথোন থেকে সুন্দরবনের ডাকাতদের নিয়ে কেউ লেখেনি। তাও জলিল সাহেব লিখেছিলেন কারাবন্দী বাছের ডাকাতের সাথে জেলখানায় বসে কথা বলতে বলতে।
আমাদের কৈশোরকালে পরিবারের সুন্দরবনে কিছু ব্যবসা ছিলো। সেসময় ছিলো কবিরাজ, দেলোয়ার, মনু, বর্তমান খুলনার সিটি ওয়ার্ড কমিশনার ও বিশিষ্ঠ দানশীল বোজর্গ মুক্তা, এদের রাজত্ব। মুক্তা ছাড়া সবাই পরপারে পাড়ি জমিয়েছে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মাধ্যমে। দুর্ধর্ষ মনুকে একবার কবিরাজ ধরে নিয়ে গিয়ে হাত-পা ভেঙে দিয়েছিলো। মনু এরপর ডাকাতি ছেড়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরী নেয়। কিন্তু তার কিছুদিন পরে সে খুন হয়ে যায়। দেলোয়ারকে খুন করে মুক্তা ডাকাত সরকারের তরফ থেকে পুরষ্কার হিসেবে পিস্তলের লাইসেন্স পায়। এদর কিছুকাল পরে রাজত্ব আসে সরোয়ারের হাতে। আরও অনেক অনেক কাহিনী। শুধু ভাবি কি এদের জীবন!মুক্তা ছাড়া আর কেউই সম্পদ গড়তে পারেনি। পালিয়ে পালিয়ে জীবন কেটেছে এবং জীবনের সমাপ্তি ঘটেছে খুন হওয়ার মাধ্যমে। ভেবেছিলাম বড়ো হয়ে মনু ডাকাতের কাহিনী লিখবো। কিন্তু তা শোনার আগেই তো সে শেষ।
একটা কথা বলি কিছু মনে নেবেন না মুস্তাফিজ ভাই। লিটু সম্পর্কে রাজু যা বলেছে তা পুরো সঠিক নয়। আমি ব্যাক্তিগতভাবে লিটুকে খুব ভালোভাবেই চিনতাম এবং সে'ও আমাকে চিনতো এবং কথাবার্তা ছিলো। খুলনা ছোট শহর তাই এটা কিছুটা স্বাভাবিক, আর তাই বেশি বিস্তারিত লিখছি না। লিটু সম্পর্কে রাজুর বক্তব্যকে আমার কাছে তার ক্ষোভের বহিপ্রকাশ বলে মনে হয়েছে। লিটুর ক্ষমতা সম্পর্কে শুনলে গায়ের লোম কাঁটা দিয়ে ওঠার কথা, ঠিকাছে। কিন্তু সুন্দরবন বা সুন্দরবনের ডাকাতি কখোনোই সেভাবে লিটুর নিয়ন্ত্রণে ছিলোনা যেভাবে রাজু বলেছে। সেখানে আরও অনেক দরবেশ জড়িত ছিলো বা আছে। তবে এটা সত্যি যে সুন্দরবনের ডাকাতরা কোনও কারনে শহরে আসলে বা থাকলে তাদেরকে হয় লিটুর তাবেদারীতে নয়তো আমিন সাহেবের ছত্রছায়ায় থাকতে হতো। কাহিনী অনেক জটিল বস্।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
জলিল সাহেব জ্ঞানী মানুষ, উনি বন সম্পর্কে যতটুকু যানেন তার এক ভাগও আমি জানিনা।
এখানে লেখার পুরোটাই আরেকজনের বক্তব্য। দ্বিমত থাকতেই পারে। আপনারা আরো ভালো বলতে পারবেন।
এমনকি এসব ডাকাতদের প্রতি আমার নিজস্ব কোন সহানুভুতি নাই।
...........................
Every Picture Tells a Story
সবাই তো সব বিশেষণ ব্যবহার করেই ফেলেছে। নতুন করে কী আর বলবো! শুধু দ্রোহী ভাইয়ের কথাটা আমিও বলি, একটা উপন্যাস হতে পারতো এই কাহিনি নিয়ে। এখনও কিন্তু হতে পারে। লিখে ফেলেন না!
শেষটা পছন্দ হয় নি সেভাবে। খুব দ্রুত হয়ে গেছে মনে হলো।
আর ভাবলে খারাপ লাগে যে সেসময় আমিও সুন্দরবনেই ছিলাম, তবে আলাদা। আপনার সাথে ঘুরতে যেতে পারলে দারুণ ব্যাপার হতো একটা। কতদিনের ইচ্ছাও তো ছিল সেটা। এই সফরের শুরুতেই ফোনে আপনার সাথে আলাপ তো হয়েছিলই, পান্থ'দার কাছেও শুনেছিলাম পরে। রাজু ডাকাতের গল্প বলবেন বলেছিলেন। এতদিন পর বিস্তারিত জানতে পারলাম আপনার অসাধারণ এই লেখায়। অভিজ্ঞতা বটে!
বিভিন্ন ট্যুর এজেন্সি যে লোক নিয়ে যায়, ওদের কাছ থেকে কি ডাকাতরা টাকা নেয়? ক্ষতি না করার শর্তে। তবে আপনি তো বললেনই যে পর্যটকদের ওরা কিছু বলে না, নিজেদের স্বার্থেই।
ধন্যবাদ প্রহরী।
ট্যুর এজেন্সি গুলো সম্ভবত ডাকাতদের নজরের বাইরে থাকে। যতদূর শুনেছি ডাকাতরা এদের থেকে চাঁদা তুলেনা।
তবে বর্ষা ট্যুরিজমের ব্যাপারটা ভিন্ন, এদের আরো অনেক ব্যবসা আছে, ইদানীং বুড়িগোয়ালিনীর কাছে একটা রিসোর্টও বানাচ্ছে দেখলাম।
বর্ষার অফিস থেকে ডাকাত হাফিজের হাসি মুখে বের হওয়ার দুইটা মানে থাকতে পারে, এক, সে চাঁদা নিয়ে বের হয়েছে, দুই, হাফিজও বর্ষার সাথে জড়িত।
...........................
Every Picture Tells a Story
এম.এ. জলিল a.k.a অনন্ত একবার জানুক, হাফিজ ডাকাতের খবর আছে! "ব্লো" দিয়ে "ডিশটয়" করে দিবে একেবারে!
হাফিজ মনে হয় ইদানীং ডিশটয় হয়েই গেছে, অনেকদিন খোঁজ খবর পাইনা। তবে গোঁফ ছাড়া দাড়িওয়ালা ডাকাতদের সুবিধাও আছে, টুপি পড়লেই মওলানা।
...........................
Every Picture Tells a Story
সচল এর অণুদাকে হিংসে করি উনার লেখার মাধ্যমে। তাও মাত্র কিছুদিন হলো। আর আপনাকে শ্রদ্ধার পাশাপাশি কিছুটা হিংসে করি সেটা অনেক দিন ধরেই। যখন ফ্লিকার এ আপনার ছবি দেখতাম অথবা কোন ফটো-ওয়াকে দেখা হতো আপনার সাথে। শ্রদ্ধা করি আপনার চলাফেরা, আচরণ এবং নিরহংকার বিনয় এর জন্য। আর আমি নিজের জন্য ঠিক যেরকম জীবন সবসময় কল্পনা করে এসেছি ঠিক সেই জীবনটাই আপনি পার করছেন দেখে হিংসে।
লেখা খুব ভালো লাগলো। পুরোপুরি লেখার জগতে না এলেও, ছবির সাথেই না হয় কিছু কিছু লিখেন। আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু জানার আছে, আপনার চোখে দেখার মতোই তাও উপভোগ্য আমার জন্য। ভালো থাকুন।
ধন্যবাদ অতিথি।
...........................
Every Picture Tells a Story
ধন্যবাদ অতিথি।
...........................
Every Picture Tells a Story
কত সহজভাবে বলে গেলেন একদম ভিন্নজীবনের গল্প। এই এলাকাগুলোতে কাজের কারণে ঘুরে দেখেছি এগুলো এদের একদম প্রত্যহিক জীবনের সাথে যুক্ত।
ভালো থাকবেন মুস্তাফিজ ভাই, অনেক শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ তানিম এহসান
...........................
Every Picture Tells a Story
"ঠিক এই মুহূর্তে এই পরাক্রমশালী মানুষটিকে আমার খুব অসহায় একজন মনে হয়"---স্পর্শ করার মত একটি লাইন।
নিত্যদিন যাদেরকে ঘৃণা করি,তাদের ভেতরটা কখনো কি জানার চেষ্টা করি?
্তাই বলে এদের প্রতি সহানুভুতি দেখালে বিপদ, অপরাধী সবসময়ের জন্যই অপরাধী।
...........................
Every Picture Tells a Story
বেঙ্গল টাইগারের থাবার সমান দুর্ধর্ষ লেখাটি হরিণের মতন সশঙ্ক হৃদয়ে সুন্দরবনের খাঁটি মধুর মতই তৃপ্তি নিয়ে উপভোগ করলাম। আপনার জইন্যে শীতের খেজুর গাছের কাঁচা রস অর্ডার দিলাম এক কলস...
---------------------
পথেই আমার পথ হারিয়ে
চালচুলোহীন ছন্নছাড়া ঘুরছি ভীষণ...
ধন্যবাদ পথিক পরাণ
...........................
Every Picture Tells a Story
দুর্দান্ত!
ধন্যবাদ
...........................
Every Picture Tells a Story
অ-সা-ধা-র-ণ !! জাস্ট অসাধারণ !!
... সময় করে এটা নিয়ে একটা ছোটোখাটো উপন্যাসও লিখে ফেলতে পারেন ভাইয়া। দারুণ হবে। এইভাবে বনদস্যুদের জীবন নিয়ে খুব বেশি কিছু লেখা হইসে বলে মনে হয় না। আমি অন্তুতঃ খুব আগ্রহ নিয়েই পড়বো।
্ধন্যবাদ সুহান। অন্তত তোমার জন্যে হলেও এক কপি ছাপানো হবে।
...........................
Every Picture Tells a Story
অসাধারন !
পড়া শেষ হলেও ঘোর কাটেনি !!!
ধন্যবাদ স্বপ্নলোভী
...........................
Every Picture Tells a Story
লেখা নিয়ে মন্তব্য করা নিষ্প্রয়োজন। আপনার গুণাবলী আর অভিজ্ঞতা এমন যে, আপনাকে ঈর্ষা করার যোগ্য লোকও আমি আমার ধারে-কাছে দেখি না।
আপনার সাথে সুন্দরবন যাবার সৌভাগ্য না হলেও আপনার মুখ থেকে সুন্দরবন এবং আরো অনেক জায়গার/ঘটনার গল্প শোনার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। এই সুযোগ যাদের হয়নি তাদের বোঝানো সম্ভব না আপনার মুখে গল্প শোনাটা কেমন অসাধারণ ব্যাপার। আমরা জানি, আপনার পায়ের নিচে সর্ষে নয় - মটরদানা বা রয়নাদানা রাখা। আশা করি শীঘ্রই কোথাও না কোথাও বেরিয়ে পড়বেন (কে জানে এর মধ্যে হয়তো বেড়িয়েও এসেছেন)। আপনার নতুন গল্প শোনার অপেক্ষায় থাকবো বরাবরের মতো। ভালো থাকবেন বস্!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ধন্যবাদ পান্ডব'দা।
আমি যতবার সুন্দরবন গিয়েছি একবার ছাড়া (সেবার শুধু একা গিয়েছিলাম,সেই কাহিনী কাউকে বলিনাই) প্রতিবারই লোকজন সাথে নিয়ে গিয়েছি, সচলে ঢোকার পর থেকে সচলরাই বেশিরভাগ আমার সঙ্গী ছিলো। এখন তো দেশের বাইরে, কোনদিন দেশে এলে অবশ্যই সুন্দরবন যাবো এবং আপনাকে জানাবো।
ভালো থাকবেন।
...........................
Every Picture Tells a Story
ঈমানে কই -- শুধু দুই প্যারা পড়বো মনে করে এইখানে ঢুকেছিলাম ... ... এইবার আগের পর্বেও যাওয়া লাগতেছে
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
ধন্যবাদ শামীম ভাই। আগের লেখা যে পড়েন নাই সেটা ভাবি নাই।
...........................
Every Picture Tells a Story
বিশ্বাস করুন.. এটা আপনি না লিখে আর কেউ লিখলে আমি স্রেফ চাপাবাজি মনে করতাম।
দুর্ধর্ষ লেখা, ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। আপনার সাথে সুন্দরবন সফর করে লোকজন কেন গর্ব করে তা বুঝলাম এবার। তবে আপনাকে ডাকাতেরা চোখে চোখে রাখে জানতে পেরে শিউরে উঠলাম। ভুটান যেতে আপনার কাছ থেকে গাইডলাইন পেয়েছিলাম, সুন্দরবন যাবার সময় বোধহয় সেরকম হবে না। একা যাওয়া অসম্ভব ওই জায়গায়। আপনার সাথে না গেলে এই গা শিউরানো অভিজ্ঞতাও অসম্ভব।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
চাপা মনে হওয়ার মতন ঘটনা গুলো এখনও লেখি নাই। সেগুলো অন্য সময়।
৫/৬ জন মিলে সুন্দরবন গেলে আমি বন্দোবস্ত করে দিতে পারবো।
...........................
Every Picture Tells a Story
মুস্তাফিজ, আপনার অসাধারণ বর্ণনার চেয়ে অনন্য অভিজ্ঞতাটার কথাই আমি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। ওরিয়ান্না ফালাচির লাদেন সাক্ষাতের চেয়েও বেশি রোমাঞ্চকর মনে হল আমার কাছে রাজু-মুস্তাফিজ সাক্ষাৎ।
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
ধন্যবাদ মাহবুবুল হক। আসলেই অভিজ্ঞতাটা ছিলো অন্যরকম।
...........................
Every Picture Tells a Story
আমি এখনো সুন্দরবন যাই নাই। আপ্নের লগে যাইতাম চাই
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
...........................
Every Picture Tells a Story
কি টান টানরে বাবা।
ধুবলার চরেতও বেটা আমার পাশেই বসা ছিলো! কিন্তু চিনলাম না তখন।
খুব দ্রুত থেমে গেলেন। আরেকটু দিতে পারতেন। টানতে পারতেন। অবশ্য এই খামতিটা পুষিয়ে দিয়ে যদি একটা উপন্যাস সত্যি সত্যি জনদাবীর মুখে লিখে ফেলেন, তাহলেতো আমার জন্য সুখবর। উপন্যাসটা বিক্রি করে দু-চারটা টাকা ইনকাম করতে পারবো।
শেষ করি এখন, পিলিজ লাগে ভাই একটা উপন্যাস নামান। গরীব প্রকাশকের দিকে একটু নজর দেন।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
যতদূর আন্দাজ করতে পেরেছি রাজু তোমার আর অরূপের পাশেই বসেছিলো।
আচ্ছা বইয়ের জন্য অগ্রিম টাকা পাঠাও।
...........................
Every Picture Tells a Story
দারুণ জিনিস বস!
ডাকাইত দেখতে কেমুন হয়!! ফটু নাই কেনু?!!!
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
ধন্যবাদ সুজন'দা।
ডাকাতরা আমার আপনার মতই মানুষ।
...........................
Every Picture Tells a Story
স্রেফ অসাধারণ। এধরণের প্রান্তিক মানুষের জীবনমুখী সাক্ষাৎকার সচলে আরও আরও উঠে আসুক। 'সাক্ষাৎকার' ক্যাটাগরিতে শুধু 'কীর্তিমান'দের জন্য বরাদ্দ না রেখে সেটার ব্যাপকতা আরও বিবর্ধিত করা হোক।
ধন্যবাদ ধৈবত।
...........................
Every Picture Tells a Story
উপন্যাসটা লিখেই ফেলেন মুস্তাফিজ ভাই! তাহলে সহযাত্রী চরিত্রের মধ্যে আমারও একটা হিল্লে হয়!
মাল মসলা তো দিলামই, এখন তুমিই চালাও।
...........................
Every Picture Tells a Story
আমারে তো অনেক পথ পাড়ি দিয়ে হবে!
মুস্তাফিজ ভাই, সুন্দরবন গিয়েছিলাম একবার। তিন দিন তিন রাতের স্মৃতিময় সেই ভ্রমণে অন্যতম সঙ্গী ছিলেন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়। কটকা ওয়াচ টাওয়ারে কাটিয়ে ছিলাম একটা রাত। গভীর রাতে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখাও পেয়েছিলাম। গাইড বলেছিলো আমি নাকি খুবই ভাগ্যবান। অনেকে ১২/১৩ বার এসেও বাঘের দেখা পায়নি! ধান ভানতে শিবের গীত গাইছি। বলতে এসেছিলাম যে আপনি আর তারেক অণু তো দুর্ধর্ষ রকমের মেধাবী রে ভাই। ফটোগ্রাফিও করেন অসাধারণ আবার লেখেনও চমৎকার! এই লেখাটা দারূণ হয়েছে। চড়কির মেলাও ভালো লেগেছিলো। শুভ কামনা।
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
ধন্যবাদ রিটন ভাই। আপনি পড়েছেন তাতেই আমি খুশি।
...........................
Every Picture Tells a Story
দুইটা পর্ব একবারে পড়লাম।
শূনতে একরকম ভালোলাগা ছিলো, আর পড়তে অন্যরকম ভালোলাগা। দুটোই শ্বাসরুদ্ধকর!
হিংসায় বুকব্যথা শুরু হলো, মুস্তাফিজ ভাই। কখনো সচল লীলেনদা, নজু ভাই। কখনো অপু ভাই, অরূপ। কখনো পান্থ। সুন্দরবন নিয়ে আপনার আগামী লেখাগুলোর কোনো একটায় নিশ্চয়ই থাকবে, "সেবার আমার সাথে ছিলো সুপাশি।" থাকতেই হবে।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আচ্ছা হবে
...........................
Every Picture Tells a Story
ধন্যবাদ
...........................
Every Picture Tells a Story
এক শব্দে, বাহ!
শেষটা যদিও তাড়াহুড়ায় হয়েছে বলে মনে হয়েছে । খুব অবিচার হয়েছে। বর্নণা সেই আগের মতোই দুর্দান্ত। ছবি যদি তুলে থাকো এই যাত্রায় তবে দেখায়ো কোন সময়ে, যদি সুযোগ হয়। তুমি ফটোগ্রাফার তা বুঝলাম ভাইয়া, কিন্তু তুমি খুব ভালো লিখতেও পারো এই কথাটা ইয়াদ রাইখো!
দেখা কবে হবে আবার কে জানে। ভালো থেকো!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আসলেই কী তাড়াহুড়া করেছি?
দেখি কোন কিছু বাদ পড়ে গেলো কীনা।
...........................
Every Picture Tells a Story
এই কথাটা সত্য। আপনি নিজের প্রতি অবিচার করেছেন। এই লেখাটার প্রতিও। একটা জাঁকালো লেখা পড়ার জন্য জাঁকিয়ে বসে দেখি লাস্ট সিনে সবাইরে এক প্যারার মধ্যে মাইরা ফালাইছেন।
প্রথম পর্ব সচলে দেওয়ার পরপরই কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমি কমপক্ষে ছয়টা ফোন পেয়েছি, কাউকে সমস্যায় ফেলা যদিও আমার উদ্দেশ্য ছিলোনা তারপরও কেউ কেউ আক্রান্ত বোধ করেছেন। পরিস্থিতির কারণে কিছু বিষয় তাই এড়িয়ে যেতে হচ্ছে আমাকে। এরপরও বলবো এ ঘটনা নিয়ে আরেকটা লেখা আশাকরি শীঘ্রই পেয়ে যাবেন।
...........................
Every Picture Tells a Story
এই লেখাটা মাষ্টার পিস।
(তারমানে আগের গুলো ষ্টুডেন্ট পিস, তা নয়!)
ধন্যবাদ আখতারুজ্জামান
...........................
Every Picture Tells a Story
এই সিরিজটা আমি এত্তোদিন পরে পড়লাম?!?!
কি আর বলবো - মন্ত্রমুগ্ধের মত দুইটা পর্বই একটানে পড়ে ফেললাম
ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই
ধন্যবাদ বাপ্পীহায়াত
...........................
Every Picture Tells a Story
নতুন মন্তব্য করুন