আবুল হাসান

মুজিব মেহদী এর ছবি
লিখেছেন মুজিব মেহদী (তারিখ: সোম, ২৬/১১/২০০৭ - ১২:৪৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রাজা যায় রাজা আসে (১৯৭৩)

তোমার দীর্ঘ জীবন আমি চাই নি কখনো অবচেতনেও
মৃত্যু ভেতরের খবরাদি জেনেছে আগেই

পৃথিবীতে করণীয় শেষ হলে চলে যাওয়া ভালো

যে তুমি হরণ কর (১৯৭৪)

এত প্রেম কোথায় ধরেছ এই দেহ ঝরনায়-- এত স্ফূর্তি
ক্ষতের বেদনাঘন মনীষার নিটোল প্রবাহে
আমি তো আমূল মন ভেসে যাই
কলাগন্ধী তোমার যত মৃন্ময় শব্দযূথ
আমাকে হরণ করে কোন আঁধারপুরীতে যাবে নিয়ে

পতন সামলে নিয়েছি আমি অল্পেই

পৃথক পালঙ্ক (১৯৭৫)

তোমার সকাশে আর সহজে যাব না
আমি এক তুচ্ছজন কবিতার প্রতিবেশী
আজীবন শ্রমসহবাসী
চাই না যে আমার কবিতাস্বত্ব নিয়ে কাড়াকাড়ি হোক

এতজল তোমার সাগরে আর
ছোট এই নদী আমি কী সাহসে মিশে যাব মোহনায়
তোমার সাম্রাজ্যে কে আমার ঢেউ নেবে চিনে

দূরে রব চির অমলিন

গল্পসংগ্রহ (১৯৯০)

আরেকজন আবুল হাসান আমি চাই না


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

অফটপিক প্রশ্ন করি একটা ।
মুক্তিযুদ্ধ ও নারী বইটার লেখক কি আপনি ?

মুজিব মেহদী এর ছবি

জী মি. হাসিব, বইটির আমিও একজন লেখক। অন্যজন রোকেয়া কবীর। আমি নিজে যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ করি নি, কাজেই সমীক্ষাটিকে অথেনটিক করে তোলার প্রশ্নে একজন মুক্তিযোদ্ধা নারীর পশ্চাতে থেকে কাজ করাই যৌক্তিক মনে করেছিলাম।

এ কাজের জন্য ১৯৯৯-২০০০ মেয়াদে মাঠপর্যায়ে আমি ব্যাপক সফর করি, সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলি ও দলিল সংগ্রহ করি। আর সঙ্গে তদবধি প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বইয়ের একটি নির্বাচিত অংশ ঘেঁটে পাণ্ডুলিপিটি তৈরি হয। বইটির ছাপবার কথা ছিল বাংলা একাডেমীর। সরকার বদলে যাওয়ায় প্রকল্পটা ভেস্তে যায়। পরে এটি ছাপে আইইডি।

অফটপিক প্রশ্নটা কেন করলেন জানতে পারি কি?
...................................................................
অসংখ্য 'নেই'-এর ভিড় ঠেলে
জ্বলজ্যান্ত 'আছে' খুঁজে পাওয়া হলো আসল ফকিরি

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

হাসিব এর ছবি

সাপ্তাহিক ২০০০ এ আপনার বইয়ের প্রচ্ছদ দেখলাম । সেখানেই আপনার নাম দেখলাম । নিশ্চিত হয়ে নিলাম আপনিই সেই মুজিব মেহদী কিনা ।
বইটা পড়ার ইচ্ছা রইলো । আর অনুরোধ থাকলো ঐ মাঠপর্যায়ের কাজের অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করার জন্য । অনেক কথাই হয়তো ফর্মা পৃষ্ঠার চাপে পড়ে বাদ দিতে হয়েছে । সেগুলো এখানে তুলে দিন ।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আবুল হাসানের গল্প পড়ে একটা প্রশ্ন জেগেছিলো মনে ।
ক্যামেলিয়া,বাঁশি কিংবা আরো অনেক গল্প যদি কবিতার স্বীকৃতি পেতে পারে তো আবুল হাসানের মতো গল্প গুলো কেনো কবিতা হবেনা?
দুইজন জাঁদরেল সম্পাদককে (নাম উল্লেখ করছিনা) জিজ্ঞেস করেছিলাম । আমি বোধহয় তাঁদেরকে তখন বুঝাতে পারিনি ।
-----------------------------------------
ভালো নেই,ভালো থাকার কিছু নেই

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

মুজিব মেহদী এর ছবি

আসলে কবিতা, গল্প, নাটক, খোলা গদ্য-- এসবকে স্রেফ টেক্সট হিসেবে দেখলেই খেলা মিটে যায়। লেখাটা কোন জাতের তা নির্দিষ্ট করে দিলে পাঠক হিসেবে অনেক সময় আমার সমস্যাই হয। লেখা মানে কেবল লেখা। এরকম তো হতেই পারে যে গল্প হিসেবে যেটা পড়ছি, পড়ে দেখা গেল সেটা কবিতার বিছানায় শোয়া, আবার কবিতা জেনে যা পড়ছি সেটা এলিয়ে পড়া গল্প।

এ বিষয়ে আমাদের সেলিম আল দীনের একটা তত্ত্ব আছে দ্বৈতাদ্বৈতবাদ নামে। এ ব্যাপারে বাড়তি কিছু বলতে গেলে আমাকে আবার ওটা পড়ে নিতে হবে। দেখুন না, তাঁর কথানাট্যগুলো তো কবিতার মতো করেও পড়া যায়। কবিতাও তো সেগুলো।

সম্প্রতি ঢাকার মঞ্চে জন্মসূত্রের ব্যানারে কামালউদ্দিন কবিরের নির্দেশনায় একটা টেক্সটের কয়েকটি মঞ্চায়ন হলো। নাম অহরকণ্ডল। বদরুজ্জামান আলমগীরের রচনা। সাহস করে খুব কমই ওটিকে বলা যায় 'নাটক' বা 'কবিতা' বা 'গল্প' বা 'অন্যকিছু'। ওটি কেবলই একটি টেক্সট এবং অসাধারণ, অবশ্যই আমার বিবেচনায়।

লেখক হিসেবে আমিও এরকম বিপদে পড়ি মাঝে মাঝে। এজন্যেই আমার বইয়ের নাম হয় শ্রেণিকরণ এমন এক সংকীর্ণতা যা সৃষ্টির মহিমাকে ম্লান করে দেয় এবং বৃষ্টিগাছের তলায় বইয়ের সাবটাইটেল দিতে হয় 'উভলিঙ্গ রচনা'।
...................................................................
অসংখ্য 'নেই'-এর ভিড় ঠেলে
জ্বলজ্যান্ত 'আছে' খুঁজে পাওয়া হলো আসল ফকিরি

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

??? এর ছবি

আচ্ছা.... আমাদের প্রজন্মের পর কি আবুল হাসান প্রেম ফিকে হয়ে গেছে নাকি?
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

মুজিব মেহদী এর ছবি

হ্যাঁ, ফিকে হয়ে গেছে বলা যায় বোধকরি।

অনেক কবি-পাঠকের কাছেই এখন আবুল হাসান যত সময় পান তার চেয়ে বেশি বোধহয় পান বিনয় মজুমদার, উৎপল কুমার বসু, রণজিৎ দাশ, জয় গোস্বামী প্রমুখ। আমরা আবুল হাসানকে প্রেমোটও করেছি কম। এখানকার অনেক কাগজই বিনয়, উৎপল সংখ্যা বের করেছে। ক্রমশ হয়ত করবে রণজিৎ, জয়, মৃদুল সংখ্যা। কিন্তু ওরা আবুল হাসান সংখ্যা করে নি, করবেও না হয়ত। এটাকে কীভাবে বিবেচনা করবেন সুমন ভাই?
...................................................................
অসংখ্য 'নেই'-এর ভিড় ঠেলে
জ্বলজ্যান্ত 'আছে' খুঁজে পাওয়া হলো আসল ফকিরি

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

শুদ্ধস্বর আবুল হাসান সংখ্যা বের করতে চায়।
এই প্লানটা আমাদের অনেক আগের।যেমনটি জীবনানন্দ সংখ্যা করার জন্য চেষ্টা করছি অনেক বছর ধরে।
আবুল হাসানের উপর লেখা পাঠান।

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

কাওসার মাসুম এর ছবি

শুদ্ধস্বর আবুল হাসান সংখ্যা বের করেছে ?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।