কখনো তাকে দেখা যায় একটা আবছায়া হয়ে ভেসে বেড়াতে, কখনো ধোঁয়াশা, আবার কখনো কখনো সুস্পষ্ট দেখা যায় নিঝুম বিশাল হলওয়ে ধরে যেন শতাব্দী প্রাচীন গীর্জায় কোনো এক ধর্মসেবী ঈশ্বরের স্তুতি গাইতে গাইতে হাঁটছেন।
তার পদচারণা প্রায়শই ধীর স্থির শান্ত, মাঝে মাঝে মনে হয় একাকী বিষন্ন কেউ চলে যাচ্ছে সামনে দিয়ে।
তার নাম গ্রেস কিপারলী। শতবছর আগেই দেহ ত্যাগ করলেও আজো এমন শত শত মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে যারা বিশ্বাস করে তিনি আছেন। দেখা দেন মাঝে মাঝে। কখনও ছেড়ে যাননি ডিয়ারলেকের পাশে ‘ফেয়ারএকরস’ এ তার বিশাল প্রাসাদ ‘কিপারলী ম্যানসন’, হালের ‘বার্ণাবী আর্ট গ্যালারি’।
আমাদের এই ‘কিপারলী ম্যানসন’, গত একশ বছরে অনেকবার হাতবদল হয়ে, অনেক সমৃদ্ধ ইতিহাসের পাশাপাশি কিছু কালো অধ্যায়ের সাক্ষী হয়ে, ১৯৬৭ সাল থেকে এর নাম ‘বার্ণাবী আর্ট গ্যালারি’ হলেও অনেকের কাছে পরিচিত ‘আ গ্যালারি অব ঘোস্ট’ নামেও।
চলুন একটু পেছন দিকে যাই। ১৯০৯ সালের কথা। নিউইয়র্কের ব্যবসায়ী হেনরী কিপারলী তার পরিবার নিয়ে অবসর কাটানোর জন্য আমাদের বার্ণাবীর তখনকার এই শান্ত, নিরিবিলি ডিয়ারলেকের পাশে ২০একর জায়গা কিনে নেন। নাম দেন ‘ফেয়ারএকরস’, আর এই ‘ফেয়ারএকরস’এ বৃটিশ আর্কিটেক্ট দিয়ে তৈরি করেন বিশাল এই প্রাসাদ, ‘কিপারলী ম্যানসন’, ১৯১৪ সালে উঠে আসেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী ‘গ্রেস’ কে সাথে নিয়ে।
গ্রেস, যিনি বাচ্চাদের পছন্দ করতেন, তার নাতি-নাতনীদের পছন্দ করতেন। দিনের বেশীর ভাগ সময়ই তিনি প্রাসাদের বাগানে ওদের নিয়ে সময় কাটাতেন। সামাজিক কাজেও যার কথা বার্ণাবীর ইতিহাসের পাতার অনেকটুকু জুড়ে আছে। তিনি কিন্তু বেশীদিন এ বাড়িতে থাকতে পারেননি। ১৯১৭ সালে মাত্র ৫৪ বছর বয়সে দেহত্যাগ করেন গ্রেস।
গ্রেসের মৃত্যুর পর তার উইল দেখে জানা যায় এ বাড়ির মালিক আসলে গ্রেস নিজেই, এ জায়গা তিনি কিনেছিলেন তার ভাই ফারগুসনের (আমরা এই ফারগুসনের নাম দেখতে পাই স্ট্যানলী পার্কের ফারগুসন পয়েন্ট নামকরণে) দেয়া টাকায়, তিনি তার স্বামী হেনরীকে এটা দান করে গিয়েছিলেন, শর্ত ছিলো তার মৃত্যুর পর এই বাড়ি বিক্রি করে সমূদয় টাকা ভ্যাঙ্কুউভারের স্ট্যানলী পার্কে বাচ্চাদের খেলার জায়গা তৈরীতে যেন ব্যয় হয়। গ্রেসের মৃত্যুর তিন বছরের মাথায় ভগ্ন হৃদয় হেনরী প্রাসাদ বিক্রি করে ক্যালিফোর্ণিয়াতে চলে গেলেও, বিক্রির টাকা সাথে সাথেই বাচ্চাদের খেলার জায়গা তৈরিতে ব্যয় হয়নি, তা হয়েছিলো আরো পরে ৭৯ বছরে হেনরী মারা যাবার পর ১৯২৯ সালে (স্ট্যানলী পার্কের সেকেন্ড বীচের কিপারলী পার্ক এখনও তার নামেই আছে)।
ভুতের গল্প শোনাতে যেয়ে আমি ইতিহাস পেতে বসেছি এই কারনে যে এ ঘটনাগুলো ‘কিপারলী ম্যানসন’ আর ‘ফেয়ারএকরস্’ কীভাবে হাহাকার, বিষন্নতা আর একাকীত্বের ভেতর দিয়ে একসময় অভিশপ্তের দিকে এগিয়ে গিয়েছে তা বুঝতে সাহায্য করবে। আমার মত আপনিও আশ্চর্য হবেন শুনে যে গ্রেসের মৃত্যুর পর থেকে অনেকবার হাত বদল হলেও গত একশত বছরে একরাতের জন্যও কোনো পরিবারের স্থায়ী আবাস ছিলোনা এ দূর্ভাগা প্রাসাদে!
এতক্ষণে নিশ্চয়ই কৌতূহল জেগেছে গত একশত বছরে তাহলে কী ঘটেছিলো এ প্রাসাদে তা জানতে, তাইনা?
হেনরীর কাছ থেকে ভ্যাঙ্কুউভারের একসময়ের মেয়র ফ্রেডরিক এটা কিনে নিলেও হাত বদলে প্রাসাদ আর ফেয়ারএকরস্ এর মালিক হয় ‘সিটি অব ভ্যাঙ্কুউভার’। এরপর থেকে শান্ত, নিরিবিলি, লোকালয় থেকে দূরে এ প্রাসাদ ভ্যাঙ্কুউভার জেনারেল হাসপাতালের যক্ষা রোগীদের ওয়ার্ড হিসাবে ব্যবহৃত হতে থাকে। ১৯৩৯ সালে যক্ষা ওয়ার্ড এ স্থান থেকে সরে গেলে সাধু বেনেডিক্ট এর অনুসারী রোমান ক্যাথেলিকদের হাতে আসে এ প্রাসাদ আর এর আশে পাশের কয়েকটা প্রাসাদ। ভ্যাঙ্কুউভার থেকে কিছুটা দূরে ‘মিশন’ নামক এদের মূল সেমিনারী (Church of Westminster Abbey) তৈরি না হওয়া পর্যন্ত পরবর্তী কয়েকবছর কালো পোশাকধারী সাধু বেনেডিক্ট এর অনুসারীরা এখানেই ছিলো। এদের চলে যাবার পর ১৯৫৪ সালে হাত বদল হয়ে এটা চলে আসে কুখ্যাত ধর্মীয় গোষ্ঠী ‘Temple of the More Abundant Life’ এর নেতা যে নিজেকে আর্চ বিশপ জন প্রথম নামে পরিচয় দিত, তার হাতে। অল্প কিছুদিন পরই জানা যায় এই আর্চ বিশপ আসলে এক কুখ্যাত শিশু, নারী নির্যাতনকারী অপরাধী উইলিয়াম ফ্র্যাঙ্কলিং ওলস্। যার নামে স্ট্যাস্টস্ এ অনেকগুলো ওয়ারেন্ট জারী আছে।
যক্ষা রোগিদের আবাস থেকে গোঁড়া ধর্মীয় গোষ্ঠীর হাতে, সেখান থেকে আরেক কুখ্যাত অপরাধীর আস্তানা, এভাবে ব্যবহার হতে হতে এ প্রাসাদের অন্ধকার দিকগুলোর বিস্তার ঘটতে থাকে। ১৯৬০ সালে উইলিয়াম ফ্র্যাঙ্কলিং ওলস্ চলে যাবার পর সিমন ফ্রেজার ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের আবাসিক হল হিসাবে এটা ব্যবহৃত হতে থাকে। আসলে সেসময় থেকেই এর অতিপ্রাকৃত ঘটনাগুলো মানুষের সামনে আসতে থাকে। যক্ষা রোগীদের কান্না, মঙ্কদের গান কিংবা নির্যাতিত শিশুদের চিৎকার শোনা ছাত্রদের জন্য নিত্তনৈমিত্তিক ঘটনা হিসাবে দাঁড়িয়ে যায়। নিশ্চিন্তে লেখাপড়া বা ঘুমানো কোনোটাতেই স্বস্তিতে ছিলোনা ছাত্ররা। ভয়ে অনেকেই চলে যায় প্রাসাদ ছেড়ে। আস্তে আস্তে বিভিন্ন গ্রাফিতি আর দেয়াল লিখনে ভরে যেতে থাকে এ প্রাসাদ, ক্ষয়ে যেতে থাকে পলেস্তারা, শুকিয়ে যেতে থাকে বাগান। সবার কাছে পরিচয় পেতে থাকে ভূতের বাড়ি হিসাবে।
অবশেষে একদিন, কানাডার শতবছর উদযাপনকে সামনে রেখে একটা আর্ট গ্যালারি তৈরির জন্য ১৯৬৬ সালে সিটি অব বার্ণাবী প্রাসাদটি কিনে ফেলে। পুরনো সৌন্দর্য আর ঔজ্বল্য ফিরে পেতে থাকে কিপারলী ম্যানসন, উধাও হয়ে যায় যক্ষা রোগীদের কান্না, মঙ্কদের গান কিংবা নির্যাতিত শিশুদের চিৎকার। এর জায়গা নেয় কিছু অতিপ্রাকৃত ঘটনা। নিজ বাড়িতে দেখা দেন গ্রেস কিপারলী। শুরু হয় আরেক ইতিহাস।
আর্ট গ্যালারির উপযোগি করতে যখন মেঝে বদলে দেয়া হচ্ছিলো বা দেয়াল খুলে নতুন দেয়াল লাগানো হচ্ছিলো, সেসময় আস্তে আস্তে এখানকার অশরীরীরা বাইরে আসতে থাকে, বিভিন্নভাবে জানান দিতে থাকে নিজেদের অস্তিত্ব।
অদ্ভুত ধরনের শব্দের সাথে ভৌতিক আওয়াজ শোনা এখানকার কর্মচারীদের কাছে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। সেই সাথে হঠাৎ হঠাৎ তাপমাত্রা এতই কমে যেত যেন দাঁত কপাটি লাগে সবার। এ ধরনের গল্প অনেক। আমরা এখন এরকম কিছু গল্প শুনবো যা কর্মচারীদের দ্বারা লিপিবদ্ধ করা হয়েছিলো।
একজন কর্মচারী যিনি প্রাসাদের দ্বিতীয়তলায় কাজ করতেন, তিনি প্রায়ই উপরের তলায় কারো হেঁটে যাবার শব্দ আর আসবাব টেনে নেবার শব্দ পেতেন। উল্লেখ্য যে তৃতীয় তলা ছিলো খালি এবং তালাবদ্ধ।
কেউ কেউ রিপোর্ট করেছেন গ্যালারি দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ থাকা অবস্থায় ভেতরে অনেকের হাঁটাহাঁটির শব্দ শোনা যায় আর পুরো বন্ধ থাকার সময় ধাম করে দরোজা লাগানোর শব্দ শোনা গেছে।
আরেকজন কর্মচারী যিনি প্রাসাদের বেসমেন্টে ফ্রেম বাঁধানোর কাজ করতেন, একদিন নীচে নেমে উনার টুলবক্স হাত থেকে নামিয়ে সামনে থেকে একটা ফ্রেম সরিয়ে টুল বক্সের দিকে হাত বাড়িয়ে দেখতে পান সেটা নেই। এদিক ওদিক খোঁজাখুঁজি করে পরে কয়েকফুট দূরে তা দেয়ালে ঝোলানো অবস্থায় দেখতে পান।
এগুলো প্রাসাদের অতিপ্রাকৃতিক ঘটনার কয়েকটি উদাহারন মাত্র। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায় এগুলো আসলে কি, কার বা কাদের দ্বারা হচ্ছে, কেনই বা হচ্ছে, আসলেই কি সেখানে কোনো ভুত বা এই জাতীয় কিছু আছে?
এখানকার কর্মচারীরা বাচ্চাদের কান্নার শব্দও পেয়েছেন। কেউ কেউ দাবী করেছেন বছর দশেকের বিষন্ন এক মেয়েকে কেঁদে কেঁদে ঘুরতে দেখে কাছে যাবার সময় মেয়েটি হঠাৎ করে যেন দেয়ালে মিশে গেল! হতে পারে সে বা তারা ‘Temple of the More Abundant Life’ এর হাতে নির্যাতিত কোনো শিশু। কেউ কেউ বলে থাকেন শিশুদের প্রতি প্রচণ্ড ভালোবাসা যার হৃদয়ে সেই গ্রেস কিপারলী নিজের বাড়ীতে বাচ্চাদের উপর এধরনের অত্যাচার সইতে না পেরে আবার ফিরে এসেছেন এখানে নিজের অতৃপ্তি নিয়ে!
গ্রেসের কথা বললাম এজন্যেই যে অনেকেই বাতাসে দোলানো লম্বা সাদা গাউন পরা গ্রেসকে হেঁটে যেতে দেখেছেন এখানে, প্রাসাদে, বাগানে, সর্বত্র। কেউ দেখেছেন স্পষ্ট, কেউ শুধু আবছায়া। কখনও শান্ত, কখনও বা বিষন্ন।
কোনো কোনো কর্মচারী একজন পুরুষকেও দেখেছেন ভেতরে। তার পদশব্দ ভারী, পরণে গত শতাব্দীর অভিজাতদের পোষাক চার বোতামওয়ালা কোট, মাথায় হ্যাট। ওরা বলে থাকেন এটা হতে পারে হেনরী।
তিনিও ফিরে এসেছেন গ্রেসের সাথে মিলিত হতে? নাকি গ্রেসের প্রাসাদ নিয়ে উইল বাস্তবায়নে দেরী হওয়ায় রাগান্বিত গ্রেসকে সান্তনা দিতে? আমরা আসলে কিছুই জানিনা। এসব ঘটনার ব্যাখ্যা একেকজনের কাছে একেকরকম।
আমার কাছে এর কোনো ব্যাখ্যা নেই, আপনার আছে?
---------------------------------------------
পাদটীকাঃ আমাদের দেশে যেমন মিলাদ পড়িয়ে কথিত জ্বীন-ভূত তাড়ানো হয় এদেশেও তেমন লোক আছে। এদেরকে বলে ঘোস্টবাস্টার। উপরে আলোচ্য এ প্রাসাদে তেমন বেশ কয়েকজনই এসেছিলো ভূত তাড়াতে। তাদের কথানুযায়ী তারা বিভিন্ন সময়ে যেসব ভূত এখানে পেয়েছে তার একটা হলো একজন যক্ষা রোগী, যিনি উদগ্রীব ছিলেন বাড়ী ফেরার জন্য। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত তার মৃত্যু হয়েছিলো এখানে। কয়েকজন ধর্মাচারী মঙ্ক। এই প্রাসাদের একসময়ের সবচাইতে নিষ্ঠুর মালিক উইলিয়াম ফ্রাঙ্কলিং। একজন অপরিচিত বয়স্ক মানুষ যিনি বলা হয়ে থাকে বাড়ীটির মালিক হতে চেয়েও পারেননি।
তবে তাদের কেউই কোনো শিশু ভুত বা গ্রেস কিপারলীর কোনো হদিস করতে পারেননি। নিজের বাড়িতে গ্রেস এখনও বহাল তবিয়তেই আছেন। হয়তো আমিও একদিন তার দেখা পাবো সাদা কাপড় জড়িয়ে সামনের বাগানের ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে কুয়াশায় মিলিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
-----------------------------------------------
অফ টপিকঃ গতকাল কয়েকজন বন্ধুসহ সেখানে আবার গিয়েছিলাম ছবি তুলতে। ছবি তোলা শেষে হাঁটতে হাঁটতে নেমে আসি ডিয়ার লেকের পাড়ে। লেকের এক কোনায় একটা খালের মতন, উপরের পাহাড় থেকে বরফগলা ঠান্ডা পানি নেমে আসছে সেই খাল বেয়ে। খালের উপর বিশাল কাঠের গুড়ি আড়াআড়ি ভাবে রাখা ওপারে যাবার জন্য। আমাদের এক বন্ধু নিষেধ সত্ত্বেও ভেঁজা গুড়িতে উঠে খাল পেরুতে গিয়েছিলেন। উনি যখন মাঝপথে, আমি ছবি তুললাম। ক্যামেরা নামিয়ে চোখ তোলার আগেই শুনি ঝপাৎ। সামনে তাকিয়ে দেখি বন্ধুটি ঠান্ডা পানিতে গলা অব্দি ডুবে আছেন। পানি থেকে উঠে শীতে কাঁপতে কাঁপতে বলে উঠলেন “আমি ঠিকই ছিলাম, ভদ্রমহিলাকে পাশ কাটাতে যেয়ে পড়ে গেছি”। আমরা কিছুই বলিনি তখন। আমরা ছাড়া আশেপাশে আর কেউই ছিলোনা সেসময়!
[/justify][/justify]
প্রাসাদের বাগানে শতাব্দী প্রাচীন Ulmus glabra 'Camperdownii' (Camperdown Elm)
বাগানে গ্রেস কিপারলী। বার্ণাবী আর্কাইভ থেকে নেয়া ছবি
প্রাসাদ প্রাঙ্গনে সাধু বেনেডিক্টের অনুসারীরা। বার্ণাবী আর্কাইভ থেকে নেয়া ছবি
গ্রেস পরিবার। বার্ণাবী আর্কাইভ থেকে নেয়া ছবি
মন্তব্য
"ভুত" নয়, ভূত। "বাড়ী" নয়, বাড়ি।
ছবিগুলি সুন্দর। কিছু ছবি দেখা যায় না, এরর আসে।
্ধন্যবাদ।
...........................
Every Picture Tells a Story
চমৎকার লাগলো পড়তে। ভূতের বাড়ি সব সময়েই টানে। আজকে বাইরে ঠিক ভ্যাঙ্কুভারের ওয়েদার। কাজের ফাঁকে ফাঁকে লেখটা পড়লাম, চায়ে চুমুক দিতে দিতে। Camperdown Elm গাছটার রুক্ষ্ম চেহারা দেখে মনে হয় এটা জীবন্ত হয়ে গলা চেপে ধরতে পারে।
এই লেখাটা আজকের আবহাওয়ার সাথে একদম মানানসই।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এখানে আরো কিছু মজার জিনিষ আছে। যেমন ধরেন মিউজিয়ামের কর্মচারী ইন-আউট বোর্ডে গ্রেসের নাম সবসময়ই আছে এবং 'ইন' অবস্থায়!
...........................
Every Picture Tells a Story
অটোয়া ইউতে একটা আবাসিক হল আগে জেলখানা ছিল
ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের উপর এইরকম বেরহম বাড়িঘর বরাদ্দ কেন কতিপক্ষ জবাব দাউ।
..................................................................
#Banshibir.
আমাকে এরকম কোনো বাড়ির বাথ্রুমে থাকতে দিলেও কৃথার্থ হতাম। চিন্তা করেন শুধু বাড়িটাই ১০একর জায়গার উপর।
...........................
Every Picture Tells a Story
একটা দেশের ছোট একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের এখন পর্যন্ত সর্বশেষ নির্মিত ছাত্রদের আবাসিক হলের ব্যাপারে একটা গল্প প্রচলিত আছে। হলটির ডিজাইন করার দায়িত্ব যে স্থপতির ওপর ছিল একই সময়ে তার ওপর পাশের দেশের একটি কারাগারের ডিজাইনের ভারও ছিল। তার পর যা হবার তাই হলো, কোন এক উদ্ভিদজাত জিনিসের প্রভাবে ছাত্রদের হল আর কারাগারের ডিজাইন বদলাবদলি হয়ে গেলো। কারাগারটির কী হলো সেটি আর জানা যায়নি, তবে হলটিতে এখনো ছাত্ররা থাকে; চার/পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করে স্নাতক হয়ে বের হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বাদশা ভাইর পানিত পড়া ছবি নাই ক্যান?
তুলি নাই। উনাকে উদ্ধারে ব্যস্ত ছিলাম।
...........................
Every Picture Tells a Story
আমাদের এইখানে আজকে মেঘলা আবহাওয়া, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়তেছে। এর মধ্যে আপনার লেখাটা বেশ মানিয়ে গেছে। আমি কেন জানি কখনো "হন্টেড হাউজ" দেখার ব্যাপার আগ্রহ পাই নাই। আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে এইটা দেখা যাইতে পারে- ভূত না হোক, আর্ট গ্যালারিটা দেখা হইলো। রাতের বেলা যাইতে পারলে ভালো হইতো।
শেষের টুইস্টটা ভালো লাগছে।
অলমিতি বিস্তারেণ
আমাদের এখানে বেশ কয়টা এরকম হন্টেড হাউস আছে। মোটামুট সবকয়টাই ঘোরা হয়েছে আমার। তবে আমাদের এখানে একটা পুরো হন্টেড শহর আছে। Kitsault, B.C তে। বাড়িঘর, দোকানপাট, ব্যাঙ্ক, মদের দোকান, পোস্ট অফিস সবই আছে, রাতে রাস্তায় বাতিও জ্বলে, শুধু মানুষ নাই! ওখানে একবার যাবার ইচ্ছা আছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
শহরটা বোধহয় অশরীরদের জন্য ডিজাইন করা
-বৃদ্ধ কিশোর
ঢাকার উত্তরাতে নাকি একটা ভূতের বাড়ী আছে। আমরা কজন বন্ধু মিলে গিয়েছিলাম। একটা বি-শা-ল সাদা বাড়ি। ভিতরে অন্ধকার আর কেমন একটা বিষণ্ণতার গন্ধ ভাসে চারপাশে। জনশ্রুতিতে আছে এ বাড়ির মালিকের বড় মেয়ে নাকি আত্মহনন করেছিল। কি কারণে করেছিল কেউ কোনদিন জানতে পারেনি। তবে আজো নাকি তার ইনিয়ে বিনিয়ে কান্নার মৃদু আওয়াজ পাওয়া যায়।
-বৃদ্ধ কিশোর
হা হা হা! শেষের কাহিনি বেশি ভালো লেগেছে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ধন্যবাদ
...........................
Every Picture Tells a Story
ছবি আর লেখা দারুণ লাগলো --অনেক কিছু জানতে পারলাম। যাইতে হবে একদিন। ভূতের ভয়ে চুবানি খাওয়া বাদশা ভাইয়ের সাথে পরিচয় করাইয়া দিয়েন একদিন ।
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
উনি ভূতকে ভয় পান না। ভূতে উনার বিশ্বাসও নেই। আমি কোথাও বলিনি উনি ভূতে ভয় পান। উনি বলেছিলেন কাউকে পাশ কাটাতে যেয়ে/সাইড দিতে যেয়ে পড়ে গেছেন। আমরা পাশে থাকলেও সেই 'কাউকে' আমরা দেখিনি।
উনি ভালো মানুষ, পরিচয় করিয়ে দিবোনে।
...........................
Every Picture Tells a Story
শুধু আপনিই ভূত দেখেন নাই, আমিও দেখছি।
এই তো ৪-৫ দিন আগে একটার পাল্লায় পড়ছিলাম পঞ্চগড়ে ভূতেরগড় প্রাসাদ এলাকায়। "মহারাজার দিঘী" নামে এখানে একটা দিঘী আছে। এই দিঘীর চারপাশে ২৫ বর্গকিলোমিটার জুড়ে আনুমানিক প্রায় দেড় হাজার বছর আগে মহারাজা পৃথু বা পৃথুবালা নামে এক রাজার দুর্গনগরী ছিল। এর চৌহদ্দির মধ্যে অন্তত ১০টা দিঘী ছিল, যার মধ্যে সর্ববৃহৎটি ৫৩ একর জায়গা জুড়ে বর্তমানে "মহারাজার দিঘী" নামে পরিচিত। জনশ্রুতি আছে, পৃথু রাজা 'কিচক' নামে অসাধু ও নিম্নবর্ণের এক জনগোষ্ঠীর হাতে আক্রান্ত হলে নিজ জাত-কুল পবিত্রতা ও মর্যাদা রক্ষার্থে পরিবার-পরিষদ সৈন্য-সামন্ত ধনরত্নসহ এই দিঘির জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে দলবদ্ধভাবে আত্নহত্যা করেন। এর ফলে পৃথু রাজবংশ ও তাদের রাজত্ব নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনশ্রুতিসূত্রে আরও জানতে পারলাম, সেই থেকে নাকি দিনের আলো নিভে গেলেই এই দিঘীর চারপাশে পৃথুরাজার পারিষদ ও সৈন্যসামন্তদের অশরীরি আত্নারা ঘোরাফেরা করতে থাকে। এলাকাটা তারা পাহারা দেয়। গভীর রাতে নাকি দরবারও বসে। দুর্গনগরীর সব কর্মকাণ্ডই নাকি অশরীরিরূপে চলে এখানে। কাউন্ট ড্রাকুলার মতই মহারাজা পৃথুলা এখনো এখানে অশরীরিরূপে রাজত্ব করে চলেছেন। তো আমি তাঁরই এক দ্বাররক্ষীর পাল্লায় পড়েছিলাম ঐ সুইসাইড দিঘীর কাছে - কোনো প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে এসেছি!
****************************************
আমিও কখনো ভূত দেখিনাই। লোকজনের কাছে শুধু শুনি। ভূতেরগড় খুব ইন্টারেস্টিং লাগলো
...........................
Every Picture Tells a Story
ভূত নিয়া আগ্রহ নাই। কিন্তু ভূতের গল্প বিষয়ে প্রচুর আগ্রহ আছে।
উপাদেয় হয়েছে।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ধন্যবাদ আলবাব।
...........................
Every Picture Tells a Story
ইতিহাসের খুচরো বর্ণনা, ভূতেরগল্প, ছবি, সব মিলিয়ে দারুণ উপভোগ্য।
ধন্যবাদ আয়নামতি
...........................
Every Picture Tells a Story
বাঃ, একেবারে অভিনব বর্ননা, গল্পচ্ছলে! ছবিগুলো দেখে মুগ্ধ হলাম।
ধন্যবাদ
...........................
Every Picture Tells a Story
চমৎকার একটি গল্প, ছবি গুলোও অনেক সুন্দর। ধন্যবাদ
্ধন্যবাদ আপনাকেও
...........................
Every Picture Tells a Story
আরেকবার পড়লাম। এবারো দিব্যি ভালো লাগল।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
তৃতীয়বার চলুক, দেখেন ভূত দেখা যায় কীনা
...........................
Every Picture Tells a Story
যাচ্ছে মনে হয়!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ভাল লাগল।
ধন্যবাদ
...........................
Every Picture Tells a Story
অসাধারণ হয়েছে। আপনার লেখা পড়ে আমি অনুপ্রাণিত হলাম। ভবিষ্যতে আরো লিখবেন আশা করি।
এইটা ডিসকভারী চ্যানেলে দেখলাম
পরবর্তী ভূতের বাড়ি/শহরের গল্প দ্যান
অজ্ঞাতবাস
নতুন মন্তব্য করুন